#প্রেমময়_প্রহরে_তুমি💖
#ইশা_আহমেদ
#পর্ব_১৭
মাহাজ জিরিশার গালে দু’হাত রাখে।তারপর বলে,
“এমন ভাবে সেজে কি আমাকে মারার প্লান করেছো এমনিতেও তোমায় দেখলেই কন্ট্রোল করা মুশকিল হয়ে পরে আর এখন এই বড় গলার ব্লাউজ সাথে কোমড় পেট সব দেখা যাচ্ছে।এখন যদি তোমার দিকে ভালো করে তাকাই তাহলে বিপদ তো তোমারই”
জিরিশা মাথা নিচু করে বলে,
“আপনি তখন রাগ করেছিলেন বলে”
মাহাজ জিরিশার কানে ফিসফিস করে বলে,
“তখন একটু স্পর্শ করেছিলাম বলে কাঁপছিলে আর এখন তুমি আমায় কন্ট্রোলের বাইরে করে দিলে।সামলাতে পারবে তো আমায়”
জিরিশা এড়িয়ে যায় কথাগুলো ও বলে,
“আপনি কি এখনো রেগে আছেন আমার উপর।আমি তখন ওইভাবে বলতে চাইনি”
মাহাজ জিরিশার ঠোঁটে স্লাইড করতে করতে বলে,
“রেগে তো ছিলামই কিন্তু তোমার এই রূপ দেখে রাগ হাওয়া হয়ে গিয়েছে।কিন্তু তুমি বললে না তো সামলাতে পারবে আমায়”
জিরিশা কেঁপে উঠে।তখনই বাইরে বাজ পরে।জিরিশা ঝাপটে ধরে মাহাজকে।মাহাজ জিরিশার কানের কাছে ঠোট নিয়ে নেশাক্ত কন্ঠে বলল,,
“এই প্রহরটা প্রেমময় করতে চাই বউজান”
মাহাজ জিরিশাকে কোলে তুলে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দেয়।এই বৃষ্টিকে সাক্ষী রেখে দুজন ভালোবাসার মিলেমিশে একাকার হয়ে গেলো।
২০.
সকালে আগে জিরিশার ঘুম ভাঙে।সে নিজেকে মাহাজের বাহুডোরে আবিষ্কার করে।মুচকি হাসে মাহাজ নামক লোকটার মুখের দিকে তাকিয়ে।তারপর কপালে চুমু দিয়ে উঠে যেতে চায় তখনই মাহাজ তাকে জড়িয়ে ধরে শক্ত করে।মাহাজ ঘুম জড়ানো কন্ঠে বলল,
“আরেকটু থাকো না আর কবে পাবো তোমায়”
জিরিশা বলে,
“না প্লিজ অনেক বাজে আপনি ঘুমান আমি ফ্রেশ হয়ে আসি”
মাহাজ চোখ খুলে জিরিশার দিকে তাকায়।জিরিশা লজ্জায় চোখ বন্ধ করে ফেলে।চাদর ভালোভাবে গায়ে জড়িয়ে নেয়।মাহাজ জিরিশাকে বলে,
“এভাবে ঢাকাঢাকি করে লাভ নেই জিরিশাপাখি কাল কিন্তু”
জিরিশা মাহাজকে থামিয়ে বলে,
“ইশ অসভ্য কোথাকার চুপ করুন!”
মাহাজ জিরিশাকে টেনে নিজের কোলে বসিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে নেশা জড়ানো কন্ঠে বলে,
“তোমায় দেখলেই আমার পাগল পাগল কেনো মনে হয় বউজান”
“আপনি কি আমায় ভালোবাসেন মা..হা..জ”
মাহাজ উত্তর দেয় না।কিন্তু একটা জিনিসে ভীষণ খুশি হয়।জিরিশা তাকে এই প্রথম নাম ধরে ডাকছে।জিরিশাকে কোলে তুলে ওয়াশরুমের দিকে পা বাড়ায়।জিরিশা মাহাজের বুকে মুখ লুকিয়ে আছে।তার ভীষণ লজ্জা লাগছে।
ওয়াশরুম থেকে মাহাজ আগে বের হয়।জিরিশা বের হয়ে দেখে মাহাজ রুমের কোথাও নেই।সে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আঁচল ফেলে কুচি ঠিক করছিলো।তখনই মাহাজ বেলকনি থেকে রুমে আসে।চোখ আটকে যায় তার।সে আবারও বেলকনিতে চলে যায়।জিরিশাকে দেখলেই কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলছে সে।
কিছুক্ষণ বাদে সে রুমে আসে আবার।জিরিশা সুন্দর করে শাড়ি পরে আছে।মাহাজ স্বস্থির নিশ্বাস ফেলে।মাহাজ দেখে জিরিশার চুল থেকে টপটপ করে পানি পরছে।সে জিরিশার কাছে এসে ওকে টুলে বসিয়ে হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে চুল শুকাতে থাকে।জিরিশার কানের কাছে ফিসফিস করে বলে,
“বউজান তোমার একেক রূপ দেখে তো আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি।মনে হচ্ছে সারাটা সময় তোমায় আদর করি”
জিরিশা লাজুক হেসে বলে,
“আপনার সবসময় অসভ্য মার্কা কথা বলতে ভালো লাগে”
জিরিশার কোমড় জড়িয়ে কাছে টেনে নিয়ে বলে,
“তোমার সাথে আমার এই অসভ্য মার্কা কথাগুলো বলতে এবং করতেও ভালো লাগে”
জিরিশা মাহাজকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে নেয়।উল্টোদিকে ঘুরে ঘনঘন নিশ্বাস নেয়।মাহাজ কাছে আসলেই কেমন সব কিছু এলোমেলো হয়ে যায় তার।জিরিশা নিজেকে স্বাভাবিক করে রুম থেকে বের হয়।ভীষণ লজ্জা লাগছে তার।রুম থেকে বের হতেই শিরিনের সামনে পরে জিরিশা।শিরিন জিরিশাকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষন করে বলে,
“আমার ছেলে কি আজকের পর থেকে তোকে ছাড়া আর থাকতে পারবে”
জিরিশা লজ্জায় লাল হয়ে যায়।সে অসহায় কন্ঠে বলে,
“মামনি কি শুরু করলে তুমি।তোমরা সবাই কি লজ্জা দিয়ে মেরে ফেলতে চাইছো আমায়”
শিরিন হেসে বলে,
“না আমাদের ওতো সাহস আছে নাকি।তোর বর আমাদের জেলে পাঠিয়ে দেবে তো”
জিরিশা কথা না বলে দৌড়ে ফাহার রুম এ চলে আসে।শিরিন হাসে তা দেখে।ফাহার রুমে এসে জিরিশা শাড়ি বদলে নেয়।ফাহা মরার মতো ঘুমাচ্ছে।বেচারিকে কালকে সারারাত মেহেরাব ঘুমাতে দেইনি।ফোন দিয়ে দিয়ে পাগল বানিয়ে ছেড়েছে।জিরিশা ফাহাকে উঠায়।ফাহা উঠে ফ্রেশ হতে চলে যায়।ফ্রেশ হয়ে এসে জিরিশাকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষন করে।তারপর বলে,
“উফ বেবি ভাইয়ের কাছে একদিন থেকে তো তুই আগের থেকেও বেশি সুন্দর হয়ে গিয়েছিস”
জিরিশা চোখ পাকিয়ে বলে,
“উফ চুপ করবি তুই”
“শোন না দোস্ত কি কি করলি একটু বল না।ভাইয়া কি সারারাত তোকে ঘুমাতে দেয়নি।দোস্ত কি এটা”
জিরিশা চমকে উঠে।সে বলে,”কই কি”
ফাহা জিরিশার গলায় হাত দিয়ে বলে,
“ওহো লাভ বাইট।যাক আমি বুঝে গিয়েছি সব।বাদ দে ফুফি ডাক কবে শোনাচ্ছিস”
জিরিশা আয়নার সামনে গিয়ে দেখে সত্যি গলায় মাহাজের কামড়ের দাগ।ও দ্রুত ওড়না দিয়ে ঢেকে ফেলে।ফাহা জিরিশার কাছে এসে বলে,
“বল বল কবে ফুফি ডাক শোনাচ্ছিস”
“উফ ফাহা চুপ কর তুই মেহেরাব দুলাভাইকে ফোন করে বলবো নাকি যে আপনার বউ আমায় ভীষণ জ্বলাচ্ছে।”
শিরিন জিরিশাকে ডেকে মাহাজকে কফি দিতে বলে।জিরিশা হাস ফাঁস করতে করতে মাহাজের রুমে ঢোকে।মাহাজ হাপ প্যান্ট পরে খালি গায়ে বসে ল্যাপটপ ঘাটছে।জিরিশা মাহাজের কাছে গিয়ে বল,
“শুনুন আপনার চা”
মাহাজ ল্যাপটপ পাশে রেখে বলে,
“তুমি কি শুনুন শুনুন শুরু করেছো,তুমি বলবে মাহাজ এই যে আপনার চা তা না শুনুন শুনুন করছে”
“আমি বলতে পারবো না।”
মাহাজ জিরিশাকে নিজের কোলে বসিয়ে গলায় শব্দ করে চুমু খেয়ে বলে,
“উহু বলতে হবে”
জিরিশা কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে,
“মা…হা..জ ছাড়ুন না এবার”
মাহাজ এবার জিরিশার গালে চুমু দিয়ে বলে,
“নাও গিভ মি এ্যা কিস ওন মাই লিপ”
জিরিশা ভ্যাবাচেকা খেয়ে তাকিয়ে আছে মাহাজের দিকে।জিরিশাকে চুপ করে থাকতে দেখে মাহাজ বলে,
“কি হলো দিচ্ছো না কেনো?”
জিরিশা আমতা আমতা করে বল,
“আপনি কি শুরু করলেন বলুন তো।আমি পারবো না প্লিজ”
মাহাজ জিরিশার নাকে নাক ঘষে বলে,
“আমি কিন্তু ভীষণ রাগ করবো যদি এখন তুমি আমাকে কিস না করো”
জিরিশা মাহাজকে বলে,
“আচ্ছা ঠিক আছে আপনি চোখ বন্ধ করুন”
মাহাজ চোখ বন্ধ করে।জিরিশা টুস করে চুমু দিয়ে উঠে যেতে চায়।কিন্তু মাহাজ সে তো ছাড়ার মতো মানুষ না।জিরিশাকে টেনে আবারও কোলে বসিয়ে জিরিশার ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে দেয়।জিরিশা মাহাজের পিঠ খামচে ধরে।মাহাজ ব্যাথা পেলেও টু শব্দ করে না।মাহাজ জিরিশাকে ছাড়তেই জিরিশা মাহাজের থেকে কিছুটা দূরে সরে এসে ঘনঘন নিশ্বাস নিতে থাকে।মাহাজ ঠোঁট কামড়ে হেসে বলে,
“বউ এখন থেকে তোমার ঠোঁটের স্বাদতো আমার লাগবেই প্রায়”
জিরিশা রুম থেকে বের হয়ে যায়।মাহাজ বাঁকা হাসে জিরিশার যাওয়ার পানে চেয়ে।সে কখনো ভাবেই নি তারপরে সে আর কোনো মেয়ের উপর এতোটা আসক্ত হয়ে পরবে।তার কথা মনে করতেই মন খারাপ হয়ে গেলো মাহাজের আবার জিরিশার হাসিমাখা মুখটা চোখের সামনে ভাসতেই মুচকি হাসে মাহাজ।
২১.
মাহাজ গাড়ি নিয়েছে আজকে।তাদের গাড়ি থাকলেও বেশি ব্যবহার করে না কেউ।আজকে মাহাজ জিরিশা আর ফাহাকে কলেজে নিয়ে যাচ্ছে বিধায় ব্যবহার করা হচ্ছে।ওদের নামিয়ে গাড়ি পার্ক করতে যায় মাহাজ।আজকে ক্লাস আছে জিরিশাদের মাহাজের।
জিরিশা নিজের ক্লাসে চলে আসে।মাহাজ ক্লাসে ঢোকে।মাহাজ ক্লাস নিয়ে চলে যায়।জিরিশা আর ফাহা কলেজ ছুটির পরে দাঁড়িয়ে আছে বাইরে মাহাজের একটু লেট হবে আসতে তাই দাঁড়িয়ে আছে ওরা।মেহেরাব এসে হাজির তার মধ্যে।ফাহা তো মেহেরাবকে দেখে রাগে গজগজ করতে থাকে।
জিরিশা হাসতে হাসতে বলে,
“এই যে দুলাভাই আপনার বউকে নিয়ে যায়।”
চলবে~