#প্রেত_সাধক
.
১ম পর্ব
.
লেখা: #Masud_Rana
.
-আফা, রোজ রাইতে আমি জামা কাপড় পইরাই শুই। কিন্তু সকালে যখন ঘুম থিকা উঠি। দেখি শইলে একটা সুতা কাপড়ও নাই। রোজ রাইতে কেডা জানি ঘুমের মইধেই আমার শইলের কাপড় খুইলা ফেলে।
.
কথাটা শুনে আফরোজা বেগম বড় বড় চোখ করে নাইলার মুখের দিকে তাকিয়ে রইলেন। তিনি হতভম্ব। নাইলা তাদের বাড়ির কাজের মেয়ে। গত ২ মাস হলো তাদের সাথে থাকে নাইলা। এর আগেও একবার নাইলে ৩-৪ দিন ধরে আফরোজা বেগমের পেছনে পেছনে ঘুরেছে একটা কথা বলবে বলে। আফরোজা বেগম যখনি জানতে জান কী বলবি? নাইলা কিছুক্ষণ আমতা আমতা করে কিছু না বলেই চলে যায়। একবার মহা বিরক্ত হয়ে আফরোজা বেগম বললেন, কী বলতে চাস সোজা-সাপটা বল? এইবারে যদি বলতে না পারিস তাহলে আমার কাছে আর কখনও কিছু বলতে আসবি না। নাইলা আমতা আমতা করেই বলল, আফা, আমার একটা মোবাইল লাগব। গ্রামে কথা বলা লাগে। ফাহাদ ভাইরে কল দিতে কইলেই খেঁচখেঁচ করে। এই সামান্য একটা কথা বলতে এত ভনিতা করায় বেশ বিরক্ত হয়েছিলেন আফরোজা বেগম। অবশ্য পরে তাকে কথা বলার জন্য একটা মোবাইল কিনে দেওয়া হয়।
.
এইবারেও ৩-৪দিন ধরে একটা কথা বলার জন্য আফরোজা বেগমের পেছনে পেছনে ঘুরছিল নাইলা। কিন্তু প্রতিবারেই কিছুক্ষণ আমতা আমতা করে কোনো কিছু না বলেই চলে যায় সে। আফরোজা বেগম ভাবলেন এই বারও আগের বারের মতোই তুচ্ছ কোনো বিষয় নিয়েই কথা বলতে নাইলা তার পিছুপিছু ঘুরছে। কিন্তু নাইলার কাছ থেকে এই ধরণের একটা কথা শোনার জন্য তিনি মোটেও মানসিক ভাবে প্রস্তুত ছিলেন না। নাইলা গত ২ মাস ধরে এই বাড়িটাতে কাজ করছে, রাতে এখানেই থাকছে। এর মধ্যে তার কোনো খারাপ আচররণ আফরোজা বেগমের চোখে পড়েনি। মেয়েটা একটু বোকা, তবে সহজ সরল। তার এক বিশ্বস্ত বান্ধবীর আস্বস্ততায়ই মেয়েটাকে গ্রাম থেকে আনা হয়। এই বাড়িতে সবার আগে ঘুম থেকে উঠে নাইলাই। আর সে কী বলছে! সে যখন ঘুম থেকে উঠে তখন তার গায়ে জামা-কাপড় থাকে না। মেয়েটাকে দেখে মনে হচ্ছে না যে সে মিথ্যা কথা বলছে। বা এই ধরণের একটা মিথ্যা কথা মেয়েটা বলবেই বা কেন?
.
.
কথাটা শুনে আফরোজা বেগম এতটাই হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলেন যে, কখন তার হাত থেকে পানির গ্লাসটা মেঝেতে পড়ে টুকরো টুকরো হয়ে পানি চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে তা তিনি খেয়ালই করেননি। নাইলা দ্রুত একটা বেলচা, ঝাড়ু আর তেনা এনে মেঝেটা পরিষ্কার করে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। এরকিছুই আফরোজা বেগমের চোখে পড়ল না। নাইলা যেই জায়গাটিতে দাঁড়িয়ে কথাটা বলেছিল তিনি এখনও সেই দিকে হতভম্ব, বিহব্বল দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছেন। কিন্তু নাইলা চলে গেছে কখন! কেউ এই ঘরে এই মুহুর্তে প্রবেশ
করলে ভাববে আফরোজা বেগম কোনো অদৃশ্য মানুষের দিকে চেয়ে রয়েছেন। যেই মানুষটাকে তিনি ছাড়া আর কেউ দেখতে পান না।
.
আফরোজা বেগমের মাথায় এখন অনেক প্রশ্ন। ঘটনাটা যদি সত্য হয় তাহলে তার পরিবারে একটা বড় বিপদ আসতে চলেছে। এই বাড়িতে কে এমন আছে যার চরিত্রের অধপতন ঘটছে! এই কথাটা যদি লোক জানা-জানি হয় তাহলে তাদের মান-সম্মান বলে আর কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না। এই বাড়িতে পুরুষ আছে দুইজন। আফরোজা বেগমের স্বামী আব্দুর রাজ্জাক আর তাদের একমাত্র পুত্র ফাহাদ। রাজ্জাকের বয়স প্রায় ৪৫। সে মোটেই অতিরিক্ত কামুক স্বভাবের পুরুষ নয় যে মাত্র ১৮ বছর বয়সের একটা কাজের মেয়ের উপর এইভাবে খারাপ নজর দিয়ে খারাপ কাজ করতে যাবে। তাছাড়া আফরোজা বেগমের বয়স ৩৬ হলেও তার যৌবন এখনও ফুরিয়ে যায়নি। আর আছে ফাহাদ।
ফেসবুক পেজ: নিঃস্বার্থ ভালোবাসা
ওর বয়স ১৬ বেরিয়ে ১৭তে পড়েছে। এবছরেই কলেজে ভর্তি হয়েছে। সে অন্যসব ছেলেদের মতো না। বেশ, শান্ত, নম্র আর সৎ প্রকৃতির। সে এই ধরণের কোনো কাজ করতে পারে তা আফরোজা বেগমের ধারণার বাইরে। অবশ্য তার নতুন কলেজ বন্ধুদের সম্পর্কে তেমন কিছুই জানেন না তিনি। ছেলেদের এই বয়সটা বড়ই ভয়ংকর। নানান অধপতন ঘটতে পারে এই বয়সে খারাপ সঙ্গে। অনেকেই এই বয়সে প্রচণ্ড কামুক হয়ে ধর্ষণের মতো ভয়ংকর অপরাধকে স্বাভাবিক যৌনাকাঙ্খা ভাবে। ফাহাদ কী কলেজে খারাপ সঙ্গে পড়েছে?
.
.
ভাবনার দুনিয়া থেকে বেরিয়ে আসেন আফরোজা বেগম। লক্ষ করলেন ঘরে কেউ নেই। তিনি এতক্ষণ নিজের স্বামী আর ছেলেকে নিয়ে এসব কী ভাবছিলেন! এটা ভেবে তিনি বেশ লজ্জা পেয়ে গেলেন। হয়তো একদিন ঘুমের ঘোরেই কাপড় খুলে গিয়েছিল নাইলার। আর যে কোনো কথাকেই বাড়িয়ে বলার অভ্যাস নাইলার। তাই হয়তো এইসব আজেবাজে কথা বলেছে তাকে। শুধু শুধু মেয়েটার কথা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে এতক্ষণ বিভ্রান্ত হচ্ছিলেন তিনি!
.
আফরোজা বেগম দ্রুত বিছানা থেকে নেমে নাইলার কাছে গেলেন। নাইলা বাথরুমে জামা-কাপড় ধুচ্ছিলো। তিনি গিয়েই ধমকের সুরে বললেন, দেখ নাইলা, তুই আমার কাছে এই ধরণের আজগুবি কথা বার্তা আর কোনো দিন বলবি না! আরেকবার এই ধরণের কথা শুনলে তোকে সোজা তোর গ্রামের বাড়িতে দিয়ে আসব।
.
নাইলা কথাটা শুনে মাথা তুলে কয়েক মুহুর্ত স্বাভাবিক ভাবে আফরোজা বেগমের মুখের দিকে চেয়ে রইল। পরক্ষণেই আবার কাপড় ধুয়ায় ব্যস্ত হয়ে পড়ল। আফরোজা বেগম আবার তার ঘরে ফিরে এলেন। প্রথমে নাইলার বলা কথাটা তিনি যতটা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছিলেন এখন ততটাই তুচ্ছ বলে মনে হচ্ছে। সকাল বেলা হাতে নেওয়া একটা অর্ধসমাপ্ত বই আবার পড়া শুরু করলেন। ফাহাদ আর তার স্বামী বেশির ভাগ সময়েই বাড়িতে থাকেন না। বাড়ির কাজ সব নাইলাই করে। তাই নিস্বঙ্গতা দূর করতে থ্রিলার উপন্যাস পড়ার একটা অভ্যাস করেছেন তিনি। ভালোভাবেই কেটে যায় তার সময়।
.
.
দুপুর হতেই ফাহাদ কলেজ থেকে বাড়িতে ফিরে আসে। রোজকার মতো রাতে রাজ্জাক সাহেবও বাড়িতে ফিরলেন। আফরোজা বেগমের দিন বাকি ৮-১০টা দিনের মতোই কাটল। রাত ১১টা বাজতেই ঘুমিয়ে পড়লেন। তার অভ্যাস মতো প্রতি রাতেই ঘুম থেকে ৩-৪ বার বাথরুমে যেতে জাগতে হয় তাকে। কিন্তু কিছুদিন যাবত এক ঘুমে রাত পার করে দিয়ে সকালে উঠছেন তিনি। আজ ব্যতিক্রম হলো। শেষরাতে তার ঘুম ভেঙে গেল। বাথরুমে যাওয়ার জন্য তিনি বিছানা থেকে নামলেন। রাজ্জাক সাহেব ঘুমাচ্ছেন বিছানায়। বাথরুমে যাবেন এমন সময় নাইলার কথা মনে পড়ল আফরোজা বেগমের। নাইলা কী অদ্ভুত কথাটাই না বলেছিল সকাল বেলায়। আদৌ কী কথাটা সত্য হওয়ার সম্ভাবনা আছে? ঘড়িতে এখন ৪টা ১৫ বাজে। এখনও ফজরের আজান দেয়নি। তিনি কী যেন ভেবে ধীরে ধীরে রান্নাঘরের দিকে এগিয়ে গেলেন, সেখানে নাইলা ঘুমায়। রান্নাঘর পুরোপুরি অন্ধকার। আলোর সুইচটা রান্নাঘরের বাহিরে।তিনি আলো জ্বালিয়ে রান্নাঘরে উঁকি দিতেই পুরো স্তম্ভিত হয়ে গেলেন। নাইলা সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে মেঝেতে শুয়ে রয়েছে। ঘটনার আকস্মীকতায় আফরোজা বেগম দ্রুত আবার আলো নিভিয়ে দিলেন। তিনি ভুল দেখলেন কিনা এটা নিশ্চিত হতে আবার আলো জ্বেলে রান্নাঘরে উঁকি দিলেন। না, তিনি ভূল দেখেননি। নাইলার সালোয়ার, কামিজ, ওড়না তার মাথার কাছে গুলটি করে রাখা। কেউ যে এই কাজটা করেছে তা ভালো মতোই বোঝা যাচ্ছে। কেউ যাতে শুনতে না পায় সেইভাবে আফরোজা বেগম ধীরে ধীরে নাইলার কাছে গিয়ে তাকে ডাকতে লাগলেন। নাইলার কোনো সাড়াই পাওয়া গেল না। এবার ঘুম ভাঙাতে কাঁধ ধরে জোরে কয়েকটা ঝাঁকা দিলেন তিনি। অবাক কাণ্ড তাও নাইলার ঘুম ভাঙল না। নাইলার ঘুমতো কখনই এত গাঢ় ছিল না! আর কোনো উপায় না দেখে একটা কাঁথা দিয়ে নাইলার শরীর ঢেকে রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে আলো নিভিয়ে দিলেন তিনি। ফাহাদ দরজা খোলা রেখেই রাতে ঘুমায়। ফাহাদের ঘরে গিয়ে দেখলেন সেও বেঘোরে ঘুমাচ্ছে। বাড়িতেতো আর কেউ নেই। তাহলে কাজটা করল কে? কে মেয়েটার জামা-কাপড় এই ভাবে খুলে ফেলছে? ফাহাদ এবং রাজ্জাকতো ঘুমাচ্ছে। আচ্ছা তারা দুজনে কী আসলেই ঘুমাচ্ছে, নাকি তাদের কেউ একজন ঘুমের অভিনয় করছে? না! এটা নিয়ে কিছুই ভাবতে পারছেন না তিনি এই মুহূর্তে। আবার ঘরে গিয়ে রাজ্জাক সাহেবের পাশে চুপচাপ শুয়ে পড়লেন তিনি। বাকি রাত আর ঘুম হলো না তার।
.
.
সকাল বেলা খাবার শেষে রাজ্জাক এবং ফাহাদ তাদের গন্তব্যে চলে গেল। বাড়িতে রইলেন আফরোজা বেগম এবং নাইলা। আজ আর বই পড়াতে মন বসছে না তার। কয়েকবার নাইলাকে রাতের প্রসঙ্গে কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারলেন না তিনি। ব্যাপারটাকে তিনি যতটা সাধারণ ভাবে নিয়েছিলেন ব্যাপারটা আসলে তত সাধারণ না। শিঘ্রই কে এই কাজটা করছে এটা ধরতে না পারলে বড় একটা অঘটন ঘটে যাবে এই সংসারে। তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন আজরাতে না ঘুমিয়ে, ঘুমের অভিনয় করে নাইলাকে পাহাড়া দিবেন তিনি। রাত জাগবেন বলে দিনে একটু ঘুমিয়ে নিতে চাইলেন । কিন্তু ঘুম আসল না কিছুতেই।
.
.
রাত ১১টা হতেই সবাই ঘুমিয়ে পড়ল। আফরোজা বেগম শুধু ঘুমের অভিনয় করে চোখ বন্ধ করে রইলেন। বেশ কয়েক ঘণ্টা তিনি নির্ঘুমে কাটিয়ে দিলেন এইভাবে। হঠাৎ তার চোখ লেগে এল। যখন ঘুম ভাঙল আৎকে উঠলেন তিনি। ঘড়িতে দেখলেন রাত ৪টার কিছু বেশি। রাজ্জাক ঘুমাচ্ছে। অনেকটা সময় চলে গিয়েছে। তিনি দ্রুত উঠে রান্নাঘরে গেলেন। সেই একই দৃশ্য। নাইলার গায়ে জামা-কাপড় নেই। তিনি কিছুই বুঝতে পারছেন না। ঘুমের সুযোগে রাজ্জাক এসেছিল নাকি ফাহাদ! নাইলাকে বেশ ভাল করেই ডাকলেন আজও। কিন্তু উঠল না সে! যেন অজ্ঞান হয়ে আছে। এটা আরও বেশি আশ্চর্যের। থ্রিলার উপন্যাস পড়তে পড়তে একটা জিনিস বুঝেছেন আফরোজা বেগম। যেকোনো বড় রহস্য সমাধান করতে ছোট ছোট ক্লু ধরে এগোতে হয়। আফরোজা বেগমের চোখ গেল ঘুমন্ত নাইলার মাথার কাছের একটা কাচের জগে। এই জগটা থেকে নাইলা পানি খায়। হতে পারে এই জগটাতে কেউ ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে দেয় রোজ। যার ফলে রাতে নাইলা আর জাগে না। এই সুযোগেই ধস্তাধস্তি ছাড়া কেউ তার সাথে খারাপ কিছু করতে চায়। ছিঃছিঃ। এসব কী ভাবছেন তিনি! না এমনটা হতেও পারে। নাহলে এত ঢাকার পরও নাইলা উঠবে না কেন! নানান চিন্তা ঘুরপাক খেতে থাকে আফরোজা বেগমের মাথায়। অবশেষে একটা বোতল এনে জগ থেকে কিছু পানি ঢেলে নিলেন তাতে। তারপর নাইলার গায়ে কাঁথা মুড়িয়ে আবার নিজের ঘরে চলে এলেন।
.
.
পরেরদিন সকাল ৯টা। ফাহাদ কলেজে এবং রাজ্জাক সাহেব অফিসে চলে গিয়েছেন। নাইলাকে একা বাড়িতে রেখেই আফরোজা বেগম গেলেন তার এক পরিচিত বান্ধবীর ল্যাবে। বান্ধবীর নাম ফারহানা। তিনি ফরেনসিক ডাক্তার। তার কাছে সেই পানির বোতলটা দিয়ে তিনি পরীক্ষা করতে বললেন এর ভেতরে ঘুমের ঔষধ মেশানো আছে কিনা। ফারহানা কৌতুহলী হয়ে জানতে চাইল এই পানি সে পেল কোথায়, আর পরীক্ষাইবা করতে চাচ্ছে কেন! আফরোজা বেগম মিথ্যা কথা বললেন। তিনি বললেন তার এক বান্ধবী এইটা পরীক্ষা করতে দিয়েছেন। সে তার নাম গোপন রাখতে চায়। ফারহানা আর তাকে ঘাটালেন না। বললেন, বোতলটা রেখে যেতে। পরে পরীক্ষা করে তাকে কল করে এই বিষয় সম্পর্কে জানাবেন। আফরোজা বেগম বাড়ি চলে এলেন।
.
.
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হয়ে গেল। ফারহানাকে তিনি কয়েক বার কল দিলেন। কিন্তু সে ধরল না। তিনি এবার কিছুটা স্বাভাবিক ভাবে ঘটনাটার ব্যাপারে চিন্তা করছেন। তিনি কী শুধু শুধু তার আপন ছেলে আর স্বামীকে সন্দেহ করছেন! ফাহাদ বা রাজ্জাক কেউ যদি এটা জানতে পারে তাহলে তাদের কাছে তিনি কতটা ছোট হয়ে যাবেন! এটাতো হতে পারে যে, নাইলারই কোনো বড় সমস্যা রয়েছে। তাদের না। নাইলা বেশ রুপবতী না হলেও তার চেহারা তেমন খারাপ না। হতে পারে কোনো খারাপ জ্বীন তার উপর আঁছর করেছে। সেই ঘুমন্ত অবস্থায় নাইলার সঙ্গে খারাপ কিছু করতে চায়। বা নাইলার কোনো মানসিক রোগ রয়েছে যাতে সে নিজে নিজেই রাতে তার জামা-কাপড় খুলে ফেলে অথচ তার মনে থাকে না! আসলেইতো এমন কিছু ওতো হতে পারে। এইটা এতক্ষণ তার মাথায় আসেনি কেন? তিনি শুধু শুধু ফাহাদ আর রাজ্জাককে সন্দেহ করছেন। আফরোজা বেগম এবার কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস নিলেন। এমন সময় হঠাৎ তার মোবাইলে ফারহানার নাম্বার থেকে একটা কল এল। আফরোজা বেগম দ্রুত কল ধরলেন। ফারহানা যা বলল তা শুনে আফরোজা বেগম পুরোই স্তম্ভিত হয়ে গেলেন। তার সন্দেহই ঠিক। নাইলার জগের পানিতে ঘুমের ঔষধ মেশানো থাকে প্রতিরাতে। কারণ ওই পানি পরীক্ষা করে ঘুমের ঔষুধের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। যা খেলে কয়েক ঘন্টা মরার মতো পড়ে থাকবে যে কোনো মানুষ। কিন্তু এই জঘন্য কাজটা কে করে, এটাই বুঝতে পারছেন না তিনি। নিজের আপনজনদের যে এভাবে সন্দেহ করতে হবে এটা তিনি স্বপ্নেও কল্পনা করেননি। তবে আজ রাতে যে করেই হোক আসল অপরাধীকে তিনি ধরবেনই। কিন্তু কে সে? . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . .
.
.
. . . . . চলবে . . . . . .