#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নং : ০১
প্রিয় গল্প পোকা,
পত্রের শুরুতে তোমার জন্য রইল নীল অপরাজিতার শুভেচ্ছা আর আকাশসম ভালোবাসা।
জানো তো, আমার লালন করা ইচ্ছা গুলোর মধ্যে; একটি ইচ্ছা ছিল তোমার কাছে চিঠি লেখার কিন্তু চিঠি লেখার সেই সুযোগটা হয়ে উঠেনি। আজ যখন সুযোগটা পেয়েছি, হাত ছাড়া করিনি। এই মুহূর্তে তোমায় নিয়ে, আমার অব্যক্ত কথামালা গুলো ব্যক্ত করার জন্য আমি মরিয়া হয়ে উঠলাম। তাই আজ লিখে ফেললাম; চিঠি নামের এক সুন্দর অনুভূতি তোমার ঠিকানায়।
জানি না! আমার বাক্স বন্দী অনুভূতিগুলো কতটুকু ব্যক্ত করতে পারবো। কারণ কিছু কথা, কিছু অনুভূতি, কিছু ভালোবাসা চাইলেও ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।
গল্প পোকা, তোমায় নিয়ে যখন লিখছি তখন হঠাৎ এক পশলা বৃষ্টি আমার শহরটাকে ভিজিয়ে দিয়ে গিয়েছে। ঐ এক পশলা বৃষ্টির পানে চেয়ে আমার মনটা ভীষণ আনন্দে পুলকিত হয়ে উঠলো। কেন জানো?
কেননা এই এক পশলা হঠাৎ বৃষ্টির মতোই আমি তোমার সন্ধান পেয়েছি। আমি আপন মনে বলে উঠি, ‘হঠাৎ বৃষ্টি কারো কারো জন্য আশীর্বাদ।’
যেমনটা তুমি আমার জন্য আশীর্বাদ।
প্রিয় গল্প পোকা, তুমি জানো না। তুমি আমার নিকট কতটা প্রিয়। তোমার সাথে আমার পরিচয়টা বেশি দিনের নয়। আবার একেবারে কম দিনেরও নয়। এই এতটুকু সময়ে আমার প্রিয়র তালিকায় তুমি স্থান দখল করে নিয়েছো। তুমি কি জানো? আমার প্রিয় জিনিস গুলোর মধ্যে একটি যে তুমি?
আমিও না! কিযে বলি! জানবেই বা কি করে তুমি। আমি তো তোমায় কখনো বলিনি। হ্যাঁ তবে আজ থেকে কথাটি জেনে রেখো।
হে আমার তালাবদ্ধ ডায়েরির চাবি “গল্প পোকা”। তুমি এটাও জানো না যে, তুমি আমার চাবিকাঠি।
অনেক আগে থেকেই টুকটাক লেখালেখি করার শখ আমার। আমার শখের অগোছালো লেখাগুলো কেবল ডায়েরির পাতায় সীমাবদ্ধ ছিল। কখনো কোথাও প্রকাশ করার সাহস করিনি। অতঃপর একদিন সাহস করে প্রকাশ করেই ফেললাম। “গল্প পোকা” নামক এক মুক্ত ডায়েরির পাতায়। যে পাতা সকলের জন্য উন্মুক্ত।
হ্যাঁ গল্প পোকা, তুমি আমার তলাবব্ধ ডায়েরির চাবি হয়ে এসেছো। আমার তালাবদ্ধ লেখাগুলো মুক্ত করার সুযোগ করে দিয়েছো। তাই আজ আমি গড়ি নতুন কিছু ছন্দ, নতুন কিছু শব্দমালা। আরো জাগ্রত করি অনুভূতি শতক। এই যে আজও আমি দু’চার লাইন লিখতে পারছি। তা শুধু তোমার কারণেই।
ভালোবাসার গল্প পোকা, তুমি শুধু আমায় লেখার সুযোগ করে দাও নি। দিয়েছো “সেরা লেখক” এর খেতাব। এটা শুধু আমার কাছে খেতাব নয়। একটা আস্তো ভালোবাসা। সেই ভালোবাসাকে আমি আগলে রেখেছি আমার মন কুঠুরিতে।
গল্প পোকা, তুমি আমার প্রাপ্তির খাতার প্রথম নাম। জীবনে প্রথম বারের মতো অনলাইন জগতের কোনো প্রতিযোগিতায় আমি অংশগ্রহণ করি। আর সেই অংশগ্রহণটা তোমার এই নিপুণ প্লাটফর্মেই। এবং সেই প্রথম বারেই আমি জয় করি আমার জীবনের সেরা পুরস্কারটা। এটা যে আমার জন্য কী! তা আমি বলে বুঝাতে পারবো না। শুধু বলবো তোমার প্রতি আমি সর্বদাই কৃতজ্ঞ।
আমার উৎসাহের আলোকবর্তিকা “গল্প পোকা”,
তুমি উৎসাহিত করেছো বলেই, আজ আমি আমার বাকি সকল সুপ্ত প্রতিভা গুলোকেও মেলে ধরার সাহস সঞ্চয় করেছি। জাগ্রত করছি বহুদিনের ঘুমন্ত প্রতিভা গুলোকে।
গল্প পোকা, তুমি শুধু দিয়েই যাচ্ছো। তুমি আমাকে দিয়েছো কতগুলো জ্বলজ্বল করা পাঠক আর নবীন লেখক। দিয়েছো কতগুলো ভালোবাসাময়ী ছোট এবং বড় বোন। যাদের ভালোবাসা পেয়েছি অফুরন্ত। আরো দিয়েছো তোমার বিশুদ্ধ ভালোবাসা। তোমার এই ভালোবাসা ও মহৎ কর্মের কাছে আমি সর্বদা ঋণী থাকবো।
গল্প পোকা তুমি জ্বলজ্বল করা নক্ষত্র।
তোমার অবদানের কথা বলার মতো,
নেই আমার কাছে উপযুক্ত কিছু শব্দ।
এগিয়ে যাও তুমি তোমার লক্ষ্যে,
তুমি থাকবে নবীনদের পদচিহ্ন হয়ে।
গল্প পোকা, চিঠির শেষটায় তোমার জন্য রইল ন্যাপথলিনের ভালোবাসা। নিশ্চয়ই অবাক হচ্ছো?
ন্যাপথলিন ভালোবাসা দেখে?
প্রথমত, ন্যাপথলিনের ঘ্রাণ যেমন আমার প্রিয়। ঠিক তেমনি তুমিও আমার কাছে অতি প্রিয়।
দ্বিতীয়ত, জামা কাপড় পোকায় যাতে না কাটে। তার জন্য যেমন ন্যাপথলিন দেয়া হয়। ঠিক তেমনি আমি আমার ভালোবাসায় ন্যাপথলিন দিলাম। যাতে এই অকৃতজ্ঞ মন তোমার ভালোবাসা ভুলে না যায়। তবে একটুখানি তফাৎ আছে। ন্যাপথালিন এক সময় উড়ে যায়। যদিও সুবাস থাকে। কিন্তু তোমার প্রতি ভালোবাসা কখনো নিঃশেষ হবে না।
আজ এখানেই শেষ করছি। শেষ করছি বলে ভেবো না, আমার সকল অব্যক্ত কথা ব্যক্ত করে ফেলেছি। তোমায় নিয়ে লিখলে লেখারা ইতি টানবে না। এটা শুধু চিঠির ইতি টানা মাত্র। তোমার নিয়ে লেখার ইতি নেই কিন্তু চিঠির তো ইতি আছে। তাই আপাতত এখানেই ইতি টেনে দিলাম।
ভালোবাসি তোমায় প্রিয় গল্প পোকা।
ইতি,
তোমার একজন সদস্য
আশা
————————————
আর্ট বাই : আশা