Sunday, October 5, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"প্রিয় অভিমান পর্ব-১৮+১৯

প্রিয় অভিমান পর্ব-১৮+১৯

#প্রিয়_অভিমান🥀🥀
#ফাবিহা_নওশীন

|পর্ব-১৮|

রুহানির চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে। গাল দিয়ে গরম উত্তাপ বের হচ্ছে। জ্বলে যাচ্ছে। কান ঝিম ঝিম করছে। ফালাক যে ওকে কেন মারল, ঠিক কোন কারণে এত জোরে একটা থাপ্পড় মারল সেটা উদ্ধার করতে পারছে না। ফালাক আঙুল দিয়ে চোখের কোনার পানি মুছে রুহানির সামনে এসে রুহানিকে ধরে দাঁড় করাল।

রুহানি উঠে দাঁড়িয়ে মাথা নিচু করে আছে। ফালাক রুহানির বাম বাহু চেপে ধরে বলল,
“নিজের সম্পর্কে এমন বাজে কথা বলতে তোমার লজ্জা করে না? নিজেকে এভাবে ছোট করছো? তুমি কি ভেবেছো এসব বললে তোমার প্রতি আমার ঘৃণা জন্মাবে? আর আমি তোমাকে ভুলে যাব? না রুহানি, বরং হুট করেই তোমার প্রতি আমার ভালোবাসাটা বেড়ে গেল। শুধু ভালোবাসা না সম্মানও বেড়ে গেল। ভাঙাচোরা মানুষেরা ভালো বাসতে জানে খুব। তাই আমি তোমাকে এখনো ভালোবাসি বলব।”

রুহানি ফালাকের চোখের দিকে কিছুক্ষণ অবাক হয়ে চেয়ে রইল। সেই গভীর ঝিলের মতো নেশাগ্রস্ত চোখ। রুহানি ফালাকের চোখ থেকে চোখ সরিয়ে নিয়ে নিজেকে ছাড়ানোর জন্য শরীর ঝাকালো। রুহানি নিজেকে ছাড়িয়ে বলল,
“নাটক-সিনেমার ডায়লগ নাটক-সিনামাতেই ভালো মানায় বাস্তবে নয়। আমার যা বলার ছিল বলে দিয়েছি এখন তুমি যা খুশি ভাবো আই ডোন্ট কেয়ার।”

“রুহানি, নাটক-সিনেমার ডায়লগ আমি দিচ্ছি না। তুমি যে বাস্তবতার কথা বলছো আমি সেই বাস্তবতাকে মেনে নিয়েছি।” বলতে বলতে ফালাক রুহানির কাছে এগিয়ে আসছে।

রুহানি ফালাককে দু’হাতে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দিয়ে বলল,
“আমার থেকে দূরে থাকবে। আরেকবার যদি এসব আজেবাজে কথা বলেছো তাহলে তুমি আগের রুহানিকে দেখবে।”

রুহানি দৌড়ে চলে গেল। ওর চোখ বেয়ে পানি পড়ছে। কেন জানি খুব কষ্ট হচ্ছে।
ফালাক রুহানির পেছনে গেল না। বসে পড়ল। ওর চোখ বেয়ে পানি পড়ছে। কপাল থেকে চুল সরিয়ে দু’হাতে মাথা চেপে ধরে চোখ বন্ধ করে নিল।

.

ফালাক ঘুমাতে পারছে না। বিছানায় এপাশ ওপাশ করছে। বিছানা থেকে উঠে বসল। তারপর সোজা বারান্দায় চলে গেল। হু হু করে বাতাস বইছে। ফালাকের ভেতরে যে আগুন বইছে তা শান্ত করার জন্য যথেষ্ট নয়।
“জীবনে প্রথম কাউকে ভালোবাসলাম, মনের কথা খুলে বললাম আর সেখানে এত বাঁধা, এত সমস্যা? সবটা স্বাভাবিক হলো না কেন? কেন আমার সামনে এত বড় বাঁধা এসে দাঁড়াল?”

ফালাক রেলিঙ ধরে আকাশের দিকে তাকাল। তারপর মুচকি হেসে বলল,
“বাঁধা এড়িয়ে যদি আমার মনের রাজকন্যাকে হাসিল করে রাণী করতে না পারি তাহলে কেমন আশিক হলাম? ফালাক বি কুল। ইউ কেন। আমি সব বাঁধা পেরিয়ে রুহানির মন জয় করে ওকে নিজের করব।”
তারপরই মনে হলো রুহানিকে কত জোরে মেরেছে৷ দুঃখ প্রকাশ করার আগেই ফালাক নাক ফুলিয়ে অভিমানী সুরে বলল,
“বেশ করেছি। আরো দুটো মারা দরকার ছিল। বেয়াদব মেয়ে। শুধু বেয়াদব না ফাজিল, প্রচন্ড ফাজিল। একদম ঠিক করেছি।”
ফালাক জ্বলজ্বল করা তারার দিকে চেয়ে স্নিগ্ধ হেসে বলল,
“আমার #প্রিয়_অভিমান তুমি বিল্লিরাণী। আমার ছোট ছোট অভিমানগুলো তোমাকে জড়িয়ে প্রিয় হয়ে উঠেছে।”

রুহানি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে গালে হাত দিয়ে ফালাককে একশো গালাগাল দিল। গালাগাল করে ঘুমাতে চলে গেল। আগামীকাল ইন্সটিটিউট যেতে হবে।

.

রুহানি ফাইল দেখে দেখে কিছু লিখছে। ইমন দরজার সামনে দাঁড়িয়ে রুহানিকে দেখে দাঁড়িয়ে গেল। মনে হচ্ছে রুহানির মন খারাপ। মুখটা কেমন কালো করে রেখেছে।
রুহানির কাছে এসে বলল,
“মুড অফ নাকি?”

রুহানি মাথা তুলে বলল,”নো স্যার।”

“তোমাকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে মুড অফ। আজকে আমার মুড এত ভালো আর আমার এসিস্ট্যান্ট মুড অফ করে রেখেছে?”

রুহানি কলম রেখে ইমনকে ভালো করে দেখে বলল,
“আপনাকে দেখেই মনে হচ্ছে আপনি বেশ খুশি। কিন্তু এত খুশির কারণ কি স্যার?”

“আজকে আমাদের দ্বিতীয় বিবাহবার্ষিকী।”

রুহানি চমকে গিয়ে বলল,”আপনি মেরিড?”

রুহানির প্রশ্ন শুনে ইমন চমকে গেল। রুহানিকে উল্টো প্রশ্ন করল,
“আমি সারাদিন কার সাথে ফোনে ফুসুরফাসুর করি?”

“আপনার ওয়াউফ? আমি তো ভাবতাম আপনার জিএফ৷ আমি এত দিন ধরে কাজ করছি আর জানিই না আপনি মেরিড। এখানে আমার কোন দোষ নেই। কেউ বউয়ের সাথে ফোনে এত ফুসুরফাসুর করে না। ফুসুরফাসুর করে জিএফের সাথে কথা বলে। তাই আমি ভেবেছি আপনার জিএফ।”

ইমন আলতো হেসে বলল,”তাও ঠিক কিন্তু আমাদের কথা শুরু হলে শেষ হয় না। আর ও যে হারে আমার ইন্সটিটিউটকে গালাগাল করে তাতে কথা শেষ হওয়ার কথাও না।”

“গালাগাল করে কেন? উনার পছন্দ না?”

“না। ওর আমার এই প্রফেশন পছন্দ না।”

রুহানি অবাক হয়ে বলল,
“তাহলে এক সাথে দু’বছর কি করে আছেন?”

ইমন মুচকি হেসে বলল,”কারণ আমরা একে অপরকে ভালোবাসি আমাদের প্রফেশনকে নয়। পাঁচ বছরের সম্পর্কের পর আমাদের বিয়ে। সাত বছর আছি এক সাথে ভালোবাসার একটুও কমতি হয় নি। ভালোবাসাটাই ফ্যাক্ট বাকি সব ম্যাটার করে না। দুটো মানুষের মধ্যে ভালোবাসাটা যখন গভীর হয় তখন তাদের আশেপাশের জিনিসগুলো ম্যাটার করে না। বুঝলে?”

রুহানি কিছুই বুঝল না। ইমনও বুঝতে পারল রুহানি কিছুই বুঝে নি।
“বুঝতে হলে কাউকে ভালোবাসতে হবে।”

রুহানি ক্যান্টিনে বসে নুডলস খাচ্ছে। ওর খুব ক্ষুধা পেয়েছে। কিন্তু নুডলস খুব ঝাল লাগছে। খেতে পারছে না কিন্তু উপায় নেই। এটাই খেতে হবে নয়তো না খেয়ে থাকতে হবে। কারণ ওকে সব হিসেব করে খরচ করতে হয়। বাইরে নাস্তা করার জন্য যে টাকা বরাদ্দ ছিল তার বেশি খরচ করা যাবে না।

ফালাক দূরে দাঁড়িয়ে রুহানিকে দেখছে। ফালাক রুহানির সাথে কথা বলতে চায়। ওর সমস্যাগুলো, ওদের সাথে কি হয়েছে সবটা জানতে চায়। আর এটা একমাত্র রুহানিই বলতে পারে। কিন্তু রুহানি তো ওকে দেখেই রেগে যাবে। ফালাককে বলবে বলেও মনে হচ্ছে না। ফালাক চাইছে রুহানির সাথে শান্তিপূর্ণ ভাবে কথা বলতে। ফালাক রুহানির কাছে যেতে যেতে দেখল ঝালের চোটে ওর চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। রুহানি বারবার পানি খাচ্ছে। কিন্তু কমছে না। ফালাক দু’টো আইসক্রিম নিয়ে রুহানির পাশে বসল। রুহানি ফালাককে দেখেও কিছু বলল না। ফালাক ওর দিকে একটা আইসক্রিম বাড়িয়ে দিল। রুহানি মনে মনে বলছে নিবে না কিন্তু ওর যে পরিমাণ ঝাল লাগছে তাতে যদি কেউ বিষ মিশিয়েও মিষ্টি কিছু দেয় খেয়ে নিবে৷ রুহানি ফালাকের হাত থেকে আইসক্রিম নিয়ে খেতে শুরু করে দিল। ঝাল কিছুটা কমেছে।

“এসব কেন খাচ্ছো?”

রুহানি ভ্রু কুচঁকে বলল,”খাবারের অপমান করছো?”

“রুহানি তুমি ভালো করেই জানো আমি খাবারের অপমান করছি না। আমি কি বলেছি তুমি বুঝতে পেরেছো।”

“কারণ আমার খুব ক্ষুধা পেয়েছে। আর আমি ক্ষুধা সহ্য করতে পারি না।”
রুহানির কথা শুনে ফালাকের বুকটা মোচড় দিয়ে উঠল।

ফালাক আকুতি নিয়ে বলল,
“আমাকে একসেপ্ট করে কেন নিচ্ছো না?”
রুহানি ফালাকের দিকে অবাক চোখে তাকাল। তারপর বলল,
“মানে? মানে কি? আমি তোমার প্রপোজাল একসেপ্ট করে নিলে ভালো ভালো খেতে পারব? আমি ভালো খাওয়ার জন্য তোমার প্রেম প্রস্তাব একসেপ্ট করে নেব? সিরিয়াসলি? আমি মরে যাব তবুও নিজেকে, নিজের আত্মসম্মান বিসর্জন দেব না।”

ফালাক কি বুঝাতে চাইল আর ব্যাপারটা কোন দিকে চলে গেল।
“রুহানি আমি এটা বলতে চাই নি। তুমি ভুল বুঝছো।”

“আপনার আইসক্রিমের টাকা আমি দিয়ে দেব। এখন এখান থেকে চলে যান। আমাকে খেতে দিন।”
ফালাক রাগ দেখিয়ে উঠে দাঁড়াল। নিজের হাতের অর্ধ খাওয়া আইসক্রিমটা টেবিলে রেখে বলল,
“যাচ্ছি, শান্তি মতো খাও তুমি।”

ফালাক চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরে রুহানির খেয়াল হলো টেবিলে ফালাক নিজের ফোন রেখে গেছে। রুহানি আশেপাশে ফালাককে খুঁজল। কিন্তু না পেয়ে দ্রুত খাওয়া শেষ করে ফোন হাতে ক্যান্টিন থেকে বের হয়ে গেল। রুহানি কি মনে করে ফোনের পাওয়ার বাটন চাপল। স্কিনে রুহানির একটা ছবি জ্বলজ্বল করছে। রুহানির বুক ধুক করে উঠল। রুহানি দ্রুত পাওয়ার বাটন চাপল।
ফালাক দু-তিন জনের সাথে দাঁড়িয়ে আছে কিন্তু কথা বলছে একটা মেয়ের সঙ্গে।

রুহানি ভেবেছিল ফালাকের হাতে গিয়ে ফোনটা দিবে। কিন্তু এখন আর ওর যেতে ইচ্ছে করছে না। ফালাক একটা মেয়ের সঙ্গে কথা বলছে আর ওখানে ওর যাওয়াটা ওর কাছে অস্বস্তিকর লাগছে। রুহানি বিরবির করে বলছে,
“ওদিকে আমাকে ভালোবাসার কথা বলছে আর এদিকে একটা মেয়ের সঙ্গে কি সুন্দর কথা বলছে। অসভ্য, ইতর।”
শুভ রুহানিকে আড়চোখে দেখছে। রুহানি দাঁড়িয়েই আছে৷ শুভের চোখে চোখ পড়তেই ইশারা করল সামনে আসার জন্য।

শুভ রুহানির কাছে আসতেই রুহানি ফোন বাড়িয়ে দিয়ে বলল,
“ভাইয়া এটা ফালাকের ফোন। ভুলে ক্যান্টিনে ফেলে এসেছে। আপনি দিয়ে দিবেন প্লিজ।”

“তুমি তো নিজেই গিয়ে দিতে পারতে।”

রুহানি আরেকবার ফালাকের দিকে তাকাল। তারপর বলল,
“দরকার নেই। আমি যাব না ওর সামনে। আপনি দিয়ে দিবেন।”
রুহানি যাওয়ার আগে ফালাকের দিকে তীক্ষ দৃষ্টিতে আরেকবার তাকাল।

শুভ দৌড়ে গিয়ে ফালাককে টেনে অন্য পাশে নিয়ে গেল। ফালাক টানাটানির কারণ বুঝতে না পেরে ওর দিকে তাকাল।
“ভাই, ভাবি তো জ্বলছে।”

ফালাক ভরকে গিয়ে বলল,
“ভাবি জ্বলছে মানে? কোন ভাবি?”

শুভ ফালাকের ফোন দেখিয়ে বলল,
“রুহানি। তোর ফোন দিতে এসেছিল। এলিনার সাথে তোকে কথা বলতে দেখে একা একাই রাগে ফুসফুস করছে। আমার হাতে ফোন দিয়ে বলল তোকে যেন দিয়ে দেই। তোকে নিজে গিয়ে দিয়ে আসার কথা বললে সে কি রাগ।”

ফালাক শুভর কথা শুনে বলল,
“সত্যি বলছিস? ও জ্বলছে? ভুল দেখিস নি তো?”

“আমার চোখে কি সমস্যা? আমি ভুল কেন দেখব? আমি ওর চোখ মুখ দেখেছি। তুই দেখলেও বুঝতে পারতি ভাই। সে কি আগুন ওই চোখে।”

শুভর কথা শুনে ফালাকের চোখ চকচক করছে খুশিতে।

রুহানি কলিং বেল বাজাতেই ওর মা হাসি মুখে দরজা খুলে দিল। রুহানি ভেতরে গিয়ে শকড। বিস্ময় প্রকাশ করতে পারছে না। ওর বাবা মার দিকে প্রশ্নাত্মক দৃষ্টিতে তাকাল। আহিল বসে বসে রুহানের সাথে কথা বলছে। রুহানিকে দেখে উঠে দাঁড়াল।
“হায়, রুহানি কেমন আছো?”

রুহানি মুখ গম্ভীর করে বলল,
“জি ভালো আছি।”
তারপর ওর মা’র দিকে চেয়ে বলল,
“আমি খুব টায়ার্ড ভেতরে যাচ্ছি, ফ্রেশ হবো।”
রুহানির এই মুহুর্তে প্রচন্ড রাগ হচ্ছে। আহিল এখানে কি করছে আর ওর বাবা-মা এলাও করল কেন?

চলবে….

#প্রিয়_অভিমান🥀🥀
#ফাবিহা_নওশীন

|পর্ব-১৯|

রুহানি বারান্দায় দাঁড়িয়ে ভেজা চুল মুছছে। ওর দৃষ্টি নিচের কালো গাড়িটির দিকে। আহিল ফোনে কথা বলতে বলতে গাড়িতে উঠছে। কিছুক্ষণের মধ্যে গাড়িটা বেরিয়ে গেল বাড়ির সীমানা থেকে। রুহানি তোয়ালে রেলিঙের উপর মেলে ঘরে এলো। আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই ওর মা ঘরে ঢুকল। রুহানি আড়চোখে মায়ের দিকে তাকাল। মায়ের মুখে হাসি লেগে আছে, তৃপ্তির হাসি। অনেক দিন পরে এত খুশি দেখছে।

রুহানি মায়ের দিকে ঘুরে দাঁড়াল।
“মা, এই আহিল এখানে কেন এসেছিল? কি করতে এসেছে?”

রুহানির মা ওকে বিছানায় বসিয়ে পাশে বসে বলল,
“তোর বাবাকে দেখতে এসেছিল।”

রুহানি অবাক হয়ে বলল,
“বাবাকে দেখতে এসেছিল? কেন? বাবার জখম তাজা করতে এসেছে? খুব দরকার ছিল কি? তুমি এলাও কেন করেছো?”

“রুহানি, রুহানি, আমার কথা শোন৷ আগেই রিয়েক্ট করে বসিস না। আহিল এসবের কিছুই জানতো না। আমাদের সাথে, তোর সাথে কি হয়েছে, আমাদের বর্তমান অবস্থা এসব কিছুই জানতো না। না জানার কারণও তুই ভালো করে জানিস। ও আমেরিকায় সেটেল আর তুই চাস নি ও তোর সাথে যোগাযোগ করুক। তাই আমাদের কোনো খবরই ওর কাছে পৌঁছে নি। গত পরশু দেশে ফিরে তোর খোঁজ করতেই ওর বাবা-মার কাছে সব জানতে পারে। তারপর আমাদের ঠিকানা জোগাড় করে তোর বাবাকে, আমাদের দেখতে এসেছে।”

রুহানি উঠে দাঁড়িয়ে বলল,
“দয়া দেখাতে এসেছে। বেশ করেছে। শুধুমাত্র ভদ্রতার খাতিরে আমি চুপ করে ঘরে চলে এসেছি। নয়তো…. ”

“রুহানি, আহিল প্রথমেই এসে তোর বাবার কাছে ক্ষমা চেয়েছে। ওর বাবা-মাকে বুঝিয়েছে। ওর বাবা-মা আসবে তোর আর আহিলের বিয়ের ব্যাপারে কথা বলতে।”

রুহানি চমকে মায়ের দিকে তাকাল। ওর মা হাসছে। আহিলের সাথে আবারও সম্পর্কের জোরা লাগায় ওর মা খুব খুশি।

রুহানি ক্ষিপ্ত গলায় বলল,
“কি বলছো তুমি? বিয়ে, কিসের বিয়ে?”

রুহানির মা ওর কথা বুঝতে পারছে না। রুহানির এমন একটা নিউজ শুনে খুশিতে পাগল হয়ে যাওয়ার কথা সেখানে রাগ দেখাচ্ছে।
“আমি কোন বিয়ে করছি না এটা মাথায় ঢুকিয়ে নেও।”

রুহানির মা রুহানিকে শান্ত করার চেষ্টা করে বলল,
“তোর রাগ করাটাই স্বাভাবিক। আহিলের উপর তোর রাগ অভিমান স্বাভাবিক হলেও এখানে তো ওর কোনো দোষ নেই। ও তো তোকে এখনো বিয়ে করতে চায়।”

রুহানি চিৎকার করে বলল,
“কিন্তু আমি চাই না। আর কিসের রাগ, অভিমান? আমি উনার উপর রাগ-অভিমান কেন করব? মানুষ রাগ-অভিমান তার উপরই করে যাকে আপন ভাবে কিন্তু আহিল আমার আপনজন নয়। মোটকথা আমি বিয়ে করছি না। প্লিজ মা এসব নিয়ে বাড়াবাড়ি করো না।”

রুহানির মা কটাক্ষ দেখিয়ে বলল,
“রুহানি আমি বাড়াবাড়ি করছি না তুই বাড়াবাড়িটা করছিস? বিয়ের ব্যাপারটা নতুন নয়। দু বছর আগে থেকে বিয়ের কথা হয়ে আছে। শুধু মাঝে একটা ঘটনা ঘটে গেছে। তাহলে এমন রিয়েক্ট কেন করছিস?”

রুহানি নিজেকে দেখিয়ে বলল,
“দেখো, আমাকে ভালো করে দেখো। আমি আর সেই রুহানি কি এক আছি? পুরনো আমিটাই যখন নেই তখন পুরনো কথা বলে কি লাভ?”

রুহানির কথা শুনে ওর মায়ের চোখে পানি চলে এলো।
“রুহানি বিয়েটা হলে সব ঠিক হয়ে যাবে। তুই অনেক ভালো থাকবি। আর তোকে কষ্ট করতে হবে না।”

রুহানি শুকনো হেসে বলল,
“কষ্টকে আমি আর ভয় পাই না। আমি আমার জীবনের লক্ষ্য স্থির করে নিয়েছি মা। বিয়ের কথা ভুলে যাও। সে স্বপ্ন আমার আর নেই। আমি তোমাদের সাথেই সারাজীবন থাকতে চাই।”

“তুই কি ভাবছিস বল তো? তোর বাবা উপার্জনে অক্ষম, তুই সংসারের হাল ধরেছিস। তোর ইনকামে সংসার চলছে তাই তোকে আমরা বিয়ে দেব না? তোকে সারাজীবন নিজেদের কাছে রেখে দেব তোর ইনকাম খাওয়ার জন্য? তুই যদি এটা ভেবে থাকিস তবে ভুল। তোকে অবশ্যই বিয়ে দিতাম, হয়তো তোর যোগ্যতা অনুযায়ী শ্বশুর বাড়ি তোকে পাঠাতে পারতাম না কিন্তু বিয়ে তো দিতেই হতো। আজ যখন আহিল নিজে এসেছে ওকে পায়ে ঠেলে কেন দেব? এমন সুযোগ আর দু’বার আসবে না। আমাদের যা অবস্থা ভালো ঘর থেকে বিয়ের প্রস্তাব আসবে না। রুহানি অবুঝ হোস না। বুঝার চেষ্টা কর। এ নিয়ে আর কথা বলবি না। আহিলের বাবা-মা আসলে যত দ্রুত সম্ভব তোর বিয়ে দিয়ে দেব।”

রুহানি বিস্ময় নিয়ে ওর মা’য়ের দিকে তাকাল। তারপর বলল,
“আমি চলে গেলে তোমাদের কি হবে? সংসার চলবে কি করে? আর বাবার ওষুধ? কিভাবে বলছো মা?”

রুহানির মা দৃষ্টি নামিয়ে বলল,
“ওসব তোকে ভাবতে হবে না। ব্যবস্থা একটা হয়ে যাবে।”

রুহানি ওর মা’কে পর্যবেক্ষণ করে শক্ত কন্ঠে বলল,
“হয়ে যাবে না হয়ে গেছে? আহিল কোন টেনশন করতে না করেছে তাই না?”

রুহানির মা কিছু বলছে না। চুপ করে আছে। রুহানি পা এলিয়ে দিয়ে বসে বলল,
“এই দিনের জন্য এত কষ্ট সহ্য করেছি? আমাকে বেঁচে দিচ্ছো?”

রুহানির মায়ের যেন রক্ত মাথায় উঠে গেল। রুহানিকে সজোরে এক থাপ্পড় মেরে বলল,
“তুই কি পণ্য যে তোকে বেঁচে দেব? না খেয়ে মরে গেলেও কোন বাবা-মা নিজের মেয়েকে বেঁচে দেয় না। যারা দেয় তারা বাবা-মা না। আহিল যথেষ্ট ভালো ছেলে। তোর জন্য একদম পারফেক্ট। খুব সুখে থাকবি। তুই না চাইলেও তোকে এই বিয়ে করতে হবে।”

রুহানির মা দরজা পর্যন্ত গিয়ে থেমে গেল। পেছনে ঘুরে রুহানির দিকে তাকাল। রুহানি কাঁদছে। রুহানিকে উদ্দেশ্য করে বলল,
“আর হ্যা ভিখারি নই যে মেয়ের জামাইর টাকায় খাব। আহিল বলেছে বিজনেসটা দাঁড় করাতে সাহায্য করবে, তারপর নাহয় ওর টাকা ফেরত দিয়ে দেব। ছেলেটা যথেষ্ট বুদ্ধিমান। বুঝতে পেরেছে হাত পেতে টাকা নেব না। এটুকু তো মেয়ের জামাইর উপর অধিকার থাকে। সে সীমা কখনো লঙ্ঘন করব না।”
তারপর ঠাস করে দরজা বন্ধ করে চলে গেল। রুহানি শব্দ করে কেঁদে দিল।
“এদের জন্য আমি এতদিন এত কষ্ট সহ্য করেছি? এদের জন্য নিজের জীবনের স্বাদ-আহ্লাদ,স্বপ্ন সব বিসর্জন দিতে চেয়েছি? যাদের জন্য এতকিছু করলাম আজ তাদের কাছে আমার মতামতের কোন মূল্য নেই। আহিল এখন সব? এতদিন কোথায় ছিল? যখন প্রয়োজন ছিল তখন তো আসেনি। আমি বলেছিলাম আমার সাথে যোগাযোগ না করতে তার মানে তো এই নয় যে আমার কোন খোঁজ রাখবে না। এত কষ্টের পর আজ যখন সব গুছিয়ে নিয়েছি তখন সব তছনছ করতে চলে এসেছে।”

রুহানির শ্বাস আঁটকে আসছে। কান্নাটাও দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। শান্তিতেও কাঁদতে পারে না। বুকে চাপ লাগে, দম বন্ধ হয়ে আসে। রুহানির পিপাসা পেয়েছে খুব। পানি খাওয়া দরকার। শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। রুহানি রুহানকে ডাকার চেষ্টা করছে। উঠে গিয়ে দরজা খুলতেই রুহানকে ড্রয়িংরুমে টিভি দেখতে দেখল। রুহান দরজা খোলার শব্দে পেছনে ঘুরে। রুহানির অবস্থা দেখে দৌড়ে আসে।
রুহান ভয়ার্ত কন্ঠে বলল,
“আপু কি হয়েছে? এমন করছো কেন?”

রুহান রুহানিকে বসিয়ে দ্রুত পানি নিয়ে এলো। রুহানিকে পানি খাওয়াতেই রুহানি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে লাগল।
রুহানিকে স্বাভাবিক দেখে রুহান বলল,
“আবার এই ঘটনা কেন ঘটলো আপু?”

রুহানি চোখের পানি মুছে বলল,
“কেঁদেছিলাম তাই। বাবাকে আর মা’কে কিছু বলার দরকার নেই। কেঁদেছি জানলে নানা প্রশ্ন করবে।”

“কাঁদছো কেন আপু?”

“প্রশ্ন তাহলে শুরুই করে দিলি?” রুহান ওর চোখের দিকে একবার চেয়ে চোখ নামিয়ে বলল,
“সরি আপু।”

রুহানি মন খারাপ করে নুশা আর রনকের সাথে বসে আছে। রুহানি চুপচাপ কফি খাচ্ছে। নুশা রনকের দিকে তাকিয়ে ইশারায় জিজ্ঞেস করল রুহানির মুড অফ কেন, রনক ইশারায় বলল জানে না।
নুশা তাই বাধ্য হয়েই জিজ্ঞেস করল,
🤨”রুহানি মুড অফ কেন?”

রুহানি মন খারাপ করে বলল,
“আরেক মসিবত এসে ভীড় করেছে।”

নুশা আবারও প্রশ্ন করল,”কি?”

“কি না কে? আহিল! আহিল আমাদের বাড়িতে এসেছিল। আমার তো ইচ্ছে করছিল ওকে মেরে দেই।”

নুশা অস্ফুট স্বরে বলল,”আহিল! এতদিন পর?”

“আমার সুখের জীবন নষ্ট করতে এসেছে। আগামীকাল দেখা করবে দেখি কি বলে। আমি এখন উঠি রাতে ইনস্টিটিউটের ফাংশন আছে। আমাকে যেতে হবে।”

রুহানি উঠে দাঁড়াতেই দূরে ফালাককে দেখতে পেল। ফালাকের চোখে চোখ পড়তেই মুচকি হাসল। রুহানি বই দিয়ে নিজেকে আড়াল করে বাইরে বের হচ্ছে। ফালাক রুহানির কাছে না এসে ওখানেই দাঁড়িয়ে রইল।

.

রাত ১১টা। প্রোগ্রাম শেষ হওয়ার নামই নেই। রুহানি বারবার ঘড়ি দেখছে। ওর বাসা থেকেও ফোন আসছে। কিন্তু ওর স্যার না বলা পর্যন্ত ও যেতে পারবে না। এসিস্ট্যান্ট তাই সব জায়গায় সব কাজে এসিস্ট করতে হবে। রুহানিকে বারবার ঘড়ি দেখতে দেখে ইমন বলল,
“এনি প্রব্লেম রুহানি?”

“জি স্যার। কত রাত হয়ে গেছে। বাসা থেকে ফোন আসতেছে বারবার। মা’কে বলার পরেও বুঝতে চাইছে না। টেনশন করছে।”

“ঠিক আছে তাহলে তুমি চলে যাও। আমি ম্যানেজ করে নেব।”

রুহানি খুশি হয়ে বলল,”ধন্যবাদ স্যার।”

রুহানি আজ গাড়িও নিয়ে আসে নি। গাড়িতে তেল নেই। আর তেল কিনতে টাকা লাগবে তাই গাড়ি ছাড়াই এসেছে। একটা রিকশা পেয়ে গেলেই হলো।
কিন্তু অনেকক্ষণ যাবত দাঁড়িয়ে থাকার পরেও রিকশা, অটো কিছুই পাচ্ছে না। রুহানি স্ট্যান্ডের দিকে এগিয়ে গেল। স্ট্যান্ডে এসে আরেক বিপদে পড়ল। নীরব-নিস্তব জায়গা। মানুষ জন কিছুই নেই। গা ছমছমে পরিবেশ। এই অন্ধকারে রুহানির অনেক ভয় লাগছে।
রুহানি ফোনের টর্চ জ্বালিয়ে হেঁটে যাচ্ছে সামনের দিকে। আর মনে মনে দোয়া দরুদ পড়ছে। শা শা করে গাড়ি ছুটে যাচ্ছে লম্বা সময়ের ব্যবধানে। যা রুহানির ভয় বাড়িয়ে দিচ্ছে।

একটা গাড়ি ধীরে ধীরে ওর পেছনে পেছনে আসছে। রুহানি অনেকক্ষণ ধরে ব্যাপারটা খেয়াল করছে। পেছনে না দেখে দ্রুত পা চালাচ্ছে। ওর গতির সাথে গাড়ির গতিও বাড়ছে। রুহানির সারা শরীরে কম্পন অনুভুত হচ্ছে। হৃদপিণ্ডটা দ্রুত বেগে চলছে। ভয়ে কুকঁড়ে যাচ্ছে।

হটাৎ করে ওর পেছনে পায়ের আওয়াজ শোনা যায়। একটা কন্ঠে নিজের নাম শুনে বুক ধুকপুক করে উঠলেও থেমে পেছনে ঘুরে রুহানি। পেছনের মানুষটাকে দেখে সাহস পায়। দু’পা সেদিকে এগিয়ে গিয়ে বলল,
“তুমি! এখানে কি করছো? তুমি আমাকে ইচ্ছে করে ভয় দেখাচ্ছিলে?”

ফালাক মুখ ইনোসেন্ট করে বলল,
“আমি তোমাকে কখন ভয় দেখালাম? তুমি একা একা এই রাস্তা দিয়ে হাঁটছো তাই এলাম।”

রুহানি আর কিছু বলল না।
ফালাক শক্ত কন্ঠে বলল,
“এত রাতে একা একা এই নিরিবিলি, অন্ধকার রাস্তা দিয়ে হাঁটছো কেন? জানো না এই রাস্তাটা ভালো না?”

রুহানি মনে মনে বলছে, “কিছু করার নেই। রিক্স নিয়েই জীবন চালাতে হয় আমাদের। জীবন বাঁচানোর জন্য জীবনকেই বিপদে ফেলতে হয়।”

রুহানিকে চুপ দেখে ফালাক ধমকে বলল,
“এই জব ছেড়ে দেও। এত রাতে বাইরে থাকতে হয় এমন জব করার দরকার নেই।”

রুহানি ভ্রু কুঁচকে ফালাকের দিকে তাকাল। তারপর আবার সামনের দিকে হাঁটা দিল। ফালাক ওর পেছনে যেতে যেতে বলল,
“কোথায় যাচ্ছো তুমি? থামো বলছি।”

“আমি বাসায় যাচ্ছি। আমার পেছনে আসবে না।”

“আমি তোমাকে দিয়ে আসব। এত রাতে একা একা তোমার যেতে হবে না। আমার গাড়িতে আসো।”

“দরকার নেই আমি যেতে পারব। কারো সাহায্য প্রয়োজন নেই।”

ফালাক রুহানিকে থামানোর জন্য মিথ্যে বলল,
“যাও, সামনে গাজাখোড়দের আড্ডা খানা। ওদের সাথে গিয়ে আড্ডা দেও। দেখবে কত সুন্দর ভাষায় তোমার সাথে কথা বলে।”

রুহানি ফালাকের কথা শুনে ভয় পেয়ে দাঁড়িয়ে যায়৷ তারপর পেছনে ঘুরে ফালাকের দিকে ভয়ার্ত দৃষ্টিতে চেয়ে বলল,
“সত্যিই কি তাই?”

“বিশ্বাস না হলে আরো দশ মিনিট হেঁটে দেখো। আমি যাচ্ছি টাটা। আমার কাজ আছে।”

রুহানি ফালাকের কাছে এসে বলল,
“একটা মেয়েকে এভাবে ফেলে চলে যাচ্ছেন? মানবতা বলে কিছু নেই,?”

“যাক বাবা, এখন আমার দোষ? আমি তো বলেছিলাম তুমিই শুনো নি… ”
রুহানি ফালাকের সাথে কথা না বাড়িয়ে গাড়ির দরজা খুলে ওঠে বসে।

.

হালকা আলোয় ফালাকের হাস্যোজ্জ্বল মুখটা স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে। রুহানির ডাউট হচ্ছে। ফালাক মিটমিট করে হাসছে কেন?
“আপনি এই রাস্তায় কি করছিলেন? আপনার বাসা, অফিস কোনটাই এদিকে না। তবে কি করছিলেন?”

“তোমাকে ফলো করছিলাম।”
কি এটা বলব আশা করেছিলে? আমার কি আর কাজ নেই? আমি একজনের সাথে মিট করতে এসেছিলাম। তোমাকে দেখলাম ভয়ে ভয়ে হাঁটছো তাই লিফট দিতে চাইলাম।”

রুহানি ফালাকের কথা শুনে মুখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে নিল।ফালাক আড়চোখে রুহানিকে দেখছে।

চলবে……!

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ