Sunday, October 5, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"প্রিয় অভিমান পর্ব-১৫+১৬

প্রিয় অভিমান পর্ব-১৫+১৬

#প্রিয়_অভিমান🥀🥀
#ফাবিহা_নওশীন

|পর্ব-১৫|

ফালাক টেবিলের উপর কনুই ভর দিয়ে গালে হাত দিয়ে বসে আছে। রুহানি পানি খাচ্ছে। হটাৎই মনে হচ্ছিল শ্বাস আঁটকে মরে যাবে। পানি খেয়ে একটু ভালো লাগছে। রুহানি টেবিলের উপর গ্লাস রেখে ফালাকের দিকে তাকাল। ফালাক সোজা হয়ে বসল।

“সেদিনের পর থেকে আমার উপর ওর ভীষণ ক্ষোভ। এতদিন শুধু সুযোগ খুঁজেছে আর এই ট্যুরে এসে সে সুযোগ পেয়েও গেছে। জানি না এখন ও কি করবে। যদি উল্টো পাল্টা কিছু করে বুঝতে পারছি না।”
রুহানির খুব টেনশন হচ্ছে। বাবা-মার কানে যদি যায় মাতাল হয়ে সারারাত একটা ছেলের সাথে ছিল তবে কি হবে। রুহানি মাথায় হাত দিয়ে বসে রইল। তবে তায়েফ যদি সত্যিই কিছু করে তবে ওর মার্ডার করে দিবে। তারপর যা হওয়ার হবে।

ফালাক আশ্বস্ত করে বলল,
“ডোন্ট ওরি! কিছু হবে না। আমি ওর সাথে কথা বলছি। এই বিষয়টায় আমিও জড়িয়ে আছি। যদিও ছেলে হওয়ায় সমাজ আমার উপর কোনরূপ দোষারোপ করবে না। তবুও আমি তোমার কিংবা আমার বদনাম হতে দেব না।”

রুহানি ফালাকের কথায়ও আশ্বস্ত হতে পারছে না। ওর নিজেরই কিছু করতে হবে। রুহানির ফোন বেজে উঠল। ওর মা ফোন করেছে। ফালাক ওর ফোন বাজতে দেখে বলল,
“আমি আসছি।”

রুহানি ফালাককে বিদায় দিয়ে ফোন রিসিভ করে নিল।

.

তায়েফ কানে হেডফোন গুজে ফোনে স্ক্রল করতে করতে হাঁটছে। হটাৎই হোঁচট খেয়ে পড়ে গেল। হাতের ফোনটা ছিটকে দূরে পড়ে গেল। ফালাক ওর সামনে বসে বলল,
“আহারে! কি করে পড়লে? ফোনের ভেতর ঢুকে থাকলে এমন তো হবেই।” ( পড়ে থাকা ফোনের দিকে দৃষ্টি দিয়ে)

ফালাক তায়েফকে না তুলে ফোনটা হাতে নিয়ে বলল,
“এত দামী ফোনটা এভাবে মাটিতে পড়ে থাকা মানায়?”

তায়েফ নিজে নিজে উঠে দাঁড়িয়ে জামাকাপড় ঝাড়তে ঝাড়তে রাগে গর্জে উঠে বলল,
“ল্যাং মারলেন কেন? ফেলে দিয়ে আবার নাটক করছেন?”

“আরে কুল! এগুলো তো তোমাদের কাছেই শেখা।”

তায়েফ হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলল,
“আমার ফোন দিন।”

ফালাক ফোনটা পকেটে রেখে বলল,
“ওয়েট, এত পাগল হচ্ছো কেন?”

তায়েফ ফালাকের আচরনে খানিকটা অবাক হচ্ছে। কি করতে চাইছে আর কেনই বা ওর কাছে এসেছে।

ফালাক ওর আরেকটু কাছে এসে দু-হাত ভাজ করে বলল,
“রুহানির ড্রিংক চেঞ্জ করেছিস কেন?”

ফালাকের কথা শুনে তায়েফ ঘাবড়ে গেল। তারপর কনফিডেন্সের সাথে বলল,
“ফালতু কথা বলবেন না। আমি কেন ওর ড্রিংক চেঞ্জ করব?”

ফালাক মুচকি হাসল।
“আমার কাছে প্রুভ আছে। তুই যার সাহায্যে করেছিস সেই বলেছে। বারবার ভার্সিটি কর্তৃপক্ষ বলে দিয়েছে এলকোহল এলাও না। তবুও এনেছিস। আর তারপর একটা মেয়েকে ছলনা করে খাইয়েছিস। এই পর্যন্ত মানা যেত তারপর ওকে আমার রুমের সামনে পাঠিয়েছিস, ভিডিও করেছিস। এখন সেটা ভাইরাল করার জন্য হুমকি দিচ্ছিস। তোর কি মনে হচ্ছে ফালাক তোর হাড়-গোড় ভাঙবে না? তোকে ছেড়ে দিবে? আমি যথেষ্ট ভদ্র একটা ছেলে কিন্তু কতটা ডেঞ্জারাস তুই তো দেখিস নি। বাবা-মার একমাত্র ছেলে হওয়ায় সব সময়ই আদুরে। কেউ কখনো আমার একটা চুলও স্পর্শ করতে পারে নি। এইবারেও পারবি না। ভার্সিটিতে কমপ্লেইন তো অবশ্যই করব পাশাপাশি মানহানীর মামলা ঠুকে দেব। আমি ইয়ং বিজনেসম্যান। নিজের পরিচিতি গড়ার আগেই তোর জন্য সেটা নষ্ট হতে দেব? আমার ক্যারিয়ারের উপর কারো আঁচড় আমি সহ্য করব না। রেডি থাক তোর এই অপরাধের শাস্তি খুব দ্রুতই পাবি।”

তায়েফ ফালাকের রাগী কন্ঠের কথাগুলো শুনে ঘাবড়ে গেল। রুহানির সাথে যে ফালাকও জড়িয়ে আছে সেটা ভুলে বসেছিল। কিন্তু এতদিনে এমন একটা সুযোগ পেয়েছে রুহানিকে শায়েস্তা করার জন্য সেটা ভয় পেয়ে হাতছাড়া করে দিবে? আর কি এমন মূখ্যম সুযোগ আসবে? কিন্তু ফালাকের সাথে যদি নতুন করে কোন ঝামেলা হয়? ফালাকের হিংস্র চোখ-মুখ বলছে ফালাক ওকে ছেড়ে দিবে না। তায়েফ সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে।
ফালাক রুহানির জন্য এটা করলেও নিজের নাম ভাঙ্গাচ্ছে যাতে তায়েফ ভয় পায়। যাতে না বুঝে রুহানিকে বাচানোর জন্য এসব করছে।
ফালাক তায়েফের দিকে চেয়ে আছে। ওর ভাব মতিগতি বোঝার চেষ্টা করছে। কিন্তু কিছুই বুঝতে পারছে না। বাট ফালাক এটা ভেবে নিশ্চিন্ত যে ফোনটা ওর হাতে।

তায়েফ আড়চোখে ফালাককে দেখল। তারপর বলল,
“আমার ফোনটা দিন। আমি এসব কিছু করি নি। আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে।”

তায়েফের কথা শুনে ফালাকের মাথায় যেন ধপ করে আগুন জ্বলে উঠল। ফালাক ওর দিকে চোখ মুখ শক্ত করে তাকাল। হাতের মুঠে ফোনটা এমন ভাবে ধরেছে যেন ভেঙে চুরমার করে দিবে। ফালাক ফোনটা পাশের পুকুরে ছুড়ে মারল। তায়েফ চোখ বড়বড় করে তাকাল। তারপর চিৎকার করে বলল,
“আমার ফোন!”

ফালাক ওর কলার চেপে ধরে বলল,
“যা তুলে নিয়ে আন তোর ফোন। ভালো কথায় মন ভরে নি এখন শোক কর। বেশি বাড়াবাড়ি করবি মেরে পুতে দেব। রুহানির থেকে একশো হাত দূরে থাকবি। নয়তো ও একাই যথেষ্ট তোকে মেরে গেড়ে দিতে। দেখ তোর জন্য ও কি ভেবে রেখেছিল। আমি হয়তো তোর ফোন ফেলে তোকে বাঁচিয়ে দিলাম। ধন্যবাদ দে।”

তায়েফ ফালাকের দিকে আগুন চোখ নিয়ে তাকাল। যেন এই আগুনে ওকে ঝলসে দিবে।
“আর ইউ ম্যাড?”
ফালাক মুচকি হাসল। তারপর বলল,
“ইয়া আ’ম ম্যাড। তবে কিসের জন্য সেটা এখন বুঝবি না। বাচ্চা মানুষ।” (কলার ঠিক করতে করতে)
ফালাক আবারও আলতো হেসে চলে যাচ্ছে। তায়েফ ওভাবেই দাঁড়িয়ে আছে। ফালাক পেছনে ঘুরে বলল,
“নিউ ফোন পেয়ে যাবি টেনশন করিস না।”
ফালাক আবারও হাসছে। এই প্রথম কারো জন্য এমন পাগলামি করল, কাউকে হুমকি দিল। সব সময় নিজের জন্য অন্যের সাথে লড়েছে আর আজ রুহানির জন্য। যে কি-না ওর বন্ধু, আত্মীয় নয়।

রুহানি তায়েফকে খুঁজছে। ও কারো হেল্পও নিতে পারছে না। কারণ বন্ধুরা কেউ জানেই না গতকাল রাতের ঘটনা আর না জানাতে চায়। ও একাই দেখে নিবে। তায়েফকে খুঁজে পেলেই ইচ্ছে মতো মারবে তারপর ফোন কেড়ে নিবে। আগের মুডে চলে এসেছে, তায়েফ বাধ্য করল।

“বাঘিনী শিকার খুঁজতে বের হয়েছে বুঝি?”
ফালাকের কন্ঠস্বর শুনে রুহানি ডান দিকে তাকাল। ফালাক দাঁড়িয়ে আছে। ফালাক ওর কাছে এগিয়ে আসতেই রুহানি বলল,
“ওকে আমি আমার পরিবারের সম্মান নিয়ে খেলতে দেব না। ওকে একবার পাই।”

“ডান!”

রুহানি চমকে ওর দিকে তাকাল। ওর ঠোঁটের কোনে রহস্যময় হাসি।
“ডান মানে?”

“বেচারা হাঁটতে হাঁটতে টাইপিং করছিল। তারপর সুযোগ বুঝে ল্যাং মারলাম যেমনটা তুমি করেছিলে। ও পড়ে গেল ওর ফোন তুলে নিলাম। ইচ্ছে মতো হুমকি দিলাম। ও নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও এলকোহল এনেছে, তোমার ড্রিংক চেঞ্জ করেছে তার প্রমাণ আছে আমার কাছে। যদিও নেই। এছাড়া ইচ্ছে করে তোমাকে আমার রুমে পাঠিয়েছে আমার বদনাম করার জন্য। তাই আমি ওর নামে মামলা করব, ভার্সিটি কর্তৃপক্ষকে জানাব ব্লা ব্লা হুমকি দিয়ে ওর ফোন…”

রুহানি চট করে বলল,”ডিলিট করে দিয়েছো?”

“আরে না, ফোন নিয়ে পুকুরে ফেলে দিয়েছি। ঠিক পুকুর না, নর্দমা টাইপ পুকুর।”

রুহানি ফালাকের কথা শুনে ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেল। এটা ফালাক তো! ওর দিকে সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকাল।
“ফেলে দিয়েছ? মাই গড! তোমাকে কিছুতে আছড় করেছে?”

“হ্যা, রুহানি!”
রুহানি ওর কথা শুনে ভরকে গেল। ফালাকও মুখ ফসকে কি বলতে কি বলে ফেলল। ফালাক কথা ঘুরানোর জন্য বলল,
“না মানে, তোমার টেকনিক ব্যবহার করেছি, মানে তোমাকে অনুসরণ করে ওকে শায়েস্তা করেছি তাই বললাম রুহানি। এছাড়া আর কি করার ছিল। আমার মানসম্মানও তো জড়িত ছিল। তাই না?”
তারপর রুহানির দিকে তাকাল।
রুহানি ভ্রুক্ষেপ না করে বলল,
“হ্যাঁ”
ফালাকের দিকে আরেকবার আড়চোখে তাকাল। ফালাক কেমন অদ্ভুৎ আচরণ করছে।
রুহানি একটা টেনশন থেকে রক্ষা পেল। বাকি একটা দিন খুব সাবধানে কাটাল।

.

রুহানির মা ওর বাবাকে ওষুধ খেতে দিলেন। তারপর পাশে বসে রইলেন চুপ করে। রুহানির বাবা ওর মাকে উদাস দেখে বলল,
“কি হয়েছে?”

রুহানির মা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল,
“বুঝতে পারছি না কি করব। বাঁচব কি করে। টাকা পয়সা সব শেষ। যা বাজার আছে তাতে ৪-৫দিন চলবে। তারপর! তারপর কি করব?”

রুহানির বাবা মাথা নিচু করে নিলেন। উনার নিজেরও জানা নেই কি করবে। ছেলে-মেয়েদের না খেয়ে মরতে দেখবেন? নিজের উপর রাগ হচ্ছে। ছেলে-মেয়ের জন্য কিছু করতে পারছেন না বরং তাদের বোঝা হয়ে আছেন। মাঝেমধ্যে ইচ্ছে করে আত্মবিসর্জন দিতে কিন্তু তারও উপায় নেই। কি করে ছেলে-মেয়ের মুখে খাবার তুলে দিবে?

রুহানি গলায় হাত দিয়ে জামার ভেতর থেকে লকেটটা বের করল। তারপর হুক খুলে হাতে নিল। হীরের লকেট। গত জন্মদিনে বাবা উপহার দিয়েছিলেন। এতটাই পছন্দ হয়েছিল যে সব সময় গলায় পড়ে থাকার সিদ্ধান্ত নেয়। পরিবারের এমন মুহুর্তে এটাই রুহানির শেষ সম্বল। বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিল। কিন্তু বাবার দেওয়া উপহারটা বিক্রি করে দিবে? রুহানি চেয়ার টেনে বসে পড়ল। কি করবে ভাবছে। একদম সাধারণভাবে বসবাস করতে চাইলেও মাসে ওর ত্রিশ হাজার টাকা লাগবে। ভাগ্যিস বাড়ি ভাড়াটা কম দিতে হয়। কেননা যারা ওদের ভাড়া দিয়েছেন তারা নিজেরা বাড়ি দেখভাল করার জন্য নিয়েছিলেন। আর এখন মালিককে না জানিয়ে ভাড়া দিয়েছে। যা পাবে তাই লাভ। বাড়ি ভাড়া, বাবার ওষুধ-পথ্য, ভাইয়ের পড়ার খরচ, সংসার খরচ সব কিছু মিলিয়ে ত্রিশ হাজারে চলা মুশকিল। আর সেখানে ওর হাতে কোন টাকা নেই বললেই চলে।

রুহান ওর পাশে এসে বসেছে। কিছু বলতে চায় কিন্তু বলতে পারছে না। রুহানি ওর চোখ মুখ দেখে বুঝে গেল।
“কিছু বলবি?”

রুহান তখনও চুপ। বলতে চেয়েও বারবার আঁটকে যাচ্ছে। কিন্তু বলতে তো হবেই।
“আপু মা’কে বলতে গিয়ে বারবার ফিরে এসেছি। আমি তো জানি সংসারের কি অবস্থা। কি করে এই মুহুর্তে এই কথা বলব? সাহস হয় নি। তোমাকেও বলতে পারছি না।”

রুহানি ওকে আশ্বাস দিয়ে বলল,
“বল, আমি সমাধান করার সর্বাত্মক চেষ্টা করব।”

“আপু মাস শেষ। স্কুলের বেতন দিতে হবে আর কোচিং-এও অনেক টাকা বাকি পড়ে আছে। কিন্তু মা’কে বলতে পারছি না। আমার পড়াশোনা কি এখানেই শেষ?”
রুহানের কথা শুনে ওর বুকটা মোচড় দিয়ে উঠল।

“না রুহান, আমি আছি তো। তুই পড়াশোনা করবি। পড়াশোনা করে অনেক বড় হবি। আমাদের দুঃখ লাঘব করবি। আমি তোর টাকার ব্যবস্থা করছি। একদম চিন্তা করিস না।”

রুহানি উঠে দাঁড়াল। ছাদে গিয়ে পাইচারি করছে। হাতের ফোনটা নিয়ে ভাবছে কাকে ফোন করা যায়। কার কাছে সাহায্য চাইবে?
তারপর হটাৎ খেয়াল হলো হাতের ফোনটাই বিক্রি করে দিবে। এত দামী ফোন দিয়ে কি করবে? যখন নিজেকেই কম দামী মনে হচ্ছে।

.

নুশা রুহানির সামনে হাসিমুখে বসে আছে। কারণ রুহানি নিজেই অনেক খুশি। রুহানির খুশি দেখে ও নিজেও খুশি।

চলবে……

#প্রিয়_অভিমান🥀🥀
#ফাবিহা_নওশীন

|পর্ব-১৬|

রুহানি, নুশা আর রনকের সামনে কফি রেখে বলল,
“উফফ! ফাইনালি, আমি একটা জব পেয়ে গেলাম। হ্যা এটা ঠিক যে জবটা খুবই ছোট, স্যালারি কম তবে জব পেয়েছি এতেই খুশি। চারদিন কাজ করে আঠারো হাজার পাচ্ছি তাই অনেক।”

রনক কফিতে চুমুক দিয়ে বলল,
“এতে করে ভার্সিটিতে দুদিন ক্লাস করতে পারবে আর বাকি দুদিন মিস যাবে। সেটা আমি কভার করে দেব। চিন্তা করো না। তবে পড়াশোনাটা চালিয়ে যেতে হবে। এই জবে তোমাকে তেমন খাটতেও হবে না।”

রুহানি গালে হাত দিয়ে বলল,
“পড়াশোনাতে আমার আর মন নেই। ইচ্ছে করে না।”

নুশা এতক্ষণ ওদের কথা চুপ করে শুনলেও রুহানির কথা শুনে বলল,
“যে করেই হোক গ্রাজুয়েট করতে হবে। মাঝ রাস্তায় ছেড়ে দিবি? আজীবন কি এই জব করবি? ভালো একটা জব পেতে হলে পড়াশোনাটা শেষ করতে হবে। আপাতত এই জব কর তারপর পড়াশোনা শেষ করে নিশ্চয়ই খুব ভালো একটা জব পাবি। সারাজীবন কেউ তোকে দেখবে না, নিজের ভবিষ্যত নিজেকেই তৈরি করতে হবে।”

রনক তাল মিলিয়ে বলল,
“অবশ্যই। দেখো রুহানি এমন অনেক জবের অফার আমি পেয়েছি কিন্তু রাজি হই নি। এখানে সেখানে টিউশনি করে বেড়াচ্ছি। কারণ কি জানো? আমার মঞ্জিল অনেক বড়। স্বপ্ন যখন দেখবেই বড় স্বপ্ন দেখা উচিত। এত কষ্ট করে পড়াশোনা করছি বড় কিছু হাসিল করার জন্য। পরিবারের দুঃখ লাঘব করার জন্য। স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন পাড় করার জন্য। পার্ট টাইম জব করলে ক্লাস মিস যাবে, পড়াশোনার ক্ষতি হবে তাই করি নি। ভালো রেজাল্ট করে বের হলে ভালো একটা জব পাব সে স্বপ্নই দেখে যাচ্ছি। কিন্তু তোমার ব্যাপারটা আলাদা। তাই পড়াশোনার পাশাপাশি এই জব করার জন্য তোমাকে সাপোর্ট করছি। তবে পড়াশোনা ছাড়ার কথা ভেবো না।”

“এখন না হয় না ভাবলাম কিন্তু আগামী বছর? ভর্তির সময় যাবতীয় খরচ ভার্সিটি রেখে দেয় তাই এ বছর স্বাচ্ছন্দ্যে চলতে পারছি। শুধু ফ্রম ফিলাপ বাকি। কিন্তু আগামী বছর কি করে ভর্তি হব?”

“আগামী বছরেরটা আগামী বছর দেখা যাবে। ভবিষ্যতের ভাবনা ভাবা জ্ঞানীর কাজ তবে ভবিষ্যত ভেবে ভেবে বর্তমান নষ্ট করা বোকামি ছাড়া কিছু নয়।”

রুহানি রনকের দিকে হালকা হেসে চেয়ে বলল,
“বুঝেছি পন্ডিত মশাই। খুব বুঝেছি। চল ক্লাসে যাই। আগামী কাল তো আবার আসতে পারব না।”

ক্লাস শেষে রুহানি ওর বন্ধুদের সাথে কথা বলতে বলতে ধীরে ধীরে সিড়ি দিয়ে নামছে। নুশা বকবক করে যাচ্ছে আর রুহানি তাল দিচ্ছে।

ফালাক নিচে দাঁড়িয়ে রুহানিকে দেখে ওর দিকে চেয়ে আছে। রুহানি সব সময় চুল খোলা রাখে। আজ উঁচু করে ঝুঁটি বেঁধেছে। গলায় একটা স্কাপ। হাতে কয়েকটা পাতলা বই। ফালাক অপলক ওকে দেখছে। রুহানির হটাৎ চোখ গেল ফালাকের দিকে। ফালাক ওর দিকে কিভাবে চেয়ে আছে। অদ্ভুত সে দৃষ্টি। রুহানিও ওর দিকে চেয়ে আছে। তবে ওর চাহুনি সাধারণ। রুহানি ওর দিকে চেয়ে ভাবছে ফালাক হটাৎ ওর দিকে এভাবে চেয়ে আছে কেন? কারণ উদঘাটন করায় ব্যস্ত। তবে আদৌও উদঘাটন করতে পারবে কি ওই গভীর চাহুনির কারণ?

ফালাকের চোখে চোখ পড়ার পরেও ফালাক চোখ সরাচ্ছে না। রুহানির কপালে ভাজ পড়ল। ফালাকের দিকে চেয়ে চেয়েই নামছে। হটাৎ হুচট খেয়ে পড়ে যেতে গেলে নুশা ধরে ফেলে বলল,
“আরে সাবধানে। কোথায় মন রেখে হাঁটছিস?”

রুহানির বুক ঢিপঢিপ করছে। এখনই পড়ে যেত। আমতা আমতা করে বলল,
“তোর কথা শুনছিলাম। আর কোথায় থাকবে মন?”
রুহানি ফালাকের দিকে তাকাল। ফালাক মিটমিট করে হাসছে৷ রুহানি চোখ ছোট ছোট করে নাক ফুলিয়ে ওর দিকে তাকাল। তারপর ভেংচি কেটে ওর দিকে আর না তাকিয়ে চলে গেল। ফালাক তখনও দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে হাসছে। ওর মনে বসন্ত না আসতেও বসন্তের ছোয়া লেগেছে।

.

রুহানি সকাল সকাল রেডি হয়ে নিল। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বারবার জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে। কেন জানি খুব নার্ভাস লাগছে। রুহানি শেষ বারের মতো জোরে শ্বাস নিল। তারপর শেষ বারের মতো আয়নায় নিজেকে দেখে ব্যাগ কাঁধে নিয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেল।
বাবার কাছে গিয়ে বসল।
“বাবা দোয়া করো। অনেক নার্ভাস লাগছে।”

রুহানির বাবা ওর মাথায় হাত দিয়ে বলল,
“সফল হও। আর নার্ভাস হওয়ার কিছু নেই। মনে মনে বলো আর বিশ্বাস করো যে তুমি সব পারো। না পারা নিয়ে সংশয় তোমার মনে ভয় সৃষ্টি করছে। এই ভয়কে হারাতেই হবে। কি পারবে না?”

রুহানি মুচকি হেসে বলল,
“অবশ্যই পারব। পারতে আমাকে হবেই।”

রুহানি উঠে দাঁড়িয়ে মায়ের কাছে গেল। ওর মা-ও মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,
“আমার দোয়া সব সময় তোর সাথে আছে। ভপ্য পাস না। সততার সঙ্গে কাজ করবি।”

রুহানি বিদায় নিয়ে বেরিয়ে গেল। রুহানি একটা ড্যান্স ইন্সটিটিউটে এসিস্ট্যান্ট হিসেবে জব পেয়েছে। এই ইনস্টিটিউটের ওনার ইমন খানের এসিস্ট্যান্ট হিসেবে জয়েন করেছে। ইনি একজন খ্যাতিমান ড্যান্সার। উনার আন্ডারে অগণিত স্টুডেন্ট নাচ শিখে এবং কয়েকজন খ্যাতিমান টিচারও আছেন। রুহানির কাজ ইমন খানের কাগজপত্র গুছিয়ে রাখা। সবকিছুর হিসাব রাখা,কোন দিন কোথায় ফাংশন আছে, কারা কারা এডমিশন নিচ্ছে এসব তথ্য সংগ্রহ করা।

রুহানি দশ মিনিট ধরে রুমের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু ভেতরে ঢুকতে পারছে না। জীবনে অনেক দুঃসাহসিক কাজ করেছে কখনো ভয় পায় নি। কিন্তু আজ ওর খুব ভয় লাগছে। মনে হচ্ছে কেউ যদি হাত ধরে ভেতরে নিয়ে যেত। কিন্তু ও তো ছোট বাচ্চা নয় আর না এখানে এডমিশন নিতে এসেছে। এখানে কাজ করতে এসেছে তাই ওর নিজেকেই নিজের গার্ডিয়ান মনে করতে হবে। এছাড়া আর কোন উপায় নেই। রুহানি আশেপাশে তাকাল। কত বড় ইন্সটিটিউট। বিশাল বড় মাঠ। বড় বড় গাছ মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে আছে। মাঠের চারদিকে ঘেরা বড় দালান। সামনে বিস্তৃত খোলা বারান্দা। পুরো দালান থেকে একটা একতলা দালান আলাদা করে দূরে দাঁড়িয়ে আছে। আর সেটাই হচ্ছে অফিস রুম। রুহানি সেখানেই দাঁড়িয়ে আছে।

রুহানি আল্লাহর নাম নিয়ে ভেতরে পা রাখল। নিজের পরিচয় দিতেই পিয়ন রুহানিকে বসতে দিল। রুহানি একদম সোজা হয়ে বসে আছে। আশেপাশে চোখ বুলাচ্ছে।
চুল ঝুঁটি করা, চাপ দাঁড়ি, খাম্বার মতো লম্বা, এক হাতেই কতগুলো ব্রেসলেট পড়া মাঝারি গড়নের একজন লোক ওর দিকে আসছে। লোকটা যতই ওর দিকে এগিয়ে আসছে রুহানির বুকের ধুকধুকানি বেড়েই চলেছে। রুহানি দাঁড়িয়ে গেল।
লোকটা ওর সামনে এসে ওকে দেখে নিয়ে বলল,
“তুমিই রুহানি! প্লিজ সিট।”

রুহানি বসে পড়ল। লোকটা রুহানিকে ভালো করে পর্যবেক্ষণ করে বলল,
“নাচ পারো?”

রুহানি উনার প্রশ্নে চমকে গেল। নাচ জানার সাথে এই কাজের কি সম্পর্ক? রুহানি উনার দিকে আড়চোখে চেয়ে বুঝার চেষ্টা করছে উনি কি মজা করে জিজ্ঞেস করল না সিরিয়াসলি জিজ্ঞেস করেছে। কিন্তু কিছুই বুঝতে পারছে না। না উনার চেহারায় হাসির চিহ্ন আছে আর না অধিক গাম্ভীর্য। রুহানি উত্তর দেয়াটাই শ্রেয় মনে করল।
“জি পারি।”

ইমন খান রুহানির উত্তর শুনে হেসে ফেলল। তারপর বলল,
“তুমি নিশ্চয়ই ভাবছো তোমার কাজের সাথে নাচের কি সম্পর্ক? আসলে আমি তোমাকে ইজি করার জন্য এই প্রশ্নটা করেছি। তোমাকে অনেক নার্ভাস লাগছে।”

রুহানি অপরাধীর ভঙ্গিতে বলল,
“সরি স্যার। একচুয়েলি আমি লাইফে অনেক কিছু করেছি কখনো ভয় পাই নি। দু পাতা পড়ে পরীক্ষার হলে বসেও কখনো নার্ভাস হই নি। কিন্তু আজ কেন জানি নার্ভাস লাগছে।”

“মেবি আমি জানি কেন তোমার নার্ভাস লাগছে। আসলে তুমি ভয় পাচ্ছো। আর ভয়ের কারণ হচ্ছে তোমার কাছে এই জবটা অনেক ইম্পর্ট্যান্ট। তোমার মনে হচ্ছে যদি না পারো, যদি কোন কারণে জবটা না থাকে। এই জন্য ভয় পাচ্ছো।”

“মেবি স্যার।”

“আচ্ছা তোমাকে কিছু কথা বলে রাখি। আমার ইনস্টিটিউট থেকে অনেকেই বিভিন্ন ওকেশনে পার্টিসিপিট করে। যদি ঢাকাতে হয় তবে আমাকে যেতে হয় না। কিন্তু ঢাকার বাইরে হলে আমাকে ওদের সাথে যেতে হয়। আমাকে যেতে হলে তোমাকেও যেতে হবে। তুমি কি পারবে?” ইমন রুহানির দিকে চেয়ে ওর ভাব বুঝার চেষ্টা করছে।

রুহানির কাছে কোন উপায় নেই। এই কাজটা দরকার তাই বলল,”হ্যাঁ পারব।”

ইমন উঠে দাঁড়িয়ে বলল,
“ওকে তো ডান। আমি অরুনকে বলে দিচ্ছি তোমার সব কাজ বুঝিয়ে দিবে।”

রুহানি দাঁড়িয়ে গিয়ে বলল,”ওকে স্যার।”

.

ফালাক রুহানিকে ভার্সিটির কোথাও দেখতে পাচ্ছে না। রুহানি আজ আসে নি। কিন্তু কেন? পরের ক্লাসেও রুহানিকে পায় নি। তারপর যখন আবার ভার্সিটিতে পেয়েছে তখন রুহানি ক্লাস, লাইব্রেরী আর রনকের সাথে ব্যস্ত ছিল। এক সেকেন্ডের জন্য ফ্রি ছিল না। রুহানি পড়াশোনা নিয়ে পড়ে থাকে। রুহানির বদলে যাওয়া গুলো ওর হজম হচ্ছে না। কিছু একটা ঘাপলা আছে কিন্তু কি খুঁজে পাচ্ছে না। নিয়ম করে দুদিন রুহানিকে ভার্সিটিতে দেখা যায়। বাকি দুদিন কোথায় থাকে? আর কেন এত বদলে গেল? পড়াশোনায় এত সিরিয়াস কেন? আর সেদিন নেশার ঘোরে বলা কথাগুলো। সব কেমন জানি এক জায়গায় এসে মিলে যাচ্ছে। রুহানি ওকে দেখেও দেখে না। ফালাক রুহানিকে এত গুরুত্ব দেয় কিন্তু রুহানি ফালাকের দিকে চেয়েও দেখে না। ফালাকের অস্তিত্ব ওর জন্য এক্সিটই করে না। বিষয়গুলো ফালাককে খুব পোড়াচ্ছে।

ফালাক রুহানির অনুপস্থিতিতে নুশাকে জিজ্ঞেস করল,
“রুহানির কি হয়েছে? ও ঠিক মতো ভার্সিটিতে আসে না কেন? দুদিন আসে তো বাকি দুদিন গায়েব থাকে। আর আগের চেয়ে অনেক বদলে গেছে। কেমন শান্ত হয়ে গেছে। আগের মতো হইচই করে না। পড়াশোনা নিয়ে সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকে। কিছু কি হয়েছে?”

“নাহ! কি হবে? সব ঠিক আছে। কিন্তু আপনি এই প্রশ্ন কেন করছেন?”

ফালাক অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়ল। নুশাকে জিজ্ঞেস করে অনেক বড় বোকামি করে ফেলেছে।
“কিছু না। ওর পরিবর্তন দেখে আগ্রহ জন্মাল তাই জিজ্ঞেস করলাম। যদিও তুমি সঠিক উত্তর দেও নি। ইটস ওকে।”

ফালাক ভাবছে রুহানির সামনাসামনি হবে। ওকে জিজ্ঞেস করবে ওর কি হয়েছে। না বললে জোর করবে। তবুও জেনেই ছাড়বে। এটা ওর ভালোবাসার অধিকার। যদি জিজ্ঞেস করে কোন অধিকারে জিজ্ঞেস করছে তবে বলবে ভালোবাসার অধিকারে। আর লুকাবে না।

এদিকে নুশা রুহানিকে ফোন করে ফালাকের ব্যাপারে জানিয়ে দিয়েছে। রুহানি চিন্তায় পড়ে গেল। ফালাক কেন ওর ব্যাপারে জিজ্ঞেস করছে? ফালাকের সাথে কথা বলার সিদ্ধান্ত নিল।

চলবে…….

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ