#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নং: পাচঁ
প্রিয় অভিমানী আমিরাহ্,
তোমাকে প্রিয় বলে সম্বোধন করেছি ঠিকই কিন্তু তুমি জানতে পারলে হয়তো এটা কখনোই সহ্য করবে না। সহ্য নাই বা করলে তাতে আমার কি! আমার তো কোনোরকম অধিকার বা অনুমতির প্রয়োজনই নেই। কারণ আমি জানি আমার এই জীবনে আমার সবচেয়ে বেশি প্রিয় জিনিস তুমিই। তোমার মধ্যে দিয়ে আমি আমার নিজেকে খুঁজে পেয়েছি। তবে তাও আমি খুব শীঘ্রই তোমাকে ‘প্রিয়’ বলে সম্বোধনের অধিকার এবং অনুমতি দুটোই আদায় করে নেবো তোমার কাছ থেকে।
তোমার সব অভিমান আমি পাল্টে দেবো অনুরাগে। নিজেকে ঠিক তোমার যোগ্য করে গড়ে তুলবো।
আমার মতো অযোগ্য পাত্রের সাথে বিয়ে দেওয়ার যে অপরাধে তুমি তোমার প্রিয় বাবা এবং আমার প্রিয় শ্বশুরের সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছো, সেই অপরাধ আমি মুছে দেবো।
আমি তোমার এতোটাই যোগ্য হয়ে উঠবো যে, তুমি তোমার বাবার কাছে কৃতজ্ঞ থাকবে সারাজীবন। শুধুমাত্র আমাকে তোমার জীবনসঙ্গী হিসেবে তোমার জীবনে এনে দেয়ার জন্যে। তুমি দেখে নিও একদিন ঠিক এমন হবে। আর সে একদিন টা খুব জলদিই আসবে।
জানো, খুব কষ্ট হয় আমার, খুব বেশি!
নিজের ভালোবাসার মানুষের ভালোবাসা না পাওয়া, তারউপর সবসময় তাকে নিজের চোখের সামনে দেখতে পেয়েও না দেখার অভিনয় করে যাওয়া। এককথায় অনুভূতি লুকিয়ে রাখা! এটা খুব কঠিন কাজ।
আমার মন চায় সবসময় তোমার সাথে কথা বলতে, গল্প করতে, চোখে চোখ রেখে তাকিয়ে থাকতে, তোমার মধ্যে ডুবে যেতে…” কিন্তু তোমার আর আমার সম্পর্কটা তো সেরকম না। ভয় হয় যদি তোমার কাছে আমার ভালোবাসা কে বেহায়াপনা মনে হয় তাই নিজের মনটাকে কন্ট্রোল করে রাখি।
তুমি ঘুমিয়ে যাওয়ার পর তোমাকে মন ভরে দেখি। আমার মনে অনেক কথা, ইচ্ছে হয় সব তোমাকে বলি। কিন্তু আমি আটকে যাই। ঐ যে আমি তোমার অযোগ্য, আমাদের সম্পর্কটা যে অন্যসব স্বামী-স্ত্রীদের মতো না। তাছাড়া তোমাকে এখন এই সময়ে পড়াশোনা থেকে ডিসট্র্যাক্ট করতে চাই না আমি। তোমার এডমিশন টেস্ট শেষ হোক আর আমিও নিজেকে একটু গুছিয়ে নেই। তারপর সব জানাবো তোমাকে।
“তোমার জন্য আমার ভালোবাসা, মাস্টার্স এ ভর্তি হওয়ার কথা, জুয়া খেলা ছেড়ে দেওয়ার কথা, মন দিয়ে কাজ শুরু করার কথা… সব! এই সব কথা জানাবো তোমায়।”
জানো তোমার বাবার সাথে আমার প্রতিদিন কথা হয়। ওনি খুব ভালোবাসে তোমায়। কি ভাগ্য আমাদের জামাই আর শ্বশুরের! “একজনের নিজের মেয়েকে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখতে হয় আর আরেকজনকে নিজের একমাত্র বউকে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখতে হয়।”
জানো, প্রতিদিন আমার শ্বশুর সাহেবকে তোমাকে দেখতে সাহায্য করি আমি। রোজ তোমাকে ভিডিও কলে দেখাই আর নাহয় ছবি পাঠাই।
আমার ভালোবাসার আমিরাহ্, তোমার সাথে আমার যে পরিমাণ কথা জমে আছে সেসব লিখে শেষ করা যাবে না। তাই তুমি আমাকে তোমার যোগ্য স্বামী হিসেবে গ্রহণ করার পরই নাহয় এই সব কথার ঝুড়ি নিয়ে বসবো। তখনই নাহয় চোখে চোখে সব কথা হবে…
ইতি তোমার স্বামী
মেহরাব চৌধুরী মেহু