#প্রিয়_প্রাণ
#সাইয়্যারা_খান
#পর্বঃ২৮
সময়টা পড়ন্ত এক বিকেল। বারান্দায় দাঁড়িয়ে ফোনে কথা বলছে আরহাম। তোঁষা’র সামনে কিছুতেই ফোন বের করে না ও। আপাতত ওকে রুমে রেখে বাইরে এসেছে ও। তোঁষা বিছানায় বসে আছে গোল হয়ে। ওর সামনেই খাবার রাখা। একবার খাবারে হাত বাড়ালেও আবার তা গুটিয়ে নিচ্ছে। এবার আর অপেক্ষা করলো না তোঁষা। ক্ষুধা লেগেছে ওর। হাত বাড়িয়ে নিয়ে মুখে দিলো। খেতে খেতে কিছুটা ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেলো বিছানায়। কাঁপা হাতে তোঁষা যতটুকু পারছে মুখে পুরে নিচ্ছে। দুপুরে খাওয়া হয় নি। ঘুমোচ্ছিলো ও। এখন উঠতেই তার প্রাণ খেতে দিয়েছে তাকে। হঠাৎ দরজায় শব্দ হতেই তোঁষা মুখ তুলে তাকালো। দণ্ডায়মান ব্যাক্তিকে দেখে তাকিয়ে রইলো কৃয়ংকাল। আরহাম ও ভেতরে ঢুকে তোঁষা’কে খাবার ছড়াতে দেখে এগিয়ে এসে বলতে লাগলো,
— আমি ই তো খায়িয়ে দিতাম প্রাণ। তুই কেন….
কথা বলা সহসা থেমে গেলো। তোঁষা’র দৃষ্টি অনুসরণ করে সম্মুখে তাকায় আরহাম। দরজা ধরে দাঁড়িয়ে আছে তুহিন। তোঁষা বেশ কিছু সময় তাকিয়ে রয়ে বলে উঠলো,
— বাবা।
তুহিন দরজা ধরে বসে পরলো। আরহাম হতবাক। হতবিহ্বল। কোথা থেকে এলো চাচ্চু? কিভাবে পেলো? কখন এলো? কিছু মাথায় এলো না ওর। তোঁষা হাসি হাসি মুখ করে মুঠোয় থাকা খাবার টুকু বাবা’কে দেখিয়ে বললো,
— বাবা খাবে।
বলেই উঠতে নিলো বিছানা থেকে। উঠে যেতে নিলেই দুই পা এগিয়ে এসে ধপ করে পরে গেলো। পড়েই হু হু করে কেঁদে উঠলো। ফ্লোরে ছড়িয়ে পরলো হাতে থাকা ভাতটুকু। আরহাম তারাতাড়ি তোঁষা’কে ধরে বুকে নিলো। ব্যগ্র হয়ে বলতে লাগলো,
— তুঁষ? কিছু হয় নি প্রাণ। তাকা আমার দিকে। এই যে আমি।
তোঁষা ফুপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে আরহামে’র বাহু জড়িয়ে রইলো। আরহাম বেশ ভয় পেয়ে তাকালো তুহিনের দিকে। তুহিন এক দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে জ্ঞান হারালো। এবার আরহাম তোঁষা’কে ছেড়ে দৌড়ে গেলো তুহিনের কাছে। মাথাটা কোলে তুলে গালে হাত দিয়ে ডাকতে লাগলো,
— চাচ্চু? চাচ্চু উঠো। কি হয়েছে? কথা বলো।
তুহিন কথা বলে না। আরহাম কাঁধে তুলে নিলো তাকে। পাশের রুমে নিতে নিতে কানে এলো তোঁষা’র কান্না। সমানতালে কেঁদে কেঁদে আরহাম’কে ডেকে যাচ্ছে সে। আরহাম তাকে ফ্লোরে বসিয়ে রেখেই এসেছে।
.
তুহিন চোখ খুলে তাকালো মিনিট ত্রিশ পর। আরহাম ওর ব্লা’ড প্রেশার চেইক হাই। এই বয়সে এটা খুবই রিক্স হয়ে যাচ্ছে। আরহাম’কে চোখের সামনে দেখেই কেঁদে ফেললেন তিনি। আরহাম ওনার একটা হাত ধরলো শক্ত করে। এই মানুষ গুলো এক সময় তাকে অনেক পীড়াদায়ক যন্ত্রণা দিয়েছে। জেনেটিক সমস্যা’কে পাগলের অপবাদ দিয়েছে। দূরে ঠেলেছে। অবশেষে প্রতারণা করেছে।
চাইতেই আরহাম তুহিন’কে কিছু বলতে পারলো না৷ মানুষটার বয়স হয়েছে। আজ অবশ্য অতিরিক্ত দূর্বল দেখাচ্ছে তাকে। আরহাম ওনার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললো,
— কেঁদো না চাচ্চু।
— আমার পুতুল….
— আছে। পাশের রুমে।
— ও..ও এমন করছিলো কেন? ওকে কি করেছিস আব্বু?
আরহাম এই প্রশ্নটা এরিয়ে গিয়ে পাল্টা প্রশ্ন করলো,
— এখানে কিভাবে এলে চাচ্চু?
তুহিন চোরা চোখে আশেপাশে তাকালো। আরহাম গভীর ভাবে তাকে দেখে যাচ্ছে। মানুষের চোখের ভাষা খুব ভালোই পড়তে পারে সে।
তুষা’র ঢাকা এসেছে আরহামে’র খোঁজ পেয়ে। এসেই জোড়ালো ভাবে খুঁজাখুঁজি চলছিলো। তুষার যখন আজ দুপুরে ফোনে কারো সাথে কথা বলছিলো তখনই তুহিন তা শুনে ফেলে। এক মুহুর্ত দেড়ী না করে এসে পরে এখানে। যদিও আসাটা অত সহজ ছিলো না। তুষার আরহামে’র ফ্ল্যাটের লকের চাবি ও ডুপলিকেট বানিয়েছিলো। তুহিন লুকিয়ে সেটা নিয়ে এসেছে।
— কথা বলো?
আরহামে’র এমন শান্ত বাণীতে চমকালো। ঢোক গিলার চেষ্টা করলেও যখন পারলো না তখন পাশ থেকে পানি নিয়ে খাওয়ালো আরহাম। তুহিন একটা শ্বাস ফেলে বললো,
— পুতুল?
— বললাম তো আছে।
— এখানে এনে দাও না আব্বু।
— সবাই জানে আমরা এখানে?
— না না। আমি জানি। তুষার জানে আর কেউ না।
–ভাইয়া জানে তুমি এখানে?
— লুকিয়ে এসেছি।
— প্রতারক, জালিম হওয়ার পাশাপাশি চুরিতে ও পারদর্শী তোমরা।
— কথা শু…
— শুহ।
— পুতুলকে দেখব।
— কি দেখবে?
এই পর্যায়ে খেই হারিয়ে ফেললো তুহিন। তার কলিজার টুকরো মেয়েকে সে দেখবে এটা ও কি বলতে হবে? তবে কি আরহাম দেখতে দিবে না?
আরহাম অতটাও নিষ্ঠুরতম আচরণ করলো না। দেখা করালো। কিন্তু বিপত্তি বাঁধলো। তোঁষা চিনতে পারলো না তুহিন’কে। গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে আরহামে’র বুকে মুখ লুকালো। আহত চোখে তাকিয়ে রইলো তুহিন। কথা বলার ভাষা হারালো আগে। তার মেয়ে তাকে চিনতে পারছে না কিন্তু কেন?
আরহাম নাকের পাটা ফুলিয়ে তোঁষার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে তুহিন’কে উদ্দেশ্য করে বললো,
— যেভাবে এসেছো সেভাবেই চলে যাও চাচ্চু।
তুহিন থাকতে চাইলেও থাকলো না। মন মানলো না। পেছন থেকে ই তোঁষা’র ছোট্ট চুলে হাত বুলিয়ে এক পা করে পিছু হটলো। একসময় বেরিয়ে এলো।
আরহাম ক্ষুদ্র শ্বাস ফেললো। মুখ বিকৃত হলো। তোঁষা তার বুকে কামড়াচ্ছে।
.
রাত বারোটা। হঠাৎ আরহামে’র ফোনটা বেজে উঠলো। পাশেই কাঁথার নিচে গুটিয়ে তোঁষা ঘুমাচ্ছে আরহামে’র নগ্ন বুকে। শীতলায় ঘেরা পরিবেশটাতে ফোনের শব্দ বিরক্ত করলো আরহামকে। তখন তোঁষা’র জন্য ফোনটা লুকানো হয় নি। আরহাম উঠতে নিলেই নিজেকে তোঁষা’র মাঝে আটকা পেলো। ওর নড়াচড়াতেও তোঁষা ও নড়লো। অতি যত্নে ওর মাথায় আদর করলো আরহাম। ফোনটা খুঁজে বের করলো ফ্লোরে থাকা প্যান্টের পকেট থেকে।
রিসিভ করেই থম ধরে গেলো আরহাম। তাকালো তোঁষা’র পানে। এক হাতে চুল টেনে ধরে আরহাম। অপর পাশ থেকে এখনও বলে যাচ্ছে,
— স্যার স্যার আছেন? ম্যামের বাবা ইন্তেকাল করেছেন। এখন হসপিটালেই আছেন। বাসায় নেয়া হবে। স্যার শুনছেন?
টুট টুট শব্দ হলো। আরহাম তোঁষা’কেই দেখে যাচ্ছে। ওকে কিভাবে বলবে এই সত্যি? কেমন প্রতিক্রিয়া হবে তোঁষা’র?
#চলবে….
#প্রিয়_প্রাণ
#সাইয়্যারা_খান
#পর্বঃ২৯
আলগোছে তোঁষা’র মাথাটা নিজের কাঁধ থেকে সরালো আরহাম। গাড়ির কাঁচে শেড থাকায় বাহির হতে কিছুই দেখা যাচ্ছে না ভেতরে অথচ ভেতর থেকে সবটা দেখছে আরহাম। শেখ বাড়ীর সদর দরজা খোলা। নামীদামী হওয়াতে অনেক মানুষের আনাগোনা। আরহাম গাড়িটা রেখেছে একদম সাইডে। তোঁষা’র মুখের মাস্ক’টা একটু ঠিক করে দিয়ে ওকে নিয়ে গাড়ি থেকে নামলো আরহাম। তোঁষা’র চোখমুখ স্বাভাবিক। রাতে শেষ হওয়ার পথে। আরহাম নিজের সাথে এক প্রকার যুদ্ধ করে তোঁষা’কে নিয়ে এসেছে এখানে। তোঁষা আরহামে’র হাত ধরে বললো,
— এখানে এলাম?
— হু।
— ভেতরে যাব?
— যাব।
তোঁষা কথা বললো না। মাথা ঝিমঝিম করছে তার। আরহাম ভাই এখানে কেন আনলো ওকে তা বুঝে উঠতে পারছে না। আরহাম ওর হাত ধরে বাড়ীতে প্রবেশ করলো। ওমনিই কান্নার শব্দ কানে এলো। কিছু একটা ধাক্কা খেলো তোঁষা’র বুকে। ওর মায়ের গলায় কান্না শুনা যাচ্ছে। তোঁষা চোখ বন্ধ করে মনে করার চেষ্টা করলো। হ্যাঁ। এটাই তো মায়ের গলার শব্দ। পরক্ষণেই মনে হচ্ছে না। এটা মায়ের গলা না। তোঁষা’র ঠিকঠাক মনে পরছে না। আরহামে’র বাহুটা শক্ত করে ধরে জিজ্ঞেস করলো,
— কে কাঁদে?
–ভেতরে চল।
আরেকটু সামনে এসে তোঁষা’কে ছেড়ে দিলো আরহাম। দেখার পালা তোঁষা আদৌ চিনতে পারছে কি না। হুটহাট ওর ভুলে যাওয়ার সমস্যা টা সাময়িক হয়। তোঁষা’কে এই মুহুর্তে কেউ খেয়াল করলো না।
মাঝখানে রাখা তুহিনের দেহটা। এই বয়সে মৃত্যুটা অতটাও অস্বাভাবিক না। তবে তুহিনের মৃত্যু’টা অস্বাভাবিক বটে। ভালো মানুষটা বাসায় ফিরেই স্ট্রোক করে বসলো। হাসপাতালে নিতে নিতে দুনিয়া ত্যাগ করে ফেললো। এতদিনের তার চিন্তা, মেয়ের শোক সবটার অবসান ঘটলো। স্বামী’র লা’শের খাট ধরে অঝোরে কেঁদে যাচ্ছে তোঁষা’র মা। পাশেই তুষা’র। মাথা নিচু করে সেও মায়ের পাশে বসা। এক হাতে মায়ের রুগ্ন দেহটাকে নিজের বুকে আগলে রেখেছে সে।
একে একে সবার দিকে নজর বুলালো তোঁষা। চাচা কাঁদছেন। চাচি ওর মায়ের পাশে বসা। একবার মনে হলো আরহাম ভাই দাঁড়িয়ে। কিন্তু না ওটা আদনান ভাই৷ তোঁষা আশেপাশের মানুষদের ও দেখে নিলো। অতঃপর তাকালো আরহামে’র দিকে। কোন ভাবান্তর ছাড়া তোঁষা’র ঐ চোখজোড়ায় কিছু একটা দেখলো আরহাম যা ওর বুকে আঘাত হানলো।
সেই নজরে টিকতে পারলো না আরহাম। সহসা দৃষ্টি ঘুরিয়ে নিলো। তোঁষা অবুঝের ন্যায় বাবা’র খাটের পাশে বসলো হাঁটু মুড়ে। অল্প ঢোক গিলে হাত বাড়ালো বাবা’র দিকে। বন্ধ চোখে, মুখে হাত বুলালো অতি যত্নে। বাবার কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে ডেকে উঠলো,
— বাবা?
যেই ছোট্ট একটা ডাকের বিনিময়ে তুহিন তিনবার উত্তর করতো আজ সেই কাঙ্খিত বাবা ডাকের বিনিময়ে কোন জবাব এলো না। তুহিন শুনলো না সেই অতি মায়াময় ডাকটা তার অতি সখের শেষ বয়সে জীবনে আসা মেয়ে থেকে। যাকে প্রায় বছর খানিক সময় ধরে খুঁজে খুঁজে ক্লান্ত হয়ে তুহিন দুনিয়া ত্যাগ করলো সেই পুতুল আজ তার সন্নিকটে। অতি কাছে। সে ডাকছে তার বাবা’কে অথচ তুহিন কি না অপারগ। সে শুনতেই পেলো না তার পুতুলের ডাক। যেই পুতুল গতকাল তাকে খনিকের জন্য চিনতে পারলো না সেই পুতুল আজ কত সুন্দর হেটে এলো বাবা’র নিকট। ভালোবাসার কাছে হেরে গেলো স্বার্থপর এই বাবা’র ভালোবাসা। তুহিন স্বার্থপরের মতো সবটা করলো। তার প্রথম স্বার্থ ছিলো তোঁষা। তার পুতুল’কে সে এতটাই ভালোবাসতো যে আরহামে’র সামান্যতম দোষটা মানতে পারলো না। নিজের পুতুলের মধ্যেই সে নিজের ভালো থাকা খুঁজে নিয়েছিলো অথচ ভুলেই বসেছিলো তার পুতুল ভালো থাকতো আরহামে’র কাছে। আজও শুধু মাত্র সে তার পুতুলের নজরে অচেনার শোক সইতে না পেরে দুনিয়া ত্যাগ করলো। সত্যি ই কি তবে তুহিন স্বার্থপর?
তুষার খেয়াল করলো তোঁষা’কে। বোরকা পড়া, মুখ ঢাকা থাকলেও তুষারে’র তার পুতুলকে চিনতে বিলম্ব হয় নি। বাবা পুতুলের কাছে গিয়েছিলো এটা জেনেছে তুষার। শেষ সময়ে বাবা তাকে ভাঙা গলায় জানিয়েছিলো, পুতুল তাকে চিনে নি। কেন, কিভাবে এসবের উত্তর জানা নেই তুষারের। মা’কে বুকের মধ্যে নিয়ে তোঁষা’র মাথায় হাত রাখলো তুষার। তোঁষা তাকালো ভাইয়ের দিকে। ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়েই রইলো। তুষারের বুকটা মোচড় উঠলো। তার পুতুলটা এমন অনুভূতিহীন ভাবে তাকিয়ে আছে কেন?
তুষার ডাকলো,
— পুতুল?
— বাবা কথা বলে না কেন? আমার সাথে রেগে?
হঠাৎ তোঁষা’র গলা শুনতেই কয়েক জড়ো চোখ তাকালো ওর পানে। ওর মা অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো পাশে বসা তোঁষা’কে দেখে। আচমকা এক থাপ্পড় পরলো ওর গালে। পরপর দুই তিনটা আরো পরলো। চিৎকার করে ওর মা বলতে লাগলো,
— তুই মে’রেছিস! তুই মে’রেছিস আমার স্বামী’কে। তোর কোনদিন ভালো হবে না তোঁষা। আমি আমার আল্লাহর কাছে বিচার দিলাম। যেভাবে আমার সব সুখ তুই ধ্বংস করলি সেভাবেই তোর সুখ ধ্বংস হবে। যেই সুখের জন্য এতগুলো প্রাণ আজ প্রাণহীন তোর সেই সুখ অচিরেই ধ্বংস হবে। এক সদ্য বিধবা নারীর অভিশাপ তোকে তোঁষা। আমার অভিশাপে ধ্বংস হবি তুই।
উপস্থিত সকলে হায় হায় করে উঠলো। এ কেমন অভিশাপ? কোন মা এভাবে অভিশাপ দেয়? পাশ থেকে চাচি মুখ চেপে ধরলো ওর মায়ের। আরহাম তোঁষা’র গালে থাপ্পড় পড়তেই এসে তোঁষা’কে নিজের কাছে নিয়েছে। তোঁষা কোনরূপ বাক্য উচ্চারণ করলো না। তুষার বোনকে আরহাম থেকে ছাড়িয়ে নিজের বুকে নিলো৷ কপালে চুমু খেয়ে গালে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললো,
— সোনা আমার। পুতুল, ব্যাথা পেয়েছিস? মা ইচ্ছে করে এসব করে নি। ভাইয়ের জান, তাকা আমার দিকে। তোর এই অবস্থা কেন? কথা বল পুতুল। তাকা আমার দিকে।
তোঁষা তাকালো তবে কথা বললো না৷ কথা বলার শক্তি পেলো না ও। ভাইয়ের বুকে মিশে রইলো কিছুক্ষণ। এরপর নিজেই সরে এসে বাবা’র গালে হাত বুলালো। উঠে দাঁড়িয়ে সোজা আরহামে’র কাছে এসে বাহু জড়িয়ে ধরে মিনমিন করে বললো,
— বাসায় চলো প্রাণ।
তোঁষা’র অস্বাভাবিক আচরণে ভয় পেলো আরহাম। এই সময় এতটা শান্ত কেন ওর তুঁষ? কোনমতে আরহাম বললো,
— আজ থাকি প্রাণ আমরা……
— উহু। চলো বাসায় যাব।
কথাটা বলেই আরহামে’র বুকে মুখ লুকালো।
#চলবে…..