Monday, October 6, 2025







প্রিয় ভুল পর্ব-৭+৮

#প্রিয়_ভুল
লেখাঃ #মাহাবুবা_মিতু
পর্ব-৭
(অনুগ্রহ করে অনুমতি ছাড়া লেখা কপি করবেন না)

মীরা এ মুহূর্তে ত্রিমাত্রিক সমস্যায় জর্জরিত। এক রাজিবের অসুস্থতা। দুই চিকিৎসার একটা টাকাও জোগাড় হয় নি, তিন ওর এইচএসসি পরীক্ষা। এবছর যদি কোন কারনে পরীক্ষাটা ছুটে যায় ওর, তাহলে পড়ালেখা সারা জীবনের জন্য চুলোয় যাবে তা ও জানে। কারন জীবণ যে পরিস্থিতিতে এনে দাঁড় করিয়েছে ওকে তাতে পড়ালেখা বিলাসিতা।

পরীক্ষা পড়াশোনা ব্যাপারটা অপশনাল। সবার আগে রাজিবের সুস্থতা। এদিকে রাহাতকে ফোন করায় ও জানিয়েছে কাগজপত্র সব তৈরি। আজ বিকেলে ওকে দেখা করতে হবে একটা রেস্টুরেন্টে।

অনেক ভেবে মীরা লিপিকে সাথে নিলো। প্রথমে ভেবেছিলো নিবে না ওকে। পরে ভাবলো জীবণে বেঁচে থাকাই যখন দাবা খেলার শেষ চালের মতো কঠিন, সেখানে আত্মসম্মান নিয়ে বন্ধুর সাথে লুকোচুরির কোন মানে হয় না। এ মানুষ ওকে এই বিপদেও আগলে রেখেছে। ওর কাছে লুকানো মানে দুঃখ ভাগ করে নেবার এক জনকে হারিয়ে ফেলা। তাই সঙ্গী করলো ওকে মীরা।

ধানমন্ডির সুন্দর একটা রেস্টুরেন্টে বসলো দুজনে। রাহাতই ঠিকানা দিয়েছে। আসার পথে রিকশায় বসে একটি কথাও বলে নি মীরা। হঠাৎ এমন সিদ্ধান্ত লিপির কাছে কোন মুখে বলবে ও। যা বুঝার বুঝুক ও। রাজিবের চিকিৎসার জন্য টাকা চাই ওর। শুধু এটুকুই জানে মীরা। মীরা ওদের জন্য কফি অর্ডার করলো দুটো।

ওরা এসেছে পনেরো মিনিটের মতো। রাহাতের খবর নেই। হঠাৎ ফোন করে ও মীরার ফোনে। এ ফোনটাও রাহাতের দেয়া। গতবার যখন দেখা হলো এটা দিয়েছিলো রাহাত যোগাযোগ করার কথা ভেবে।

রাহাত ওপাশ থেকে বলে-
: ” কাকে নিয়ে আসছো তুমি? মীরা এতগুলো টাকা দিবো তোমাকে আমি তো কাওকে সাক্ষী রাখি নি, তাহলে তুমি কেন ওকে নিয়ে এসেছো। এসবের মানে কি? আমি অন্য কারো সামনে আসবো না তো। তোমরা চলে যাও, আজ দেখা হবে না,”
: “টাকাটা কালই লাগবে আমার, আজ আপনি না এলে আমার খুব বিপদ হয়ে যাবে”
: ” ওকে সাথে আনার আগে কথাটা তোমার ভাবা উচিত ছিলো”
: “আমার ভুল হয়ে গেছে ”
: ” ভুল তো ভুলই, এটা তো আর শোধরানো যাবে না, তারচে বরং আমি হাজার বিশেক….
: ” না, না, বিশ হাজারে কিচ্ছু হবে না, কালই অপারেশন এর সব টাকা জমা করতে হবে”
: ” তাহলে কি আর করা, সব তো তোমার কথা মতো হবে না, তাই না?”
: ” প্লিজ, একটু বোঝার চেষ্টা করুন…”
: ” এত বোঝাবুঝির কাজ নেই, আমি এত কিছু বুঝি না, তোমার কি মনে হয় আমার বিয়ের জন্য মেয়ের অভাব যে এতগুলো টাকা তোমাকে দিয়ে বিয়ে করতে হবে? অভাব না, ভাল্লাগছে তোমাকে, তাই মূল্য পরিশোধ করছি”
: ” প্লিজ এমন করবেন না, রাজিব হসপিটালে একা রয়েছে। সকাল হলেই ওর…”
: ” ওহ্ মীরা, এত ঘ্যান ঘ্যান করো না তো, আমি ব্যাবসায়ী মানুষ, আমি শুধু ডিল বুঝি, নাথিং এলস্ ”
: ” আমার বন্ধুকে চলে যেতে বলি তাহলে?”
: ” কিছু বালার দরকার নেই,
: ” প্লিজ এমনটি করবেন না”
: ” ওকে, ওয়েট। এক কাজ করো এখান থেকে বের হয়ে ওকে মাঝপথে নামিয়ে দিবে তুমি। আমার গাড়ি আমি পাঠাবো তুমি যেখানে থাকবে সেখানে। গাড়ির ড্রাইভার তোমাকে যেখান নিয়ে যাবে সেখানই তোমায় আসতে হবে। যদি রাজি থাকো তাহলে ম্যাসেজে বলো আাময় , এত কথা বলার সময় নেই আমার, রাখি”

বলেই কলটা কেটে দেয় রাহাত। মীরা ফোনটা টেবিলের উপর রেখে দু’হাতে মুখটাকে চেপে স্তব্ধ হয়ে থাকে কিছু সময়। ভিতরে কিছু একটা দলা পাকাচ্ছে। মুখ, চোয়াল কেমন যেন আঁকড়ে আসছে। কান্নার পূর্বাভাস। তবে কান্নাটা যেন বেরুবার পথ খুঁজে পাচ্ছে না।

গত কয়েকটা মাসে মীরা কেমন বদলে গেছে। আবেগী মীরা খুব বেশি প্র্যাক্টিক্যাল হয়ে গেছে আজকাল। অনুভূতির চেয়ে বাস্তবতাকে বেশী মূল্য দেয় ও। যে বিদ্যাটা কিছুদিন আগেও জানা থাকতো যদি, তাহলে জীবণটা হয়তো অন্য রকম হতো।
দু হাতে শরীরের ভর রেখে বসে মীরা। কিছু একটা ভেবে মীরা লিপিকে বলে-
: ” চল, চলে যাই রাহাত আসবে না আজ, তোকে সাথে এনেছি তো তাই”
: ” কেমন বদ, মনের ভিতরে শয়তানী বুঝলি?”
বলতে বলতে উঠে ওরা।

কাউন্টারে কফির দাম মিটিয়ে বেরিয়ে পরে দুজনে । রিকশায় উঠে একটা ম্যাসেজ টাইপ করে ফোন দিয়ে। লিপি কি যেন বলছে অনবরত। সেদিকে মন নেই মীরার। সেটাকে পাঠিয়ে ফোনটা ব্যাগে রাখতেই ওপাশ থেকে উত্তর আসে।

রিকশা যখন ঢাকা কলেজের সামনে এলো রিকশা ওয়ালাকে থামতে বলে, ভাড়া মিটিয়ে দিয়ে নেমে যায় মীরা । বলে নীলক্ষেতে ওর কোন কাজ আছে। লিপিকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই মানুষের ভিড়ে হারিয়ে যায় মীরা।

রাহাতকে বলা লোকেশনে পৌঁছে দেখে ওর পৌঁছানোর আগেই গাড়ি পৌঁছে গেছে সেখানে। কালো রঙের টয়োটা করোলা এক্স মডেলের গাড়িটা দূর থেকে দেখেই শরীর কেমন ভারী অনুভূত হয় ওর। গাড়ির মালিককে ও এত ভয় পায় যে তার ব্যাবহৃত জড় এই গাড়ি দেখেই মীরার কেমন গলা শুকিয়ে গেছে। আর এগুতে পারছে না ও। মনে হচ্ছিল পায়ের তলার মাটি যেন কামড়ে ধরে রেখেছে ওর পা দুটোকে। কিন্তু কিছুই করার নেই ওর, মন না চাইলেও ওকে যেতেই হবে সেখানে। কারন ভাগ্যের কাছে আত্নসমর্পণ করেছে ও । যে ভাবেই হোক যেতে ওকে হবেই।

দশ কদম দূরের পথটা মীরা বেশ সময় নিয়ে পাড়ি দিলো। অপেক্ষায় থাকা ড্রাইভার দরজা খুলে দিলো ওকে দেখে। ড্রাইভার ওকে এর আগেও একদিন এগিয়ে দিয়ে গেছে বাসার কাছে, রাহাতের সাথে দেখা করার পর। তাই আজ তার ওকে চিনতে সময় লাগলো না। আর মীরা এমন এক মেয়ে যাকে একবার কেও দেখলে হাজর মানুষের ভিড়ে ও খুঁজে বের করতে পারবে যে কেও। বেশ লম্বা মীরা, বাঙালী মেয়েরা স্বাভাবিক যেমনটা লম্বা হয় তারচে বেশী। ওর হাইট দেখে সবাই বলতো এর জন্য বর খোঁজা মুশকিল হয়ে যাবে। কেউ কেউ আবার হেসে বলতো, এর বর হবো নাটা(বেটে) । লম্বা মেয়েদের বর হয় নাটা। কিন্তু রাজিব এক্কেবারে পারফেক্ট ওর জন্য। পাশাপাশি যখন হাঁটে দুজন। সবার চোখ ফেরানো দায় হয়। পাঁচ ফুট এগারো ইঞ্চির রাজিবকে বেশ মানায় মীরার পাশে। মীরা কখনো ওর উচ্চতা মেপে দেখে নি। তাই ও জানে না ওর উচ্চতা কত। তবে অনুমান বলে পাঁচ ফিট ছয়-সাত তো হবেই।

গাড়ি পৌঁছে গেলো একটা বিশাল লোহার গেইটওয়ালা বাড়ির ভিতরে। নাম ফলকে লেখা “ক্ষণিকালয়”।
গাড়ি ঢুকার পর গেইটটা যখন আটকালো দারওয়ান মীরার ভিতরটা কেমন দুপ করে উঠলো। গাড়ি থেকে বেরুতেই একটা মেয়ে মীরাকে দোতলায় নিয়ে গেলো। সন্ধ্যা হওয়ায় চারপাশ দেখতে পেলো না মীরা। তবে একটু বুঝলো বাড়িটা বেশ জায়গা নিয়ে করা। ড্রইং রুমে বসতে নিলো মীরা। মেয়েটি হেসে বললো – ম্যাডাম এখানে না, আমার সাথে আসুন। মীরা মেয়েটির পিছন পিছন গেলো। সিড়ি বেয়ে দেতলায় উঠতে একটা রুমের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে গেলো মেয়েটি। হাত দেখিয়ে রুমে ঢুকতে ইশারা করলো সে।

ভুতরে ঢুকে বুঝলো এ ঘরটা রাহাতের। খাটের উপরে বড় করে একটা ছবি টানানো। ক্যাজুয়াল লুকের ছবি। সেখানে বেশীক্ষণ তাকিয়ে থাকতে পারলো না মীরা। রুমে থাকা সোফাটায় বসলে মীরা দেখতে পেলো খাটের উপর কিছু রাখা। মেয়েটি জুস নিয়ে রুমে প্রবেশ করলো তখনি। জুসটা ওর হাতে দিয়ে বললো-
: ” ম্যাডাম স্যার বলেছে আপনাকে তৈরী হতে, আপনাকে নিয়ে স্যার একটা পার্টিতে যাবে”
মীরার বুক থেকে পাথর নামে, কত কি ভেবেছে ও, এখানে এনেছে ওকে তাই। পার্টিতে যাওয়া মানে ও সেইফ। পার্টিতে এতগুলো মানুষের সামনে নিশ্চয়ই অসভ্যতা করতে পারবে না ও।

এমন সময় তৈরী হয়ে ড্রেসিং রুম থেকে বের হয় রাহাত। এই প্রথম বার রাহাতকে ভালো ভাবে দেখে মীরা। পুরোদস্তুর ভদ্রলোক। কে বলবে এ লোকটার ভিতরটা এত কুৎসিত। মীরাকে দেখেই রাহাত বলে-
: ” জলদি তৈরি হও মীরা, আমাদের দেরি হয়ে যাচ্ছে, ”
বলেই ঘর থেকে বের হয়ে যায় ও। মীরা কিছু একটা বলতে উঠে দাঁড়ায় কিন্তু তার আগেই রাহাত চলে যায় রুমের বাইরে।

মেয়েটি ট্রে হাতে দাঁড়িয়ে বলে-
: ” মে আই হেল্প ইউ ম্যাডাম ”
মীরা বলে-
: “প্লিজ”

বিছানার উপর একটা শাড়ি, ম্যাচি ব্লাউজ আর কিছু অর্নামেন্টস রাখা। মীরা সবচেয়ে অবাক হলো রাহাত একটা হিজাব ও এনেছে। এরপর খেয়াল করলো ব্লাউজটা ফুল হাতার৷ দেখেই বোঝা যায় নতুন কেনা সব। হেল্পিং হ্যান্ড মেয়েটাকে মীরা তার নাম জিজ্ঞেস করলো। মেয়েটা জানালো ওর নাম “জেরিন”।

জেরিন মীরাকে মার্জিত ভাবে তৈরী করিয়ে দিলো। মীরা ওর এক রিসিপসনিস্ট বান্ধবীর কাছে শুনেছিলো ওর বস ওকে একবার পার্টিতে যাওয়ার জন্য নেটের শাড়ি দিয়েছিলো। সেটা এতটাই পাতলা ছিলো যে বলিউডকেও হার মানায়। এই নিখিল বঙ্গদেশে তিনি এরকম শাড়ি কোথায় পেলো হেসে জিজ্ঞেস করেছিলো মীরা। পরে শুনেছিলো সেটা না পরে যাওয়ায় ওর চাকরী চলে গিয়েছে । সে দিক দিয়ে রাহাত সভ্যই বলা চলে।

মীরা এমনিতেই সুন্দরী। শাড়ি পরলো ওকে আরো সুন্দর দেখায়। সাজটা নিজের মতো করে জেরিনকে বললো তাকে জানাতে যে ও তৈরি। রাহাত এসে মীরার দিকে একবার তাকালো শুধু। অস্ফুটস্বরে বললো- ” মাশাল্লাহ ” মীরা তুমি যদি আমার বৌ হও, এটা হবে আমার জীবণের সবচেয়ে বড় পাওয়া। আল্লাহ আমার এ ইচ্ছ কবুল করুন, আমীন। চলো….

বলেই হাত বাড়িয়ে ওকে আগে যেতে ইশারা করে রাহাত। ওর পিছন পিছন আসে রাহাত। গাড়িতে পেছনের সিটে দুজন দু প্রান্তে বসে। মীরা ভেবেছিলো গাড়িতে হয়তো রাহাত ব্যাড টাচের চেষ্টা করবে। কিন্তু মীরার এ চিন্তায় পানি পরলো। ব্যাড টাচ তো দূরের কথা, আর একবারও তাকালো না ও মীরার দিকে। এমন ভাবে গাড়ির জানালা দিয়ে বাইরে দেখছে যেন ঢাকা শহরে নতুন এসেছে। মীরা মনে মনে ভাবে টাকার কথাটা বলবে। আবার ভাবে, এখন না, পার্টিতে গিয়ে সুবিধামতো বলবে।

অবশেষে গাড়ি থামলো অফিসার্স ক্লাবের সামনে। গাড়ির দরজা খুলে রাহাত বেরিয়ে দ্রুত পায়ে মীরার দিকের দরজা খুলে হাত বাড়িয়ে দিলো। ব্যাপারটা কেমন যেন লাগলো ওর কাছে। ভালো না মন্দ তা বুঝলো না, তবে কিছু একটা মনে হলো ওর…

মূল হলে পৌঁছানোর পুরোটা পথ রাহাত মীরার হাত ধরে রাখলো৷ মীরা অস্বস্তিতে বার কয়েক হাতটা ছাড়িয়ে নিলেও, রাহাত মনে করে তা আবার লুফে নিচ্ছে ওর হাতের মুঠোয়। এমন একটা অনুভূতি রাজিবের কাছ থেকে পাওয়ার কথা ছিলো মীরার। কিন্তু এত সুন্দর অনুভূতি ভাগ করে নিতে হচ্ছে ভুল একটা মানুষের সাথে।

ঢুকতেই এক ওয়েটার এসে ওয়েলকাম ড্রিংকস দিলো দুজনকে। সেটা হাতে নিয়ে এদিক সেদিক তাকালো রাহাত। যেন কাওকে খুঁজছে ও।

একটু পর বুঝলো এটা একটা রিসিপশন পার্টি। খুব সম্ভবত কোন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা কিংবা ধণাঢ্য ব্যাবসায়ীর ছেলের রিসিপশন এটি। এমন জমকালো অনুষ্ঠানে এর আগে কখনো আসা হয় নি মীরার। মধ্যবিত্ত পরিবারের মীরা এসবে অভ্যস্ত না। রাহাতকে দেখে বর তার নববিবাহিতা স্ত্রীকে রেখে এগিয়ে এলো রাহাতের দিকে। কুশল বিনিময় করে নিয়ে গেলো বৌর সাথে পরিচয় করাতে। বর বললো-
” নোভা উনি মি: রাহাত, রাহাত গ্রুপের চেয়ারম্যান”
আর উনি…. বলে বিরতি নেয় বর লোকটা, কারন ওনার কাছে রাহাতের পাশের মেয়েটির পরিচয় ক্লিয়ার না। রাহাত উনার মুখ থেকে কথা কেড়ে নিয়ে বললো-
” শী ইজ মাই ওয়াইফ মীরা”
মীরা চমকিত দৃষ্টিতে তাকায় রাহাতের দিকে। বৌটার যেন মনে ধরলো না মীরার পরিচয়টা। হঠাৎই কেমন চেহারাটা বদলে গেলো। মীরা মনে মনে ভাবলো –
মেয়েরা তাদের চেয়ে বেশী সুন্দর কাওকে সহজে মেনে নিতে পারে না তাই হয়তো….

নতুন বৌ দামী একটা লেহেঙ্গা পরে আছে, গা ভরতি গহনা। নিশ্চয়ই দামী কোন পর্লার থেকে সেজেছে। মাশাল্লাহ সুন্দর লাগছে তাকে। তবুও কমলা বেগুনী কম্বিনেশনের জামদানী শাড়ি, আর সাদামাটা সাজের মীরা যেন দ্যুতি ছাড়াচ্ছে চারপাশে। সেটা মীরা খেয়াল না করলেও লক্ষ্য করেছে প্রত্যেকে।

মীরা সেখান থেকে একটু দূরে সরে ভাবতে লাগলো, রাহাতের বাবার গার্মেন্টস এর ব্যাবসা। কিন্তু রাহাত গ্রুপ নামে কিছু তো ও শুনে নি রাজিবের কাছে। এমন সময় রাহাত ডাকে মীরাকে। এমন ভাবে ডাকছে যেন সত্যি মীরা ওর ওয়াইফ।

মীরা বুঝতে পারলো ওরা রাহাতের বন্ধু। তাই না যাওয়ার বাহানায় উঠতে গিয়ে ব্যাথা পাওয়ার ভঙ্গি করতেই রাহাত সহ সবাই ওর কাছে আসে। রাহাত ব্যাস্ত ভাঙ্গিতে বলে-
: ” কি হলো?”
: ” না, না, তেমন কিছু না, উঠতে গিয়ে শাড়ি জুতায় আটকে গেছে ”
: ” মীরা মিট মাই ফ্রেন্ডস….
ও হচ্ছে অনিক, ও পিয়ুস, আর ও হচ্ছে লোরা ওরা আমার আমার স্কুল ফ্রেন্ড।

মীরার মাথা চক্কর দিতে থাকে ব্যাবসায়ী দাওয়াতে স্কুল ফ্রেন্ড আসলো কোত্থেকে?
হঠাৎ লোরা বলে উঠলো-
” মামা তুই কিন্তু জিতছস, মাশাল্লাহ, পরির মতো বউ পাইছিস। এট লিস্ট ও নোভার চেয়ে হাজার গুন সুন্দরী ”
: “শাট আপ লোরা”
রাগান্বিত কন্ঠে বলে রাহাত।
লোরা কেমন অপ্রস্তুত হয়ে যায় রাহাতের কথায়। পিয়ূস কথা ঘুরিয়ে বলে-
: ” চলতো খেতে বসে পরি”
: ” চল, চল, ” বলো অনিক।

রাহাত বলে তোরা এগুতে থাক আসছি আমরা। মীরার মাথায় কেমন ঘুরতে থাকে কয়েকটা শব্দ – স্কুল ফ্রেন্ড, মাই ওয়াইফ, আর নোভা…..

অনুষ্ঠানের সব ফর্মালিটি শেষ করে সেখান থেকে বের হতে সাড়ে ন’টার মতো বেজে যায়। আরো কিছু সময় থাকবে ভাবলেও মীরার তাড়া দেওয়ার কারনে জলদি বেরিয়ে পরে ওরা। এমন সাজ পোশাকে বাড়ি যাওয়া ঠিক হবে না ভেবে মীরা রাহাতের সাথে গিয়ে কাপড় বদলে বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নেয়। ফেরার সময় ও দুজন গাড়ির দুই প্রান্তে বসে ফিরে। মীরা কেমন যেন চিনতে পারে না রাহাত কে। এই কি সেই রাহাত যে নোংরা চোখ বুলিয়ে দিতো ওর সারা শরীরে…

মীরার মনে হয় কোন কারনে রাহাত আপসেট। রাহাতের বাড়ি ফিরে জলদি কাপড় বদলে নিলো মীরা। মেকাপ তুলে একেবারে সাধারণ হয়ে গেলো ও। ওয়াশরুম থেকে বেরুতেই দেখে……..

চলবে…..

#প্রিয়_ভুল
লেখা: #মাহাবুবা_মিতু
পর্ব: ৮
(অনুগ্রহ করে অনুমতি ছাড়া লেখা কপি করবেন না)

অনুষ্ঠানের সব ফর্মালিটি শেষ করে সেখান থেকে বের হতে সাড়ে ন’টার মতো বেজে যায়। আরো কিছু সময় থাকবে ভাবলেও মীরার তাড়া দেওয়ার কারনে জলদি বেরিয়ে পরে ওরা। এমন সাজ পোশাকে বাড়ি যাওয়া ঠিক হবে না ভেবে মীরা রাহাতের সাথে গিয়ে কাপড় বদলে বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নেয়। ফেরার সময় ও দুজন গাড়ির দুই প্রান্তে বসে ফিরে। মীরা কেমন যেন চিনতে পারে না রাহাত কে। এই কি সেই রাহাত যে নোংরা চোখ বুলিয়ে দিতো ওর সারা শরীরে। মীরার মনে হয় কোন কারনে রাহাত আপসেট।

রাহাতের বাড়ি “ক্ষণিকালয়ে” ফিরে জলদি কাপড় বদলে নিলো মীরা। মেকাপ তুলে একেবারে সাধারণ হয়ে গেলো ও। ওয়াশরুম থেকে বেরুতেই মীরা দেখে জেরিন একটা খাম হাতে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ওকে দেখে মিষ্টি হেসে জেরিন বললো-
: ” স্যার এটা আপনাকে দিতে বলে গেছেন”
: ” কি এটা? ”
: ” তা তো জানি না ”
: ” আপনার স্যার কোথায়? আমার একটু কথা ছিলো তার সঙ্গে ”
: ” স্যার তো চলে গিয়েছেন আপনাকে পৌঁছে দিয়েই। যাওয়ার সময় আমাকে বললো আপনাকে যেন এটা দিয়ে দিই ”
: ” ওহ্, ধন্যবাদ ” বলে আন্তরিক ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে থাকা জেরিনের হাত থেকে খামটা নিলো মীরা। হাতে নিয়ে খামটা খুললো মীরা সাবধানে, মনে মনে ভীষণ উৎসুক ও । খুলে দেখে খামের ভিতরে সাইন করা ৩ লক্ষ টাকার একটা চেকের পাতা । জিনিসটা দেখে অবাক হলো মীরা। রাহাত চলে গেলো! কাগজপত্রে কোন সাইন ফাইন না করিয়েই দিয়ে দিলো এতগুলো টাকা? স্ট্রেন্জ…!

খামে চেকটা পুরে সেটাকে ব্যাগে ঢুকিয়ে দ্রুত রওনা হলো মীরা। পেছন থেকে জেরিন ডেকে বললো ম্যাডাম স্যার ড্রাইভারকে বলেছে আপনাকে পৌঁছে
দিতে। অনুগ্রহ করে আপনি একা যাবেন না। তাহলে স্যার এসে আমার সাথে রাগারাগি করবে।

মীরার ভালোই হলো। এত রাতে খিলক্ষেত থেকে ঢাকা মেডিক্যাল পৌঁছাতে বহু হ্যাপা পোহাতে হতো ওকে। এদিকে রাতও প্রায় সাড়ে দশটা বাজে। মীরা গাড়িতে উঠে ড্রাইভারকে বললো ঢাকা মেডিক্যাল যেতে।

গাড়িতে বসে একেবারে কিনারে চেপে বসলো মীরা। যেন গাড়ি ভর্তি মানুষ, গা বাঁচাতে তার এই চেষ্টা। তার উপর কাঁধ ব্যাগটাকে এমন ভাবে আগলে রাখলো যেন ও কোন রিকশায় বসা। একটু ঝাঁকি লাগলেই পরে যাবে সেটা। গাড়ি চললো খুব স্পিডে। এই তো কদিন আগে- এত রাতে বাইরে থাকার কথা কল্পনা ও করতে পারতো না মীরা। অথচ কত কি করতে হচ্ছে ওকে। নিজেকে বাজি রেখে এক কামুক পুরুষের বাড়ি গিয়েছিল ও, সেখন থেকে তার স্ত্রী সেজে পার্টিতেও গিয়েছিল তার সাথে। এত রাতে একা ফিরছে ও। জীবণ ওর কাঁধে বয়সের চেয়ে অনেক গুণ বেশী ওজনধারী কষ্টের ভার দিয়ে দিয়েছে। তাই নিজের উপর বিদ্রুপ হাসি হাসলো ও।

বেখেয়ালি মীরা এখন পর্যন্ত দুবার খামটা খুলে দেখেছে। একবার খুলেছে সেটা সত্যিই চেক কিনা তা পরখ করতে। কাগজপত্রে সই ছাড়াই রাহাতের মতো মানুষ দিয়ে দিলো এতগুলো টাকা। যার কাছে আবেগের কোন দাম নেই, যে ডিল ছাড়া কিছু বুঝে না। নিজের দেখাকে তাই অবিশ্বাস ঠেকলো ওর। কিছুক্ষণ না যেতেই আবার সেটা বের করে দেখে সিগনেচার আর টাকার অঙ্কটা তখন ঠিকঠাক দেখেছে তো? মীরা হঠাৎ ওর নিজের কান্ডেই লজ্জা পেলো যেন। মুচকি হেসে বাতাসের বেগে মুখের সামনে ভীড় করা চুল গুলোকে কানের পেছনে গুঁজে ব্যাগটাকে আরো কাছে টেনে ধরে নিজের সাথে। আসলে এই একটা মাত্র চেকের পাতা এখন মীরার জীবণে অন্ধের নড়ি যেন।

মীরা মুখটাকে বাড়িয়ে দিলো গাড়ির জানালা দিয়ে। গাড়িটা খুব স্পিডে চলছে জ্যাম না থাকার কারনে। দমকা বাতাস মীরার সব ক্লান্তি, দুঃশ্চিন্তা মুছে দিচ্ছে। মীরা এখন আর কিছুই ভাবতে চায় না। না রাহাত, না ওর পরীক্ষা। এই টাকাগুলো দিয়ে আগে রাজিবকে সুস্থ করে তুলবে ও। তারপর যা হবে দেখা যাবে। এগারেটার মধ্যে মীরা পৌঁছে যায় হসপিটালে। সেখানে গিয়ে পাশের বেডের খালার কাছে ক্ষমা চায় দেরি করার কারনে। তাকে দেখে রাখার দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছিল মীরা। তিনি অনেক ভালে মানুষ, রাগ তো করেনই নি উল্টো মীরার জন্য আফসোস করলেন অকপটে। এ বয়সে এত দায়িত্ব নিয়েছে ও। আল্লাহ অবশ্যই এর পুরস্কার দিবেন তা বলে আস্বস্ত ও করলেন। দুজনে খেয়ে কেন মতে শুয়ে পরলো মীরা রাজিবের পাশেই। পরদিন রাজিবের অপারেশন হবে। পুরো টাকাটাও জোগাড় হয়ে গেছে। সে উত্তেজনায় দু চোখের পাতা এক হলো না মীরার।

সরকারি হসপিটাল যে কি এক আজব জায়গা তা যারা না গিয়েছে তারা বললে বিশ্বাসই করবে না। টাকা ছাড় এখানে কোন কথা চলে না। পদে পদে টাকা। কিছু টেস্ট করার জন্য বাইরের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যেতে বলে তারা। আবার কখনো কখনো সেখন থেকে লোক আসে স্যাম্পল কালেকশন করতে। মীরা ভাবে এত বড় হসপিটাল যে সরকার তৈরী করে দিয়েছেন তাঁরা কি পারে না এসব টেস্ট গুলো এখানেই করানোর ব্যবস্থা করতে৷ রাজিবের পাশের সিটে থাকা রোগীর স্ত্রী বলেন-
: ” বুঝলা না মা, এটা তাগোরের ব্যাবসা৷ সরকার এগুলা জানে না কিছুই, ওগোর সাথে এ হসপিটালের লোকেগো লগে চুক্তি, মা গো আমরা তে আসি আমাগো একমাত্র কাওরে চিকিৎসা করাইতে কিন্তু তাগো কাছে তো হাজার হাজার রোগী আসে প্রতিদিন। এটা তাগোর কাছে ব্যাবসা, আর উপরি কামাই করার একটা রাস্তা”

মীরা অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে তার দিকে। একটা মানুষ কত অসহায় হলে সরকারি হাসপিটালের বারান্দায় অবধি থাকতে রাজি হয়। তা তারা বুঝে না। এর সাথে ডাক্তারদের এমন ব্যবসায়িক আচরণ, অধিকন্তু আয়া, বুয়াদের যন্ত্রণা। রোগী স্ট্রেচারে করে এক্সরে করাতে নিবে তো পঞ্চাশ টাকা দিতে হয়। ফিরবার পথে আবারও পঞ্চাশ।

মীরা খরচ বাঁচাতে একজনকে বলে ছিলো খালা আমিই পারবো নিতে। এর উত্তরে আয়া কর্কশ ভাবে বলেছিলো-
” দেখি মেয়ে কে দেয় তোমারে স্ট্রেচার?”
তারা দেড় ঘন্টা স্ট্রেচার আটকে দাঁড়িয়ে ছিলো, বসিয়ে রেখেছিলো মীরাকেও। এদিকে দেরিও হয়ে যাচ্ছে। জীবণের এত এত ঘোর প্যাঁচ আর নিষ্ঠুর দিক আগে দেখে নি মীরা। একই ওয়ার্ডের পরিচিত এক মহিলা যিনি মাস খনিক হলো এখানে আছেন তিনি বললেন –
” কাম হবে না মা, দিয়ে দাও। এরা চিনে শুধু ট্যাকা ”

ঐ মহিলাকেও কিছু অশ্রাব্য কথা শুনিয়ে দিলেন তিনি। কষ্টে মীরার কান্না পায়। মানুষ এত নিষ্ঠুর, কঠোর কি করে হয়। এদের মনে কি দয়া মায়ার ছিটেফোঁটা ও নাই।

সবকিছু ঠিকঠাক করে রিপোর্ট গুছিয়ে রাখে মীরা। কিন্তু অপারেশন এর ডেট আরো তিন দিন পিছিয়ে যায়। অপারেশন এর ডেট পরিবর্তন হওয়ায় মীরা ভীষণ কষ্ট পায়। অপারেশন টা না হওয়া পর্যন্ত যেন ওর শান্তি নেই।

অবচেতন ভাবে শুয়ে থাকা রাজিব আধো চোখ মেলে দেখে কেবল মীরার ব্যাস্ত সমস্ত রূপ। কেমন চোখে তাকায় যেন রাজিব । কিছুটা সংকোচ, লজ্জা, আর মৃত্যু ভয় এক করা সেই দৃষ্টিতে। এক্সরের সিরিয়াল কিংবা উপর নিচে উঠার জন্য লিফটের অপেক্ষার সময়টুকু কেবল ফুরসত পায় যেন মীরা । সে সময় টুকুতে রাজিব কেবল তাকিয়ে থাকে মীরার দিকে। একটু যদি তাকায় মীরা ওর দিকে। মীরা প্রতি বারই ওর মাথয় হাত বুলিয়ে মুচকি হাসে। কোত্থেকে এত প্রাণশক্তি পায় মীরা তা খুঁজে পায় না রাজিব। হসপিটালে ভর্তি, এতগুলো টাকার জোগাড়। কিছু জিজ্ঞেস করলেই বলে এসব তোমাকে ভাবতে হবে না। তুমি কোন দুশ্চিন্তা করো না। মীরা মনে প্রাণে বিশ্বাস করে আল্লাহ ওর পরীক্ষা নিচ্ছে। এবং ওকে এ পরীক্ষায় জিততে হবেই।

তিনদিন পর অবশেষে দীর্ঘ সময় ব্যাপী হওয়া অপারেশনটা সম্পন্ন হলো ভালো ভাবেই। রাজিবের কিছু বন্ধু ছিলে সেদিন মীরার সাথে। রাজিবের ভাগ্য সুপ্রসন্ন ডাক্তাররা যতটুকু আশা করেছিলেন তারচে বেটার রেসপন্স করেছে ওর শরীর। তাই দ্রুতই তারা ছেড়ে দিলেন ওকে। বাড়ি ফিরে মীরা লেগে গেলো রাজিবের সেবায়৷ রাজিব এখন অনেকটা সুস্থ।

বাড়ি ফিরে একটু সুস্থ হতেই রাজিব প্রথম কথাটা বলে- মীরার কাছে ক্ষমা চেয়ে। মীরাকে এত বিপদে ফেলে দেওয়ার জন্য। এবং কৃতজ্ঞতা জানায় এ বিপদেও ওর পাশে থাকার জন্য। একজন ভালো স্ত্রী, আদর্শ স্ত্রী হওয়ার যতগুলো মানদণ্ড রয়েছে তার সবগুলোকে ছড়িয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে মীরা। তা ভাষায় প্রকাশ না করলেও ঠিক বুঝেছে রাজিব। তবে টাকার ব্যপারটা জিজ্ঞেস করলেই রহস্যজনক ভবে মীরা তা এড়িয়ে যায়।

এমনি করে ভালোই কাটছিলো ওদের দিন। জমানো টাকা খরচ করায় ওদের সংসারে সুখের বান বইছে যেন। এ অসুস্থতাটা যেন ওদেরকে আরো কাছে টেনে এনেছে দুজনের বোঝাপড়ার দিক থেকে।

অবাক ব্যাপার এই যে এ কয়দিনে একবারের জন্য ও মীরাকে কল দেয় না রাহাত। মীরা সংসার, অসুস্থ স্বামীর সেবায় ভুলেই গিয়েছিল রাহাতের কথা।

হসপিটাল থেকে ফিরার পথে দশ দিনের ঔষধ কিনেছিলো মীরা। তা শেষ হয়ে যাওয়ায় ফাইলের কাগজ হতে রাজিবের পেসক্রিপশন খুঁজতেই কি একটা পরে যায় কাগজের মাঝ থেকে। সেটাকে তুলে নিতেই মীরা দেখে সেটা চেকবাহী সেই খামটা। খামটাকে দেখে মীরার শরীরে কেমন একটা ঝাঁকুনি দিলো। সারা শরীর হঠাৎই ঘেমে জবজবে হয়ে যায় পৌষের শীতের রাতে ।

একটা খাঁকি রঙের বিশেষত্বহীন খাম দেখে হঠাৎ কেন বিচলিত হলো মীরা?

খাম হাতে মেঝেতে বসে পরলো ও । হঠাৎই ওর ভালো থাকার, সুখে থাকার তারটা যেন ছিঁড়ে গেলো। বিছানায় শুয়ে থাকা রাজিব মীরাকে দেখে জিজ্ঞেস করলো – কি হয়েছে মীরা?
মীরা স্বাভাবিক ভঙ্গিতে হাসার চেষ্টা করলো। কিন্তু সে হাসিটাকে কেমন অকৃত্রিম মনে হয় রাজিবের কাছে। ” কিছু না, শুয়ে পরো তুমি, তেমার ঔষধ আনতে হবে কালই ” রাজিব ভাবে টাকার ভাবনায় হয়তে মীরা এমন বিচলিত। রাজিব শোয়া থেকে উঠে বসে সহসা মীরাকে জড়িয়ে ধরে বলে-
” অনেক তে করলে মীরা, এবার থামো তুমি। আমার আর কোন চিকিৎসার দরকার নেই। তুমি পাশে থাকলে আমি এমনিতেই সেরে উঠবো ” কথা গুলো শুনে মীরার চোখ বেয়ে পানির মৃদু স্রেত বয়ে যায়।
আলিঙ্গনরত মীরা হাতের খামটা তুলে ধরে চোখের কাছে, একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে খামটার নিচের এক কোণটায় । যেখানে লেখা রয়েছে রাহাতের কাছে মীরার ফিরে যাওয়ার তারিখ। অনেক কথা তবুও কিভাবে বলবে ও যে ওর প্রিয়তমকে আমনিভাবে আলিঙ্গন করার মোট সময়ের উল্টো গোনা শুরু হয়ে গেছে অনেক আগেই। যা শেষ হতে খুব বেশি বাকী নেই। খামে লেখা তারিখটা তাই বলছে যেন তারস্বরে, যা বিদীর্ণ করে দিচ্ছে মীরার শ্রবণেন্দ্রীয়।

চলবে…

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ