#প্রিয়_বেগম
#দ্বিতীয়_পরিচ্ছেদ #পর্ব_২৮
লেখনীতে পুষ্পিতা প্রিমা
নানাজানকে দেখে চমকে যায় সকলে। বিশেষ করে শেরতাজ সাহেব। মেয়ের মৃত্যুর পর উনাকে আর রূপনগরে দেখা যায়নি। উনারা সকলেই ভেবেছেন উনি মারা গিয়েছেন। হঠাৎ এভাবে দেখা দেবেন বিলক্ষণেও ভাবেননি উনি। উনাকে আর উনার ভৃত্যদুজনকে ভালোভাবে আপ্যায়ন করা হলো। অপরূপার অন্দরমহলের বাইরে বেরোনো নিষেধ। শরীরে বিপুল পরিবর্তন চলে এসেছে। যদিও সে হাঁটতে চলতে চায় না। কিন্তু খোদেজার কথায় রসাইঘর আর নিজের কক্ষ অব্দি হাঁটে। খোদেজার নানাজানের সাথে অপরূপাকে দেখা করাতে চেয়েছেন। যাতে উনি দোয়া করে দেন। অপরূপা উনাকে দেখে চমকিত হলো। উনিও হলেন। খোদেজা তা পরখ করে বললেন,
‘ আপনি কি চেনেন আমাদের বৌমাকে? ‘
নানাজান হেসে বললেন,
‘ হ্যা। তাকে জিজ্ঞেস করুন কিভাবে চিনি। ‘
অপরূপা ওনাকে কদমবুসি করে সবটা খুলে বললো খোদেজাকে। উনি অপরূপার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। বললেন,
‘ আমার নাতিবৌ কোথায়?’
খোদেজা অবাক হলেন। উনি কিভাবে জানেন তনীর সাথে উনার নাতির নিকাহ হয়েছে!
অপরূপা দাঁড়িয়ে পড়লো। বলল,
‘ আমি উনার কথা বলতে যাচ্ছিলাম। আপনি বসুন, আমি এক্ষুণি নিয়ে আসছি। ‘
অপরূপা চলে গেল। খোদেজার সাথে নানাজান কথা বলতে লাগলেন।
শাহানা এসে নানাজানের সামনে বসলেন। শাড়ির আঁচলে ঘনঘন চোখ মুছে বললেন,
‘ কোথায় আপনার গুণধর নাতি? কোথায় সে? এতগুলো মাস চলে গেল। নিজের বউ বাচ্চার কথা ভাবলো না? এ কেমন নিষ্ঠুরতম আচরণ তাদের মা ছেলের! মা তো শান্তি দিলই মরার আগ পর্যন্ত। ছেলে নিজের সন্তান সম্ভাবা বউ ফেলে কোথায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে? সম্পর্ক বন্ধনকে এতই যখন ভয় পায় কেন সম্পর্কে জড়ালো?’
নানাজান হতচকিত হয়ে গেলেন। সে সন্তানসম্ভবা? কোথায় শেরহাম তো এই ব্যাপারে কিছু বলেনি। তারমানে সে জানেনা?
অপরূপা তটিনীকে নিয়ে এল। শোয়া ছিল সে। রাত জাগে আর দিনের বেলায় ঢুসে ঢুসে ঘুমায়। কারো কথা শোনেনা। সবার সাথে তো কথায় বলতে চায় না। বিশেষ করে শাহানার সাথে। নানাজানকে দেখে অবাকচোখে খানিকক্ষণ চেয়ে রইলো সে। ছুটে গিয়ে সামনে বসে ঝরঝরে কেঁদে উঠে বলল,
‘ ও আর কখনো আসবে না? কোথায় চলে গেল? আমাকে তালাকনামা দিয়ে চলে গিয়েছে। কতবড় নিমকহারাম। ওপাড়ে গিয়ে আমি মাফ দেব না এজন্য। আমি কার কি দোষ করেছি যে আমাকে এতবড় শাস্তি দিল! ‘
সবার চোখ জলে ভিজে উঠলো তার কান্নায়। নানাজান মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললেন,
‘ ও তো জানেনা তুই সন্তানসম্ভবা। আমাকে বলতো না?’
‘ তোমার সাথে দেখা হয়েছে ওর? কোথায় আছে? ঠিকানা দাও আমাকে। ও যা চাইবে তাই হবে। আমার কাছে ফিরে আসতে বলব না। শুধু একটিবার ওর বাচ্চার কথাটা বলব। ঠিকানা দাও।’
‘ আমি জানিনা ও কোথায়। ও তার পরের দিনই আমার গুহা ছেড়ে চলে গিয়েছে। তোরা সবাই মিলে মুক্তি চেয়েছিস, ও সবাইকে মুক্তি দিয়ে চলে গিয়েছে। আমার কথা শুনে সব সম্পত্তির দলিলপত্র শেহজাদ সুলতানকে বুঝিয়ে দিয়েছে। ‘
শাহানা, শেরতাজ সাহেব কেউ কিছু বলতে পারলেন না। সেদিন তটিনীকে নিয়ে মহলে ফেরার সবাই যখন তটিনীর সন্তানসম্ভাবনার কথা জানতে পারে তখন শাহানা কষে চড় মেরেছিল তার গালে। যেটার ভয় পাচ্ছিলেন সেটাই হয়েছে। সাফায়াত আর শেহজাদ ঢাল হয়ে না দাঁড়ালে তটিনী আরও মার খেত।
শেহজাদ যখন জানায় সবকিছু ছেড়ে ছুঁড়ে, নিজেকে সবকিছু থেকে মুক্ত করে শেরহাম চলে গিয়েছে তখন হতভম্ব হয়ে যায় সকলে। এ যেন অবিশ্বাস্য, অকল্পনীয়। যে রাজ্য দখল করার জন্য বছরের পর বছর সাধনা করে এমন দক্ষ সাধক হয়ে শক্তিশালী হয়ে ফিরে এসেছিল সে, কি করে এত সহজে হার মেনে নিল সে? আসলেই কি তার হার হয়েছে? নাকি সবাইকে হারিয়ে দিয়ে চলে গিয়েছে সে! শাহানা তটিনীকে সামনে এনে চেঁচিয়ে জিজ্ঞেস করে,
‘ চলে গেল তো তোমাকে ফেলে! এখন কি হবে তোমার এই সন্তানের? এই মাসুম বাচ্চার কি হবে? কি হবে তোমার ভবিষ্যৎ? নিজের ভবিষ্যতটা নিজ হাতেই অন্ধকার করে দিলে তুমি। যখন ও জিজ্ঞেস করবে আমার বাবা কে, কোথায় গিয়েছে, তখন কি জবাব দেবে তুমি? ‘
তটিনী সেদিন বুঝে নিয়েছে তার এই যাত্রা অনেক কঠিন। তার দুর্বলতা হবে তার সন্তানের আগমনকে দোষারোপের একমাত্র কারণ। এই সন্তান সে স্বেচ্ছায় আল্লাহ’র কাছ থেকে চেয়ে নিয়েছে। তার উপর কিছুতেই দোষারোপ আসতে দেবে না সে।
তাই সে দুর্বল হবে না। তার সন্তানের জন্য সে একাই যথেষ্ট। কড়া সুরে সে মাকে জবাব দেয়,
‘ যদি ও ওর বাবার কথা জিজ্ঞেস করে আমি তোমাদের কাছে পাঠিয়ে দেব। তোমরা ওকে বলবে কিভাবে তোমরা ওকে কথার বানে আঘাত করেছ। আমার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছ। তার ফিরে আসার সমস্ত পথ বন্ধ করে দিয়েছ। ও শতটা পাপ করলেও, তোমরাও নিষ্পাপ নও। তোমরা ওকে ভালোবেসে আগলে রাখতে চাওনি। ধুর ছাই করে দূরে সরিয়ে দিয়েছ। এটার জবাব তোমাদের দিতে হবে। হাশরের মাঠে ওর সাথে সাথে তোমরাও দোষী থাকবে। আমার সুখ কেড়ে নেয়ার জন্য কাউকে ছাড় দেব না আমি। ‘
শেরতাজ সুলতান বাক হারিয়েছিলেন সেসময়। মস্তিষ্ক যেন অচল হয়ে পড়েছিল। ছেলেকে শত্রুর চোখে দেখতে দেখতে চোখে ছানি পড়ে গিয়েছিল যার কারণে উনি ভুলে গিয়েছিলেন সন্তানের শরীরে মায়ের রক্ত যেমন ছিল বাবার রক্তও ছিল। সেই পাষাণ, নির্দয়, কঠোর, বর্বর জা**নোয়াররূপী অমানুষটার ভেতরে যে সুপ্ত একজন শুভ্র মানব ছিল তা কেবল তার সঙ্গিনী, অর্ধাঙ্গিনী দেখতে পেয়েছিল। তাই শ্বশুরকে কোনো জবাব দিতে পারলেন না উনি। বুকের গহীন কোণ হতে থেকে থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস ভেসে আসে শুধু। সত্যি তিনি ভালোবাবা হতে পারেননি। গোঁয়ার ছেলেটাকে আরেকবার চোখের দেখা দেখার জন্য আড়ালে কেঁদে মরেন উনি। পনের বছর আগেও সবার ভালো চেয়ে, নগরের ভালো চেয়ে বুকে পাথর বেঁধে ছেলেকে বের করে দিয়েছিলেন উনি। ভালো শাসক হতে পারলেও ভালো বাবা হয়ে উঠতে পারেননি আজও। সত্যিই পারেননি। তনীকে যতই দেখেন ততই এই সন্তাপ উনাকে খুঁড়ে খুঁড়ে খায়। এই বাচ্চা একদিন তাকে দাদাজান ডেকে যদি জিজ্ঞেস করে, ‘ কোথায় আমার বাবা? ‘ কি জবাব দেবেন উনি? কিভাবে বলবেন, তোর বাবাকে আমিই ধ্বংসের দিকে পাঠিয়ে দিয়েছি।’
নানাজান শেহজাদ আর সাফায়াত মহলে ফেরার কিছুপর রওনা দিলেন। অনেক জোরাজোরি করার পরও উনাকে কেউ রাখতে পারলো না। এ কয়েকমাস নগরে কোনোপ্রকার যুদ্ধ বিগ্রহ, খুনখারাবি, ডাকাত হামলা হয়নি। জাদুকরদের দেখা মিলেনি। শেহজাদ জানে এইসব কার কামাল। ধ্বংস করতে এসে আপন মানুষদের সংস্পর্শে এসে, সেই মানুষটার বিধ্বংসী রূপটাই ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। বিশেষ করে তনী। দাদাজান কি তবে জানতেন তনীর কাছে এসে তার সব জারিজুরি শেষ হয়ে যাবে! নিজের অন্তিম হার দেখবেন উনি! নগরের শৃঙ্খলা শান্তি ফিরে আসলেও তার মন কিছুতেই শান্ত হয় না। সে জানে এই শান্তি ফিরিয়ে দেয়ার জন্য ভাইজান এত দূরে চলে গিয়েছেন। ভালোবাসা, মায়া, মহব্বতে আটকা পড়ে যাচ্ছিলেন বিধায় নিজেকে সরিয়ে নিয়ে দূর থেকে সবাইকে রক্ষা করছেন। যে ভাইকে উনি নিজের শত্রু ভেবে ছুটে এসেছিলেন ধ্বংস করবে বলে, পতন চাইবেন বলে, সেই ভাইয়ের চোখে নিজের জন্য প্রতিহিংসা না দেখে উনি ভেতরে ভেতরে অপরাধবোধে ভুগছিলেন। ভাইকে পরাস্ত করার জন্য যেসব ছলনার আশ্রয় তিনি নিয়েছিলেন, যে সমস্ত পাপ করেছিলেন সব পাপের মুখোমুখি হওয়ার ভয় থেকে উনি চলে গিয়েছেন।
সেদিন তো স্বপ্নে দেখলো তার সাদা ঘোড়া আর কালো ঘোড়াটির গলায় গলায় ভাব। সেই স্বপ্নের গভীরতা ভাবতেই শেহজাদের বুকে অদ্ভুত একটা যাতনা হয়। কবে এ যাতনা কমবে?
————–
মানুষ*খে**কো জংলী তান্ত্রিকগুলো দুটো নরনারীকে কুঁ**পিয়ে হত্যা করে মাংস পুড়ে খাওয়ার আয়োজন শুরু করেছে সবে। মহিলা আর লোকটা সম্পর্কে স্বামী স্ত্রী। জাহাজে করে তারা রূপনগরের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলো। মাঝপথে দস্যুরা হামলা করে। আর ধরে বেঁধে এখানে নিয়ে আসে। মস্তবড় ধারালো ধামা দা ছুরি শান দেয়ার তোড়জোড় চলছে। আগুনের মশালের চারপাশে ধেইধেই করে তাদের উদ্ভট নাচের ভঙ্গি দেখে সভ্য সমাজের মানুষদুটো ভয়ে কাঁপছে। একে অপরের প্রাণের ভয়ে কুঁকড়ে গেছে। চোখ দিয়ে অঝোরে পানি পড়ছে। এত ভয়ানক মানুষগুলো কি তাদের দিয়ে করতে চায়ছে? তাদের কান্নাকাটির আওয়াজ কারো কান পর্যন্ত যাচ্ছে না উচ্চৈস্বরে দা ছুঁড়ির শান দেয়ার আওয়াজে।
গুহার সম্মুখপথে আরও একটা ঘোড়ার গাড়ি এসে থামে। একজন বৃদ্ধ লোক আর দুজন বেঁটে লোক এসে মুখ থুবড়ে পড়ে গুহার মধ্যে। অতিশয় বৃদ্ধ বয়স্ক লোকটি উঠেও দাঁড়াতে পারেনা। আবদুল্লাহ, আর আলাউদ্দিনের হাত বাঁধা থাকায় তারাও উঠে দাঁড়াতে পারে না। পিঠের উপর শক্ত পায়ের লাতি পড়ায় একেবারেই নেতিয়ে পড়ে তারা। দলবলে ছুটে এসে নানাজানকে ঘিরে দাঁড়ায়। নানাজান বহুকষ্টে চোখ তুলে তাকায়। দেখতে পায় অদূরে দুটো মানুষ ভয়ে কাঁপছে, কাঁদছে। বাঁচার আকুতি জানাচ্ছে। মনেমনে দোয়া-দরুদ পড়ে শক্তি সঞ্চয় করেন উনি। শেরহামের খোঁজে এখানে এসেছেন উনি। সে কি থাকে না এখানে? তার অনুপস্থিতিতে মেয়েটার কি যে হাল হলো তার জানার দরকার। সে তো ভেবেছিল সে চোখের আড়াল হলেই সবাই খুশি হবে কিন্তু সব তো উল্টো। সবার কথা বাদ দিলেও অন্তত নিজের বউ বাচ্চার কথা তার ভাবা উচিত। তাদের মুখ চেয়ে নিজেকে এই কলুষিত জীবন থেকে সরিয়ে নেয়া উচিত। আর কতকাল এভাবে বাঁচবে? কতদিন খোদাবিমুখী হয়ে থাকবে। খোদার গোলামদের সান্নিধ্যে গিয়ে সে আলো দেখেছে। সেই আলোর প্রখরতা তার অন্ধকারাচ্ছন্ন পাষাণ হৃদয় সইতে না পেরে পুনরায় অন্ধকারে ফিরে এসেছে। কিন্তু আলোর কাছেই তার হার তা তাকে স্বীকার করতে হবে। স্বীকার করতে হবে এই দিনদুনিয়া যার হুকুমে চলে তাকে। হেদায়েতের পথে সে এক পা এগোলে খোদাবান তাকে দশ পা এগিয়ে দেবেন। এভাবে জীবন-যাপন করার চেয়ে খোদার গোলাম হয়ে একদিন বাঁচা শ্রেয়।
এত হৈচৈ শুনে তান্ত্রিক জাদুকর চন্দ্রলাল এগিয়ে আসে একটা ত্রিশূল হাতে।
নানাজানকে দেখে তার চেহারার রঙ পাল্টে যায়। হিংস্র জন্তুর মতো চোখজোড়া জ্বলে উঠে দপদপ করে। চেহারার অভিব্যক্তি বলে দেয় এই লোকটা তার প্রাণের শত্রু। বহুবছর পূর্বে তাকে লোকায়ত থেকে বিতাড়িত করেছে সে। গঞ্জের হাঁটের কোণায় একটা বড় বটগাছের নীচে নিজের ঘাঁটি বসিয়েছিল সে। নানান মানুষ তার কাছে আসতো তাদের নানান সমস্যা নিয়ে, শত্রু পরাস্ত করার অস্ত্র জানতে। সেই গঞ্জে সে কুখ্যাত ছিল। এই লোক তাকে সেখান থেকে বিতাড়িত করে নিজের ক্ষমতাবলে। তারপরেও দমে যায়নি। উনার মেয়ে কুপথে যাওয়ার কারণ এই চন্দ্রলালের ছেলে লতিফ ওরফে শংকর। সেই শংকরের আগের ঘরের সন্তান ডাকাত সর্দার গুলজার।
নানাজানের সবচাইতে বড় হার ছিল শেরহামের উনাকে ঘৃণা করা। তার মাকে বন্দি করার পেছনে নানাজান যে পরোক্ষভাবে সাহায্য করেছেন সলিমুল্লাহ সুলতানকে তারজন্য শেরহাম নানাজানকে বহুবছর ঘৃণা করে এসেছে। এছাড়া চন্দ্রলালের কানপড়া ছিলই। বয়সটাও ছিল অসম। যে যা বুঝাতো সে তা বুঝে নিত। আপনমানুষদের সান্নিধ্যেও পায়নি সবমিলিয়ে সে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। শেরহাম যখন থেকে তন্ত্রমন্ত্র বলে দীক্ষিত হয়ে উঠা শুরু করেছে তখন থেকেই নানাজানের হার শুরু হয়েছে। উনি বহু চেষ্টা করেছেন কিন্তু পারেননি। শুধুমাত্র এইবার শেরহাম নিজ থেকে ছুটে এসেছিলেন উনার কাছে। কথাও শুনেছেন। তার মায়ের সব বৃত্তান্ত মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন। সব শোনার পরও কেন আবার ফিরে গিয়েছে তার কারণটা উনার জানা নেই। কিন্তু কোথায় সে?
উনার পিঠে মাথায় শক্ত পা দিয়ে অনবরত লাতি বসায় জাদুকরেরা। আবদুল্লাহ আর আলাউদ্দিন চেঁচাতে থাকে। উনাকে ছেড়ে দেয়ার কাকুতিমিনতি জানায়।
বন্দি নরনারী দুজন কেঁপে উঠে। আঁতকে উঠে আল্লাহ আল্লাহ জপ করে। মানুষরূপী শয়তানদের হাত থেকে বাঁচার জন্য ছটপট করতে থাকে।
এইবার বেশ জোরেশোরে লাতি বসানো হয় নানাজানের গায়ে। নানাজান সর্বশক্তি দিয়ে চিৎকার করে ডাকেন শেরহামকে।
অন্ধকার গুহার একটি বদ্ধ কক্ষে ছোট আকারের মশালের সামনে পেট্রোল, ককটেল আরও নানানপ্রকার বোমার সরঞ্জামপাতি নিয়ে টুকটাক হাতুড়ি পেটার কাজ সম্পাদন করতে থাকা এক মানবের কানে গিয়ে ঠেকে সেই ডাকটি। হাতুড়ি পেটানো থেমে যায় তার।
______
তাঈফ পায়চারি করতে থাকে অনবরত। নাদির তাকে আশ্বস্ত করে বলে,
‘ শেহজাদ সুলতান বললেন তো সৈন্য পাঠাচ্ছে। মামা মামীদের কিছু হবে না। ‘
তাঈফের কপাল ঘেমে উঠেছে মা বাবার চিন্তায়। ফজল সাহেব তাকে কি বলবে বুঝতে পারছেনা। শেহজাদও বিস্মিত। এ কয়েক মাস জলদস্যু দেখা যায়নি একদম। আবার কোথা থেকে এল তারা!
চলমান..