Sunday, October 5, 2025







প্রিয় বেগম পর্ব-১৬

#প্রিয়_বেগম
#দ্বিতীয়_পরিচ্ছেদ #পর্ব_১৬
লেখনীতে পুষ্পিতা প্রিমা

তটিনী হাঁ করে তাকিয়ে থাকলো। হাসি চেপে বলল,

‘ তাই নাকি? আপনি বিবাহিত এটা তো আজ জানলাম। বাহ কত সাধু পুরুষ আপনি। ‘

শেরহাম তার দিকে সরু চোখে তাকিয়ে বলল,

‘ তুই তো ওই..

‘ হ্যা হ্যা বলো কে আমি? মা**তাল একটা।’

শেরহাম বিড়বিড় করলো, ‘ তনীর বাচ্চা, তোকে মে**রে ফেলবো। ‘

তটিনী সামাদ আর মুরাদকে বলল,

‘ ওকে কক্ষে নিয়ে যাও।’

ওরা এগিয়ে যেতেই শেরহাম ওদের ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে বলল,

‘ যা দূরে গিয়ে মর। এগোবি না। ‘

তটিনী নিজেই এগিয়ে গেল। ওকে ধরে বলল,

‘ চলো। অনেক বাড়াবাড়ি করেছ। ‘

শেরহাম বলল,

‘ না যাব না। কোন কু**ত্তার বাচ্চা আমার নামে সাইনবোর্ড দিয়েছে তাকে কেটে কু**চি*কুচি করব। ‘

তটিনী কড়া মেজাজে বলল,

‘ চুপচাপ চলো। ‘

শেরহামকে কক্ষের দিকে নিয়ে যাওয়ায় সময় সবার মুখোমুখি হলো সে। শাহানা বলল,

‘ হচ্ছেটা কি? ‘

‘ কক্ষে নিয়ে যাচ্ছি আম্মা। মদ গিলেছে। ‘

সকলেই বিরক্তিকর চোখে চেয়ে থাকলো। মহলের কেউ কভু এসব ছাইপাঁশ খেয়েছে? তটিনী তাকে কক্ষে নিয়ে গিয়ে বিছানায় শুয়ে দিয়ে রসাইঘরে চলে এল। লেবুজল আর বড় গামলা নিয়ে ফিরে এল। লেবুজল খাইয়ে মাথায় পানি ঢেলে মাথা ধুঁয়ে মুখ ধুঁয়ে দিল, কুলি করালো। শেরহাম কুলির পানি মেঝেতে ছিটিয়ে দিয়েছে। তটিনী মহাবিরক্ত। মাথা মুছে দিয়ে গায়ের পোশাকটা খুলে গা মুছে দিল। শেরহাম নিভুনিভু চোখে বলল,

‘ তুই আমাকে বেইজ্জত করছিস কেন ? ‘

তটিনী চোখ রাঙিয়ে বলল,

‘ আরেকটা কথা বললে মে** রে নদী**তে ভাসিয়ে দেব।’

পরক্ষণে নিজের কথায় নিজেই অবাক হলো। এই লোক তাকে পাগল বানিয়ে ছাড়ছে।
শেরহাম ধমক খেয়ে বলল,

‘ আবার গালাগাল করছিস কেন?’

তটিনী ব্যঙ্গ করে বলল,

‘ তো কি রঙ্গ করব তোমার সাথে? ‘

‘ হ্যা কর। ‘

‘ উফফ। ‘

বালিশ টেনে তাকে শুইয়ে দিল তটিনী। আরও এক গ্লাস তেঁতুলের শরবত এনে দিতেই শেরহাম খানিকটা খেয়ে চোখমুখ কুঁচকে বলল,

‘ তুই খাহ। ‘

‘ সবটা খাও। ‘

‘ তুই না খেলে আমিও খাব না। ‘

‘ মাগোমা কি দরদ! হুঁশে ফিরলে মদ খাওয়ার সময় আমাকে রেখে খেওনা। ‘

‘ আবার গালাগালি করছিস তুই? ‘

তটিনী তাকে বাকি শরবতটুকু খাইয়ে দিল। মাথার নীচে দুটো বালিশ দিয়ে শুইয়ে দিয়ে চলে যাওয়ার সময় খেয়াল হলো জ্বর কমছেনা। সে সাফায়াতকে বলে ডাক্তার ডাকলো। ডাক্তার ঔষধপথ্য দিল।
শেরহাম ঘুমিয়ে পড়েছে। তটিনী তার গায়ের উপর কাঁথা টেনে দিয়ে চলে গেল।

****

রসাইঘরে খাবারদাবার পাকানোর কাজ চলছে। তটিনীকে ঢুকতে দেখে অপরূপা এসে জিজ্ঞেস করলো
‘ কিছু লাগবে আপনার? ‘
‘ না, ছোট মাছগুলো রান্না হয়েছে?’
ফুলকলি বলে উঠলো, ‘ এইতো সবে বসিয়েছি। ‘
তটিনী বলল, ‘ আমি রাঁধি, তুমি সরো। ‘
সবাই তার দিকে আঁড়চোখে তাকালো। শাহানার হম্বিতম্বি বুঝতে পারলো তটিনী। কিন্তু কিছু করার নেই। যতই খারাপ হোক মানুষটিকে সে নিকাহ করেছে। তালাক হওয়ার আগ পর্যন্ত সে স্ত্রী-ধর্ম পালন করে যাবে।

চুপচাপ ছোট মাছগুলো রান্না করলো সে বেশ ঝাল ঝাল করে। ছোট কয়েকটা কাঁচামরিচ ফালি ফালি করে দিল। জ্বর হলে ঝাল খেতে ইচ্ছে করে খুব।

রান্না শেষে বাসনে গরম গরম ধোঁয়া ওঠা ভাত বেড়ে নিল, আর ছোট মাছ, পেঁয়াজ, এক টুকরো লেবু, পাশে কিছু কালোজিরে নিল। বেরোনোর সময় শাহানা তার পথ আটকে বলল,

‘ আজকে সন্ধ্যায় তোমার তালাক ওর সাথে। কাল সাফায়াতের নিকাহ। তুমি ওর কক্ষে যাবে না। ওর মুখও দেখবে না। ‘

তটিনী মিনমিন করে বলে,

‘ এইগুলো দিয়ে আসি আম্মা। ডাক্তার ঔষধ দিয়ে গেছেন তো। এগুলো আর ঔষধ খাইয়ে চলে আসবো। ‘

শাহানা থালাটা তার কাছ থেকে কেড়ে নেয়। বলে,

‘ সায়রা সোহিনীরা নিয়ে যাবে। কি চাচ্ছ তুমি? নিজের ভবিষ্যতের কথা কেন ভাবছো না? ভুল করে হলেও কি ভাবছো ওকে তোমার মায়ায় বাঁধবে? এটা ভুলেও ভেবোনা। একটা কথা স্পষ্ট মনে রেখো ওর পরিণতি ভয়ংকর। ডাকাতি করে, জাদুটোনা করে অসংখ্য মানুষ মেরেছে সে। পাপ তার বাপকেও ছাড়েনা। তুমি ওর সাথে জড়িয়ে গেলে তোমার কপালের দুঃখ কোনোদিনও ঘুচবে না।’

‘ আমি তো এতকিছু ভাবিনি আম্মা। আপনারা এতকিছু ভেবে বসে আছেন। ‘

তার চোখে জল টলমল করে উঠে। খোদেজা এসে জড়িয়ে ধরে বলে,

‘ শাহানা আর বকোনা। যাও সায়রাকে ডেকে খাবারটা পাঠিয়ে দাও। ‘

তটিনী কেঁদে উঠে বলে,

‘ তালাকপ্রাপ্ত মেয়েকে কোন ভালো ছেলে নিকাহ করতে চাইবে আম্মা?’

‘ কন্ঠস্বর নীচু করো। আমার কাছে পাত্র আছে তাই আমি বলছি। তুমি কাঁদছো কেন? তোমার কান্না অন্য ইঙ্গিত করছে তনী। ওর সাথে জড়িয়ে থাকতে চাও? মানলাম ও তোমাকে মেনে নিল, সংসার হলো, তুমি ওরসব পাপ মেনে নিতে পারবে? যাও তাও ভাবলাম ও ভালো, পাপ থেকে সরে এল। ওকে ওর মিত্ররা বাঁচতে দেবে স্বাভাবিক ভাবে? তুমি কি বিধবা হতে চাও অল্প বয়সে? কোলে বাচ্চা চলে এলে কি পরিণতি হবে তোমার? তছনছ হয়ে যাবে তোমার জীবনটা। জীবনের রূপ-রস-গন্ধ কি পেয়েছ তুমি এখনো? তোমার আব্বা প্রবাস থেকে ফিরে এসে তোমাকে দেখে কাকে দায়ী করবে? ‘

‘ আমি কিন্তু আপনাকে বলিনি আমি তার সংসার করতে চাই। বলেছি একবারও? ‘

‘ তো কি বলতে চাও? ‘

‘তালাক হওয়ার আগ অব্ধি আমাকে স্ত্রী ধর্ম পালন করতে দিন। ‘

শাহানা কষে একটা চড় বসালো তার গালে। সকলেই আঁতকে উঠলো। অপরূপা এগিয়ে এল।
হামিদা তটিনীকে নিয়ে গিয়ে বলে উঠলো, আসতাগফিরুল্লা এসব কি করছেন আপা? এতবড় মেয়ের গায়ে কেউ হাত তুলে? ‘

শাহানা খেপে উঠে রাগে ফোঁসফোঁস করতে করতে কাঁদে। বলে, ও কি অপরূপার দশা দেখেনি? শেহজাদ ঢাল হয়ে না দাঁড়ালে কি দশা হতো ওর? তুমি তো সব জানো। সব স্বচক্ষে দেখেছ । তারপরও জেনেশুনে আগুনে ঝাঁপ দিতে চাওয়ার মানেটা কি? কেন নিজের ভালো বুঝোনা। কেন বুঝোনা?’

খোদেজা তটিনীকে জড়িয়ে ধরে মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলে,

‘ হয়েছে আর কাঁদতে হবে না। তুমি বুঝদার, বুদ্ধিমতী। বোকার মতো কাজ করবে না আশা করি। ‘

সায়রা, সোহিনী সকলেই এসে দেখে তটিনী খোদেজার বুকে পড়ে কাঁদছে। শাহানা সোহিনীকে বলে,

‘ এই থালাটা রেখে এসো শেরহামের কক্ষে। ঔষধগুলোও দিয়ো। যাও। ‘

সোহিনী তটিনীর দিকে একপলক তাকিয়ে থালাটা নিয়ে গটগট পায়ে হাঁটা ধরে। কক্ষে যেতেই দেখতে পায় শেরহাম ঘুম থেকে উঠে মাথা নীচু করে বসে আছে বিছানায়। তটিনী এসেছে ভেবে মাথা তুলে কিছু বলতে যাবে তখুনি সোহিনীকে দেখলো। তার চোখদুটো অসম্ভব লাল। সোহিনী দস্তানা বিছিয়ে খাবারের থালা রেখে বলল,

‘ খেয়ে দ্রুত ঔষধ খান ভাইজান। ‘

‘ তনী কোথায়? ‘

‘ আপু আসবে না। আপনাদের নাকি আজকেই তালাক হবে। ফুপুআম্মা আসতে বারণ করেছে। তাড়াতাড়ি খেয়ে ঔষধ খান, জ্বর বেড়েছে। আমি খাইয়ে দেই ভাইজান? ‘

শেরহাম ওর দিকে পূর্ণদৃষ্টি মেলে তাকালো। বোধহয় মহলে ফেরার পর থেকে এই প্রথমবার। বলে উঠলো,

‘ না দরকার নেই। যাহ। ‘

‘ দেই না? ‘

শেরহাম মুখ ঘুরিয়ে রাখে। সোহিনী হাত ধুঁয়ে ভাত মেখে শেরহামের মুখের সামনে ধরে বলে,

‘ সবাই তোমার বিরুদ্ধে গেলেও আমি যেতে পারিনা ভাইজান। ‘

বলা শেষ করে উঠার আগেই তার চোখ দিয়ে জল গড়াতে লাগলো। শেরহাম অন্য দিকে চোখ ঘুরিয়ে দৃষ্টি কঠিন করে বলে,

‘ তুই যাহ সুহি। আমি খেয়ে নেব। ‘

সোহিনী কব্জিতে চোখ মুছে লোকমা বাড়িয়ে দেয়। শেরহাম নিরুপায় হয়ে হতাশ্বাস ছেড়ে খেয়ে নেয়। খেতে খেতে ভীষণ ঝাল করে উঠে। পানি খেয়ে জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে বলে,

‘ কে রেঁধেছে এসব? এত ঝাল! খাবার দিয়ে শত্রুতা করা শুরু করে দিয়েছে। ‘

সোহিনী ভয়ে ভয়ে বলল,

‘ মাছ তো আপু রেঁধেছে। ‘

শেরহাম চোখমুখ রুক্ষ হয়ে উঠে। পানি খেয়ে গায়ে পোশাক জড়াতে জড়াতে বেরিয়ে যায় হনহনিয়ে। সোহিনী পিছুপিছু ছুটে বলে,

‘ ভাইজান ঔষধ খাননি। ‘

শেরহাম কথা শোনে না। হন্তদন্ত পায়ে বেরিয়ে যায়। সামাদ আর মুরাদ মিলে সিংহদুয়ার পার করে আনে কয়েকটা লোককে একসাথে বেঁধে। শেরহাম কেদারায় পায়ের উপর পা তুলে বসে সিগারেটে আগুন ধরিয়েছে সবে। লোকগুলোকে এনে তার পায়ের কাছে ফেলে সামাদ। বলে,

‘ হুজুর এরাই করেছে, এরাই লিখেছে আপনার পতন চায়। ‘

শেরহাম আদেশ দেয়। পঞ্চাশ ঘা লাগা। এমন মারা মরবি যাতে বাপ দাদার চৌদ্দ গুষ্ঠির নাম ভুলে যায়। শেরতাজ সাহেব এসে বলেন,

‘ এসব অনাচার আমি সইবো না শেরহাম। ‘

শেরহাম খ্যাঁক করে উঠে বলে,

‘ নাচো সবাই মিলে। ‘

শেরতাজ সাহেব এগিয়ে এসে তার কলার ধরে বলে,

‘ ওদের ছাড়ো। ওরা ভুল কিছু তো করেনি। সত্যি কথায় বলেছে। তুমি সবাইকে এত কষ্টে রেখেছ ওরা কি ভুল বলেছে? ‘

শেরহাম উনাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিতেই উনি ছিটকে পড়েন। শেরহাম উনার দিকে আঙুল তুলে বলে,

‘ এই বুড়ো, তুমি আমার বাপ এটা ভুলতে আমার বেশি সময় লাগবে না। আমার রূপ এখনো দেখোনি। মাটির নীচে জ্যান্ত মানুষ পুঁতেছি আমি। তোমাকে গুম করতে দু মিনিটও লাগবে না। এই অশ্ব বের কর। বেরোবো আমি। আর এদের পঞ্চাশ ঘা দিয়ে বেঁধে রাখবি। পানি দিবি না। যদি কেউ বাড়াবাড়ি করে সোজা খঞ্জর চালাবি। এদের অনেক ছাড় দিয়েছি আমি। ‘

দ্বিতল চত্বরে দাঁড়িয়েছিল সকলে। শাহানা তটিনীকে টেনে এনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিল। সবটা দেখার পর বলল,
‘ দেখেছ ওর রূপ? এরপর নিজের স্ত্রী ধর্ম পালন করবে? নিজের বাবার সাথে ওর এমন ব্যবহার। তুমি কে? তোমাকে ব্যবহার করে ছুঁড়ে ফেলতে দু’বার ভাববে না ও। ‘
তটিনী দৃঢ় কন্ঠে বলল,
‘ ও তালাক দিলে আমি গ্রহণ করব। ‘
‘ তোমার সুবুদ্ধির প্রশংসা করছি। ‘

সন্ধ্যায় কাজী এল মহলে যিনি নিকাহ পড়িয়েছিলেন। শেহজাদ পায়চারি করছে এদিকওদিক। সেও শেরহামের মুখোমুখির অপেক্ষায়। মানুষগুলোকে শেরহামের লোক পিটিয়ে আধমরা করে বেঁধে রেখেছে। শেষমেশ অপরূপা গিয়ে বাঁধা দিয়েছে। সোজা কথায় থামেনি, তলোয়ার নিয়ে যাওয়ায় পর থেমেছে। কিন্তু লোকগুলো খুব বাজেভাবে আহত হয়েছে। কাজী বললেন,

‘ তাদের আসতে বলুন। আজ সময়টা আমার খুবই খারাপ যাচ্ছে। ‘

শেহজাদ বলল,

‘ যিনি তালাক দেবেন তিনি আসেননি এখনো। আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে। ‘

কাজী সাহেব অপেক্ষা করতে লাগলেন। কাজী আসার পরপরই শাহানা তটিনীর হাত থেকে চুড়ি, নাকের ফুল খুলে নিয়েছে। সবাই শেরহামের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলো। কিন্তু শেরহামের দেখাসাক্ষাৎ নেই।
সে গিয়েছে পরাগ পাহাড়ের জাদুকরের কাছে। সেখানে পৌঁছাতে ভোররাত হয়ে গেল। তার মেয়ে দেয়ার কথা ছিল। কথার মিল না পেয়ে চন্দ্রলাল তার লোক দিয়ে শেরহামকে বন্দি করতে চেয়েছে। নিজের শক্তি প্রয়োগ করে সবাইকে বশীভূত করে পিটিয়ে আধমরা করেছে শেরহাম। শেষমেশ চন্দ্রলালের আদেশে কেউ আর হামলা করলো না। শেরহাম তাকে জানালো সে কোনো মেয়েটেয়ে দিতে পারবে না। রাজত্ব বাঁচানো এখন তার মূল লক্ষ্য। চন্দ্রলাল তা শুনে ক্ষেপে যায় ভীষণ। সতের বছর বয়স থেকে শেরহামকে সে তিলে তিলে শক্তিশালী করে গড়ে তুলেছে রুপনগর দখল করার জন্য। এখন দখল করেছে ঠিক কিন্তু সম্পূর্ণ বিপরীত কাজ করে যাচ্ছে । নিজ হাতে যে হাতিয়ার সে তৈরি করেছে প্রয়োজন পড়লে এখন তা ধ্বংস করবে কিন্তু রূপনগর ছাড়বে না, প্রয়োজনে নগরের পাশাপাশি মহলও দখল করবে, আর বিশ্বাসঘাতকতা করার জন্য শেরহাম সুলতানকে পোহাতে হবে। শেরহাম তাকে কড়া হুশিয়ারি দেয়।
তার বিরুদ্ধে গিয়ে কাজ করলে কেয়ামত ঘটে যাবে। চন্দ্রলাল তাকে বুঝায় শান্তভাবে। বলে, ওরা তোর মাকে মেরেছে, তোকে বের করে দিয়েছে, তোর সমস্ত সুখ শান্তি কেড়ে নিয়েছে। ওদের ধ্বংস করতে গিয়েছিলি তুই।
শেরহাম বলল, ‘ আমি তা করব। কিন্তু তোমার সাহায্য ছাড়া। তুমি এসব বিষয়ে নাক গলাবে না। নিজের কাজ নিয়ে থাকো। বনের মানুষ বনে ঠিক আছ। লোকায়তে টিকতে পারবে না। ‘
চন্দ্রলাল নিজেকে শান্ত রাখে বহুকষ্টে। বলে,

‘ তোর ভাইয়ের বউটাকে আমাদের হাতে তুলে দে। ব্যস আর কিছু চাইবো না। তাকে বলি দিতে পারলে আমাদের উদ্দেশ্য সফল। আমার এতদিনের সব সাধনা আমি ভেস্তে দিতে পারিনা। ‘

শেরহাম রেগেমেগে বলল, ‘ আরেহ পারলে তুলে নে। আমি কিচ্ছু করতে পারব না। আমাকে জড়াবি না। আমার রাজত্ব বাঁচাতে হবে। তোদের কারণে আমার বদনাম রটে যাচ্ছে চারপাশে। শেহজাদ সুলতানের কাছে আমি হার মানবো না। আমার মায়ের মৃত্যুর প্রতিশোধ আমি নিয়েই ছাড়বো। ‘

‘ তুই সত্যি বলছিস? ওই মেয়েকে তুলে আনবো?’

‘ পারলে দেখাও। ‘

চন্দ্রলাল বলে, ‘ বেশ। আমি ওই মেয়েকে পরাগ পাহাড়ে এনেই ছাড়বো’।

______________

তারপরের দিন সকালে অতিথি কক্ষের দিকে গিয়ে শেরহামের কথা এক সৈন্যকে জিজ্ঞেস করেছে তটিনী। সামাদ জানালো, উনি পরাগ পাহাড়ে গিয়েছে। সেখানে চন্দ্রলালের সাথে ঝামেলা হয়েছে। ‘
‘ আর কোনো খবর আসেনি? ওকে কি বন্দী করেছে সেখানে? ‘
‘ হতেও পারে। না ফেরা অব্ধি আমাদের অপেক্ষা করতে বলেছেন। ‘
তটিনীর ভেতরটা হাহাকার করে উঠলো। আর যদি না ফেরে? ‘
মনে মনে জপলো, হে খোদাবান তুমি আমার সাথে এমন করোনা। আমি তার সংসার করতে চাই।

শেরহাম পরাগ পাহাড় থেকে ফিরতে ফিরতে তারপরদিন হয়ে দুপুর গড়িয়ে এল প্রায়। মহলে ফিরলো না। নগরের চারপাশে ঘুরে বেড়ালো। মহলে ফিরলো সন্ধ্যার পর। ফিরে দেখলো মহলে বিয়ে বিয়ে আমেজ। নতুন অতিথিদের পদচারণায় মুখোরিত মহল প্রাঙ্গন। তটিনীকে দেখতে পেল লাল গোলাপি রঙের একটা শাড়িতে। ফজল সাহেবের পাশে বসা ছেলেদুটির সাথে হেসেখেলে কথা বলছে।
তাঈফ আর নাদির এসেছে বিয়ের দাওয়াত পেয়ে। শেহজাদের অনুরোধে। সাফায়াতের সাথেও ভালো বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছিল তাদের। তাই বিয়েতে উপস্থিত থাকতে হলো।
শেরহাম কক্ষের দিকে পা বাড়ালো গটগট পায়ে। তালাক হয়নি এখনো, পরপুরুষের সাথে ভালোই রঙ্গ শুরু করে দিয়েছে। নষ্টার দল।

সায়রাকে সাজানো হয়েছে। শাড়ি গহনা পড়ানোর পর তাকে বেশ সুন্দর লাগছে। মোটা করে কাজল পড়িয়ে মাথায় টায়রা পড়িয়ে দিল অপরূপা। ওড়না পড়িয়ে দিয়ে আরশিতে মুখ দেখিয়ে বলল,
‘ সাফায়াত মাহমুদের বেগম। ‘
সায়রা লাজুক হাসলো। সোহিনী বলল,
‘ বিয়ের পরও সন্দেহ করিস আমাকে। ‘
সায়রার মুখ কালো হয়ে গেল। শবনম হেসে বলল,
‘ ভাবিজান আজ মুখ কালো করা যাবেনা। ‘
সায়রা আবার হাসলো। সোহিনী বলল, ‘ তুই একটা গা*ধী। ‘

মহলের অবস্থা যেহেতু ভালো না সেহেতু সংক্ষেপে বিয়েটা সাড়তে চেয়েছে সাফায়াত। তার মনে শান্তি নেই তটিনীকে নিয়ে। বোনটা এমন দোটানায় পড়ে আছে তার ভালো লাগছে না কিছু। তার হাসিমুখের আড়ালের কষ্টটুকু সে ভাই হয়ে বুঝতে পারে, অনুভব করতে পারে। আল্লাহর কাছে তার এখন একটাই চাওয়া, তার বোনটার জন্য একজন উত্তম জীবনসঙ্গী মিলিয়ে দিক।

শেরহামকে ফিরতে দেখে অন্দরমহলে সে খবর ছড়িয়েছে। সবাই ফিসফিসানি শুরু করে দিয়েছে। তটিনীর কানে এল তা। সে একটা প্লেটে সন্দেশ মিষ্টান্ন নিয়ে তড়িঘড়ি করে শেরহামের কক্ষে চলে গেল। শেরহাম গোসলখানা থেকে ফিরে গায়ে পোশাক জড়াতে জড়াতে বের হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো। তটিনীকে দেখে কপাল ভাঁজ করে তাকালো। তটিনী পেয়ালা রেখে ছুটে এসে আছড়ে পড়লো তার বুকে। শেরহাম দু এক পা পিছিয়ে গেল। তটিনী ফুঁপিয়ে উঠে কিছুক্ষণ চুপ থেকে তারপর ছেড়ে দিল। পেয়ালাটা এনে দিয়ে বলল,
‘ নাও ভাইজানের বিয়ের মিষ্টি। ‘
শেরহাম ফেলে দিল ছুঁড়ে। বলল,
‘ বিয়ে হচ্ছে, এই হচ্ছে, সেই হচ্ছে তাতে আমার কি? নাকি এসবের মধ্যে আমি আছি, না আমাকে কোথাও প্রয়োজন। আমি মিষ্টি খেয়ে কি করব? যা এখান থেকে। ‘
তটিনী বলল,
‘ তাই বলে ফেলে দেবে? ‘
শেরহাম তার হাত ধরে কক্ষের বাইরে বের করে দিয়ে বলে,

‘ আজকে ওখানে গিয়েছিলাম বলে তালাক দেয়নি। কাল দেব। তোর পথ আর আমার পথ আলাদা। নিজের পথ দেখ। যাহ। আমার বিষয়ে কোনোরূপ আগ্রহ দেখাবি না। এত আহ্লাদীগিরি আমার সহ্য হয় না। যেতে বলেছি। ‘

তটিনী সরোষে বলল,
‘ তোমার মরণের পথ অনেক আছে। মুক্তির পথ একমাত্র আমি। ‘
শেরহাম মুখের উপর দরজা বন্ধ করে কেদারায় বসে দু হাত দিয়ে মুখ মুছে মাথা এলিয়ে চোখ বুঁজে বসে রইলো।

সায়রা আর সাফায়াতের বিবাহকার্যাদি শুরু হয়েছে। পর্দার এপাশে সাফায়াত আর অপরপাশে সায়রাকে বসানো হয়েছে। সায়রার পাশে অপরূপা আর সাফায়াতের ফুপু বসেছে। পেছনে অনেকে আছে।
সাফায়াতের পাশে শেহজাদ আর ফজল সাহেব সহ আরও অনেকে। কাজী বিয়ে পড়ানো শুরু করে সাফায়াতকে কবুল বলতে বললো। সাফায়াত তিন কবুল বলার পর, সায়রার দিকে পান বাড়িয়ে দিয়ে বললেন,

‘ আপনি বলুন আলহামদুলিল্লাহ। ‘

সায়রা পান ছুঁয়ে বলল, ‘ আলহামদুলিল্লাহ। ‘

সকলেই আলহামদুলিল্লাহ বলে উঠলো। কাজী দোয়াদরুদ পড়ে বিবাহকার্য সম্পাদনা করে সাফায়াতকে বলল,

‘ নতুন জীবনের জন্য মোবারকবাদ। সুখী হও। ‘

সাফায়াত মাথা নাড়ালো। শেহজাদ তাকে জড়িয়ে ধরলো।

‘ অনেক ভালো থাকো, আর ভালো রাখো। ‘

শাহাজাহান সাহেবকে জড়িয়ে ধরতেই উনি পিঠ চাপড়ে দিয়ে বললেন,

‘ এখন কিন্তু মামু নেই। শ্বশুর হয়ে গেছি জামাই। ‘

সাফায়াত ফোকলা হেসে পুনরায় জড়িয়ে ধরলো। সাফায়াত শেরতাজ সাহেবকেও জড়িয়ে ধরলো। উনি পিঠে হাত বুলিয়ে বললেন,

‘ ও ফিরেছে, তনীর একটা ব্যবস্থা করো এবার। ‘

‘ হ্যা করব। ‘

**

সায়রা খোদেজার বুক থেকে মাথা তুললো। শাহানা বুকে টেনে নিয়ে বলল,

‘ হয়েছে এত কাঁদাকাদির কি আছে? আমরা অপরিচিত মানুষ নাকি? ফুপু থেকে শ্বাশুড়ি হয়েছি কিন্তু বিন্দুমাত্র পরিবর্তন হইনি। ‘

কান্নায় সায়রার শরীর দুলে উঠলো। সবাইকে একে একে জড়িয়ে ধরার পর সবাই মোবারকবাদ জানালো। সিভানকে জড়িয়ে ধরতেই সিভান বলল,

‘ তনী আপু নেই কেন? ‘

সকলের হুশ ফিরলো এতক্ষণে। শাহানা বলল,

‘ কক্ষে আছে নিশ্চয়ই। কাল থেকে তো কক্ষেই সময় কাটাচ্ছে বেশি। ‘

অপরূপা বলল

‘ আচ্ছা আমি দেখে আসি। ‘

তটিনীকে কেউ খুঁজে পেল না। সোহিনী শেরহামের কক্ষের দিকে গেল। দরজা খোলা দেখে উঁকি দিতেই শেরহাম ডাক দিল।

‘ কি হয়েছে? ভেতরে আয়। ‘

সোহিনী কক্ষে প্রবেশ করতে করতে চারপাশে চোখ বুলিয়ে বলল,

‘ আপু আসেনি এখানে? আপুকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।’

শেরহাম বলল,

‘ কেন? সবখানে খুঁজেছিস? ছাদে? বাগানে?মহলের পেছনে? ‘

‘ হ্যা, সব জায়গায় খুঁজেছি। ‘

সাফায়াত হনহনিয়ে প্রবেশ করলো কক্ষে। কলার টেনে ধরে পরপর দু চারটে ঘুষি বসিয়ে চেঁচিয়ে বলল,

‘ তনী তোমার এদিকেই এসেছিল। কোথায় ও? ওর কিছু হলে আমি ছাড়বো না তোমাকে। সীমা ছাড়িয়ে গেছ তুমি। যথেষ্ট হয়েছে। ওকে মেরে কি শান্তি হবে তুমি? ‘

শেরহাম ঘুষি মারতে উঠে মারলো না। ওকে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দিয়ে হনহনিয়ে বেরিয়ে গেল মহল থেকে। অতিথি কক্ষের দিকে ছুটতে যেতেই দেখলো একটা কক্ষে সামাদ আর মুরাদসহ বেশ কয়েকজন সৈন্য বন্দি। সে তাদের মুক্ত করতেই তারা কলকলিয়ে জানালো তাদের মধ্যেকার দু তিনজন সৈন্য চন্দ্রলালের কথা অনুসারে তটিনীকে
ডাকাতদের আস্তানায় নিয়ে গিয়েছে। শেহজাদ সুলতানের বেগমকে হাতে তুলে দিলে তটিনীকে ছাড়বে।

শেরহাম গর্জন করে কেদারায় লাতি বসিয়ে বলল,
‘ কু**ত্তার বাচ্চাদের এবার জীবন্ত কবর দেব গতবারের মতো। যাতে নিঃশ্বাসের শব্দ কবরের মাটি নড়ে উঠে। ‘

চলমান….

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ