#গল্প_পোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
#চিঠি_নং_০১
কলমে:যারিন সুবাহ।
________________
প্রিয় বাবা,
প্রথমেই তোমায় অজস্র অভিনন্দন জানাই, আমাকে একা ফেলে রেখে চলে যাওয়ার জন্যে।কেমন আছো তুমি বাবা? নিশ্চয়ই ভালো থাকার কথা!ভালো থাকার উদ্দেশ্যেই তো নিজের মেয়েটাকেও একলা করে রেখে গেলে। তবে তুমি কী জানো? তোমার সেই ঢিঙি মেয়েটা আজ অনেক বড় হয়ে গিয়েছে। সমাজে একলা চলতে শিখেছে, একলা বাঁচতে শিখেছে। তোমার মনে আছে বাবা? একবার তুমি আমার মাথার উপর হাত রেখে বলেছিলে, “জীবনে কখনোই সামনে এগিয়ে পিছু ফিরবি না।” বাবা তুমি শুধু একটাবার এসে দেখে যাও না, তোমার এই পিচ্চিটা তুমি বাদে আর কারো জন্যে পিছন ফিরে দেখে না!তুমি কী আসবে একটা বার বাবা? একটা মুহূর্তের জন্যে….? তুমি বড্ড স্বার্থপর মানুষ বাবা, বড্ড স্বার্থপর! আমাকে এমন এক গহীন অরণ্যে ফেলে দিলে একা!আমি ভয় পাই বাবা, অনেক সাহস দরকার এই ধরণীতে একা বাঁচতে হলে। এ ধরণী নাকি মানুষে পরিপূর্ণ, কিন্তু আমি এখানে মানুষ দেখিনা বাবা। মানুষ দেখি না, এখানে সব শুধুই….! তবে বাবা জানো? আমি তোমার সাহসী কন্যা! ভয় পেলে আমি তোমার বলা কথা মনে করি,”আমি সবসময় তোর পাশে আছি মা!” আমি রবীন্দ্রনাথ গুরুর কথা মনে করি,”যদি তোর ডাক শুনে না কেউ আসে,তবে একলা চলো রে!”
আমি সাহস আনি বাবা। তোমার সেই পিচ্ছি আজ অনেক বড় হয়েছে, সে বাস্তববাদী হয়েছে বাবা!
আচ্ছা বাবা, তোমার কী মনে আছে? এক পড়ন্ত বিকেলে আমি বারান্দায় মন খারাপ করে বসে ছিলাম।তোমার সেদিন খুব অসুখ ছিলো। অথচ তুমি সেই অসুস্থতার মাঝেও বিছানা থেকে উঠে আমার পাশে এসে বসেছিলে। তুমি বলেছিলে, “একটা মানুষ, একটা অস্তিত্ব, ততক্ষণ পর্যন্ত কেউ তাকে নিঃশেষ করতে পারে না যতক্ষণ না তার মনোবল কেউ ক্ষুণ্ন করে! হ্যাঁ বাবা, আমি এখন অল্পতেই ভেঙে পড়িনা। তোমার মেয়ে হারতে পারেনা বাবা! তোমার মেয়ে তোমার ব্যক্তিত্ব বহন করে! সে তোমার “জয়ীতা কন্যা” হয়ে পথ পাড়ি দিতে জানে! একলা গহীন পথ!
ভালো থেকো বাবা আমার। ওপারে ভালো থেকো তুমি। খুব শীঘ্রই তোমার এই পিচ্চিটা পূর্ণ এক জয়ীতা হতে যাচ্ছে!
আবারো তোমার আমার আলাপন এক বিস্তর বদ্ধ জায়গায় আবদ্ধ হতে যাচ্ছে।
ইতি,
“তোমার জয়ীতা”