#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নংঃ ০৩
প্রিয় প্রিয়তম অসুখ,
“নিখোঁজ হল কবিতা আমার,
শব্দেরা গেলো কথার আড়ালে ;
কি বা বলব, কিভাবেই বা তোমায়
এ মনের সুপ্ত প্রেমের জানান আমি দিব ।”
জানিনা ! সত্যিই আমি জানি না । আর এই মুহূর্তে আমার এমন মনে হচ্ছে যে আমি যেন জ্ঞানশূন্য, মেধাশূন্য তোমার ধ্যানে মন উজাড় করে ভালোবাসা বিলিয়ে দেওয়া কোনো এক প্রিয়তমা । যার সকল অনুভূতি শুধু একজনকে ঘিরে । আর সেই একজনটা যে সব সময়ের জন্য শুধুই তুমি । কেন জানি না এতদিন ধরে প্রিয়তম অসুখ হয়ে রয়ে গেলে আমার মন কুঠুরিতে সেটা তোমায় জানানো হয়ে ওঠে নি । কিন্তু আমার যে আজকে তোমার জন্য এই মনে দীর্ঘদিন ধরে জমানো প্রেমটুকু, অনুভূতিটুকুর কথা জানাতে খুব করে ইচ্ছে করছে । যদিও ভালোবাসি কতটা বুঝাতে পারবো না ঠিক ততোটা । তবুও জানান দিচ্ছি হৃদয়ের গভীরতা থেকে “ভালোবাসি, ভীষণ ভালোবাসি, ” হে প্রিয়তম অসুখ রুপি কেউ । তুমি হয়তো জানো না এ মনের গহীনে তোমার জন্য ভালোবাসার অমীয় সুর যে উঠে, তার দরুন প্রতিনিয়ত তোমাতে আমি নতুন করে প্রেমে পড়ি ।তখন তোমায় অনেককিছুই গুছিয়ে বলতে বড্ড বেশি ইচ্ছে করে । কিন্তু কোনো এক অজানা জড়তা বিনা আহবানে যেন কোথা থেকে এসে ভর করে । আর সেই কারণেই তোমায় বলতে চাওয়া গুছানো কথাগুলো, সাজানো স্বপ্নগুলো, তোমার প্রতি একান্ত অনুভূতিগুলো সবকিছু যেন এক নিমেষে এলোমেলো হয়ে যায় । যদি এর কারণ জানতে চাও তবে কারণ খণ্ডাতে আমি সত্যিই পারবো না । কিন্তু তোমার ওই নির্বাক চোখের মাঝে আমি বরাবর অনায়াসেই হারিয়ে যেতে পারবো । মাঝেমাঝে ইচ্ছে করে তোমায় কারণে অকারণে নিজের ভালোবাসার জানান দিতে, দুজন মিলে ভালোবাসার নতুন সুর রচনা করতে, একটু বেশি দুষ্টুমির রেশ টেনে দিয়েই তৃষ্ণাতূর হাত দুটো তোমার দিকে বাড়িয়ে দিতে । কিন্তু তুমি নিজ থেকে কি ভেবে নিবে সেটা ভেবেই এ মনের সুপ্ত ইচ্ছেগুলো করে ফেলেছি তালাবদ্ধ । কিন্তু জেনে রেখো আকাশের বিশালতার মতো যদি তুমি হয়েও থাকো এই আমি সেথা তারা হয়ে মিটিমিটি জ্বলে রবো । তখন এক বর্ণ আলোর রেশ ভালোবেসেই না হয় এঁকে দিব । আমি চাই অপেক্ষার প্রহর শেষে তুমি একদিন আসো । অনেকদিন আগে আবেগ, ভালোবাসা দিয়ে আমার সাদা কালো ক্যানভাসটা রেখেছি যে এঁকে, সেটা রঙে ভরিয়ে দিও । ছড়িয়ে দিও, জড়িয়ে নিও, নিজের মাঝেই আমায় ভালোবেসে একটু ঠাঁই দিও । যদি হও মরুভূমি বৃষ্টির বেশে না হয় এলাম ভেসে তুমি ভিজে নিও। কোনো এক পড়ন্ত বিকেলে তোমার হাতে হাতদুটো রেখে, তোমার স্পর্শ অনুভব করতে করতে একসাথে চলতে চাই অজানা কোনো এক ভালোবাসার গন্তব্যে । জানো তো প্রিয়তম অসুখ রুপি কেউ, সাদাত হোসাইনের ‘নির্বাসন’ বইটা পড়ার সময়ে আমি একটা জায়গায় আটকে হঠাৎ করেই আটকে গেছিলাম । তখন তোমার ভাবনাতে একটু একটু করে হারিয়ে যাই । কারণ আমিও যে সত্যি তোমাকে চেয়েছি অন্ধকারের মতোন, একাকী ভীষণ, গভীর এবং গাঢ়
তোমাকে চেয়েছি প্রার্থনা ও প্রেমে, যতটা রয়েছে তার চেয়ে বেশি আরো ।
হে প্রিয়তম অসুখ, পরিশেষে বলতে চাই এ মনের অব্যক্ত প্রেমের জানান একটা চিঠিতে আমি আদৌ ব্যক্ত করতে পারবো না । তাই তুমি এসে আমার হৃদয় কোণে বস আর এ মনের সব অব্যক্ত অনুভূতিগুলো তখন নিজ থেকে বুঝে নিও । জানি না তুমি আসবে কিনা । কিন্তু আমি যে খুব করে চাই, “তুমি এসে বস আমার পাশে, যেভাবেই আসো তুমি আমার-ই কাছে ।
যদিও যন্ত্রনা হয়ে যাও শেষে
প্রিয়তম অসুখের বেশে আসো তুমি আমার-ই কাছে ।”
ইতি,
“তোমায় ভালোবাসা কেউ,
প্রিয়তম অসুখের প্রিয়তমা হতে চাওয়া এক সাগর ঢেউ ।”