#গল্পপোকা_চিঠি_প্রতিযোগিতা_২০২০
চিঠি নং : ১
প্রিয় দেশবাসী,
আসসালামু আলাইকুম, ও অন্যান্য জাতির প্রতি আমার শুভেচ্ছা। আজ দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বসেছি চিঠি বুননে। আগে যে চিঠি বুনন করেছি তাও নয়। মূলতঃ চিঠির মাধ্যমে আপনাদের সবার নিকট জানিয়ে দিতে চাই কিছু স্মৃতি, কিছু অনুরোধ।
আজ আমরা পার করছি এক কঠিনতম সময়। শুধু আমরা বললে ভুল হবে, পুরো পৃথিবী আজ মহাসংকটে রয়েছে। মহামারী কোভিড ১৯ নামক করোনা ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত আজ বিশ্ব চরাচর। বিশ্বের অন্যান্য রাষ্ট্রের তুলনায় আমার মাতৃভূমি এখনো অনেক সুষ্ঠু অবস্থায় আছে।
সৃষ্টি হতে মানুষ দূরে সরে গিয়েছে। আর তাই সৃষ্টিকর্তার ক্রোধের অনল থেকে সৃষ্ট মহামারী দিনদিন ভয়ংকর রুপ নিচ্ছে। একমাত্র সৃষ্টিকর্তার ইবাদাতের ও তুষ্টির মাধ্যমে এর থেকে আমাদের নিস্তার মিলবে।
চীনের উহান থেকে উৎপত্তি করোনা ভাইরাস নামক মহামারী যখন বিশ্ববাসীর নিকট মৃত্যু কূপ হিসেবে পরিচিত । তখন অন্যান্য রাষ্ট্র পরিচালকরা তা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছিলো। বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের রাষ্ট্র পরিচালক এর জন্য কঠোর কর্মসূচি হাতে নেন। যা বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের জন্য এক বিশাল পাওয়া ও প্রশংসনীয়।
বাংলাদেশ সরকার যখন লকডাউন ঘোষণা করলেন, এবং তা বাস্তবায়নের জন্য সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলেন। তখন যদি আমরা সরকারের দেওয়া নিয়মনীতি মানার চেষ্টা করতাম। তবে আজ তা ভয়াবহ আকারে ছড়াতো না।
সাধারণ ছুটি ঘোষণা ছিল ঘরবন্দি হওয়ার জন্য। কিন্তু আমাদের দেশে চাকুরীজীবী কিছু মানুষ, সারাবছর ছুটি না পাওয়ায় কাজের চাপে বেড়াতে যেতে পারেননি। তারা এরকম একটা বিশাল সুযোগ পেয়ে এক মোটরসাইকেলে পাঁচজন পর্যন্ত আত্মীয়দের বাড়িতে অতিথি হয়েছেন। অথচ ছুটির মুল উদ্দেশ্য ছিলো। ঘরে থাকুন, সুস্থ থাকুন। কিন্তু আমরা সেটা কে না মেনে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠি।
গ্রামের কিছু মানুষ অর্ধেক দিন ঘরে থাকলেও, বিকেলে কাছের বাজারে কি ঘটছে তা দেখার জন্য দৌড়ে যেতো। অনেকেই আবার দল বেঁধে যেতো। তখনও আমরা সঠিক নিয়মে চলিনি।
আর তাই এখন বাংলাদেশে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা দৈনিক বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা এখন নাজুক অবস্থায় আছে। এমতাবস্থায় লকডাউন খুলে দেওয়া হয়েছে। গণপরিবহন চালু করে দেওয়া হয়েছে। তাতে বিপদ বেশি বেড়ে গেছে। এক জায়গায় থেকে অন্য জায়গায় মানুষ অবাধে চলাচল করছে। তাইতো ছড়াচ্ছে মহামারী অবলীলায়।
আমার বাংলার মানুষ মনে করেছে, করোনা বাংলাদেশ থেকে উধাও হয়েছে। তাইতো মাস্ক ব্যবহার করার প্রয়োজন মনে করছে না। সমস্ত ধারণা ভুল করে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। নিজেরা সচেতন হচ্ছি না। নিজেদের সচেতন হতে হবে।
সামনে আসছে মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও আত্মত্যাগের সময়। পবিত্র ঈদুল আজহার অগ্রিম শুভেচ্ছা, ও শুভকামনা। ঈদ মানেই আনন্দ, ঈদ মানে শান্তি। কিন্তু এবার ঈদে সারাবিশ্ব ভুগছে অশান্তিতে।
ঈদে ছুটি পাওয়া মানুষ যেন, যে স্থানে অবস্থান করছে সেই স্থানেই অবস্থান করে। তারা যেন প্রতিবারের ন্যায় ঘরমুখো না হয়। এবার আমাদের সুস্থ থাকা প্রয়োজন।
ঈদে প্রতিবারের মতো এবার কোন দর্শনীয় স্থান পরিদর্শন করবো না। এবার ঈদ না হয় ঘরেই কাটাই। পরের বছর থেকে ঈদ মধুময় বানাই।
সৃষ্টিকর্তার নিকট প্রতি ওয়াক্তের সালাতের মোনাজাতে। মুসলিম উম্মাহর ও সমগ্র বিশ্বের সকল জাতির জন্য দোয়া কামনা করি। বিশ্ব সুস্থ হয়ে উঠুক, আমার বাংলা মা সুস্থ হোক।
এবারের ঈদে ঘরে ঘরে রয়,
আগামী ঈদ করবো মধুময়।
ঘনঘন হাত ধুবো।
মুখে সর্বদা মাস্ক ব্যবহার করবো।
বিনা প্রয়োজনে বাহিরে বের হবো না ।
নিজে সচেতন হবো, অন্যকে সচেতন হতে বলবো।
নিরাপদ থাকুন, সচেতন থাকুন।
ঘরে থাকুন, সুস্থ থাকুন।
ইতি,
মাসুদ রানা তাসিন।