#প্রিয়_অনুভব
#সাবরিন_জাহান_রোদেলা
#পর্ব_১২
“আরে প্রীতি না?”
প্রীতির নাম শুনে ঘুরে তাকালো নীতি।
”তূর্ণা!”
“তুমি এখানে কি করছো?”
“ভাইয়ার সাথে এসেছিলাম। একটু কাজ ছিল, তাই আগে চলে গিয়েছে। আর আমার নাম নীতি, প্রীতি না!”
“ওহ, আসলে তোমাদের নাম এতটা সেম। আমি ভিতরেই ছিলাম। তোমাকে দেখে এলাম। বান্ধবীদের সাথে এসেছিলাম ঘুরতে। আপাতত এখানে এসেছি। এরপর বাড়ি যাবো।”
“এখানে এসেছো বাড়ি যাবে না?”
“না, আজ না। তুমি এসো। আমার বান্ধবীদের সাথে দেখা করিয়ে দেই।”
নীতি না করার আগেই সে ওকে টেনে নিয়ে গেলো। না করার সুযোগও পেলো না। সোজা নিয়ে ওদের টেবিলের সামনে দাঁড় করিয়ে দিলো।
“দেখ কাকে এনেছি!”
টেবিলে বসে থাকা দুই রমণী মুখ তুলে তাকালো।
“কে এ?”
নীতির অস্বস্তি হলো।
“আরে ছবি দেখিয়েছিলাম না? নীতি!”
“তুই তো প্রীতি বলেছিলি!”
তুর্ণা মেকি হেসে নীতির দিকে তাকালো। নীতিও হালকা হাসার চেষ্টা করলো।
“তূর্ণা আজ আসি। দেরি হয়ে যাচ্ছে। অন্ধকারও হয়ে এসেছে।”
“আরে আমাদের সাথে কিছু মুখে দেও।”
“না না, মাত্রই খেয়েছি।”
তুর্ণা কিছু বলবে তার আগেই ওর ফোন বেজে উঠলো। ফোনের স্ক্রিনে থাকা মানুষটার নাম দেখেই জলদি পিক করলো।
“হ্যালো!”
ওপাশে কি বললো নীতির জানা নেই। তবে তুর্ণা উত্তর দিলো, “তোমার হাতের বাম পাশে একটা ক্যাফে আছে। ওখানেই আছি আমরা! ওকে আসো।”
“আসছি তুর্ণা।”
“আরে দাড়াও। ভাইয়া আসছে। দেখা করে যাও।”
“ভাইয়া?”
“ওই তো!”
নীতি তূর্ণার দৃষ্টি অনুসরণ করে তাকাতেই নাহিয়ানকে দেখতে পেলো। নাহিয়ান ওকে দেখে একটু অবাক হলো। ওদের দিকে এগিয়ে আসতেই তূর্ণা বলে উঠলো, “দেখো ভাইয়া, এখানে নীতির সাথে দেখা হলো। আচ্ছা তুমি এখানে কি করছো?”
“তোর মা ফোন দিল। বললো এদিক দিয়েই যাচ্ছি তোদের একটু নিয়ে আসি। সন্ধ্যা হয়ে গেছে, এখনও বাইরে কি তোদের?”
“ঘুরতে এসেছিলাম।”
“বিকেলের মধ্যে বাসায় যেতে পারিস নাই?”
“রাগছো কেনো?”
“রাগছি না। চল এখন।”
“আরে কিছু তো খেলামই না।”
“এখন তোদের খাওয়ার জন্য বসে থাকবো আমি?”
“বেশি না, একটু অপেক্ষা করো।”
“তোর একটু মানে এক ঘন্টা!”
নীতি ওদের দুইজনের কথার মাঝে বলে উঠলো, “আমি এবার যাই। অন্ধকার হয়ে গেছে। মা চিন্তা করবে।”
“আচ্ছা।”
নীতি নাহিয়ানের দিকে এক পলক তাকিয়ে বেরিয়ে গেলো।
“ভাইয়া কি খাবে?”
“আমি কিছু খাবো না। তোরা শেষ কর, আমি আসছি!”
বলে সেও বেরিয়ে গেলো। নীতি তখনও দাঁড়িয়ে। আশেপাশে রিকশা খোঁজার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
“রিকশা খুঁজছো?”
নাহিয়ানের গলা শুনে নীতি ওর দিকে তাকালো। মাথা উপর নিচ করে হ্যাঁ বোধক জবাব দিল।
“এখানে রিকশা পাবে না। একটু সামনে এগিয়ে গেলেই পেয়ে যাবে।”
নীতি নাহিয়ানের দিকে তাকিয়ে আবার সামনে তাকালো।। অন্ধকার রাস্তা । মৃদু আলো জ্বলছে। রুমের আর ছাদের অন্ধকার এক জিনিস। আর বাইরের এই রাস্তার অন্ধকার আরেক! না জানি, কোন বিপদে পড়ে। কিন্তু নাহিয়ানকে এই নিয়ে বলতে পারবে না সে। লোকটা মজা নিতে পারে। সাহস করেই এগিয়ে গেলো। পাশে কেউ আছে বুঝতে পেরেই তাকালো ও। নাহিয়ান ওর পাশে ফোন দেখতে দেখতে হাঁটছে। নীতি ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে রইলো।
“মা যদি জানতে পারে যে তার বড় বউয়ের বোনের সাথে দেখা হয়েছে আর সে চলে যাওয়ার সময় আমি এগিয়ে দিয়ে আসেনি একশোটা কথা বলবে। কথা শোনার মুড নাই!”
নীতি সামনে তাকালো। অদ্ভুতভাবে আজ কেনো যেনো নাহিয়ানের সামনে কিছু বলতে পারছে না। মনে মনে স্বস্তি পেলো। সামনে এগিয়ে একটা রিকশা পেলো। নাহিয়ান ডাক দিল,
“মামা সেনপাড়া যাবেন?”
“হো যামু!”
“কত?”
“পঞ্চাশ টাকা!”
“এখান থেকে এখানে পঞ্চাশ টাকা? ত্রিশ টাকা দিবো!”
“মামা, এই সন্ধ্যার সময়। রিকশা কম এহন !”
“চল্লিশ দিবো!”
“আচ্ছা আসেন!”
“উঠো!”
নীতি উঠলো না।। রিকশাওয়ালাকে দেখে তার কেমন যেনো লাগছে। নজরও তেমন ভালো না।
“কি হলো?”
“আপনি যাবেন না?”
“মানে?”
নীতি অন্যদিকে ফিরে জিভে কামড় দিলো। ভুল কথা বলে ফেলেছে।
“না মানে এখানে এসেছেন, বাড়ি তো যেতে পারেন আমাদের!”
“নাহ, গেলে আর আসতে দেয় না। আর এমনিও কাজ আছে। এখন উঠো!”
নীতি বেশ অস্বস্তি নিয়ে উঠলো। রিকশা টান দিতেই নাহিয়ান আবার ডাক দিল, “মামা দাড়াও।”
রিকশা থামতেই নাহিয়ান উঠে বসলো। এদিকে নাহিয়ানকে উঠতে দেখে নীতি সঙ্গে সঙ্গে সরে বসেছিলো। অবাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে নীতি।
“এবার যাও।”
রিকশা চলতে লাগলো। নাহিয়ান আবার ফোন দেখতে লাগলো। নীতি মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে আরেকটু সরে বসলো।
“রিকশা থেকে পড়ার শখ হয়েছে নাকি?”
তখনই রিকশায় উচু নিচু জায়গা দিয়ে যাচ্ছিলো। ফলস্বরূপ নীতি পড়তে গিয়েও পড়েনি। নাহিয়ান ওর এক হাত ধরে ফেলেছিলো।
“সমস্যা হচ্ছে? নেমে যাব?”
তৎক্ষণাৎ নীতি ডানে বামে মাথা নাড়িয়ে নিষেধ করলো। অতঃপর স্বাভাবিক হয়ে বসলো।
“মুখে কিছু হয়েছে? আজ এত চুপ চাপ যে!”
“আপনি না বললে যাবেন না বাড়ি!”
“হুমম যাবো না।”
“তাহলে?”
নাহিয়ান চুপ রইলো কিছুক্ষণ। অতঃপর বললো,“কেউ একজন ভয় পাচ্ছে।”
“কে ভয় পাচ্ছে শুনি?”
“পাচ্ছে না?”
“উহু।”
“তাহলে আমি নেমে যাই!”
নীতি তৎক্ষণাৎ বাঁধা দিয়ে বললো, “এই না!”
নাহিয়ান বাঁকা হাসলো।
”এখানে কি করছিলে? বয়ফ্রেন্ড এর সাথে এসেছিলে নাকি?”
“আর বয়ফ্রেন্ড! ভাইয়ার সাথে এসেছিলাম। বাঁশ দিয়ে চলে গিয়েছে।”
“মানে?”
নীতি সব কথা বললো। সব শুনে নাহিয়ান জোরে হেসে দিলো। নীতি গাল ফুলালো।
”বাহ চমৎকার! একেই বলে অতি লোভে তাতি নষ্ট!”
“হয়!”
বাড়ির সামনে পৌঁছাতেই দুইজন নেমে গেলো। নীতি ভাড়া দেয়ার আগেই নাহিয়ান ভাড়া দিয়ে দিলো।
“ভিতরে আসুন অন্তত!”
“আজ না, দেরি হয়ে যাবে। ওরাও বসে আছে।”
“আচ্ছা সাবধানে যাবেন।”
নাহিয়ান হেসে বিদায় নিলো। নীতি কয়েক পলক সেদিকে তাকিয়ে ভিতরে গেলো।
__________________________________
পড়াশোনা শেষে পিছনে গা এলিয়ে দিলো নীতি। লাইফ ওর আগের মতোই চলছে। কেবল মাঝে ‘অনুভব’ নামক ঝড় এসেছিল। এই আরকি। বিছানার পাশে টি টেবিল থেকে ফোন নিলো। মেসেঞ্জারে ঢুকলো। বর্ষা নিজেদের বাসায় চলে গিয়েছে। ভার্সিটিতে রোজ দেখা হয় ওদের। ওকে মেসেজ দিলো।
“কালকে আসবি?”
“আসলে টাকা দিবি?”
“না, জুতা দিবো!”
“তাইলে আসবো না!”
“ভাগ তুই!”
বলেই ওর চ্যাট থেকে বের হলো। অতঃপর এক্টিভ লিস্টে নাহিয়ানকে দেখে একটু অবাক হলো। রাত একটার কাছাকাছি। এই সময়ও ইনি জেগে? অবশ্য এটাই স্বাভাবিক। আজকালের দিনে রাত একটা মানে সবে রাত শুরু। নীতি নক দিলো,
“হ্যালো টাকলা!”
মেসেজটা কয়েক সেকেন্ডের মাঝে সিন হলো।
“টাকলা কাকে বলো?”
“আপনাকে!”
বেশ কিছুক্ষণ পর নাহিয়ান একটা ছবি দিলো। তার মাথার। সঙ্গে মেসেজ দিলো, “মাথায় দেখেছো কত চুল?”
নীতি ঠোঁট চেপে হাসলো।
“আমি নজর দিলাম, আপনার সব চুল ঝড়ে পরে যাবে।”
সঙ্গে সঙ্গে নাহিয়ান ছবিটা আনসেন্ড করে দিলো। নীতির এবার আরো হাসি পেলো।
“শা’কচুন্নির নজর!”
“কি বললেন?”
“অন্ধ, দেখো না?”
”ফা’জিল লোক!”
“তোমার উপকার করলাম, আর তুমি এসব বলছো? ছি, কৃতজ্ঞতা নেই দেখছি!”
“ওটা বলতেই নক দিয়েছিলাম। কিন্তু এখন আর বলবো না।”
“আহা, এটা বলতে নক দিয়েছো। আর কি সুন্দর সম্বোধন তোমার!”
“আপনাকে নক দেয়াই ভুল আমার। ভাগেন তো!”
“সেম টু ইউ!”
নীতি সিন করে রেখে দিল। এর মাঝেই আনাফ মেসেজ করলো।
“বইনা!”
“পাশের রুম থেকে মেসেজ করতেছো কেন?”
“তো কি? রাত একটা বাজে তোর রুমে যাবো?”
“তাও ঠিক! তুমি এখনও ঘুমাও নাই?”
“হ্যাঁ আমি ঘুমাচ্ছি, আমার ভুত জেগে আছে।”
“ভাইয়া!”
“দেখছিস ই তো অনলাইন। আচ্ছা মাকে বলেছিস?”
“এমন বিয়ে পাগল হচ্ছো কেনো? এখনই বললে চাচী বুঝে যাবে।”
“ওহ, তাও ঠিক!”
“আমার মনে হয় না দিবে বলে।”
“কেনো?”
“প্রীতি এখনও বাচ্চা তাই!”
“আরে বাড়িতেই তো থাকবে। ছোট চাচীও থাকবে। সমস্যা কি?”
“বুঝবা না তুমি! ঘুমাও তো।”
“বলিস কিন্তু!”
নীতি আর রিপ্লাই করলো না। ফোন পাশে রেখে উপরে থাকা বন্ধ ফ্যানের দিকে তাকালো। এখন সে কি করবে? কিভাবে বলবে বড় চাচীকে এসব? শুরুটা কেমন করে করবে? এসব ভাবতে ভাবতেই হুট করেই হারিয়ে গেলো নিজের ভাবনায়!
__________________________________
“আচ্ছা শোনো!”
“বলো।”
“একটা জিনিস অনুভব করতে বলবো। মন থেকে অনুভব করবে। এরপর কি অনুভব করলে সেটা আমায় জানাবে।”
“আচ্ছা।”
“চোখ বন্ধ করবে আগে। তারপর অনুভব করবে অনুভবের লাইফে প্রিয় নেই। হারিয়ে গিয়েছে। সম্পূর্ণ হারিয়ে গিয়েছে। কোনো অস্তিত্ব নেই আর প্রিয়র। প্রিয়র মেসেজ নেই, কথা নেই! এমনটা অনুভব করুন!”
“এসব কি প্রিয়?”
“করুন না, প্লিজ!”
অনুভব বিরক্ত হলেও বিষয়টা ফিল করতে লাগলো। ওদিকে প্রিয় অপেক্ষা করছে। বেশ কিছুক্ষণ পর অনুভব বলে উঠলো,
“নিজের অস্তিত্ব খুঁজে পেলাম না প্রিয়!”
প্রিয় হাসলো। আবার জিজ্ঞেস করলো, “কেমন লাগলো আমি বিহীন এই অনুভূতি?”
“যেখানে নিজের অস্তিত্বকেই পাচ্ছি না সেখানে আবার অনুভূতি কিসের? অনুভূতি থাকে সেখানে?”
“তাই?”
“হুমম, এবার তুমি বলো!”
“কি?”
“আমি বিহীন তোমার কেমন লাগবে?”
“ভাবতে চেয়েছিলাম এটা। কিন্তু ভাবতে গিয়ে বুঝতে পারলাম আপনাকে ছাড়া আমি নিজেকে কল্পনা করতে পারি না। দমবন্ধ লাগে অনুভব। সাথে থাকবেন কি সবসময়? ছেড়ে যাবেন না তো?”
__________________________________
চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়লো নীতির। তাকে ছাড়া নিজেকে কল্পনাও করতে পারেনি সে, আর আজ? নীতি উঠলো। ধীর পায়ে ফোন হাতে ব্যালকনিতে গেলো। বাইরের পরিবেশ দেখে লম্বা নিঃশ্বাস নিলো। নিজেকে নিজেই বলে উঠলো,
“তুমি আমার মন কেমনের রাতের এমন এক অনুভূতি, যাকে যতই ভাবি সুখ অনুভূতি হয়। হঠাৎ মনে পড়ে তুমি নেই, কোথাও নেই। আবছা আলোয় মিলিয়ে গেছো। অতঃপর সুখ বিষাদে ছেয়ে যায়। অনুভব হয়, তুমি ছাড়া আমি ঠিকই আছি। তবে সাথে আছে এক বিষাদিনির বিষাদপূর্ণ মন। যেই মন তোমাকে পাওয়ার অপেক্ষায়। অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় সে মন। সেই মনকে বিষাদ থেকে মুক্ত করতে তুমি আসবে না?”
দীর্ঘশ্বাস ফেললো। আবার রাতের অন্ধকারের দিকে তাকিয়ে বললো, “কত রাত তোমাকে ভেবে চলে গেলো অনুভব। মাত্র এক বছরের অনুভূতিগুলো এতটা আবেগময়ী কি করে হয়? কই? আমি তো দেখেছি, পাঁচ বছরের অনুভূতি ভুলেও মানুষ দিব্বি থাকে। তবে আমি কেনো এক বছরের অনুভূতিগুলো অবহেলা করতে পারছি না? আপনিও কি এইসব অনুভব করেন অনুভব?”
প্রশ্নটা করা হলেও উত্তর মিললো না নীতির। অতঃপর ঘুমাতে চলে গেলো। আর কত? নিজেকেও একটু ভালোবাসা উচিত!
__________________________________
“ও বাতাস তুমি বলে দিও তারে,
সে যেনো আমারই থাকে! ভোলে না আমারে!”
গানের এই অংশটুকু গেয়েই থামলো অনুভব। মুখে তার মুচকি হাসির রেখা!
”জানো প্রিয়? তোমাকে ভুলতে চেষ্টা করছি আমি। এলে তো আমার জীবনে এক স্নিগ্ধ বাতাস হয়ে, কিন্তু চলে গেলে তুমুল ঝড় তুলে। তবে জানো, ভীষণ জানতে ইচ্ছে করে! কি পেলে চলে গিয়ে? কি পেলে আমায় ডুবিয়ে! দেখা তো হলো না, তবে সুযোগ হলে জেনে নিবো। আমিও ভালো থাকবো প্রিয়! তুমিও থেকো। যতই হোক, ভালো তো বাসিই!”
বোকা অনুভব! জানলোই না তার প্রিয় তাকে ছাড়া ভালো নেই। এক বিন্দুও ভালো নেই। দীর্ঘশ্বাস ফেলে ফোন হাতে নিলো। ভুলবে বললেও কি মানুষ ভোলা যায়? আর প্রিয় মানুষ হলে তো তা অসম্ভব! আবার সেই চেনা পরিচিত গ্রুপে গেলো। ‘প্রিয়’ নামে সার্চ দিতেই অসংখ্য আইডি স্ক্রিনে ভাসলো। অনুভব দেখতে লাগলো সব। কিছু নিচেই সেসব আইডি এর পোস্ট সামনে এলো। হুট করেই একটা লিখায় আটকে গেলো সে। থমকে গেলো তার সময়। হাতের উল্টোপিঠে নাকে জমে থাকা বিন্দু বিন্দু ঘাম মুছে নিলো। আবারও লিখাটা পড়লো। নাহ! এটা তারই লিখা.. তার প্রিয়র জন্য লিখা! তবে কি তার প্রিয় এটা? পোস্টের সময় দেখলো সে। দু সপ্তাহ আগে করা। সিউর হতে আইডিতে গেলো সে। তখনই ভেসে উঠলো নামের নিচে থাকা বায়োর দিকে। যেখানে লিখা,
“অনুভবের প্রিয়!”
সঙ্গে সঙ্গে মেসেজ করলো সে। আনন্দ হচ্ছে তার। পুরো পৃথিবীকে জানাতে ইচ্ছে করছে সে পেয়েছে তার প্রিয়কে। হুট করেই মনে প্রশ্ন জাগলো। প্রিয় এতদিন কোথায় ছিল?
#চলবে
#প্রিয়_অনুভব
#সাবরিন_জাহান_রোদেলা
#পর্ব_১৩
“বড় চাচী আসবো?”
“আরে নীতি, আয় আয়।”
নীতি এক বুক সাহস নিয়ে রুমের ভিতরে ঢুকলো। ভয়ঙ্কর কাজ করতে যাচ্ছে সে।
“কি করছো?”
আনাফের মা হেসে বললেন,
“দেখ না তোর চাচা অফিস গিয়েছে, আর রুমের কি হাল বানিয়ে গিয়েছে। এদিক সেদিক জামাকাপড় ছড়িয়ে রুমের হাল বেহাল করে ফেলেছে। বয়স হয়েছে, তাও ছোটদের মতো কাজ করে। ওদিকে আবার আনাফ। নিজের কাজ নিজে তো করেই না; আবার সেও অগোছালো মানুষ। এখন আবার চাকরি হয়েছে। রুম তো আরো গুছাবে না। সকাল সকাল বেরিয়ে গিয়েছে। গিয়ে দেখবো তার রুমের হালও একই। এই দু’জন আমার এত কাজ বাড়ায়।”
নীতি হাসলো কেবল। অতঃপর এখানে আসার কারণ মনে পড়তেই বললো, “এই জন্যই উচিত আনাফ ভাইকে বিয়ে দেয়া। তাহলে তার বউই সবগুছিয়ে রাখবে। তোমার বাড়তি কোনো কাজ করতে হবে না!”
আনাফের মা বিছানার এক কোণে বসে কাপড় গুছাচ্ছিলেন। নীতির কথা শুনে তার হাত থেমে গেলো। নীতি বুঝতে পারলো প্রতিক্রিয়া হচ্ছে। প্রথমে এই কাজ করবে না ভাবলেও সকালে ছোট চাচীর আর নিজের মায়ের কথা শুনে বুঝেছে তারা প্রীতি কোন মামার ছেলের সাথে বিয়ে ঠিক করে রাখতে চায়। তাই আনাফের এত তাড়াহুড়ো। নীতিও জেনেশুনে সব নষ্ট হতে দিতে পারে না। আর যাই হোক, দু’জন ভালোবাসার মানুষ আলাদা হতে দেখতে পারবে। আর নিজের বোনের জন্য এইটুকু করে না হয় একটু চ’ড়-থা’প্পড়ই খেলো। লম্বা শ্বাস নিলো । অতঃপর বলতে লাগলো,
“একা আর কত করবে? ছেলের জন্য বউ, আর নিজের জন্য একটা মেয়ে এনে নেও।”
কাপড়গুলো সরিয়ে রেখে তিনি নীতির দিকে তাকালেন। শান্ত কণ্ঠে বললেন, “এখানে আয়!”
নীতি ঢোক গিললো। এতক্ষণ বিছানার থেকে দূরে দাড়িয়ে ছিলো সে। ধীর পায়ে এগিয়ে গেলো তার বড় চাচীর দিকে।
“বস!”
নীতি বিনাবাক্যে বসলো।
“এবার বল, আনাফ কি বলতে তোকে পাঠিয়েছে।”
নীতি চমকে তাকালো। মুখ ফসকে জিজ্ঞেস করে ফেললো, “তুমি জানলে কি করে যে ভাইয়া পাঠিয়েছে?”
আনাফের মা স্মৃতি হেসে বললেন, “কারণ আমার নীতিরানী আমাকে কখনো এসব নিয়ে বলে না। সে আমাকে ভয় পায় অকারণে। আর আজকে এত্ত বড় বড় কথা বলছে, বোঝাটা কি কঠিন ব্যাপার?”
নীতি মেকি হাসলো।
“কি বলেছে? বিয়ে করতে চাইছে সে?”
নীতি মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বললো।
“যেহেতু বিয়ের কথা বলেছে, তার মানে মেয়েও পছন্দ আছে। তাই না?”
“হুমম!”
“কে সে?”
“প্রীতি!”
স্মৃতি কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলেন নীতির দিকে। পরক্ষণেই হেসে বললেন, “তাহলে এই ব্যাপার!”
“হুমম, ছোট চাচী তার ভাইয়ের ছেলে কথা তোমাকেও হয়তো বলেছে। আনাফ ভাইয়া তাই একটু ভয় পেয়ে আছে। তোমাকে কথাটা কেমন করে বলবে বুঝতে পারছিলো না। আর রীতি আপুও এখন সংসারে ব্যাস্ত। তাই আমাকেই বলতে বললো।”
“বুঝেছি। তবে ওকে বলো মা মানেনি।”
“সত্যি মানে নি?”
নীতির বোকা প্রশ্নে স্মৃতি হাসলো। ওর মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, “আমার কাছে রীতি, প্রীতি, নীতি, সিনথী, আনাফ, রাদিফ সব এক। আমার ছেলে মেয়েরা যেটাতে খুশি আমি সেটাই দিবো।”
নীতির মুখে হাসির রেখা ফুঁটে উঠলো। স্মৃতিকে ঝাপটে জড়িয়ে ধরে বললো, “তুমি বেস্ট চাচী।”
বলেই গালে চুমু এঁকে ছুটে বেরিয়ে গেলো। স্মৃতি হেসে নিজের কাজে মন দিলেন। নিজের রুমে যাওয়ার ফাঁকেই ফোন বের করে আনাফকে মেসেজ করলো নীতি।
“চাচী মানে নি ভাইয়া। তোমাকেই কিছু করতে হবে।”
মেসেজটা সেন্ড করেই হেসে দিলো নীতি। খুশি লাগছে তার। ইশ, কেনো লাগছে? পরক্ষণেই হাসি থেমে গেলো। আচ্ছা অন্যদের ভালোবাসা পূর্ণতা পেলে ওর এত্ত খুশি লাগে। নিজেরটা পেলে কতোটা খুশি হবে ও? এসব ভাবতে ভাবতেই সিঁড়ির কাছে এসেছে সে। ড্রয়িংরুমে প্রীতি সিরিয়াল দেখছে। ওকেও জ্বালাবে ভেবে নিচে আসছিলো সে। কিন্তু ভাবনায় এতটা বুদ ছিল সিঁড়ির দিকে খেয়াল করেনি। হুট করেই নিচু জায়গা আসায় আর বেখায়ালি হওয়ায় পড়ে যেতে নিচ্ছিলো সে। তৎক্ষণাৎ সিঁড়ির রেলিং ধরে সামলে নিলো। নিজেকে সামলে নিলেও ফোন সামলাতে পারেনি সে। হাত থেকে ছুটে সেটা দুটো সিঁড়িতে আছার খেয়ে, রেলিংয়ের ফাঁক দিয়ে গিয়ে সোজা সোফায় পড়লো। নীতি হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ওদিকে প্রীতি সিরিয়াল রেখে একবার নীতিকে দেখছে তো একবার তার পাশের সোফায় পড়ে থাকা ফোন দেখছে। নীতি ধীর পায়ে নিচে নেমে আসলো। সোফার কাছে গিয়ে ফোন উঠালো। স্ক্রিন অন করতেই দেখলো ডিসপ্লে গায়েব। হতাশার নিঃশ্বাস ফেললো সে। শুধু সোফায় পড়লেই পারতো। কি দরকার ছিল সিঁড়িতে আছার খেয়ে এখানে পড়ার। নিজের মনে নিজেই বললো, “এইজন্যই বলে, বেশি খুশি হতে নেই। পরে কাঁদতে হয়!”
প্রীতি ততক্ষণে উঠে নীতির ফোন দেখছিল। চানাচুর খেতে খেতে বললো, “কান্দিস না। রাদিফ ভাইয়া কে দিস, ঠিক করে দিবে।”
নীতির খারাপ লাগলেও আপাতত পাত্তা দিলো না। কেননা এটা ঠিক করা যাবে। আর সেদিন সিনথীর না বলে ফোন নেয়ার জন্য যেই জিনিস হারানোর ভয় ছিল সেগুলোও নিজের ড্রাইভে সেভ করেছে। তাই সে শান্ত। নয়তো অনুভবের স্মৃতি নষ্ট হবে, আর সে চুপ করে থাকবে; এমনটা হবার নয়!
“কাঁদার পালা তোর। তোর বিয়ে তোর মা তোর মামার ছেলের সাথে দিবে। ওদিকে বড় চাচীও তোরে মানবে না। সো দুঃখ পালন করো বইন!”
বলেই ফোন হাতে নিয়ে উপরে গেলো। প্রীতি মুখে চানাচুর নিয়ে স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। তৎক্ষণাৎ রুমে গিয়ে ফোন দিল আনাফকে। কান্নাকাটি করে সব বলতে লাগলো। ওদিকে আনাফও নীতির মেসেজ পেয়ে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। করবেটা কি?
__________________________________
সন্ধ্যায় রাদিফ আসতেই নীতি তার ফোন এগিয়ে দিলো। রাদিফ ফোন দেখে নীতির দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
“কি করবো এটা?”
“ডিসপ্লে চলে গিয়েছে আছার খেয়ে। ঠিক করে দেও।”
রাদিফ এসবের কাজ মোটামুটি পারে। কিন্তু বেশ সময় সাপেক্ষ।
“পরীক্ষা চলে রে বইন। সময় হবে না এখন!”
“আচ্ছা দোকানে দিয়ে দিও!”
“দেখি আগে!”
বলেই ফোন হাতে নিলো। উল্টে পাল্টে দেখে বললো, “ডিসপ্লে পাল্টাতে হবে। টাকাও লাগবে। এর চেয়ে ভালো নতুন নিয়ে নে।”
নীতি উদাস মনে ভাইয়ের পাশে বসে বললো, “মা দিবে না ভাইয়া!”
“আহারে।”
“ধুর, ফাজলামি করো না তো ভাইয়া!”
রাদিফ হাসলো। রীতি আর আনাফ জমজ ভাই বোন। চেহারায় অত টুইন ভাব না থাকলেও মিল আছে। আনাফ রীতির কয়েক মিনিটের ছোট। তবুও ওকে আপু বলেই ডাকে। রাদিফ ওদের দুই বছরের ছোট। নীতির এক বছর আর প্রীতির দুই বছরের বড় সে।
”বললে দিবে দেখিস।”
“দিবে না!”
নীতি গালে হাত দিয়ে বসে রইলো। আজকে ভেবেছিল আরেকবার ‘প্রিয়’ নামক আইডিতে যাবে। কিন্তু হলো কোথায়? হয়তো ফোনও চাইছে না সে আবার হতাশ হোক।
__________________________________
বসার ঘরে সবাই উপস্থিত। তাদের সবার মধ্যে টপিক একটাই। ‘প্রীতি আর আনাফের বিয়ে’। সবাই রাজি, কিন্তু মাঝে আনাফ আর প্রীতি নীতির দিকে খেয়ে ফেলা লুক দিয়ে তাকিয়ে আছে। সেই দুপুরের আগ মুহূর্তে বলেছে ওদের মেনে নিবে না, প্রীতির বিয়ে। দুইজন কত প্রকার ইমোশনাল কথা বললো। প্রীতি তো কেঁদে কেঁটে অস্থির। এর জন্য কে দায়ী? অবশ্যই নীতি! আপাতত দুইজন নীতিকে একা ঘরে চেপে ধরেছে।
“কি যেনো বলেছিলি নীতি?”
আনাফের কথা শুনে নীতি হাসার চেষ্টা করে বললো, “বড় চাচীই বলেছে বলতে।”
“তাই বলে তুইও বলবি? জানিস কতটা টেনশনে ছিলাম?”
প্রীতির কথা শুনে নীতি হেসে বললো,“বড় চাচী বলেছে। পালন না করে কি করে থাকি? যতই হোক, বড়দের কথার সম্মান করা উচিত!”
“ওরে আমার বড় ভক্ত। দাড়া তুই!”
প্রীতি তেড়ে আসলেই নীতি ছুটে বেরিয়ে যায়। ওর পিছু পিছু প্রীতিও যায়। আনাফ ধপ করে বিছানায় বসে পরে। আপাতত সব স্বাভাবিক। কয়েক মাস পরে ওদের বিয়ে হবে। ভাবতেই অবাক লাগছে ওর। সবাই এত সহজে মেনে নিলো?
__________________________________
নীতি এক ছুটে নিচে চলে আসে। বড়রা সবাই সন্ধ্যার আড্ডায় বসেছে। সিনথী ওদের মাঝে বসে চা, বিস্কুট খাচ্ছে। নীতি নিচে আসতেই প্রীতি চিৎকার করে বললো, “সিনথী, নীতিকে ধরতে পারলে তোকে মেলা ঘুরতে নিয়ে যাবো!”
প্রীতির কথা শুনে সিনথী চা রেখে উঠে দাঁড়ালো। ততক্ষণে প্রীতিও নিচে এসে গেছে।
নীতি নিজেকে বাঁচাতে বললো, “ছোট চাচী, তোমার মেয়ে আমায় মা’রছে। দেখো, বড়দের সম্মান করে না।”
“তোর বড়গীরি আমি দেখাচ্ছি।”
প্রীতির মা প্রীতিকে ডাক দিলেও প্রীতি শুনলো না। সে আজ নীতিকে এক দুই ঘা হলেও দিবে। নীতির পিছু ধাওয়া করায় নীতি সোজা বাড়ির সদর দরজার দিকে দৌড়ে যায়। পিছনে প্রীতির পরিস্থিতি আর অবস্থান দেখতে পিছে ঘুরে তাকিয়েই ছুট দেয়। সঙ্গে সঙ্গে একজনের সাথে ধাক্কা লেগে থেমে যায় ও। কপালে হাত দিয়ে মৃদু আর্তনাদ করে সামনে তাকায়। সামনেই নাহিয়ান থুতনী চেপে ধরে চোখ মুখ কুঁচকে আছে।
“আপনি?”
ওদিকে প্রীতি এসেই ঠাস করে ওর পিঠে থা’প্পড় দিয়ে উপরে ছুটলো।
“আহ্, প্রীতির বাচ্চা।”
বলে সেও ছুটলো। এদিকে নাহিয়ান হতভম্ব হয়ে আছে। সাথে শাফিনও। সে নাহিয়ানের পিছেই ছিল। এমন মুহূর্তের জন্য কেউ প্রস্তুত ছিল না। নীতির মা এগিয়ে এলেন।
“খুব লেগেছে বাবা?”
“না আন্টি!”
“আর বলো না। এরা এত্ত বাচ্চামী করে। বরফ দিবো?”
নাহিয়ান হাসার চেষ্টা করে বললো, “দিলে ভালো হয়!”
__________________________________
দৌড়াদৌড়ির পর্ব শেষে নীতির রুমে বসে হাপাচ্ছে প্রীতি আর নীতি।
“তোর জন্য কপালে ব্যাথা পেলাম!”
“ঠিক হয়েছে একেবারে।”
“সর! আচ্ছা নাহিয়ান আর শাফিন ভাইয়া এখানে কেনো?”
“দাওয়াত দিতে এসেছে।”
“কিসের?”
“তূর্ণার জন্মদিন! কেনো জানিস না? তুর্ণাই তো আমাদের গ্রুপেই বললো।”
“ফোন নষ্ট, সকাল থেকে লাইনে যাই নি।”
“আলহামদুলিল্লাহ!”
“একটা দিমু ধইরা! বের হ রুম থেকে!”
প্রীতি মুখ বাঁকিয়ে রুম থেকে বের হলো।
__________________________________
বেশ কিছুক্ষণ বাদে নীতি রুম থেকে বের হলো। নিচে উকি দিতেই দেখলো বড়রা কেউ নেই। আনাফ আর রাদিফ বসে আছে নাহিয়ান আর শাফিনের সাথে। নিচে নামলো সে। রাদিফকে উদ্দেশ্য করে ডাক বললো, “ভাইয়া!”
“কি?”
“ঠিক করে এনে দেও না।”
“বইন আমার পড়া আছে। এখন পারবো না। সকালে দিয়ে আসবো!”
“আমার লাগবে তো! কত নোটস আছে গ্রুপে!”
“আরে আজকে দিলেও তারা তো আজ দিতে পারবে না ফোন ব্যাক। টাইম লাগবে। এর চেয়ে ভালো চাচীর কাছে গিয়ে পক পক কর। নতুন ফোন দিতে।”
নীতি চোখ মুখ কুঁচকে ফেললো।
“আচ্ছা আজ আসি আমরা।”
বলেই দাঁড়ালো নাহিয়ান আর শাফিন।
“খাওয়া দাওয়া করে যেতেন দুলাভাই!”
আনাফের কথায় শাফিন অমত প্রকাশ করলো।
”না আজ না। অন্য একদিন!”
এমন নানান কথায় আনাফ আর শাফিন বাইরে যেতে লাগলো। রাদিফ উঠে তার রুমে গেলো। নীতি তখনও রাদিফের যাওয়ার পথের দিকে তাকিয়ে।
“তোমার মাথা কি লোহার তৈরি? আগে তো ভাবতাম খালি মাথাটা মোটাই। এখন দেখছি লোহারও। মনে হচ্ছে নিচের পাটির দাঁত সব ভেঙ্গে গিয়েছে। এই জন্যই তো ঘটে বুদ্ধি কম!”
নাহিয়ানের এক নাগাড়ে বলা কথা শুনে নীতি অবুঝ হয়ে তাকিয়ে রইলো। যতক্ষণে বুঝলো ততক্ষণে নাহিয়ান তার ধরা ছোঁয়ার বাইরে। ফুঁসে উঠলো সে। লোকটা তাকে এভাবে অপমান করে চলে গেলো?
__________________________________
সারাদিনের কাজ শেষে আবারও অনলাইন হলো অনুভব। সারাদিন কতবার যে দেখেছে প্রিয় উত্তর দিয়েছে কিনা। কিন্তু ফলাফল শূন্য। হতাশ হলো। আচ্ছা, তবে কি প্রিয়কে সে পায় নি? দীর্ঘশ্বাস ফেললো।
“আমি অপেক্ষা করবো প্রিয়। অন্তত এটা বুঝেছি তুমি হারাও নি আমার থেকে। তোমার উত্তরের অপেক্ষায় আমি প্রিয়! অনেক কিছু যে জানার আছে। অনেক কিছু!”
#চলবে