#প্রিয়_অনুভব
#সাবরিন_জাহান_রোদেলা
#পর্ব_০৪
রাত দুটোর দিকে নীতি ঘুমোতে এলো। বিছনায় শুয়ে মোবাইল হাতে নিলো টাইম দেখার জন্য। সেই মুহূর্তেই স্ক্রিনে কিছু মেসেজ নোটিফিকেশন দেখতে পেলো। নীতি তাড়াতাড়ি মেসেজগুলো সিন করলে। মেসেজগুলো এরকম ছিল, “দেখুন আমি তো এসব জানি না। তবে কেউ আপনার আইডিতে ঢোকার জন্য হয়তো পাসওয়ার্ড রিসেট দিচ্ছে। আপনি বরং আপনার জিমেইল আর পাসওয়ার্ড পাল্টে ফেলুন।”
“ওকে, ধন্যবাদ!”
বলেই ফোন রেখে দিল। ওর এসব নিয়ে মাথা ব্যাথা নেই। আইডিতে ওর তেমন কিছুই নেই যে কেউ হ্যাক করে ব্ল্যাকমেইল করবে। অতঃপর ঘুম….
__________________________________
কলেজের বোরিং ক্লাসে বসে আছে নীতি। বরাবরই ম্যাথ ওর বোরিং লাগে। আর এই চুলহীন স্যারকে তো আরো। চুলহীন বলার কারণ তার মাথায় চুল নেই। নীতি বিরক্ত হয়ে লুকিয়ে ব্যাগ থেকে ফোন বের করলো। ফেসবুকে ঢুকলো। কি মনে করে ‘অনুভব’ নামক মানুষটার আইডিতে ঢুকলো। নীতি এখনও কনফিউজড। এটা আদো ছেলে নাকি মেয়ে? আইডি লক করা নেই বিধায় সহজেই পোস্ট দেখতে পারছে।
অনেকক্ষণ ঘোরাঘুরির পর এটা বুঝলো মানুষটা দারুন ছন্দ লিখে। নীতি কৌতূহল দমাতে না পেরে মেসেঞ্জারে গেলো। নীতির দেয়া গতকালের মেসেজে লাইক দিয়েছে সে। বিড়বিড় করে বললো, “ধন্যবাদ দিলে ওয়েলকাম বলতে হয়। ম্যানার্স নাই কোনো।”
অতঃপর মেসেজ দিবে কি দিবে না ভাবতে ভাবতে দিয়েই ফেললো। কি আর হবে? সে তো আর ওকে বাস্তবে চিনে না। তাই লিখে ফেললো,
“আচ্ছা আপনি আপু না ভাইয়া?”
সে লাইনেই ছিল।
“নাম দেখে কি মনে হয়?”
“আপনার নাম অনুভব?”
ওপারে কিছুক্ষণ নিরবতা। অতঃপর জবাব এলো, “জি!”
“শুধু অনুভব? আগে পরে কিছু নেই?”
“আপনার নাম কি?”
প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে এভাবে পাল্টা প্রশ্ন করাটা পছন্দ হলো না নীতির।
“আইডিতে আছে দেখেন না?”
“প্রিয় আবার কেমন নাম? শুধু প্রিয়? আগে পরে কিছু নেই?”
নীতি বুঝতে পারলো লোকটা তার কথা তাকেই ফিরিয়ে দিচ্ছে। তার মানে ওর মতো লোকটারও ফেক আইডি এটা।
“তার মানে আপনিও ফেক?”
“আমি না! আমার আইডি ফেক।”
নীতি কিছু বলবে তার আগেই শুনতে পেলো চুলহীন স্যার তাকে ডাকছে।
“মিস নীতি!”
ফোন ব্যাগের ভিতর ঢুকিয়ে নীতি জলদি উঠে দাঁড়ালো।
“জী স্যার?”
“আপনি কি করছেন ম্যাম?”
নীতি মেকি হেসে বললো, “আপনার পড়া শুনছি স্যার।”
“ব্যাগের মাঝে আমার পড়া?”
“ইয়ে মানে স্যার কলম খুঁজছিলাম!”
“ওহ, তো বলুনতো আমি এখন কি পড়াচ্ছি?”
নীতি হোয়াইট বোর্ডে তাকিয়ে টপিকের নাম খোঁজার ট্রাই করলো। কিন্তু পেলো না। এক সাথে অনেক কিছু লিখা। যার কারণে ধরতেও পারছে না কি করাচ্ছে।
“ক্লাস কি ফোন চালানোর জায়গা?”
নীতি চুপ করে রইলো।
“যান, ক্লাসে ফোন চালাতে হবে না কষ্ট করে। বাইরে দাঁড়িয়ে আরামে চালান।”
“স্যার, সরি…”
“গেট আউট!”
নীতি আর কিছু না বলে ব্যাগ নিয়ে বের হলো। এতে অবশ্য ও খুশিই হয়েছে। আহা! এখন আর লুকিয়ে ফোন চালাতে হবে না। ব্যাগ কাঁধে নিয়ে মাঠে গেলো ও। ফোন বের করে তাকে মেসেজ দিলো,
“আপনার জন্য ক্লাস থেকে বের করে দিয়েছে আমায়!”
এক্টিভ থাকলেও সিন হলো না। নীতি মাঠে গিয়ে বসলো। কলেজে ওর তেমন আড্ডা দেয়ার ফ্রেন্ড হয়নি। নামে মাত্র কিছু ফ্রেন্ড হয়েছে। তিন মিনিটের মাথায় মেসেজ এলো, “আমি কি করলাম?”
“এইযে আপনার সাথে কথা বলছিলাম বলে স্যার বের করে দিল!”
“কোন ক্লাসে পড়েন?”
নীতি প্রথমে ভাবলো বলবে কি না। তারপর ভাবলো এক ক্লাসে তো ও আর একা পড়ে না।
“ইন্টার সেকেন্ড ইয়ার, আপনি?”
“বাচ্চা মেয়ে। অনার্স ফাইনাল ইয়ার আমি!”
“জোক করছেন নিশ্চয়ই?”
“এখনও সেই সম্পর্ক হয়নি!”
“তাও ঠিক! তো কি নিয়ে পড়ছেন?”
“এত জেনে কাজ কি?”
“বলবেন না বললেই হয়। কাজ কি আবার কি?”
“হুমম!”
নীতি অসহায় হয়ে ফোনের দিকে তাকালো। এখন এই ‘হুম’ এর রিপ্লাই কি দিবে? যাহ, কথা বলাই মাটি করে দিলো। এখন টাইম পাস করবে কি করে? কিন্তু ওকে অবাক করে দিয়ে ওপাশ থেকে মেসেজ এলো, “ক্লাসের মাঝে ফোন টিপতে গেলেন কেনো?”
খুশিতে গদগদ হয়ে রিপ্লাই করলো, “টাকলা স্যারের ক্লাস ভালো লাগে না। ইয়াং হলে তাও করা যেতো!”
“ইয়াং নয় দেখে ফোন চালান?”
“হুমম! ইয়াং হলে কি আর ফোন ধরতাম? তার দিকেই তাকিয়ে থাকতাম!”
“শিক্ষক বাপের সমান!”
“তারা বিয়ে তো কোনো না কোনো ছাত্রীকেই করে!”
“অদ্ভুত মানুষ আপনি। ছাত্রীকে করলেও তাদের সম্মান করা উচিত। পরে যদি কিছু হয় সেটা পরের ব্যাপার।”
“আচ্ছা বুঝলাম। মজা করছিলাম। তো বলুন আপনার আইডিতে ছন্দগুলো আপনার লিখা?”
“হুমম! আমার আইডিও ঘুরেছেন?”
“আসলে আমার কৌতুহল অনেক বেশি। তাই একটু ছন্নছাড়া। ভাববেন না আপনাকে পটাতে আসছি। আসলে টাইম পাসের জন্য কথা বলার কেউ নেই।”
“আর আমাকে পেলেন?”
“ওরকমই!”
সে আর রিপ্লাই দিলো না। নীতি জিজ্ঞেস করলো, “রাগ করলেন নাকি?”
নো রিপ্লাই। নীতি আর না ঘেঁটে নিজের আইডিতে গেলো। ওখানে যদি বর্ষাকে পায়। পেলোও। অতঃপর আড্ডা জমালো।
__________________________________
এভাবেই বেশ কিছুদিন চললো নীতির কথা বার্তা। দুইজন দুইজনার আইডিতে ফ্রেন্ডও হয়ে গেলো। প্রায়ই ওদের কথা হয়।
দুপুরের খাওয়া দাওয়া শেষে ফেসবুকে ঢুকলো নীতি। তখনই ফীডে অনুভবের পোস্ট দেখলো।
“একটা মানুষ কাছে ছিলো
একটা মানুষ দূরে..
আমার যত কথা ছিল
বলতে যে চাই তারে।”
নীতি কমেন্ট করলো, “বেশ সুন্দর ছন্দ লিখেন আপনি!”
“এটা ছন্দ নয়, এটা গান!”, অনুভবের রিপ্লাইয়ে নীতি ভ্রু কুঁচকে ফেললো। তারপর রিপ্লাই করলো,
“এমন গান তো জন্মেও শুনি নি।”
কোনো উত্তর এলো না। মিনিট খানেক পরে অনুভব মেসেজ দিলো, “আছেন?”
“জি!”
কিছুক্ষণ পরেই অনুভব ভয়েস মেসেজ দিলো। নীতি কিছুটা চমকালো। রিপ্লাই করলো,
“কি এটা?”
“শুনেন!”
নীতি ভয়েসটা চালু করলো। সঙ্গে সঙ্গে পুরুষালি কণ্ঠের কিছু ছন্দ ভেসে এলো। উহু ছন্দ না, গানের কথা! গাম্ভীর্যপূর্ন সু-মধুর কণ্ঠের গানটা নীতির মন এলো মেলো করে দিচ্ছে। ফোনটা কাছে রাখতে পারলো না সে। বিছানার এক কোণায় ছুঁড়ে দিলো। ভয়েস চলছে। নীতি চোখ বন্ধ করে শুনছে। কয়েক সেকেন্ড পরেই গান থেমে গেলো। নীতি লম্বা শ্বাস নিলো। ও জানে না ও কেনো এমন আচারণ করলো। ফোন আবার হাতে দিলো। স্বাভাবিকভাবেই মেসেজ দিলো,
“সুন্দর তো! সিঙ্গার এর নাম কি? বেশ দারুন গলা তার!”
“অনুভব!”
আরেকদফা চমকালো নীতি।
“আপনার গাওয়া?”
“জি ম্যাম!”
“লিরিক্সও কি আপনার?”
“নাহ, ওটা অন্যের!”
“গান শিখেন নাকি?”
“না!”
“তাহলে এত সুন্দর গাইলেন কি করে?”
“গান ভালোবাসি। তাই সুর মনেতেই আসে। শিখা হয়নি।”
“আমিও গান ভালোবাসি।”
“তাহলে একটা গান শুনান!”
“আপনি ছেলে, আর আমি মেয়ে। নিশ্চয়ই বুঝেছেন কি বুঝিয়েছি!”
“আমি অতটাও বাজে ছেলে নই!”
“নিজেই স্বীকার করলেন যে অতটা নন, তবে কিছুটা আছেন!”
অনুভব কয়েক জোড় রাগী ইমুজি পাঠালো। তা দেখে মৃদু হাসলো নীতি।
__________________________________
সেদিনের পর নীতি , না.. প্রিয়! প্রিয় আর অনুভবের মাঝে সুন্দর সম্পর্ক গড়ে উঠলো। আগে মাঝে মাঝে কথা হতো। কিন্তু এখন, নিয়ম করে কথা বলাটা যেনো অভ্যাস হয়ে গেছে।।
“কি করছেন?”
“এইতো কলেজে আপনি?”
“বাসায়! কলেজে ফোন ইউজ করছেন যে? আবার ক্লাস থেকে বের হওয়ার শখ আছে নাকি?”
“ইয়াং স্যার আসবে না কতদিন, ফোন চলবে ততদিন!”
হুট করেই অনুভব চুপ হয়ে গেলো। নীতি বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে আবার মেসেজ দিলো , “কোথায় গেলেন?”
“ভাবছিলাম!”
“কি?”
“ইয়াং স্যার আসলে আমার প্রয়োজন তখন ফুরিয়ে যাবে!”
কথাটায় অনেকটা অভিমান প্রকাশ পেলো নীতির কাছে। সে মজার ছলে বললো, “হুমম, আমার টাইম পাস ফ্রেন্ড তো আপনি! ইয়াং কোনো স্যার আসলে আমার এর ফোন কেনো প্রয়োজন হবে?”
অনুভব নিরুত্তর রইলো।
“আবার চুপ করে গেলেন কেনো?”
“আমাদের আর কথা বলা উচিত নয় প্রিয়!”
নীতি চমকে উঠলো।
“কেনো?”
“কারণ উচিত নয়। আর মেসেজ করবেন না।”
নীতি অবাক হলো। অনেক কিছুই জানার ইচ্ছে ছিলো ওর। হুট করেই কি হলো? কিন্তু তবুও মেসেজ করলো না। যতই হোক, একজন মানা করার পর মেসেজ দেয়াটা বিব্রতকর।
__________________________________
পরপর কয়েকদিন কথা বলা অফ রইলো তাদের। পরিবারের সাথে ভালোই সময় কাটায় নীতি। কিন্তু তবুও সারাদিন ফোনটার দিকে তাকিয়ে থাকে। কখনো অনুভবকে অনলাইন দেখলে ওর ভীষণ ইচ্ছে করে নক দিতে। কিন্তু অনুভবের লাস্ট মেসেজ ওকে আটকে দেয়। নীতির বড্ড অশান্তি অশান্তি লাগছে। ও বুঝছে না এমনটা কেনো? তাই ওই আইডি ফোন থেকেই রিমুভ করে দিলো। ও এই ‘অনুভব’ নামক মানুষটাকে মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে চায়। একদম ঝেড়ে ফেলতে চায়!
“নীতি!”
রীতির ডাকে চমকে উঠলো নীতি। এতক্ষণ অনুভবের ভাবনায় মশগুল ছিল সে।
“হুমম?”
“কখন থেকে ডাকছি তোকে?”
“শুনি নি বলো।”
“বর্ষা ফোন করেছিলো!”
“তোমাকে?”
“হুমম! তুই নাকি ওর সাথে ঠিকমতো কথা বলছিস না। কেমন উদাস উদাস হয়ে থাকিস! কি হয়েছে তোর? প্রেম করে ছ্যাকা খেয়েছিস নাকি আবার?”
“ধুর, কি যে বলো! ওই ছেরি আমায় ইগনোর করে পড়ালেখার জন্য। তাই আমিও করলাম!”
“ওহ, তাই বল।”
“হুমম!”
রীতি নীতির পাশে বসে ফোন দেখতে লাগলো। হুট করেই নীতি জিজ্ঞেস করলো, ”আচ্ছা আপু! প্রেম করে ছ্যাকা খেলেই কি মানুষ এমন উদাস হয়? অন্য কোনো কারণে হয় না?”
নীতির প্রশ্নে একটু ভেবে বললো, “দেখ মানুষ উদাস হয় অনেক কারণে। ফ্রেন্ডসদের জন্য হয়, লাভ সাভের বিষয় হলে হয় আবার অনেক সময় ফ্যামিলি প্রবলেমেও হয়। আরেকটা কারণেও হয়!”
“কি কারণ?”
“পার্সোনাল কোনো কারণে হয়!”
“ওহ!”
“বর্ষাকে কল দিস। গেলাম আমি।”
রীতি যেতেই নীতি বর্ষাকে কল দিলো। দুই বার রিং হতেই কেটে দিলো। ভালো লাগছে না কথা বলতে ওর। কিন্তু তার কিছুক্ষণ পড়েই বর্ষা ব্যাক করলো। নীতি কল পিক করতেই ওপাশ থেকে দুটো ভয়ংকর গালি শুনতে পেলো।
“ছি, শিক্ষিত মানুষ এগুলো কি বলিস?”
“তোর কাছে নিজেকে শিক্ষিত প্রমাণ করার প্রয়োজন নেই আমার। এমন ইগনোর করছিস কেনো?”
“ইগনোর কই করলাম? তুই ই তো বললি পড়ালেখা ধুমিয়ে করবি। তাই ডিস্টার্ব করি না!”
“এই নীতি, সত্যি করে বল তো! কাউকে পাইছিস নাকি?”
“আউল ফাউল কথা কমাইয়া বল!”
“কি আউল ফাউল! নইলে তুই আমার কথা এত ভাববি সেটা আমি বিশ্বাস করবো?”
“করলে কর, নাইলে নাই!”
“অত্যন্ত অদ্ভুত মানুষ তুই!”
“জানি!”
“কি করে?”
“একজন বলেছে..”
“কে?”
অনুভবের নাম বলতে গিয়েও বললো না নীতি।
“এইযে তুই বললি!”
বর্ষা হতাশ হলো। এ শুধু অদ্ভুত নয়, একদম আশ্চর্যজনক প্রাণী!
__________________________________
আরো সপ্তাহখানেক কেটে গেলো। নীতির মন খারাপের এখনও অন্ত নেই। বড্ড বিরক্ত সে। অনুভবের সাথে কথা বলার মাঝে এত জড়িয়ে গেলো কেনো ও? অনুভবের তো ইচ্ছে নেই কোনো কথা বলার। তবে সে কেনো এত বিচলিত? ফোনটাও ফেলে রেখেছে। অনলাইনেও যেতে ইচ্ছে করে না। এই এক সপ্তাহ অনলাইন হয়নি সে। আজ আবারও অনুভবের সাথে ভীষণ করে কথা বলতে ইচ্ছে করছে তার। তাই অনলাইন হলো। হতেই চমকে উঠলো। অনুভবের মেসেজ এসেছে তিনদিন আগে। বেশ কয়েকটা!
“সারাদিন যে লাইনে দেখলাম না! কিছু হয়েছে কি?”
তারপরের মেসেজ, “আপনি ঠিক আছেন?”
লাস্ট মেসেজ, “চারদিন ধরে আসছেন না যে?”
পর পর লম্বা নিঃশ্বাস নিলো নীতি। অতঃপর উত্তর দিলো, “এসে কি করবো?”
অনুভব লাইনেই ছিল।
“কিছু করার নেই?”
“আপনি তো টাইম পাস ফ্রেন্ড ছিলেন। এখন আপনি মেসেজ দিতে মানা করলেন, তো আমার আর এখানে কাজ কি?”
“তাও ঠিক!”
“তো হঠাৎ মনে পড়লো যে আমায়?”
“এমনি, লাইনে দেখিনি।”
“তার মানে খেয়াল রাখেন আমি লাইনে আছি নাকি!”
পাঁচ মিনিটের মত মেসেজ সিন করে ফেলে রাখলো অনুভব।
“উত্তর দিলেন না যে?”
“সরাসরি কিছু কথা বলি। ভালো না লাগলে বলে দিবেন।”
“কি কথা?”
“আমার মনে হচ্ছে আমি আপনাতে আসক্ত হয়ে যাচ্ছি। টাইম পাস ফ্রেন্ডের থেকেও বেশি কিছু হতে চাইছি! আর এসব বুঝতে পেরেছি সেই দিনই, যেদিন বললেন ইয়াং কোনো টিচার আসলে আপনার আর আমাকে প্রয়োজন পড়বে না। কেনো যেনো কথাটা মানতে পারছিলাম না। যখন বুঝতে পারলাম তখন ভাবলাম কথা না বলাটাই সব সমস্যার সমাধান হবে। কিন্তু…”
“কিন্তু?”
“প্রতিনিয়ত কথা বলার জন্য মন ছট ফট করতো। রোজ আইডি ঘাটা হতো। আমি বুঝছি না এই ব্যাপারে কি করা যায়!”
নীতি উত্তর দিলো না। ও নিজেও এই জিনিসগুলো উপলব্ধি করছে। নিজেও বুঝছে না এই বিষয়ে কি করবে?
“আমার কথায় ভুল বুঝবেন না। আমি কথা চেপে রাখতে পারি না। বলে ফেলি।”
“এসব কেনো হয় জানেন?”
“জানি তবে সিউর না!”
“কি?”
“আদো কিছু আছে নাকি!”
“আমিও!”
“মানে?”
“বোঝার কথা!”
“কি করা উচিৎ এখন?”
নীতি উত্তর দিলো না। কি হচ্ছে, কি হবে কিছুই জানে না ও। নিজেও বুঝতে পারছে না কি করা উচিত!
#চলবে