#প্রাক্তন
#লেখিকা- শারমিন আঁচল নিপা
#পর্ব- ১৯
এমন সময় মনে হলো মাথাটা প্রচন্ড রকম ঘুরছে। চোখগুলো ঘোলা হতে শুরু করল। শরীরটা নিস্তেজ অসাড় হয়ে যাচ্ছে। অরন্যের দিকে তাকালাম। অরন্যের মুখ অবয়বটা ঝাঁপসা হয়ে আছে। বুঝতে পারছিলাম সে হালকা হাসছে। তবে আমার কেন এমন লাগছে। কখন যে কী হয়ে গেল টের পেলাম না। যখন টের পেলাম তখন আমি অন্য কোথাও। আমার সারা শরীর উলঙ্গ অবস্থায় পড়ে আছে বিছানায়। শরীরে কোনো কাপড় নেই। গা, হাত, পা নাড়াতে বেশ কষ্ট হচ্ছিল। সাদা শরীরে লাল লাল দাগ প্রতীয়মান হলো। কিছুটা আন্দাজ করতে পারছিলাম আমার সাথে কী হয়েছে। আশে পাশে কাপড় খুঁজতেই লক্ষ্য করলাম অরন্য বিছানার পাশেই শুয়ে আছে। সে ও অর্ধ উলঙ্গ হয়ে আছে। আন্দাজটা পুরোপুরি নিশ্চিত হলো। অরন্যের কুৎসিত মনোভাবের সাথে পরিচিত হলাম। এখান থেকে আমাকে বের হতে হবে। আমার সাথে যাই হোক সেটা মেনে নেওয়া ছাড়া কোনো উপায় দেখছি না। তবে অরন্য ভেবেছিল সে এভাবে আমাকে পেয়ে ছাড়বে। তবে সে এটা ভাবে নি এভাবে সে আমাকে আরও হারিয়ে ফেলবে। আমি জানি না আমার কী হয়েছিল কেন এভাবে মাথাটা হঠাৎ চক্কর দিয়ে উঠেছিল তখন। তবে আমাকে যে অজ্ঞান করা হয়েছিল সেটা আমি বুঝতে পারলাম এখন। অরন্য ঘুমুচ্ছে। যা করতে হবে খুব সাবধানে। আশেপাশে আমার মোবাইলটা খুঁজতে লাগলাম। টেবিলের ঠিক কর্ণারে মোবাইলটা পড়ে আছে। মোবাইলটা হাতে নিয়ে দেখলাম বিকেল ৪ টা বাজে। মা কল দিয়েছে অনেক বার। সাথে সোহানও কল দিয়েছে। অবশ্য মাকে অরন্য মেসেজ দিয়েছে আমি একটা কাজে আটকে আছি পরে কল দিব৷ এখন যেন কল না দেই। কিন্তু এখন আমি কাকে আগে কল দিব ভাবতে লাগলাম। মাকে কল দিলে মা বিষয়টা সহজে বুঝবে না। এ মুহূর্তে আমি ঠিক কোথায় আছি জানি না। তাই মাকে কল না দিয়ে সোহানকে মেসেজ দিয়ে বললাম
– তোর কী ওয়াট’স এপ আছে?
রিপ্লাইয়ে আসলো
-আছে, কেন?
– আমি তোকে ওয়াট’স এপে একটা লুকেশন দিচ্ছি সে ঠিকানায় তাড়াতাড়ি চলে আয়। আর কোনো প্রশ্ন করিস না।
– আসতেছি। তুই লুকেশন পাঠা।
আমি তাড়াতাড়ি ওয়াট’স এপে ঢুকে লুকেশনটা শেয়ার করলাম সোহানকে। তারপর কাপড়টা পরে বের হতে নিলেই অরন্য আমার হাতটা ধরে বলল
– কোথায় যাচ্ছ।
আমি অরন্যের দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে বললাম
– বেহায়া নির্লজ্জ একটা মেয়ের সাথে এত জঘন্য কাজ করতে তোমার বিবেকে বাঁধে নি?
আমার কথায় অরন্যের কোনো ভ্রূক্ষেপ হলো না। সে কিছুটা কটু কন্ঠে বলল
– আমার স্ত্রী তুমি। তোমাকে পাবার যথেষ্ট অধিকার আমার আছে। আর তোমার এত অহংকার কেন বেড়েছে অপ্সরা? আমি যা করেছি তোমাকে ভালোবেসে। হ্যা আমি ভুল করেছিলাম। তার জন্য তো তিন বছর আমি প্রায়শ্চিত্ত কম করে নি। মানুষ ভুল করলে ক্ষমা করতে হয় তুমি তো তাও করছো না। আর তোমার পেটে আমার সন্তান ছিল সেটা আমি জানতাম না। জানলে অবশ্যই নিজের সন্তান কে শেষ করে দিতে বলতাম না। আমি এত পাপ করেছি বলেই শাস্তি পেয়েছি। প্লিজ অপ্সরা আমাকে মেনে নাও।
অরন্যের কথা শুনে আমার গা টা আরও জ্বলে গেল। আমি তীব্র গলায় উত্তর দিলাম
– যদি তোমার মধ্যে অনুশোচনা থাকত তাহলে আমার সাথে আবার নাটক করতে না। যদি তুমি আমাকে নূন্যতম সম্মান করতে তাহলে ঠিকেই আমাকে আমার মতো থাকতে দিয়ে মন জয় করে নিতে। আবির কে নিয়ে নাটক করে যে মানসিক যন্ত্রণা তুমি আমাকে দিয়েছো সেটার ক্ষমা আমি কী করে করি তোমায়?
– আমি যা করেছি তোমাকে পাবার জন্য।
– এ কথাটা বলে সব দোষ নির্দোষ হয়ে যাবে না। শুনো অরন্য তুমি যদি নিজে থেকে আমার কাছে এসে সবকিছুর জন্য ক্ষমা চাইতে আমাকে ভালো করে বুঝাতে আমাকে সময় দিতে আমাকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জায়গা দিতে তাহলে আমি তোমাকে মেনে নিতাম। কিন্তু তুমি যা করেছো আর করতেছো তারপর তোমাকে আমি মেনে নিতে কোনোভাবেই পারব না। একটা ভুল শুধরে নিতে গিয়ে তুমি আরও হাজারটা ভুল করেছো। আমার মন নিয়ে আবার খেলেছো। আমাকে হতাশায় ডুবিয়ে দিয়েছো। আর আজকে যা করেছো তারপর তোমার কোনো ক্ষমা নেই। তোমার কী মনে হয় জোর করে শারিরীক সম্পর্ক গড়ে তুললেই একটা মেয়ে তোমার প্রতি দুর্বল হয়ে যাবে। সবকিছু এত সস্তা। আজকের পর থেকে তোমার প্রতি যতটুকু টান,মায়া, সম্মান ছিল সেটাও চলে গেছে। আমি শুধু তোমাকে ঘৃনা করি। মন থকে ঘৃনা করি। এর বাইরে কিছু না। একদম পথ আটকাবে না। আমাকে ছাড়ো। আমি তোমার এ নোংরা কাজের শাস্তি দিব। তোমার আর আবিরের নামে অভিযোগ করব। প্রতিটা পদক্ষেপে যে যন্ত্রণা তুমি আর আবির দিয়েছো সেটা আমি ফিরিয়ে দিব।
অরন্য আমার হাতটা শক্ত করে ধরে বলল
– আমি আমার চাকুরির চিন্তা করি না। এ চাকুরি চলে গেলেও আমার কিছু যায় আসে না। মনে শান্তি যার নেই তার প্রফেশন নিয়ে কোনো চিন্তাও নেই। আমি শুধু তোমাকে চাই। আর এজন্য যা করা লাগে করব। প্লিজ অপ্সরা আমাকে ছেড়ে যেও না। আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি।
– কিন্তু আমি তোমাকে অনেক ঘৃনা করি। মন থেকে অনেক ঘৃনা করি। তোমার স্ত্রী নাফিসা এসেছে তাকে নিয়ে সুখী হও।
অরন্য আমার কথায় হালকা হাসলো। তারপর বলল
– গতকালকে নাফিসাকে তার সমস্ত টাকা পরিশোধ করে ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দিয়েছি। ইতোমধ্যে তার হাতে হয়তো সব পৌঁছে গেছে। সে এখন আমার স্ত্রী না। সে আমার শুধুই প্রাক্তন। আমার বর্তমান ভবিষ্যৎ যদি কেউ হয় সেটা শুধু তুমি। কারণ একমাত্র তুমিই আমার স্ত্রী। তোমার সাথে আমার ডিভোর্স হয়নি।
– হয়নি, হতে কতক্ষণ? আমি সব কাগজপত্র তৈরী করে রেখেছি। এ সপ্তাহের মধ্যে তুমিও ডিভোর্সের কাগজ পেয়ে যাবে। আমি তোমাকে আমার জীবনে চাই না। তোমার মতো নোংরা,পাগল,সাইকো মানুষ আমার জীবনে চাই না।৷ তোমার জীবনে কালো অধ্যায়ের সূত্র হয়েছে। একদিন তুমি আমাকে পাগল না হওয়া সত্ত্বেও পাগল সাইকো উপাধি দিয়েছিল। আজ এতবছর পর তুমি নিজেই সে তালিকায় চলে গিয়েছ। তোমারটা ছিল সাজানো নাটক তবে এখনের এটা পুরো বাস্তব। তুমি দয়াকরে আমার পিছু ছাড়ো। আমি তোমাকে আর চাই না। আর সবচেয়ে বড় কথা এ সম্পর্কে সম্মান জিনিসটা নষ্ট হয়ে গেছে। চাইলেও এ সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব না।
বলেই যেতে নিলাম। অরন্য আমাকে আটকে দিল। আমি বের হতে নিলে সে আরও জোরে ধরল। আমি অরন্যকে একটা ধাক্কা দিয়ে দরজা খুলে।। দরজাটা বাহির থেকে লাগয়ি দিয়ে বের হলাম। সোহানকে কল দিয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে বললাম
– তুই কোথায়?
– আমি প্রায় চলে এসেছি। আর ১০ মিনিট লাগবে তুই কোথায়?
আমি আশপাশ তাকিয়ে ওকে বললাম
– আমি রিকশা নিয়ে মোড়ের মাথায় এগুচ্ছি তুই তাড়াতাড়ি আয়।
বলেই কলটা কাটলাম। রিকশা নিয়ে মোড়ের মাথায় এগুতে লাগলাম। কষ্টে বুকটা ফেটে যাচ্ছে।।তবে চোখ দিয়ে পানি বের হচ্ছে না। শুধু হাহাকার হচ্ছে। মোড়ের মাথায় যেতেই সোহান চলে আসলো। আমি সোহানের গাড়িতে উঠেই বললাম
– তাড়াতাড়ি থানায় চল। কাজ আছে।
– কী কাজ। আর তোর এ অবস্থা কেন? সারা শরীরে কিসের দাগ এগুলা? আমাকে একটু বল। ব্যপার টা কী?
– ধর্ষিত হয়েছি।
আমার উত্তর শুনে সোহান চুপ। মিনেট পাঁচেক সে চুপ রইল। নিজের গতিতে গাড়ি চালাতে লাগল। তার হয়তো বোধগম্য হচ্ছে না আমি কী বলছি। গাড়িটা চালিয়ে থানার ঠিক কাছে এনে বলল
– আমাকে কী বলা যায় কী হয়েছে?
আমি দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বললাম
– আগে মামলা করে আসি তারপর সব বলছি।
সোহান গাড়িটা থানার কাছে নিয়ে বলল
– যা এবার যা করার করে আয়।
আমি গাড়ি থেকে নেমে থানায় গিয়ে অরন্যের নামে নারী নির্যাতনের মামলা করলাম।।সাথে আবিরের নামেও অভিযোগ দিলাম। তারপর থানা থেকে বের হয়ে আবির আর অরন্যের অফিসে অভিযোগ দিলাম। এর মধ্যে অবশ্য মাকে কল দিয়ে বললাম আমি ঠিক আছি। যদিও মাকে সবটা বলে নি। তবে বাসায় গিয়ে বলব। পুরোটা সময় সোহান সাথে ছিল। মাথাটা অনেক ঘুরছে। সারাদিনের না খাওয়া। সোহান আমার দিকে তাকিয়ে একটা কেকের প্যাকেট এগিয়ে দিয়ে বলল
– রাত হয়ে যাচ্ছে।।তোর মুখ দেখে মনে হচ্ছে তুই কিছু খাস নি। খেয়ে নে আগে।
আমি কেকটা সোহানের হাত থেকে নিয়ে খেয়ে নিলাম। এত সহজ ভাবে আমি সব মানতে শিখে গেছি এটা ভেবে যেন নিজেকে আজ বেশ অচেনা মনে হচ্ছে। কেকটা খাওয়ার পর শরীরটায় একটু বল আসলো। আমি গাড়িতে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। সোহান আমার সামনে এসে বলল
– এবার বল কী হয়েছে। এতক্ষণ তুই যা বলেছিস সব করেছি। কোনো প্রশ্ন করেনি। এবার সব বল কী হয়েছে। কে তোর এ অবস্থা করেছে। অরন্যের বিষয়টা ও খুলে বল।
আমি হালকা গলায় সোহানকে সবটা বললাম। সোহান সমস্ত ঘটনা শোনার পর চুপ হয়ে গেল। তার চোখ রক্তবর্ণ হয়ে আছে। রাগে গিজগিজ করে বলল
– আমি এখনেই অরন্যকে খুন করে আসব। তোর সাথে এমন করেছে। আমাকে আগে কেন বলিস নি। বলেই গাড়িতে হাত মুষ্টি করে জোরে ঘুষি দিল।
আমি সোহানকে হালকা ধমক দিয়ে বললাম
– তুই শান্ত হ। এ লড়াই আমার। আমাকে আমার লড়াই করতে দে।।আমি চাই না আমার এ লড়াইয়ে অন্য কেউ আসুক। আমার এ লড়াইটা শুধু আমি করতে চাই। বন্ধু হিসেবে যতটুকু পাশে থাকা দরকার ততটুকু থাকিস। এর বাইরে কিছুই লাগবে না। আর কালকে মেডিকেলে যাব, তারা বডি টেস্ট করবে। তুই কী আমাকে নিয়ে আসতে পারবি বাসা থেকে। একা বের হতে যথেষ্ট ভয় হচ্ছে। আর মাকে নিয়ে বের হওয়াও ঝুঁকি পূর্ণ। বাসার অন্য কেউ ব্যপারটা জানেও না। অন্যদের বললেও তারা মানসম্মানের অজুহাত দিয়ে আর সামনে এগুতে দিবে না। আমি চাই না এ লড়াইটা থেমে যাক এর শেষ আমি দেখে ছাড়ব।
– তুই যা বলিস তাই করব। আগের অপ্সরা আর এ অপ্সরার মধ্যে কত তফাত। আগে তুই একটুতে কান্না করে দিতি, স্থির থাকতে পারতি না। অল্পতেই তোর রাগ উঠে যেত। আর আজকে এত কিছু হওয়ার পর তুই কত স্থির কত শান্ত। মানুষ যে রঙ বদলায় পাল্টায় সেটার প্রমাণ তুই।
আমি দীর্ঘ দীর্ঘ কয়েকটা নিঃশ্বাস ফেলে বললাম
– মানুষ মরে গেলে পঁচে যায়। আর বেঁচে থাকলে রঙ বদলায় করণে অকারণে রঙ বদলায়। কথাটা যেন কোন ক্লাসে পড়েছিলাম। ধরে নে ঐরকম কিছুই। আমাকে বাসায় পৌঁছে দে এবার। কলেজ থেকে ছুটি নিয়েছি কল দিয়ে। আর কালকে সকালে চলে আসিস।
-হুম আসবো। গাড়তে উঠ।
আমি গাড়িতে উঠলাম। গাড়িটা চলছে। আমি খুব শান্ত হয়ে বসে আছি। শরীরে, মনে হাজারটা ক্ষত নিয়েও আমি শান্ত। গাড়িটা বাসার সামনে আসলো। আমি কাপড় দিয়ে গা ঢেকে সোহানের থেকে বিদায় নিয়ে বাসায় আসলাম। রুমে আসতেই মা আমার রুমে আসলো। আমি শরীরের কাপড়া সরাতেই মা আমাকে ধরে বলল
– কিসের দাগ এগুলা। কী করেছিস তুই।
মাকে জড়িয়ে ধরলাম। অনেক কাঁদতে ইচ্ছা করছে তবে পারছি না। তবে ভঙ্গা গলায় মাকে সব বললাম। মা আমার দিকে তাকিয়ে বলল
– যা হয়েছে বাদ দে। এসব থানা পুলিশ করলে লোক জানাজানি হবে আর মান সম্মান যাবে। মা রে জীবনে অনেক কিছু চেপে যেতে হয়। এসব জানার পর তোর আর বিয়ে হবে না। কোনো ভালো ঘরের ছেলে তোকে বিয়ে করবে না। আর আমারাও মুখ দেখাতে পারব না।
মায়ের কথা শুনে আমি রাগ হলাম না। কারণ মা মায়ের দিক ভেবে বলেছে। কারণ এ সমাজে ধর্ষকের ছবি ভইরাল হওয়ার আগে ধর্ষিতার ছবি ভাইরাল হয়। এ সমাজে মান সম্মানের ভয়ে এমন হাজারও অপরাধ মাটি চাপা থাকে। যারা অপরাধ করে তারা বুক ফুলিয়ে হাঁটে আর যারা অপরাধের শিকার হয় তারা মাথা নীচু করে চলে। এটাই আজকের সমাজ। চাইলে সমাজ পাল্টে দেওয়া গেলেও দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টানো সম্ভব না। আমি মায়ের দিকে তাকিয়ে বললাম
– তুমি যেমন বলবে তেমন হবে। আপাতত স্বাভাবিক কাজ কর্ম করতে বাইরে যেতে হবে। তাই সোহান আমার পাশে থাকবে। সোহানকে তো চিনই। আর আমি এটা নিয়ে আর বাড়াবাড়ি করব না।
মা কিছু না বলেই চলে গেল। তবে আমি হাল ছাড়ব না। যত বাঁধাই আসুক এর শেষ আমি দেখে ছাড়ব। দোষ আমার না যে আমি শাস্তি পাব,কষ্ট ভোগ করব। খারাপ লাগছে মায়ের কথা শুনে। আর এটা ভেবেও খারাপ লাগছে এ সমাজে মেয়েরা কত অসহায়। এর মধ্যেই গোসল করতে গেলাম। লাল দাগগুলো নীল হয়ে আছে। কষ্ট তো অনেক হচ্ছে তবে চাপিয়ে রাখছি। গোসল থেকে বের হতেই মা খাবার নিয়ে আসলো। আরও অনেক বুঝাল এসব নিয়ে যেন বাড়াবাড়ি না করি। কারণ মানুষ অনেক কিছু বলবে। আমি শুধু খাবার গিলছিলাম আর চুপ হয়ে শুনছিলাম। এখন বুঝতেছি অনেকে আত্মহত্যা কেন করে। কারণ তারা সব দিক থেকে সাপোর্ট না পেয়ে নিজেকে শেষ করে দেয়। আমারও ইচ্ছা হচ্ছে তবে আমি দমে যাওয়ার মেয়ে না। আমি কেন আত্মহত্যা করব। আমি তো দোষ করে নি। মা চলে গেল।
আমি গা টা এলিয়ে দিলাম বিছানায়। কষ্টের আগুনে পুড়ছি তবে সেটা প্রকাশ করতে পারছি না। চোখটা বন্ধ করে শুয়ে আছি। কখন যে চোখটা লেগে আসলো বুঝে নি। চোখটা হালকা লেগে আসতেই মনে হলো কেউ একজন আমার পাশে দাঁড়িয়ে আছে। আমি তাকাতেই…
(চলবে)