#প্রনয়ের_দহন
#Nusrat_Jahan_Bristy
#পর্ব_৫৪
গৌধুলী লগ্ন পেরিয়ে সন্ধ্যা নেমেছে পুরো শহর জুড়ে। দুর আকাশে গোলাকৃতি তালার মতো স্বচ্ছ চাঁদ উঠেছে। চাঁদের আলোতে পুরো শহরটা আলোকিত হয়েছে মনে হচ্ছে যেন আজ পূর্ণিমার রাত। সেই চাঁদের আলোর নিচে নববুধ রুপে তীর দাঁড়িয়ে আছে ফরাজী ভিলার সদর দরজার সামনে। আজ থেকে ফরাজী পরিবারের ছোট বউ রুপে এই বাড়িতে প্রবেশ করবে। আগে তীর হাজার বার এই বাড়ির ভেতরে গেছে কিন্তু আজকের অনুভূতিটা সম্পূর্ণ রুপে আলাদা। তীরের পাশেই ইশান দাঁড়িয়ে আছে। বধূ বরণের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পরে তীর বাড়ির ভেতরে পা বাড়াতে নিলে কেয়া চিৎকার করে বলে।
–তীর দাঁড়াও।
তীর প্রশ্নবোধক নয়নে তাকায় কেয়ার দিকে। কেয়া বাঁকা হেসে বলে।
–এভাবে ঢুকলে তো হবে না দেবর রাণী।
তীর ছোট্ট করে বলে।
–তাহলে?
–কারো কোলে চঁড়ে ভেতরে ঢুকতে হবে।
তীর ভ্রু-কুচকে নেয়! কার কোলে চড়ে ভেতরে ঢোকার কথা বলছে কেয়া? কেয়া ইশানকে কিছু একটা ইশারা করতেই ইশান মুচকি হেসে তীরকে পাঁজাকোলে তুলে নেয়। হঠাৎ করেই এমন হওয়াতে তীর ভ’য় পেয়ে ইশানের গলা জাপটে ধরে। ইশান তীরের ভ’য় পাওয়া দেখে ফিসফিসিয়ে বলে।
–ভ’য় পাচ্ছিস কেন? আমার উপর কি তোর বিশ্বাস নেই।
তীর রা’গী চোখে ইশানের দিকে তাকায়। চিবিয়ে চিবিয়ে বলে।
–নেই তো একদম নেই আপনার উপরে বিশ্বাস।
বলেই মুখটা অন্য দিকে ফিরিয়ে নেয়। ইশান মুচকি হাসে তীরের কথা শুনে। এই মেয়েকে বশে আনতে হলে ইশানের দেখা যায় একটু পরিশ্রম করতে হবে। ইশান তীরকে ভ’য় দেখার জন্য মিছিমিছি ওকে ছেড়ে দেওয়ার ভান ধরলে তীর ভ’য়ে মৃদু চিৎকার করে ইশানের গলা আরো শক্ত করে দু হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে। ইশানকে এমন করতে থেকে দুরে দাঁড়িয়ে থাকা নেহা বেগম বলেন।
–ইশান মেয়েটাকে এভাবে ভ’য় না দেখিয়ে ভেতরে নিয়ে আসো।
ইশানও চুপচাপ তীরকে কোলে নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে সোফার দিকে যেতে যেতে বলে।
–চাইলে তোকে ঠাস করে নিচে ফেল দিতে পারতাম। কিন্তু কি আর করার বল দুইটা না তিনটা একটা মাত্র আদরের বউ আমার তাকে আমি কি নিচে ফেলে দিয়ে তার কোমড় ভাঙ্গতে পারি। কোমড় ভেঙ্গে গেলো তো আমারেই সমস্যা।
তীর বিড়বিড় করে বলে।
–অসভ্য।
ইশান তীরের অসভ্য বলাটা ঠিকেই শুনে নিয়েছে আর ঠোঁটের কোণে ফুটে উঠে মিষ্টি হাসির রেখা। ইশান তীরকে সোফায় বসাতে বসাতে বলে।
–এতো তাড়াতাড়ি অসভ্যর ট্যাগটা না দিলেও পারতি আমাকে। কারণ এখনো তো তোর সাথে কোনো অসভ্যতামি শুরুই করে নি। যখন অসভ্যতামি করবো তখন যত খুশি অসভ্য বলতে পারিস তখন কিচ্ছু মনে করবো না প্রমিজ।
বলেই সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে যায়। তীর বিস্মিত নয়নে ইশানের দিকে তাকিয়ে থাকে। ইশানের কথার মানে ঠিক বোধগম্য হচ্ছে না। ইশান তীরের এমন বিস্মিত চেহারা দেখে বলে।
–কথাটার মানে না বুঝলে তোকে পরে বুঝিয়ে দিবো একে বারে হাতে কলমে। এখন এতো ব্রেইনে প্রেসার দেওয়ার কোনো দরাকার নেই। কারণ তোর ব্রেইন তো আবার দুর্বল প্রকৃতির।
তীর ভেংচি কেটে ইশানের দিকে থেকে নজর সরিয়ে নেয়। ইশান ভেবে পাচ্ছে না এই মেয়ে বার বার এতো ভেংচি কাটছে কেন? ভেংচি কাটার রোগ হলো নাকি আবার এই মেয়ের। যখন থেকে দেখা হয়েছে তখন থেকে শুধু ভেংচি কেটেই যাচ্ছে ননস্টপ থামার নামেই নেই। ইশান দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে বলে।
–ভাবি আমি রুমে যাচ্ছি ফ্রেশ হতে হবে আমাকে।
–হুমম যাও।
ইশান উপরে চলে যেতেই কেয়া তীরকে বলে।
–তীর চলো আমার সাথে ফ্রেশ হতে হবে তোমাকে। এতো ভারি লেহেঙ্গা আর কতক্ষণ পড়ে বসে থাকবে।
–হে ভাবি আর পারছি না এর ভার সইতে।
কেয়া তীরকে নিয়ে নিচের একটা রুমে চলে যায় উপরে আর যায় না। এতো ভারি লেহেঙ্গা নিয়ে উপরে উঠতে গেলে তীরকে আর খুজে পাওয়া যাবে না সিউর।
______
ইশান পাঞ্জাবির উপরের বোতাম খুলতে খুলতে ঘরে ডুকতে নিলে দেখে দরজা ভেতর থেকে লক করা। ইশান দরজায় টুকা দিয়ে বলে।
–ভেতরে কে?
ভেতর থেকে ইশার কন্ঠস্বর ভেসে আসে।
–ভাইয়া আমরা!
–এই তোরা আমার ঘরে কি করিস?
–করি তোমার মাথা আর মুন্ডু।
–ইশু থা’প্প’র চিনিস যদি না চিনিস তাহলে দরজাটা খোল আমি চিনিয়ে দিছি।
–উফফ ভাইয়া! তুমি যাও তো এখান থেকে বিরক্ত করো না।
–আরে ফ্রেস হবো তো আর দরজা বন্ধ করে কি করছিস তোরা?
ইশানের চেঁচামেচির আওয়াজ শুনে নেহা বেগম উপরে এসে বলেন।
–কি হয়েছে এভাবে চিৎকার করচ্ছিস কেন?
–আরে মা দেখো ওরা আমার রুমে ডুকে দরজা লক করে দিয়েছে। আর আমার ফ্রেশ হওয়ার দরকার।
এমন সময় ইশা দরজা খুলে উঁকি দিয়ে বলে।
–মা তোমার আদরের ছোট ছেলেকে বলে দেও এখন এই রুমে প্রবেশ করা নিষেধ এগারোটার আগে। আর ফ্রেশ হতে চাইলে গেস্ট রুমে যাক ওখানে উনার সব জিনিসপত্র আমি আগেই রেখে এসেছি।
নেহা বেগম ছেলের উদ্দেশ্যে বলেন।
–ও যা করতে চাইছে করতে দে। তুই গেস্ট রুম থেকে ফ্রেশ হয়ে আয়।
–তোমার এই মেয়ে নিশ্চয়ই কোনো ফন্দি আটছে মা। তবে এটা বলে রাখি আমি তোর ফন্দিতে পা দিছি না।
–দেখা যাবে।
ইশান চলে যেতেই নেহা বেগম মেয়েকে বলেন।
–যা করার তাড়াতাড়ি কর। কখন যে রে’গে যায় তার ঠিক নাই।
–মা আজ তোমার ছেলে রা’গবে না সে তো আজ অন্য মুডে আছে।
–বেশি পাকনা পাকনা কথা না বলে জলদি শেষ কর।
এমন সময় ভেতর থেকে নীরা বলে।
–ওই ইশু আয় তাড়াতাড়ি আমি একা এতো কিছু করতে পারবো না।
______
রাত এগারোটা বাজে তীরকে জামদানির মাঝে হালকা বেগুনি কালারের একটা শাড়ি পড়ানো হয়েছে। ছেড়ে দেওয়া চুলে বেলি ফুলের দিয়ে সুন্দর করে চুল বাঁধা হয়েছে। মুখে সাজসজ্জা বলতে তেমন কিছু নেই। কিন্তু তারপরও তীরকে অপূর্ব লাগছে দেখতে। বিশেষ করে লজ্জায় গাল দুটো লাল হয়ে আছে। কেয়া তা দেখে বলে।
–কি এতো লজ্জা পাচ্ছো কেন?
তীর আমতা আমতা করে বলে।
–আসলে এভাবে কোনো দিন শাড়ী পড়ি নি তো তাই একটু লজ্জা লাগছে।
–কিন্তু যাই বলো আজকে কিন্তু আমার দেবর তোমাকে দেখে পুরা ফিট হয়ে যাবে বুঝলে। তাই সাবধানে পা ফেলো আমার দেবর কিন্তু আবার রোমান্টিক মানুষ।
তীর কিচ্ছু বলছে না। কেয়া যে তাকে লজ্জা দেওয়ার জন্য এসব বলছে সেটা খুব ভালো করেই জানে।
এমন সময় নেহা বেগম ঘরে আসে বলতে বলতে।
–কি গো নেহা হলো তোমাদের মেয়েটাকে সাজানো।
–হে মা হয়ে গেছে দেখেন তো কেমন লাগছে আপনার ছোট বউ মাকে।
নেহা বেগম তীরকে ভালো করে পর্যবেক্ষণ করে বলে।
–মাশআল্লাহ অনেক সুন্দর লাগছে আমার মেয়েটা।
কথাটা বলে চোখের কোণা থেকে কাজল এনে তীরের কানের সাইডে দিয়ে বলে।
–কারো যেন নজর না লাগে।
তীর মুচকি হাসি দেয়। নেহা বেগম তীরের হাত ধরে কোমল গলায় বলে।
–কিছু মনে না করলে তোকে কয়েকটা কথা বলি।
তীর মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলে।
–আমার ছেলেটা তোকে খুব ভালোবাসে তীর। আমি জানি তোর আর ইশানের মাঝে মনোমালিন্য চলছে। তাই আমি মা হিসেবে বলবো মিটিয়ে নিস তোদের দুজনের মাঝে সব ভুল বুঝাবুঝি বুঝেছিস আমার কথা।
তীর নিচের দিকে তাকিয়ে বলে।
–জি আন্টি বুঝেছি।
নেহা বেগম তীরের মুখে আন্টি ডাকটা শুনে রে’গে বলে উঠেন।
–আন্টি। এখনোও কি তোর আন্টি লাগি আমি।
–না মানে আসলে অভ্যাস।
–এখন থেকে এই অভ্যাসটা চেইন্জ কর। আর মা বলে ডাকবি বুঝলি।
–হুম।
এমন সময় ইশা আর নীরা আসে আর ইশা বলে।
–মা তোমার ছেলে কোথায় চলে গেলো? সারা বাড়ি খুজে কোথাও পেলাম না।
–ইশান বাড়িতে নেই।
–না নেই।
–ফোন দিয়েছিস।
–দিচ্ছি কিন্তু ধরছে না।
–আচ্ছা আগে একটা কাজ কর তীরকে ইশানের ঘরে নিয়ে যা। আমি কল দিচ্ছি আমার ফোন থেকে।
ইশান বাড়িতে নেই শুনে তীর টেনশনে পড়ে যায়। এতো রাতে গেলো কোথায় লোকটা। কেয়া এর মাঝে বলে।
–ইশান হয়তো ছাদে থাকতে পারে ইশা। তুমি আর নীরা গিয়ে দেখো।
–হুম ভাবি ঠিক বলেছো আমরা ছাদে যাচ্ছি।
ইশা আর নীরা আবারো চলল ইশানকে খুজতে।
______
কেয়া তীরকে নিয়ে ইশানের ঘরে ডুকতেই কেয়া আর তীর চমকে যায়। চোখ দুটো রসোগোল্লার ন্যায় বড় বড় হয়ে যায়। যাকে সারা বাড়ি তন্ন তন্ন করে খুজা হচ্ছে সেই মানুষটা কিনা ফুল দিয়ে সাজানো খাটের উপরে আধ শোয়া হয়ে পায়ের উপর পা তুলে শুয়ে শুয়ে ফোন টিপছে। ভাব দেখে মনে হচ্ছে যেন কোনো রাজা বাদশা শুয়ে আছে। এই প্রথম হয়তো বাসর রাতে বউয়ের আগে জামাই বাসর ঘরে এসে নববধূর জন্য অপেক্ষা করছে।
দরজা খুলার শব্দ শুনতেই ইশান সোজা হয়ে বসে সামনে দিকে তাকাতেই চোখ আটকে যায় তীরের দিকে। পলকহীন ভাবে তাকিয়ে আছে তার একান্ত প্রিয় মানুষটার দিকে। ইশানের এমন শীতল চাওনি দেখে তীর শুকনো ঢোক গিলে ঘরের চারিদিকে নজর বুলালো। সারা ঘর নানা রকমের ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। ফুলের গন্ধে মৌ মৌ করছে সারা ঘর জুড়ে। এক অন্য রকম ফিলিংস কাজ করছে মনের মাঝ। এটা ভেবে তীরের ধম বন্ধ হয়ে আসছে ইশানের সাথে এক ঘরে থাকবে কি করে তাও আবার এমন একটা ফুলের বাগানে। এভাবে কেউ ঘর সাজায় যেদিকেই চোখ পড়ছে শুধু ফুলেই নজরে আসছে।
এদিকে ইশান তীরের মোহনীয় রুপ দেখে শুকনো ঢোক গিলে। সামনে দাঁড়ানো মেয়েটাকে যেন আজকে পৃথিবীর সব সৌন্দর্য অর্পণ করে দিয়েছে বিধাতা। কেয়ার কথা শুনে ইশান নিজের ঘোর থেকে বের হয়ে আসে।
–ইশান তুমি এখানে আর ওরা তোমাকে সারা বাড়ি খুজে বেড়াচ্ছে।
ইশান বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে খলা পরিস্কার করে বলে।
–কেন খুজছে আমাকে?
ইশান কিছু বলবে তার আগেই ইশা বলতে বলতে ঘরে ডুকে।
–ভাবী ভাইয়া তো ছাদেও নেই। ভাইয়া কি অদৃশ্য হয়ে গেলো নাকি।
–তোমার আর ইশানকে খুজার দরকার নেই। সে আমাদের সামনে জলজ্যান্ত দাঁড়িয়ে আছে দেখো।
ইশা ভাইকে এই ঘরে দেখে আকাশ থেকে পড়ে। তার সব পরিশ্রম তার ভাই এক নিমিষেই বৃথা করে দিলো। কত্ত আশা ছিলো ইশানকে বাসর ঘরে ঢোকা থেকে আটকাবে আর কিছু টাকা কামাই করবে। কিন্তু না তার হিটলার ভাই সব আনন্দটা নষ্ট করে দিলো। ইশা অভিমানি কন্ঠে বলে।
–ভাইয়া এটা কিন্তু তুমি একদম ঠিক করলে না।
ইশান ভ্রু কুচকে বলে।
–কোনটা ঠিক করে নি?
–তুমি আগে ভাগে কেন ঢুকলে এই ঘরে।
–কেন আমার ঘরে ঢুকতে হলো কি শুভ সময়ের অপেক্ষা করতে হবে নাকি আমাকে।
ইশা নাক ফুলিয়ে বলে।
–তুমি… তুমি একটা অসহ্যকর লোক…
বলেই ইশা হনহনিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে যায়। তার মনটা ইশান ভেঙ্গে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিয়েছে। ইশার পিছন পিছন নীরাও ছুটলো। রিফাত ঘরে ঢুকতে নিয়ে ইশার সাথে দেখা হয় ইশাকে এভাবে চলে যেতে দেখে অবাক হয়। রিফাত রুমে প্রবেশ করে ইশানকে দেখে অবাক হয়ে বলে।
–কিরে তুই কোথায় হারিয়ে গিয়েছিলি?
ইশান কিছু বলার আগেই কেয়াই বলে।
–তোমার বন্ধু এখানেই ছিলো প্রথম থেকে তোমরা বুঝতে পারো নি। তার বাসর করতে এতোটাই তাড়া যে বউয়ের আগেই সেই চলে এসেছে বাসর ঘরে।
ইশান কর্কশ স্বরে বলে।
–ভাবি।
–কি ভাবি হুম। মেয়েটার কতো আশা ছিলো সব দিলে তুমি মাটি করে।
–ওকে আমি মেনেজ করে নিবো চিন্তা করো না।
রিফাত ইশানের কাছে এসে ইশানের কাঁধে চাপড় মেরে বলে।
–তুই দেখি গভীর জলের মাছ রে। তুই যে এতো বড় মাপের খেলোয়ার আগে তো বুঝতে পারি নি। এখন তুই কি রুপ দেখাচ্ছিস আমাদের। আরেকটা কথা একটু সাবধানে পা ফেলিস পরে পিছলে যেতে পারিস।
ইশান গরম চোখে রিফাতের দিকে তাকাতেই রিফাত বলে।
–ওকে ফাইন ফাইন এতো রা’গী চোখে তাকাতে হবে না আমরা চলে যাচ্ছি এই ঘর থেকে।
তারপর কেয়াকে উদ্দেশ্যে করে বলে।
–ভাবি চলুন এখানে মনে হচ্ছে আমাদের এখানে আর কোনো কাজ নেই।
কেয়া মুচকি হেসে বলে।
–হে রিফাত চলো।
তারপর তীরকে বলে।
–আসি তীর। গুড নাইট।
ওরা দুজন চলে যেতেই তীর আড় চোখে ইশানের দিকে তাকায়। ইশান এখনও তীরের দিকে তাকিয়ে আছে। তীরের খুব বলতে ইচ্ছে করছে “এভাবে বেহায়ার মতো তাকিয়ে আছেন কেন হুম? আগে কোনো দিন মেয়ে মানুষ দেখেন নি, অসভ্য কোথাকার”। তীরের ভাবনার মাঝেই ইশানকে এগিয়ে আসতে দেখে তীর দু কদম পিছিয়ে যায়। ইশান তীরের পাশ কাটিয়ে চলে যেতেই তীর জোরে শ্বাস টেনে নিঃশ্বাস ছাড়ে। কিন্তু যখনেই দরজা লাগার শব্দ শুনতে পেলো তখনেই তীরের বুকটা ধ্বক করে উঠে। তার সাথে ইশান আজকে কি করবে ভাবতেই সারা শরীরের লোমকূপ গুলা দাঁড়িয়ে গেছে। বড্ড ভুল করে ফেলেছে এই ঘরে এসে। তীর স্পষ্ট
অনুভব করছে ইশান এগিয়ে আসছে তার দিকে। তীর চোখ বন্ধ করে নিয়ে দু হাত দিয়ে শাড়ি চেঁপে। চাইলেও মনের মাঝে সাহস জোগাতে পারছে না। হঠাৎ করে তীর অনুভব করলো ইশান তার বা হাত ধরেছে। তীর চোখ মেলে তাকাতেই ইশান তীরকে নিয়ে আয়নার সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়ে নিজেও তীরের পিছনে দাঁড়ায়। তীর অবাক চোখে আয়নাতে পড়া ইশানের প্রতিবিম্বর দিকে তাকিয়ে আছে। হঠাৎ করে এভাবে আয়নার সামনে আনার মানে কি? ইশান মুচকি হেসে তীরকে পেছন থেকে আলতো হাতে জড়িয়ে ধরে বলে।
#চলবে_______