প্রথম ভালোবাসার অনুভূতি পার্ট-১৪

0
1545

?প্রথম ভালোবাসার অনুভূতি?
লেখিকাঃ?হ্যাপী?
পার্টঃ১৪

হ্যাপী নিজেকেই সামলাতে পারছে না,,,তার উপর শাহীন,,,

সবাই মিলে ইমুর লাশটাকে কবর দিয়ে আসলো,,,
সবাই যেনো,,এখনো একটা ঘোরের মধ্যে আছে,,,

আমি আজ তোমাদের একটা কথা বলতে চাই,,,(আন্টি)
সবাই আন্টির দিকে তাকালো,,,
আসলে ইমু আমাদের নিজের মেয়ে না,,,ইমুকে আমরা ওর মার থেকে কিনে আনছি,,,
আমরা সবাই অবাক,,
কী বললেন আন্টি(আমি)
হুম ঠিক বলছি আমার ছেলে মেয়ে ছিলো না,,,আর ইমুর আব্বু ছিলো না,,,ইমুর আম্মুর জমজ দুটি মেয়ে হয়,,,ওর মার ক্ষমতা ছিলো না দুই মেয়েকে মানুষ করা,,তাই আমরা ইমুকে নিয়ে আসি,,,তারপর থেকে ইমু আমাদের মেয়ে,,,আমরা ইমুকে সুখে রাখতে পারলাম না,,,(কান্না করে)
আন্টি কান্না করবেন না,,,ইমুর আম্মু এখন কোথায় আছে,,,(আমি)
আমরা জানি না,,,শুধু বলে গেছে অনেক দূরে চলে গেছে,,,,

৬ মাস পর,,,

ভাইয়াকে অনেক কষ্টে নরমাল করতে পেরেছি বাট ইমু মরার পর থেকে ভাইয়ার মুখে হাসি ফুটাতে পারি নি,,,ইমু মরার আগে সবার জন্য একটা করে চিঠি লিখে গেছে,,,আমি চিঠিটা প্রতিদিন একবার হলেও পড়ি,,এখনো চিঠি হাতে নিয়ে বসলাম,,
প্রিয় ননদীনি,,,
আজ তোকে ননদ ডাকতে খুব ইচ্ছে করছে কারন আজকের পর থেকে আর তোকে ননদ বলে ডাকতে পারবো না,, খুব ইচ্ছে ছিলো শাহীনের বউ সাজবো,,পূরণ হলো না,,আমি মরার পর শাহীন খুব কষ্ট পাবে,,,প্লিজ ওকে দেখে রাখিস,,খুব ভালো একটা মেয়ে দেখে ওর সাথে বিয়ে দিস,,তুই ভালো থাকিস,,আর পারলে আমাকে ক্ষমা করে দিস,,
ইতি তোর বান্ধবী ইমু,,,
এখনো ভাইয়ার জন্য মনের মতো মেয়ে পেলাম না,,,
একটা দীর্ঘস্বাস ফেলে দেখলাম অনেক রাত হয়ে গেছে,,,অয়ন এখনো রুমে আসছে না,,, তাই রুম থেকে বের হয়ে অয়নকে খুজতে লাগলাম,,,,

অয়ন বাবার রুমে বসে আছে,,,,
কি করছো এখানে
পিছনে তাকিয়ে দেখে আমি দাড়িয়ে আছি,,,
ও তুমি আসো,,আসলে বাবাকে আজ খুব মিস করছি,,,বাবা থাকলে আজ খুব খুশি হতো,,,(চোখ দিয়ে দুই ফোটা পানি গড়িয়ে পরলো)
আসলেই বাবা আমাদের ছেড়ে চলে যাওয়াতে আমরা বড্ড একা হয়ে গেলাম,,,(আমি)
চলো আমরা রুমে যাই হামযা একা রুমে আছে,,,
হুম চলো(অয়ন)

সকালে,,,
অয়ন হসপিটালে বের হয়ে গেলো,আর আমি ভইয়ার বাসায়,,অনেক দিন আমার হসপিটালে যাওয়া হয় না,,আজ আমার একটা অপারেশন আছে,তাই হামযাকে মায়ের কাছে রেখে যাবো,,

আই মা ভিতরে আই দে আমার নানাভাই কে আমার কোলে দে,,
মা ভাইয়া কোথায়
রুমে আছে তোর জন্য অপেক্ষা করছে,,
আচ্ছা মা আমার লেট হয়ে যাচ্ছে,,ভাইয়া তাড়াতাড়ি আসো
আমি তো তোর জন্যই ওয়েট করছি চল,,
তারপর আমি আর ভাইয়া বের হয়ে গেলাম,,
ভাইয়া একটা কথা বলবো রাগ করবি,
না বল কী বলবি,,
আর কতোদিন একা থাকবি এবার তো মায়ের কথাটা ও ভাববি,
মানে কী বলতে চাইছিস আমি মায়ের কথা ভাবি না(মন খারাপ করে)
আমি এটা বলি নি,,এবার একটা বিয়ে কর,,
প্লিজ এই কথা বলিস না আমি ইমুর জায়গা কাউকে দিতে পারবো না,,
ইমুর জায়গা কাউকে দিতে হবে না,,ঐ জায়গার পাশে না হয় একটু জায়গা করে নিও,
আমি পারবো না,,
ভাইয়া ইমুর শেষ ইচ্ছে তুমি পূরণ করবে না,, ও তো সবসময় চাইতো তুমি সুখী থাকো,,
আমি কেনো ওর ইচ্ছে পূরণ করতে যাবো,,ও তো স্বার্থপরের মতো আমাকে একা রেখে চলে গেছে,,
হঠাৎ গাড়ি ব্রেক করলো,,
কী হলো ড্রাইবার গাড়ি থামালে কেনো,,
স্যার সামনে একটা মেয়ে,,
মেয়ে মানে,,
হ্যাপী আর শাহীন গাড়ি থেকে নামলো,,
মেয়েটাকে দেখে দু’জনে অনেকক্ষণ কোনো কথা বলতে পারলো না,,
শাহীনের মুখ থেকে ইমু নামটা বের হয়ে আসলো,,
ইমু তুমি,,,
কে ইমু,,আমি ইমু না,,আমি হিমু,,,আমার মায়ের আজ অপারেশন রক্তের দরকার তাই রক্তের জন্য যাচ্ছিলাম হঠাৎ আপনার গাড়ির সামনে এসে পড়ি,,সরি,,
আচ্ছা আপনার মা কোন হসপিটালে ভর্তি করছেন,,(আমি)
আনোয়ার খান মর্ডান হসপিটাল,,
ও এটা তো আমার হসপিটাল আপনি আমাদের সাথে আসুন,,,
শাহীন একটি কথা ও বলছে না শুধু হিমুকে দেখছে ইমুর সাথে অনেক মিল,,অনেক দিন শরীরের যত্ন না করায় চেহারা টা ফেকাসে হয়ে আছে,,তা ছাড়া পুরো ইমুর চেহেরা,,
শাহীন যে হিমু কে আড় চোখে দেখছে তা হ্যাপীর চোখ এড়াইনি,,
হ্যাপীর মনে কেমন জানি একটা আসার আলো ফুটেছে,,
আচ্ছা হিমু কিছু মনে না করলে তোমাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করতে পারি,,,

চলবে,,,,

@ ভালোবাসতে হলে আগে,,
নিজেকে ভালোবাসতে শিখো।
যে নিজেকে ভালোবাসতে পারে না,,
সে কখনো অন্যকে ও ভালেবাসতে পারে না।@

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে