প্রথমদেখায়ভালোবাসা পার্ট_০৪
#jannatul_ferdous.
রোদ রাগিনীর সামনে এসে দাঁড়িয়ে হেসে উঠলো।
রাগিনী-ওই হনুমানের বাচ্চা আজকে তোরে পাইছি।আজকে তোরে আমি দেখামু আমাকে রাগানোর ফল কী হতে পারে।ওই রিত্ত যা তো ঝাড়ু আন।
রিত্ত-মেহমানকে তুই ঝাড়ু দিয়ে পিটবি?
রাগিনী-হুম এটারে মারাই দরকার।আমারে থ্রেট দেওয়া আজকে দেখাবো রাগিনীকে রাগানোর জন্য রাগিনী কী করতে পারে।
রাগিনীর আম্মু-চুপ থাক।কাউকে সম্মান দিয়ে কথা বলতেও শিখলি না,ও তোর বড়।
রোদ-আন্টি কিছু শিখাও তোমার মেয়েরে।
রাগিনী-আম্মু একে বের হতে বলো।
রাগিনীর আব্বু-আরে রোদ যে।
রাগিনী-তোমরা ওকে চিনো?
রাগিনীর আব্বু-হুম চিনি তো।
রাগিনী-কীভাবে?
রোদ-আমি বলি।
রাগিনী-হুম বলো।
রোদ-আন্টি কফি আনো।
(কফি নিয়ে সোফায় বসলো রোদ)
রোদ-না এবার সত্যি কথা বলি।
রাগিনী-হুম বলো।
রোদ-তোমাকে আমি ফেবুতে প্রথম দেখিনি।
রাগিনী-তাহলে?
রোদ-মনে আছে তুমি কক্সবাজার গেছিলে।
রাগিনী-হুম আছে।
রোদ-তখন আমিও আমার ফ্রেন্ডস নিয়ে গেছিলাম।সেইখানেই তোমাকে প্রথম দেখি।
রাগিনী-সেটা তো প্রায় ৬মাস আগে গেছিলাম।
রোদ-তারপর ফিরে আসি,তোমাকে অনেক খুজলাম।তোমাকে আর পাইনি।কিছুদিন আগে তোমার আম্মু-আব্বু আমাদের বাসায় গেছিলো।
রাগিনী-কেনো?
রাগীনির আব্বু-ওর আব্বু আমার ফ্রেন্ড।
রোদ-আমাদের বিয়ের জন্যই গেছিলো।তবে রাজি হয় নি আমি।কারণ তার আগেই আমার মন তোমাকে দিয়ে দিছিলাম।আমি জানতাম না আঙ্কেল আন্টিই তোমার বাবা-মা।আজকে তোমাকে এইখানে দেখে অবাক হয়ে গেলাম।যাকে আমি ভালোবাসি তাকেই হারাতে যাচ্ছিলাম।
রোদের আব্বু-তাহলে তোমার দেখা মেয়েটাই রাগিনী।
রোদ-হুমম রাগিনীই ছিলো সে।
রাগিনী-আমি তোর মত হনুমানকে বিয়ে করবো না।
রোদ-করতেই হবে।
রাগিনী-বাবা।
রাগিনীর আব্বু-মা রে আমি জানি রোদ তোকে অনেক খুজছিলো।তুই ওদের বাসায় কোনো সময়েই যাস নাই তাছাড়া রোদও এই বাসায় আসেনি তাই তোকে দেখে নাই।আর আপত্তি করিছ না।আমি তোর আঙ্কেলের সাথে কথা বলবো।
রাগিনী-আমি বললাম তো আমি রাজি না।
রোদ-ঠিক আছে তুমি যখন বিয়ে করবে না আমাকে জোর করবো না।আঙ্কেল-আন্টি আসি আমি।
রাগিনী-হুম যাও এখান থেকে।
(রোদ চলে গেলো)
রাগিনীর আব্বু-এটা কী করলি তুই?
রাগিনী-যা করছি ঠিক করছি।আমাকে ভয় দেখালো কেনো?
রাগিনীর আম্মু-কর যা মন চাই তোর।আদরে আরো বাদর তৈরী করো।
রেগে রাগিনীর আব্বু-আম্মু দুইজনেই চলে গেলো।
রিত্ত-আপু তুই সত্যিকারের ভালোবাসাই বুজলি না।
(রিত্তও চলে গেলো)
রাগিনী-যাক বাবা আমি কী করলাম।সবাই এভাবে বলছে কেন।দূর মেজাজ গরম হয়ে গেছে,চকলেট খাবো।
রুমে গিয়ে ব্যাগ চেক করতেই দেখলো ব্যাগে একটাও চকলেট নাই।
রাগিনী-রিত্ত।
রিত্ত শুনেও না শুনার ভান করে রুমে বসে রইলো।
রাগিনী-ওই আমার চকলেট কে নিলো।আমার চকলেট দিয়ে যা বলছি।(দরজার সামনে এসে)
রিত্ত-দিবো না কি করতে পারবি?
রাগিনী-বাগানে গিয়ে ফোনে কার সাথে কথা বলোছ আব্বুরে বলে দিবো।
রিত্ত-(দরজা খুলে)আপু প্লিজ বলিস না।তুই তো একটা প্রেমও করতে পারিস না।আমারে বাঁশ দিস না প্লিজ।
রাগিনী-চকলেট দে।
রিত্ত-খেয়ে পেলছি।
রাগিনী-আব্বু।
রিত্ত-প্লিজ আপু আমি তোকে কাল চকলেট এনে দিবো.
রাগিনী-সত্যি এনে দিবি?
রিত্ত-হুম দিবো।
রাগিনী-ওকে।
;
পরের দিন ভার্সিটিতে যেতেই শুভ্র,সূর্য আর শুভ এসে দাঁড়ালো রাগিনীর সামনে।
রাগিনী-কি ব্যাপার?
সূর্য-তুমি এটা কী করলে?
রাগিনী-কী করলাম?
শুভ্র-তুমি বুজতেই পারো নি রোদ তোমাকে কতটা ভালোবাসে।জানো তোমার জন্য রোদ সব করতে পারে।কাল এভাবে তাড়িয়ে দিয়েছো ওকে।
রাগিনী-এখন কী আমাকে ওর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে?
শুভ-তোর ক্ষমা চাইতে হবে না।শেষ বারের ভাইয়া তোকে দেখতে চাইছে প্লিজ যাবি?
রাগিনী-এটা আবার কোনো ফিল্মের অভিনয় শুরু করলি নাকি?
রাদ-আপু আমি রোদ ভাইয়ার ছোট ভাই।আমার ভাইয়া কাল বাইক একসিডেন্ট করছে।ডাক্তার বলছে ওর হাতে সময় নেই।প্লিজ আপু শেষ বারের মত।প্লিজ চলো,আর কখনো কিছু চাইবো না তোমার কাছে।
রাগিনী-আচ্ছা চলো।
হাসপাতালে মৃত্যুর প্রহর গুনছে রোদ।ডাক্তাররাও হাল ছেড়ে দিলো।রাগীনি এসে বেডের পাশে বসলো।রোদের এই অবস্থা দেখে রাগিনী নিজেই কান্না করে দিলো।
সারাটা সকাল এক জায়গায় বসেই কান্না করছিলো রাগিনী।শেষ পর্যন্ত ডাক্তার রোদকে মৃত ঘোষনা করে।
চলবে……