প্রতিশোধ পর্ব-৫

0
980

গল্পের নামঃ প্রতিশোধ (বাস্তব এবং রমান্টিক মিশ্রিত)
লেখায়ঃ রুম্মান
পর্বঃ পাঁচ

“একটা সময় আমাদের সম্পর্ক বিচ্ছেদ হয়ে যায় যেটা আমি চাচ্ছিলাম”।

“কিন্তু ঘটনা এখানেই শেষ হতে পারতো। এরপর যা ঘটলো তার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না”। রাফাত এবার আগ্রহ নিয়ে জানতে চাইলো কি হয়েছিল এরপর? রাতুল আবার বলতে শুরু করলো।”ওই মেয়ের সাথে বিচ্ছেদ হবার ছয় মাস পর পারিবারিক ভাবে আমি বিয়ে করি”।

“বিয়ের প্রথম রাতে যখন আমি নতুন বউ এর পাশে বসতে যাব তখনি বউ আমাকে বলে ওঠে, সরে জান আমার কাছ থেকে। আমি যখন বউয়ের কাছে জানতে চাই কেন কি হয়েছে। এমন করছো কেন তুমি”? আজ আমাদের বাসর রাত। কেউ যদি বুঝতে পারে বিয়ের প্রথম রাতে তুমি আমার সাথে এমন ব্যবহার করছো তখন কি হবে বুঝতে পারছো?

মেয়ে এবার বলতে থাকে আমার কিছু বোঝার দরকার নেই। রাতুলঃ আচ্ছা তুমি একটু শান্ত হও। আর কি সমস্যা হয়েছে আমাকে পুরো ব্যাপারটা খুলে বলো। এবার বউ আমার বলতে শুরু করলো। দেখুন এই বিয়েতে আমার কোন মত ছিল না। একপর্যায়ে জোর পূর্বক ভাবেই আপনার সাথে আমার বিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বউঃ আমি একটা ছেলেকে ভালোবাসি। কিন্তু বাবা প্রচন্ড রাগী মানুষ। আর তিনি এইসব ভালোবাসা বাসি পছন্দ করেন না, তাই সাহস করে বলতেও পারিনি। যার জন্য আজ আমার এই অবস্থা। দেখুন আমার বয়ফ্রেন্ড এর সাথে আমার সবকিছু হয়েছে। আমাদের বেশ কয়েকবার শারিরীক সম্পর্কও হয়েছে।

রাতুলঃ বাসররাতে নতুন বউ এর মুখে এমন কথা শোনার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। নিজেকে ওই মুহুর্তে ভিষণ অসহায় মনে হচ্ছিলো। পরক্ষনেই আমার গার্লফ্রেন্ড এর কথা মনে পড়ে গেল। মনে মনে ভাবতে শুরু করলাম, আমিও তো একটা মেয়ের সাথে এমন সম্পর্কে লিপ্ত ছিলাম।

শেষ পর্যন্ত আমি ওই মেয়েকে ধোকা দিয়েছি। তাহলে কি আজ সেই পাপের সাস্তি আমাকে ভোগ করতে হচ্ছে? এরপর ওইদিন আর সারারাত আমি ঘুমাইনি। নিজেকে ভিষণ অপরাধী মনে হচ্ছিলো। সিদ্ধান্ত নিলাম এই মেয়েকে যেভাবেই হোক ডিভোর্স দিয়ে তাকে তার বয়ফ্রেন্ড এর কাছে ফিরিয়ে দেব।

রাতুলঃ বিয়ের একমাস পরেই আমি আমার বউকে ডিভোর্স দিয়ে ফেলি। পরিবারের মানুষকে কোন একভাবে মানিয়ে নেই। “রাফাতকে উদ্দেশ্য করে রাতুল বলে এই হচ্ছে আমার ঘটনা”। রাফাত এবার বললো যেমন কর্ম তেমন ফল। তুই যেমনটা করেছিস তোর সাথেও ঠিক তেমনটা হয়েছে।

অনেক সময় পর রাফাতের ধ্যান ভাংলো। “রাফাত ভাবলো রিমিতো আমাকে সত্যি সত্যি ভালোবাসে”। এরকম একটা নিষ্পাপ মেয়ের সাথে কি এমনটা করা ঠিক হবে? রাফাত নিজে নিজে এবার চিন্তা করছে না আমি কখনই এমনটা করবো না।

“কারন রাফাত ভেবেছিল রিমিকে সে শারিরীক সম্পর্ক করার প্রস্তাব দেব”। “পরক্ষণেই রাফাত ভাবে, আমার মায়ের সাথে যেটা হয়েছে সেটা অন্যায়। কিন্তু আমি একজন শিক্ষিত বিবেকবান ছেলে হয়ে কিভাবে এমন নিকৃষ্ট কাজ করতে পারি”। রাফাত এবার নিজের মধ্যে অপরাধ বোধ অনুভব করতে থাকে। শেষ পর্যন্ত সে নিজের ভুল ভাবনা গুলোর মাঝ থেকে বেরিয়ে আসে।

সে মনে মনে তখন ভাবে রিমির সাথে মিথ্যা ভালোবাসা করলেও আমি ওর সরলতার সুযোগ নিয়ে এমন কাজ করতে পারবো না। তাই রাফাত আর পরবর্তীতে রিমিকে এই কুপ্রস্তাব দেয়নি। এভাবে তাদের সম্পর্ক আরোও বেশ কিছুদিন চলতে থাকে।

রিমি রাফাতের জন্য রেগুলার নতুন নতুন খাবার তৈরী করে নিয়ে গিয়ে রাফাতকে সারপ্রাইজ করতো। রাফাতও সেই খাবার তৃপ্তি সহকারে খেয়ে নিত। এরপর রিমি মাঝে মাঝেই রাফাতকে নিয়ে শপিংমলে যেত। রাফাত যেতে না চাইলেও রিমি জোর করে রাফাতকে নিয়ে যেত। রাফাতও শেষ পর্যন্ত রিমির জোড়াজুড়িতে না গিয়ে পারতো না। তাই বাধ্য হয়ে রিমির সাথে চলে যেত।

যাওয়ার পর রিমি নিজের জন্য কেনাকাটা করতো এবং রাফাতের জন্যও কেনাকাটা করতো। রাফাত মানা করতো কিন্তু রিমি রাফাতের কোন কথা শুনতো না। শপিং করা শেষ হলে তারা প্রায় সময় রেস্টুরেন্টে বসে খাবার খেত। এভাবে চলতে চলতে রাফাতের ভালো লাগা কাজ করে।

পরের পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন,,,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে