প্রতারক part 25
#Roja_islam
.
হীর এক্টু এগিয়ে গিয়ে রাহুল এর পিঠে হাত রাখতেই। রাহুল ঘুরে হীরকে জড়িয়ে ধরে। শান্ত স্বরে বলে উঠে।
— হীর আমি পূর্ণিকে খুশী দেখতে চাই।তোমাকে পাশে চাই থাকবে প্লিজ।
— হীর মুচকি হেসে বললো। চেষ্টা করবো আমি আর চিন্তা করবেন না। পূর্ণি খুব খুশী থাকবে ভাইয়ার সাথে।
— আমি জানি হীর তাই তো ওদের বিয়েটা দ্রুত দিতে চাই। কালি আমি তোমাদের বাড়ী যাবো কথা বলতে আন্টিকে বলে দিও।
— আচ্ছা!!
.
রুমের লাইট অফ হিরা পূর্ণি বারান্দায় ব্যেতের সোফায় বসে আছে। ল্যাম্পপোস্ট এর আলোয় হাল্কা হাল্কা দেয়া যাচ্ছে বারান্দায়।
পূর্ণি হিরার কোলে বসে আছে। হিরার চুলে হাত বুলাচ্ছে আর মিটিমিটি হাসছে পূর্ণি অর্ণিক এর কথা ভেবে। হিরা পূর্ণির হাসি লোখ্য করে শান্ত স্বরে প্রশ্ন করলো।
.
— কি হলো এভাবে হাসছ কেনো??
— এমনি!!
— এক কথা বারবার জিজ্ঞেস করিনা!!
কিছুটা রেগে বললো হিরা।
— এতো রাগ কেনো তোমার বলো তো?? এক্টু কিছু হলেই গম্ভীর দানব হয়ে যাও!!
— আমি এমনি!!
— এমনি কেনো আমায় তো এক্টু আগে ভয় দেখালে কই আমি তো রাগিনি??
— কারণ ঐটা আমি ছিলাম তাই রাগো নি অন্য কেউ হলে ঠিকি রাগ করতে না??
— হ্যাঁ সেটা তো অবশ্যই রাগ না শুধু মেরে তক্তা বানিয়ে দিতাম।
— অরে আমার গুণ্ডি রে চুপ কর!!
— পূর্ণি ভেংচি কেটে বলে উঠে। হুহ!!
— হিরা হাল্কা হেসে বলে উঠে। এখন কথা ঘুরানো শেষ হলে বলো কেনো হাসছিলে!!
— পূর্ণি আবার হিরার চুলে হাত বুলাতে বুলাতে দুষ্টু হেসে বললো। আমি না কিছুক্ষণ আগে একটা ছেলে চুল টেনেছি জোড়ে জোড়ে!! হিহি তাই তোমার চুলে হাত বুলিয়ে ঐ সময় এর কথা মনে পড়ছে তাই হাসি পাচ্ছে!!
— হিরা ভ্রু কুঁচকে বললো। কোন ছেলে??
— আরে ঐ……!
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
এই টুকু বলে থেমে গেলো পূর্ণি!! এখন অর্ণিকের কথা বলতে গেলে সব বলতে হবে হিরা কে। আর হিরা যদি আবার রাগ করে শায়লা চৌধুরীর কথায়। আবার যদি হিরা তাকে ছেড়ে চলে যায়। তাই পূর্ণি চুপ করে ফ্যালফ্যাল করে হিরার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।তা দেখে হিরা মুখ শক্ত করে পূর্ণির দিকে তাকিয়ে কড়া গলায় প্রশ্ন করলো।
.
— আমি কিছু জিজ্ঞেস করেছি পূর্ণি?? কোন ছেলে??
–……….
— এন্সার মী পূর্ণি!! হিরা ধমক এর স্বরে বলে উঠে।
— পূর্ণি ধমক খেয়ে ভয়ে কেঁপে উঠে। আসলে……..!
— আসলে কি?? কেনো রাগ উঠাচ্ছো বলো কি হয়েছে!!
চেঁচিয়ে উঠে হিরা।
— ঠিক আছে বলছি শুনুন।
.
চিৎকার করে পূর্ণি সব বলে দেয়। সব শুনে হিরা বুঝতে পারে। পূর্ণি কেনো বলতে চাচ্ছিলো না তাকে সব। তাই হিরা পূর্ণির দু গালে আলতো করে ধরে তার মুখামুখি করে পূর্ণিকে। পূর্ণি জ্বলজ্বল চোখে বলে উঠে।
.
— আবারো রেগে আমায় ছেড়ে চলে যাবে??
— আমি বলি নি আর এমন হবে না!! তাহলে এভাবে বলছ কেনো??
— ভয় করে!!
— ডু ইউ ট্রাস্ট মী পূর্ণি??
— আই ডু!!
— আমি কখনো তোমায় ছেড়ে যাবোনা ট্রাস্ট মী!!
— আই লাভ ইউ মাই ডাইমোন্ড!!
— আই লাভ ইউ মাই পেইন!!
— পূর্ণি ভ্রু কুচকে বললো। কি বললে??পেইইইন আমি??
— হিরা ভয়ে ঢোগ গিললো। না মানে ঐ আর কি!!
.
পূর্ণি রেগে হিরা কোল থেকে উঠে রুমে গিয়ে জোগ এনে। হিরা কিছু বুঝার আগেই। হিরার উপর জোগ ভর্তি জুস ঢেলে দেয় দিয়ে হন হন করে ড্রইং রুমে চলে যায়।ততক্ষণে হীর, রাহুল ও নিচে চলে এসেছেছিলো। হিরা কিছুক্ষণ তব্দা খেয়ে বসে থেকে। উঠে ড্রইং রুমে যায়। গিয়ে দেখে রাহুল, হীর, পূর্ণি কথা বলছে হিরা রাহুলের ভয় সব ভুলে পূর্ণির সামনে গিয়ে বলে উঠে।
.
— এর জন্যই তোমায় পেইন ডাকি স্টুপিড!!
— পূর্ণিও চিৎকার করে বলে। ভালো হইছে হুহ!!
.
কিছুক্ষণ সবাই একে অপরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করার পড়।
জুসে কাক ভেজা হিরাকে দেখে হীর, রাহুল, পূর্ণি হো হো করে হেসে দেয়। ঐ রাতে ওভাবেই হীরকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ে হিরা রাগের চটে।হিরা কথা বলেনি আর পূর্ণির সাথে। রাহুল শুধু হীরের দিকে তাকিয়ে ছিলো মেয়েটা কেঁদে চোখ ফুলিয়ে ফেলেছে। ওরা চলে গেলে রাহুল পূর্ণিকে পেইন বলে ক্ষ্যাপানো শুরু করে।আর পূর্ণি রেগেমেগে শেষ শুরু হয় ভাই বোনের ঝগড়া।
.
.
.
সকালে ১০ টার দিকে নিতু চোখ মেলে তাকায়। দেখে শিহাব ওর দিকে তাকিয়ে আছে। নিতু চোখ নামিয়ে নেয় কারণ বুঝাই যাচ্ছে শিহাব রেগে আছে। শিহাব থমথমে গলায় প্রশ্ন করে নিতুর ফোন নিতুকে দেখিয়ে।
.
— এসব কি????
— নিতু মাথা তুলে নিজের ফোন্টা শিহাব এর হাতে দেখে ভয়ে কেঁদে দিলো। আসলে…….!
— থাক আর শুনতে চাই না!!
.
শিহাব আর কিছু না বলে। নিতুকে উঠিয়ে ফ্রেস করিয়ে ব্রেকফাস্ট খাইয়ে ঔষধ খাইয়ে দেয়। নিতুর মা শিহাবের এই পরিবর্তন এ খুশী হলো এক্টু শান্তিও পেলো। নিতু ও অবাক হয় শিহাবের আচরণ এ। নিতু ভাবতে পারেনি শিহাব তার সেবা করছে। পড়েই ভাবে হয় তো দয়া করছে শিহাব। ১১ টার দিকে শিহাব নিতুর কাছে বলে বাইরে গেলো। নিজের ফ্রেন্ড দের নিয়ে নিতুর ঐ ব্ল্যাকমেইল করা বয় ফ্রেন্ড কে খুঁজতে। হন্য হয়ে খুঁজার পড় ও কোথাও পেলো না। নিতুর কাছে ঐছেলে যা বলেছে নিজের ব্যাপারে সব মিথ্যে বলেছিলো তাই শিহাব খুঁজে পায় নি। কিন্তু নিতুর ফোনে ঐছেলেটার বাজে মেসেজ এসেই যাচ্ছে। শিহাব রেগে ফোন বন্ধ করে নিজের বাসায় গেলো। মা বাবার সাথে কথা বলতে হবে ওর ওরাও জেনো নিতুকে ক্ষমা করে দেয়। আর এটাও বলবে শিহাব নিতুকে নিয়েই বাকি জীবন কাটাতে চায় সে।
.
শিহাব জানে তার বাবা মা মানবে না হয় তো। তাও চেষ্টা করতে হবে নিজের সব টা দিয়ে নিতুকে ভালো বানাতে হবে। তার ফ্যামিলির যোগ্য করতে হবে এসব হাজার চিন্তা ভাবনার সাথে বাড়ী যায় শিহাব। শিহাব বাড়ী ঢুকে ড্রইং রুমের সোফায় বসতেই। শিহাবের মা ছেলেকে ক্লান্ত হয়ে বসতে দেখে দৌড়ে পানি নিয়ে আসে।
.
— কিরে তুই কই ছিলি?? বাসায় কেনো ফিরিসনি রাতে?? আবার কই যাস তুই তোর বাবা খুজছিলো তোকে। আমায় আর কত কথা শোনাবি বল তো??
— শিহাব হা করে মার দিকে তাকিয়ে থেকে বললো। কত কথা বলো তুমি?? বসো এখানে। বলে নিজেই মার হাত টেনে নিজের পাশে সোফায় বসায় মাকে।
— শিহাবের মা অবাক হয়ে বলে উঠে। কি হইছে তোর?? মুখ শুকনো কেনো?? রাতে খাসনি?? কই ছিলি!!
— না খাই নি মা আসলে!!
— কি?? বল!!
.
শিহাব আর কথা না বাড়িয়ে নিতুর কথা সব বলে সাথে হীরের কথাও বলে শিহাব। শিহাবের মা সব শুনে আরো রেগে গেলো।
.
— ঐ মেয়ের জন্য সব হলো তাও তোরা ওকে ক্ষমা করে দিচ্ছিস। ওকে তো পুলিশ এ দেওয়া দরকার মিথ্যা বাদী মেয়ে।
— মা প্লিজ ভুল সবারি হয়। আমারো তো হইছে। মা প্লিজ তুমি আমার কথা আর একটা বার রাখো।
— আমি আর কিছু করতে পারবো না শিহাব তোর বাবা মানবে না কিছুতেই না। ঐমেয়ের নোংরামি নিজ চোখে দেখার পরেও।
— প্লিজ…….
— শিহাব আর না আমি আর তোকে কোনো হেল্প করতে পারবো না। স্বামীর অবাধ্য আমি কখনো হই নি। কিন্তু তোর জন্য হইছি। কিন্তু এতো কিছুর পড় আর ঐ মেয়েকে মানা যায় না!!
.
শিহাব আর কিছু বলতে পারলো না। সে ভাবছে যখন কঠিন হওয়ার দরকার ছিলো তখন তার মা বাবা হয় নি। কিন্তু এখন সে সত্যি ভালো হতে চায় আর একটা মেয়েকে ভালো করতে চায়। এখন কেউ তার পাশে থাকবে না এটাই বাস্তবতা। আর তার মা বাবারিবা দোষ কি তারাও তাদের যায়গায় সঠিক। এমন মেয়েকে কেই বা ছেলের বৌ মানবে। যার বয়ফ্রেন্ডের সাথে নোংরামি ছবি শ্বশুর বাড়ীর মানুষ পায়। তাই আর মার সাথে কথা বাড়ালোনা শিহাব উঠে বাড়ীর বাইরে চলে গেলো সে মার হাতের পানি টুকু খেয়ে।শিহাবের মা আজ শক্ত ছেলের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকলেও পিছু ডাকেনি।
.
শিহাব আস্তে আস্তে রাস্তার পাশ ঘেষে হাটছে শিহাব বাইক টাও রেখে এসেছে বাড়ীতে। সে চিন্তা করছে এটাই হয় তো সময় বাবা মা কে কিছু করে দেখানোর। সে নিতুকে নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েই বাড়ী ফিরবে নিতুকে নিয়ে। জেনো বাবা তাদের মেনে নেয়। শিহাব জানে তার বাবা নিতুর থেকে বেশী তার উপর রাগ এক মাত্র ছেলে হওয়ায় শিহাবের সব আবদার পূরন করেছে তার বাবা কিন্তু শিহাব বাবার জন্য এখনোব্দি কিছুই করতে পারেনি। যাতে করে তার বাবা ছেলের কাজে খুশী হবে। কিন্তু এবার শিহাব তেমন কিছু করতে চায়।যাতে করে বাবার সামনে দাঁড়াতে পারে অন্তত। এসব ভাবতে ভাবতে বাসে করে নিতুদের বাড়ী আসে শিহাব।
.
.
.
এদিকে সকাল সকাল রাহুল নিহাদ আর পূর্ণিকে নিয়েই। হিরা আর পূর্ণির বিয়ের ডেট পাকা করতে এসেছে হীর দের ফ্ল্যাটে। যেহেতু হীরকে রাহুল আগেই বলেছিলো আজ আসবে রাহুল কথা পাকা করতে। তাই মেহমান দের জন্য কোনো কমতি রাখেনি হীরের মা সব রকম আয়জন করেছেন তিনি।সারাদিন মেহমান দাড়িতেই চলে যায় সবার।দুপুরবেলা খাওয়াদাওয়ার পড়। হীরের মা রাহুল, হিরা, নিহাদ কথা বলতে বসেছে বিয়ের ব্যাপারে। হীর, পূর্ণি, আর রাইসা হীরের রুমে আড্ডা দিচ্ছে। আড্ডার এক পর্যায়ে পূর্ণি জিজ্ঞের করে হীরকে।
.
— হীর তুই ভাইকে কি উত্তর দিয়েছিস বল তো??
.
হীর তো এমন প্রশ্নে থতমত খেয়ে বসে আছে।কিন্তু রাইসা ভ্রু কুঁচকে রেখে বুঝার জন্য কাহিনী কি?? হীর জোর করে হেসে বললো।
.
— কিসের উত্তর এর কথা বলছিস তুই??
— আরে আমি জানি তো ভাই লাভস ইউ! তো নাটক করিস না বল কি উত্তর দিয়েছিস!!
.
পূর্ণি কথাটা বলে উত্তেজিত হয়ে খপ করে হীরের হাতটা ধরে বলে উঠে।
— এই হীর রাজী হয়ে যা না ভাই কে বিয়ে করতে প্লিজ!! তাহলে ৪ জন এর বিয়ে একবারে হয়ে যাবে কত মজা না।
.
হীর ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে পূর্ণির দিকে। হীরকে চুপ থাকতে দেখে রাইসা পূর্ণিকে জিজ্ঞেস করলো।
.
— এই ভাই টা কেরে পূর্ণি??
— পূর্ণি ধুম করে বলে উঠে। আর রে রাহুল ভাই…..!
.
পূর্ণি সম্পর্ণ বলার আগেই। রাইসা ধাম করে কান্না জুড়ে বসে। পূর্ণি হীর এর হাত ছেড়ে দ্রুত রাইসাকে ধরে বলে উঠে।
.
— আরে রাইসা তোর কি হইছে কান্না করছিস কেনো বল।
— রাইসা কাঁদতে কাঁদতেই বললো। আমার রাহুল্লল্লল্লল্ল।আমার রাহুল ছাড়া কেমনে বাঁচবো আমি হীর গুণ্ডা গুণ্ডা বলে ফাঁসিয়ে নিলি আমার রাহুলকে। বলে ভ্যা ভ্যা করে কান্না জুড়ে দেওয়ার বান করছে রাইসা।
.
এতোক্ষণ ফ্যালফ্যাল করে রাইসার নাটক দেখা হীর এবার খিলখিল করে হেসে উঠে। আর পূর্ণি বোকার মতো রাইসা আর হীরের দিকে তাকিয়ে আছে। পূর্ণি ভাবছে দুই টাই কি পাগল হয়ে গেলো??
.
.
এদিকে ড্রইং রুমে হিরা পূর্ণির বিয়ের কথার মধ্যে হিরা রাহুল, আর হীরের কথাও তার মাকে বলেছে। হঠাৎ রাহুল আর হীরের কথা হিরা এভাবে বলে ফেলবে তা রাহুল ভাবেনি। তার বিষণ অস্বস্তি হচ্ছে। আজ রাহুলের অবস্থা দেখে হিরা নিহাদ মিটমিট হাসছে। রাহুলের মন চাইছে ছুটে এখান থেকে চলে যেতে। আর হীরের মা এক মনে কি জেনো ভেবে যাচ্ছে।
.
.
[সরি গাইছ লেট করে ফেললাম দিতে। তো বলো এন্ডিং কেমন চাও সবাই?♥]
Roja Islam