#প্রণয়_প্রহেলিকা (কপি করা নিষিদ্ধ)
#অন্তিম_পর্ব
এতো আনন্দ মূহুর্তেই মিলিয়ে গেলো যখন স্মৃতি ছুটে এলো, উৎকুন্ঠিত হয়ে বললো,
“ধারা, আমাদের হাসপাতালে যেতে হবে”
স্মৃতির কথাটা শুনতেই ভেতরটা মোচর দিয়ে উঠলো ধারার। এক অজানা ভয়ে বুকে কম্পন সৃষ্টি হয়েছে। কথাগুলো দলা পাকাচ্ছে। তবুও খুব কষ্টে বললো,
“কেনো? হাসপাতালে কেনো?”
“অনলদের একটা ছোট এক্সিডেন্ট হয়ে গেছে। প্লাবণ মাত্র ফোন দিয়ে জানালো। আমি ওখানে যাচ্ছি। তুমি যাবে?”
কথাটা মস্তিষ্কে প্রবেশ করতে সময় নিলো ধারার। সে কিছুসময় ফ্যালফ্যালিয়ে চেয়ে রইলো। বুকের ভেতরটা মূহুর্তেই দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে তার। এমনটা তো হবার ছিলো না। আজকের দিনটি তার জীবনের সবচেয়ে সুখময় দিন ছিলো। প্রকৃতি কি তবে তার জীবনে সুখটি লিখেন নি? একটি বই এ পড়েছিলো, “পৃথিবীতে কিছু কিছু মানুষ সম্ভবত কষ্ট পাবার জন্যই জন্মায়। টাকা পয়সার কষ্ট নয়, মানসিক কষ্ট”—- ধারার সাথেও কি তাই হবে? তার প্রণয় প্রহেলিকা কি প্রহেলিকা হয়েই রইবে? ভাবতেই অবাধ্য ঝড় হানা দিলো হৃদয়ের অন্তস্থলে, তার চোখে জমলো কিছু বিষন্নতা। স্মৃতি ধারাকে হালকা করে ধা’ক্কা দিলো। নরম কন্ঠে বললো,
“তুমি কি যাবে?”
ধারা কিছু না বলে মাথা উপর নিচ দোলালো শুধু। কথাগুলো যেনো দলা পাকিয়ে গিয়েছে তার। অপরদিকে রাজ্জাক ধপ করে বসে পড়লো, সুভাসিনীর অশ্রু বাধ মানছে না। স্মৃতি কিছু বলতেও পারছে না, কারণ প্লাবণ তাকে শুধু হাসপাতালের নামটুকুই বলেছে আর কিছুই বলে নি। জামাল সাহেবকে দেখা গেলো সবচেয়ে স্থির। তিনি রাশভারী কন্ঠে বললেন,
“ইলিয়াস তুমি ধারার সাথে যাও। রাজ্জাক এখানে থাকুক”
ইলিয়াস মাথা নাড়ালো। ধারা, স্মৃতি, বন্ধুমহল এবং ইলিয়াস রওনা দিলো হাসপাতালের পথে। পুরোটা রাস্তা থমথমে হয়ে ছিলো ধারা। শুধু শান্ত নজরে তাকিয়ে ছিলো পিচঢালা পথের জন্য। তার চোখের সামনে ভাসছে গতরাতের স্বর্ণালী মূহুর্তগুলো। বিয়ের জন্য কনে বরকে আলাদা ঘরে রাখার নিয়ম জারি করেছিলেন সুভাসিনী। যখন উৎসবে মুখর ঘরটি ঘুমন্ত তখন চুপিসারে মই এর সাহায্যে এসেছিলো অনল। কোনো মতে বারান্দায় উঠে ধীর কন্ঠে ডাকলো ধারাকে। অনলের কন্ঠ শুনেই চমকে উঠলো ধারা। আগে পাশে চোখ গেলো। জমজেরা ঘুমে কাঁদা। তারা ঘুম মানে একদিকে শান্তি। নয়তো সারাঘরে মাইক দিয়ে জানিয়ে দিতো। ধারা চুপিসারে পা টিপে এগিয়ে গেলো বারান্দায়। অনল রেলিং পেরিয়ে প্রবেশ করলো, ধারাকে দেখতেই মুখে ফুটে উঠলো মুগ্ধ হাসি। ধারা অবাক কন্ঠে বললো,
“এতো রাতে আসলে যে?”
“কি করবো, তোর শ্বাশুড়ী যে প্যারাটা দিচ্ছে। বর বউ কিনা আলাদা থাকবে মানা যায়?”
অনলের অভিযোগে খিলখিল করে হেসে উঠলো ধারা। তারপর বললো,
“বিয়ে করার জিদ তো তোমার ছিলো? ভুগো”
“বি’চ্ছুগুলো ঘুম?”
“হ্যা, তুমি মই পেলে কিভাবে?”
“আমার টিম আছে না?”
ধারা উঁকি দিতেই দেখলো প্লাবণ এবং রবিন দাঁড়িয়ে আছে। ধারা এবার শব্দ করেই হেসে উঠলো। বন্ধু হবার পুরো ফয়দা তুলছে অনল। নয়তো রাত তিনটে তে এভাবে পাহারা দিতে দাঁড় করায়। অনল ধারার দিকে অপলক চাহনীতে তাকিয়ে আছে। পূর্ণচন্দ্রিমায় নিজের চন্দ্রিমাকে দেখতে এক অসামান্য শান্তি অনুভূত হচ্ছে। অনল ধীর কন্ঠে বললো,
“আমার ঘুম হচ্ছে না ধারা, কি করা উচিত?”
“কেনো ঘুম হচ্ছে না কেনো?”
“বুকটা ফাঁকা ফাঁকা লাগে, তুই ছাড়া যেনো সব শুন্য”
“আর একটা রাত, তারপর আর শুন্য লাগবে না”
“আজ পৃথিবীর জন্য জ্যোৎস্না রাত, আমার জ্যোৎস্নাবিলাসটা নাহয় তুলে রাখলাম আগামীকালের জন্য। আমার প্রণয়িনীর সাথেই না হয় জ্যোৎস্নাটা দেখবো”
বলেই ধারার কপালে উষ্ণছোঁয়া দেয় অনল। ধারা অপলক নয়নে তাকিয়ে থাকে লোকটির দিতে। অসম্ভব সুন্দর লাগছে হলদে পাঞ্জাবীতে প্রিন্স উইলিয়াম কে। জ্যোৎস্নায় যেনো তার সৌন্দর্য্য একটু বেশি মনোমুগ্ধকর লাগছে। ধারা বেহায়ার মতো কিছু সময় তাকিয়ে রইলো। তার চোখে চোখ রেখে মৃদু কন্ঠে আওড়ালো,
“তুমি প্রণয়ে বাধিবে
নাকি প্রহেলিকায় রাখবে?
আমি প্রণয়িনী তোমায় চাই
প্রহেলিকার দ্বার খোল
চলো হৃদয়ে হারাই” (জান্নাতুল মিতু)
গাড়ির ব্রেক কষতেই কল্পনার মাঝে ভাঙ্গন ধরে। স্মৃতি ধীর কন্ঠে বলে,
“আমরা পৌছে গেছি”
ধারা তড়িঘড়ি করে দরজা খুলে। এরপর শাড়িটা তুলে ছুটে ভেতরে। ভেতরে যেতেই করিডোরে দেখা যায় প্লাবণ এবং রবিনকে। তাদের দেখতেই ধারা ব্যাগ্র কন্ঠে শুধায়,
“অনল ভাই কোথায়?”
প্লাবণ এবং রবিন মুখ চাওয়াচাওয়ি করে। ইকরাম তখন ঔষধ হাতে প্রবেশ করে। ধারার চোখ টলমলে হয়ে রয়েছে। প্লাবণ ধীর কন্ঠে বলে,
“সরি ধারা, তোমার এই সুন্দর দিনটা আমাদের জন্য নষ্ট হয়ে গিয়েছে”
“হয়েছেটা কি বলবেন তো, সে কোথায়?”
“আসো আমাদের সাথে”
বলেই একটা রুমে নিয়ে যায় ধারাকে। সারাটা পথ তার হৃদস্পন্দন বাড়াই ছিলো। রুমে প্রবেশ করতেই ধারা হতবাক হয়ে গেলো। দীপ্ত, সেলিম সাহেব এবং তিশাও সেখানে উপস্থিত। আর শুভ্র বিছানায় অর্ধশায়িত অনল। অনলের বা পা টা বালিশের উপর রাখা। পায়ে্র পাতায় প্লাস্টার লাগানো। ধারাকে দেখতেই অনল অবাক কন্ঠে শুধালো,
“তুই এখানে কেনো?”
“প্লাবন ভাইয়া আনিয়েছেন”
অনল প্লাবণের দিকে চোখ পাঁকালো। প্লাবণ বললো,
“উপায় কি? তুই যে জিদ করেছিলি? সে কিছুতেই হাসপাতালে থাকবে না। এদিকে পায়ে প্লাস্টার লাগা”
“আমার বিয়ে কি এই হাসপাতালে থেকে হবে”
প্লাবণ এবং অনলের মাঝে বাধলো তর্কযুদ্ধ। ধারা কিছুই বুঝতে পারছে না। সে একটা সময় বিরক্ত হয়ে বললো,
“হয়েছেটা কি একটু বলবে?”
“তোমার বর, অতিউৎসাহে পা ভেঙ্গে বসে আছে”
প্লাবণ পুরো ঘটনাটি বিশ্লেষণ করলো। সিড়ি থেকে নামার সময় বেখেয়ালীতে অনল খেয়াল করে নি সেখানে পানি ছিলো। সকালবেলায় বিনা নোটিশে বৃষ্টি হবার জন্য সিড়িতে হালকা পানি জমেছিলো। ফলে পানিতে পিছলা খেয়ে এক সিড়ি মিস করে ফেলে। টাল সামলাতে না পেরে পড়ে যায় সে। রবিন এবং ইকরাম তাড়াতাড়ি তাকে তুলে ধরে। কিন্তু বিপাক বাধে যখন দাঁড়াতে গেলে দেখে পা আর ফেলতে পারছে না। ফলে তারা কোনো মতে ধরে ধরে তাকে গাড়িতে তোলে। অনলকে গাড়িতে তোলার সময় দীপ্তদের সাথে দেখা হয়। ঘটনাক্রমে তারা তিনজনও যুক্ত হয়। সেন্টারের বদলে প্লাবণ গাড়ি নিয়ে আসে হাসপাতালে। ডাক্তার এক্স রে করে জানান তার পায়ের পাতা ফ্রাকচার হয়েছে। ফলে সেখান প্লাস্টার করে দিয়েছেন। কিন্তু অনল তো অনল; সে মোটেই হাসপাতালে থাকবে না। সে এখন তার বিয়েতেই যাবে। তাই বাধ্য হয়ে প্লাবণ স্মৃতিকে ফোন করে। শুধু বলে,
“ধারাকে নিয়ে আসো”
সেলিম সাহেব ও বোঝাবার চেষ্টা করেছে অনলকে, কিন্তু ফলাফল শুণ্য। দীপ্তও এটাও বলে,
“ভাঙ্গা পায়ে বিয়ে করবে? ছবিতে কেমন আসবে বলো? এর চেয়ে মাস খানেক পর বিয়েটা করো”
“আমি কি ছবি তোলার জন্য বিয়ে করছি? আমি আমার বউ কে বিয়ে করবো। আর আজ ই করবো”
অনলের যুক্তির সামনে যেনো সকলেই ব্যার্থ। ধারা হাসবে না কাঁদবে বুঝে পেলো না। প্রিন্স উইলিয়ামকে এই প্রথম এতো জেদীরুপে দেখলো সে। নির্বিকার চিত্তে, ভাবগুরুগম্ভীর মানুষটি আজ বাচ্চার মতো জেদ করছে, ভেবেই ভালো লাগছে তার। এই জিদটিও তো তার জন্য। ধারা গম্ভীর কন্ঠে বললো,
“ডাক্তার কি রিলিজ দিয়েছে?”
“হ্যা, ডাক্তার বলেছে বাড়িতে নিয়ে যেতে পারবো, তোমার বর ই বলছে সে কমিউনিটি সেন্টারে যাবে”
ধারা একটু থেমে বললো,
“আপনার একটু বাহিরে যান, আমি কথা বলে দেখছি”
ধারার কথায় কেউ বাধা দিলো না। সবাই বাহিরে চলে গেলো। ইলিয়াস জানিয়ে দিলো,
“আরে চিন্তা কইরো না। কিছু হয় নি, সিড়ি দিয়ে পড়ে পা ভাঙ্গছে। পায়ে পট্টি লাগছে। বেড রেস্ট দিছে”
সবাই চলে গেলে ধারা তার সামনে দাঁড়ায়। মাঝায় হাত দিয়ে বলে,
“জেদ করছো কেনো?”
“এখন তুই লেকচার দিবি না”
“আজব, তুমি এই অবস্থায় বিয়ে করবে?”
অনল একটু চুপ করে রইলো। তারপর কন্ঠ নরম করে বললো,
“আজকের দিনটার জন্য এতোদিন প্রতীক্ষা করেছি, প্লিজ ধারা বাধা দিস না। আর আমাদের জীবনে তো কখনোই কিছু স্বাভাবিক ছিলো না। বিয়েটাও না হয় একটু ভিন্নভাবেই হোক”
অনলের অদ্ভুত যুক্তির কাছে হার মানলো ধারা। অবশেষে ভাঙ্গা পায়ে বিয়ে করার সিদ্ধান্তটি গ্রহণ হলো। ইলিয়াস তো বলেই উঠলো,
“এই না হলো, আমার ভাতিজা। একটু আকটু পা-টা ভাঙ্গলে কিছুই হয় না। বিয়েটাই আসল”
অনল বিয়েতে পৌছালো ভাঙ্গা পা নিয়ে হুইল চেয়ারে। বিয়েটাও হলো খুব সুন্দর ভাবে। এদিকে এশা আশাকে দেখালো উদাশ। অনল ভাইয়ের জুতো চু’রি করেও লাভ হলো না। কারণ অনল দাঁত বের করে বললো,
“ওই জুতো বেঁচে ঝালমুড়ি খাস”
ফলে জমজেরা অন্য বুদ্ধি বের করলো। কোন ফাঁকে তারা দীপ্ত, প্লাবণ, রবিন এবং ইকরামের জুতো চুরি করে নিলো। বেশ আত্মবিশ্বাসের সাথে বললো,
“অনল ভাই, তুমি না হুইল চেয়ারে চলে যাবে। তোমার বন্ধুরা কি করবে? তারা যদি খালি পায়ে যেতে চায় আমাদের আপত্তি নেই”
দীপ্ত পড়লো মহাবিপাকে। এই জুতোজোড়া বাদে নগ্ন পায়ে যেতে একেবারেই রাজী নয় সে। ফলে অনলকে অসহায় কন্ঠে বললো,
“অনল, ওরা যা চায় দিয়ে দাও। নয়তো এই বোনেরা আমাকে শান্তি দিবে না। ওদের ভরসা নেই”
অনল অতিসন্তপর্ণে তপ্ত নিঃশ্বাস গোপন করলো। এই ধানী লংকারা তার পকেট খসাবেই। চারজনের জুতো আটহাজারের মধ্যে ছাড়ালো। এর মাঝে মাহি দিগন্তকে আলাদা করে টেনে নিলো। দিগন্ত অবাক কন্ঠে বললো,
“কিছু বলবি?”
“আমার বাসায় সম্মন্ধ দেখছে। আমি তিন বছর ঠেকিয়ে রাখতে পারবো। এরপর কি করবি তুই বুঝে নে”
কথাটা বুঝতে না পেরে সে অবাক কন্ঠে বললো,
“মানে কি?”
“বোঝা লাগবে না তোমার। তুমি মুড়ি খাও। রা’ম’ছা’গ’ল কোথাকার”
বলেই গজগজ করতে করতে চলে গেলো মাহি। দিগন্ত বললো,
“মাহি আমি সত্যি বুঝি নি, যাস নে”
আজ জামাল সাহেবকে দেখালো সব থেকে আনন্দিত। অবশেষে তিনি দায়িত্বমুক্ত। সেলিম সাহেব তার কাছে এলেন। ধীর কন্ঠে বললেন,
“কাকা, আমি রাতে অস্ট্রেলিয়ায় চলে যাচ্ছি। মেয়েটাকে দেখবেন”
জামাল সাহেব উত্তর দিলেন না। শুধু মৃদু হাসলেন। অভিমানের পাহাড়টা ভাঙ্গছে, একটু একটু করে। মানুষটাই তো নেই। এই মেকি অভিমান করে কি হবে!
নিগুঢ় রাত, পুর্ণ্যচন্দ্রিমা নয় আজ তবুও উজ্জ্বল রুপালী আলোতে ঝলমল করছে আধারের শহর। মৃদু বাতাসে উড়ছে ধারার খোলা চুল। অনলের টবের শিউলি ফুলের মৃদু গন্ধ মম করছে বারান্দা। অনলের ঘাড়ে মাথা রেখে আছে ধারা, তার স্থির চাহনী নীলাম্বরের দিকে। অনল আলতো হাতে তার চুলে বিলি কেটে দিচ্ছে। হঠাৎ কি মনে করে বললো,
“খুব ভয় পেয়েছিলি তাই না? তোর চোখের গলা কাজল ই সেটার প্রমাণ ছিলো”
“তোমাকে হারাবার ভয়টা এতোটা প্রখর হবে জানা ছিলো না, পুরোটা রাস্তা ভেতরে ঝড় চলছিলো। তোমাকে ছাড়া যে সবকিছু শুন্য লাগে, হাহাকার করে উঠে আমার পৃথিবীটা”
অনল হাসলো, মেয়েটির প্রণয় উপভোগ করতে শান্তি লাগছে। অবশেষে তাদের প্রণয় প্রহেলিকা পরিণয়ের রুপ নিয়েছে। মাঝে মাঝে ভাবতেও প্রশান্তি লাগে, হাজার ঝড়ের মাঝেও সে একা নয়। এই রমনীটি থাকবে সারাটাজীবন, প্রতি মূহুর্ত, প্রতিক্ষণ। অনল নরম গলায় বললো,
“আমার তপ্ত মরুভূমির এক পশলা বৃষ্টি তুমি, আমার ঠিকানাই তো তুমি। তাই তো আজ জিদ ধরেছিলাম। তুমিহীনা আমার প্রণয় প্রহেলিকা যে অসম্পূর্ণ”
“ভালোবাসো?”
“অব্যাক্তভাবে ভালোবাসি”
ধারা আলতো করে হাসলো, পাছে গড়িয়ে পড়লো একবিন্দু অশ্রু। এই অশ্রু বিষাদের নয়, এই অশ্রু পূর্নতার। তাদের প্রণয়ের পূর্ণতার। ধারা ধরা গলায় বললো,
“একটা গান শূনাবে? আমার যে বহুদিনের স্বপ্ন”
অনল অমত করলো না, বা হাতে আগলে ধরলো ধারার কাঁধ। সুর তুললো জ্যোৎস্না্য লেপ্টে থাকা রজনীর মায়ায়,
“একটুকু ছোঁয়া লাগে, একটুকু কথা শুনি
তাই দিয়ে মনে মনে রচি মম ফাল্গুনী
একটুকু ছোঁয়া লাগে, একটুকু কথা শুনি
কিছু পলাশের নেশা, কিছু বা চাঁপায় মেশা
তাই দিয়ে সুরে সুরে রঙে রসে জাল বুনি
তাই দিয়ে সুরে সুরে রঙে রসে জাল বুনি
রচি মম ফাল্গুনী”
ধারা চোখ বুঝে রয়েছে। একরাশ মুগ্ধতা নিয়ে শুনছে অনলের গান। গানটির মাঝে যেনো হাজারো আবদার, হাজারো অনুভূতি, হাজারো ভালোবাসা। মুগ্ধতার অপর নাম ই তো প্রিন্স উইলিয়াম। তাই তো বারে বারে বলতে ইচ্ছে করে, “আমি তোমার, শুধু তোমার প্রণয়িনী”
।।সমাপ্ত।।
(অবশেষে ইতি টানলাম, বহু প্রতীক্ষিত গল্পের। এই গল্পটি চলাকালীন বহু ভালোবাসা পেয়েছি। আশাকরি অন্তিম পর্বেও তেমন ভালোবাসা পাবো। গল্পটি কেমন লাগলো জানাতে ভুলবেন না। ইনশাআল্লাহ ঈদে নতুন গল্প নিয়ে ফিরে আসবো। ততদিন ভালোবাসা রইলো)
মুশফিকা রহমান মৈথি