প্রণয় প্রহেলিকা পর্ব-১৯

0
1122

#প্রণয়_প্রহেলিকা (কপি করা নিষিদ্ধ)
#১৯তম_পর্ব

এর মাঝেই কলিংবেলের শব্দ শোনা গেলো। এশা তখনই ছুটে গেলো সদর দরজায়। দরজা খুলতেই অবাক হলো সে। একজন মধ্যবয়স্ক যুবক দাঁড়িয়ে আছে। লম্বা অনলের কাছাকাছি, শুভ্র তার মুখশ্রী, ঠোঁটে অমায়িক হাসি। পরণে কালো পোলো শার্ট এবং গাঢ় নীল ডেনিম জিন্স। হাতে একখানা দামী টাইটানের ঘড়ি। এশা অবাক কন্ঠে অপরিচিত যুবককে জিজ্ঞেস করলো,
“কাকে চাই?”
“এটা কি জামাল চৌধুরীর বাড়ি”
“জ্বী! আপনি কে?”
“আমার নাম দীপ্ত, আমাকে সেলিম আহমেদ পাঠয়েছেন”

সেলিম আহমেদের নাম শুনতেই পিলে চমকে উঠলো এশার। সাথেই সাথেই শুভ্র মুখশ্রীতে জমলো কৃষ্ণ মেঘমেদুর। ভ্রু জোড়া কুঞ্চিত হয়ে উঠলো। মুখশ্রীতে সুপ্ত ক্ষোভ জমলো। হিনহিনে স্বরে বললো,
“আমরা সেলিম টেলিম কে চিনি না”

বলেই দরজা আটকাতে যাবে অমনি ছেলেটা হাত গলিয়ে দিলো দরজার ফাঁকে। পাঁচ ইঞ্চি ফাঁকের মাঝে মুখ ঠেকিয়ে বললো,
“দরজা দিও না, বড্ড বিপদে পড়ে এসেছি”

এর মাঝেই সুভাসিনীর কন্ঠ শোনা গেলো। সে রান্নাঘরে রুবির সাথে কাজ করছিলো। সদর দরজার কলিংবেল তার কর্ণপাত হয়েছে। সে খুলতে যেতো কিন্তু এশার ছুটে যাওয়াতে সে তার কাজ থামালো না। তাই গলা উঁচিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
“কে এসেছে, এশা? রাবেয়া আসলে ওকে বল কাপড় ভিজিয়ে রেখেছি। যেন ধুয়ে দেয়। আজ আবহাওয়া ভালো না, তাড়াতাড়ি দিলে যদি একটু শুকায়”
“রাবেয়া খালা না, এক পথিক আসছে। বিপদে পড়া পথিক”

*****

বসার ঘরের সোফার উপর বসে আছে দীপ্ত। হাতদুটো এক করে জড়োসড়ো হয়ে বসে রয়েছে সে। মাথার উপর ঘুর্ণনরত ফ্যানের গতি সর্বোচ্চ তবুও সে ঘামছে। কপাল থেকে ঘামের রেখা গড়াচ্ছে, তা একটা সাদা টিস্যু দিয়ে বারবার সেটা মুছে নিচ্ছে সে। অবশ্য সাতজন মানুষের ক্রোধানলের সম্মুখীন হলে যে কারোর একই অবস্থা হবে। জামাল সাহেব একদম দীপ্তের মুখোমুখি বসে আছেন৷ রাজ্জাক এবং ইলিয়াস তার বা পাশে সোফায়। রুবি এবং সুভাসিনী তাদের পিছনে দাঁড়িয়ে আছে। তার বসার ঘরের পিলারের কাছে হাত জোড়া পকেটে পুড়ে দাঁড়িয়ে আছে অনল। ফুপার মাসের শেষের দিকে আসার কথা ছিলো। কিন্তু তিনি আসেন নি। মাস শেষ হয়ে আরোও পনেরো দিন পেড়িয়ে গেলো তিনি এখনো আসে নি। সে ভেবেছিলো তার মনোভাবের পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু উলটো এক উজবুককে পাঠিয়েছেন। তবে যেই বিষয়টা অনলকে ভাবাচ্ছে তা হলো এই দীপ্ত এর আসার উদ্দেশ্য! অনলের পাশেই দাঁড়িয়ে আছে এশা। ধারা এবং আশা এখনো ঘরে। এশার দৃষ্টিও তীক্ষ্ণ, সে খুটে খুটে দেখছে আগুন্তক কে। জামাল সাহেবের মুখে বিরক্তি৷ স্পষ্ট। তিনি বাজখাঁই কন্ঠে বললেন,
“দেখো মিয়া, আমার ঘর কোনো ধর্মশালা না। তুমি যেইখান থেকে আইছিলা, ওইখানে চইলে যাও। আমি তোমারে এই ঘরে রাখুম না ব্যাস”
“আসলে আমি বড্ড বিপদে পড়েছি। এয়ারপোর্ট থেকে বের হতেই আমি একটা উবার ক্যাবে উঠি। সেই উবার ড্রাইভার আমাকে কি খাওয়ালো। তারপর আমি জ্ঞান হারাই। যখন জ্ঞান ফিরে নিজেকে একটা মাঠের পাশে পাই। আমার লাগেজ, পার্স, মোবাইল সব ছিনতাই হয়ে গেছে। আমার কাছে কোনো ক্যাস নেই, কার্ড নেই। আই হ্যাভ নো মানি। এ কারণে আমি এখানে এসেছি। সেলিম আংকেল আপনার এড্রেস আমাকে দিয়েছিলো। উনি বলেছিলেন কোনো প্রবলেম হলে যেনো এখানে আসি। ইউ গাইস উইল হেল্প মি। সেটা মনে থাকায় আমি এখানে এসেছি। ইভেন আমার সিএনজি ভাড়াটাও রাজ্জাক আংকেল দিয়েছেন”

দীপ্ত এর সাথে কোনো ব্যাগ, বাক্স দেখা গেলো না। এশার কথায় যখন সুভাসিনী ছুটে এলো তখন দীপ্ত অনুনয় করে বললো,
“সিএনজি ভাঁড়াটা একটু দিবেন। আমার কাছে টাকা নেই”
“তুমি কে বাবা?”
“আমি দীপ্ত, সেলিম চৌধুরী আমাকে এখানে পাঠিয়েছেন। উনি আমার আংকেল হন”

সুভাসিনী কিছু সময় ফ্যালফ্যালিয়ে তাকিয়ে থাকে। ছেলেটিকে বেশ উদ্বিগ্ন লাগছে। তার কোকরানো খয়েরি চুলগুলো অবিন্যস্ত এবং উশখোখুশখো। পোলো শার্টের ময়লা লাগা, জিন্সে প্যান্টের হাটু জায়গায় ধুলোবালিতে জর্জরিত। ছেলেটা কি কোথাও পড়ে গেছিলো! সুভাসিনী রাজ্জাককে ডাকেন। রাজ্জাক ই ভাড়া দেয়। দীপ্ত এর পরিচয় শুনে রাজ্জাক ই সবাই কে ডেকে আনে।

দীপ্তের কথা শুনে জামাল সাহেবের ভ্রু আরো কুঞ্চিত হলো। তার রাগ যেনো বাড়লো। ঝাঁঝালো কন্ঠে বললেন,
“এই রাজ্জাক, এরে হাজার ছয়েক ট্যাকা দিয়ে বিদেয় করো তো। ওই হা’রা’মজা’দা, খা***** পুতের পরিচিত কাউরে আমার ঘরে রাখুম না। এই শোনো ছোকরা, এইডা বাংলাদেশ। এখানে ট্যাকা না থাকলে মাইনষে ফুটপাতেও ঘুমায়। তোমার থাকনের জায়গার অভাব হইতো না। আমার ঘরে তোমারে আমি রাখুম না ব্যাস। এইডা আমার ঘর। ওই শু***** বাচ্চার না। ওই ব/জ্জা/ত, বে/য়া/দ/বে/র নাম ও আমি এই ঘরে শুনতে চাই না। কি হলো রাজ্জাক্যা, তুই বয়ে আসোস কেন”

জামাল সাহেব ক্রমশ উত্তেজিত হয়ে উঠলেন। তার মুখশ্রী নীলাভ হয়ে উঠলো। উঠতে গিয়েও বসে পড়লেন তিনি। বুকে হাত দিয়ে জোরে জোরে শ্বাস নিতে লাগলেন। তার অবস্থার অবনতি দেখে ঘাবড়ে গেলো পরিবারের সবাই। হার্টের ব্যামোটি মাত্রা ছাড়ালো। রাজ্জাক উত্তেজিত কন্ঠে বললো,
“আব্বা, আপনি ঠিক আছেন? আপনার হার্ট ভালো না। কেনো চিল্লাপাল্লা করেন। হইলো তো শরীর খারাপ। আর এই ছেলে, তুমি চলে যাও। তোমার জন্য আজ আব্বার শরীর খারাপ হচ্ছে”

অনল ছুটে এলো দাদাজানের কাছে। তীক্ষ্ণ স্বরে বললো,
“তোমরা ভিড় করো না। একটু স্পেস দাও। দেখছো তো দাদাজানের শরীর খারাপ”

বসার ঘরের চিৎকার চেঁচামেচিতে ভেতর থেকে ছুটে এলো ধারা এবং আশা। জামাল সাহেবের অবস্থা দেখেই ঘাবড়ে গেলো তারা। সুভাসিনী ছুটলো পানি আনতে। ইলিয়াস দিশেহারার মতো ডাক্তারকে ফোন করতে লাগলো। এর মাঝে দীপ্ত বলে উঠলো,
“আই এম এ ডক্টর অফ কার্ডিওলজি। ক্যান আই হেল্প?”

ইলিয়াস চেতে বললো,
“আমরা চাইছি হেল্প, ইংলিশ নিজের কাছে রাইখে রাস্তা মাপো তো বাপু”
“চাচু, উনি ডাক্তার। এখন ইমার্জেন্সি। যদি হেল্প করতে পারে তো আমাদের জন্য সুবিধা। দাদাজানের অবস্থা ভালো না”

এদিকে জামাল সাহেবের ব্যাথা ক্রমশ বাড়ছে। তার দৃষ্টি ক্ষীণ হয়ে আসছে। অসহনীয় ব্যাথায় পাগল্প্রায় হয়ে উঠছেন বৃদ্ধ মানুষটি। দীপ্ত দেরি করলো না, ব্যগ্র কন্ঠে বললো,
“উনার মেডিকিট টা দিবেন?”

এশা ছুটলো ভেতরে। ঔষধের বাক্স নিয়ে হাতে ধরালো দীপ্তের। দীপ্ত কিছু ঔষধ বের করে বৃদ্ধ মানুষটিকে খাইয়ে দিলো। তারপর বললো,
“উনার রেস্ট দরকার। রেস্ট নিলে ব্যাথা কমে যাবে”

অনল দাদাজানকে কোনো মতে পাঁজাকোল করে তার ঘরে নিয়ে শুইয়ে দিলো। দাদাজান কিছুটা ক্ষান্ত হলেন। অনল ফুল ফুলিয়ে উত্তপ্ত শ্বাস ছাড়লো। স্মিত হেসে বললো,
“থ্যাংক্স”
“এবার কি আমাকে থাকতে দিবেন?”

কেউ উত্তর দিলো না। পাশ ফিরে অর্ধচেতন মানুষটিকে দেখলো। কারণ এ বাড়ির সিদ্ধান্ত এই বৃদ্ধ লোকটি ই নেয়। অপরদিকে ধারা একরাশ কৌতুহল নিয়ে তাকিয়ে রইলো আগুন্তকের দিকে। এই ছেলেটি কে? কেনো নানাভাই এতো উত্তেজিত হয়ে উঠেছিল? ঘরের এক কোনায় দাঁড়িয়ে আছে জমজরা। এর মাঝে আশা এশার ওড়না টেনে বললো,
“চেরাগআলীটা কোথা থেকে আমদানী হলো?”
“আমাদের সুপ্রিয় অস্ট্রেলিয়ান ফুপা পাঠিয়েছে”
“ভীনদেশি মা’ল নাকি?”
“তাই তো বলছে, তোর কি মনে হয় দাদাজান একে থাকতে দিবে?”
“চান্স ই নেই, যদি ব্যাটা এসে বলতো, আমি পথহারা পথিক, নাক বরাবর হাটতে হাটতে এখানে চলে এসেছি, আমাকে থাকতে দেন, দু দিন কিছু খাই নি; তাহলে দয়া করে যদিও থাকতে দিতো। কিন্তু এতো অস্ট্রেলিয়ান ফুপার চ্যালা। দাদাজান ম’রে গেলেও একে থাকতে দিবে না”
“তবে আমি চাই এই চ্যারাগআলী থাকুক”
“কেনো?”
“কতদিন কোনো গিনিপিগ পাই না!”

বলেই দাঁত বের করে হাসলো এশা। তারপর তাকালো আশার দিকে। চোখে চোখে বিনিময় হলো ভাষা। আশার মুখ হাস্যজ্জ্বল হয়ে উঠলো। অবশেষে তাদের সাইন্স প্রজেক্ট সম্পন্ন হবে_____

*****

বাসার সবাই সিদ্ধান্ত নিলো দীপ্তকে থাকতে দিবে। কারণ জামাল সাহেবের শরীর ভালো নেই। রাজ্জাক ই এই প্রস্তাবনা দিয়েছে। ঘরে একজন ফ্রি ডাক্তার থাকা মন্দ নয়। যদিও ইলিয়াস তার বিরোধীতা করতে চেয়েছিলো কিন্তু অনলের সাপোর্ট পাবার কারণে রাজ্জাক প্রস্তাবনা গ্রহণ করা হয়েছে। দীপ্তকে দক্ষিণের ছোট ঘরটিতে থাকতে দেওয়া হয়েছে। সে এখানে আজকের দিনটি ই থাকতে পারবে। কাল সকালেই তাকে চলে যেতে হবে। এই ঘর বিগত পাঁচ বছর যাবৎ খোলা হয় না। ধুলাবালি ভর্তি হয়ে মাকড়সাদের স্থায়ী ঠিকানা হয়েছে যেনো ঘরটি। দীপ্ত বিনা অভিযোগে মেনে নিয়েছে। ঘরে প্রবেশ করতেই একটা গুমোট গন্ধ নাকে এলো তার। চোখ মুখ কুচকে এলো। ফলে এসেই বিছানার পাশের জানালা খুলে দিলো সে। জামাল সাহেবের এই বাড়িটি বড্ড পুরোনো, তাই জানালায়ও রডের শিক, কাঠের পাল্লা। রুবি এবং সুভাসিনী মোটামোটি ঘরটিকে পরিষ্কার করে থাকার উপযুক্ত করে দিয়েছে। দীপ্ত খোলা জানালা থেকে উন্মুক্ত আকাশের দিকে তাকালো। বাংলাদেশের প্রথম দিন, সারাজীবন স্মরণ থাকবে। এর মাঝেই মৃদু মেয়েলী কন্ঠ কানে আসে,
“আসবো?”

পিছনে ফিরতেই দেখে হাতে কাঁথা, বালিশ এবং পানির বোতল নিয়ে একজন কিশোরী দাঁড়িয়ে আছে। দীপ্ত হেসে বললো,
“তুমি ধারা?”
“আপনি কিভাবে জানলেন?”
“সেলিম আংকেলের কাছে তোমার ছবি দেখেছিলাম। আংকেলের সব কথায় যেনো তুমি জড়ানো”

নিজের বাবার কথাটা শুনতেই ধারার মুখ কঠিন হয়ে গেলো। চোখ নামিয়ে নিলো সে। চোখে মুখে একটা ঘৃণা ভেসে উঠলো। সে যেনো এই মানুষটির কোনো কথাই শুনতে চায় না। অসম্ভব বিরক্তি নিয়ে বললো,
“বড়মা পাঠিয়েছে। এগুলো দিতে আসলাম। কিছু লাগলে জানাতে বলেছে”

ধারা বলেই ঘুরে চলে যেতেই নিলে দীপ্ত মৃদু কন্ঠে বলে,
“একটু শুনবে?”

দীপ্তের কণ্ঠ অসহায় ঠেকলো। ধারা থেমে গেলো। চোখ মুখ কুচকে বললো,
“জ্বী বলেন”
“একটা উপকার চাই”

দীপ্ত অনেক ভেবে কথাটা বললো। কিন্তু ধারার বিস্ময় যেনো বাড়লো। অবাক কন্ঠে বললো,
“আমি আপনাকে কিভাবে সাহায্য করবো?”
“তুমি ই আমাকে সাহায্য করতে পারবে! ধারা আমি জানি না সেলিম আংকেলের সাথে তোমাদের কি শত্রুতা, কেনো জামাল সাহেব তার নাম ও শুনতে চান না। বাট আই নো তুমি তাকে রাজী করাতে পারবে। দিস দ্যা ফার্স্ট টাইম, আমি বাংলাদেশ এসেছি। কিন্তু এই প্রথম বার ই যে এক্সপেরিয়েন্স হলো। ইট ওয়াজ হরিবল। আমার সব কিছু নিয়ে গেছে। আমি সত্যি ই আতংকিত। আর এখানে আমার কেউ নেই, নোওয়ান। দুদিন এর মধ্যে পাপা টাকা পাঠিয়ে দিবে। কিন্তু টাকাই ই সব, আমি মানুষটি খুব ঘরকোনে। এখানে এসে তোমাদের ফ্যামিলিটাকে দেখে আমার মনে হলো আমি আমার পরিবারেই ব্যাক করেছি। প্লিজ ধারা, হেল্প মি আউট। তুমি প্লিজ তোমার নানাকে রাজী করাও। আই ওয়ান্ট টু লিভ হেয়ার। প্লিজ”

ধারা কিছু বলার আগেই অনলের তীক্ষ্ণ স্বর কানে এলো তার। হিনহিনে স্বরে বললো,
“কি করিস এখানে? তোকে খুঁজে আমি হয়রান!”
“বড়মা উনাকে এগুলো দিতে বললো”
“ঘরে কি মানুষ নেই নাকি! তোর আসতে হবে কেনো”

বলেই ধারার নরম হাতখানা নিজের শক্ত, খসখসে হাতের মুঠোয় নিলো। তারপর হনহন করে ধারাকে নিয়ে বেরিয়ে গেলো অনল। দীপ্ত তাদের যাবার পানে তাকিয়ে রইলো। তার ঠোঁটের কোনায় এক বিচিত্র হাসি ফুটে উঠলো। মৃদু স্বরে বললো,
“ইন্টারেস্টিং”

অনল একপ্রকার টেনে ধারাকে নিজের রুমে নিয়ে এলো। বি’চ্ছু জমজ পা মেলে খাটে বসে ছিলো। অনল আসতেই তারা সটান হয়ে বসলো। অনল তীব্র স্বরে বললো,
“এখন ই বের হ”

অনলের হুংকারে দেরি করলো না তারা। লেজ গুটিয়ে কোনো মতে বেরিয়ে গেলো। ধারা অনুভব করলো অনল বেশ রেগে আছে। রাগ প্রিন্স উইলিয়ামের নাকের ডগাতেই থাকে। এটা নতুন কিছু নয়। কিন্তু আজ তাকে বেশ অস্থির লাগছে। বারবার দু হাতা ঘষছে, কপাল চুলকাচ্ছে, ঠোঁটের উপর জমা ঘাম মুছছে আবার চুল টানছে। বেশ হন্তদন্ত একটা ব্যাপার। ধারা নরম গলায় বললো,
“কি হলো, এভাবে টেনে আনলে যে”
“তুই আর ওই ঘরে যাবি না”

অনলের কন্ঠ বেশ কঠিন শোনালো। যেনো হুকুম জারি করছে সে। ধারা বিস্মিত কন্ঠে বললো,
“কেনো?”

এবার একটু থামলো অনল। মিনিট দুয়েক চুপ করে থাকলো। তারপর মুখ গোল করে একটা উত্তপ্ত নিঃশ্বাস ছাড়লো সে। তারপর একটু এগিয়ে এলো ধারা কাছে। শান্ত দৃষ্টি রাখলো ধারার গাঢ় নয়নে। নির্লিপ্ত ভরাট কন্ঠে বললো,
“কারণ তুই আমার বউ, আমি চাইনা আমার বউ অন্য পুরুষের ঘরে যাক”……..

চলবে

মুশফিকা রহমান মৈথি

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে