#প্রণয়_প্রহেলিকা (কপি করা নিষিদ্ধ)
#১৩তম_পর্ব
বই এর উপর ই উপুড় হয়ে ঘুমিয়ে পড়লো ধারা। ল্যাপটপের কাজ শেষে পাশে তাকাতেই দেখলো মহারাণী ঘুমে কাঁদা। গণিতের খাতা কাটাকুটিতে ভরপুর। এর মাঝে ছোট্ট করে লেখা,
“নিরস, কঠিন, খ’চ্চ’র মানব”
অনল লেখাটি দেখে হাসলো। তারপর সব বন্ধ করে ধারাকে তুলে নিলো কোলে। তখনই চোখ মেলে তাকালো ধারা। দুজনের চোখাচোখি হলো। হুট করে এমন চোখ খোলায় অনল বেশ অপ্রস্তুত হয়ে পড়লো। ধারার চোখ থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নিলো। বুঝে উঠতে পারছে না কি করা উচিত। তার মুখখানা সেই চোরের মতো হয়ে গেলো যে কিনা চুরি করার আগেই ধরা পড়ে গেছে। কিন্তু মাস্টারমশাই তো চুরি করতে যাচ্ছিলেন না। তিনি তো শুধু ধারাকে বিছানা অবধি পৌছে দিয়ে যাচ্ছিলেন। অনল বেশ দ্বিধায় পড়ে গেলো। একবার মনে হলো এখন ই ধারাকে কোল থেকে নামিয়ে দিবে, কিন্তু ব্যাপারটা কি শোভনীয় দেখাবে। আবার মনে হলো ধারার সেই শান্ত দৃষ্টিকে সম্পূর্ণরুপে উপেক্ষা করে নিজ কার্য সম্পাদন করবে। কিন্তু দুইটি উপায়ের কোনটি বেছে নিবে বুঝে উঠতে পারলো না। আর ধারার অবাক দৃষ্টি উপেক্ষা করাটা যেনো দায় হয়ে উঠেছে। অপরদিকে নিজেকে প্রিন্স উইলিয়ামের কোলে আবিষ্কার করে বেশ বড়সড় ঝটকা খেলো ধারা। অজান্তেই হৃদস্পন্দনের বেগ বাড়লো। বুকটা যেনো হাতুড়ি নিয়ে রীতিমতো জেমস এর গানের তালে ড্রাম বাজাচ্ছে। হাত পা অসাড় হয়ে গেলো ধারার। মেরুদন্ড বেয়ে উষ্ণ রক্ত বয়ে গেলো তার৷ একঅন্যরকম শিহরণে নরম গাল জোড়ায় রক্ত জমতে লাগলো। লজ্জাবতী গাছের সকল লজ্জা যেনো তাকে ঘিরে ধরলো। মার্কেটে অনলকে আকষ্মিকভাবে জড়িয়ে ধরার সময় ও এমনটা অনুভূত হয় নি ধারার। বেশ কিছুক্ষণ প্রিন্স উইলিয়ামের দীঘির মতো শান্ত চোখের দিকে তাকিয়ে রইলো সে। এই কাজটা যে বড্ড বিপজ্জনক কিছু সেটা টের পেতে সময় নিলো না। হৃদয়ের মধ্যস্থলে যখন অস্বস্তিখানা মাত্রা ছাড়ালো তখনই চোখ বুজে নিলো ধারা। সে এই অদ্ভুত অনুভূতির জোয়ার সামলাতে পারছে না। এক অজানা আতঙ্ক জন্মালো ধারার বুকে। কেনো এই আতঙ্ক! প্রণয়ের শুভারম্ভের নাকি অজান্তেই অনলের চোখে গভীরত্বে বিলীন হয়ে যাবার জানা নেই ধারার। তবে অনুভূতি গুলো অন্যরকম। চুম্বকের ন্যায় এই আকর্ষণ। অজান্তেই প্রিন্স উইলিয়ামের প্রতি এক দূর্বলতা তৈরি হচ্ছে কিশোরী ধারার হৃদয়ের অন্তস্থলে। এই দূর্বলতাটা সে অনুভব করতে পারছে তবে এর উৎস টা তার অজানা। তার মনে হচ্ছে অজান্তেই চোরাবালিতে পা রেখেছে সে, যেখানে তলিয়ে যাওয়া অবধারিত_____
ধারা চোখ বুজে নিলে কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস নেয় অনল। হাফ ছেড়ে যেনো বেঁচেছে সে। সে ভাবলো ধারা হয়তো এখনো ঘুমের মাঝেই। হয়তো চোখ এমনেই খুলেছে, তার ঘুম ভাঙ্গে নি। কথাটা ভাবতেই বিব্রতবোধটা খানিকটা কমলো অনলের। চটজলদি ধারাকে বিছানায় শুইয়ে দিলো সে। তারপর লাইটটি বন্ধ করে বারান্দায় চলে গেলো। হৃদস্পন্দনের গতি অজান্তেই বেড়ে গেছে। ঘরের নিস্তব্ধতায় শ্বাস নিতেও যেনো অস্বস্তি হচ্ছিলো অনলের। বারান্দার রেলিং দুহাত রেখে কিছুসময় জোরে জোরে শ্বাস নিলো সে। কানজোড়া রক্তিম বর্ণ ধারণ করলো। অনল একবার পেছনে তাকালো। আকাশে তখন পূর্ণচন্দ্রিমা, রুপালী আলো বারান্দা হয়ে প্রবেশ করছে আঁধারে নিমজ্জিত নিস্তব্ধ ঘরে। আলো আধারের এই মায়াবী খেলায় শুভ্র বিছানায় শায়িত নারীটির দিকে অপলক নজরে তাকিয়ে থাকলো অনল। বুকের অন্তস্থলে এক চিনচিনে ব্যাথা অনুভূত হলো তার। পরমূহুর্তেই নজর সরিয়ে নিলো। ঘুমন্ত কিশোরীটি কি যুবকের এই ব্যাথাটি অনুধাবণ করতে পারবে? হয়তো না! তপ্ত নিঃশ্বাস ফেললো অনল। ক্লান্ত চোখজোড়া তাকিয়ে রইলো শূন্য আকাশের সেই পূর্ণ চন্দ্রিমার দিকে। অপেক্ষা সেই প্রহরের, যখন কিশোরী হৃদয়েও প্রণয়ের ফুল ফুটবে_________
********
ধারার ঘুম ভাঙ্গলো খুব ভোরে। চোখ বন্ধ করে ঘুমের ভান করতে করতে কখন ঘুমিয়ে পড়েছে মনে নেই। চোখ মেলে তাকালো সিলিং এর দিকে। মরচে পড়া আদিমযুগের ফ্যানটা ঘুরছে। ক্যাচর ক্যাচর শব্দ হচ্ছে। ফ্যানটা সবসময় এমন শব্দ ই করে, কিন্তু তার অস্তিত্ব শুধু নিস্তব্ধতায় বুঝা যায়। ধারা পাশ ফিরলো। মোটা কোলবালিশের প্রাচীরের ওপারে ঘুমন্ত যুবকের শান্ত মুখশ্রী দেখতে পেলো সে। প্রিন্স উইলিয়ামকে ঘুমন্ত অবস্থায় সবথেকে ভালো লাগে ধারার। নেই কোন তিক্ত বাণী, কঠিন মুখশ্রীটাও শান্ত বাচ্চার মতো স্নিগ্ধ দেখায়। কঠিন মুখশ্রীটা বরাবর ই নির্বিকার ছিলো। তার মনে কি চলতো কখনোই আন্দাজ করতে পারতো না ধারা। তবে এখন পারে, মাঝে মাঝে এই মুখশ্রী বিব্রত হয়, মাঝে মাঝে উৎকন্ঠা দেখা যায়, কখনো গম্ভীর তো কখনো হাস্যজ্জ্বল। প্রিন্স উইলিয়াম ও যে সাধারণ মানুষের মতো আবেগপ্রবণ হতে পারে সেটা আগে না জানলেও এখন জানে ধারা। আনমতেই হাসলো সে। মনের মাঝে এক অবাধ্য চিন্তা মাথাচড়া দিলো। এই ঘুমন্ত শান্ত মুখশ্রীটা একবার ছুয়ে দেখার অবাধ্য ইচ্ছে। পরমূহুর্তেই নিজেকে শাসালো কঠিন ভাবে। মুখের প্রায় কাছে যাওয়া হাতখানা টেনে নিলো। আজকাল অবান্তর ইচ্ছে তার মাথা খারাপ করে দিচ্ছে। মস্তিষ্কটা জুড়ে প্রকট ভাবে অনলভাই বিস্তার করছে। এটা ঠিক নয়। প্রচন্ড বিপজ্জনক ব্যাপার। মাথা ঝাকালো ধারা। তার অবাধ্য চিন্তাগুলো এক গভীর প্রকোষ্ঠে তালাবদ্ধ করলো। তারপর উঠে ওয়াশরুমের দিকে ছুটলো। ধারা চলে যেতেই চোখ খুললো অনল। ঠোঁট খানা বিস্তারিত হলো। ফুটে উঠলো বিচিত্র হাসি_________
ক্যাফেটেরিয়ায় বসেছে বন্ধুমহল। আজ তারা গম্ভীর। কারোর মুখে হাসি নেই। দিগন্ত যে কিনা সর্বদা ব্রেকিং নিউজ দেবার তালে থাকে তার মুখও রক্তশূন্য। ক্যান্টিনের রফিক মামা খানিকটা চেঁচিয়ে বললো,
“কি গো সামুচা দিবো নি?”
নীরব খানিক থমথমে গলায় বললো,
“না মামা, সামুচায় দুঃখ ঘুচবে না। তুমি বরং ডিম প্যাটিস দাও”
“হইছে টা কি! এমন মুখ লটকায় আছো কেনো? সবগুলোরে দেখে মনে হচ্ছে এক একটারে কেউ পি’ডা’ই’ছে”
“হাতে মা’রে নি মামা! ভাতে মা’রছে”
রফিক মামা খানিকটা অবাক হলেন। তার মুখে কৌতুহল জাগলো। ধারাদের এই দলের সাথে তার খাতির অন্য রকম। সারা ভার্সিটির খবর এই দলের কাছ থেকেই পাওয়া যায় কি না। নীরব হতাশার দীর্ঘশ্বাস ফেললো। তার কন্ঠ বসা। ভারাক্রান্ত গলায় বললো,
“আমাদের নতুন কোর্স টিচার এবার আমাদের নাকানি চুবানি খাওয়িয়ে ছাড়বেন। আমি ব্যাতীত একজন ও পাশ করবে কি না সন্দেহ”
নীরবের কথা শুনে কৌতুহল মরে গেলো রফিক মামার। ভেবেছিলো বড় কোনো খবর কিন্তু এটা তো ভার্সিটির হরহামেশার কথা। ছেলেমেয়ে রিটেক খায় এটা নতুন কি! খানিকটা বিরক্ত হয়ে বললো,
“এ আবার এমন কি! রিটেক খাইয়ে এক বছর ঝুইলে থাকবা, এটা তো খুব ই নর্মাল। আমি ভাবলাম কি না কি!”
রফিক মামার কথায় আশ্বস্ত হলো না তারা। তারা এখনো আগের মতোই বসে রয়েছে। তাদের ক্লাস এসেসমেন্টের রেজাল্ট দিয়েছে। নীরব ব্যাতীত একজন ও ৪ কিংবা ৫ এর উপরে পায় নি। দিগন্ত ভেবেছিলো সারপ্রাইজ টেস্ট টা হয়তো অনল স্যার বাদ দিবেন কিন্তু সে তা করে নি। এখানেই নম্বর এমন নাজেহাল, মেইন পরীক্ষায় যে কি হবে সেটা নিয়ে এই চারজন খুব ই চিন্তিত। এর মাঝেই দিগন্ত বলে উঠলো,
“এই ব্যাটাকে প্রথম থেকেই বিরক্ত লাগে, কি শত্রুতা কে জানে। অন্তত পক্ষে স্টেপের মার্ক তো দিতেই পারতো। মার্ক চেয়েছি কিডনী তো না”
তার সাথে সম্পূর্ণ সহমত জানালো অভীক। ক্ষোভ জড়ানো স্বরে বললো,
“ব্যাটা, নিজের পার্সোনাল লাইফের ক্ষোভ আমাদের উপর দিয়ে মিটায়। শান্তি পাবে না দেখিস। চিন্তা কর ধারার মামাতো ভাই অথচ ওকে সবচেয়ে কম দিয়েছে, তিন। এটা কোনো বিচার! দেখিস এই লোক জীবনে সুখী হবে না, ওর গার্লফ্রেন্ড অন্য কারোর সাথে ভেগে যাবে। যা একটু বিয়ে হবে, বউ ও থাকবে না। আমাদের সাথে যা করছে উপরের একজন দেখছে, শান্তি পাবে এই অনল স্যার”
“ওর উপর শোধ তুলতে হবে। মনে আছে আরিফ স্যারের উপর জনগণ কিভাবে শোধ তুলেছিলো। এর উপরও সেই ঔষধ প্রয়োগ করতে হবে। মানা যায়! পয়তাল্লিশ জনের মাঝে মাত্র ৪ জন বিশের উপর পেয়েছে, আর সব দশের নিচে। ক্লাসের সবাই এমনেই ক্ষেপে আছে। একটা মিটিং ডাকলেই হবে”
দিগন্তের কথা শেষ না হতেই ধারা ভেটো দিলো। কর্কশ গলায় বলে উঠলো,
“আচ্ছা, তোদের সমস্যা কি বলতো! নিজের ব্যর্থতার দোষ অনল স্যারের উপর দিচ্ছিস কেনো! উনি তো ক্লাসের লেকচারের বাহিরে ম্যাথ দেন না। তাহলে শুধু শুধু তার উপর এতো চেতছিস কেনো? পড়বি না তাহলে মার্ক কি মুখ দেখে দিবে!”
“তুই চ্যাততেছিস কেনো? অদ্ভুত তো! হুট করে ভাই এর উপর দরদ উতলে উঠলো নাকি! স্টেপের মার্ক সবাই দেয়! সে তো দিতে পারতো?”
“অদ্ভুত স্টেপের মাঝেও যদি ভুল করে রাখিস মার্ক দিবে কিভাবে? যতসব। মাথায় তো শুধু নষ্ট বুদ্ধি জমিয়ে রেখেছিস। এসব ছাড় আর একটু পড়”
বলেই উঠে দাঁড়ালো সে। হনহন করে ক্যাফেটেরিয়া থেকে বেড়িয়ে গেলো। ধারার এমন পরিবর্তন যেনো কারোর হজম হলো না। আগে এই মেয়েই সকলের সাথে বসে অনলের পিন্ডি চটকাতো। অথচ আজ হুট করেই চেতে উঠলো, যেখানে সবথেকে কম নম্বর সেই পেয়েছে। দিগন্ত বিস্মিত গলায় বললো,
“যা বাবা! কি হলো! এই ধারা আজ উলটো ধারায় চলছে কেনো? কি এমন বললাম ক্ষেপে লাল হয়ে গেলো! কি রে মাহি! ওর কি হয়েছে জানিস!”
মাহি কিছুসময় মাথা চুলকালো, তারপর হতাশ গলায় বললো,
“বিষয়টা আমিও বুঝলাম না, অনল ভাইকে যে মানুষ দু চোখে দেখতে পারে না সেই মানুষ আজ উনার পক্ষ নিলো। সূর্য কি উলটো দিকে উঠলো”
সবার মুখে চিন্তা, চিন্তার কারণ ধারার এমন পরিবর্তন। এ দিকে মাহির ও ব্যাপারটা বোধগম্য হলো না। সে ভাবলো হয়তো ধারার মন খারাপ। বেশ কিছুদিন যাবৎ ই তাকে অন্যমনস্ক লাগছে৷ হয়তো প্লাবণ ভাইএর বিবাহ সংক্রান্ত ব্যাপার। ঘনিষ্ঠতার জন্য ধারার মনের খবর একটু হলেও সে রাখে। তাই ঠিক করলো এখন তার সাথে কথা বলবে না, বরং বিকেলে সোজা বাসায় যাবে। তখন ই সব রহস্যের উদঘাটন করবে সে। বন্ধুমহল আবার কথায় মজলো। তাদের আড্ডার মুল বিষয় হলো চরম কঠিন এবং খ’চ্চ’র অনল স্যার________
গোধলী লগ্ন, ভেজা চুলে বারান্দার মেঝেতে বসে আছে ধারা। আজ মনটা ভালো নেই, তখন বন্ধুদের উপর না চেঁচালেও পারতো। কিন্তু নিজেকে আটকাতে পারলো না। কেনো যেনো অনলের নামে অবান্তর কথাগুলো শুনতে ভালো লাগলো না। লোকটি তার কাজের প্রতি কতোটা নিষ্ঠাবান সেটা ধারা জানে। উপরন্তু আরিফ স্যারের সাথে ঘটিত কাহিনী সে জানে। বেচারা স্যার শেষ অবধি ভার্সিটি ছাড়তে বাধ্য হন। সে চায় না অনল ভাইয়ের সাথে এমন কিছু হোক। এই চাকরীটি তার স্বপ্নের চাকরি। এতোকাল বহু কাঠখড় পুড়িয়েছে এই চাকরিটির জন্য। আগে হলে হয়তো সে উদাসীন থাকতে পারতো। কিন্তু এখন উদাসীন থাকাটা তার দ্বারা সম্ভব নয়। অনল ভাই মানুষটার কোনো ক্ষতি হোক সে চায় না। হুট করেই নিবৃত্ত মস্তিষ্ক অবুঝ মনটিকে প্রশ্ন করে বসলো,
“কেনো তার এতো পরিবর্তন! কেনো সর্বদা অনল নামক মানুষটাকেই নিয়ে সে চিন্তিত?”
মস্তিষ্কের প্রশ্নে থমকে গেলো হৃদয়। তারপর উত্তর দিলো,
“কারণ মানুষটি ভালো”
“শুধু কি তাই?”
চুল গুলো টেনে ধরলো ধারা। মন এবং মস্তিষ্কের রেষারেষিতে ক্লান্ত হয়ে পড়ছে সে। মানুষটির প্রতি তার এক অদ্ভুত মায়া কাজ করে। এ যেনো সম্মহনী কোনো কালো জাদু! চোখজোড়া নির্লজ্জের মতো তাকিয়ে থাকে, হৃদয়ের অন্তস্থলে তার জন্য এক শুন্যতা কাজ করে! সবকিছুই যেনো প্রহেলিকা। বিশাল অদ্ভুত প্রহেলিকা। এই চিন্তার ঢেউ এ ছেদ ঘটায় বড় মা। তীব্র স্বরে চেঁচিয়ে বলেন,
“ধারা, মাহি এসেছে”
মাহির নাম শুনতেই সকল চিন্তারা ভো দৌড় দেয়। মাহি এই বাড়িতে খুব এক টা আসে না। কিন্তু আজ বিনা নোটিসে তার আগমণে ধারা খুশিতে গদগদ হবার বদলে চরম উদ্বিগ্ন হয়ে উঠলো। চটজলদি উঠে দাঁড়ালো সে। ছুটে গেলো বসার ঘরে। মাহি তখন বড়মার সাথেই গল্প করছে। ধারাকে দেখেই সুভাসিনী বললো,
“যা মাহিকে নিয়ে ভেতরে যা, আমি নাস্তা নিয়ে আসছি”
ধারা পড়লো মহা বিপাকে, সে মাহিকে নিজের আগের ঘরে নিয়ে যেতে পারবে না কারণ সেখানে জমজেরা দরজা আটকে কিছু গোপন কাজ করছে। আর অনলের ঘরে নিয়ে যেতে পারছে না। ধারাকে ভুতের ন্যায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সুভাসিনী আবার বললো,
“কি রে, নিয়ে যা ওকে”
“এশারা ঘর আটকে রেখেছে”
“এশাদের ঘরে কেনো যাবি! অদ্ভুত তো! তোর আর অনলের ঘরে নিয়ে যা”
ধারা কিছু বলার পূর্বেই মাহি বিস্মিত কন্ঠে প্রশ্ন করে বসলো,
“অনল ভাই এর রুমে ধারা থাকে?”
“ওমা, স্বামীর ঘরে স্ত্রী থাকবে এটাই তো স্বাভাবিক………
চলবে