#প্রণয়_বর্ষণ (১৬)
#বোরহানা_আক্তার_রেশমী
_______________
কাচুমাচু হয়ে রুদ্রের পিছু পিছু বাড়িতে ঢোকে স্পর্শী। রুদ্রর সাথে কথা বলার সাহস সে পাচ্ছে না। রুদ্রও মুখ গম্ভীর করে আছে। লিভিং রুমে রেহেনা, রাইমা, শফিক শাখাওয়াত বসে ছিলেন। রুদ্রকে এমন গম্ভীর মুখ করে বাড়িতে ঢুকতে দেখে তিনজনই ভ্রু কুঁচকে তাকায়। রাইমা লাফ দিয়ে উঠে স্পর্শীর সামনে দাঁড়িয়ে বলে,
‘কি হয়ছে ভাবি? ভাইয়া এমন হোপ করে আছে কেন!’
স্পর্শী ঢোক গিলে বলে, ‘পরে বলবো। এখন সর!’
রাইমাকে আর কিছু বলতে না দিয়ে দ্রুত নিজের রুমের দিকে যায়। রুমে ঢুকে দেখে রুদ্র রুমে নাই। স্পর্শী বিছানায় বসে নখ কামড়াতে থাকে। রুদ্র কোনো রিয়েক্ট করলে সেটা স্বাভাবিক হতো স্পর্শীর কাছে কিন্তু কোনো রিয়েক্টই করলো না এই বিষয়টা হজম হচ্ছে না স্পর্শীর। টানা আধাঘন্টা লাগিয়ে বের হয় রুদ্র। এই ঠান্ডার মধ্যে সন্ধ্যা বেলা কেউ শাওয়ার নেয়! স্পর্শী চোখ মুখ কুঁচকে বিড়বিড় করে বলে,
‘রক্তের মনে হয় তেজ বেশি। হুহ!’
রুদ্রর দিকে খেয়াল করতেই নজরে পড়ে রুদ্রর ন’গ্ন বুক। টাস্কি খেয়ে বিছানা থেকে পড়তে পড়তেও নিজেকে সামলে নেয়। বুকে থু থু দিয়ে অন্যদিকে তাকায়। রুদ্র টি-শার্ট পড়তে পড়তে শান্ত গলায় বলে,
‘কিছু বলবি!’
স্পর্শী আমতা আমতা করে বলে, ‘আপনি কি আমার ওপর রেগে আছেন!’
রুদ্র কিছু না বলে ল্যাপটপ নিয়ে বসে। কিছুক্ষণ নীরবতায় কাটে। স্পর্শী ভাবে রুদ্র বোধহয় অনেক বেশিই রেগে আছে। তাই মন খারাপ করে বসে থাকে। নীরবতার এক পর্যায়ে রুদ্র বলে,
‘আমি তোর ওপর রেগে নেই তাই অযথা চিন্তা করতে করতে নিজের মাথা খা’রাপ করিস না।’
স্পর্শী এক লাফে রুদ্রের কাছে যায়। রুদ্র ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে তাকায়। স্পর্শী ব্যস্ত গলায় বলে, ‘সত্যি বলছেন?’
‘এটা জিজ্ঞেস করতে এমনে আসাা লাগে!’
‘আরেহ বলেন না! সেদিন তো নাঈম ভাইয়ের সাথে দেখে ঠা’স করে আমার গাল লাল করে দিছিলেন আর আজ বলছেন রেগে নেই!’
রুদ্র ল্যাপটপে মনোযোগ দিয়ে বলে, ‘সেদিন একা একা নাঈমের সাথে ফুসকা খেতে গেছিলি তাই থা’প্প’ড় খাইছিস। কিন্তু আজ তো তেমন কিছু না। তেমন হলে এতক্ষণে ৪/৫ টা থা’প্প’ড় খাইতি। আমার ব্যাক্তিগত জিনিস ১% ও কারো সাথে শেয়ার করতে রাজি নই আমি।’
স্পর্শী ফ্যালফ্যাল করে তাকায়। রুদ্রের কথার মানে বুঝতেই মাথা নিচু করে নেয়। ঠোঁট কামড়ে হেঁসে বিড়বিড় করে বলে, ‘ওলে আমার জেলাস জামাই।’
__________
তানিয়ার নতুন ফ্ল্যাট ফয়সালের বাড়ির কাছে হওয়ায় সে এই সন্ধ্যা বেলায়ই ফয়সালের বাড়ি এসেছে। বড় করে একটা শ্বাস নিয়ে কলিং বেল দেয়। মিনিট ২ বাদেই দরজা খুলে দেয় ফয়সাল। তানিয়াকে দেখেই মুখ গম্ভীর করে নেয়।
‘তুমি এখানে কেন?’
‘আপনার সাথে কথা আছে আমার।’
বাড়ির মধ্যে ঢুকতে নিলে হাত দিয়ে বাঁধা দেয় ফয়সাল। গম্ভীর স্বরে বলে, ‘রাতের বেলা নিশ্চয় কোনো ছেলের বাড়িতে ঢুকা ঠিক না! তাই তুমি যেতে পারো।’
ভ্রু কুঁচকায় তানিয়া। ঠোঁট গোল করে বলে, ‘সন্ধ্যা বেলাকে রাত বানাচ্ছেন কেন? আর একটা ছেলের বাড়িতে যাওয়া ঠিক কি নাা তা আমি বুঝবো। আপনি সরেন।’
‘বেশি সাহস দেখাচ্ছো বলে মনে হয় না?’
‘জ্বি না। আপনি সরবেন নাকি ধা’ক্কা দিয়ে সরাবো?’
ফয়সাল দীর্ঘশ্বাস ফেলে। হাত সরিয়ে নিজেও বাড়ির মধ্যে চলে যায়। তানিয়া পেছন পেছন যায়। সরাসরি বেডরুমে গিয়ে ফিহাকে কোলে নেয়। ফয়সাল ল্যাপটপ নিয়ে বিছানায় বসে থাকে। কিছু বলে না। তানিয়া ফিহার সাথে খেলে। ফিহাকে ঘুম পাড়িয়ে শুইয়ে দেয়। ফয়সাল ল্যাপটপে চোখ রেখেই বলে,
‘ওর সাথে খেলা হয়ে গেছে? এবার যেতে পারো।’
ফিহাকে শুইয়ে দিয়ে ভ্রু কুঁচকায় তানিয়া। কপালে ভাজ ফেলে বলে, ‘একটু বেশি রু’ড হয়ে গেছেন বলে মনে হয় না?’
‘তোমাকে আমি এই বাড়িতে আসতে নিষেধ করছিলাম!’
‘হ্যাঁ তো! তাতে আমার কি! আমি আসবোই। কি করবেন?’
ফয়সাল হাত মুষ্টিবদ্ধ করে তাকায়। রাগী গলায় বলে, ‘বাড়াবাড়ি করো না। ফল ভালো হবে না।’
তানিয়া ভেংচি কাটে। ঠা’স করে সোফায় বসে পড়ে। হাত বগলদাবা করে বলে, ‘বসলাম। আর যাচ্ছি না কোথাও হুহ।’
ফয়সাল ল্যাপটপ সরিয়ে তানিয়ার সামনে এসে দাঁড়ায়। ভ্যাবাচ্যাকা খায় তানিয়া। আমতা আমতা করে বলে, ‘এমন লুকে তাকিয়ে আছেন কেন? কি হয়ছে? দেখেন আমি ভদ্র মেয়ে। এরকম করে তাকালে আমার ভয় লাগে।’
ফয়সাল খপ করে তানিয়ার হাত ধরে। তানিয়া লাফিয়ে উঠে বলে, ‘এই ছাড়েন!’
ফয়সাল শক্ত করে চেপে ধরে তানিয়ার হাত। তানিয়া ব্যাথায় আর্তনাদ করে ওঠে। তাতে পাত্তা না দিয়ে গম্ভীর স্বরে বলে,
‘ভদ্র মেয়েরা কখনো বিবাহিত ছেলের পিছে ঘুরঘুর করে না।’
তানিয়া চুপ হয়ে যায়। ফয়সাল হাত টেনে বাড়ির বাহিরে বের করে দেয় তানিয়াকে। ধমক দিয়ে জোড়ে বলে, ‘গেট আউট। আর কখনো যেনো আমার বাড়ির আশে পাশে না দেখি। নয়তো আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না। বে’হায়ার মতো আমার পিছে ঘুরঘুর করতে দেখলে তুমি মেয়ে এটা আমি মাথায় রাখবো না। গট ইট?’
হতভম্বের মতো তাকিয়ে থাকে তানিয়া। চোখ ছলছল করে। মুখের ওপর ঠা’স করে দরজা বন্ধ করতে নিলে তানিয়া হাত দেয় দরজায়। ফয়সাল আগুন চোখে তাাকায়। তানিয়া হেঁসে বলে,
‘সরি। আপনার বাড়িতে আর আসবো না। আর না আপনার পিছে ঘুরঘুর করবো! আর হ্যাঁ থ্যাঙ্কস।’
বলেই উল্টো ঘুরে হাঁটা লাগায়। ফয়সাল একপলক সেদিকে তাকিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। মাাথা চেপে বসে থাকে।
_____________
সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে স্পর্শী নিজেই ব্রেকফাস্ট তৈরী করে। রাইমা টুকটাক সাহায্য করেছে। রেহেনা শুধু দেখছে আর ফুলছে। কিছু বলতেও পারছে না সহ্যও করতে পারছে না। স্পর্শী সব টেবিলে এনে আড়চোখে তাকায় শাশুড়ীর দিকে। গলা পরিষ্কার করে বলে,
‘শ্বাশু মা কিছু বলবেন?’
রেহেনাা ভ’য়ং’কর দৃষ্টিতে তাকায়। কোনো উত্তর না দিয়েই গটগট করে চলে যায়। রাইমা আর স্পর্শী হাসে। তারপর দুজনে নিজেদের রুমে যায়। রুদ্রকে তখনো ঘুমাতে দেখে স্পর্শী ডেকে তোলে। রুদ্র ফ্রেশ হলে দুজনে একসাথে নিচে নামে। হুট করেই কেউ এসে রুদ্রকে জড়িয়ে ধরে। হা করে তাকায় স্পর্শী। রুদ্র নিজেও ভ্রু কুঁচকে তাকায়। মেয়েটা উত্তেজিত স্বরে বলে,
‘রুদ্র তুমি কত্তো হ*ট হয়ে গেছো। কত্তদিন পর দেখতেছি তোমাকে।’
রুদ্র মেয়েটাকে ছাড়িয়ে দেয়। তারপর চোখ মুখ শক্ত করে বলে, ‘আমি তোর বড় তাই রুদ্র ভাই বল। আর নেক্সট টাইম থেকে এভাবে গায়ে ঘেষবি না+ল্যাঙ্গুয়েজ ঠিক করে কথা বলবি। তোর এসব আজাইরা স্বভাব আমার পছন্দ না।’
মেয়েটা হেঁসে বলে, ‘কাম অন রুদ্র ভাই। ইটস নরমাল।’
রুদ্র পাত্তা না দিয়ে চুপচাপ ডাইনিং এ গিয়ে বসে। স্পর্শী তখনো ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে। মেয়েটা এমন করে জড়িয়ে ধড়লো আর রুদ্র কিছু বললো না! গাল ফুলিয়ে রুদ্রের পাশের টেবিলে বসে। রুদ্র একবার তাকিয়ে আর কিছু বলে না। চুপচাপ খেতে থাকে। স্পর্শী রাগে ঠা’স করে রুদ্রের পায়ে পাড়া দেয়। রুদ্র আর্তনাদ করতে গিয়েও করে না। চোখ মুখ কুঁচকে তাকায় স্পর্শীর দিকে। বিড়বিড় করে বলে,
‘হঠাৎ এতো ক্ষে’পে গেলো কেন? আজব!’
রাইমা সিড়ি দিয়ে নামতে নামতে ‘নিতু’ আপু বলে চিল্লিয়ে উঠে। ভ্যাবাচ্যাকা খায় স্পর্শী আর রুদ্র। রাইমা দৌড়ে এসে খুশিতে নিচে দাঁড়িয়ে থাকা নিতুকে জড়িয়ে ধরে৷ স্পর্শী চুপচাপ দেখতে থাকে। রুদ্র একটু করে খায় আর স্পর্শীর মুখের দিকে তাকায়। রাইমা নিতুকে টেনে এনে দাঁড় করায় স্পর্শীর সামনে। উত্তেজিত হয়ে বলে,
‘ভাবি এটা নিতু আপু। আমার চাচাতো বোন। আর নিতু আপু এইটা স্পর্শী, আমার মামাতো আপু+ ভাবি।’
স্পর্শী জোড় করে হাসি দেয়। নিতু ভ্রু কুঁচকে বলে, ‘ভাবি মানে? তোর কোন ভাইয়ের বউ এটা?’
‘আমার একটাই ভাই। তারই বউ এটা।’
নিতু অবাক কন্ঠে বলে, ‘তার মানে রুদ্রের..!’
রাইমা হেঁসে মাথা নাড়ায়। নিতু দ্রুত পায়ে রুদ্রের চেয়ারের কাছে এসে বলে, ‘তুমি বিয়ে কবে করেছো রুদ্র? আর তুমি বিয়ে কিভাবে করতে পারো!’
স্পর্শী চেয়ার সরিয়ে উঠে আসে। নিতুর হাত ধরে রুদ্রের কাছ থেকে সরিয়ে দাঁত বের করে বলে, ‘বিয়ে হয়েছে দুইদিন আগে। আর তুমি বিয়ে করে নেও তাহলে জানতে পারবে মানুষ বিয়ে কিভাবে করে! ঠিক আছে?’
নিতু কটমট দৃষ্টিতে তাকায়। স্পর্শী দাঁতে দাঁত চেপে রুদ্রকে উদ্দেশ্য করে বলে, ‘এবার যাওয়া যাক?’
রুদ্র পানি খেয়ে মাথা নাড়ায়। রুদ্র ডাইনিং ছেড়ে উঠলে নিতুও তার কাছে যেতে নেয়। কিন্তু আটকে দেয় স্পর্শী। হাত ধরে রাইমার পাশে দাঁড় করিয়ে কানের কাছে মুখ এনে বলে,
‘আমি একটা মেয়ে তাই আরেকটা মেয়ের চোখ দেখলেই বুঝতে পারি সে কোন দৃষ্টিতে কার দিকে তাকাচ্ছে! আমার জামাইয়ের থেকে দুরে থাকো ননদিনী। নয়তো…’
তারপর চুপচাপ গাড়ির দিকে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায়। পেছন থেকে রাইমা চোখ বড় বড় করে বলে, ‘ভাবিজান জেলাস! ওয়াও!’
স্পর্শী ভার্সিটি এসে চুপচাপ নেমে যায়। পুরো রাস্তায় একটাও কথা বলেনি সে। রুদ্রও চুপ করে ছিলো। স্পর্শী এতে আরো বেশি রেগে গেছে। গাড়ি থেকে নেমে গটগট করে ভার্সিটির ভেতরে চলে যায়। রুদ্র গালে হাাত দিয়ে বলে,
‘জড়িয়ে ধরেছে বলে এতো জেলাস! তাহলে তো আরেকটু জেলাস করায় যায়।’
স্পর্শী ক্যাম্পাসে এসে দেখে সবাই এসেছে কিন্তু তানিয়া আসেনি। ভ্রু কুঁচকে বলে, ‘সবার আগে তো তানুই আসে আজ ‘ও’ আসেনি?’
সাফিন বলে, ‘নাহ রে। কল করছিলাম বাট বললো ওর নাকি শরীর ভালো না তাই আসবে না।’
সামিরা মন খারাপ করে বলে, ‘ওকে ছাড়া আমরা ক্লাস করবো কিভাবে বল! তার থেকে বরং আমরাাও আজ ক্লাস বাঙ্ক দিয়ে ওকে দেখে আসি।’
বাকি সবাইও তাল মেলায়। স্পর্শী বিড়বিড় করে বলে, ‘ফাঁ’কিবাজ একেকটা।’
অগত্যা আর ক্লাস করা হলো না। সবাই মিলে ছুটলো তানিয়ার বাড়ির উদ্দেশ্যে। রাস্তায় গিয়ে দাঁড়াতেই সাফিন বলে,
‘কিছু খেয়ে নিলে ভালো হতো না রে? তানু যে কি’প্টা যদি আমারে খেতে না দেয়!’
সামিরা বলে, ‘তোর পিছনে লা’থি না খায়তে চাইলে চুপচাপ চল। আর এই ৩ জনে যা রিক্সা নিয়ে আয়।’
নীরব, নাহিদ, সাফিন চুপচাপ রিক্সা আনতে যায়। স্পর্শী হেঁসে বলে, ‘সাফিনের গফের কি খবর রে? ১৬ নাম্বার গিয়ে ১৭ হয়ছে?’
‘দেখ গিয়ে ২০ ছাড়িয়েছে। এতো মেয়ে কেমনে পটায় আল্লাহ মালুম। আর মেয়েদেরও বলি ভাই এতো সহজে পটে কেমনে? আর পটে তো পটে এই ক্যা’রেক্টার ঢিলার কাছেই পড়ে। আর জানিস সবগুলো মেয়ের সাথে প্রেম করার সময় একটু ঝগড়া হলেই আমাার কাছে চলে আসে। পানির বোতল থেকে পানি নিয়ে চোখে দেয় আর বলে, ‘ও আমার সাথে ব্রেকআপ করতে পারবে বল! আমি তো ওকে সত্যিই ভালোবাসি।’
স্পর্শী হাসতে হাসতে পড়ে যেতে নেয়। সামিরা বিরক্ত হয়ে বলে, ‘আরেহ আস্তে। পরের কাহিনী শোন! আমি যদি বলি এতোগুলা গার্লফ্রেন্ড সবার বেলাতেই তো বলিস তুই সবাইকে সত্যিই ভালোবাসিস! এতো গুলো মেয়েকে সত্যিকারের ভালোবাসা যায়? আমার প্রশ্নের উত্তরে সে দাঁত কেলিয়ে বলে, ‘হ্যাঁ বাসা যায় তো। এই দেখ আমি তো সত্যিকারেরই ভালোবাসি। আসলে কি বল তো! আমার মন অনেক বড় তো তাই সবাইকে একটু একটু করে সত্যিকারের ভালোবাসি। এতো বড় মনে এমন ছোট ছোট ভালোবাসা হয়েই থাকে। তুই বুঝবি না।’ ওর কথা শুনে মনে হয় জীবনে কি করলাম আমি? ওরই বোন অথচ একটা ক্রাশও খাইলাম না কারো ওপর!’
বলার সাথে সাথেই হুট করে লাফিয়ে উঠে স্পর্শীকে ধরে বলে, ‘দোস্ত আমি শেষ!’
স্পর্শী ব্যস্ত গলায় বলে, ‘কি হয়ছে কি হয়ছে?’
‘দোস্ত আমারে জলদি হসপিটাল নে। আমার হার্ট অ্যাটাক আসতেছে।’
চলবে..
(আসসালামু আলাইকুম। ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন)#প্রণয়_বর্ষণ (১৬)
#বোরহানা_আক্তার_রেশমী
_______________
কাচুমাচু হয়ে রুদ্রের পিছু পিছু বাড়িতে ঢোকে স্পর্শী। রুদ্রর সাথে কথা বলার সাহস সে পাচ্ছে না। রুদ্রও মুখ গম্ভীর করে আছে। লিভিং রুমে রেহেনা, রাইমা, শফিক শাখাওয়াত বসে ছিলেন। রুদ্রকে এমন গম্ভীর মুখ করে বাড়িতে ঢুকতে দেখে তিনজনই ভ্রু কুঁচকে তাকায়। রাইমা লাফ দিয়ে উঠে স্পর্শীর সামনে দাঁড়িয়ে বলে,
‘কি হয়ছে ভাবি? ভাইয়া এমন হোপ করে আছে কেন!’
স্পর্শী ঢোক গিলে বলে, ‘পরে বলবো। এখন সর!’
রাইমাকে আর কিছু বলতে না দিয়ে দ্রুত নিজের রুমের দিকে যায়। রুমে ঢুকে দেখে রুদ্র রুমে নাই। স্পর্শী বিছানায় বসে নখ কামড়াতে থাকে। রুদ্র কোনো রিয়েক্ট করলে সেটা স্বাভাবিক হতো স্পর্শীর কাছে কিন্তু কোনো রিয়েক্টই করলো না এই বিষয়টা হজম হচ্ছে না স্পর্শীর। টানা আধাঘন্টা লাগিয়ে বের হয় রুদ্র। এই ঠান্ডার মধ্যে সন্ধ্যা বেলা কেউ শাওয়ার নেয়! স্পর্শী চোখ মুখ কুঁচকে বিড়বিড় করে বলে,
‘রক্তের মনে হয় তেজ বেশি। হুহ!’
রুদ্রর দিকে খেয়াল করতেই নজরে পড়ে রুদ্রর ন’গ্ন বুক। টাস্কি খেয়ে বিছানা থেকে পড়তে পড়তেও নিজেকে সামলে নেয়। বুকে থু থু দিয়ে অন্যদিকে তাকায়। রুদ্র টি-শার্ট পড়তে পড়তে শান্ত গলায় বলে,
‘কিছু বলবি!’
স্পর্শী আমতা আমতা করে বলে, ‘আপনি কি আমার ওপর রেগে আছেন!’
রুদ্র কিছু না বলে ল্যাপটপ নিয়ে বসে। কিছুক্ষণ নীরবতায় কাটে। স্পর্শী ভাবে রুদ্র বোধহয় অনেক বেশিই রেগে আছে। তাই মন খারাপ করে বসে থাকে। নীরবতার এক পর্যায়ে রুদ্র বলে,
‘আমি তোর ওপর রেগে নেই তাই অযথা চিন্তা করতে করতে নিজের মাথা খা’রাপ করিস না।’
স্পর্শী এক লাফে রুদ্রের কাছে যায়। রুদ্র ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে তাকায়। স্পর্শী ব্যস্ত গলায় বলে, ‘সত্যি বলছেন?’
‘এটা জিজ্ঞেস করতে এমনে আসাা লাগে!’
‘আরেহ বলেন না! সেদিন তো নাঈম ভাইয়ের সাথে দেখে ঠা’স করে আমার গাল লাল করে দিছিলেন আর আজ বলছেন রেগে নেই!’
রুদ্র ল্যাপটপে মনোযোগ দিয়ে বলে, ‘সেদিন একা একা নাঈমের সাথে ফুসকা খেতে গেছিলি তাই থা’প্প’ড় খাইছিস। কিন্তু আজ তো তেমন কিছু না। তেমন হলে এতক্ষণে ৪/৫ টা থা’প্প’ড় খাইতি। আমার ব্যাক্তিগত জিনিস ১% ও কারো সাথে শেয়ার করতে রাজি নই আমি।’
স্পর্শী ফ্যালফ্যাল করে তাকায়। রুদ্রের কথার মানে বুঝতেই মাথা নিচু করে নেয়। ঠোঁট কামড়ে হেঁসে বিড়বিড় করে বলে, ‘ওলে আমার জেলাস জামাই।’
__________
তানিয়ার নতুন ফ্ল্যাট ফয়সালের বাড়ির কাছে হওয়ায় সে এই সন্ধ্যা বেলায়ই ফয়সালের বাড়ি এসেছে। বড় করে একটা শ্বাস নিয়ে কলিং বেল দেয়। মিনিট ২ বাদেই দরজা খুলে দেয় ফয়সাল। তানিয়াকে দেখেই মুখ গম্ভীর করে নেয়।
‘তুমি এখানে কেন?’
‘আপনার সাথে কথা আছে আমার।’
বাড়ির মধ্যে ঢুকতে নিলে হাত দিয়ে বাঁধা দেয় ফয়সাল। গম্ভীর স্বরে বলে, ‘রাতের বেলা নিশ্চয় কোনো ছেলের বাড়িতে ঢুকা ঠিক না! তাই তুমি যেতে পারো।’
ভ্রু কুঁচকায় তানিয়া। ঠোঁট গোল করে বলে, ‘সন্ধ্যা বেলাকে রাত বানাচ্ছেন কেন? আর একটা ছেলের বাড়িতে যাওয়া ঠিক কি নাা তা আমি বুঝবো। আপনি সরেন।’
‘বেশি সাহস দেখাচ্ছো বলে মনে হয় না?’
‘জ্বি না। আপনি সরবেন নাকি ধা’ক্কা দিয়ে সরাবো?’
ফয়সাল দীর্ঘশ্বাস ফেলে। হাত সরিয়ে নিজেও বাড়ির মধ্যে চলে যায়। তানিয়া পেছন পেছন যায়। সরাসরি বেডরুমে গিয়ে ফিহাকে কোলে নেয়। ফয়সাল ল্যাপটপ নিয়ে বিছানায় বসে থাকে। কিছু বলে না। তানিয়া ফিহার সাথে খেলে। ফিহাকে ঘুম পাড়িয়ে শুইয়ে দেয়। ফয়সাল ল্যাপটপে চোখ রেখেই বলে,
‘ওর সাথে খেলা হয়ে গেছে? এবার যেতে পারো।’
ফিহাকে শুইয়ে দিয়ে ভ্রু কুঁচকায় তানিয়া। কপালে ভাজ ফেলে বলে, ‘একটু বেশি রু’ড হয়ে গেছেন বলে মনে হয় না?’
‘তোমাকে আমি এই বাড়িতে আসতে নিষেধ করছিলাম!’
‘হ্যাঁ তো! তাতে আমার কি! আমি আসবোই। কি করবেন?’
ফয়সাল হাত মুষ্টিবদ্ধ করে তাকায়। রাগী গলায় বলে, ‘বাড়াবাড়ি করো না। ফল ভালো হবে না।’
তানিয়া ভেংচি কাটে। ঠা’স করে সোফায় বসে পড়ে। হাত বগলদাবা করে বলে, ‘বসলাম। আর যাচ্ছি না কোথাও হুহ।’
ফয়সাল ল্যাপটপ সরিয়ে তানিয়ার সামনে এসে দাঁড়ায়। ভ্যাবাচ্যাকা খায় তানিয়া। আমতা আমতা করে বলে, ‘এমন লুকে তাকিয়ে আছেন কেন? কি হয়ছে? দেখেন আমি ভদ্র মেয়ে। এরকম করে তাকালে আমার ভয় লাগে।’
ফয়সাল খপ করে তানিয়ার হাত ধরে। তানিয়া লাফিয়ে উঠে বলে, ‘এই ছাড়েন!’
ফয়সাল শক্ত করে চেপে ধরে তানিয়ার হাত। তানিয়া ব্যাথায় আর্তনাদ করে ওঠে। তাতে পাত্তা না দিয়ে গম্ভীর স্বরে বলে,
‘ভদ্র মেয়েরা কখনো বিবাহিত ছেলের পিছে ঘুরঘুর করে না।’
তানিয়া চুপ হয়ে যায়। ফয়সাল হাত টেনে বাড়ির বাহিরে বের করে দেয় তানিয়াকে। ধমক দিয়ে জোড়ে বলে, ‘গেট আউট। আর কখনো যেনো আমার বাড়ির আশে পাশে না দেখি। নয়তো আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না। বে’হায়ার মতো আমার পিছে ঘুরঘুর করতে দেখলে তুমি মেয়ে এটা আমি মাথায় রাখবো না। গট ইট?’
হতভম্বের মতো তাকিয়ে থাকে তানিয়া। চোখ ছলছল করে। মুখের ওপর ঠা’স করে দরজা বন্ধ করতে নিলে তানিয়া হাত দেয় দরজায়। ফয়সাল আগুন চোখে তাাকায়। তানিয়া হেঁসে বলে,
‘সরি। আপনার বাড়িতে আর আসবো না। আর না আপনার পিছে ঘুরঘুর করবো! আর হ্যাঁ থ্যাঙ্কস।’
বলেই উল্টো ঘুরে হাঁটা লাগায়। ফয়সাল একপলক সেদিকে তাকিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। মাাথা চেপে বসে থাকে।
_____________
সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে স্পর্শী নিজেই ব্রেকফাস্ট তৈরী করে। রাইমা টুকটাক সাহায্য করেছে। রেহেনা শুধু দেখছে আর ফুলছে। কিছু বলতেও পারছে না সহ্যও করতে পারছে না। স্পর্শী সব টেবিলে এনে আড়চোখে তাকায় শাশুড়ীর দিকে। গলা পরিষ্কার করে বলে,
‘শ্বাশু মা কিছু বলবেন?’
রেহেনাা ভ’য়ং’কর দৃষ্টিতে তাকায়। কোনো উত্তর না দিয়েই গটগট করে চলে যায়। রাইমা আর স্পর্শী হাসে। তারপর দুজনে নিজেদের রুমে যায়। রুদ্রকে তখনো ঘুমাতে দেখে স্পর্শী ডেকে তোলে। রুদ্র ফ্রেশ হলে দুজনে একসাথে নিচে নামে। হুট করেই কেউ এসে রুদ্রকে জড়িয়ে ধরে। হা করে তাকায় স্পর্শী। রুদ্র নিজেও ভ্রু কুঁচকে তাকায়। মেয়েটা উত্তেজিত স্বরে বলে,
‘রুদ্র তুমি কত্তো হ*ট হয়ে গেছো। কত্তদিন পর দেখতেছি তোমাকে।’
রুদ্র মেয়েটাকে ছাড়িয়ে দেয়। তারপর চোখ মুখ শক্ত করে বলে, ‘আমি তোর বড় তাই রুদ্র ভাই বল। আর নেক্সট টাইম থেকে এভাবে গায়ে ঘেষবি না+ল্যাঙ্গুয়েজ ঠিক করে কথা বলবি। তোর এসব আজাইরা স্বভাব আমার পছন্দ না।’
মেয়েটা হেঁসে বলে, ‘কাম অন রুদ্র ভাই। ইটস নরমাল।’
রুদ্র পাত্তা না দিয়ে চুপচাপ ডাইনিং এ গিয়ে বসে। স্পর্শী তখনো ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে। মেয়েটা এমন করে জড়িয়ে ধড়লো আর রুদ্র কিছু বললো না! গাল ফুলিয়ে রুদ্রের পাশের টেবিলে বসে। রুদ্র একবার তাকিয়ে আর কিছু বলে না। চুপচাপ খেতে থাকে। স্পর্শী রাগে ঠা’স করে রুদ্রের পায়ে পাড়া দেয়। রুদ্র আর্তনাদ করতে গিয়েও করে না। চোখ মুখ কুঁচকে তাকায় স্পর্শীর দিকে। বিড়বিড় করে বলে,
‘হঠাৎ এতো ক্ষে’পে গেলো কেন? আজব!’
রাইমা সিড়ি দিয়ে নামতে নামতে ‘নিতু’ আপু বলে চিল্লিয়ে উঠে। ভ্যাবাচ্যাকা খায় স্পর্শী আর রুদ্র। রাইমা দৌড়ে এসে খুশিতে নিচে দাঁড়িয়ে থাকা নিতুকে জড়িয়ে ধরে৷ স্পর্শী চুপচাপ দেখতে থাকে। রুদ্র একটু করে খায় আর স্পর্শীর মুখের দিকে তাকায়। রাইমা নিতুকে টেনে এনে দাঁড় করায় স্পর্শীর সামনে। উত্তেজিত হয়ে বলে,
‘ভাবি এটা নিতু আপু। আমার চাচাতো বোন। আর নিতু আপু এইটা স্পর্শী, আমার মামাতো আপু+ ভাবি।’
স্পর্শী জোড় করে হাসি দেয়। নিতু ভ্রু কুঁচকে বলে, ‘ভাবি মানে? তোর কোন ভাইয়ের বউ এটা?’
‘আমার একটাই ভাই। তারই বউ এটা।’
নিতু অবাক কন্ঠে বলে, ‘তার মানে রুদ্রের..!’
রাইমা হেঁসে মাথা নাড়ায়। নিতু দ্রুত পায়ে রুদ্রের চেয়ারের কাছে এসে বলে, ‘তুমি বিয়ে কবে করেছো রুদ্র? আর তুমি বিয়ে কিভাবে করতে পারো!’
স্পর্শী চেয়ার সরিয়ে উঠে আসে। নিতুর হাত ধরে রুদ্রের কাছ থেকে সরিয়ে দাঁত বের করে বলে, ‘বিয়ে হয়েছে দুইদিন আগে। আর তুমি বিয়ে করে নেও তাহলে জানতে পারবে মানুষ বিয়ে কিভাবে করে! ঠিক আছে?’
নিতু কটমট দৃষ্টিতে তাকায়। স্পর্শী দাঁতে দাঁত চেপে রুদ্রকে উদ্দেশ্য করে বলে, ‘এবার যাওয়া যাক?’
রুদ্র পানি খেয়ে মাথা নাড়ায়। রুদ্র ডাইনিং ছেড়ে উঠলে নিতুও তার কাছে যেতে নেয়। কিন্তু আটকে দেয় স্পর্শী। হাত ধরে রাইমার পাশে দাঁড় করিয়ে কানের কাছে মুখ এনে বলে,
‘আমি একটা মেয়ে তাই আরেকটা মেয়ের চোখ দেখলেই বুঝতে পারি সে কোন দৃষ্টিতে কার দিকে তাকাচ্ছে! আমার জামাইয়ের থেকে দুরে থাকো ননদিনী। নয়তো…’
তারপর চুপচাপ গাড়ির দিকে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায়। পেছন থেকে রাইমা চোখ বড় বড় করে বলে, ‘ভাবিজান জেলাস! ওয়াও!’
স্পর্শী ভার্সিটি এসে চুপচাপ নেমে যায়। পুরো রাস্তায় একটাও কথা বলেনি সে। রুদ্রও চুপ করে ছিলো। স্পর্শী এতে আরো বেশি রেগে গেছে। গাড়ি থেকে নেমে গটগট করে ভার্সিটির ভেতরে চলে যায়। রুদ্র গালে হাাত দিয়ে বলে,
‘জড়িয়ে ধরেছে বলে এতো জেলাস! তাহলে তো আরেকটু জেলাস করায় যায়।’
স্পর্শী ক্যাম্পাসে এসে দেখে সবাই এসেছে কিন্তু তানিয়া আসেনি। ভ্রু কুঁচকে বলে, ‘সবার আগে তো তানুই আসে আজ ‘ও’ আসেনি?’
সাফিন বলে, ‘নাহ রে। কল করছিলাম বাট বললো ওর নাকি শরীর ভালো না তাই আসবে না।’
সামিরা মন খারাপ করে বলে, ‘ওকে ছাড়া আমরা ক্লাস করবো কিভাবে বল! তার থেকে বরং আমরাাও আজ ক্লাস বাঙ্ক দিয়ে ওকে দেখে আসি।’
বাকি সবাইও তাল মেলায়। স্পর্শী বিড়বিড় করে বলে, ‘ফাঁ’কিবাজ একেকটা।’
অগত্যা আর ক্লাস করা হলো না। সবাই মিলে ছুটলো তানিয়ার বাড়ির উদ্দেশ্যে। রাস্তায় গিয়ে দাঁড়াতেই সাফিন বলে,
‘কিছু খেয়ে নিলে ভালো হতো না রে? তানু যে কি’প্টা যদি আমারে খেতে না দেয়!’
সামিরা বলে, ‘তোর পিছনে লা’থি না খায়তে চাইলে চুপচাপ চল। আর এই ৩ জনে যা রিক্সা নিয়ে আয়।’
নীরব, নাহিদ, সাফিন চুপচাপ রিক্সা আনতে যায়। স্পর্শী হেঁসে বলে, ‘সাফিনের গফের কি খবর রে? ১৬ নাম্বার গিয়ে ১৭ হয়ছে?’
‘দেখ গিয়ে ২০ ছাড়িয়েছে। এতো মেয়ে কেমনে পটায় আল্লাহ মালুম। আর মেয়েদেরও বলি ভাই এতো সহজে পটে কেমনে? আর পটে তো পটে এই ক্যা’রেক্টার ঢিলার কাছেই পড়ে। আর জানিস সবগুলো মেয়ের সাথে প্রেম করার সময় একটু ঝগড়া হলেই আমাার কাছে চলে আসে। পানির বোতল থেকে পানি নিয়ে চোখে দেয় আর বলে, ‘ও আমার সাথে ব্রেকআপ করতে পারবে বল! আমি তো ওকে সত্যিই ভালোবাসি।’
স্পর্শী হাসতে হাসতে পড়ে যেতে নেয়। সামিরা বিরক্ত হয়ে বলে, ‘আরেহ আস্তে। পরের কাহিনী শোন! আমি যদি বলি এতোগুলা গার্লফ্রেন্ড সবার বেলাতেই তো বলিস তুই সবাইকে সত্যিই ভালোবাসিস! এতো গুলো মেয়েকে সত্যিকারের ভালোবাসা যায়? আমার প্রশ্নের উত্তরে সে দাঁত কেলিয়ে বলে, ‘হ্যাঁ বাসা যায় তো। এই দেখ আমি তো সত্যিকারেরই ভালোবাসি। আসলে কি বল তো! আমার মন অনেক বড় তো তাই সবাইকে একটু একটু করে সত্যিকারের ভালোবাসি। এতো বড় মনে এমন ছোট ছোট ভালোবাসা হয়েই থাকে। তুই বুঝবি না।’ ওর কথা শুনে মনে হয় জীবনে কি করলাম আমি? ওরই বোন অথচ একটা ক্রাশও খাইলাম না কারো ওপর!’
বলার সাথে সাথেই হুট করে লাফিয়ে উঠে স্পর্শীকে ধরে বলে, ‘দোস্ত আমি শেষ!’
স্পর্শী ব্যস্ত গলায় বলে, ‘কি হয়ছে কি হয়ছে?’
‘দোস্ত আমারে জলদি হসপিটাল নে। আমার হার্ট অ্যাটাক আসতেছে।’
চলবে..
(আসসালামু আলাইকুম। ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন)