#প্রণয়সন্ধি– ০২ পর্ব
#তাসনিম_তামান্না
আজ অফিসে আসতেই দেখলো এস.জে ফ্যাশন এন্ড গ্লামার ওয়াল্ড এর এমডি জুবরান আহমেদ আসা উপলক্ষে পার্টি অনুষ্ঠিত হবে। সেটার গসিপিং চলছে। শানায়া আসতেই তানিয়া ডেকে পাঠাল
–‘ জী ম্যাম ডেকে ছিলেন ‘
–‘ বসো… তোমাকে একটা বিশেষ কথা বলার আছে’
–‘ জী ম্যাম বলুন’
–‘ আজই আমার অফিসের শেষ দিন… ‘
শানায়া অবাক কণ্ঠে বলল
–‘ মানে? কী বলছেন ম্যাম আপনি ছাড়া কীভাবে হবে?’
–‘ তোমাদের বস চলে এসেছে আমার এখানে আর দরকার পড়বে না তাছাড়া অফিস সংসার, বেবিকে সামলাতে গিয়ে আমি হিমসিম খেয়ে যায়। ‘
শানায়া মন খারাপ করে বলল
–‘ আপনাকে মিস করব ম্যাম’
তানিয়া হেসে বলল
–‘ আমি ও তোমাদের মিস করব। আর হ্যা তোমার কাজ আমার সাথে যেমন বেশি ছিল জুবরানের সাথেও হবে। তোমার জেনে রাখা দরকার জুবরান কিন্তু একটুতেই রেগে যায় একটু বুঝে শুনে কাজ করো’
শানায়া ভয়ে ঢোক গিলে বলল
–‘ জী ম্যাম ‘
শানায়া আকাশকুসুম ভাবতে ভাবতে ডেক্সে এসে বসল। শানায়াকে দেখে কয়েকজন গার্লস কলিগ এসে বলল
–‘ হেই শানায়া কালকে কি পড়বে?’
শানায়া হেসে বলল
–‘ এখনো ঠিক করি নি। তোমরা ইতিমধ্যে ঠিক করে ফেলেছ?’
–‘ আমরা ঠিক করে পারছি না কি পড়ব ‘
–‘ এক কাজ করি চল সকলে শপিংয়ে যায়’
শানায়া বলল
–‘ তোমরা যাও আমি কিছু কিনব না’
ওদের কথার মাঝে তানিয়া এসে উপস্থিত হতেই সকলের দৃষ্টি ওনার দিকে গেলো।
–‘ হ্যালো এভরিওয়ান তোমাদের জন্য একটা সুখবর আছে’
সকলে কৌতুহলী দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল
–‘ কী ম্যাম’
–‘ কালকের পার্টির জন্য তোমাদেরকে শো রুম থেকে ড্রেস দেওয়া হবে তোমাদের পছন্দ মতো নিয়ে নিও।’
সকলের খুশি উপচে পড়তে লাগল। কিন্তু শানায়ার মাথায় অন্য কিছু ঘুরছে পার্টি নিয়ে অন্য সবার মতো এতো এক্সাইটেড কাজ করছে না। শানায়া আগে জানত না জুবরান এখানকার ওনয়ার জানলে কিছু তেই এখানে জব নিত না। কিন্তু এখন ভেবে ফেলেছে আরেকটা জব খুঁজে এ জবটা ছেড়ে দিবি। যেহেতু জুবরান এখানকার ওনয়ার ও নিশ্চয়ই চাইবে না শানায়াকে চোখের সামনে ঘুরঘুর করুক ওকে দেখতে বিরক্ত হয়ে চাকরি থেকে বের করে দিবে। তাই ওকে বের করে দেওয়ার আগে শানায়া নিজেই চলে যাবে বলে মনস্থির করে নিলো।
পার্টির জন্য সকলের মাঝে এক্সাইটেড হয়ে তানিয়া ম্যামের কাছে হাফ আওয়ারে ছুটি নিল। তানিয়া ও হাসি মুখে সকলকে ছুটি দিয়ে দিল। সকলে চলে যেতেই শানায়া তানিয়া ম্যামকে বলল
–‘ ম্যাম কাল যদি না আসি কোনো প্রবলেম হবে কি?’
তানিয়া চিন্তিত হয়ে বলল
–‘ আসবে না কেনো? কোনো সমস্যা? ‘
–‘ না আসলে ম্যাম রাত করে বাসায় ফেরা আমার বসায় পছন্দ করে না’
–‘ এমন একটা দিনে তুমি থাকবে না তা কি করে হয়! আচ্ছা বেশিক্ষণ থাকতে হবে না তাড়াতাড়ি চলে যেও। তবুও তোমাকে থাকতে হবে’
শানায়া দীর্ঘ শ্বাস ছাড়লো। লোকটার কাছ থেকে যতই পালাতে চাই ততই যেনো লোকটার সাথে আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে পড়ছে।
শানায়া বাসায় ফিরে দেখলো শায়লা হাসান দুপুরের রান্নাবান্না শেষ করে গোছলের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে শানায়াকে এই অসময়ে বাসায় দেখে তিনি বিচলিত হয়ে বলল
–‘ কি রে এতো তাড়াতাড়ি আসলি শরীর খারাপ লাগছে না-কি? ‘
শায়লা হাসান অল্পতেই বিচলিত হয়ে পড়েন তার টেনশনে শেষ নেয় জেনো! শানায়া বলল
–‘ ওফ্ফ মামনি তুমিও না কাল অফিসে পার্টি বুঝলে তাই আজ সকলে মিলে ছুটি নিয়েছে।’
–‘ তাই বল যা ফ্রেশ হয়ে নে’
শানায়া কথা না বাড়িয়ে চলে গেলো। এখন বাসায় কেউ নেই। এটা মধ্যেবিত্ত ফ্যামিলি। সুখ দিয়ে দুঃখ ঢেকে রাখা। মিরাজ শানায়ার মাঝে মাঝে খুব মায়া লাগে শায়লা হাসান আর মিরাজ হাসানের জন্য তারা এতো ভালো অথচ ছেলেকে ছাড়া এতোগুলা বছর আছে ছেলেটাও কেমন যে এতোগুলা বছর মিষ্টি একটা পরিবারকে ছেড়ে ওতোদূরে গিয়ে বিদেশিনীকে বিয়ে করে সংসার করছে তার কি বাবা-মা’র কথা মনে পড়ে না? পাপড়ি আপুও কেমন চুপচাপ থাকে। দিন নাই রাত নাই সাংবাদিকতায় নিয়ে ব্যস্ত থাকে। শানায়া মনে মনে ভাবল এই মানুষ টার সাথে অনেক গল্প করবে।
বিকাল বেলা গোধুলির লগ্নে শানায়া মাইন্ড ফ্রেশ করতে ছাদে গেলো। গাছে পানি দিয়ে ছাদে কার্নিশ দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকল শীতল বাতাস এসে ছুঁয়ে যাচ্ছে ওকে। দূর থেকে প্রিয়সীকে মন ভরে দেখছে জুবরান কালকে শানায়াকে দেখার পর আজকে আবার দেখার লোভ সামলাতে পারে নি। তাইতো ছুটে চলে এসেছে।
কিন্তু কিছুক্ষণ পর শানায়ার পাশে একটা ছেলে এসে দাড়াতেই জুবরানের ভ্রু কুঁচকে গেলো।
–‘ আরে সুন্দরী যে, কেমন আছ?’
শানায়া বেশ স্বাভাবিক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল
–‘ ভালো আছি। আপনি?’
–‘ আমি ও ভালো আছি। তুমি কি কোনো কিছু নিয়ে চিন্তিত? ‘
–‘ নাহ!’
–‘ তোমার গেমরামুখ রোবট বোনের সাথে থাকতে থাকতে তুমি ও ওমন হয়ে যাচ্ছো’
–‘ আচ্ছা আপু আপনার কোন জন্মের শত্রু সবসময় আপুর সব কিছুতে দোষ খুঁজে পান’
রায়হান ফিসফিস করে বলল
–‘ শুনো হে শালিকা তোমার আপু তো আমাকে পাত্তা দেয় না যদি পাত্তা দিত তাহলে তোমার আপুকে মাথায় করে রাখতাম আমারকে পাত্তা দেয় না বলে রাগাতে ভালো লাগে যদি এই সুযোগে বোবার মুখে খই ফুটে’
শানায়া ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে রইল তখনি পাপড়ির রাগান্বিত কণ্ঠ ভেসে আসল
–‘ শানায়া এই অসভ্য লোকটা তোকে কি আজেবাজে শেখাচ্ছে? আর তুই সেগুলো শুনচ্ছিস?’
শানায়া কি বলবে খুঁজে পেলো না। লোকটা আপুকে দেখে ইচ্ছে করে কথা গুলো শুনিয়ে শুনিয়ে বলছে তা শানায়া বেশ বুঝতে পারল। আর এ ও বুঝল দুজনের মধ্যে এক অদ্ভুত যুদ্ধ চলছে। দুজনের চোখের দিকে তাকালো। রায়হান মায়াভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আর পাপড়ি রাগী চোখে তাকিয়ে আছে।
–‘ তোমাকে রাগলে না পুরাই আপেলের মতো লাগে। ইউ নোউ না মাই ফেভারিট অ্যাপল। ইম্মামি…’
পাপড়ি রেগে তেড়ে এসে রায়হান কে চ’ড় মে’রে বলল
–‘ অসভ্য তার কা’টা ছেলে। সিনিয়র হই আমি তোমার মাথায় রেখো বি’য়া*দ’প ‘
রায়হানকে চ’ড় মা’রতে দেখে শানায়ার গালে হাত চলে গেলো।
–‘ তুই হা করে কি গিলছিস নিচে চল। আর এই ছেলের সাথে যেনো তোকে না দেখি’
জুবরান ছাদের দিকে তাকিয়ে বুঝলে ওখানে কিছু ঘটছে। তিনতালার ছাদ হওয়ার সবটা স্পর্ষ্ট দেখা যাচ্ছে এ এলাকাটা কেমন শান্ত নিরব পরিবেশ। তাই এই বিষয়টা কেউ খেয়াল করল না। আর্শ্চয্য ব্যাপার হলো ছেলেটাকে চ’ড় খেয়েও খুশি দেখাচ্ছে।
চলবে ইনশাআল্লাহ
#প্রণয়সন্ধি– ০৩ পর্ব
#তাসনিম_তামান্না
সন্ধ্যার পার্টি জমে উঠেছে বিভিন্ন ক্ল্যাইন্ট জুবরানের বন্ধুমহল শানায়ার এসব গান বাজনা ভালো লাগছে না। তাই চুপচাপ এককোণে বসে কে কি করছে সবটা দেখছে। তানিয়া ছোট ছেলেটাকে নিয়ে এসেছে দেখতে এতো কিউট যে সবাই কোলে নিয়ে আদর করছে। শানায়ার ও ইচ্ছে করল কোলে নিতে। উঠতে নিলেই রাহাত এসে পাশে বসে বলল
–‘ হেই শানায়া কি অবস্থা? ‘
শানায়া মনে মনে বিরক্ত হলে-ও মুখে প্রকাশ করল না। বিরক্ত হওয়ার কারণ আছেও বটে। কারণ রাহাত মেয়েবাজ সপ্তাহে সপ্তাহে গার্লফ্রেন্ড চেজ্ঞ করা তার স্বভাব এটা অবশ্য সবাই জানে। আজকাল সে শানায়ার পিছনে পিছনে বেশি লাগছে। শানায়া মুচকি হেসে বলল
–‘ এই তো চলছে। আপনার? ‘
–‘ কেমনে ভালো থাকি বলো তোমাকে কবে ফেসবুকে ফেন্ড রিকুয়েষ্ট পাঠিয়েছি তুমি এক্সসেপ্টই করো না ‘
–‘ আসলে আমি সোসাল মিডিয়ার এতোটা একটিভ নই ‘
–‘ তোমাকে আমার এই কারণে ভালো লাগে..’
শানায়া ভ্রু কুঁচকে বলল
–‘ মানে?’
–‘ মানে তুমি সবার থেকে একটু ডিফারেন্ট ‘
–‘ ওহ’
–‘ বাই দ্যা ওয়ে তোমাকে আজ সুন্দর লাগছে ‘
–‘ থ্যাংকিউ ভাইয়া’
শানায়া ভাইয়া বলাই রাহাতের মুখ শুকিয়ে গেলো। শানায়া উঠে গিয়ে কোলে নিলো। বাবুটা ড্যাবড্যাব করে শানায়ার দিকে তাকিয়ে রইলো শানায়া হেসে বলল
–‘ হেই বাবু তোমার নাম কি?
বাবুটা মুখ দিয়ে ‘বু বু’ অদ্ভুত শব্দ করল
–‘ কথা বলতে পারো না তুমি? বাবাহ এতো পিচ্চি তুমি? আমি ভাবলাম তোমাকে আমার মেয়ের সাথে বিয়ে দিব ‘
বাচ্চাটা কি বুঝল কে জানে খিলখিল করে হেসে দু-হাত দিয়ে শানায়ার মুখ ছুঁয়ে তালি দিল। সকলে বাচ্চাটা কে নিয়ে বেশ মজা করলে। সবচেয়ে বড় কথা বাচ্চাটা অপরিচিত লোকজন দেখে কাঁদছে না সকলের কোলে যাচ্ছে।
জুবরান বন্ধুদের সাথে কথা বলার ফাঁকে ফাঁকে শানায়া কে দেখছে। জুবরানের কিছু বন্ধু শানায়াকে চিনে তাই অবাক হয়ে জুবরানকে এটা সেটা প্রশ্ন করছে। তানিয়া ও জানত না শানায়াই সেই মেয়ে এতো দিনে মেয়েটাকে খারাপ মনে হয় নি যতটা খারাপ আগে শুনেছে।
বাবুটা শানায়ার কোলে উঠে আর কারোর কাছে যেতে চাইছে না। সবাই মন খারাপ করে বলছে
–‘ কি যাদু করছ গো শানায়া ‘
শানায়া ঠোঁট উল্টে বাবুটার দিকে তাকিয়ে বলল
–‘ দেখছ সবাই কি বলছে? তুমি দুষ্টুমি করছো? হুম হুম ‘
বাচ্চাটা মুখ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের শব্দ করে কি যে বলছে আর হাসছে। কিছুক্ষণ পর তানিয়া এসে বাচ্চাটা কে নিলো শানায়া বলল
–‘ ম্যাম বাবুর নাম কি?’
–‘ তানিম ‘
–‘ খুব মিষ্টি। ম্যাম আমি কি এবার যেতে পারি?’
–‘ এখনই যাবে? খেয়েছ তুমি? ‘
–‘ হ্যা খেয়েছি ‘
–‘ যেতে পারবে তো একা?’
–‘ হ্যাঁ’
তানিয়ার থেকে বিদায় নিয়ে পিছনে ফিরতে রাহাতের সাথে ধাক্কা খেলো রাহাতের হাতে থাকা কোলড্রিসে শানায়ার জামার পেটের দিকটাই ভিজে গেলো।
–‘ সরি সরি তুমি এভাবে হুট করে পিছনে ঘুরবে বুঝতে পারি নি ‘
বলে টিসু নিয়ে শানায়ার জামা মুছতে এগিয়ে আসতে শানায়া দু কদম পিছিয়ে গিয়ে বলল
–‘ ইট’স ওকে আমি পারবো ‘
–‘ আরে আমার জন্য এমনটা হলো আমি ঠি…’
–‘ বললাম তো আমি পারব রাহাত ভাই’
তানিয়া বলল
–‘ ওয়াশরুম থেকে ঠিক করে আসো শানায়া ‘
–‘ জী ম্যাম’
শানায়া ওয়াশরুম থেকে ঠিক করে বের হতেই পাপড়ি ফোন আসল ফোন রিসিভ করে কানে দিতেই পাপড়ি ধমক দিয়ে বলল
–‘ বিয়া*দপ মেয়ে দিন দিন উৎচ্ছন্নে যাচ্ছি? রাত নয়টা বাজে এখনো বাসার বাইরে কি করিস? ‘
শানায়া লিফটের ভিতরে যেতেই জুবরানও কোথা থেকে লিফটে আসলো ওরা দুজন ছাড়া লিফটে আর কেউ নেই। শানায়া মুখটা ছোট করে বলল
–‘ আমি তো মামনি বাবাইকে বলছিলাম আজ দেরি হবে’
–‘ মুখে মুখে কথা বলবি না।
–‘ আচ্ছা
–‘ আচ্ছা কি হ্যা সব কয়টা বিয়া*দপ’
–‘ তুমি কি রেগে আছ আপু?’
–‘ নাহ
–‘ বুঝছি রায়হান ভাই কিছু বলছে?
–‘ বেশি বুঝিস না ছেলেটা তোর মাথা বিগড়ে দিচ্ছে
–‘ রায়হান ভাইকে শুধু শুধু ভুল বুঝছ ভাইয়া আমাকে কখন মাথা বিগড়ানো কথা বলে নি
–‘ তুই মুখে মুখে কথা বলছি
–‘ আমি মুখে মুখে কথা বলছি না
পাপড়ি হুট করে ফোন কেটে দিল। শানায়া বুঝল পাপড়ির মাথা বেজায় গরম তার ওপরে রাগ ঝড়তেই ফোন দিয়ে এখন বাড়িতে গেলে আরো রাগ ঝাড়বে। শানায়া দীর্ঘ শ্বাস ছাড়লো। ইতিমধ্যে লিফট নিচে চলে এসেছে। জুবরানের দিকে না তাকিয়ে হনহনিয়ে বেরিয়ে পড়ল ভাগ্য ভালো থাকায় সিএনজি ও পেয়ে গেলো।
জুবরান শানায়ার সিএনজির বেশ দূরত্ব রেখে গাড়ি চালাচ্ছে যাতে শানায়া না বুঝতে পারে। শানায়াকে বাড়ি পৌঁছে যেতে দেখে ও আবার পার্টিতে এটেন্ড করতেই তানিয়া চোখ ছোট ছোট করে প্রশ্ন করল
–‘ কোথায় গিয়েছিলি?’
–‘ একটু দরকার ছিল’
–‘ দরকার টা কি শানায়া?’
–‘ যেটা মনে করবি
–‘ তুই আমাকে বলিস নি কেনো এটাই শানায়া’
–‘ বললে কি হত?
–‘ আমাকে রাগাস না জুবরান
–‘ পার্টি এনজয় কর ওসব বাদ দে তো
শানায়া বাসায় এসে পাপড়ির রুমে উঁকি দিতেই দেখল পাপড়ি গম্ভীর মুখে ল্যাপটপ নিয়ে বসে আছে। পাপড়ির চোখে চোখ পড়তেই শানায়া বোকার মতো হে হে করে হাসি দিল তাকে পাপড়ির কোনো ভাবান্তর ঘটল না গম্ভীর মুখে বলল
–‘ গাধার মতো হাসছিস কেনো?’
শানায়ার হাসি থেমে গেলো একটু মন খারাপ করে বলল
–‘ আমার এতো সুন্দর হাসিটাকে তুমি গাধার হাসি বলছ? মনে মেলা কষ্ট পাইলাম’
–‘ ঢং করিস না দূর হ আমার চোখের সামনে থেকে ‘
শানায়া পাপড়িকে জ্বালানোর জন্য বলল
–‘ রায়হান ভাই আজ কি ডোজটা বেশি দিয়েছে এতো মেজাজ যে’
–‘ তোর রায়হান ভাই এর গু’লি মা’রি। এবার এখান থেকে যা ‘
শানায়া আর কিছু না বলে চলে আসলো। পাপড়ি আর কাজে মন বসল না। রায়হান নামক মানুষটা ওকে বড্ড জ্বালাচ্ছে আজ একটা নিউজ কালেক্ট করে কলিগ আর ও মিলে রেস্টুরেন্টে দুপুরের লান্স করতে ছিল। সেখানে কোথা থেকে রায়হান এসে ওর পাশে বসে বলল
–‘ বেইব তোমাকে কত কল করেছি। তুমি রিসিভ করছ না কেনো? এখনো রেগে আছ? প্লিজ আর রাগ করে থেকো না সোনা মনা ‘
রায়হানকে এখানে দেখে প্রথমে অবাক হলেও রায়হানের কথা শুনে বিষম লেগে যায়। রায়হান ব্যস্ত হয়ে পাপড়িকে পানি খাইয়ে দিল
–‘ আরে আরে কি হলো এই নাও পানি খাও’
পাপড়ির কলিগ এসব দেখে বলল
–‘ পাপড়ি তুমি তো আগে বলো নি তোমার এতো হ্যান্সাম কেয়ারিং বয়ফেন্ড আছে ‘
পাপড়ি পরিস্থিতি সামলাতে কৃত্রিম হেসে দাঁতে দাঁত চেপে বলল
–‘ তুমি এখানে কি করছ রায়হান? ‘
–‘ তোমাকে খুজতে খুজতে মনের টানে চলে এসেছি’
–‘ তুমি এখন যাও তোমার সাথে পরে কথা হচ্ছে’
রায়হান যেতে না চাইলেও পাপড়ির চোখ দিয়ে শাসানো দেখে চলে গেছে।
পাপড়ির কলিগ একটার পর একটা প্রশ্ন করছে ‘কিভাবে ওদের প্রেম হলো? কোথায় ফান্স দেখা হলো’ ও সেগুলোর মিথ্যা উত্তর দিতে হিমসিম খাচ্ছে।
এদিকে কলিগ অফিসে গিয়ে রায়হানের কথা বলছে। সবাই দেখতে চাইছে। পাপড়ি পারে না তো এখনি রায়হানকে সামনে পেলে ইচ্ছে মতো কয়টা চ’ড় মারতে পারলে শান্তি পেত।
চলবে ইনশাআল্লাহ