#প্রণয়সন্ধি– ১৮ পর্ব
#তাসনিম_তামান্না
।।অতীত।।
তখন বছরের শেষের দিকে প্রচন্ড হাড়কাঁপানো শীত জুবরান দেশ ছেড়ে যাবার সকল কার্যক্রম শেষ। কয়দিন বাদেই ফ্লাইট এমন সময় জুবরানের মা বেঁকে বসল। তার ধারণা ছেলে বিদেশে গেলে বিগড়ে যাবে। জুবরান তার মা জিনিয়াকে এতো বুঝিয়েও কাজ হয় নি। জুবরান হতাশ হলো তার মা এতো বছরেও তাকে বিশ্বাস করতে পারল না? এর মধ্যে তার মাথায় আসলো ছেলেকে বিয়ে দিবে। ছেলেকে বিয়ে দিলে পিছুটান থাকবে তখন আর খারাপ কিছু করার কথা মাথায় আসবে না। এমন কথা শুনে বাড়ির সবাই খুশিতে ফেটে পড়ল। জুবরান হতভম্ব! বাকহারা হয়ে গেলো মায়ের কাজে। ইতিমধ্যে ঘটকও কাজে লাগিয়ে দিয়েছেন।
জুবরান লজ্জায় মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছে হলো এখনো বড় ভাই, ছোট চাচা বিয়ে করল না আর সে কীনা বিয়ে করবে? বড় আশ্চর্য বিষয়। জুবরান রাগে জিদ্দে সিদ্ধান্ত নিল ও দেশ ছেড়ে কোথাও যাবে না। এতো কিছুপর তো যাবার কোনো মানেই হয় না। জিনিয়া ছেলেকে বোঝালো’ এখন তো সংসার করতে হচ্ছে না। শুধু বিয়েটা করবি’
জুবরান রাগে চিৎকার চেচামেচি করলো ওর রাগের ধার কেউ ধারলো না। ও ভেবে ছিল যে কয়টা দিন বাড়িতে আছে সেকটা দিন সবার সাথে সুন্দর সময় কাটাবে। কিন্তু এই বিয়ের চক্রে বাড়ি থেকে কয় দিনের জন্য চলে গেলো ট্যুর দিতে। এখানে থাকলে ও পাগল হয়ে যাবে। শানায়া জুবরানের কাছে ফোন দিয়ে টিটকারি করে বলল
–‘ কী গো ভাইয়া বিয়ে করবে না বলে লেজ গুটিয়ে পালিয়ে গেছো না-কি?’
জুবরান বেড়াতে এসে যতটুকু মন ভালো হয়েছিল শানায়া কথা কাঁ*টা ঘায়ে নুনেরছিটে লেগে ধপ করে জ্বলে উঠল। জুবরানকে চুপ থাকতে দেখে শানায়া বলল
–‘ আরে বিয়েতে রাজি হয়ে যাও। মেয়ে সেই সুন্দরী তুমি দেখলে তোমার মাথা ঘুরে যাবে। বলতে পারো মিস ওয়াল্ড। তখন আর বিয়েতে না বের হবে না’
জুবরান রাগে চিৎকার দিয়ে বলল
–‘ রূপ দিয়ে যায় আসে না আমার। আমি তার মায়ায় পড়ে অন্য মেয়েকে বিয়ে করব তুই ভাবলি কীভাবে?’
শানায়া কথাটা বুঝতে সময় নিলো। বোঝার সাথে সাথে যেনো পৃথিবীর সবচেয়ে আশ্চর্য রকমের কথা শুনে আকাশ থেকে টুপ করে পড়লো এমন মুখোভঙ্গি করে কণ্ঠে বিস্ময় ঢেলে বলল
–‘ হোয়াট! ইউ ফল ইন লাভ উইথ হার!’
জুবরান বিরক্তিতে ‘চ’ শব্দ করে বলল
–‘ সেটা মেয়ে হবে না তো কী ছেলে হবে? আমাকে কী তোর ে*গ মনে হয়?’
শানায়া বুঝল ও বোকার মতো কথা বলে ফেলেছে। জুবরান রেগে আছে তাই এমন অ*শ্লী*ল কথা বলছে নাহলে ও কখনো এমন কথা বলার মানুষ না। তাই ধীর কণ্ঠে বলল
–‘ মেয়েটা কে ভাইয়া? তুমি বাসায় কেনো বলছ না? বললেই সবাই মেনে নিবে’
জুবরান বোধহয় একটু শান্ত হলো তাই শান্ত কণ্ঠে বলল
–‘ তার এখনো বিয়ের বয়স হয় নি’
শানায়া চোখমুখ কুঁচকে বলল
–‘ ছি: ছিঃ কত ছোট মেয়ে? আমার চেয়ে ছোট? সিক্স/ সেভেনে পড়ে না-কি? আরে এটা কোনো ব্যাপার? দাদুমণি বলে শুনো না? আমার এখন বিয়ে হলে ৪/৫ টার বাচ্চার মা হয়ে যেতাম।’
জুবরান চোখমুখ শক্ত হয়ে এলো আবার রুদ্ধ কণ্ঠে বলল
–‘ খুব বিয়ে করার শখ দেখছি’
–‘ তো থাকবে না? আমাকে যদি এখন কেউ বিয়ে করতে বলে আমি একপায়ে রাজী তোমার মতো ঢং করতাম না’
–‘ ফোন রাখ খবরদার আমাকে ফোন দিবি না। তোর কথা শুনলে আমার রাগে মাথা দপদপ করছে’
বলে ফোন কেটে দিলো শানায়া মন খারাপ করে বসে রইল। কী করা যায় ভাবতে ভাবতে মনে হলো চুপিচুপি কথাটা মামণির কানে তোলা দরকার নাহলে ছেলের জন্য বউ খুঁজতে খুঁজতে হয়রানি হয়ে যাচ্ছে এদিকে কেস অন্য জুবরান যে ছেলে যে মেয়েকে ঠিক করেছে সেই মেয়েকেই বিয়ে করবে। শানায়া যে-ই ভাবনা সেই কাজ করে ফেললো এতো সব শুনে জিনিয়ার মাথায় হাত। জুলেখা মেয়েকে চোখ রাঙানি দিয়ে বলল
–‘ ওর কথা বিশ্বাস করিস না জিনিয়া। আমার মেয়ে আস্ত বদের হাড্ডি।’
শানায়া কোমড়ে হাত দিয়ে বলল
–‘ তোমার কী আমাকে পাশের বাসার আন্টির মতো কুচুটে বুড়ি মনে হয়?’
–‘ বেশি পাকনামি করিস না। মা*র খাবি আমার কাছে। বড়দের কথার মধ্যে আসবি না’
শানায়া মুখ ভেংচি কেটে যেতে যেতে বলল
–‘ যা পারো তাই করো ছোটো দের কথা তেঁতো হলেও মিষ্টি হয়’
শানায়ার কথাটা জিনিয়া মাথায় রাখল কিন্তু স্বাভাবিক থাকল। জিনিয়া বুদ্ধিমতী মহিলা কোথাও সন্দেহের আঁচ পেলে সেটাকে খুঁজে বের করার ওস্তাদ। শানায়ার কথার সুর ধরে তিনি চিরুনি তল্লাশি চালালেন ছেলের ঘরে কিছু না কিছু তো পাবেন ই তার ধারণা ঠিকি হলো। জুবরানের বইয়ের সাথে খুব সাক্ষাৎ সেই সাথে নিজেকে কাব্যিক প্রমাণ করার চেষ্টা করে নিজের ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে ডায়ারির পাতায় পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা রংবেরঙের কালি খুঁয়ে কত-শত কথা, কবিতা, স্বপ্ন লেখা। জিনিয়া জানে কারোর পার্সোনাল জিনিস নেওয়ার আগে তার থেকে পারমিশন নেওয়া উচিত কিন্তু এই সময় এমন মুখম প্রমাণ পেয়ে হাত ছাড়া করলেন না লুফে নিলেন। পুরো ডায়ারি পরে ওর রাগে হাত-পা থরথর করে কাঁপছে। জিনিয়া যেটা ভেবেছিল জল তার থেকে বেশি দূর গড়িয়েছে এক্কেবারে ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
ডায়ারি পড়ার পর থেকে জিনিয়া একেবারে চুপ মে*রে গেছে। বাড়িতে এসব জানাজানি হলে সংসারের হাঁড়ি আলাদা হতে সময় লাগবে না। যেখানে পুরো দোষটায় জুবরানে সেখানে অন্য কে কীভাবে কী বলবে? ভেবে কুল পাচ্ছে না। জুবরানের বাবাকেও কথাটা জানিয়েছে তিনি খুশি হয়েছে। জুবরানের বাবা মনে মনে ঠিক করে ফেলেছে চুপিচুপি মায়ের সাথে এটা নিয়ে সলাপরামর্শ করবেন ছেলে যখন একজন কে পছন্দ করেছে তার ওপরে বাড়ির মেয়ে তখন আর না করার কোনো মানে হয় না। আর যদি একবার মা রাজি হয়ে যায় তাহলে সবাই রাজি কেউ টু শব্দ করার সময় পাবে না তার আগেই বিয়ে হয়ে যাবে। তিনি একথা স্ত্রীকে জানালেন না নিজের মনে ছক কষে চেপে রাখলেন।
চলবে ইনশাআল্লাহ
#প্রণয়সন্ধি– ১৯ পর্ব
#তাসনিম_তামান্না
শিশির ভেজা কুয়াশা আচ্ছন্ন সকালে জুবরান ফিরল। মায়ের সাথে ফোনে কথা হলেও মায়ের কথায় বুঝতে পেরেছে মা বেশ রেগে আছে। তাই যতদ্রুত সম্ভব চলে আসল। বাসায় এসে জিনিয়া দরজা খুলে দিল গম্ভীর মুখে। মায়ের রাগ ভাঙাতে আহ্লাদী হয়ে কতশত কথা বলল কিন্তু জিনিয়ার মুখভঙ্গি বদলালো না। সেই ভাবে গম্ভীর কণ্ঠে বলল
–‘ ফ্রেশ হয়ে খেয়ে ঘুম দাও রাত নিশ্চয়ই ঘুম হয় নি’
জুবরান হতাশ হয়ে রুমে চলে গেলো। সারাদিন ঘুমিয়ে বিকালের দিকে ঘুম ভেঙে সাওয়ার নিয়ে নিচে সবাই হৈ-চৈ করছে ফুপি এসেছে তার ছোট দুই ছেলে, আর মেয়ে লোফা এসেছে। লোফা আর শায়ানা সময়বয়সী কিন্তু তার অভিব্যাক্তি জুবরানের মোটেও পছন্দ না। ছেলেদের সাথে চিপকে থাকতে চাই। শানায়ার সাথে হুদাই ঝগড়া লাগে যেনো দুজনের শত্রুর। এখনো দুজনের আচ্ছা করে ঝগড়া লেগেছে। শুধু চুল ছেঁড়া বাকি। জিনিয়া, জুলেখা, শানায়ার ফুপি শেফালী কিছুতেই থামাতে পারছে না। ঝগড়ার মূল কারণ লোফা শানায়ার রুমে গিয়ে মেকাপে জিনিসপত্র ঘেঁটে এলোমেলো করে ওর রিং লাইট ভেঙে রেখে আসছে। আর লোফা সেটা বার বার অশিকার করছে ও কিছুতেই শিকার করতে নারাজ। হাতাহাতি লেগে গেছে। জুবরান শিরিতে দাঁড়িয়ে দেখছে আর মজা নিচ্ছে। ওদের ধমকে ধামকিয়ে থামালো শানায়ার দাদি চাঁদনি বেগম। তিনি মূলত আজ সবাইকে সন্ধ্যায় থাকতে বলেছে কী না-কি জরুরি কথা বলবে!
সন্ধ্যায় বড়রা সকলে একজায়গায় হলো। চাঁদনি বেগম একপাশে জুবরান আরেক পাশে শানায়াকে বসিয়ে বলল
–‘ তোমাদের সকলকে একটা বিশেষ কারণে একজায়গায় করেছি। সিদ্ধান্ত আমার নেওয়া শেষ শুধু তোমাদের জানাতে আজ এই মিলন সভা।’
শেফালী ধৈর্য্য হারা হয়ে বলল
–‘ কী কথা আম্মা ভনিতা না করে সরাসরি বলো’
–‘ শেফালী তুমি বড্ড ধৈর্য্যহীন। এমন হলে তুমি চলে যেতে পারো’
অপমানে শেফালীর মুখ থমথমে হয়ে গেলো। চাঁদনি বেগম আবার বলতে শুরু করল
–‘ বড় বউ-মা যেহেতু জুবরানের জন্য মেয়ে খুঁজছে তাই আমি অনেক ভেবে দেখলাম। পরের মেয়ে না এনে বাড়ির মেয়ে বাড়িতেই থাকুক।’
শানায়ার বাবা শাহাদাত বলল
–‘কার কথা বলছেন আম্মা?’
–‘ শানায়া আর জুবরানের বিয়ে কথা বলছি। এটা শুধু বলছি-ই না এটা আমার সিদ্ধান্ত আশা করি কেউ দ্বিমত করবে না’
বিস্ময়ে সবাই বাকহারা হয়ে গেলো। জুবরানের ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটিয়ে আবার গম্ভীর করে নিল। শানায়া ফ্যালফ্যাল করে চাঁদনির মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষণ তারপর চিৎকার দিয়ে বলল
–‘ অসম্ভব দাদুমণি! তুমি কিছু না জেনে এসব কী বলছ? জুবরান ভাই একটা মেয়েকে ভালোবাসে। আমি তাকে কিছুতেই বিয়ে করব না। যদি ফুচকাওয়ালার সাথে বিয়ে দিতে তাও রাজি হতাম।’
–‘দিদিভাই আমার সিদ্ধান্ত নেওয়া শেষ। আমার অবাধ্য হওয়া আমার পছন্দ না।’
জুলেখা তেতে উঠে বলল
–‘ কী বলছেন আম্মা এসব? আমার মেয়ে এখনো ছোট ওর বিয়ে নিয়ে এখনো ভাবি না আর আপনি এসব কী বলছেন’
চাঁদনি বেগমের মেজো ছেলের বউকে পছন্দ না সে যেখানে সেখানে দুমদাম কথা বলে আবার যেসে কথা না উচিত কথা কী ভেবে বলে না।
–‘ মেজো বউ তোমার একটা মাত্র মেয়ে তা-ও অনেক সাধনার পর। তোমার মেয়েকে তোমার কাছে রাখার ব্যবস্থা করছি তোমার যদি পছন্দ না হয় কিছু করার নাই সিদ্ধান্ত নেওয়া শেষ’
জুলেখা শান্ত হলো। আদরের মেয়েকে তিনি বা তার স্বামী দূরে রেখে থাকতে পারবে না। তাই শাশুড়ির কথা যুক্তিসই মেনে মিনমিনে বলল
–‘ বিয়ে দিবেন ঠিক আছে কিন্তু আর দুইবছর পরে দিন ওতো এখনো ছোট কীভাবে সামলাতে সব?’
–‘ ক্যান আমি বিয়ে করি নাই? তাছাড়া ওরা তো এখন সংসার করছে না বড়বউয়ের ছেলের পিছুটান রাখতে বিয়ে হচ্ছে জুবরান বিদেশ থেকে ফিরলে ধুমধামে বিয়ে হবে। আমি ভেবেছি কাল শুক্রবারই বিয়ে। কাউকে বলার দরকার নেই শুধু বাড়ির কয়জন আর তোমাগো বাপের বাড়ির লোকজন। সবটা আজ রাতের মধ্যে গুছিয়ে নাও’
আর কেউ কিছু বলার সাহস পেলো না চাঁদনি বেগম যে আটঘাট বেঁধে নেমেছে সেটা বেশ বুঝল সবাই। জুবরানের মনে লাড্ডু ফুটছে। জিনিয়া ভেবে পাচ্ছে না কী থেকে কী হচ্ছে সবটা ভেবেছিল আজ রাতে ছেলেকে এসবের জন্য শাসন করবে বোঝাবে। কিন্তু এখন ভাবছে কী বোঝাবে? সব ভাগ্যর খেলা।
–‘জুবরান ভাইয়া শুনো আমি তোমার মতো ছ্যাঁকা খোর ছেলেকে বিয়ে করব না। তুমি দাদুমণিকে বারণ করো বুঝাও যা ইচ্ছে করো’
জুবরান ওর আলমারি ঘেঁটে সাদা পাঞ্জাবি খুঁজছিল কাল বিয়ে তে পড়বে বলে। এমন সময় শানায়ার দরজায় দাঁড়িয়ে বলল কথাটা। সে কথা শুনে মাথায় আগুন ধরে গেলো চট করে পিছনে ঘুরে বলল
–‘ হোয়াট ডু ইউ মিন বাই ছ্যাঁকা খোর ছেলে?’
–‘ ছ্যাঁকা খোর ছেলে মানে বুঝো না? তুমি না একজনকে ভালোবাসো? সে তোমাকে বিয়ে করছে না তার জন্য তুমি ছ্যাঁকা খেয়েছ তাহলে কী দাঁড়ায় বলো তো? তুমি ছ্যাকা খোর তাই আমি তোমাকে বিয়ে করব না’
জুবরানের পেট ফেটে হাসি পাচ্ছে সেটা চেপে রেখে বলল
–‘ তুই আমাকে ছ্যাঁকা খোর ছেলে বলার জন্য শাস্তি স্বরূপ আমাকে বিয়ে করতে হবে’
–‘ কিছুতেই না। আমি আর বলব না সত্যি তুমি বিয়ে ভেঙে দাও’
–‘ বলেছিস যখন শাস্তি পেতেই হবে’
শানায়া আরো কিছুক্ষণ জুবরানকে কিছুক্ষণ মানানোর চেষ্টা করেও পারল না। পরে বিরক্ত হয়ে হু-ম-কি দিয়ে বলল
–‘ আমাকে বিয়ে করলে তোমার জীবন তেজপাত করে দিব’
কথাটা বলে দুপদাপ পা ফেলে রুমে গিয়ে ধরাম করে দরজা লাগালো। নিজের রাগটা বোঝানোর চেষ্টা করছে। ও যেতেই জুবরান বিছানায় হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খেতে লাগল।
•
পরের দিন দুপুরের দিকে বেশ সাদামাটা ভাবে বিয়ের কার্যক্রম শেষ হলো। সবটা যেনো রঙিন স্বপ্নের মতো। সকল বাধা-বিপত্তি কাটিয়ে দুজন পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হলো সারাজীবনের জন্য। শানায়া কবুল বলার সময় অন্য মেয়েদের মতো কাঁপা-কাঁপি, দেরি করে নি। জুবরানের দিকে তাকিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে কবুল বলে দিয়েছিল। যখন আয়নায় তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলো কাকে দেখতে পারছ শানায়া বলল ‘ তেজপাতা’
ঘরভর্তি মানুষ হেসে উঠল। জুবরান বলল ‘মায়াবতীকে’
শানায়া বুক ধুকপুক করে উঠল জুবরানের কথা শুনে। সন্ধ্যা গড়াতে সকলে চলে গেলো রয়ে গেলো ছোটরা। সবাই স্বাভাবিক হলো। সবাইকে স্বাভাবিক দেখে জুবরান মনে মনে বলল ‘সবাই কী ভুলে গেলো আমাদের বিয়ে হয়েছে? কই বাসর টাসর সাজাবে তা-না!’
জুবরানের কথা-ই সত্যি হলো কেউ ওদের একসাথে থাকার কথা উচ্চারণ করল না। জুবরান অসহায় চোখে তাকিয়ে রইলো সবার দিকে অনেক রাত অবধি জেগে রইল কিছু হওয়ার আশায় কিন্তু কিছুই হলো না।
চলবে ইনশাআল্লাহ