#প্রণয়সন্ধি– ১০ পর্ব
#তাসনিম_তামান্না
শানায়া ও বাড়িতে আর ফিরবে না। ফোন করেও জানিয়ে দিয়েছে এতো অপমানের পর আত্মসম্মান খুয়ে ওখানে থাকার কোনো মানে হয় না। শায়লা হাসান আর মিরাজ হাসানের অনেক বুঝিয়েও কাজ হয় নি। শানায়া আজ জুনের ফ্ল্যাটে এসেছে ওর বাবা-মা বাড়িতে নেয় জুনের বাবার বন্ধু অসুস্থ দেখতে গেছে। এর ওপরের ফ্ল্যাটেই সিয়াম থাকে। অবশ্য তার কান অবধি এখন শানায়ার আসার খবর যায়নি। জানলে এতোক্ষণে নাচতে নাচতে আড্ডা মা’রতে চলে আসত।
শানায়া আশা অবধি একটা কিছু মুখে দেয় নি চুপচাপ মন খারাপ করে বসে আছে জুনের বারান্দায়। জুনের কাছে শানায়াকে স্বাভাবিক লাগছে না। তাই তারাতাড়ি সিয়ামকে এসএমএস করে জানালো সবটা সিয়ামও বান্ধবী অবস্থার কথা শুনে ছুটে এলো। জুন আর সিয়াম কিছুক্ষণ ফিসফিস করে কথা বলে নিল।
মিনা বাড়িতে ডিনারের আয়োজন করেছে ও দেশে ফেরা উপলক্ষে। সেখানে ওর চেনা পরিচিত বন্ধু বান্ধব আত্নীয় স্বজনরা আছে। খাওয়া দাওয়া শেষ করে তখন যে যার মতো গল্প করছে। জুবরানের গল্পে কোনো মন নেয়। কোল ড্রিংকস একটু একটু করে চুমুক দিচ্ছে আর গভীর চিন্তায় ডুবে আছে। তানিয়া দু-বার শুনেছে কি হয়েছে জুবরান উত্তর দেয় নি। অতঃপর একপ্রকার জোর জরে জুবরানকে সাথে করে বাড়ি নিয়ে গেলো তানিয়া। ফ্রেশ হয়ে এসে জুবরানকে জোড়াজুড়ি করে জানতে চাইল কি হয়েছে? সাথে তানিয়ার স্বামী জাকি ও যোগ দিয়েছে।
–‘ আমার কিছু হয় নি অযথা টেনশন করিস না’
–‘ মিনা কিন্তু আমাকে বলছে। তুই শানায়ার জন্য আপসেট!’
–‘মোটেও না ওকে নিয়ে ভাববার সময় নেই আমার’
–‘ ওমা তাই না-কি! তুই কিন্তু বেশি বেশি করছিস তোর উচিত সবটা ঠিকঠাক করে চুটিয়ে সংসার করা বাচ্চা কাচ্চা মানুষ করা তা না করে ইগো নিয়ে বসে আছিস?’
–‘ সবটা কেনো আমাকেই ঠিক করতে হবে!’
তানিয়া কথার প্যাচ ধরতে পেরে বলল
–‘ তারমানে তুই চাস সব ঠিক হয়ে যাক’
জুবরান উত্তর দিল না। তানিয়া বলল
–‘ তোর ফোনটা দে তো’
জুবরান ভ্রু কুঁচকে বলল
–‘ কেনো?’
–‘ আমার ফোনে ব্যালেন্স নাই তাই
–‘ কার কাছে ফোন দিবি?’
–‘ শানায়ার কাছে… কি হলো ফোন দে ‘
জুবরান চুপ থেকে বলল
–‘ নাহ’
তানিয়া বিরক্ত হয়ে বলল
-‘ জাকি তোমার ফোনটা দাও তো’
প্রথম বার ফোন বাজতে বাজতে কেটে গেলো শানায়া ফোন ধরল না। জাকি বলল
–‘ ঘুমিয়ে গেল না-কি! ‘
তানিয়া বলল
–‘ আরেকবার দিয়ে দেখি আননোন নম্বর বলে ফোন নাও ধরতে পারে’
এবার বেশ সময় নিয়ে শানায়া ফোন ধরে ভাঙা গলায় ‘হ্যালো’ বলল।
ওপাশ থেকে চুপ করে রইলো। তানিয়া কি বলে সবটা শুরু করবে খুঁজে পেলো না। শানায়া আবার বলল ‘কে?’
তানিয়া কিছু বলতে নিবে তার আগে ওপাশ থেকে শানায়া কেউকে বলছে
–‘ কী করছিস? ‘
পুরুষ কণ্ঠে বলল
–‘ চুপ থাক যখন উত্তর চাইব দিবি’
জুবরান ভ্রু কুঁচকে ফোনের দিকে তাকিয়ে আছে। মনে প্রশ্ন উঁকি দিলো ‘এতো রাতে ছেলের সাথে কি করছে?’
সিয়াম শানায়াকে জুনের রুমের সোফায় বসিয়ে বলল
–‘ এবার বল কী হয়েছে তোর?’
–‘ আমার আবার কী হবে?’
–‘ সেটা তো তুই ভালো জানিস ‘
–‘ আমার কিছু হয় নি’
জুন বলল
–‘ তা তো আমরা দেখতেই পারছি কেঁদে কেটে চোখমুখ ফোলা কিছু হয় নি তো!’
শানায়া চুপ রইলো। সিয়াম বলল
–‘ দেখ তুই বলেই দেখ আমরা সলভ করে ফেলব’
শানায়া দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে বলল
–‘ তোদের কিছু করতে হবে না আমি যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নিয়ে ফেলেছি’
–‘ কিসের সিদ্ধান্ত? ‘
–‘ আমি ঢাকা থেকে চলে যাচ্ছি’
ওরা অবাক হয়ে তাকিয়ে চিৎকার দিয়ে উঠে বলল
–‘ চলে যাচ্ছিস মানে? কোথায় যাচ্ছিস? কেনো যাচ্ছিস?’
–‘ দেখ তোকে কোথাও যেতে দিব না। এসব কথা তুই মুখ তো দূরে থাক মনেও আনবি না’
ওদেরকে ব্যস্ত হতে দেখে শানায়া মলিন হেসে বলল
–‘ আমার লাইফটা কমপ্লিকেটেড নিজেকে বড্ড টক্সিন লাগে। মাঝে মাঝে মনে হয় দম আটকে ম’রে যাবো। জানিস আজ দু’দিন হলো আপু আমার সাথে কথা বলে না সেদিন বিকাল বেলা রায়হান ভাইয়ের জন্য পাত্রী হিসেবে আমার জন্য প্রস্তাব দিল সেটার পর থেকে ঠিক করে কথা বলে না বলতো আমার কি দোষ? দোষ না করেও আমি দোষী। কাল রাতে আমি ঘুমাতে পারি নি। আমার নিজেকে বোঝা মনে হচ্ছিল। ভাইয়ার কথা গুলো শুনে। আমি তো ভেবেই নিয়ে ছিলাম চলে যাব কিন্তু কি হলো? এভাবে আমাকে ও বাড়ি থেকে চলে আসতে হলো!’
কথাগুলো বলতে বলতে শানায়া কেঁদে ফেললো। তারপর পাগলাটে কণ্ঠে বলল
–‘ আচ্ছা আমি খুব খারাপ তাই না? আমাকে সে জন্য কেউ ভালোবাসে না সকলে ছেড়ে চলে যায়। ফুপি ঠিক বলেছিল আমি অলক্ষী, অপয়া। দোস্ত আমি না নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারছি না খুব কান্না পাচ্ছে আমার ম’রলে সব বোধহয় ঠিক হয়ে যাবে’
জুন ভেজা চোখে শানায়াকে শান্ত করতে বলল
–‘ কিসব বলছিস তুই আমার লক্ষী বোন কাঁদে না আর ম’রার কথা একদম বলবি না’
সিয়াম বলল
–‘ তোকে কে কি বলছে বল শুধু দেখ আমি কি করি আমার বান্ধবীকে কথা শোনানো বের করছি’
শানায়া শান্ত হতেই সিয়াম বলল
–‘ দোস্ত তোর মাথা ব্যথা করছে? ঔষধ এসে দিব’
–‘ দরকার নেই রাত হয়েছে বাসায় যা’
–‘ সে-তো যাবো জুন তুই ওকে খাইয়ে দে আমি ঔষধ নি আসছি নাহলে ও আজ রাতেও ঘুমাবে না’
–‘ দেখ শুধু শুধু কষ্ট… ‘
–‘ তোর কাছে শুনতে চাইনি কিছু ‘
জুন জোর করে শানায়াকে খাইয়ে দিল।
জুবরান ফোনের ওপাশ থেকে সব শুনে শক্ত হয়ে বসে রইল। ফোন কেটে তানিয়া জাকিও স্তব্ধ হয়ে বসে আছে। তানিয়া রেগে বলল
–‘ মেয়েটা কতটা কষ্টে আছে তুই বুঝতে পারছিস? মেয়েটার স্বামীর গাড়ি বাড়ি টাকা পয়সার অভাব নেই আর সে কোনো অধিকার নিয়ে আসছে না। নিজের জন্য লড়াই করে যাচ্ছে আর তুই? মেয়েটা ম’রে যাচ্ছে জুবরান তুই ইগো নিয়ে থাক।’
জুবরান কিছু না বলে বেড়িয়ে গেলো তানিয়া আটকালো না। যাক যা খুশি করুক।
চলবে ইনশাআল্লাহ
#প্রণয়সন্ধি– ১১ পর্ব
#তাসনিম_তামান্না
সকাল তখন দশটা বাজে শানায়া আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসে জুবরানকে শোফায় বসে ওর দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে আবিষ্কার করে চমকে গেলো। মনে মনে ভাবল নিশ্চয়ই ও ভুলভাল দেখছে চোখ কোচলে আবারও তাকাল না জুবরান সরছে না। ভয়ার্ত কণ্ঠে বলল
–‘ আপনি? এখানে?’
–‘……’
–‘ আপনি এখানে কি করছেন? কীভাবে আসলেন?’
–‘ মেন দরজা দিয়ে’
–‘ কেনো এসেছেন?’
জুবরান উত্তর দিল না। উঠে শানায়ার বেডের পাশে এসে দাঁড়িয়ে ওর মাথায় হাত দিয়ে বলল
–‘ এখন কেমন আছ?’
শানায়া জুবরানের হাত সরিয়ে দিয়ে চিৎকার দিয়ে বলল
–‘ এখানে কেনো এসেছেন?’
–‘ তোমাকে নিতে! অবশ্য তোমাকে কাল রাতেই নিয়ে যেতে পারতাম তোমার ফেন্ড নিয়ে যেতে দিল না’
–‘ চলে যান চলে যান আপনাদের কাউকে আর আমার জীবনে চাই না চলে যান বলছি’
শানায়ার চিৎকার শুনে জুন ছুটে এলো।
–‘ জুন এই লোকটাকে চলে যেতে বল। আমি যেতে চাই না এই লোকটার সাথে ‘
–‘ তুমি না যেতে চাইলেও তোমাকে যেতে হবে’
–‘ না আমি যাব না আপনার সাথে ‘
–‘ আমি তোমার হাসবেন্ড আমাকে বুঝতে দাও’
–‘ এতো দিন আপনার হাসবেন্ড গিরি কোথায় ছিল? এখন কেনো এসেছেন? এতোদিন একবারও আমার খোঁজ নিয়েছিলেন বেঁচে আছি কি ম’রে গেছি!’
–‘ তোমার রাগ করাটা স্বাভাবিক।… শানায়া আমি মানছি আমার ভুল হয়েছে। কিন্তু আমার পরিস্থিতিটা তোমরা কী ভেবে দেখেছ?’
–‘ হ্যাঁ হ্যাঁ সব দোষ আমার আমি ওকে মিথ্যা বলতে বলছিলাম এবার খুশি তো এবার আপনি চলে যান। আমি আপনাদের কাউকে চাই না।’
–‘ জুন আপনি একটু বাইরে যাবেন প্লিজ’
–‘ না ও কোথাও যাবে না’
জুন চলে গেলো। জুবরান দরজা লাগিয়ে দিল ভিতর থেকে তা দেখে শানায়া ভয় পেয়ে বলল
–‘ দরজা লাগাচ্ছেন কেনো? চলে যেতে বললাম আপনাকে’
জুবরান শানায়ার পাশে বসে শানায়ার হাত মুঠোর মধ্যে নিলো ও ছাড়াতে চাইলে জুবরান আরো শক্ত করে ধরে গম্ভীর কণ্ঠে বলল
–‘ দেখো আমি জানতাম না। তুমি বাসা থেকে চলে এসেছ কেউ আমাকে বলে নি। আর আমি জানতাম তুমি সকলের সাথে ভালো আছ। তুমি কেনো চলে এসেছ বাসা থেকে সবটা জানতে চাই বলো আমাকে। আমি এসে গেছি আমি সবটা ঠিক করে দিব’
–‘ আমি চাই না সব কিছু ঠিক হোক।’
–‘ পাগলামি করো না’
–‘ আমি এখন এখানে ভালো আছি। আমি একটু শান্তি চাই প্লিজ আপনি আমার জীবনে আর কোনো ঝামেলা সৃষ্টি করবেন না’
–‘ ওকে ফাইন। কিছু ঠিক করতে হবে না। কিন্তু তুমি আমার সাথে আমার বাসায় যাচ্ছো।’
–‘ কখনো না’
–‘ আমি চাই না আমার স্ত্রী অন্যর বাড়িতে থাকুক’
–‘ আমি আপনার সাথে যাব না’
–‘ তোমার সবকিছুতেই ত্যাড়াম না করলে হয় না?’
–‘ আপনি তো বিয়েটা মানেন না তাহলে এখন হঠাৎ এসে স্বামী গিরি দেখাচ্ছেন! আপনি কি আমাকে দয়া দেখাচ্ছেন? আমি কারোর দয়ার পাত্রী হতে চাই না’
জুবরান দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো বুঝলে শানায়াকে বুঝিয়ে কোনো লাভ হবে না। তাই বলল
–‘ কাল থেকে যেনো অফিসে দেখি। আর ঢাকা ছেড়ে যেনো কোথাও না যাওয়া হয়।’
–‘ আমি ঢাকা ছেড়ে যাচ্ছি একথা আপনাকে কে বলল?’
জুবরান ঠোঁট বাঁকিয়ে বলল
–‘ তোমার সব কিছুই আমার জানা। আর হ্যাঁ বেশি বাড়াবাড়ি যেনো না দেখি দেখলে তোমার না শুনব না তুলে নিয়ে যাব’
কথাটা বলে চলে গেলো। জুন এতোক্ষণ দরজার ওপাশে চিন্তিত হয়ে দাড়িয়ে ছিল। জুবরানকে চলে যেতে দেখে বলল
–‘ ভাইয়া খেয়ে যান’
–‘ আজ না অন্যদিন ওর খেয়াল রাখবেন’
–‘ অবশ্যই’
জুন রুমে এসে দেখলো শানায়া থম মে’রে বসে আছে। তা দেখে জুন বলল
–‘ কি হয়েছে এভাবে বসে আছিস কেনো?’
–‘ ওনি কখন এসেছিল’
–‘ তুই ঘুমিয়ে পড়ার পর… ‘
–‘ ওনি এখানের ঠিকানা জানলো কীভাবে? ‘
–‘ তা তো জানি না ‘
–‘ তোরা বলেছিস?’
–‘ আরে তুই কি পাগল হয়ে গেছিস? তুই কখনো তোর বরের ছবি দেখিয়ে ছিলি? আমরা জানব কীভাবে? তাছাড়া আমি বিশ্বাস করছিলাম না ওনি তোর হাসবেন্ড তখন ওনি তোদের কাপল পিক দেখাল’
শানায়া বিরবির করে বলল
–‘ এতোদিন তো সব ঠিকি ছিল। হঠাৎ ওনার কি হলো?’
–‘ কী বলছিস?’
–‘ আর কিছু বলেছে ওনি?’
–‘ তোকে ঘুমন্ত অবস্থায় নিয়ে যেতে চাইছিল আমি নিয়ে যেতে দেই নি’
–‘ আচ্ছা। আমি চলে যাব’
–‘ কোথায় যাবি?’
–‘ জানি না’
–‘ পাগল হয়ে গেছিস তুই। ফ্রেশ হয়ে খেতে আয়’
আজ দিন টা শানায়া কেমন চুপচাপ থাকলো জুন সিয়াম মুড ঠিক করার জন্য বেড়াতে যাবে বলল তাতেও শানায়া রাজি হলো না। সারাক্ষণ কি যেনো ভাবতে থাকল।
পরের দিন ঠিক টাইমেই অফিসে আসল। লিফটে তখন জুবরান সহ আরো কিছু লোক ছিল। সবার আড়ালে জুবরান শানায়ার কানে ফিসফিস করে বলল
–‘ মিসেস. শানায়া ওপস সরি মিস শানায়া আপনি তো সিঙ্গেল। তা বসের সাথে কি প্রেম করবেন। আপনার বসের প্রেম প্রেম পাচ্ছে’
শানায়া বড়বড় চোখ করে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইলো। জুবরান মুখ টিপে হাসল। শানায়া ডেক্সে গিয়ে বসে কাজ করতে করতে কিছুক্ষণ পর রাহাত এসে বলল
–‘ কী ব্যাপার শানায়া কেমন আছো?’
–‘ ভালোই আপনি?’
–‘ চলছে। আচ্ছা আজ-কাল তুমি বেশ ছুটি কাটাচ্ছো কোনো প্রোবলেম? ‘
–‘ কই না তো। এমনিতেই একটু মাথা ব্যথা ছিল’
রাহাত কিছু বলতে যাবে তখন জুবরান এসে বলল
–‘ মিস্টার রাহাত আপনার নামে আমার কাছে কমপ্লেন আছে আপনি না-কি মেয়েদের উৎতক্ত করেন’
রাহাত ভয়ে ভয়ে বলল
–‘ স্যার এমনটা নয়।’
–‘ তাহলে কেমন?’
–‘ আসলে স্যার আমি আগে একটু সবার সাথে মজা করতাম সেটাকে সবাই খারাপ ভাবে নিয়েছে তার জন্য আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত আর এমনটা হবে না…’
–‘ খেয়াল রাখবেন। শানায়া কেবিনে আসুন’
শানায়া কেবিনে গিয়ে বলল
–‘ জ্বি স্যার বলুন’
জুবরান কেবিনের দরজা লক করে দিয়ে শানায়ার সামনে দাঁড়িয়ে বলল
–‘ রাহাতের সাথে এতো কি কথা তোমার? ‘
শানায়া ভ্রু কুঁচকে বলল
–‘ সেটা আমার ব্যাক্তিগত ব্যাপার আমি প্রশ্নের উত্তর দিতে বাধ্য নই’
–‘ বেশি উড়ো না বুঝছ’
–‘ আপনার সমস্যা কোথায়?’
–‘ আমার স্ত্রী, আমার দায়িত্ব, অবশ্যই আমাকে বুঝতে হবে’
–‘ আমি কালই আপনাকে বলেছি আমাকে দয়া দেখাবেন না।’
–‘ এমন কেনো মনে হচ্ছে আমি তোমাকে দয়া দেখাচ্ছি? ‘
–‘ মনে না হওয়ার কোনো কারণ দেখছি না। তাছাড়া এতোগুলো দিনপর স্বামী গিরি দেখাচ্ছেন। আলবাদ সন্দেহ হবে’
জুবরান হুট করে শানায়াকে জড়িয়ে ধরলো। শানায়া বুঝতে পেরে হতভম্ব হয়ে গেলো। ছাড়ার জন্য ছটফট করতেই। জুবরান কাতর কণ্ঠে বলল
–‘ কষ্ট পাচ্ছি আমি, অপরাধবোধে ভুগছি বুঝতে পারছ না তুমি? ‘
শানায়া চুপ রইলো। উত্তর না পেয়ে জুবরান শানায়াকে ছেড়ে দিয়ে বলল
–‘ এতোদিন অধিকার দেখাই নি বলে আজও দেখাব না এমন না। যা-ও আমার কথা মতো না চললে আমার ভিন্ন রূপ দেখবে’
চলবে ইনশাআল্লাহ