পূর্ব-রোদ পর্ব-৩১

0
2270

@পূর্ব-রোদ?
#পর্ব_৩১
#লেখিকা_আমিশা_নূর

পেছন থেকে নিনা হাসানের কন্ঠস্বর আসায় নাবিলা-মেঘ দুজনে পেছন ফিরে তাকালো।নিনা হাসানের কথা মেঘ কিঞ্চিৎ অবাক হলো।তার মা তাকে রোদের থেকে দূরে আসতে বললে এইটা সে এক্সপেক্ট করেনি।

“মা তুমি কী বলছো?”
“দেখ মেঘ,আমি কোনোদিনও তোর খারাপ চাইনি সেটা তুইও জানিস।তাহলে রোদের পেছনে কেনো পড়ে আছিস?রোদ যদি তোকে চাইতো তাহলে আমি নীরা তোকে যথেষ্ট সাপোর্ট করতাম।কিন্তু তোকে রোদ চাই না।”
“তোমাকে নাবু বলেছে এসব?”
“হ্যাঁ।তুই বাচ্চাদের মতো কেনো করছিস?একটু বুঝ।তুই দয়া করে মেঘ রোদের সুখের সংসারে ঝামেলা করিস না।হাত জোড় করল বলছি তোকে..”

মেঘে মস্তিষ্ক নড়ে উঠলো।আজ পর্যন্ত কারো সামনে তার মাকে ছোট হতে দেইনি অথচ তার নিজের সামনে তার মা হাত জোড় করছে।তার মায়ের অনুরোধ দেখে মেঘে অনুতাপ হলো।শীতল চাহনিতে সে তার মায়ের দিকে তাকালো।এই মহিলা’টি তাকে নিঃস্বার্থভাবে ভালোবেসেছে সারা জীবন।অথচ মেঘ তার এক বিন্দু মূল্যও দিতে পারেনি।বরং আজ হাত জোড় করছে।মেঘের ইচ্ছে করছিলো মাটি ফাঁক করে নিচে ঢুকে যেতে।তার মায়ের এমন চেহেরা মোটেও সহ্য হচ্ছে না।মেঘ মনে মনে ঠিক করে নিলো তার পরিবারের জন্য হলেও রোদকে ভূলে যাবে।রোদের কাছে দ্বিতীয়বার যাবে না।মেঘ তার মায়ের হাত জোড়া নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে বললো,”মা তুমি এভাবে আমার কাছে….কথা দিচ্ছি মা আর কোনোদিন রোদের কোনো সমস্যা হয় এমন কিছু আমি করবো না।”

নিনা হাসান মেঘের কপালে আলতো করে চুমু দিলো।এবার যেনো তিনি সন্তুষ্ট!নাবিলার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে তিনি বেরিয়ে গেলেন।

নিনা হাসান রুম ত্যাগ করতে নাবিলা মেঘ’কে উদ্দেশ্য করে বললো,”মেঘ,জীবন আমাদের অনেকবার সুযোগ দে আজ একবার নাহয় জীবন’কে সুযোগ দিয়ে দেখ।”
“হুম।”
“তুই কী ঢাকা যাচ্ছিস?”
“নাহ।”
“আর একটা কথা।”

নাবিলা’র তিন অক্ষরের বাক্যটা শুনে মেঘ ভ্রু-কুচকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তার দিকে তাকালো।একরাশ সংকোচ নিয়ে নাবিলা বললো,”তুই নিলয়’কে ওর অসৎ পথে বাঁধা কেনো দিসনি?”

কথাটি শুনে বিদ্যুৎয়ের গতিতে মেঘ চমকে গেলো।হঠাৎ নিলয়ের কথা কেনো তুললো নাবিলা?তারওপর এ কথা কেনো বললো?মেঘ নাবিলা’কে কিছু বলতে যাবে তার আগে মেঘের মুখের সামনে পাঁচ আঙ্গুলের হাতটি রেখে বললো,

“ব্যস!আমি জানি তুই কী জিজ্ঞেস করবি।আমি কীভাবে এসব জানলাম তা তো?নিলয় আমাকে সবটা বলেছে।কারণ নিলয়ের এক্স ছিলাম আমি।নিলয়ের যতো মেয়েদের হার্ট করেছে না তার মধ্যে তোর বোনও একজন।তোর বোনের মনটাও নিলয় ভেঙ্গেছে।তারজন্য নিলয় যতোটা না দায়ী তার চেয়ে বেশী তুই দায়ী।কী করে পারলি তুই এমনটা করলে?আমি না আগে ‘সৎ সঙ্গে স্বর্গ বাস অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ’ প্রবাদ আছে না?ওটা একদম বিশ্বাস করতাম না।কিন্তু তোকে দেখে মনে হচ্ছে কথাটি একদম সত্য!মাথা কী বুদ্ধি ছিলো না তোর?কী করে পারলি অতোগুলা মেয়ের মন নিলে পুতুল খেলা খেলতে?তোদের বিবেগ একটুও বাধা দেইনি?অাজ বাঁধা দিলো হয়তো তোর বোন যথেষ্ট ভালো থাকতো।মনটা কাঁচের মতো ভেঙে টুকরো টুকরো হতো না।”

মেঘের কথা বলা বন্ধ হয়ে গেলো।এখন তাকে অপরাধবোধ,অনুসূচনা ঘিরে রেখেছে।মেঘ নিলয়কে জাস্ট মজার ছলে উৎসাহ করতো।এটা ভবিষ্যৎে কী প্রভাব ফেলবে সেটা কোনোদিন ভাবেনি।ভাবলে আজ হয়তো সেই মেয়েদের জায়গায় তার বোন থাকতো না।নাবিলা’র প্রত্যেকটা কথায় সত্য!সুক্ষ্ম সুচের মতো প্রত্যেকটা বাক্য গায়ে ফুটে যাচ্ছে।মেঘের খু-ব থেকে খু-ব অপরাধবোধ হচ্ছে।


রাত বারোটা বাজতেই তিহানের মেবাইলে এলার্ম বেজে উঠলো।যার ফলে পূর্ব যথেষ্ট অবাক হয়ে তিহানের উদ্দেশ্য বললো,

“রাত বারোটাই এলার্ম?”
“ইন্না-লিল্লাহ!”
“কী ইন্না-লিল্লাহ?রাফিয়া সাথে ব্রেকআপ করে গাঁজা টাজা খেয়েছিস নাকি?”
“ইন্না..লিল্লাহ!রাফিয়া’র সাথে ব্রেকআপও হয়নি গাঁজাও খাইয়ি।ইন্না-লিল্লাহ।”
“তাইলো এলার্ম?”

পূর্বের কথায় তিহান হাবলা’র মতো চেহেরা করলো।বারোটায় এলার্ম দিয়েছিলো কারণ রোদ বলেছে পূর্বকে বারোটায় বাসায় পাঠিয়ে দিতে।তিহান রাস্তায় হাঁটতে হাটঁতে বললো,”এলার্ম দিলাম কারণ আমাকে এখন বাসায় যেতে হবে।তুইও যা।”

তিহানে কথায় পূর্বের চেহেরা দেখো মনে হলো সে এক্ষুনি তিহানে কাঁচা খেয়ে ফেলবে।এতোক্ষণ ধরে বাইরে রেখেছে একটা ইম্পর্ট্যান্ট কাজে করবে বলে।আর এখন সে নিজে ব্যাস্ততা দেখাচ্ছে।ওদিকে রোদ একা বাড়িতে কী করছে ভেবেই পূর্বের ঘাম বের হচ্ছে।যদিও পূর্ব রোদকে আগেই জানিয়েছে বাসায় যেতে রাত হবে।তিহানের পিটে কয়েকটা চড় দিলো পূর্ব।তারপর বিরবির করে তিহানকে একধপা গালি দিয়ে রিকশায় উঠলো।এখন বাড়ির পথ ধরতে হবে।

রোদ পরিকল্পনা অনুযায়ী সবকিছু তৈরি করে ফেললো।রাফিয়া সাহায্য করতে চাইছিলো কিন্তু একবারের জন্যও ও কে কিছু করতে দেইনি।রোদ সবকিছু নিজের হাতে করেছে।নিজের কাজ নিজে করতে যেনো এক আলাদা মজা পাওয়া যায়।তাই রোদ এসবের ভাগ কাউকে দে না।সবকিছু করে রোদ পূর্বের জামা নিতে তার আলমারি খুললো।রোদকে অবাক করে দিয়ে শার্ট নড়াচড়া করতেই কিছু কাগজ পেলো।


পূর্ব এসে কলিং বেল বাজাচ্ছিলো।তখন দেখলো দরজা আছে।তা দেখে পূর্ব কিঞ্চিৎ ভয় পেলো।তাড়াহুড়ো করে বাড়ি প্রবেশ করে চারিদিকে তাকালো।কিন্তু রোদের কোনো আবাশ পাওয়া গেলো না।পূর্ব এক দৌড়ে নিজের রুমে গেলো।রুমে ঢুকেই পূর্বের চোখ বড় বড় হয়ে গেলো।

রুমে লাইট জ্বলছে না কিন্তু চারিদিকে মোমবাতি’র রাজ্য সাথে গোলাপ পুষ্প।রংধনুর সাত রঙে রাঙানো বেলুন!এতোকিছুর মধ্যে পূর্বের চোখ শুধু রোদকে খুঁজছে।পূর্ব রোদের খুজে বেলকোনিতে গিলো।এক পলক সেই জায়গায় দেখলো রোদ নেই।পূর্ব কয়েকবার রোদের নাম ধরে ডাকলো।কিন্তু কোনো সাড়া পাওয়া গেলো না।পূর্ব অস্থিরতা কমিয়ে নিজেকে শান্ত রেখে কান খাঁড়া করে দূরে শব্দ শুনার চেষ্টা করলো।

চারদিকে পিনপিনে নিরবতা।কোনো আওয়াজ যেনো আসছে না।পূর্ব আরো একটু মনোযোগ দিলো।এবারে কারো নাক টানার সাথে হালকা কান্নার আওয়াজ এলো।পূর্ব ভালোভাবে বুঝলো এটা রোদ ছাড়া অন্য কেউ নই।পূর্ব সেই কান্নার শব্দ অনুসরণ করে বেলকোনিতে গেলো।বেলকোনির চারিদিকে পূর্ব তাকিয়ে দেখলো সেই স্থানের এক কোণে গুটিসুটি হয়ে হাটু গেড়ে বসে রোদ হাতের পিট দিয়ে চোখের জল মুছচে।

পূর্ব যখন বুজতে পারলো রোদ কাঁদছে ওমনি বুকের ভিতর তোলপাড় সৃষ্টি হলো।অটোমেটিক্যালি প্রশ্নের দল তাকে ঘিরে ধরলো।পূর্ব ধীরে পায়ে সামনে এগোলো।তার ভিতর অস্থিরতা বেড়েই চলছে।

পূর্ব এসেছে আবাশ পেয়ে রোদ মাথা তুলে তাকালো।চোখ থেকে জল নদীর বাঁধ ভাঙ্গা’র মতো জরছে।পূর্বোর দেখা পেয়ে রোদের কান্নার গতি আরো বেড়ে গেলো। সে দৌ-ড়ে পূর্বের উপর ঝাঁপিয়ে পড়লো।এখন তার কান্নার শব্দ প্রকর হয়েছে।পূর্বকে দেখে আবেগে যেনো কান্না বেড়ে গেলো।

এভাবে জড়িয়ে ধরায় পূর্ব হতবাক হয়ে গেলো।তখন রোদ কাঁদতে কাঁদতে বললো,

“আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না।কখনো না!” রোদ পূর্ব’কে এতোটা শক্ত করে জড়িয়ে ধরেছে যে পূর্বের ঘাড় ব্যাথা হয়ে যাচ্ছে।রোদের লম্বা নখের জন্য গলায় আঘাত পাচ্ছে।এতে পূর্ব-রোদ দুজনেরই হুস নেই।পূর্ব বুঝতে পারছে না রোদ কাঁদছে কেনো।তবে রোদের কান্নায় সমান কষ্ট তারও হচ্ছে।রোদের কান্না পূর্বের একদম সহ্য হয় না।মোটও না!

এভাবে কতক্ষণ জড়িয়ে ধরেছিলো রোদ তা জানে না।পূর্বের আবছা ডাকে রোদের ঘোর কাটলো।পূর্ব তাকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে দাঁড় করালো।রোদ হাতের পিট দিয়ে বাচ্চাদের মতো চোখের জল মুছচে।পূর্ব হালকা স্বরে বললো,

“কাঁদছো কেনো?কী হয়েছে?কেউ কিছু বলেছে?”

অমনি রোদের কান্না বেড়ে গেলো।রোদ আবারো কান্না করায় পূর্ব রোদের মাথা নিজের বুকে রাখলো।একসময় রোদ অভিমানি কন্ঠে বললো,”তুমি কানাডা চলে যাবে।”

চার অক্ষরের বাক্যটি পূর্বের কান অবধি আসতেই পূর্বের হাত আলগা হয়ে গেলো।রোদ তার দিকে মাথা তুলো তাকালো।পূর্ব এক চিমটি পরিমাণ অবাক হলো।তবে মুখের উপর কালো ছায়া ভর করলো।বুকের বা’পাশে কষ্ট হচ্ছে,চিনচিন অনূভুতি হচ্ছে রোদ তাকে ভূল বুঝলো ভেবে।এখন রোদ কী করবে?তাকে ছেড়ে চলে যাবে?নাকি অপেক্ষা করবে?

“তোমার শার্ট নিতে গিয়ে পাসপোর্ট,ভিসা আর কিছু কাগজ পেলাম।তুমি কী সত্যি আমাকে ছাড়া চলে যাবে পূর্ব?”

রোদ একরাশ অভিযোগ নিয়ে পূর্বের দিকে তাকালো।পূর্ব নিশ্চুপ!রোদ ধরে নিলো নিরবতা সম্মতি’র লক্ষণ।রোদের খুব কষ্ট হলো!যাকে এতোটা ভালোবেসেছে সে তাকে ফেলে চলে যাচ্ছে।তাও অনেক দূরে….রোদ অনেকক্ষণ থেমে চোখের জল মুছে আবারো বললো,

“তুমি যদি আমাকে ফেলে চলে যেতে পারো ফাইন।আমিও মেনে নিলাম।তুমি তো আর আমার কেউ না।তুমি না থাকলে তো এমনটা নয় যে আমি খাবো না,নিজের খেয়াল রাখবো না।তুমি যত ইচ্ছে দূরে যাও।আমি তো আর তোমাকে মিস করছি না।এস ইউর উইশ!তুমি তো আর আমার ফিউচার সন্তানের বাবা নই যে…”

রোদকে আর কিছু বলতে না দিয়ে পূর্ব শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।হু হু করে রোদ আবারো কেঁদে দিলো।আজ যেনো চোখের জল কিছুতেই বাঁধা মানছে না।যতইচ্ছে কেঁদে নিচ্ছে রোদ।পূর্বের চোখ জোড়া ভিষণ রকমের লাল হয়ে গেছে।তারও কান্না পাচ্ছে।কিন্তু ছেলেদের তো আর মেয়ে দের মতো কাঁদতে নেই।তারা নিরবে কাঁদে!একা কাঁদে!


“তিহান তোমার ভাগ্য অনেক ভালো যে পূর্বের মতো কানাডা যাওয়া ডিসিশন নাওনি।”
“ইন্না-লিল্লাহ!আমি কি করলাম?”
“কিছু করো নি।কিন্তু কানাডা-টানাডা যাওয়ার চিন্তা মাথায় আনোনি সেটা ভালো।নাহলে তোমাকে মেরে ভর্তা করে বাসায় মিনি কুত্তা’কে খেতে দিতাম।”
“ইন্না-লিল্লাহ!আল্লাহ বাঁচালো।”
“হু হু।নাহলে হাত-পা ভেঙ্গে..”
“হয়েছে বুঝেছি তোমার থ্রেট।”

তিহান কথায় রাফিয়া হেসে ফেললো।ফোনের এপাশ থেকে তিহান মন ভরে রাফিয়ার হাসিটা অনুভব করলো।রাফিয়া’র মতো অন্যরকম মেয়ে তিহান প্রথম দেখলো।তিহানের মাঝেমাঝে মনে হয় পৃথিবী একদিকে থেকে অন্যদিকে উল্টে গেলেও রাফিয়া পরিবর্তন হবে না।সবকিছুর মাঝে তিহানের ভাবতেই সুখি মনে হয় যে রাফিয়া শুধু তার!তিহান মনে মনে প্রার্থনা করলো পূর্ব-রোদের যেনো সব ঠিক হয়ে যায়।


“তুমি ক’বছর থাকবে কানাডা?”
“তিন বা চার বছর।তারপর জব ওখানে করলে কানাডাই থেকে যাবো।”

পূর্বের কথায় রোদ তারদিকে একচামচ পরিমাণ কষ্ট নিয়ে তারদিকে তাকালো।সে বুঝার চেষ্টা করলো পূর্ব মজা করছে কি-না।কিন্তু পূর্বকে যথেষ্ট স্বাভাবিক দেখালো।পূর্বের কী একটুও কষ্ট হচ্ছে না তাকে ছেড়ে যেতে?রোদ অভিমানি কন্ঠে বললো,”তাহলে আমি এবাড়িতে থেকে কী করবো?ওবাড়িতে চলে যাবো কালকে একেবারের জন্য।”

রোদের কথায় পূর্ব ভালোভাবে বুঝলো রোদ অধিক আঘাতে এমনটা বলছে।পূর্ব রোদের হাত দুটো নিজের হাতে ছুঁইয়ে বললো,”তিন বছর পর চলে আসবো।যদি কানাডা জব হয় তাহলে তোমাকে সাথে করে নিয়ে যাবো।”

সাথে সাথে রোদ উত্তর দিলো,”না আমি যাবো না।তুমি একেবারে বিডি চলে আসবে নয়তো..নয়তো আমি তোমাকে ছেড়ে চলে যাবো।”
“রোদ আমি কানাডায় স্যাটেল হবো এইটা আমার ড্রিম।”
“ড্রিম নাহয় আমি।যেকোনো একটা চুস করো আর এক্ষুনি করো।”

পূর্ব শীতল দৃষ্টিতে রোদের দিকে তাকালো।মেয়েটা একদম জেদ ধরে বসে আছে।অবশ্য জেদ হওয়াটাও স্বাভাবিক।পূর্ব আগে থেকেই জানতো রোদ তাকে কানাডা স্যাটেল হতে দিবে না।পূর্ব নিচু স্বরে বললো,”ঠিক আছে।আমি তিনবছর পর চলে আসবো।”
“সিওর?”
“হুম।”

রোদের মনে ক্ষীণ আশার আলো জাগলো।পূর্ব একেবারে বাংলাদেশে থাকবে এটার খুশিতে তিনবছর দূরে থাকবে সেই দুঃখটা চাপা পড়ে গেলো।পূর্ব খানিকটা সময় নিয়ে বললো,

“রোদ,আমি তোমার সাথে প্রথমের দিকে অদ্ভুত রকমের বিহেভ করায় অবাক হওনি?”
“কখন?”
“তোমার পরিক্ষার সময়।”
“ওওহ।হ্যাএএ হয়েছিলাম।তবে তুমি এমনটা কেনো করেছিলে?”
“রোদ তোমার থেকে কিছু লুকিয়ে আমি আমাদের বিবাহিত জীবনের নতুন আর একটা বছর শুরু করতে চাই না।তোমার সাথে ভালো ব্যবহার বাধ্য হয়ে মায়ের কথায় করেছিলাম।নাহলে মা আমাকে কানাডা যাওয়ার টাকা,আর সাথে পড়াশোনার জন্য বিশ লাখ টাকা টাও দিতো না।আমি সরি!প্রথমে তোমার সাথে অভিনয় করার সময় ভয় হয়েছিলো তুমি আমার প্রেমে পড়ে যাবে ভেবে।কিন্তু অদ্ভুত ভাবে আমিই তোমাকে ভালোবেসে ফেলি।”

পূর্ব যথেষ্ট ভয়ার্ত হয়ে রোদকে সত্য কথা বলছিলো।মনে এক কোণে জমা আছে কোথাও সত্যিটা জেনে রোদ ভূল বুঝবে নাতো?অভিনয় করছে ভেবে রাগ করবে নাতো?

[চলবে]

বি.দ্রঃভূলক্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে