পূর্ণিমা_সন্ধ্যায় পর্ব_৪০(অন্তিম)

1
1718

পূর্ণিমা_সন্ধ্যায়
পর্ব_৪০(অন্তিম)
#লেখিকাTasneem Tushar

“এক আকাশ মেঘ জমেছে, মেঘের বাড়ি যাবো
মেঘকন্যার হাতটি ধরে জীবন পাড়ি দিবো।

কি মেঘকন্যা? এক পশলা বৃষ্টিতে দাওয়াত রইলো, আসবে তো? হাতটি আমার ধরবে তো?

– Your Secret Admirer”

তিয়াশা তাদের বাড়ির সামনের সবুজ ঘাসে ঘেরা আঙিনায় থাকা দোলনায় বসে দুলছে। আজ বিকেলের আকাশে বেশ মেঘ জমেছে। এলোমেলো ঝড়ো বাতাস বইছে। আবহাওয়া পূর্বাভাস বলছে কিছুক্ষণ পর ঝুম বৃষ্টি নামবে। তাই তো তিয়াশা একটা আকাশি রঙের জর্জেট শাড়ি পরে, কপালে কালো টিপ, চোখে গাঢ় কাজল দিয়ে খোলা চুলে অপেক্ষার প্রহর গুনছে কখন বৃষ্টি নামবে। আজ মনের আনন্দ নিয়ে বৃষ্টিতে ভিজবে সে। এমন সময় প্রাইভেট নাম্বার থেকে আসা এহেন মেসেজ পেয়ে একটু ঘাবড়ে যায় তিয়াশা। কে আবার দিলো এই মেসেজ? কে এই সিক্রেট এডমায়ারার?

এক ফোঁটা বৃষ্টি তিয়াশার গালে পড়তেই তিয়াশা আনন্দে লাফিয়ে উঠে। দৌড়ে গিয়ে হাতে থাকা ফোনটা ছাউনির নিচে রেখে এসে সে খোলা আঙিনায় দু’হাত প্রশস্ত করে চোখ বন্ধ করে বৃষ্টির ফোঁটা অনুভব করার চেষ্টা করছে। ধীরে ধীরে আকাশ অন্ধকার হয়ে মুশলধারায় বৃষ্টি নামে। তিয়াশা মনের আনন্দে ভিজতে থাকে।

হঠাৎ পেছন থেকে তিয়াশার দুহাত মুষ্টিবদ্ধ করে জড়িয়ে ধরে তার কাঁধে থুতনি রাখে কেউ। তিয়াশা হাসিমুখে তার গালের সাথে গাল মিলিয়ে বৃষ্টির স্বাদ নিতে থাকে। এ যে এক মোহনীয় ক্ষণ। ভালোবাসার মানুষটি এবার তিয়াশার দিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে তার থুতনি উঁচিয়ে ডুব দেয় তিয়াশার গোলাপি ঠোঁটে। বৃষ্টির মাঝে বুদ হয়ে আছে দুজনে গাঢ় চুম্বনে। হঠাৎই তিয়াশাকে পাজা কোলে তুলে নিয়ে ঘুরতে থাকে। তিয়াশা দুহাত দিয়ে গলা জড়িয়ে ধরে চোখে চোখ রেখে ডুব দেয় ভালোবাসার অতল রাজ্যে। ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজছে রোমান্টিক গান,

“আমার সারাটা দিন, মেঘলা আকাশ,
বৃষ্টি – তোমাকে দিলাম
শুধু শ্রাবণ সন্ধ্যাটুকু তোমার কাছে চেয়ে নিলাম।

হৃদয়ের জানালায় চোখ মেলে রাখি
বাতাসের বাঁশিতে কান পেতে থাকি
তাকেই কাছে ডেকে, মনের আঙিনা থেকে
বৃষ্টি তোমাকে তবু ফিরিয়ে দিলাম।

তোমার হাতেই হোক রাত্রি রচনা
এ আমার স্বপ্ন সুখের ভাবনা
চেয়েছি পেতে যাকে, চাইনা হারাতে তাকে
বৃষ্টি তোমাকে তাই ফিরে চাইলাম।”

এ তো সত্য নয়, পুরোটাই ছিল আদনানের কল্পনা।

মুশল বৃষ্টি হচ্ছে ঠিকই কিন্তু হাতে লাল টুকটুকে একটা গোলাপ নিয়ে ভিজে চুপচুপে অবস্থায় অবনত মাথায় দূরে দাঁড়িয়ে আছে আদনান। চোখ বারবার ঘোলা হয়ে আসছে তার। বোঝা যাচ্ছেনা সেকি হাসছে না কাঁদছে। একবুক স্বপ্ন নিয়ে এসেছিল তিয়াশাকে প্রপোজ করবে বলে, কিন্তু তা হবার আগেই স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে যখন দেখে তিয়াশার সামনে হাটুগেড়ে বসে কেউ তাকে প্রপোজ করছে। ছেলেটির মুখ সে দেখতে পায়নি, আর তিয়াশা প্রপোজাল গ্রহণ করেছে কি করেনি সেটা দেখার প্রয়োজনবোধও করেনি আদনান। ভারাক্রান্ত মন কিন্তু ঠোঁটে এক চিলতে হাসি নিয়ে মুহূর্তেই সে স্থান প্রস্থান করে।

*

আলিয়ার বিয়ে ভেঙে যাবার পর মাঝে দুইমাস পেরিয়ে গেছে। এতবড় ঝড় বয়ে যাওয়ার পর আবার আস্তে আস্তে পরিবারের পরিবেশ অনেকটাই শান্ত হয়ে উঠেছে। আজ রবিবার বিকেলে মুজদাহীর পরিবারের ড্রইংরুমে বসে আছে নাদিম মুজদাহীর ও নওরীন মুজদাহীর। নাদিম মুজদাহীরকে বেশ শান্ত দেখাচ্ছে। জীবনের প্রাক্কালে এমন এক ঘটনায় তিনি বেশ ধাক্কা খেয়েছেন। নামিদামি মানুষ ও শ’খানিক আত্মীয়, বন্ধু-বান্ধব, পরিবার পরিজনের সামনে হয়েছেন লজ্জিত। শিকার হয়েছেন প্রতারণার। চোখের সামনে নিজের আদরের একমাত্র মেয়ের বিয়ে ভেঙে যেতে দেখেছেন। নাদিম মুজদাহীরের শরীর ও মন কোনটাই আর এই আঘাত সামাল দিতে পারেনি। ভেঙে পড়েছেন একেবারে।

মুখোমুখি বসে আছেন তার বন্ধু ডাঃ সামির, তার মেয়ে সুহানি, ও আরও একজন ছেলে। নাদিম মুজদাহীর বেশ শান্ত কণ্ঠে তার বন্ধুকে বললেন,

“তো বন্ধু এটাই তাহলে শেষ কথা?”

ডাঃ সামির একটু আমতা আমতা করে বলেন,

“বন্ধু, তুই কিছু মনে করিস না। আসলে মেয়ের সুখেই তো সুখ, বিজনেস তো কতই করা যাবে, বল।”

নাদিম মুজদাহীর ঠান্ডা হাসি দিয়ে বলেন,

“তুই ঠিকই বলেছিস। সন্তানের সুখেই সুখ। আমিই আসলে ভুল করেছি, ভুল বুঝে এসেছি। সারাজীবন শুধু টাকা পয়সা বিজনেস নিয়ে পড়েছিলাম। যেখানে লাভ দেখেছি সেখানেই ঝাঁপিয়ে পড়েছি। নিজের সন্তানদের বলি দিতেও দ্বিধা করিনি। তুই অন্তত একটা ভালো কাজ করতে যাচ্ছিস।”

চোখ ডাঃ সামিরের থেকে সরিয়ে পাশে বসা ছেলেটার দিকে তাকিয়ে ভ্রু নাচিয়ে মুচকি হেসে বলে,

“তো এই সেই হীরের টুকরো ছেলে? তোর মেয়ের পছন্দ? নাম কী?”

“ওর নাম মাহিদ। আদিলেরই বন্ধু, সেখান থেকেই সুহানির সাথে পরিচয় এবং পরবর্তীতে পরিণয়।”

সুহানি নাদিম মুজদাহীরের পাশে যেয়ে বসে হাত ধরে বলে,

“আঙ্কেল, আমি খুবই দুঃখিত আপনাকে কষ্ট দিয়ে থাকলে। আমাদের জন্য দোয়া করবেন।”

নাদিম মুজদাহীর সুহানির মাথায় হাত বুলিয়ে বলে,

“না মা, দুঃখ পাইনি। বরং খুশি হয়েছি তোমার ইচ্ছের মূল্যায়ন তোমার বাবা করেছে। সুখী হও এই দোয়া করি।”

আরও বেশ কিছুক্ষণ গল্প করেন ডাঃ সামির, তার মেয়ে সুহানি ও মাহিদ নাদিম মুজদাহীর ও নওরীন মুজদাহীরের সাথে। গল্প শেষে তারা চলে গেলে ড্রইংরুমে প্রবেশ করে আদিল, আদনান, আলিয়া ও আদিলের বন্ধু সুজয়। সুজয়কে দেখে নাদিম মুজদাহীর খুশি হয়ে তাকে কাছে ডেকে বসান,

“কেমন আছো বাবা? তোমার সাথে পরিচয় হবার পর থেকেই তোমাকে বেশ মনে ধরেছে আমার। বড্ড ভদ্র ও অমায়িক ছেলে তুমি। পুরোদস্তুর জেন্টেলম্যান।”

“আঙ্কেল এভাবে বলবেন না। গুরুজনদের সম্মান করাটাই তো আমাদের কর্তব্য।”

নাদিম মুজদাহীর হেসে বলেন,

“তা বাবা আজ কি মনে করে আমাদের এখানে?”

তখন আদিল বলে উঠে,

“বাবা, সুজয় আমাদের বিজনেসের জন্য একটা কাজ করেছে। তার জন্য আমরা বেশ বড় একটা কন্ট্রাক্ট পেয়েছি এবং এই কাজটি করতে পারলে আমাদের ব্যবসায় আরও সফলতা আসবে আর লাভও দ্বিগুন।”

বিজনেস সম্পর্কে সব বিস্তারিত জেনে খুব খুশি হন নাদিম মুজদাহীর। যেই আদিলকে বিক্রি করে তিনি বিজনেস করতে চেয়েছিলেন আজ সেই আদিলই তার বাবার জন্য আরো ভালো প্রস্তাব নিয়ে এসেছে। তিনি খুশি হয়ে আদিলকে বলেন,

“বাবা তোমাদের যা ভালো মনে হয় সেটা কর। আমি আর কতদিন। এখন তো তোমাদেরই দায়িত্ব হাতে নিতে হবে। যদি কোনো পরামর্শ লাগে আমিতো আছিই।”

“বাবা আরেকটা কথা আছে।”

“কী, বলো?”

“না মানে… মানে…”

“কি মানে মানে করছো?”

“মানে… ভাবছিলাম সুজয়কে আমাদের ঘরের ছেলে করে রেখে দিলে কেমন হয়?”

“বুঝিয়ে বলো।”

“সুজয় আলিয়াকে পছন্দ করে। বিয়েও করতে রাজি আছে। তুমি যদি সম্মতি জানাও তাহলে…”

নাদিম মুজদাহীর সশব্দে হেসে আলিয়ার দিকে তাকিয়ে বলেন,

“তাই নাকি? এ তো ভালো খবর। কিরে মা? তোর কি সম্মতি?”

আলিয়া মাথা নিচু করে লাজুক হাসি হেসে বলে,

“তোমরা যা ভালো মনে করো।”

নওরীন মুজদাহীর আলিয়াকে জড়িয়ে ধরে বলে,

“এবার আর ভুল নয় মা। সুজয় ঘরের ছেলে, সবাই তাকে ভালো করে চিনি। তোর সুখেই তো আমাদের সুখ।”

আলিয়া আরও লজ্জা পেয়ে নওরীন মুজদাহীরকে জড়িয়ে ধরে। তখন নাদিম মুজদাহীর বলে উঠে,

“তো আর কি?” সুজয়ের দিকে তাকিয়ে বলে,

“তোমার বাবা মাকে নিয়ে এসো একদিন। সব ঠিক থাকলে সামনের মাসেই বাজবে বিয়ের সানাই। তবে এবার দু দুটো।”

আদিলের দিকে ভ্রু নাচিয়ে বলে,

“তোমার কোনো পছন্দ থাকলে বলে ফেল। দেরি করোনা।”

আদিলও বেশ লজ্জা পেয়ে যায়। আমতা আমতা করতে থাকে, বুঝে উঠতে পারছেনা তিয়াশার কথা কিভাবে বলবে। এমন সময় আদনান হঠাৎ বলে উঠে,

“আছে তো? আছে…। ভাইয়ার পছন্দ আছে।”

আদিল বিস্মিত হয়ে আদনানের দিকে তাকিয়ে আছে আর ভাবছে, আদনান কি জানে সে তিয়াশাকে ভালোবাসে। আদিলের চোখে প্রশ্নবোধক চিহ্ন ভ্রূক্ষেপ করেই আদনান বলে উঠে,

“মোহিনীকে পছন্দ করে সে।”

আদিলের চোখ বড় বড় হয়ে গেছে। হা করে তাকিয়ে আছে আদনানের দিকে। কোন মোহিনীর কথা বলছে সে? ওদিকে নওরীন ও নাদিম মুজদাহীর দুজনেই বলে উঠে,

“তাহলে তো খুবই ভালো। মেয়ের বাড়ির ঠিকানা ফোন নম্বর দে। আমরা কথা বলে দেখি।”

আদনান খুশিতে গদগদ হয়ে বলে উঠে

“অবশ্যই দিবো মা।”

আদনান ঘর থেকে বের হয়ে যেতে নিলে, নাদিম মুজদাহীর ডেকে বলে,

“শোন? তোর ওই বান্ধবী, কি যেন নাম? হুম…. মনে পড়েছে… তিয়াশা। তাকে একদিন আমাদের বাসায় আসতে বলিস তো। মেয়েটার কাছে ঋণী হয়ে আছি।”

“ঠিক আছে বাবা, বলবো।”

বলেই আদনান বেরিয়ে যায়, তার পিছু নেয় আদিল। একটু দূরে যেতেই পেছন থেকে আদনানের শার্ট খাঁমচে ধরে টান দেয় আদিল।

“কিরে? তুই কোন মোহিনীর কথা বললি? মোহিনী এখানে আসলো কোথা থেকে?”

“ওমা তুই তো নিজে থেকে কোন কালেই কাকে পছন্দ করিস, তার নাম জীবনেও বলতি না বাবাকে। আমিও তো কতবার জিজ্ঞেস করেছি, আমাকেও বলিস না। তো মনে পরে গেল তোর বাল্যকালের প্রেমিকা, মোহিনীর কথা। তার কথাই বলে দিলাম বাবাকে।”

আদিল অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে,

“মোহিনীকে কোথায় পাবি তুই? সেতো লন্ডনে চলে গিয়েছিল কবেই।”

“ফিরে এসেছে।”

“ফিরে এসেছে?”

“হুম… এই যে নে ওর ফোন নাম্বার। যোগাযোগ করে দেখ।”

বলেই আদনান চলে যায়। এদিকে আদিলের চুল ছিড়তে মনে চাচ্ছে। কি করবে সে? হ্যাঁ বাল্যকালে সে মোহিনীকে একটু একটু পছন্দ করতো। সেতো অনেক কাল আগের কথা। কিন্তু এখন তো তার মন-প্রাণ জুড়ে রয়েছে তিয়াশা। এত কষ্ট করে সুহানিকে মাহিদের দিকে ফিরিয়েছে। এখন এসে জুটেছে মোহিনী। কি করবে আদিল? কিভাবে বলবে আদিল, যে সে মোহিনীকে নয়, তিয়াশাকে ভালোবাসে। তিয়াশাকেই সে জীবন সঙ্গী করতে চায়।

*

এক সপ্তাহ পরে তিয়াশাকে আদনান নিয়ে আসে তাদের বাসায় নওরীন মুজদাহীর ও নাদিম মুজদাহীরের সাথে দেখা করানোর জন্য। নাদিম ও নওরীন মুজদাহীর বেশ আদর করে কথা বলে তিয়াশার সাথে। তার অতীতের ব্যবহারের জন্য বেশ দুঃখ প্রকাশ করে। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে আলিয়ার জীবন একটি দুর্ঘটনা থেকে বাঁচানোর জন্য। খুব অল্পতেই বেশ আপন করে নেয় তিয়াশাকে। তিয়াশাও বেশ অভিভুত হয় তাদের আদর ও ব্যবহারে। এদিকে আলিয়াও তিয়াশাকে ধন্যবাদ জানায় তার জীবন বাঁচানোর জন্য। দুজনের মধ্যেও বেশ অল্প সময়ে অনেক ভাব জমে উঠে।

সেদিন বাসায় বসে জম্পেশ আড্ডা। আলিয়া, তার হবু বর সুজয়, আদনান, তিয়াশা, আদিল ও তার হবু বউ মোহিনী হয়েছে একসাথে। আদিলের বিয়ে পাকা করে ফেলেছে তার বাবা মা মোহিনীর সাথে। ঘটনা এত দ্রুত ঘটেছে যে আদিলের কিছু করার উপায় ছিলনা। সবাই গল্প করছে আর আদিল শুধু আড় চোখে তিয়াশাকেই দেখে যাচ্ছে। তিয়াশা একবারও আদিলের দিকে তাকায়নি। আদনানের সাথে খুনসুটিতে মেতে আছে সে। ভাব এমন যে আদিলের বিয়ে ঠিক হয়ে যাওয়াতে কষ্ট না পেয়ে বরং খুশি হয়েছে। কিন্তু তিয়াশার মাঝে কি ঝড় চলছে সেটাত শুধু সেই জানে।

গল্পের মাঝে সুযোগ বুঝে এক সময় আদনান তিয়াশার হাত ধরে টেনে নিয়ে যায় তাদের সুইমিংপুলের পাশে দোলনার কাছে। হাত ধরে হাঁটতে হাঁটতে আদনান গান ধরে,

“ভাল্লাগে হাঁটতে তোর হাত ধরে
ভাবনা তোর আসছে দিন রাত ধরে
এলোমেলো মনটাকে
কি করে কে আর রাখে
কেন আমি এত করে তোকে চাই

পারবো না আমি ছাড়তে তোকে
পারবো না আমি ভুলতে তোকে
পারবো না ছেড়ে বাঁচতে তোকে
হয়ে যা না রাজি একবার।”

আদনানের গান শুনে, তার অঙ্গভঙ্গি দেখে হেসে লুটোপুটি খাচ্ছে তিয়াশা। আর তা দেখে বুকের মাঝে তীব্র ব্যাথা হচ্ছে আদিলের। চোখ দুটো তার ছলছল করছে কিন্তু কিছু করার নেই। কথা অনেক দূর এগিয়ে গেছে, এখন তার বাবা মাকে আর থামানোর উপায় নেই। হঠাৎ স্পর্শে পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখে মোহিনী দাঁড়িয়ে। তাকে দেখে মুখে জোরপূর্বক হাসি ফুটিয়ে গল্প করতে থাকে তার সাথে। কিন্তু বুকের বাঁ পাশটা যেন চিনচিন করে ব্যথা করেই যাচ্ছে।

*

মুজদাহীর পরিবারে আবারও বেজে উঠেছে বিয়ের সানাই। পুরো বাড়ি সজ্জিত হয়েছে সোনালী আলোক সজ্জায়। বাড়িতে বসেছে চাঁদের হাঁট। মুজদাহীর পরিবার ভাসছে যেন আজ খুশির জোয়ারে।

বিয়ের স্টেজে বসে আছে দুই জোড়া বর কনে। সুজয় আর আলিয়া বসে আছে পাশাপাশি। মুখে তাদের মিষ্টি হাসি বিদ্যমান। দুজনকেই বেশ সুন্দর মানিয়েছে। অপরপাশে বিদ্ধস্ত মন নিয়ে বসে আছে আদিল, পাশে মোহিনী লম্বা ঘোমটা টেনে বসে। আদিলের আগ্রহও নেই মোহিনীকে দেখার। তার দু’চোখ খুঁজছে তিয়াশাকে। একবার যদি কথা বলতে পারতো তার সাথে। তিয়াশার বন্ধু, মা, ভাই বোন সবাইকেই দেখছে শুধু তিয়াশাই নেই।

আদনান আদিলের পাশে হাসি মুখ করে এসে বলে,

“কিরে ভাই, মুখে হাসি কই তোর? এত কষ্ট করে তোর বাল্য কালের প্রেমিকার সাথে মিলিয়ে দিলাম। আর তুই মুখ কালো করে রেখেছিস। হাস একটু।”

আদিল জোর করে মুখে হাসি টেনে এনে বলে,

“এত চিন্তা আমার জন্য না করলেও পারতি তুই। আচ্ছা, শোন… তিয়াশাকে দেখছিনা। আসেনি বিয়েতে?”

“আর বলিস না, এত বললাম। সে কিছুতেই আসবেনা। বললো ম্যাকডোনাল্ডে ইমার্জেন্সি ডাক পড়েছে, তাই নাকি তার যেতেই হবে। আন্টিও অনেক জোর করেছে। কিন্তু শুনলোই না।”

“তুই ওর অনেক খেয়াল রাখিস, তাইনা?”

“হুম, রাখতে তো চাই। সে চায় বলে তো মনে হয়না।”

আদিল একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে নিশ্চুপ হয়ে যায়। আসলেই তো তিয়াশা আসবে কেন বিয়েতে। যে তাকে ভালোবাসার স্বপ্ন দেখিয়ে আজ নিজেই বিয়ের পিঁড়িতে বসেছে অন্য একজনকে জীবন সঙ্গী করার জন্য তার বিয়েতে তিয়াশার না আসাটাই উচিত। না জানি মেয়েটা কি পরিমান কষ্ট পেয়েছে। সে নিজেও তো ধোকা দিলো তিয়াশাকে। এটা যে তাকে সারাজীবন কুঁড়ে কুঁড়ে খাবে। অসহায়ের মতো ভারাক্রান্ত মনে বসে আছে আদিল।

*

বিয়ে পড়ানো সুন্দর ভাবে সুসম্পন্ন হয়ে গিয়েছে। আলিয়াকে বিদায় দিয়ে এবার বউকে বরণ করে নিয়ে বাসর ঘরে বসানো হয়েছে। সব আচার অনুষ্ঠান শেষে সবাই এখন আদিলকে তার বাসর ঘরে বউয়ের কাছে নিয়ে যেতে উঠে পরে লেগেছে। আদিল নড়ছে না। কিছু একটা ভেবে আদিল উঠে দাঁড়ায়। নাহ, একজনকে স্বপ্ন দেখিয়ে তার স্বপ্ন ভঙ্গ করেছে, কিন্তু এখন তার ঘরে যে বউ হয়ে বসে আছে তার সাথে অন্যায় করতে পারেনা। সে ভাবে, এখন চেষ্টা করবে তিয়াশাকে ভুলে, তাকে ভালোবাসতে। কিন্তু তাও মন তো মানছে না। বলা সহজ কিন্তু করা টা এত সহজ যে নয়।

ধীর পায়ে এগিয়ে যাচ্ছে আদিল তার ঘরের দিকে। ঘরে ঢুকে কিছুক্ষণ ইতস্তত করে যখন পেছন ঘুরে দরজা লাগাতে যাবে ঠিক তখনই একটা তিন কি চার বছরের মেয়ে ধরাম করে দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে ছোট ছোট বাক্যে বলে,

“আমাল আম্মু কোতায়? আম্মু? আম্মু?”

আদিল অবাক হয়ে যায়। হাটু গেড়ে বসে পিচ্চি মেয়েটাকে ধরে বলে,

“মামনি কে তোমার আম্মু? এখানে কিভাবে এলে?”

পিচ্চি মেয়েটা আঙুল তুলে দেখিয়ে বলে,

“ঐ যে আমাল আম্মু।”

আদিল বিস্মিত,

“ঐটা তোমার আম্মু? তোমার আম্মুর নাম কি?”

মাথা ঝাঁকিয়ে বলে,

“হু, ঐটা আমাল আম্মু। আমাল আম্মুর নাম…।”

তার ঠিক পরেই এক পরিচিত কণ্ঠে কেউ ডেকে উঠে,

“মহুয়া। আম্মু কই তুমি? এই যে আমি এখানে। এদিকে আসো।”

পায়ের শব্দ শুনে আদিল পিচ্চি মেয়েটাকে কোলে করে নিয়ে ঘরের বাইরে যেতে নিবে তাকিয়ে দেখে পরিবারের সবাই তার ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে। পিচ্চি মেয়েটা দৌড়ে গিয়ে “আম্মু” বলে ঝাঁপ দিয়ে তার মায়ের কোলে চলে যায়। আদিল পিচ্চির মায়ের দিকে তাকায়। এ কী! এ তো মোহিনী! মোহিনী এখানে, তাহলে আদিলের অপেক্ষায় বাসর ঘরে বসে আছে কে?

আদিল বুঝতে পারছেনা কি হচ্ছে। বিস্ময়ের সাথে তাকিয়ে আছে। সবার দিকে একবার তাকিয়ে আবার নিজের ঘরের বিছানায় বসে থাকা মানুষটিকে দেখে আদিল বলে উঠে,

“মোহিনী…. আম্মু হলে ওই মেয়েটা কে?”

আদনান আদিলকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে বিছানায় নিয়ে ফেলে বলে,

“নিজেই দেখ।”

আদিলের হাত থরথর করে কাঁপছে। তিয়াশা নয়, মোহিনী নয়, তাহলে কাকে বিয়ে করলো আদিল? আলতো করে ঘোমটা তুলে তার চোক্ষু চড়কগাছ। সমানে ঘামছে সে। বিশ্বাস হচ্ছেনা তার, একই স্বপ্ন না সত্যি? আবার ঘোমটা তুলে ভালো করে তাকিয়ে দেখে হ্যা! এ তো সত্যি। বধূ বেশে তার সামনে বসে আছে তিয়াশা।

আদিল খুশিতে কি করবে বুঝতে পারছেনা। আদিল হাতে চিমটি কেটে দেখে স্বপ্ন দেখছে নাতো! দরজার কাছে যেয়ে জিজ্ঞেস করে,

“এটা কিভাবে সম্ভব?”

সবাই তাকে জোর করে রুমে ঢুকিয়ে দরজা লাগিয়ে দিতে দিতে বলে,

“সেসব পরে শুনিস। আগে বাসরটা উদযাপন কর।”

আদিল কথা না বাড়িয়ে বিছানার কাছে যেয়ে দেখে আদনান বিছানার এক কোনে আরাম করে পা ঝুলিয়ে বসে তিয়াশার সাথে গল্প জুড়ে দিয়েছে। মজার ছলে বলছে,

“আচ্ছা তিয়াশা, তুই তো আমার বান্ধবী। আবার আমার ভাবি ও। আবার আমি তোর দেবর ও”

তিয়াশা ও খুনসুটি করে বলছে,

“হুম, তো?”

“তো শালী যদি আধি ঘারওয়ালি হয়, তবে দেবর ও তো হাফ বর। সে ক্ষেত্রে তো আমার ও আজ এই ঘরে থাকার কথা। কি বলিস…”

হঠাৎ পেছন থেকে আদিল এসে আদনানের কান টেনে ধরে বলে,

“তবেরে শয়তান…এই ইচ্ছাতে গুড়ে বালি। আর এগুলো তোরই প্ল্যান ছিল তাইনা?

আদনান শার্টের কলার ঝাঁকিয়ে বলে,

“জি, দি ওয়ান এন্ড অনলি।”

“হয়েছে এবার বের হ।”

“ইশ…সহ্য হচ্ছেনা আর তাইনা?”

“এক চড় খাবি। যা এখন…।”

“আচ্ছা শোন শোন…. আমার আমানত, যখের ধন, পরান পাখি বান্ধবিটিকে তোর হাতে তুলে দিয়েছি তোর হাতে বিশ্বাস করে। তুই ওকে সারাজীবন সুখে রাখবি, কথা দে।”

হাসির ছলে আদনান কথা গুলো বললেও, তার গলা ধরে আসছে। অনেক কষ্টে নিজেকে শান্ত রেখে জোর করে মুখে হাসি ফুটিয়ে রেখেছে। আদিল আদনানের হাত ধরে প্রত্যুত্তরে বলে,

“কথা দিলাম। ধন্যবাদ ভাই। তোর আমানতের খেয়ানত হতে আমি দিবোনা।”

হাসতে হাসতে আদনান বের হয়ে পেছনে দরজা আটকে দাঁড়ায়, আর চোখ দিয়ে গড়িয়ে পরে দু ফোটা নোনা জলে, কিন্তু ঠোঁটে তার বিজয়ের হাসি। সে পেরেছে নিজের ভালোবাসাকে স্যাক্রিফাইস করে ভাইয়ের খুশির জন্য তার হাতে তুলে দিতে।

*

আদনান নীরব বসে আছে দোলনায়। মিশ্র অনুভূতি হচ্ছে তার। হাতে গিটার নিয়ে বসে আছে কিন্তু কি সুর তুলবে বুঝতে পারছেনা। হঠাৎ পাশে বসে মোহিনী হাত ধরতেই ঠোঁটে মুচকি হাসি ফুটিয়ে তাকায় আদনান। মোহিনী আদনানের গাল টেনে দিয়ে বলে,

“অনেক মহৎ কাজ করেছিস তুই। নিজের ভালোবাসার মানুষকে অন্যের হাতে তুলে দেয়া যে সহজসাধ্য বিষয় নয়।”

“উহু, আমার ভালোবাসার মানুষ তো পরে। বরং বলতে পারো দুটো ভালোবাসার মানুষকে কাছাকাছি আনতে সহায়তা করেছি। তবে, সঠিক সময়ে তুমি না আসলে আমিও প্ল্যান করতে পারতাম না আর তোমার সাহায্য ছাড়া এটা সম্পন্নও করতে পারতাম না।”

“তাও তুই যা করেছিস তা কেউ করবেনা। যাই হোক, এখন বলতো তুই জানলি কিভাবে তিয়াশা ও আদিল একে অপরকে ভালোবাসে? আর আন্টি আঙ্কেলই বা রাজি হলেন কিভাবে?”

“সে অনেক কথা।”

সংক্ষেপে আদনান জানায়, তিয়াশার জন্য আদিলের দুর্বলতা মাঝে মাঝেই নানা ঘটনায় দেখতে পেয়েছে সে। তিয়াশার প্রতি আদিলের কেয়ার, উদ্বিগ্নতা সবই তার মনে একটু একটু সন্দেহ জাগায়। তবে শিওর হয় সেদিন যেদিন সে তিয়াশাকে গিয়েছিল প্রপোজ করতে কিন্তু অন্য কেউ ততক্ষনে তিয়াশার সামনে হাটুগেড়ে বসে আছে দেখে। তখন যদিও মুখ দেখতে পায়নি, তবে আদিলের মতোই শারীরিক গঠন ছিল ছেলেটার। নিশ্চিত হওয়ার জন্য পরে তিয়াশাকে কৌশলে জিজ্ঞেস করে, তখন তিয়াশা নিজেই স্বীকার করে যে ওরা দুইজন দুইজনকে পছন্দ করে। তারপর আদনান তার বাবা মাকে বুঝিয়ে রাজি করিয়ে তিয়াশার মায়ের সাথে কথা বলে সব আয়োজন এগিয়ে নেয়। আর আদনানের বুদ্ধিতেই আদিলকে সারপ্রাইস দেয়ার জন্য একটু মজা করে তিয়াশার নামটা গোপন রেখে বিয়েটা আয়োজন করে।

“ব্যাস, এইতো ওদের কাহিনী। আর আমার ভালোবাসা? তিয়াশা খুশি থাকলেই তো আমি খুশি। আর আদিল তো সারাজীবনই অন্যের খুশির জন্যে স্যাক্রিফাইস করছে নিজের পছন্দকে। এবার নাহয় আমিই স্যাক্রিফাইস করলাম ওর পছন্দকে সম্মান করে।”

মোহিনী আদনানের কথায় পুরা বিমোহিত,

“বাহ, তুই সত্যিই খুব ভালো একটা কাজ করেছিস। তোর এই উৎসর্গ আর ভাইয়ের বিয়েকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য যা যা করেছিস, আমি সত্যিই সাধুবাদ জানাই।”

*

তিয়াশা ঘোমটা টেনে বসে আছে আদিলের অপেক্ষায়। একটু আগেই দরজা বন্ধ করলো কিন্তু তার কাছে না এসে কোথায় গেল? আজব তো? কিছুক্ষন অপেক্ষা করে তিয়াশা বিছানা থেকে নেমে আদিলের বিশাল ঘরটায় তাকে খোঁজাখুঁজি করতে থাকে, কিন্তু আদিল তো নেই। হঠাৎই পেছন থেকে এসে আদিল জড়িয়ে ধরে তিয়াশাকে। আলতো করে ওষ্ঠ দ্বারা ছুঁয়ে দেয় তিয়াশার কাঁধে। তিয়াশা চমকে গেলেও তার শরীরে ঠান্ডা শিহরণ বয়ে যায়। নিঃশ্বাস ভারী হয়ে আসতে থাকে, আর হৃদ স্পন্দন যেন ড্রাম পিটাচ্ছে। আচমকা তিয়াশাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে পাজা কোলে তুলে নিয়ে হাঁটতে থাকে আদিল। তিয়াশা ভয় পেয়ে আদিলের গলা জড়িয়ে ধরে জিজ্ঞেস করে,

“আরে… কো…কোথায় নিয়ে যাচ্ছ?”

“শশ…শ।”

আদিল তিয়াশাকে তার বিশাল বারান্দার এক কর্নারে থাকা ডিভান টাতে শুইয়ে দিয়ে বলে,

“আজ আমাদের বাসর হয়ে যাক এখানেই।”

তিয়াশা অবাক হয়ে চারপাশটা দেখতে থাকে, কি অপূর্ব সুন্দর! পুরোটা ব্যালকনি প্রদীপ আর ফুল দিয়ে সাজানো। কিছু প্রদীপ পানিতে থাকা পদ্ম ফুলের টব গুলোতে পদ্ম ফুলকে ঘিরে তার চারপাশে ভাসছে। ফুলের মিষ্টি সুবাস, প্রদীপের আলো আর যদি হয় পূর্ণিমা সন্ধ্যা এই ক্ষণ মোহনীয় করে তুলতে আর কি লাগে? তিয়াশা যখন চারপাশ দেখতে ব্যাস্ত তখন আদিল ব্যস্ত তিয়াশাকে দেখতে। তিয়াশা চারদিক দেখে আদিলের দিকে চোখ পড়তেই একটু লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করতেই আদিল তিয়াশার মুখ তুলে কপালে পড়িয়ে দেয় ভালোবাসার চুম্বন।

“ভালোবাসি, তিয়াশা।”

তিয়াশাও ছোট্ট করে ফিসফিস করে বলে,

“আমিও।”

এর পরেই তিয়াশাকে বেশ শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আদিল। তার চোখে দুফোঁটা আনন্দের জল। কিছু হারিয়ে যাওয়ার পর তা অবিশ্বাস্য ভাবে ফিরে পেলে যেই আনন্দ হয়, ঠিক তেমন ভালোবাসার মানুষটিকে হারিয়ে ফিরে পাওয়ার অসহ্য সুখের অনুভূতি নিয়ে তিয়াশাকে বুকে জড়িয়ে ধরে বসে থাকে আদিল। একে দেয় ঠোঁটে ভালোবাসার নিবিড় পরশ।

দুজনের মাঝে কোনো কথা নেই, কিন্তু নীরব থেকেই যেন একে অপরকে আলিঙ্গনের মাধ্যমে জানান দিচ্ছে তাদের ভালোবাসার গভীরতা।

এভাবেই এক পূর্ণিমা সন্ধ্যায় এক যুগলের ভালোবাসার সফল পরিণতি হয়। তিয়াশা ও আদিল যখন প্রেমের সাগরে ডুব সাঁতার কাটছে, ঠিক তখনই একটি গানের সুর বাতাসে ভেসে আসে। কিছু মুহুর্তের জন্য তিয়াশা একটু থমকে যায়। সুরটা যে খুব পরিচিত লাগছে। তারপর আবার হারিয়ে যায় ভালোবাসার অতল রাজ্যে।

তিয়াশা কি কখনো জানতে পারবে কে তার সিক্রেট এডমায়ারার?

***সমাপ্ত***

সব পর্বের লিংক একসাথে: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/permalink/947465892350797/

[বি.দ্র: এটি আমার লেখা সর্বপ্রথম প্রেমের উপন্যাস। চেষ্টা করেছি ভালো কিছু উপহার দেবার। জানিনা কেমন হয়েছে। গল্পটি পড়ে আপনাদের অনুভূতি গঠন মূলক মন্তব্যের মাঝে জানাতে ভুলবেন না। আপনাদের মন্তব্যই আমাকে উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা যোগাবে ভবিষ্যতে আরও ভালো কিছু উপহার দেয়ার।

আর আপনাদেরকে অনেক ধন্যবাদ, যারা এই গল্পের শুরু থেকে পুরোটা সময় আমার পাশে ছিলেন। আপনাদের মূল্যবান সময় ব্যয় করে আমার গল্প নিয়মিত পড়েছেন, গঠনমূলক মন্তব্য করেছেন, গল্প এগিয়ে নেয়ার জন্য অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। অনেক ধন্যবাদ।

এবার নিচ্ছি কিছুদিনের বিরতি। শীঘ্রই ফিরবো নতুন কোনো গল্প নিয়ে। ভালো থাকবেন, সাথে থাকবেন।]

1 মন্তব্য

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে