পূর্ণিমা_সন্ধ্যায়
পর্ব_০৬
#লেখিকা_তাসনীম_তুষার
এক মাস পর। সকাল ১০:০০ টা। আজও ক্যালকুলাস ক্লাস শেষ করে এখন লনে বসে আছে তিয়াশা, প্যাট্রিসিয়া ও ম্যাথিউ। আজ তাদের ক্যালকুলাস হোমওয়ার্ক এর কোনো তাড়া নেই, কারণ আজ তাদের ক্লাস টেস্ট ছিল। এখন লনে বসে খোলা হাওয়াতে একটু বিশ্রাম নিচ্ছে। মিনিট পনেরো পর প্যাট্রিসিয়া উঠে বলে,
“Guys, I’m hungry. I’m gonna go to the cafeteria now to eat something. Who wants to join me?” (বন্ধুরা, আমি ক্ষুধার্থ। আমি এখন ক্যাফেটেরিয়াতে কিছু খেতে যাবো। কেউ কি যেতে চাও?)
ম্যাথিউ ও প্যাট্রিসিয়াকে সমর্থন জানিয়ে বলে,
“I’m hungry too. I will go to cafeteria with you Patt.” (আমারও ক্ষুদা পেয়েছে। আমিও তোমার সাথে যাবো প্যাট।)
তিয়াশার কাছ থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে ম্যাথিউ জিজ্ঞেস করে,
“Tee, are you coming? Or you want us to bring something for you?” (টি, তুমি কি যাবে? নাকি তোমার জন্য কিছু নিয়ে আসবো?)
“No, I’m not hungry. Besides there is not much Halal food option for me except french fries, fish or veggie sandwich. I think I’ll pass for now.” (না, আমার ক্ষুদা নেই। তাছাড়া এখানে হালাল খাবারও খুব একটা পাওয়া যায়না, শুধু ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, মাছ বা সবজি স্যান্ডউইচ ছাড়া আর কিছু নাই আমার জন্য। ভাবছি আজকে বাদ।)
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
“Ok, understood Tee. You better stay here and take rest. We will be back in 30 minutes.” (হুম, বুঝতে পেরেছি টি। তুমি এখানে থাকো, আমরা ঠিক ৩০ মিনিট পরেই চলে আসব।)
“Ok, I will be here waiting for you guys. Enjoy your food.” (ঠিক আছে, আমি এখানে অপেক্ষা করছি তোমাদের জন্য। তোমরা তোমাদের খাবার উপভোগ করো।)
প্যাট্রিসিয়া ও ম্যাথিউ চলে গেলে, তিয়াশা তার পরবর্তী নেটওয়ার্কিং ক্লাস এর বই বের করে পড়াশোনা শুরু করে। সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার বাকি আছে আর মাত্র ২ সপ্তাহ। তাই সময় নষ্ট করতে চায়না তিয়াশা। যখন সময় পায় তখনই বই নিয়ে পড়তে বসে যায়। বই এর মধ্যে মাথা গুজে আছে তিয়াশা। হঠাৎ গিটার এর শব্দে ধ্যান ভাঙ্গে তার। কাছে কোথাও কে যেন সুন্দর করে গিটারে একটা গান বাজাচ্ছে। হুম, মেলোডি টা তো সুন্দরই, ভাবে তিয়াশা।
একটু শোনার পর তিয়াশা আবার পড়ায় মন দিতে যাবে, হঠাৎ তিয়াশা চমকে মাথা উচু করে চারপাশে তাকায়। আরে, মিউজিকটা তো চেনা চেনা লাগছে। এটা তো সেই গানটা, যেটা তিয়াশাকে লুকিয়ে কে যেন চিরকুটে লিখে পাঠিয়েছিল।
ভড়কে যায় সে, হৃদপিণ্ডের ধুকপুকানী হাতুড়ির মত বাড়ি দিচ্ছে বুকে। তিয়াশা পুরো লনের চারপাশে ভালো করে তাকিয়ে দেখে। নাহ কাউকে তো গিটার বাজাতে দেখছেনা। তিয়াশা কোনো রকম ব্যাগ গুছিয়ে গিটার এর শব্দের উৎস খুঁজতে হাটা শুরু করে।
গিটারের শব্দ অনুসরণ করে তিয়াশা একটি ভবনের পেছন দিকে এসে পৌঁছায় এবং দেখে একটি গিটার ভবনের পেছনের সিঁড়ির রেলিং এ হেলান দিয়ে দাঁড় করানো, কিন্তু আসে পাশে কেউ নেই।
পেছন থেকে কারো গলার আওয়াজ শুনে পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখে একটি ছেলে তার দিকে হাত বাড়িয়ে বলছে,
“Excuse me! Is it your phone?” (এই যে শুনছেন! এটা কি আপনার ফোন?
তিয়াশা ফোনটি দেখে হাতে নিয়ে বলে,
“Yes, this is my phone. How did you get it?” (হ্যা, এটা তো আমারই ফোন। আপনি কিভাবে পেলেন?)
“It was dropped on the floor.” (এটা মাটিতে পড়েছিল।)
“Oh, thank you so much for returning the phone.” (ওহ, ধন্যবাদ ফোনটি ফিরিয়ে দেয়ার জন্য।)
ছেলেটি হেসে বাংলায় জবাব দেয়,
“কোনো সমস্যা নেই। বরং ভালো লাগলো আপনাকে সাহায্য করতে পেরে।”
তিয়াশা বেশ অবাক হয়ে উৎকণ্ঠিত হয়ে জিজ্ঞেস করে,
“আপনি বাঙালি? খুব ভালো লাগলো বাঙালি কারো সাথে পরিচিত হতে পেরে। আপনার নামটা?”
“আমার নাম আদনান।”
প্যাট্রিসিয়া ও ম্যাথিউ ক্যাফেটেরিয়া থেকে ফিরে তিয়াশাকে লনে না পেয়ে খুঁজতে খুঁজতে কাছাকাছি চলে আসে সেই বিল্ডিং এর পেছন দিকটায় যেখানে তিয়াশা ও আদনান দাঁড়িয়ে পরিচিত হচ্ছিল।
ম্যাথিউ দূর থেকেই হাত নেড়ে বলে উঠে,
“Here you are, Tee. We were looking for you. What are you doing here?” (টি, এইখানে তুমি। আমরা তোমাকে খুঁজে ফিরছি। এখানে কি করছো?)
পরক্ষনেই আদনানের দিকে চোখ পড়ল ম্যাথিউ এর, তার সাথে হাই ফাইভ দিয়ে বলে,
“Hey buddy, what are you doing here? Do you guys know each other.” (বন্ধু, এখানে কি করছো? তোমরা কি একজন আরেকজনের পরিচিত?)
তিয়াশা, ম্যাথিউ ও আদনানের কথোপকথন শুনে তাদেরকে থামিয়ে ম্যাথিউ কে বলে,
“Wait a sec. I just met him. But it seems like you guys know each other closely.” (এক মিনিট। আমার সাথে মাত্রই ওর পরিচয় হলো। কিন্তু মনে তো হচ্ছে যে তোমরা একজন আরেকজনকে বেশ ভালোভাবে চেনো)
“Yeah we know each other Tee. He is my gym mate and very good friend.” ( হ্যা টি, আমরা পরিচিত। আমরা একসাথে জিম করি এবং ভালো বন্ধুও।)
আদনান প্রত্যুত্তরে জানায়
“Yes, Matthew and I are friends and gym partner. We know each other from very long time. Besides, with one of you I have a common class as well.” (ঠিক। ম্যাথিউ আর আমি দুজনে বন্ধু এবং জিম পার্টনার। আমরা একজন আরেকজন কে অনেক আগে থেকেই চিনি। তাছাড়া, তোমাদের মধ্যে একজনের সাথে আমার কমন ক্লাস ও আছে।)
তিয়াশা আগ্রহ নিয়ে জিজ্ঞেস করে,
“Really? Which class you have in common? And with whom?” (সত্যি? কোন ক্লাসটি কমন? আর কার সাথে?)
আদনান স্মিত হেসে উত্তর দেয়,
“That you guys have to find out.” (সেটা তোমরাই নাহয় খুঁজে বের কর।)
প্যাট্রিসিয়া এতক্ষন সব চুপচাপ শুনছিলো। এক পর্যায়ে সে সবাইকে থামিয়ে বলে উঠে,
“Guys, our next class will be starting just in 10 minutes. Let’s go now.” (দোস্তোরা, আমাদের পরবর্তী ক্লাস ঠিক ১০ মিনিট পর শুরু হয়ে যাবে। জলদি চলো সবাই।)
তারপর আদনানের সাথে হাত মিলিয়ে বলে,
“Nice to meet with you. Since you are Matt’s friend meaning you are our friend as well. I hope we will see you more often.” (তোমার সাথে পরিচিত হয়ে ভালো লাগলো। যেহেতু তুমি ম্যাট এর বন্ধু তার মানে তুমি আমাদেরও বন্ধু। আশা করবো তোমার সাথে প্রায়ই দেখা হবে এখন থেকে।)
আদনান হেসে জবাব দেয়,
“Sure, we will meet again.” ( অবশ্যই তোমাদের সাথে আবারও দেখা হবে।)
তিয়াশাও আদনান কে বিদায় জানিয়ে বলে,
“It was really nice to meet with you, and thank you for the phone.” (পরিচিত হয়ে ভালো লাগলো আপনার সাথে। আর ফোনটি ফেরত দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।)
আদনান তার বুকের বাঁ পাশে হাত রেখে অল্প ঝুকে উত্তর দেয়,
“The pleasure was mine my lady. Bye for now.” (এটা আমার জন্য অনেক সৌভাগ্যের ছিল মাই লেডি। এখনকার জন্য বিদায়।)
তিয়াশা, ম্যাথিউ ও প্যাট্রিসিয়া বিদায় জানিয়ে আদনানকে, তাদের যেই ভবনটিতে পরের ক্লাস সেদিকে হাটতে শুরু করে। আদনানও উলটো পথে হাঁটা দেয়।
যেতে যেতে এক ফাঁকে তিয়াশা পেছনে ফিরে তাকিয়ে দেখে গিটারটা এখনো সিঁড়ির রেলিং এ দাঁড় করানো এবং আসে পাশে এখনো কেউ নেই। একটু হতাশ হয়ে সে আবার সামনে হাটতে শুরু করে।
তিয়াশা ও তার বন্ধুরা তাদের ক্লাস ভবনের ভেতর ঢুকে গেলে তিয়াশা ও আদনানের যেখানে পরিচয় হয় সেই ভবনের আড়াল থেকে বেরিয়ে আসে আদনান। ঠোঁটের কোণে মৃদু হাসি তার। গিটারটা কাঁধে তুলে গুন গুন করে “I won’t give up” গানটা গাইতে গাইতে তার গন্তব্যে রওনা দেয়।
আগের পর্বের লিংক:
১. https://www.facebook.com/groups/golpopoka/permalink/915622528868467/
২. https://www.facebook.com/groups/golpopoka/permalink/917622012001852/
৩. https://www.facebook.com/groups/golpopoka/permalink/918995701864483/
৪. https://www.facebook.com/groups/golpopoka/permalink/920508638379856/
৫. https://www.facebook.com/groups/golpopoka/permalink/923391284758258/