পারফেক্ট কাপল পর্ব-১১

0
1329

#পারফেক্ট_কাপল
#পর্বঃ১১
#ইনান

সকাল ৮ টায় ঘুম ভাঙে আমার । পাশে তাকাতেই দেখি অগ্নি এক হাত ভর দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে । রাতের ঘটনা মনে হতেই লজ্জা লাগছে ভীষণ । আমাকে লজ্জা পেতে দেখে অগ্নি মুচকি হেসে বলে

“ওরে আমার লজ্জাবতিরে

গালে একটা কিস করে আমাকে জড়িয়ে ধরে । আমি ওর কাছ থেকে নিজেকে ছাড়াতে ব্যস্ত হয়ে গেলাম

“আরে ছাড়ুন আমায় । আনেক দেরি হয়ে গেছে
“উহু
“কী উহু! রাতে অনেক জ্বালিয়েছেন এখন প্লীজ ছাড়ুন ।

আমার কথায় অগ্নি তার মুখ আমার কানের কাছে এনে স্লো ভয়েস এ বলে ।

“কিভাবে জ্বালিয়েছি গো তোমায়

ওর এমন স্লো ভয়েস এ বলা কথা বুকে তোলপাড় শুরু করে দিছে । তার উপর এমন প্রশ্ন । আমি উঠে চলে আসতে নিবো ও আমাকে আরো চেপে ধরে নিজের সাথে ।

“কী হচ্ছে কী ছাড়ুন আমায়
“না ছাড়বো না
এবার অসহায় গলায় বলি
“প্লীজ ছাড়ুন আজকে উঠতে অনেক দেরি হয়ে গেছে

আমার কথায় অগ্নি আমার কপালে একটা কিস করে ছেড়ে দেয় । আমি টাওয়াল পেচিয়ে চলে গেলাম গোসল করতে ।
.
.
.
রেড মাফিয়া গ্রুপ
কুল মুডে বসে আছে মেয়েটি । আকাশ তার দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে । আসলে সে বোঝার চেষ্টা করছে মেয়েটার মাথায় কী প্ল্যান চলছে ।

“আকাশ
“বলো
মেয়েটা নিজের নখের দিকে তাকিয়ে বলে
“অগ্নিকে মেরে ফেলতে হবে ।
“কী বলছো অগ্নি তোমার…

আকাশ কে আর কিছু বলতে না দিয়ে হাত দিয়ে থামিয়ে দেয় । আর রাগী দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে বলে

“আমি যেটা বলছি ঐটা করো । অগ্নির কারণে আমাদের অনেক টাকা লোস হয়েছে আর ডার্ক মাফিয়া গ্রুপকে নিয়ে পরে ভাবা যাবে । এখন মেইন টার্গেট হচ্ছে অগ্নিকে মারা ।
“হুম
“ওকে আমি এখন আসি
.
.
.
আমি গোসল করে নিচে আসতেই দেখি অনি বাহির থেকে আসছে । বারবার এদিক ওদিক তাকাচ্ছে । আমি তার কাছে গিয়ে বললাম

“কিগো ননদিনি চোরের মতো এদিক ওদিক কী দেখছো ?

আমার কথায় অনি ভূত দেখার মতো চমকে উঠে । আমি তার দিকে তাকিয়ে হেসে দেই । ও আমাকে দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিয় বলে

“ও ভাবি তুমি ।
“হুমি আমি ।কোথায় গেছিলে
“জগিং করতে
“ওহ আচ্ছা যাও ফ্রেশ হয়ে আসো

অনি আমার কথায় মাথা নাড়িয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে চলে যায় । আমি মুচকি হেসে চলে গেলাম রান্নাঘরে ।

মা কে রান্নার কাজে হেল্প করছি । প্রথমে মা কাজ করতে দেয় নি । কিন্তু আমি জোর করে কাজ করছি । হঠাত্‍ কলিংবেল বেজে উঠে ।

“নিধি দেখতো গিয়ে কে এসেছে
“আচ্ছা মা

আমি চলে আসলাম দরজা খুলতে । আমি দরজা খুলতেই আমার বয়সি একটা মেয়েকে দেখতে পাই । মেয়েটা আমাকে দেখে কটমট করে আমার দিকে তাকিয়ে ভিতরে চলে যায় ।

“মামি কোথায় তুমি

মেয়েটার চিত্‍কারে মা রান্নাঘর থেকে ছুটে আসে । আমি মেয়েটার দিকে হা করে তাকিয়ে আছি । মেয়েটার আচরণ মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে । আমার দিকে ঐভাবে কটমট করে তাকানোর কারণ খোজে পেলাম না

মা এসে মেয়েটাকে দেখেই থেমে যায় । মুখে একটা চলতি হাসি ফোটে উঠে

“আরে মিলি কবে এলি

ও আচ্ছা এই মেয়ের নাম মিলি । মিলি আমার দিকে তেছড়া ভাবে তাকিয়ে বলে

“আজকে সকালেই এসেছি
“ওহ । আচ্ছা তোর রুমটা গোছানো আছে যা গিয়ে ফ্রেশ হ । ওহ তার আগে অগ্নির বউয়ের সাথে পরিচিত হ

মা আমাকে ইশারা করে উনার কাছে যেতে আমি তাই করলাম ।

“আগ্নির বউ নিধি

মিলি আমার দিকে তাকিয়ে জোর পূর্বক হেসে
“আমি মিলি
“আমি নিধি

মিলি আর কিছু না বলে চলে যায় । আমি দাত দিয়ে নখ কাটতে কাটতে রুমে গেলাম । আমাকে এভাবে দেখে ভ্রু কুচকে তাকালো অগ্নি

“কী চিন্তা করছো গো ?
“আপনার কাজিন মিলি এসেছে
“কী ঐ চিপকু মেয়েটা বাসায় এসেছে
আমার দিকে চোখ বড় বড় করে কথাটা বলে । আমি তার কথা বুঝতে না পেরে বলি
“মানে ?
“মিলি বাসায় আসলে সবসময় আমার সাথে চিপকে থাকে ।

ওহ তাহলে এই ব্যাপার । এই কারণে মিলি আমার দিকে কটমট দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল । আমি অগ্নির সামনে গিয়ে দাড়িয়ে কমড়ে হাত দিয়ে বলি

“ঐ মেয়ের থেকে দূরে দূরে থাকবেন । ঐ মেয়ে একদম সুবিধার না

এই বলে আমি রুম থেকে চলে আসি । আর মিলিকে কিভাবে আমার বরের কাছ থেকে দূরে রাখা যায় সে চিন্তা করছি । আমার এতো কিউট বরটার সাথে ঐ শয়তান মেয়ে চিপকে থাকে । এবার একটু চিপকে দেখ তোরে কী করি
.
.
.
ডার্ক মাফিয়া গ্রুপ
অভি দৌড়ে কিং এর রুমে ঢুকে । অভিকে এভাবে দৌড়ে আসতে দেখে কিং ভ্রু কুচকে তার দিকে তাকায় ।

“দোস্ত রেড মাফিয়া গ্রুপ আমাদের কিছু লোকদের মেরে ফেলছে
“হোয়াট!
“হ্যাঁ
“ওকে তুই যা আমি দেখছি

কিং এর কথায় অভি চলে যায় ।অভি চলে যেতেই কিং একটা বাকা হাসি দিয়ে বলতে শুরু করে

“আকাশ রহমান তুমি বড্ড বোকা ।
.
.
.
সকাল ১০ টা বাজে খাবার টেবিলে বসে খাবার খাচ্ছি । মিলি গাল ফুলিয়ে বসে আছে । কারণ ও এসে অগ্নির পাশে বসতে চায়ছিল কিন্তু ওর আগে এসে আমি বসে পরি

“আচ্ছা তুমি এভাবে ছুটে এসে আমার পাশে বসলে কেন ?
আমার কানের কাছে এসে ফিসফিস করে বলে । আমিও আস্তে আস্তে করে বলি
“নয়তো ঐ মিলি পেতনি আপনার পাশে এসে বসতো
“বসলে বসতো

অগ্নির কথায় আমি তার দিকে কটমট দৃষ্টিতে তাকাতেই সে ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে খাওয়া শুরু করে । তখন বাবা বলে উঠে

“অগ্নি, নিধি তোমরা আজকে থেকে ভার্সিটিতে যাবে
“ওকে বাবা
“আমিও যাবো অগ্নির সাথে ভার্সিটিতে

মিলি বলে উঠে । আমি মিলির দিকে কটমট দৃষ্টিতে তাকাতেই ও আমার দিকে একইভাবে তাকায় । আমি ওর দিকে তাকিয়েই বলতে শুরু করি

“মিলি আমরা আজকে অনেকদিন পর ভার্সিটিতে যাবো তাই একটু বিজি থাকবো । তোমাকে আমরা সময় দিতে পারবো না । তুমি এক কাজ করো অনির সাথে ওর কলেজে যাও ।

আমার কথায় মিলি কিছু বলতে যাবে তার আগেই মা বলে উঠে

“হ্যা নিধি ঠিকই বলছে তুই আরেকদিন যাস

মিলি আর কিছু বলে না । আমি তার দিকে তাকিয়ে বাকা হাসলাম । আর অগ্নি আমার দিকে তাকিয়ে বাকা হাসল । মিলির বাচ্চা তোরে যদি আমি টাইট না দিছি তো আমিও মিসেস অগ্নি চৌধুরী না ।

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে