#পারফেক্ট_কাপল
#পর্বঃ৩
#ইনান
ভার্সিটি ছুটি দিয়েছে ২ ঘন্টা আগে । এই ২ ঘন্টার মধ্যে একটা সেকেন্ড ও একটু বিশ্রাম নিতে পারলাম না । কারণটা হচ্ছে ঐ কচ্ছপ টা আমাকে এটা ওটা করাচ্ছে মনে হচ্ছে এখানে আমি ছাড়া আর কেউ নেই কাজ করার মতো ।
আমি মুখ গোমড়া করে কাজ করছিলাম তখন আমাদের ক্লাসের ডঙ্গি মেয়ে সাথি আসে । এসে খুব ভাব নিয়ে দাড়ায় অগ্নির পিছনে ।
“অগ্নি ভাইয়া আপনি তো ঘেমে গেছেন একেবারে ।
ন্যাকা সুরে বলে সাথি । সাথির ন্যাকা কন্ঠ শুনে অগ্নির ভীষণ বিরক্ত লাগছে তা ওর মুখ দেখেয় বুঝা যাচ্ছে । সে সাথিকে কঠিন গলায় জবাব দিল
“সো হোয়াট
সাথি আবারো ন্যাকা গলায় বলে
“চলুন আপনার ঘামটা মুছে দেই
“আমার দিকে নজর দিতে হবে না চুপচাপ গিয়ে তুমি নিজের কাজ করো ।
অগ্নির কথা শুনে সাথির মুখটা এইটুকু ছোট হয়ে গেছে । এখন আমার মাথায় অগ্নিকে জ্বালানোর জন্য শয়তানি বুদ্ধি আসে । আমি নিজে নিজেই বলে উঠি
“ব্যাটা কচ্ছপ অনেক জ্বালাইছস আমাকে এখন দেখ এই নিধি তোকে কী করে
একটা শয়তানি হাসি দিয়ে ওদের কাছে গেলাম । সাথি চলে যাচ্ছিল । আমি সাথির হাত ধরে তাকে আটকে দিলাম তারপর অগ্নির দিকে তাকিয়ে বলি
“আরে অগ্নি ভাইয়া সাথি কী এমন চেয়েছে যে আপনি ওর সাথে এমন করছেন । সিনিয়র হয়ে জুনিয়রের এইটুকু ইচ্ছে পূরণ করতে পারবেন না ।
আমার কথা শুনে সাথি অনেক খুশি হলো তা ওর চেহারা দেখে বোঝা যাচ্ছে কিন্তু অগ্নি যে একদম খুশি হয়নি তা ওর তাকানো দেখেই বোঝা যাচ্ছে । আমাকে মনে হচ্ছে চোখ দিয়ে গিলে খাবে । আমিও কম নাকি ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে ঐখান থেকে চলে আসলাম । এবার যাবো যেখানে ডান্স প্র্যাক্টিস হচ্ছে ঐদিকে ।
ডান্স ক্লাসে গিয়েই আমার চোখ বড় বড় হয়ে গেল । রিয়াদ আর রিমি ঝগড়া করছে আর আরিশ এবং ইশা তাদের আটকাচ্ছে । আমি ওদের কাছে গিয়ে হা করে ওদের ঝগড়া দেখছি । আমাকে এভাবে হা করে দাড়িয়ে থাকতে দেখে ইশা দাতে দাত চেপে বলে
“এভাবে ক্যাবলা কান্তের মতো হা করে তাকিয়ে আছিস কেন ? একে থামা এসে
“হ্যা ?
“আরে ওরে আইসা থামা
“ওহ হে
“হুম আয় ।
“ওরা ঝগড়া কেন করছে
“দুজনের রিলেশন খুব ভালো যে
“মানে ?
“ফ্ল্যাশব্যাক প্লীজ
.
.
.
ফ্ল্যাশ ব্যাক
রিমি ‘মম চিত্তে’ গানটায় নাচ করছিল । নাচের প্রতিটা স্টেপ তার দারুণ । সবাই মুগ্ধ ভাবে দেখছিল তার নাচ । কিন্তু হঠাত্ একটা স্টেপে সে পা পিছলে পড়ে যায় । এতে রিয়াদ শব্দ করে হেসে উঠে
“ঐ আপনি হাসলেন কেন ?
“আমার ইচ্ছে
“আপনার হাসার ইচ্ছে আমার পরে যাওয়ার পর কেন হয়ছে ?
“এই মেয়ে তুমি আগ বারিয়ে ঝগড়া লাগতে চায়ছো কেন ? মিস ঝগড়ুটে
“আমি ঝগড়ুটে! আপনি কী ? কানা কোথাকার
(রিয়াদ চোখে চশমা পরে তাই রিমি তাকে কানা বলে ডাকছে )
.
.
.
বর্তমান
“ও এই ব্যাপার!
“হুম বইন থামা এই রিমিকে
“ওকে ওয়েট
আমি চুপচাপ রিমির কাছে গেলাম । আর ওর কানে কানে গিয়ে বললাম
“দোস্ত রিয়াদ তোর সাথে ইচ্ছা করে ঝগড়া লাগছে যাতে ও মজা নিতে পারে আর তুই তালে তালে নাচতেছিস
আমার কথা শুনে রিমি সাথে সাথে চুপ হয়ে যায় । আর চুপচাপ গিয়ে একটা বেঞ্চে বসে পরে । এটা নতুন না এর আগেও আমি একে এভাবে চুপ করিয়েছি । আমি মুচকি হেসে ওর পাশে গিয়ে বসে অন্যদের নাচ দেখতেছি ।
.
.
.
কিছুক্ষণ আগেই বাসায় আসলাম । খুব ক্লান্ত লাগছে তাই শুয়ে শুয়ে সানাইয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি । কখন যে ঘুমিয়ে গেলাম নিজেও জানি না ।
আমার ঘুম ভাঙল কিছু পরে যাওয়ার শব্দে । চোখ খোলে শব্দ যে দিক থেকে এসেছে ঐদিকে তাকালাম তাকাতেই আমার রাগ সাত আসমান উপরে উঠে গেলো । ভার্সিটিতে অগ্নি আর বাসায় এই নিয়ানের বাচ্চা আমাকে জ্বালিয়ে মারে উফ অসহ্য । ও আমাকে দেখেই দৌড় দেয় । আমি মেঝেতে তাকাতেই দেখি আমার সাধের ফ্লাওয়ার ভ্যাস টা ভেঙে ফেলছে ।
“নিয়ানের বাচ্চা
রাগে ফুসতে ফুসতে ওর রুমে গেলাম । গিয়ে দেখি ও আব্বুর লুঙ্গি পরে লুঙ্গি ডান্স দিচ্ছে । এবার মেজাজ আর গরম হয়ে গেল
“নিয়ান ভাই আমার
আমার ডাকে নিয়ান পিছনে ফিরে তাকিয়ে তুতলিয়ে বলে
“কি ছু ব লবা আপু ?
“ওমা তুই তুতলাচ্ছিস কেন ?
“কই কিছু না তো
“ও আচ্ছা । চল আজকে সুইমিংপুলে দুই ভাই বোন সাতার প্রতিযোগীতা করবো
“সত্যি ?
“হুম ।
“ওকে তাহলে চলো
“হুম চল
আমি নিয়ানের উল্টো দিকে ঘুরে বাকা হেসে চলে আসলাম নিজের রুমে । আমাদের বাড়ির পিছনে আব্বু আমার জন্য সুইমিংপুল করেছে আসলে আমার সাতার কাটতে ভালো লাগে । আর আব্বু এমন ভাবে করেছে যা কেউই উপর কী চারদিকের কোন দিক থেকেই দেখতে পাবে না ।
সে যায় হোক আমরা দুই ভাই বোন রেডি হয়ে গেলাম সাতার কাটতে । নিয়ান আর আমি সুইমিংপুলে নামি । নিয়ান নামতেই ওকে ডুবিয়ে দেই ।
“আপু কী করছিস ?
“তুই আমার সাধের ফ্লাওয়ার ভ্যাসটা কেন ভাঙছিস ?
আবার পানিতে ডুবিয়ে উপরে তুলি
“আপু আমি ইচ্ছে করে করিনি এবারের মতো ক্ষমা করে দে প্লীজ
“এই ভুল যদি দ্বিতীয়বার হয়..
“হবে না
“ওকে চল প্রতিযোগীতা শুরু করি ।
“হুম চলো
তারপর দুই ভাই বোন মিলে প্রতিযোগীতা করলাম । প্রতিবারের মতো এবার ও আমিই জিতলাম …
চলবে ?