#পারফেক্ট_কাপল
#পর্বঃ১
#ইনান
থাপ্পড় খাওয়ার ভয়ে গালে হাত দিয়ে বসে আছি ভার্সিটির সিনয়র ভাই অগ্নির সামনে আর আমার ঠিক সামনে অগ্নি আর তার দুই বন্ধু রিয়াদ আর আরিশ বসে আছে । উনারা কেউ কিছু বলছে না অগ্নি আমার দিকে রেগে তাকিয়ে আছে । ওরা কিছু বলছে না দেখে আমি নিজেই মুখ খুললাম ।
“এখানে স ত্যি আমার দোষ ছিল না ।
“চুপ
“আমার..
“এই চুপ
“আগে আমার
“নিধি চুপ থাকো এতে তোমার ই ভালো
“না আগে আমার…
“থাপ্পড় খেতে না চায়লে চুপ করে বসে থাকতে বলছি না ।
অগ্নির কথা শুনে আমি আবার ও গালে হাত দিয়ে বসে পড়লাম । কারণ এই লোকটার উপর আমার সম্পূর্ণ বিশ্বাস আছে যে ও এটা করতে পারে । ও আপনাদের আমার পরিচয়টা দিয়ে নিই । সাথে কী কারণে আমাকে এখানে বসিয়ে রাখা হয়েছে তাও জেনে আসি
(আমি নিধি ।পুরো নাম তানজিয়া নিধি অনার্স ১ম বর্ষে পড়ি । মা বাবার বড় মেয়ে । ছোট ভাই আছে একটা নাম নিয়াদ । সে ক্লাস এইট এ পড়ে । আমরা দুই ভাই বোন টম এন্ড জেরির মতো ফাইট করি । এছাড়া আমার একটা পোষা বিড়াল আছে নাম সানাই । এই হলো আমার পরিবার । এবার গল্পে ফিরে যায় চলুন)
ভার্সিটিতে না খেয়ে চলে আসায় প্রচুর ক্ষুধা লাগে । তাই কেন্টিনে চলে যাই কিছু খেতে । সেখানে গিয়ে আমার প্রিয় খাবার নডুলস অর্ডার দিয়ে বসে ছিলাম ঠিক তখনি আমার বান্ধুবি ইশা সেখানে আসে । দুজনে ঝগড়া লেগে যায় । ঝগড়া লাগার একটাই কারণ আমার নডুলস এর বেশি অর্ধেকটাই ও খেয়ে ফেলছে । আমি তার দিকে পানি ছুরে মারতেই নিচে বসে যায় আর সেই পানি গিয়ে পরে অগ্নির শরীরে । এতেই ইনি রেগে বোম আর আমাকে এখানে এনে বসিয়ে রেখেছে ।
এবার আর সহ্য হলো না তাই বলে উঠলাম
“আমাকে এখানে এভাবে বসিয়ে রাখার মানে কী
অগ্নি আমার প্রশ্নের জবাবে কিছু না বলে ওর বন্ধুদের চলে যেতে ইশারা করে ওরাও চলে যায় । তারপর উনি আমার দিকে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে মারলেন
“পানি ছুড়াছুড়ি কোন ধরনের মজা ?
“আমি তো ইশাকে মারছিলাম অপনাকে না
“তাহলে আমার শরীরে পরল কেন ?
“বিশ্বাস করুন এতে আমার একটুও দোষ নেই ।
“কার দোষ শুনি বলো ।
আমার দিকে হালকা এগিয়ে এসে বলে
“সব দোষ ইশার ।
“ও তাই
আমার দিকে এগিয়ে বলে । আমি একটু পিছিয়ে বলি ।
“হুম
“কিন্তু পানি ছুড়েছো তো তুমি ।সো প্রকৃত দোষি তুমি ।সো শাস্তি তোমাকেই পেতে হবে ।
বাকা হেসে বলে কথাটা
” শাস্তি মানে কি সের শা স্তি ? আমি কোন দোষ করি নাই তাহলে শাস্তি কেন পাবো ।
“শাস্তি তো তুমি পাবেই
“নাআআআ
” এই চুপ
ধমক দিয়ে বলে আমি সাথে সাথে মুখে আঙুল দিয়ে দেই । যার মানে আমি একদম চুপ ।
“আমার এই এসাইন্টমেন্ট গুলো করে দিবে কালকের মধ্যেই।
এতোগুলো খাতা ধরিয়ে দিয়ে চলে যায় । আমি খাতা গুলোর দিকে তাকিয়ে কাদু কাদু ফেইস নিয়ে ক্লাসরুম থেকে বের হলাম । ১ম বর্ষের স্টুডেন্ড হয়ে ৩য় বর্ষের এসাইন্টমেন্ট কিভাবে করবো । ও এই অগ্নির পরিচয় তো দেওয়া হলো না ।
(অগ্নি চৌধুরী অনার্স ৩য় বর্ষে পড়ে । ভার্সিটির প্রিন্সিপাল স্যার এর ছেলে । চেহারা হিরোদের মতো হলেও এক নাম্বারের ঘাড় ত্যাড়া আর বদ মেজাজী । তবে এই ছেলেই নাকি মেয়েদের ক্রাশ । আমার ও ক্রাশ ছিল কিন্তু এখন আর নাই । অগ্নির গায়ের রং ফর্সা ।চুল গুলো কপালে ফেলে রাখে, ঠোঁটের রং হালকা গোলাপি, আর বিলায় চোখ । উচ্চতা ৫ ফুট ১০ ।)
আমি খাতাগুলো নিয়ে ক্লাসরুমের দিকে যাচ্ছিলাম তখন রিয়াদ ভাইয়া আমার সামনে এসে দাড়িয়ে আমার দিকে একটা বই এগিয়ে দিয়ে বলে
“এই বই টা নাও এসাইন্টগুলো করতে সহজ হবে ।
“থ্যাংকস ভাইয়া
” ওয়েলকাম
“আচ্ছা ভাইয়া আপনি এতো ভালো কিন্তু আপনার ঐ অগ্নি ফ্রেন্ড এতো বজ্জাত কেন । যখনি দেখি আমার দিকে অগ্নি দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে থাকে ।।
রিয়াদ ভাইয়া কিছু না বলে মুচকি হেসে চলে যায় । কী হলো আমি হাসির কী বললাম । আমি এতো কিছু না ভেবে ক্লাসে চলে যাই । ক্লাসে যেতেই আমার ২ বান্ধুবি রিমি আর ইশা আমার কাছে আসে । আমি ইশার দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকায় ।সে আমার তাকানোকে পাত্তা না দিয়ে চুপচাপ দাড়িয়ে আছে রিমিও দাড়িয়ে আছে । আমি তাদের পাশ কাটিয়ে ব্যাগ নিয়ে ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে পরি । আসার সময় রিমি আর ইশা অনেক ডাকে কিন্তু আমি পাত্তা দেই নি ।
.
.
.
কলিং বেল বাজাতেই আম্মু এসে দরজা খোলে দেয় । আমাকে এতো তারাতারি আসতে দেখে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে থাকে আমার দিকে ।
“এভাবে তাকিয়ে আছো কেন ?
“এতো তারাতারি চলে এলি যে
“ক্লাস হয় নি বেশি
“কথাটা বিশ্বাস হচ্ছে না
“তুমি আমায় বাসায় ঢুকতে দিবে প্লীজ
আম্মু ভ্রু কুচকে তাকিয়ে থেকেই দরজা থেকে সরে দাড়ায় । আমি বড় বড় পা ফেলে নিজের রুমে চলে যায় । এখানে থাকলে ১০০ টা প্রশ্নের সম্মোখীন হব ।
আমি নিজের রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দিতেই এসাইনমেন্টের কথা মনে পরে যায় । ছট করে উঠে বসি আর কাজে লেগে পড়ি ।
রাত ১০
কমড় আর ঘাড় ব্যাথা হয়ে গেছে বসে থেকে । তবু এখন ও ২টা খাতা বাকী আছে । দুপুরের আর রাতের খাবার আম্মু খাইয়ে দিয়েছে । এখন আমার ঘুম পাচ্ছে কিন্তু ঘুমিয়ে গেলে আর এসাইন্টমেন্ট গুলো শেষ করতে পারবো না । উঠে রান্না ঘরে গিয়ে কফি বানিয়ে কফির মগ নিয়ে এসে আবার বসসলাম এসাইন্টমেন্ট গুলো করতে । এগুলো শেষ করতে করতে রাত ১টা বেজে যায় । আমি সব গুলো খাতা গুছিয়ে গিয়ে শুয়ে পড়লাম ।
.
.
সকালে
“এই নিধি উঠ ৯ টা বাজে ভার্সিটিতে যাবি না ।
“হুম
“কী হুম উঠ বলছি
আমি চোখ দুটো পিট পিট করে খোলে আম্মুকে দেখে আবার বন্ধ করে নিলাম । কিন্তু এসাইন্টমেন্টের কথা মাথায় আসতেই এক লাফে উঠে যায় । এক দৌড়ে ওয়াশরুমে । আমার এহেম কান্ডে আম্মু বোকা বনে গেলো । আমি তারাতারি রেডি হয়ে ভার্সিটিতে গেলাম । ভার্সিটিতে এসে দেখি….
চলবে।