#গল্পের_নাম: পরিশিষ্ট
#লেখিকা: অজান্তা অহি (ছদ্মনাম)
#পর্ব_১৮
রোদেলা এলোমেলো চুলে, ঘুম ঘুম চোখে অহির পেছন পেছন নিচে নামলো।ড্রয়িং রুমের সোফায় চোখ পড়তে চমকে উঠলো সে!সাদিদ এত রাতে কেন এসেছে?রোদেলা সামনে গিয়ে দাঁড়াতে সাদিদ এক নজর তার দিকে চেয়ে চোখ নামিয়ে নিল।সে উসখুস করছে।এখান থেকে ছুটে পালালে যেন বাঁচে।
কেউ কোনো কথা বলছে না।মনে হচ্ছে শোক দিবস উপলক্ষে নিরবতা পালন করছে!নিরবতা ভেঙে মুজিবুর রহমান প্রথম মুখ খুললেন!
—“বাবা সাদিদ!তুমি হঠাৎ এত রাতে? আই উইশ কোনো দূর্ঘটনা ঘটেনি!”
ফজিলা খালা সাদিদের হাঁটুতে চাপ দিয়ে বলল,
—“একদম ভয় ডর পাইবা না।চউখের পলকে কইয়া দেও!তুমি তো আর চুরি করতে আসো নাই বাপ।আর কেউ চুরি করতে আইসলে কলিং বেল চাইপা হগ্গল রে জাগায় না!”
ফজিলার মুখের কথা কুটি কেড়ে নিয়ে বলল,
—“খালা ডাকাইতরা তো সবাই রে জাগাইয়া গলায় রাম দা ধইরা ডাকাতি করে!”
শাহিনুর কুটিকে ধমক দিয়ে বলল,
—“তুই কথা না বলে ঠিক জায়গা আইস ব্যাগ চেপে রাখ।মাথায় ধরতে বলেছি।কপালে ধরোস কেন?”
কুটি নড়েচড়ে ঠিকমতো আইস ব্যাগ মাথায় ধরলো।সবাই চুপ হয়ে যেতে সাদিদ আমতা আমতা করে বলল,
—“আসলে ছিনজাকে আলাদা কোথাও এর আগে রাখা হয়নি।সবসময় আমার কাছেই থাকতো।আজ হঠাৎ এত দূরে সেজন্য ঘুম আসছিল না আমার।”
সবার যেন হুট করে মনে পড়লো সাদিদ চলে গেলেও ছিনজা রোদেলার কাছে রয়ে গেছে।সে বায়না ধরেছিল রোদেলা আন্টির সাথে থাকবে।কিছুতেই যাবে না।
সবাই মুখ চাওয়া চাওয়ি করলো।অহি এগিয়ে এসে বলল,
—“সাদিদ ভাই, আপনি কি ছিনজাকে এখন দেখবেন?ও রোদেলা আপুর রুমে ঘুমায়।কোনো কান্নাকাটি করেনি।অনেক রাত পর্যন্ত আমরা গল্প করেছি।”
সাদিদ এক পলক রোদেলার দিকে চেয়ে বলল,
—“আসলে আমার এত রাতে আসার আরো একটা কারণ আছে।মিস রোদেলার রুমে আমি আমার চশমাটা রেখে গেছি।চশমা ছাড়া স্টাডি করতে সমস্যা হয়।কাল কলেজ যাওয়ার সময় লাগবে।”
শাহিনুর বিস্ফারিত নয়নে বলল,
—“তুমি আমার মেয়ের রুমে কি করছিলে?”
—“তেমন কিছু না আন্টি!”
—“তেমন কিছু করতে চেয়েছিলে?”
সাদিদ অবাক হয়ে শাহিনুরের দিকে তাকালো।থতমত খেয়ে বলল,
—“আন্টি বিকেলে একটু ফ্রেশ হওয়ার দরকার ছিল।তখন ওনার রুমের ওয়াশরুমে গিয়েছিলাম।হাত মুখ ধোয়ার সময় শার্টের পকেট থেকে চশমাটা বেসিনের উপর রেখেছিলাম।মিস রোদেলা আপনি কি পেয়েছেন?”
রোদেলাও অবাক হয়ে বলল,
—“হুঁ!আমি চশমা পেয়েছি এবং তুলে রেখেছি।আপনার কি বাসায় আর কোনো চশমা নেই?এটার জন্য রাত তিনটের সময় আসতে হবে?”
সাদিদ উসখুস করে এদিক ওদিক তাকাল।তার নিরবতাই রোদেলাকে ধাক্কা দিল।বুঝিয়ে দিল সে বোকার মতো প্রশ্ন করেছে।সাদিদ স্যারকে এভাবে অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে ফেলতে পারে না সে!
সে দ্রুত রুমে গিয়ে একটুপরই চশমা নিয়ে নামলো।সাদিদের হাতে ধরিয়ে বলল,
—“এবার তাহলে সাবধানে যান।নাকি ছিনজাকে দেখে যাবেন?”
সাদিদ উঠে দাঁড়িয়ে তৎক্ষনাৎ বলল,
—“না না থাক!ছিনজা যেহেতু ঘুমাচ্ছে ঘুমাক।আমি বরং যাই।সকালে বাবা এসে নিয়ে যাবে।”
রোদ্দুর এতক্ষণ চুপ থাকলেও এবার বলল,
—“অনেক রাত এখন সাদিদ ভাই।এত রাতে ড্রাইভ করে যেতে হবে না।আপনি বাকি রাতটুকু এখানেই থেকে যান।অজান্তা,গেস্ট রুম গুছানো আছে কি না দেখে আয় তো!”
অহি চলে গেল।সাদিদ সোফায় বসে পড়ে বলল,
—“তার কিন্তু প্রয়োজন ছিল না।”
শাহিনুর বিড়বিড় করে বলল,
—“বজ্জাত ছেলে,বিছানায় শুয়ে পড়ে বলিস তার কোনো প্রয়োজন ছিল না।আমি বরং বাড়ি গিয়ে ঘুমাই!”
তার কথা অবশ্য কারো কানে পৌঁছাল না।কয়েক মিনিট পরেই জটলা ভেঙে গেল।ড্রয়িং রুমের সাথের রুমটাতে সাদিদের থাকার ব্যবস্থা করা হলো।
শাহিনুরের রুমের দরজায় দাঁড়িয়ে রোদেলা বলল,
—“মা,আমাকে ডেকে পাঠালে কেন?ঘুমাতে হবে আমার!মাথা ধপ ধপ করছে।”
শাহিনুর বিছানায় আধ শোয়া হয়ে খাটে হেলান দিলেন।রোদেলার দিকে চেয়ে বললেন,
—“মাথা কি তোর একার ধপ ধপ করছে?আমাদের করছে না?বিছানায় এসে বোস।কথা আছে!”
শাহিনুর কি কথা বলবে তা রোদেলা কিছুটা আন্দাজ করছে।নিজেকে প্রস্তুত করে হেঁটে গিয়ে মায়ের পাশে বসলো।এক পলক ওয়াশরুমের দরজায় তাকিয়ে বলল,
—“মা, বাবা কোথায়?”
—“স্টাডি রুমে।একবার ঘুম ভেঙে গেলে তোর বাপের আর সহজে ঘুম আসে না।পড়তে পড়তে বাকি রাতটুকু ওখানেই কাটিয়ে দিবে।”
—“মা,কিছু একটা বলবে তুমি।তাড়াতাড়ি বলো!”
এটুকু বলে রোদেলা হাই তুলল।সে মায়ের কাছে নিজেকে খুবই ক্লান্ত প্রমাণ করতে চাইছে।কারণ সে চাচ্ছে, এরপর তার মা যেই টপিকটা নিয়ে কথা বলবে সেটা না বলুক!
শাহিনুর তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে রোদেলার দিকে চেয়ে বলল,
—“আমি তোর এই বিয়েতে রাজি নই রোদু!তুই কেন আমার কথা মানতে চাইছিস না?সাদিদের মতো অমন বদের হাড্ডি ছেলের সাথে আমি তোর কিছুতেই বিয়ে হতে দিবো না।”
রোদেলা অসহায় চোখে মায়ের দিকে তাকালো।আজ রাতে তার বিয়ে পাকাপোক্ত হয়ে গেছে সাদিদ স্যারের সাথে।চারদির পর বিয়ে।রোদ্দুর আর অহি কিভাবে সবাইকে বুঝিয়েছে রোদেলা জানে না।শুধু জানে সবাই রাজি,তার মা বাদে!সে নরম গলায় লজ্জার জলাঞ্জলি দিয়ে বললো,
—“মা,আমি ওই বদের হাড্ডি ছেলেটাকে ভীষণ ভালোবাসি।ওকে ছাড়া আমার লাইফে দ্বিতীয় কারো চিন্তাও করতে পারি না।”
—“রোদু,ওই ছেলেটা তো ঠিকই সংসার করেছে বউ বাচ্চা নিয়ে।কোনো একটা দূর্ঘটনা বশত বউটা মারা গেছে।আর তোর কাছে ফিরে এসেছে।যদি না আসতো?বউ যদি বেঁচে থাকতো তাহলে তাদের নিয়েই তো সংসার করতো।তুই তখন কি করতি রে?”
—“তুমি জানো আমি কি করতাম মা!সারাজীবন এভাবেই একা একা বেঁচে থাকতাম।ভেবে নিতাম সেটাই আমার নিয়তি।তিলে তিলে শেষ হয়ে যেতাম হয়তো!একটু বোঝার চেষ্টা করো মা!ওই মানুষটা যেমনই হোক,আমি ওকে ছাড়া আমার জীবন কল্পনা করতে পারি না।”
শাহিনুর শক্ত কন্ঠে বলল,
—“তুই যাই বলিস,অমন স্বার্থপর ছেলের সাথে আমি তোর বিয়ে দিবো না মানে দিবো না।”
রোদেলা মায়ের হাত ধরে বলল,
—“মা,বাচ্চাদের মতো কোরো না প্লিজ।এসব নিয়তির খেলা।সৃষ্টিকর্তা হয়তো আমার একাকী দুঃখের ভার সইতে না পেরে নতুন করে সাদিদকে পাঠিয়েছে।তুমি তাকে গ্রহণ করার সুযোগ দাও মা।আমাদের জন্য দোয়া করো।”
শাহিনুর রোদেলার হাত এক ঝটকায় সরিয়ে দিয়ে রাগী গলায় বললো,
—“আমি রাজি না মানে রাজি না।এক বাচ্চার বাপের সাথে তোর বিয়ে দিবো না আমি।ওই ছেলে তোকে কোনোদিন ভালোবাসতে পারবে না।সাথে এতোবড়ো একটা বাচ্চা আছে!”
রোদেলা মাকে জড়িয়ে ধরলো।জড়িয়ে ধরে বলল,
—“এত সুন্দর ফুলের মতো একটা বাচ্চাকে তুমি হিংসে করছো মা?অথচ এমন একটা বাচ্চার মায়ায় জড়িয়েই তুমি কিন্তু বাবার সংসারে এসেছিলে।অন্য একটা মায়ের সন্তানকে পরম মমতায় বুকে আগলে বড় করলে।তুমিও তো তখন একবারের জন্যও ভাবোনি যে বাবা তোমাকে ভালোবাসবে কি না!একটা বাচ্চার টানে তুমি নিজের সব বিসর্জন দিয়ে বাবাকে বিয়ে করলে!”
শাহিনুর রোদেলাকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে দুহাত চেপে ধরে বলে,
—“এসব কি বলছিস তুই?”
শাহিনুর থরথর করে কাঁপছে।চোখ দুটো লাল হয়ে গেছে।সে লাল চোখে আবার পানির বন্যা।রোদেলা মাকে আবার জড়িয়ে অশ্রু সজল নয়নে বলল,
—“আমি সব জানি মা।আমি তোমার গর্ভের সন্তান নই।বাবা বিদেশে থাকাকালীন সময়ে একটা মেয়ের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক হয়।তাদের বিয়ে হয়।তার কয়েক বছর পর আমার জন্মের সময় কিছু একটা অঘটন ঘটে।মা মারা যায়।আমার দেড় মাস বয়সের সময় আমাকে নিয়ে বাবা বাংলাদেশ চলে আসে।বাবা তখন ইউনিভার্সিটির প্রফেসর।কাকতালীয় ভাবে তুমি বাবার একমাত্র মাতৃহীন সন্তানের কথা জানতে পারো।তারপর নিজের জীবন, ক্যারিয়ার সব বিসর্জন দিয়ে বাবাকে বিয়ে করো।
আমাকে মায়ের স্নেহ দিয়ে লালন পালন করো।এর দু বছর পর তোমার গর্ভে রোদ্দুর আসে।তুমি কখনো আমাকে আলাদা নজরে দেখোনি।সবসময় নিজের সবটা দিয়ে আগলে রেখেছো আমাদের দু ভাই বোনকে।ঘুণাক্ষরেও টের পেতে দাওনি তোমার সাথে আমার রক্তের সম্পর্ক নেই!আমি সত্যিই অনেক ভাগ্যবতী মা।যে তোমার মতো একটা মানুষের সাক্ষাৎ পেয়েছি।তার ছায়াতলে বড় হয়েছি।তোমার সান্নিধ্যে আসতে পেরেছি।”
শাহিনুর কাঁদছে।রোদেলাকে জড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলল,
—“এসব তোকে কে বলেছে?এসব তো আমি আর তোর বাবা ছাড়া কেউ জানে না!সবাইকে বলেছিলাম তোর বাবার সাথে আমার পূর্বেই প্রেমের সম্পর্ক ছিল।লুকিয়ে বিয়ে করেছিলাম আমরা।এ সন্তান আমার গর্ভের!আসলে তখন আমার বাবা আর ছোটমা দুজনই বেঁচে ছিল।শাহানাকে নিয়ে গ্রামে থাকতো।আমি ঢাকাতে হলে থাকতাম।সেবার ছোটখাটো একটা ঘটনার জন্য দেড় বছর পর গ্রামে যাই।তোর বাবাকে আর তোকে নিয়ে যাই।প্রথমে সবাই অনেক আপত্তি করলেও পরে মেনে নেয়!দু একজন হয়তো সন্দেহ করেছে।কিন্তু কেউ জিগ্যেস করেনি!তুই কেমনে জানলি রে রোদু?আমি সারাজীবন তোর থেকে সত্যিটা লুকিয়ে রাখতে চেয়েছি।আমি তোকে কষ্টে দেখতে পারবো না!”
—“কিভাবে জেনেছি জানতে চেয়ো না মা।তুমি শুধু আমার বিয়েতে অমত করো না মা।আমি কষ্টে থাকবো না মা!”
—“প্রকৃতি কেনো একই ঘটনা দু বার ঘটাতে চাইছে!আমার সাথে যা ঘটেছে তা আমার মেয়ের সাথে কিভাবে ঘটতে দিবো?”
অনেক্ক্ষণ পর রোদেলা মাকে ছেড়ে শাহিনুরের চোখের জল মুছে দিয়ে বলল,
—“মা,তুমি একদম কান্না করবে না।তোমার কলিজার টুকরো ভালো থাকবে মা।একটা সময় সাদিদ আমাকে ভালোবেসেই গ্রহণ করবে।ও যতই স্বীকার না করুক!ওর চোখে আমি আমার জন্য ভালোবাসা দেখেছি আজ থেকে দশ বছর আগে মা!মা,সৃষ্টিকর্তা হয়তো আমার পরীক্ষা নিবে।তোমার ভালোবাসার একটু প্রতিদান দিতে!ছিনজাকে আমি সবটা দিয়ে আগলে রাখবো না।আমি সুখী হবো মা!সুখী হবো!”
শাহিনুর মেয়ের কপালে চুমু দিয়ে বলল,
—“দোয়া করি,তুই সুখী হ।সাদিদ তোকে নিজের সবটা দিয়ে ভালোবাসুক।ভালোবাসুক!”
——————-
চারদিন পর অনেকটা ঘরোয়া ভাবে বিয়ের আয়োজন করা হলো রোদেলার।বিয়েতে উপস্থিত রইলো শুধু অহিদের পরিবার।রোদেলার দাদা দাদী বেঁচে নেই।তার একমাত্র ছোট কাকু বিদেশে সেটলড!বউ বাচ্চা নিয়ে আমেরিকার নিউজার্সি শহরে থাকে।তার বিয়ে উপলক্ষে বিয়ের দিন সন্ধ্যায় বিশাল বড় এক গিফট বক্স পাঠালেন!সামনের বছর উইন্টার সিজনে দেশে ফেরার কথাও বললেন!
অনেক দূরের আত্মীয় বলতে এসেছে অহির ফুপি-ফুপা।তারা চিটাগং সিটিতে থাকে।শাহিনুরের সাথেও অনেক ভালো সম্পর্ক বলে এসেছে।
বিয়েতে সবচেয়ে খুশি দেখা যাচ্ছে ছিনজাকে।সে তার নতুন মাকে বিভিন্ন ভাবে টর্চার করছে।রোদেলার কোল থেকে নামছেই না।ছিনজাকে কোলে নিয়েই রোদেলা কবুল বলে দিল!
বিয়ে শেষ হতে গ্রুপ ফটো তোলার জন্য সবাইকে ডাকা হলো।ছবি তুলবে অহির ফুপির সাথে আসা তাদের গাড়ির ড্রাইভার।
অহি গাউনের ওড়নাটা ঠিকভাবে নিয়ে রোদ্দুরকে খুঁজলো।সে বিয়ে উপলক্ষে শাড়ি পড়েছিল।কিন্তু রোদ্দুর এক পলক দেখেই তাকে ধমকে শাড়ি খুলাল।শাড়ি পড়লে নাকি তাকে ছাগলের মতো দেখা যায়।পরে সে লাল রঙের গাউন পড়েছে।অহি ঠিক করে রেখেছে বিয়েতেও সে শাড়ি পড়বে না।রোদ্দুরের পছন্দ নয়!
সবাই দাঁড়িয়ে পড়েছে সারিবদ্ধ ভাবে।রোদ্দুর দাঁড়িয়েছে রোদেলার আপুর পাশে।অহি এক দৌঁড়ে গিয়ে রোদ্দুরের গা ঘেঁষে দাঁড়াল।রোদ্দুর চিবিয়ে চিবিয়ে বলল,
—“গা ঘেঁষে দাঁড়াবি না।সরে দাঁড়া!”
অহি মুচকি হেসে রোদ্দুরের আরো কাছে দাঁড়াল।ওড়না হাতে পেঁচিয়ে লুকিয়ে রোদ্দুরের আরো ঘনিষ্ঠ হয়ে দাঁড়াল।রোদ্দুর মোচড়ামুচড়ি করে বলল,
—“ঘেঁষাঘেঁষি করার ইচ্ছে থাকলে রুমে গিয়ে করবি অজান্তা।এত মানুষের সামনে কেন?সরে দাঁড়া!”
—“আচ্ছা, সরছি!”
বলেই অহি ডান হাতে রোদ্দুরের পেটে সুড়সুড়ি দিল।রোদ্দুর ছিটকে বলল,
—“স্টপ!”
ড্রাইভারবেশী ক্যামেরাম্যান ক্যামেরা থেকে চোখ সরিয়ে বলল,
—“ভাইসাব,মাছের মতো লাফান ক্যান?তিনডা ছবি নষ্ট করছেন?”
সবাই রোদ্দুরের দিকে কপট রাগী চোখে তাকাল।রোদ্দুর শাহিনুরকে টেনে এনে তার আর অহির মাঝে দাঁড় করিয়ে হাসার চেষ্টা করলো।
(চলবে)