পরিণতি
পর্ব – ৭
রিহান কাকে যেনো ফোন করে আসতে বললো।আমি রিহান কে চিঠির ব্যাপারে কিছু বলতে চাইলে,ও বললো প্লিজ চুপ থাকো নাহলে আমি উল্টাপাল্টা কিছু করে ফেলবো।রিহানের এমন কথা শুনে আর কথা বলার সাহস হলো না।আমি ভাবছিলাম কাকে আসতে বললো রিহান।আর মেজো জা এর এভাবে চিঠি পাঠানোর মানে কি,উনি তো হাতেই চিঠিটা দিতে পারতেন।তার মানে কি উনি এটা বুঝাতে চাইছেন যে,বর্তমানও আরিফের সাথে আমার সম্পর্ক চলছে,আর চিঠিটা আরিফ পাঠিয়েছে!
রিহান কিছুক্ষন পর বাসা থেকে বের হয়ে গেলো,কোথায় যাচ্ছে জিজ্ঞেস করার সাহসও হলো না আমার, অফিসে যে যাচ্ছেনা এটা সিওর,কারণ নরমাল ড্রেস পরেই বের হয়েছে।।মনে মনে ভাবলাম,রিহান বাসায় আসলে ও কে সবটা খুলে বলবো,এখন রাগ হয়ে আছে,তাই আমার কথা শুনতে চাইছেনা। কিন্তূ রাতে যখন রাগ কমবে,ঠান্ডা মাথায় সব শুনলে আশা করি ও সবটা বুঝতে পারবে।
দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতে চললো,মানুষটার কোনো খবর নেই।সারাদিন খাওয়া হয়নি,রান্নাও করিনি আজকে।রাইমা কে বাইরে থেকে পরোটা কিনে এনে খাইয়ে দিয়েছি।আসরের আযান দিচ্ছে,এর মধ্যেই কলিংবেল বেজে উঠলো,আমি মনে স্বস্তি অনুভব করলাম,বুঝলাম রিহান এসেছে। মনে মনে ঠিক করলাম রিহানের পায়ে ধরে ক্ষমা চেয়ে সব কিছু ঠিক করে নিবো।ভাবতে ভাবতে দরজা টা খুলছিলাম,দরজা খুলে আমি চমকে উঠলাম।
– বাবা তুমি এখানে?
– জামাই সকালে ফোন দিয়ে,জরুরি ভাবে আসতে বললো,তোদের কি কোনো ঝামেলা হয়েছে?
– বাবা ভিতরে এসে পরে কথা বলো।
– আমি বাবার জন্য রান্না করতে যাচ্ছিলাম, কিন্তূ বাবা বললো
– এখন রান্না করতে হবেনা,রিহান আমাকে হোটেলে খাইয়েছে।
– রিহানের সাথে তোমার দেখা হয়েছে বাবা?
– হ্যা,রিহান ই তো আমাকে বাস স্টেশন থেকে এগিয়ে আনলো।
– তোমার সাথে কি রিহানও খেয়েছে?
– না, ও বললো বাসা থেকে নাকি খেয়ে বের হয়েছে।আমিও বললাম বাসায় গিয়ে পরে খাবো, কিন্তূ রিহান বললো,তুই নাকি আমার আসার কথা জানিস না।তাই হোটেলে খাওয়ালো।
– রিহান কোথায় এখন?
– কি জানি।গেট পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে গেলো,বললো একটু পরে আসবে।কি হয়েছে মা,রিহানের ও মন খারাপ দেখলাম,তোকেও কেমন অস্থির দেখাচ্ছে।
আমি বাবার কথার কোনো উত্তর না দিয়ে,রিহান কে ফোন দিলাম।তিনবারের মাথায় রিহান ফোন টা রিসিভ করলো।
– হ্যালো রিহান,কোথায় তুমি?তাড়াতাড়ি বাসায় এসো।
– বাসায় আসবো,তুমি চলে যাওয়ার পর।
– কোথায় যাবো আমি?
– তোমার বাবার সাথে বাড়ী যাবে।
-রিহান আমাদের মধ্যে কি বাবাকে টেনে আনার কোনো দরকার ছিলো,এটা একটু বাড়াবাড়ি হয়ে গেলোনা?
– তুমি তো এখনও বাড়াবাড়ির কিছুই দেখোনি,এখন দেখবে।
– প্লিজ রিহান,আমাকে কিছু বলার সুযোগ দাও তুমি।
– আমি আর তোমার কোনো মিথ্যে শুনতে চাইনা।
– মিথ্যে না,আমি তোমাকে সত্যিটা জানাতে চাই।
– আমার আর কোনো কিছুই জানার ইচ্ছা নাই,তুমি আমার ভালো চাইলে এখান থেকে ,চলে যাও।
– আমি কোথাও যাবো না।
– তুমি না গেলে আমিই চলে যাবো,ভেবোনা বাড়িতে যাবো,কোথায় যাবো নিজেও জানিনা।
– প্লিজ রিহান আমাকে এই বিষয়ে কথা বলার একটা সুযোগ দাও।
– বললাম তো তুমি এখন তোমার বাবার সাথে চলে যাবে,আর না হয় আমিই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবো।
আমি বাকরুদ্ধ হয়ে পরলাম।রিহানের এমন কথার প্রতি উত্তর করার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি।ও যখন চাইছে আমি চলে যাই,তাহলে চলে যাওয়াটাই ঠিক হবে।বাবাকে বললাম,আমি বাড়ি যাবো।বাবা বললেন
– তোদের মধ্যে কি ঝামেলা হয়েছে আমি জানিনা, কিন্তূ বাড়ি গেলে কি কোনো সমাধান হবে?বরং সমস্যা আরো বাড়বে।
– না গেলে আরও বড় ঝামেলা হতে পারে,বাবা।
– কি ঝামেলা?আর কি হয়েছে খুলে বলতো আমাকে,না বললে কিভাবে বুঝবো।
– বাবা তুমি যদি আমাকে না নিয়ে যাও,তাহলে আমি অন্য কোথাও চলে যাবো।
– কোথায় যাবি?
– জানিনা।
– আচ্ছা ঠিক আছে তোকে নিয়ে যাবো, কিন্তূ জামাই আসলে পরে যাই?
– আমি এখান থেকে না যাওয়া পর্যন্ত,ও বাসায় আসবেনা।
বাবা আর কোনো কথা বললেন না।
আমি রেডি হয়ে,বাবার সাথে রওনা হলাম বাড়ির উদ্দেশ্যে।যাওয়ার আগে বারান্দা দিয়ে,ফারহানা কে ডেকে বললাম
– আমি বাড়ি যাচ্ছি,রিহান কে একটু দেখবেন প্লিজ।
– হঠাৎ বাড়ি যাচ্ছেন যে?
– খুব আর্জেন্ট তাই।
– আচ্ছা।কবে আসবেন?
– জানিনা,তবে তাড়াতাড়ি আসার চেষ্টা করবো।
এই বলে রওনা হলাম।রিহান কে ফোন দিয়ে বললাম
– আমি চলে যাচ্ছি,তুমি বাসায় এসে রেস্ট নাও,আমার জন্য তোমার বাইরে বাইরে ঘুরতে হবেনা।
******
আমাকে দেখেই মা রাগে বকতে লাগলেন।
– তোর আমার বাড়িতে কোনো জায়গা নাই, কতো ভালো একটা ছেলে দেখে বিয়ে দিয়েছি, কিন্তূ তুই কি না ওই মানুষটার সাথে এমন বেইমানি করতে পারলি?এই জন্যই তোকে মানুষ করেছিলাম?যদি জানতাম তুই এমন ভাবে আমাদের সম্মান নষ্ট করবি,তোকে আতুর ঘরেই গলা টিপে মেরে ফেলতাম।এখন মুখ পুড়িয়ে আমার বাড়িতে এসেছিস কেনো,পালিয়ে গেলি না কেনো ওই বদমাইশ ছেলেটার সাথে?
– বাবা বললো,মেয়েটা মাত্র এসেছে বাড়িতে, কতো দূর জার্নি করে,আগে ও কে খেতে দাও।ও কে ঘরে তো ঢুকতে দাও,পরে যতো ইচ্ছা বকা দিয়ো।
বাবার কথায় মা আর কিছু না বলে,একা একাই বক বক করে রান্না ঘরে চলে গেলেন।আমি ঘরে গিয়ে চিৎকার করে কান্না শুরু করলাম,আমার কান্না দেখে মেয়েটাও কাঁদতে লাগলো।
সকাল হতেই আমার মনে হলো,আমার একবার শ্বশুর বাড়িতে যাওয়া উচিৎ,যদিও অনেক লজ্জা হচ্ছে যাওয়ার কথা ভেবে, কিন্তূ না গেলেও চলছেনা।সারারাত ঘুম হয়নি, শুধু কেঁদেছি।রিহান কে অনেকবার ফোন দিয়েছি,ওর ফোন অফ।জানিনা একা একা কি করছে ও।আমার সাথে কোনো যোগাযোগ করছে না রিহান,তবে ওদের বাড়ীর মানুষের সাথে হয়তো রিহানের কথা হয়েছে।
ভাবতে দেরি কিন্তূ বের হতে দেরি করলাম না।মা কে না বলেই,মেয়ে কে নিয়ে শ্বশুর বাড়ি পৌঁছে গেলাম।গিয়ে দেখি, বড় জা আর মেজো জা সকালের রান্নায় ব্যাস্ত।শাশুড়ি বসে হাদীসের বই পড়ছেন।আমাকে দেখে সবাই হা করে তাকিয়ে আছে।
– আমি শাশুড়িকে সালাম দিয়ে,নিজের ঘরের দিকে এগিয়ে গেলাম। ঘরে ঢুকতে যাবো এর মধ্যে,মেজো জা বাঁধা হয়ে দাড়ালেন।বললেন
– রিহান তোমাকে বাড়ীতে জায়গা দিতে নিষেধ করেছে।তুমি এই ঘরে ঢুকার অধিকার হারিয়েছো।
– অধিকার?ভুলে যাবেন না,আমি এখনও রিহানের স্ত্রী।তাই ওর সব কিছুতেই এখনও আমার পুরো অধিকার আছে।
– ঠিক আছে অধিকার খাটাতে হলে,তোমার স্বামীর সাথে এসে অধিকার দেখিও,এখন এই বাড়ী থেকে বের হও।
– আপনি আমাকে বাড়ী থেকে বের করার কে?
– আমি কে তুই এখনও জানিস না?
– জানি কিন্তূ আমি আপনাকে আমলে নিতে চাইছিনা।আচ্ছা আপনি আমাকে একটা কথা ক্লিয়ারলি বলেন তো,আপনার সাথে আমার কি এমন শত্রুতা যে,সবসময় আমার পেছনে লেগে থাকেন?এখানে তো আরও অনেক মানুষ আছে,কই তারা তো কেউ আমাকে ঘরে ঢুকতে বাঁধা দেয়নি, কিন্তূ আপনি কোন সাহসে আমাকে ঘরে ঢুকতে বাঁধা দিচ্ছেন? আপনি কি এই বাড়ীর মালিক?
– এই মেয়ে কথা বলা বন্ধ করবি,নাকি চর দিয়ে দাঁত ফেলে দিবো।এখনও তেজ কমেনি তোর তাইনা?
– আপনি চর মারবেন আর আমি নিরবে তা সহ্য করবো এটা ভেবে ভুল করবেন না।আপনি আমার সাথে যেমন করবেন,ঠিক তেমন টা ফেরত পাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকবেন।
জা,এসে আমাকে সত্যি সত্যিই চর মারলেন,আমাকে মারতে দেখে শাশুড়ি আর বড় জা,মেজো জা কে বকতে লাগলেন। কিন্তূ মেজো জা শাশুড়ি কে ও মানছেন না আজকে।শাশুড়ি তবুও বলে যাচ্ছিলো
– রিহান যদি এমন কিছু বলেও থাকে,তাহলে আমাকে বলেছে,যেখানে আমি ছোটো বৌকে কিছু বললাম না,তুমি বলতে গেলে কেনো?
– আপনি তো বলবেন ই না,আপনার আদরের বৌ যে তাই।
– সবাই আমার ছেলের বৌ,সবাই আমার আদরের।যতক্ষণ ওরা স্বামী স্ত্রী,ততক্ষণ রিহানের সব কিছুতেই ছোট বৌ এর অধিকার আছে।
আমি আর ঘরে ঢুকলাম না,সোজা আপুর কাছে চলে আসলাম।আপু কে এসে সবটা বললাম।মেজো জা এর আমাকে মারার কথা শুনে আপু তো রাগে জলে উঠলেন।আমাকে নিয়ে আবার এই বাড়ীতে আসলেন।বাড়িতে ঢুকেই আপু চিৎকার করতে লাগলেন।
– রিনা,এই রিনা!
– কি হয়েছে,এভাবে চিৎকার করছো কেনো?
– তুমি আমার বোনকে মেরেছো কোন সাহসে?
– এই বাড়ীর বৌ হওয়ার সাহসে।
– তুমি এই বাড়ীর বৌ,আর আমার বোন কি আকাশ থেকে উরে এসেছে?
– তোমার বোন তো একটা কলঙ্কিনী,অন্যের সাথে ফষ্টিনষ্টি করার পর,শেষে আমার দেবরের গলায় ঝুলিয়ে দিয়েছো।
– আমার বোনের দিকটা আমরা দেখবো, কার দোষ, কার গুন ভেবে চিন্তেই একটা সিদ্ধান্ত নিবো।আমার বোন যদি খারাপ হয়েও থাকে,তাকে শাসন করার জন্য আমরা আছি,ওর শ্বশুর শাশুড়ি আছে।ও কে কিছু বলার থাকলে আমরা বলবো,রিহানের বাবা মা বলবে, কিন্তূ তুমি বলবে কেনো,তুমি মারবে কেনো?কি ভেবেছো,তুমি আমার বোন কে মারবে,আর আমরা তোমাকে এমনেই ছেড়ে দিবো?
– যা খুশি করো,আমি ভয় পাই নাকি?
– ঠিক আছে দেখা যাবে ভয় কেমনে না পাও।
এই বলে আপু আমাকে হাত ধরে।ওখান থেকে নিয়ে আসলেন।
আপুও আমাকে বকলেন আরিফের ব্যাপারটা নিয়ে।আপু আমাকে জিজ্ঞেস করলো
– চিঠিটা তোর কাছে আছে?
– হুম আছে।
– আমার কাছে দে দেখি।
আমি আপু কে চিঠিটা দিলাম।আপু চিঠিটা চার পাঁচ বার পড়লেন।আপু বুঝতে পারলেন সবটাই অতীত।আপু আর আমাকে কিছু বললেন না।
আপু সারাদিন রিহানের ফোনে ট্রাই করলেন, কিন্তূ পেলেন না।সন্ধ্যার দিকে আরেকবার ট্রাই করতেই,ফোনটা খোলা পাওয়া গেলো।আমি কথা বলতে চাইলাম কিন্তূ আপু আমার কাছে ফোনটা দিলেন না।আপু লাউডস্পিকার দিয়ে কথা বলতে লাগলেন
– হ্যালো রিহান?
– হুম।
– আজকে ফারিয়া তোমাদের বাড়িতে গিয়েছিলো,তোমার মেজো ভাবি ফারিয়া কে ঘরে ঢুকতে বাঁধা দেয়,এবং ও কে মারেও পর্যন্ত।
– আমিই মা কে বলেছিলাম,ফারিয়া কে ঢুকতে না দিতে।
– বুঝলাম, কিন্তূ তোমার মা তো বাঁধা দেননি,তাহলে তোমার ভাবি কেন বাঁধা দিলো।
– বড় ভাবি হিসেবেই হয়তো দিয়েছেন।
– তুমি কি ওনাকে সমর্থন করো?
– অবশ্যই, কারন আপনার বোনের অনেক কু কীর্তির কথা জানেন উনি।
– শুনো রিহান, ওইটা অনেক আগের কথা।তুমি এটা জেনে কষ্ট পাচ্ছো,আমি বুঝতে পারছি কিন্তূ অতীত নিয়ে এতো বাড়াবাড়ি করে কি কোনো লাভ আছে?সব কিছুর ই সমাধান আছে,তোমরা চাইলেই নিজেদের মধ্যে কথা বলে সবটা ঠিক করে নিতে পারো।
– কিছুই আর ঠিক হবেনা।
– দেখো কাউকে ভালো লাগাটা কোনো অন্যায় নয়,জিবনে প্রেম আসতেই পারে।আর জীবনের প্রথম প্রেম বেশির ভাগ ভুল মানুষের সাথেই হয়, কিন্তূ যারা এই ভুল থেকে ফিরে আসতে পারে,তারাই পারে জীবন কে জয় করতে।আমি মনে করি ফারিয়াও জয় করেছে।ওরা পালিয়ে যেতে চেয়েছিলো কিন্তূ পালিয়ে তো যায়নি,সেটা তোমাকে বুঝতে হবে।
– আমি এখন রাখছি।
– ফারিয়ার যে কোনো দোষ নেই আমি বলছিনা,শুধু বলছি তুমি এটা কে ভুলে যাও।নতুন করে সব কিছু শুরু করো।অতীত কে বর্তমানে টেনে কোনো লাভ নেই,আর তোমাদের একটা মেয়ে আছে,তার কথাও একবার ভেবে দেখো।
– আচ্ছা এখন রাখছি,পরে কথা হবে।
এই বলে রিহান ফোন রেখে দিলো।
আপু আমাকে শান্তনা দিয়ে বললো,চিন্তা করিস না,সব ঠিক হয়ে যাবে।
আমি শুধু কেঁদেই যাচ্ছিলাম।কান্না ছাড়া যে আমার আর কিছুই করার নেই।
আপু সব ঠিক হয়ে যাবে বললেও,কোনো কিছুই ঠিক হচ্ছিলো না।দিন দিন রিহানের সাথে আমার দুরত্ব তো বেড়েই চলেছে।এখন আমাদের ব্যাপারটা আর আমাদের মধ্যে নেই,আমাদের পরিবারের লোকেরা সবটা নিয়ন্ত্রণ করছে।দুই পরিবারের এখন অনেক ঝামেলা চলছে।কোথায় আমাদের সমস্যার সমাধান করবে, তা না করে দুই পরিবারে ঝগড়া করে আমাদের একেবারে আলাদা করার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছেন। বাবা বললেন
– আগামীকাল তোর মেজো জা এর নামে একটা মামলা করবো,ঐখানে তোর সাক্ষ্য লাগবে।সকালে আমরা উকিলের কাছে যাবো,তুই রেডি থাকিস।
– কেনো বাবা,মামলা কেনো?
– তোকে ওইদিন মেরেছে তাই।
– বাবা বাদ দাও না।
– কিভাবে বাদ দিবো?রিহান যদি এর প্রতিবাদ করতো তাহলেও বাদ দিতাম, কিন্তূ রিহান ই এইসব কিছু সমর্থন করছে।আমি তো তোকে আর ওই পরিবারের দিবো না।আর যদি দেই ও,ওই মহিলা কে একটা শিক্ষা দিয়ে,পরেই দিবো।
মামলা করার কথা শুনে,স্বাভাবিক ভাবেই শ্বশুর বাড়ির লোকজন রেগে গেছেন। কারন মেজো জা এর উপর মামলা করলে,তাদেরই মানসম্মান যাবে।এই দুই পরিবারের ঝামেলায় পরে,আমি শেষ হয়ে যাচ্ছি।অবশেষে দুই পরিবার থেকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো,আমাদের ডিভোর্সের।আমি বা, রিহান আসলেই ডিভোর্স চাই কিনা,কেও সেটা জানার প্রয়োজনই মনে করছেন না।শুধু তাদের মত আমাদের উপর চাপিয়ে দিচ্ছেন।আমি বুঝতে পারলাম সব কিছু এখন চরম পর্যায় খারাপ দিকে যাচ্ছে।
আগামী রবিবার আমাদের ডিভোর্সের ডেট।
চলবে…
সালমা আক্তার।