পরিণতি পর্ব – ৪

0
981

পরিণতি
পর্ব – ৪

সন্ধ্যা সাতটায় দেখা করার কথা থাকলেও,এখন বাজে সাড়ে সাতটা। চারদিকেই অন্ধকার নেমে এসেছে,ভালো করে কিছু দেখা যাচ্ছেনা।আমি আরিফ কে দেখতে না পেলেও,ও আমাকে দেখেই জিজ্ঞেস করলো
– এতো দেরি করলে কেনো?
– সবাই কে লুকিয়ে যে আসতে পেরেছি,এটাই বেশি।
– ওকে।এখন চলো।
– কোথায়?
– সেটা তো তোমাকে সকালেই চিঠিতে জানিয়েছি।
– কি বলছো তুমি আবোল তাবোল।তুমি তো কাগজ টায় শুধু একটা নাম্বার লিখে দিয়ে ছিলে,আর জরুরি ভাবে ফোন করতে বলেছিলে।
– ওইটা তো আমি পরে নিজে তোমাকে দিয়েছি, কিন্তূ এর আগে যে তোমার জা এর ছেলে রাহাতের কাছে যে চিঠিটা দিয়েছি, ওইটা তুমি এখনও পড়ে দেখোনি?
– কিভাবে পরবো, ওইটা তো আমি হাতেই পাইনি।
– কি বলছো এইসব?
– আচ্ছা আরিফ চিঠিটা অন্য কারো হাতে চলে যাইনি তো?আর তুমি কেনো একটা ছয় বছরের বাচ্চার হাতে চিঠি দিতে গেলে,ও তো আমাকে ঠিক মতো চিনেও না।
– আমি তো রাহাত কে সুন্দর ভাবে বুঝিয়ে বলেছি, নতুন বউএর হাতে দিতে।
– চিঠিটা যদি অন্যকারো হাতে পরে যায়,বুঝতে পারছো কি হবে?
– কি আর হবে,আমরা চলে যাওয়ার পর এমনিতেই সবাই সব কিছু জেনে যাবে।দেরি না করে এখন তাড়াতাড়ি চলো।

– কি জেনে যাবে সবাই?
– আমাদের পালিয়ে যাওয়ার কথা।
– পালিয়ে যাবো মানে?
– মানে,আমরা এখন ঢাকায় পালিয়ে যাবো।ঢাকায় যাওয়ার পর তুমি রিহান কে ডিভোর্স দিবে,তারপর আমরা বিয়ে করে নিবো।
– আর ইউ মেড আরিফ?তুমি বুঝতে পারছো,তুমি কি বলছো?
– হ্যা,খুব ভালো করেই।
– আমি যখন পালাতে চেয়েছিলাম,তখন তো তুমি পালাও নি,বরং আমাকে বিয়ে করতে বাধ্য করেছো।
– তখন বুঝতে পারিনি,তোমাকে অন্যকারো পাশে দেখে আমার এতোটা কষ্ট হবে।এখন তাড়াতাড়ি চলো,একটু পরেই হয়তো‌ সবাই তোমাকে খুঁজাখুঁজি শুরু করে দিবে।
– যদি বলি,আমি তোমার সাথে কোথাও যাবো না,তাহলে?
– আমি জানি তুমি এটা কখনো বলবে না।
– কিভাবে জানলে?
– আমার প্রতি তোমার ভালোবাসা থেকে জেনেছি।আর একদিন তুমিই বলেছিলে তোমাকে নিয়ে পালাতে।
– ওই একদিন আর আজকের দিন কি এক হলো?
– হয়তো‌ এক না, কিন্তূ আমরা নিরুপায়।আর রিহানের সাথে বিয়েতে তোমাকে রাজি করার জন্য কাকিমা আমাকে বলেছিলো,কাকিমার কথা রাখতেই আমি সেদিন তোমাকে ওইসব বলেছিলাম।
– তাহলে আজ কেনো তোমার কাকিমার কথার বরখেলাপ করছো?
শুনো আরিফ,সেদিন আমরা আলাদা হয়েছিলাম দুটো পরিবারের কথা ভেবে,তুমি তোমার পরিবারের কথা ভেবেছো, আমাকেও ভাবতে বাধ্য করেছো। কিন্তূ এখন আমরা দুটো পরিবারে সীমাবদ্ধ নেই,আমি এখন অন্য একটা পরিবারের সাথে জড়িয়ে গেছি,এখন আমি অন্য কারো স্ত্রী হয়ে গেছি,এবং কালকে ওই মানুষটার সাথে রাত ও কাটিয়েছি।তুমি পারবে একজনের সাথে রাত কাটানো মেয়েটার সাথে সংসার করতে?
-আই ডোন্ট কেয়ার।আমার ওইগুলো নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই।আমি তোমাকে ভালোবাসি,তোমাকে আমি অন্য কারো সাথে সহ্য করতে পারছিনা,আমার অনেক কষ্ট হচ্ছে।সেদিন ভেবেছিলাম,রিহানের সাথে বিয়ে হলে,মাঝে মাঝে তোমাকে দেখতে তো পাবো, কিন্তূ বুঝতে পারিনি ওর সাথে তোমাকে দেখে আমার এতোটা কষ্ট হবে।
– তাহলে বুঝতে পেরেছো কেমন কষ্ট হয়?
– খুব ভালো করেই বুঝতে পেরেছি।
– আফসোস, বুঝেছো কিন্তূ অনেক দেরিতে।
– এখনও দেরি হয়নি,চলো আমরা এখান থেকে অনেক দূরে কোথাও চলে যাই।যেখানে আমাদের কেও চিনবেনা,খুঁজে পাবেনা।
– সেটা তো আর সম্ভব না।
কেনো সম্ভব না?
– বলতে পারো,আমাদের পাওয়া না পাওয়ার মধ্যে রিহানের দোষ টা কোথায়?আমাদের কি কোনো অধিকার আছে ও কে কষ্ট দেওয়ার?
– তাহলে কি তুমি আমার সাথে যাবেনা?
– না।
– তাহলে ধরে নিবো,আমার প্রতি তোমার ভালোবাসা স্রেফ অভিনয়?
– তোমার যা খুশী ভাবতে পারো,আমি তোমার ভাবনায় বাঁধা হবো না।
– আগে ফ্রেন্ড দের কাছে শুনতাম,মেয়েরা বেঈমান,আজ নিজেই প্রমাণ পেলাম।
– আজ তোমার কাছে আমি ভালো হতে গেলে,আমি নিজের পরিবারের কাছে বেঈমান হয়ে যাবো,শ্বশুর বাড়ির মানুষের কাছে বেঈমান হবো,নিজের স্বামীর কাছে বেঈমান হবো, এতো মানুষের কাছে বেঈমান হওয়ার চেয়ে,তোমার কাছেই না হয় বেঈমান হয়ে থাকলাম।
– বুঝলাম,বেঈমান রা তোমার মতোই হয়,নিজের সুখের জন্য আরেকজনকে কষ্ট দিতে দুই বার ভাবেনা।
– হতে পারি আমি বেঈমান কিন্তূ ভুলে যেওনা তুমিও কিন্তূ কম না।তুমি না বলো রিহান তোমার অনেক ভালো বন্ধু?বন্ধুর বৌ কে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার প্ল্যান করছো,এটাকে কি বলে?তুমি তোমার বন্ধুত্বের সাথে বেইমানি করছো না?
– ভালোবাসলে সব করা যায়।
– হ্যা,ভালোবাসলে সব কিছু করা যায় বলেই,তোমার কথায় বিয়েটা করেছি।এর পরেও যদি তুমি আমাকে বেঈমান উপাধি দাও,আমার কিছু করার নেই।ভালো থেকো।
আরিফ কে আর কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে, চিরো দিনের জন্য আরিফের সাথে সব সম্পর্ক শেষ করে দিয়ে আসলাম।

বাড়িতে আসতেই মা বললো
– কোথায় গিয়েছিলি তুই?কখন থেকে খুঁজছি তোকে,রিহান বার বার তোর কথা জিজ্ঞেস করছে।গাড়ি আসছে রেডি হয়ে নে।
– আমি ঘর যেতে যেতে বললাম,জেঠির সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম।
– মা ও আমার সাথে সাথে ঘরে এসে বিছানার পাশে এসে বসলো, এতো রাতে তোর জেঠির সাথে দেখা করতে যাওয়ার কি দরকার ছিলো?নতুন বিয়ে হয়েছে,শুনেছি আঠারো মাস পর্যন্ত নাকি বিয়ের গন্ধ গায়ে লেগে থাকে,আর ওই সময় গুলো সইতান পিছু নেয়,তাই যখন যেখানে খুশি যাওয়া যাবেনা।আর এখন তো বিয়ে হয়ে গেছে,শ্বশুর বাড়ি গিয়ে যদি এমন করিস তাহলে তারা কি বলবে।
– আমি মায়ের পাশে বসলাম।মা অবশেষে আমাকে বাড়ি থেকে বের করেই ছাড়লে?
– এটাই তো নিয়ম রে মা।আমিও তো একদিন আমার বাপের বাড়ি ছেড়ে,এই বাড়িতে এসেছিলাম।তোর আপুও তো তার শ্বশুর বাড়ি গেছে।মা রে,স্বামীর বাড়ীই হলো মেয়েদের আসল ঠিকানা।
– আমি মা কে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে ‌লাগলাম।
– কাঁদিস‌ না রে মা।তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নে,গাড়ি মনে হয় এখনি এসে পরবে।

কালকে বিয়ে শেষ হতে হতে অনেক রাত হয়ে গিয়েছিলো,রিহান আর আমি যেনো এক গাড়িতে নিজেদের মতো যেতে পারি,তাই শ্বশুর বাড়ির লোকজন আমাদের রেখে সকালে চলে গেছে,বলেছে আমরা যেনো দুপুরের পরে একটা প্রাইভেট কার ভাড়া করে চলে যাই।রিহান দুপুরের পরেই চলে যেতে চাইছিলো, কিন্তূ আমি বললাম সন্ধ্যার পরে যাওয়ার কথা।রিহান কারণ জানতে চাইলে,বললাম
– আমার শরীর টা খারাপ লাগছে,একটু রেস্ট নিয়ে সন্ধ্যার পরে নিরিবিলি ভাবে যাবো।রিহান সেটাই মেনে নিলো। কিন্তূ আমার তখন না যাওয়ার পেছনে আসল কারন ছিলো,আরিফের সাথে দেখা করা।এখন যখন সব কিছু হয়েই গেছে,তাই শ্বশুর বাড়ি যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছি।
মা বললো,রিহান আর আর বাবা নাকি গাড়ির খোঁজে গেছে,এই ফাঁকে যেনো আমি রেডি হয়ে নেই।
কিছুক্ষন পর রিহান এসে বললো
– কই তুমি রেডি হয়েছো?
– হুমম।
– আচ্ছা চলো তাহলে।এমনিতেই রাত হয়ে গিয়েছে।
– হুম।
বাবা, জেঠা, জেঠি,কাকা,কাকিরা সবাই আমাকে বিদায় জানিয়ে গাড়িতে তুলে দিলেও,মা কে দেখতে পাচ্ছিনা।হয়তো‌ ঘরে শুয়ে শুয়ে কাঁদছে,যেমন ভাবে আপুর বিদায়ের দিন কেঁদেছিলো।

গাড়িতে উঠে,রিহানের সাথে আমার একটা কথা ও হলো না।রিহান একদম চুপচাপ হয়ে আছে।আমার কেনো জানি মনে হচ্ছে,রিহান আমার উপর রেগে আছে অথবা অভিমান হয়েছে।ও হয়তো‌ আমার কিছু অস্বাভাবিক আচরণের কারণ খুঁজে পাচ্ছেনা,তাই চুপ করে আছে।
দেখতে দেখতে পৌঁছে গেলাম শ্বশুর বাড়ি।
শাশুড়ি মা আমাকে বরণ করে গাড়ি থেকে নামালেন।বাড়িতে ঢুকতেই দেখি অনেক মানুষের ভিড়,তারা যেনো অধীর আগ্রহে বসে আছেন নতুন বৌ দেখবে বলে।
রাত একটা পর্যন্ত চললো,আত্মীয়স্বজনদের আনাগোনা, বৌ দেখাদেখির পালা।আমার এখন সত্যিই বিরক্ত লাগছে, বিরক্তির ছাপ হয়তো মুখেও ফুটে উঠছে,তাই তো শাশুড়ি মা জিজ্ঞেস করলেন
– তোমার খারাপ লাগছে?
– নাহ ঠিক আছি।
– আসলে বিয়ে বাড়ীতে এমনই হয়।আচ্ছা এখন ঘরে যাও।আর তুমি তো তখন কিছুই খাওনি,ক্ষুধা লেগেছে?
– না।
– আচ্ছা আমি কিছু খাবার তোমাদের ঘরে পাঠিয়ে দিচ্ছি।
শাশুড়ি মা,ননদ কে ডেকে আমাকে ঘরে দিয়ে আসতে বললেন।ননদ আমাকে ঘরে নিয়ে যেতে যেতে বললো,
– ভাবি তোমার কোনো ভাই নাই?
– না।কেনো?
– এমনি ভেবেছিলাম তোমার ভাইয়ের সাথে প্রেম করবো,হাহাহা।
– বারো বছরের মেয়ের মুখে এমন কথা শুনে,আমিও হেসে দিলাম।

******
ঘরটা বেশ গোছানো,বিছানা টা গাঁধা আর গোলাপ ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে।আমি বিছানার এক পাশে বসে ছিলাম,এর মধ্যে ঘরে আরিফের আগমণ ঘটলো। সে আমার থেকে না হলেও তিন চার হাত দূরে মাথা নিচু করে বসে আছে,মুখে কোনো কথা নেই ,ওর চুপ থাকা দেখে আমিই আগে কথা বললাম। আঙ্গুলের ইশারায় একটা দরজা দিকে ইশারা করে বললাম
– ওইটা কি ওয়াশ রুম?
– হুম।
– তাহলে চলেন দুজনেই গোসল করে নেই।
– এখন গোসল?ঘড়িতে দেখো কয়টা বাজে।
– একটা পনেরো।
– এতো রাতে কি কেউ গোসল করে?
– সমস্যা কি এখন তো আর শীত না,তাছাড়া ওয়াশ রুম যখন ঘরের ভিতরেই তাহলে আর কোনো সমস্যা হবেনা।
– এর আগে কখনো এতো রাতে গোসল করেছো?
– করিনি কিন্তূ আজ করবো।আর আমাদের গোসলখানা যদি আপনাদের মতো ঘরের ভিতর থাকতো তাহলে হয়তো আগেও করতাম।
– হাহাহা।
– হাসি রেখে এখন চলেন,গোসল করতে।
– এক সাথে?
– আমি এইবার অনেক লজ্জা পেলাম,মাথা নিচু হয়ে চুপ করে ছিলাম।
– আচ্ছা,আগে তুমি করো,আমি তোমার পরে করবো।
– একটা মুচকি হাসি দিয়ে বললাম,আচ্ছা।

ওয়াশ রুম থেকে বের হতেই,রিহান বললো
– তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছে,একদম ফ্রেশ দেখাচ্ছে।
– আমি মুচকি হাসি দিয়ে বললাম, এখন আপনি গিয়ে গোসল করেন,পরে আমরা একসাথে নামাজ পরবো।
– ওও,তাহলে এই কারনেই এতো রাতে গোসল করা!
– জী।
– কিন্তূ এই নামাজ নাকি বিয়ের প্রথম রাতে পড়তে হয়।
– ধরতে গেলে তো আজকেই আমাদের বিয়ের প্রথম রাত।
– তা ঠিক বলেছো,কালকে রাত তো তোমার কান্না করতে করতেই গেছে।
– এখন আপনি গোসল করবেন নাকি শুধু কথা বলেই যাবেন?
– আচ্ছা যাচ্ছি।

দুজনে একসাথে দাড়িয়ে ২ রাকাত নফল নামাজ পরলাম,নামায শেষ করে মোনাজাত ধরলাম।শুনেছি বিয়ের প্রথম রাতের এই দুই রাকাত নামাজ এর অনেক ফযীলত।এই রাতে স্বামী স্ত্রী নিজেদের জীবনের কল্যাণ চেয়ে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করলে,আল্লাহ দোয়া কবুল করেন।হাত তুলে মোনাজাত করে,আল্লাহর কাছে যা চাওয়া যায়,তাই নাকি পাওয়া যায়।দু হাত তুলে আল্লাহর কাছে,সব কষ্ট থেকে মুক্তি চাইলাম।আমি যেনো আরিফ কে ভুলে,রিহানের সাথে সুন্দর ভাবে জীবন শুরু করতে পারি।আরিফ আমার প্রেম যেটা ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম কিন্তূ রিহান আর আমার সম্পর্ক তো একদম হালাল।অবশ্যই আল্লাহ বিয়েতে অনেক ফযীলত দিয়েছেন আর সেই ফযীলত পূর্ণ জীবনটাই আমি চাই।মোনাজাত করতে করতে চোখের পানি ঝরে পরছিলো।মোনাজাত শেষে যখন রিহানের দিকে তাকালাম,দেখি ও আমার দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে।
আমি বললাম
– কি হয়েছে,এভাবে কি দেখছেন?
– ভাবছি তোমার এতো কষ্ট কিসের,কালকে থেকে শুধু কেঁদেই যাচ্ছো।
– মেয়েদের বাবার বাড়ী ছেড়ে যাওয়ার কথা উঠলেই কান্না আসে,সেটা আপনি ছেলে হয়ে বুঝবেন না।

দুইজন পাশাপাশি বালিশে মাথা দিয়ে শুয়ে পরলাম।রিহান আমার হাত ধরে বলতে লাগলো
– জানো,কালকে তোমার কান্না দেখে আমি কতো কষ্ট পেয়েছিলাম।আমার তো মনে হচ্ছিলো আমি তোমাকে জোর করে বিয়ে করেছি।আমি বুঝতে পারছিলাম না,কোন কারনে তুমি এভাবে কাঁদছো।আজকে সারাদিন ও এই একটা জিনিষ আমার মাথায় ঘুরপাক খেলেছে।
– সরি।
– সরি বলতে হবেনা।তোমার মুখের হাসিতে,আমার সব কষ্ট হারিয়ে গেছে।তোমার মন কি এখন ভালো হয়েছে?
– হুম।
– একটা কথা বলবো?
– বলেন।
– তুমি আর কখনো আরিফ কে অমন করে জড়িয়ে ধরবে না।তুমি জানো না,তখন আমার কতোটা কষ্ট হয়েছিলো।
– কেনো কষ্ট হয়েছে,আমি তো আপনার বন্ধু কে ই জড়িয়ে ধরেছি,অন্য কাউকে তো নয়।
– থাক বন্ধু তাই বলে আমার স্ত্রী তাকে জড়িয়ে ধরবে এটা আমি সহ্য করবো না।আমি তো তখন ভয় পেয়ে গেছিলাম,মনে হচ্ছিলো তুমি আরিফ কে ভালোবাসো। কিন্তূ পরে আবার তওবা করলাম,আমার এমন উল্টা পাল্টা ভাবনার জন্য।
– আচ্ছা আমাদের কাছে কি,আরিফ কে ছাড়া আর কোনো টপিক নেই কথা বলার?না মানে,অনেকক্ষন ধরে এই একটা বিষয় নিয়েই কথা বলে যাচ্ছি।
– হ্যা, আছে তো!
এই বলে রিহান আমাকে তার বুকের মধ্যে জরিয়ে নিলো।কপালে চুমু খেয়ে বললো,
– আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি।
– আমিও।
– রিহান আমাকে আরো কাছে টেনে নিলো।আমিও তাকে কোনো বাঁধা দেইনি।মনের কষ্টটা মনেই থাক,ফেলে আসা সময়ের কষ্ট গুলো নাহয় রিহানের অজানাই থাক।আমি রিহানকে কোনো কষ্ট দিতে চাইনা,সারাটাজীবন ও কে জড়িয়ে ধরে,এভাবেই সুখে জীবন কাটাতে চাই।

কি ভাবছেন গল্পঃ এখানেই শেষ?এটা তো আমার জীবনের রঙিন দিকটা ছিলো।আমার জীবনের কষ্টের গল্পঃ গুলো জানতে চাইবেন না?কেমন ছিলো আমার বিয়ের পরবর্তী জীবন টা?

চলবে…
সালমা আক্তার।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে