পতিতা মেয়ে part_4

0
1965

#পতিতা_মেয়ে
#writter_Tannoy_Hasan
#part_4

–আমাকে এই অন্ধকারে তুলে আনার কারন কি?আর আপনি কে(আনিকার মামা)
.
–তোর যম(অন্ধকারে আমি)
.
–আপনি সামনে আসুন,আর আমাকে প্লীজ ছেড়ে দিন,আমাকে কেন তুলে এনেছেন(বিনয়ের সুরে)
.
–কেউ লাইট টা অন করো৷
.
ঠিক তখনই লাইট অন হয়ে গেল৷আর লাইট অন হতেই ওনি বলে উঠল
.
–স্যা সা স্যার আপনি(তোতলিয়ে)
.
–হুম,ম্যানেজার সাহেব,কেমন আছেন?
.
–হুম খু খু খুব ভালো(ঘেমে একাকার)
.
–আচ্ছা ম্যানেজার সাহেব ,এভাবে ঘামছেন কেন?
.
–আমাকে লোক দিয়ে কেন উঠিয়ে এনেছেন?
,
–শুধু মাত্র কিছু হিসাব নিকাশের জন্য
,
–ওইগুলো তো অফিসেই মিটাতে পারতেন৷আর আমি সব হিসাব তো আপনাকে দিয়েই দিছি
,
–ম্যানেজার সাহেব,অফিসের হিসাব অফিসে দিছেন,কিন্তু জীবনের হিসাব একটু মিলিয়ে নিবো না?
.
–মানে কী স্যার?
.
–আচ্ছা ম্যানেজার সাহেব,আপনাকে কিছু প্রশ্ন করব
,
–হুম করেন,তবে ক ক কী প্রশ্ন(তোতলাচ্ছ
ে আর ঘামছে)
,
–বেশি কিছুনা৷আচ্ছা ম্যানেজার সাহেব,আপনার ছেলে মেয়ে কয়জন?
,
–কেন?
,
–যেটা বলছি উত্তর দেন
,
–এক মেয়ে আছে
.
–হুম খুব ভালো,আরেকটা প্রশ্ন
.
–কি?
.
–আপনি কি আপনার মেয়েকে রেপ করতে পারবেন?
.
–স্যার,মুখ সামলিয়ে কথা বলুন?নয়ত(ধমক দিয়ে)
.
–নয়ত কি?একদম চুপ করে থাকবি জানোয়ারের বাচ্ছা,নয়ত এখনই একদম ওপারে পাঠিয়ে দিব(ওর মাথার রিবোলবার ধরে)
.
–আপনি এ এ এ এমন ক ক করছে ন কে কেন(তোতলাতে তোতলাতে)
.
–নিজের মেয়েকে রেপ করতে পারবিনা,তাহলে কেন নিজের ভাগনিকে এই কাজ করলি?সেও তো তোর নিজের মেয়ের মতই ছিল,……..
.
–আমি কীছু করিনি,আমাকে ছেড়ে দিন,আমি কীছু করিনি
,
–আনিকা,এইদিক আসো.
.
বলতেই আনিকা আস্তে আস্তে হাটতে হাটতে সামনে এসে উপস্থিত৷
.
–আনিকা,ওকে শেষ করে দাও,এই নাও পিস্তল
,
–না,ওকে আমি এটা দিয়ে গুলি করে মারব না,ওকে আমি দা দিয়ে কুপিয়ে কুপিয়ে মারব(আনিকা)
,
–না মা,আমাকে ছেড়ে দে মা,তুই তো আমার মেয়ের মত৷আমি না তোর মামা?আমাকে মারিস না(আনিকার পায়ে ধরে)
.

**নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**
ঠিক তখনই আনিকা দা দিয়ে প্রথম আঘাতটা ওর ডান হাতে করল৷আর বলল
.
–এই হাত দিয়েই সেদিন আমার গায়ে প্রথম টাচ করেছিস,
.
–মা মা,তুই আমার মা,তুই আমার মেয়ে,আমাকে মারিস না,আমি তোর মামা,আমকে মারিস না মা,মা ও মা!আমাকে মারিস না তুই(চিৎকার করে কান্না করতে)
,
–হা হা হা,মা বলছিস৷ছিঃ ,ওয়াক থু,তোর মুখে থুথু,কোথায় ছিল,তোর মা?যেদিন জানোয়ারের মত,একটা অসহায় মেয়ের ওপর ঝাপিয়ে পড়েছিলি?তুই মাফ পাওয়ার যোগ্য না,যে নিজের ভাগনিকে………
.
বলেই আরও একটা আঘাত,তারপর আনিকা কেমন পাগলের মত একের পর এক আঘাত করতেই লাগল৷হয়ত সেদিনের কষ্টের ঝাল আজ খুব ভালোভাবেই নিচ্ছে,
মুহুর্তেই ওর মামা শেষ৷তারপরও আনিকা তখনও উন্মাদের মতই আঘাত করতেই লাগল৷
আর ওই পাপিকে ওখানেই শেষ করে দিলাম৷
এমন পাপির কোনো মাফ নেই৷সমাজে যারা এমন কাজ করে,তারা কুকুরের চেয়েও নিকৃষ্ট,আর এত নিকৃষ্টদের সমাজে বাঁচার অধিকার নেই৷ওদের মত মানুষদের জন্যই সমাজে সৃষ্টি হয়,হাজারো পতিতা৷ধ্বংস হয়ে যায়,হাজারও মেয়ের স্বপ্ন৷বেছে নিতে হয়,পতিতাবৃত্তিকে নয়ত আত্মহত্যা করে চলে যেতে হয় পরপারে৷
.
আনিকা কে নিয়ে বাসায় চলে আসলাম৷
আর দুজনেই ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া করলাম৷খুব ক্লান্ত তাই শুয়ে পড়লাম৷
ঠিক তখনই আনিকাও আমার পাশেই শুয়ে পড়ল৷আনিকাকে একটা টান দিয়েই বুকের ওপর তুলে নিলাম৷ও তখন একদম চুপ করে আছে৷
.
–এই মেয়ে,বালিশে শুয়েছিলে কেন?তোমাকে বলছিনা,সব সময় আমার বুকের ওপর মাথা রাখে ঘুমাবা?
.
–হা হা হা
.
–হাসছো কেন?
.
–হাসব না তো কি করব?দুদিন পর তো এমনিতেই বালিশে ঘুমাতে হবে তাই না?আর তো মাত্র ২৬টা দিন বাকি আছে,তাই না?এর পরই তো তোমার দুমাস শেষ,তবে যাই হোক,তোমার প্রতি চির কৃতজ্ঞ থাকব
,
ওর মুখে কথাগুলো শুনে খুবই অবাক লাগছিল,কারন দিনগূলো আনিকা যে এত ভালোভাবে হিসাব রাখবে বুঝতেই পারিনি৷সময় যেতে যেতে যে এতগুলো দিন চলে গেছে সেটাও বুঝতেই পারিনী৷কিন্তু ও কি বুঝতেছে না?আমি ওকে এখন ভালোবাসি বলেই ওর পাশে আছি?
.
–কি হলো আবিদ সাহেব,চূপ কেন?
,
–না এমনিতেই৷(বলেই একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলাম)
.
–আচ্ছা তোমাকে একটা কথা বলব?
.
–হুম বলো
.
–এই যে তুমি,সেই প্রথম দিন থেকেই আমার এত উপকার করছো,তারপর আবার শর্ত মোতাবেক বিয়ে করে এতগুলো টাকাও দিয়েছো,আজ আবার আমাকে একটা জনোয়ারকে শেষ করতেও সাহায্য করেছো,সব ই তো আমাকে ভোগ করার জন্য তাই না?তাহলে আমকে তো এখনও ভোগ করো নি?কিন্তু কেন?
.
ওর কথাটা শুনে বুকটা কেমন ধুক করেই উঠল৷উপরের দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলেই মনে বললাম,ও কি ভাবছে এগূলো?ও কি এখনও বুঝতে পারছেনা,ওকে ভোগ করার জন্য আমি এগূলো করছিনা?ওকে ভালোবাসি বলে এগুলো করেছি৷তখনই ওকে নরম সূরেই বললাম
.
–জানো আনিকা?সব কিছু মানুষ ভোগের জন্য করেনা৷আর হ্যা তোমাকে ভোগ করার ইচ্ছা থাকলে,তোমার পাশে না থেকেও হয়ত তোমাকে প্রতিদিনই ভোগ করতে পারতাম৷আর তুমি আমার সাথে এতগুলো রাত কাটিয়েছো,কিন্তু তোমাকে শুধু আমার বুকের ওপর রেখেই জড়িয়ে ধরেই ঘূমিয়েছি,এছাড়া তোমার সাথে অন্যকোনো ধরনের বিহেইভ করিনি,যেটা দিয়ে প্রমানিত হয়,আমি তোমাকে ভোগ করতে চাচ্ছি
,
–(চুপ)
.
–আচ্ছা ঘূমাও,এমনিতেই আজ,অনেক ক্লান্ত তুমি,
.
তারপরই চূপচাপ ঘুমিয়ে পড়লাম৷শরীর ক্লান্ত থাকার কারনে ঘূম খুব তাড়াতাড়ি চলে আসল৷
.
আনিকাকে আজ ৫দিন পর ওর আম্মুর কাছে নিয়ে যাচ্ছি ৷এর ভিতর মেয়েটা অনেকবার যেতে চাইলেও ওকে যেতে দেইনি৷কারন এই কয়দিনের ভিতর আনিকাকে গোপন রেখে ওর আম্মুর অপারেশন করিয়ে ফেলেছি৷অপারেশন করার আগে খুব ভয়ে ছিলাম কারন,একটু এদিক সেদিক হয়ে গেলেই,আনিকার আম্মু শেষ হয়ে যেত৷আর আল্লাহ না করূক,এমন হলে ও হয়ত আমকে ভুল বুঝত,কারন ওর অগোচরে কাজটা করা ঠিক হয়নি৷তবুও করালাম কারন মেয়েটা বড্ড বেশিই মায়ের পাগল৷মাকে ছাড়া সব কীছুই ওর কাছে অর্থহীন৷আর যদি ও জানে ওর আম্মুর অপারেশন হবে,তাহলে হয়ত ও নিজেই ঠিক থাকতে পারত না৷তাই একটু বেশিই রিস্ক নিয়ে,ওর অজান্তেই……….
.
যাই হোক ওর আম্মু এখন অনেক ভালো আছে৷হাসপাতালে যেতেই ডাক্তার বলে উঠল
.
–আবিদ সাহেব,রোগি আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছে৷সামনের সপ্তাহেই ইচ্ছা করলে নিয়ে যেতে পারেন৷তবে ওনার দিকে একটূ বেশিই খেয়াল রাখবেন,অপারেশনের রোগি তো,বুঝেনই,…….
.
আমি মাথা নাড়ালাম৷আর ডাক্তারের এমন কথা শুনে আনিকা কেমন করে যেন আমার দিকে তাকিয়ে আছে৷আর অনেক বেশি অবাক হয়েই জিজ্ঞাসা করল
.
–অপারেশন?কিসের অপারেশন?আর কার অপারেশন
,
–আমি তোমাকে পরে বলছি,আগে চলো মাকে দেখে আসি
.
–না,তুমি আগে বলো কিসের অপারেশন
.
ঠিক তখনই ডাক্তার বলে উঠল
.
–আসলে,আপনার মায়ের একটা অপারেশনের দরকার ছিল,আর ওটা অনেক রিস্কের অপারেশন৷তাই আবিদ সাহেব আপনাকে কিছুই জানায়নি,কারন এতে আপনি অনেক টেনশন করবেন৷আর অপারেশনটা না করালেও আপনার মাকে বাঁচানোর কোনো আশা ছিল না,হয়ত তখন ওনি মরেই যেতেন৷তবে যাই হোক,এখন আপনার মা সম্পুর্ন বিপদ মূক্ত৷খুব শীঘ্রয় আপনার মা ভালো হয়ে যাবে…
.
.
বলেই ডাক্তার চলে গেল৷আর এইদিকে আনিকার চোখে পানি,আর ও আমার দিকে কেমন অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়েই আছে৷মনে হচ্ছে আমার ওপর কেমন রেগে আছে
.
আমি তখন আনিকার হাতে ধরলমা৷আর ওর আম্মুর কাছে চলে গেলাম৷ভিতরে যাওয়ার পরই আমাদের কথার আওয়াজ শুনেই ওর মা জেগে উঠল
.
–তুই এসেছিস মা ,আর তুই এত শুকিয়ে গেছিস কেন?ঠিক মত খাওয়া দাওয়া করিস না নাকি?
তুই যদি এমন করিস,তাহলে কিন্তু আমি আর ঔষধ খাবো না
.
–এগুলো বলো না মা,তুমি কেমন আছো?
.
–খুব ভালো আছি রে,খুব ভাল
.
বলেই মা মেয়ে কেমন একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দিছে৷আর আনিকার মা কেমন করে আনিকার কপালে চূমু দিচ্ছে,আর কেমন করে বুকে আগলে রেখেছে৷
.
ওদের এই দৃশ্যটা দেখে নিজের অজান্তেই চোখ দিয়ে চোখের নোনা পানি বের হয়ে গাল বেয়ে বেয়ে পড়তে লাগল৷আর নিজের বাবা মায়ের কথা খুব মনে পড়তে লাগল৷বাবা মা যে কি জিনিস,সেটা যে হারিয়েছে,সেই ভালো জানে,খুব মিস করছিলাম বাবা মাকে৷আমার মত এতিমের কাছে যে,বাবা মায়ের ভালোবাসার মুল্য কত বেশি,সেটা একমাত্র আমি এতিমই জানি
.
ঠিক তখনই আনিকার মা আমাকে ডাক দিল
.
–বাবা,তুমি কান্না করছো কেন(আনিকার মা)
,
–আসলে মায়ের কথা খূব মনে পরছে আজ,খুব মিস করছি
.
–কেন,তোমার বাবা মা কোথায়?
.
–না,ছোটবেলায়ই তারা মারা গেছে,এতিম করে চলে গেছে আমায়(কান্না করতে করতেই)
.
**নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**

–কে বলেছে তুমি এতিম,আমি কি তোমার মা না?
এইদিকে আসো বাবা
.
তখনই দৌড়ে ওনার কাছে যেতেই ওনি আমাকে জড়িয়ে ধরেই বলতে লাগল,আজ থেকে তুমিও মার ছেলে!
.
আহ কি শান্তি?কলিজাটা জুড়িয়ে গেল৷তখনই আমি বললাম
.
–আচ্ছা আমি কি আপনাকে আজ থেকে মা বলে ডাকতে পারি?
.
–হুম,কেন পারবে না,অবশ্যই ডাকবে.
.
খুব খুশি লাগছিল৷আর তখনই একটা ফোন আসল
.
–আচ্ছা মা,আমি একটু বাইরে থেকে কথা বলে আসছি,আপনারা কথা বলুন
.
–যাও বাবা
.
তারপরই আমি বাইরে বের হয়ে গেলাম৷প্রায় ২০মিনিট পর ভিতরে যাবো,তখনই দরজার বাইরে থেকেই শুনতে পেলাম
.
–মা রে ছেলেটা কে?
.
–এই তো,আমার ক্ষনিকের ফ্রেন্ড,
.
–মারে ছেলেটা অনেক ভালো রে,তুই জানস,ছেলেটা এই কয়ডা দিন,কিভাবে আমার পিছনে খাটছে৷কত্ত সময় আমর পিছনে শেষ করছে৷হারাডা দিন,আমার সেবা করছে,
.
–তোমার অপারশন হইছে আমাক বলে নি কেন
.
–আমি নিষেধ করেছিলাম৷কারন তুই শুনলে অনেক ভেঙে পরবি৷তবে যাই হোক,ছেলেটাকে আমার খুব ভালো লেগেছে,এমন একটা ছেলে যদি…
.
–থাক মা,আর বলো না,
.
–কেন?
.
–কারন ও অনেক বড়লোক,
.
–তারপরও রে মা,আমার মনে হয়,ওই ছেলেটা তোরে ভালোবাসে,নয়ত……
.
–মা আর বলো না প্লীজ,ওদের কাছে ভালোবাসার কোনো মূল্য নেই,ওরা বড়লোক,তাই ওদের কাছে মেয়েরা খেলার পূতূল,খেলা শেষ হলেই সব শেষ…আর আমি তার যোগ্য না মা,আর অযোগ্য হয়ে আমি কারও পরিহাসের,করুনার পাত্রি হতে চাই না
.
বলেই মেয়েটা কেমন কান্না করে দিল৷বাইরে থেকে কথাগুলো নিজেরই কান্না এসে গেল৷
তারমানে এতদিনে ওর মনে একটু ভালোবাসা আমি তৈরি করতে পারিনি?আর একটু জায়গাও তৈরি করতে পারলাম না?নাকি ওর অতীতের কারনে ও আমাকে ওর জীবনে জড়াতে চায় না?
.
.
.
.
.
.
চলবে…………..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে