#পতিতা_মেয়ে
#writter_Tannoy_Hasan
#part_16
আনিকাকে তখন পাগলের মত চূমু দিতে লাগলাম৷আর খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম৷আনিকা শুধু আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে আর আমি কি করছি সব কিছুই অদ্ভুদ ভাবে দেখছিল৷
অনেকক্ষন পর আমার মূখ থেকে কথা বের হলো
–আনিকা,আমি না তোমাকে পাগলের মত ভালোবাসি,কখনই হারাতে পারবনা(অনেক জোরেই কান্না করে দিলাম)
–এই পাগল,তুমি কান্না করছো কেন?আর তোমার কি হইছে?আমাকে বলবে না?
–(বোবার মত কান্না করছি)
আনিকা তখন আমার চোখের পানিটা মুছে দিয়ে আবারও বলা শুরু করল
–এই পাগল,তুমি কি খারাপ কোনো স্বপ্ন দেখছো
–হুম(মাথা নাড়িয়ে)
–কি দেখছো?
–আমি বলতে পারব না(মাথা নাড়িয়ে)
–বলো বলছি,
তারপর আনিকাকে আমার বিশাল এই দুঃস্বপ্নের কথা বললাম৷বললাম যে গতকাল ডাক্তার চাচার কাছ থেকে টেষ্ট করানোর পর যখণ ওনাকে ঘাবরে যেতে দেখলাম তখন থেকেই কেমন চিন্তা হচ্ছিলো৷আর ফলস্বরূপ রাতে এমন দুঃস্বপ্ন দেখেছি৷আর বলার পর আনিকাও কেমন কান্না করে দিল
–আরে বোকা অযথাই এত টেনশন করেছো বলেই এমন উল্টা পাল্টা স্বপ্ন দেখছো!রিপোর্ট যখন দিবে ,তখন দেখবা আমার কিছুই হয়নি,বোকা ছেলে
–হুম আনিকা,তাই যেন হয়,তোমার রিপোর্ট যেন খারাপ না আসে,আমি না তোমাকে ছাড়া বাঁচতে পারব না৷(কথাগুলো বলেই কান্না করে দিলাম)
—খুব ভালোবাসো আমায় তাই না?
–হুম৷অনেক ভালোবাসি
–আমিও আমার পাগলটাকে অনেক ভালবাসি
আর ওই স্বপ্ন টপ্নের কথা ভেবে একদমই মন খারাপ করবে না কীন্তু৷আর দেখো আমি তো তোমার সঙ্গেই আছি,তোমার সাথেই আছি
–কখনও ছেড়ে যাবে না তো?
–এই যে প্রমিস করে বলছি,আমি আমার পাগলটাকে কখনই ছেড়ে যাবো না৷ **নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**
এবার হাসো তো
আমার পাগলটার মুখে হাসি না দেখলে যে আমারও খুব খারাপ লাগে,হাসো বলছি
—হি হি হি ৷এবার তুমিও হাসো
–হি হি হি
বলেই একে অপরকে আবারও জড়িয়ে ধরলাম৷
কিছুক্ষন পরই ফজরের আযান দিচ্ছে৷আনিকা তখন বলে উঠল
–আযান দিচ্ছে,চলো দুজনে নামাজ পড়ে নিই
–ভালো লাগছে না৷তুমি পড়ো গিয়ে
–এই,কথা আর বলবা না৷আজ থেকে প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়বা৷
–আর তুমি কি করবা
–আমিও পড়ব
–হুম
সেদিন থেকেই নামাজ পড়া শুরু করে দিলাম৷দুজনে একসাথে নামাজ আদায় করলাম৷আসলে যে ঘরে স্বামি স্ত্রী এক ঘরে নামাজ আদায় করে,আমার মনে হয় সে ঘরের মত সুখি ঘর আর হতে পারে না৷কারন আল্লাহ এতে তাদের ভিতর যেমন ভালোবাসা আরও বাড়িয়ে দেয়,তেমনি তাদের ওপর আল্লাহর রহমতও নাজিল হয়৷
আর সেদিন সকালবেলাই ডাক্তার চাচা ফোন দেয়৷স্বপ্নের মত ফোন ধরতে খুব ভয় পাচ্ছিলাম৷
হাতটা কাপছিল৷
ফোনটা ধরতেই
–বাবা,আবিদ,কেমন আছো(চাচা)
–জ্বি চাচা ভালো আছি,চাচা আনিকার রিপোর্ট বের করছেন
–জ্বি বাবা,সেজন্যই তো ফোন দিলাম
–তো চাচা,কি রিপোর্ট আসছে(কলিজা কাপছে)
–আসলে বাবা,তুমি আসলেই ভালো হতো
চাচার এমন কথা শুনে ভয়ে বুকটা ধুক করে উঠল৷কারন সব কিছুই স্বপ্নের মত মিলে যাবে না তো?
–চাচা,সিরিয়াস কীছু?
–তুমি আমার চেম্বারে আসো,তারপরই বলব
–হুম আমি আসতেছি
বলার পরই চাচা ফোন কেটে দিল৷
অন্যদিকে বুকটা প্রচন্ড কাপছে৷আল্লাহর কাছে বারবার দোয়া করছীলাম,রাতের ওই দুঃস্বপ্নটা যেন সত্যি না হয়৷আনিকাকে ডাকলাম,আনিকা আসার পর ওকে নিয়ে ডাক্তারের কথা বলার পর আমার ভিতর যে অনুভুতি শুরু হয় সেটা দেখে আনিকাও ভয় পেয়ে যায়,ও শুধু আমাকে ইশারা দিয়ে বলল
–ভয় পেয়ো না,কোনো কিছুই হবে না৷চলো আমরা যাই
–হুম
তারপরই দুজনে ডাক্তার চাচার চেম্বারে গেলাম৷যাবার
চাচাকে সালাম দিয়েই জিজ্ঞাসা করলাম
–চাচা,কি রিপোর্ট আসছে?
–আসলে বাবা,প্রথম প্রথম আমিও ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম৷কারন তুমি যে সমস্যার কারনে ওকে নিয়ে এসেছো,তার কোনো কারন খুজেই পাচ্ছিলাম না৷
কিন্তু হঠাৎ ই……….
–কী হঠাৎ ই কী চাচা?(বুকের কম্পনটা বেড়ে গেল)
–হঠাৎ ই বুঝতে পারলাম৷ওর কোনো অসুখই নেই৷
–তাহলে কি হইছে?
–তাহলে তুমি বাবা,আর ও মা হতে চলেছে
বলেই ডাক্তার চাচা হো হো হো করে হেসে উঠল”
বুঝতে পারছিলাম না তখণ আমি কি করব?মনের ভয়টা চলে গিয়ে মনের ভিতর এত পরিমান খুশির সঞ্চার হলো যে,মুখ দিয়ে তখণ কথাই বের হচ্ছীলো না৷ওখানেই লাফ দিয়ে উঠলাম,
হুররে আমি বাবা হবো,
বলেই খুশিতে লাফালাফি,নাচানাচি করতে লাগলাম৷৷আর আনিকার দিকে তখণ তাকাতেই দেখলাম ও মাথাটা নিচু করে কেমন মুচকি মুচকি হাসছে৷
তারপর ডাক্তার চাচার সাথে কীছু কথা বলেই আনিকাকে নিয়ে বাসায় চলে আসলাম৷
এসেই আনিকাকে কোলে তুলে নিলাম৷
আর ঘূরতে লাগলাম
ওপস আনিকা তুমি আমাকে এটা কি খূশির সংবাদ দিলে?আমি তো খূশিতে পাগল হয়ে যাবো
বলেই আনিকার কপালে একটা চূমু দিলাম৷
আমি তখণ আনিকার দিকে তাকাতেই দেখলাম আনিকাও শুধু হাসছে৷হঠাৎই ও বলে উঠল
–আবিদ?তুমি কতটা খুশি হইছো?
–অনেক খুশি আনিকা৷যেটা বলে বুঝাতে পারব না
আর তূমিই বলো এমন খুশির কথা শুনে কে খুশি না হবে?আমি বাবা হবো,আর তুমি মা…
সেদিন দুজনেই খুব খূশি হলাম৷
আস্তে আস্তে দিন কাটতে লাগল৷
আনিকা আর আমি এখন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি৷আর আনিকা নামাজের পাশাপাশি নফল রোজা আর কোরআন তিলাওয়াত করে৷
আর আমাদের সংসার টা এতটাই সুখের সংসার হিসাবে পরিনত হয় যে,আমার কাছে মনে হয় এমন সংসার পৃথিবিতে আর দুটি নেই৷
আমাদের বিয়ের প্রায় ২বছরের বেশি হয়ে গেছে৷ **নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”**
কিন্তূ এর ভিতর একদিনও আমাদের ভিতর ওই রকমের কোনো ঝগড়া হয়নি৷এমনকি এখন অব্দি আনিকা আমার একটা কথারও বিন্দু পরিমানও অবাদ্য হয়নি৷
আমি যেটা বলি,পাগলিটা সেটাই হাসামুখে মেনে নিবে৷আর আমার ভুল হলে সেটা ধরিয়ে দিবে৷
সত্যিই ওহ মত একজনকে পেয়ে আমার জিবন ধন্য ৷
আস্তে আস্তে ১মাস,২মাস,৩মাস করে যেতে যেতে ৯টা মাস শেষ হয়ে গেছে৷
আর ওর দিন যতই এগিয়ে যাচ্ছে ততই ওকে কোনো কাজ করতে দেইনা৷
সব কাজ আমি আর ওর আম্মুই করি৷
সব সময় ওর সঙ্গ দেই৷
যে ৯টা মাস চলে গেছে,এই ৯টা মাস আমার পাগলিটা যে কি পরিমান কষ্ট করেছে,সেটা আল্লাহ ছাড়া আর কেউ ভালো জানেনা৷
প্রায় প্রতিদিনই আমার বাবুটা ওর পেটের ভিতর খুব জোড়েই লাথি মারত৷আর সেই লাথি খেয়ে মাঝে মাঝে গুম থেকে লাফ দিয়ে চিৎকার করে উঠত৷
আর সেই সময়টাতে আমি ওকে বলতাম
–আনিকা,খুব কষ্ট হচ্ছে তোমার তাই না?
–কই না তো?
–একদম মিথ্যে বলবে না৷
–জানো আবিদ,এই কষ্ট গুলো আমার কাছে একটূও কষ্টের মনে হয় না৷যখন দেখি আমি তোমার বুকের মাঝে মাথা রাখতে পেরেছি৷
ওর কথাগুলো শুনে মাঝে মাঝে একদমই বাকরুদ্দ হয়ে যেতাম৷
আসলে ওর মত স্ত্রী ভাগ্যগূনে একটা পাওয়া যাবে কি না,সেটা ভাবনার বিষয়৷
মাঝে মাঝে আনিকা আমাকে বলত
–আবিদ,সব কিছু আমি পেরে উঠতে পারব তো?
–আনিকা,তোমার যদি ভয় হয়,তাহলে বাচ্ছাটা ফেলে দাও,আমার বাচ্ছার দরকার নেই৷আমি তোমাকে সাথে নিয়ে সারাটা জীবন পার করে দিতে পারব(তখনই ও আমার মুখে হাত দিত)
–না আবিদ,এগূলো বলবা না,তুমি হয়ত জানোনা,মা হবার পর থেকে এ পর্যন্ত কতটা কষ্ট সহ্য করে আসছি৷আর সব কষ্টই তোমার বুকে মাথা রেখে ভুলে গেছি৷তবে আবিদ,আমি সব কিছু পারব ৷শুধু ডেলিভারির সময় তুমি আমার পাশে থেকো,ব্যথার সময় তুমি আমার পাশে থেকে,তোমার বুকে মাথা রাখতে দিও,আমাকে একটু তোমার বুকে আগলে রেখো,দেখবে আমি সব কিছু পেরে উঠব৷
–হূম
–আবিদ,থাকবে তো আমার পাশে?
–হুম থাকব,কিন্তু ডেলিভারির সময় কি ডাক্তাররা আমাকে তোমার সাথে ভিতরে ডুকতে দিবে?
–ভিতরে ডুকতে দিবে কিনা ,তা জানিনা তবে তোমাকে আমার সাথে থাকতে হবে,তুমি ডাক্তারদের মেনেজ করে হলেও আমার সাথে থাকবি৷প্লীজ এই টূকু করতে পারবে না?
–হুম পারব,আমি আমার পাগলিটার জন্য সব করতে পারব
বলার পরই আনিকা কেমন অদ্ভুদভাবে একটা হাসি দিল৷ওর হাসিটা দেখার পরই কলিজাটা কেমন ঠান্ডা হয়ে গেল৷
মনে মনে বলতে লাগলাম ,,আল্লাহ তূমি কিন্তূ সবকিছুই শুনছো,আর ওর পাশে থাকার,আর আমার পাগলিটা যেন সবকিছু পেরে উঠে তার জন্য তুমি সহায় হও আর ওকে সেই তৌফিক দান করো৷
.
.
.
চলবে….