নীল_ডায়েরির_সেই_মেয়েটি পর্ব-৩৭+৩৮

0
600

#নীল_ডায়েরির_সেই_মেয়েটি
#আরদ্ধিতা_রুহি
#পর্বঃ ৩৭+৩৮

🍁

নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে শীতের প্রকোপ বেড়েছে খানিকটা, সাথে কুয়াশা ও একটু বেশিই মনে হচ্ছে।

গুটিশুটি মেরে ঘুমিয়ে আছে আরোহী, ঠান্ডায় বার বার নিজেকে হাত দিয়ে ঢাকার চেষ্টা করছে কিন্তু হাত দিয়ে কি আর ঠান্ডা কমানো যায়।

শেষ মেস ঠান্ডার কারণে আরোহীর ঘুম ভেঙে যায়। চোখ খুলতেই আঁধারকে না দেখে অবাক হয় আরোহী। বেলকনির দরজা সামান্য খোলা দেখে আরোহীর আর বুঝতে বাকি নেই আঁধার কোথায় আছে!

দেওয়াল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে সবে মাত্র রাত তিনটার ঘরে ঘড়ির কাটা এসে থেমেছে! ধির পায়ে এগিয়ে যায় আরোহী বেলকনির দিকে।

বেলকনিতে রাখা দোলনায় আঁধারকে অফিসের ফাইল নিয়ে ঘুমাতে দেখে আরোহী তপ্ত শ্বাস ছাড়ে।লোকটা যে অফিসের কাজ করতে করতেই ঘুমিয়ে গেছে দেখেই বোঝা যাচ্ছে।

চঞ্চল পায়ে আবার ঘরে চলে যায় আরোহী! একটা বালিশ ও কম্বল দিয়ে এসে আঁধারের মাথাটা বালিশের উপর রেখে গায়ে কম্বল জড়িয়ে দেয়।হাত থেকে ফাইলটা নিয়ে পাশের চেয়ারের উপর রেখে নিজে ও আঁধারের সাথে লেপ্টে শুয়ে পড়ে।

সামান্য একটু জায়গা ও নেই আর ঐটুকু দোলনায় কি আর দুজন মানুষের জায়গা হয়!তবুও আরোহী চিপকে শুয়ে আছে,সামান্য নড়লেই যে সে পড়ে যাবে সেদিকে তার কোন খেয়াল নেই।

ঘুমের মাঝেই আঁধার দু’হাতে ঝাপটে ধরে আরোহীকে।এতে যেনো নিশ্চিত হয় আরোহী সে আর পড়বে না।তবুও নড়াচড়া করে আঁধারের সাথে আরও খানিকটা লেপ্টে শুয়ে থাকার চেষ্টা করে।

আরোহীর নড়াচড়ার কারণে এবার আঁধারের ঘুম ভেঙে যায়, পিটপিট করে যখন সে আরোহীকে ও খোলা আকাশের দিকে নজর দেয় ভ্রুকুঁচকে যায় তার।

আরোহীর সে দিকে কোন খেয়ালই নেই সে আঁধারের সাথে মিশে যাওয়ার চেষ্টা করছে।

হঠাৎ করেই আঁধার আরোহীকে টেনে তার উপরে শুইয়ে দেয়,হঠাৎ করেই ঘটনাটা হওয়ার কারণে আরোহী ভয়ে আঁধারে দুহাত দ্বারা ঝাপটে ধরে।

নিজের ভারসাম্য ঠিক রাখার জন্য, আঁধার একটা হাত দোলনার ফাঁক দিয়ে বের করে দিয়ে দোলনার গ্রিল ধরে নেয়। আর একটা হাত দিয়ে আরোহীকে ভালো করে ধরে যেনো পড়ে না যায়।

আরোহী তখনো ভয়ে আঁধারকে ঝাপটে ধরেই আছে!

–‘আরুপাখির কি এখন আর আমায় ছাড়া একা থাকার ইচ্ছে করে না নাকি, যে এইটুকু দোলনায় ও লেপ্টে শুয়ে পড়েছো!’

হঠাৎ কানের কাছে ফিসফিস করে কথাটা বলে উঠে আঁধার। কথাটার মানে বুঝতেই কেঁপে উঠে আরোহী!আঁধারের বুকের সাথে লেপ্টে যায় আরও খানিকটা। চোখ বুঝে এবার মিনমিন করে বলে আরোহী,,,

–‘ঘুমান তো!’

–‘ঘুম নষ্ট করে এখন বলছো ঘুমাবো,হাহ্ আমি এতোটা ও আনরোমান্টিক নই আরুপাখি! ‘

আবার ফিসফিস করে বলে আঁধার,,, আরোহী মাথাটা সামান্য তুলেই চোখ পাকিয়ে তাকায় আঁধারের দিকে।আঁধার শয়তানি হাসি দিয়ে বলে,,,,

–‘আমার কি দোষ বলো,তুমি তো নিজেই চলে এসেছো!’ এখন বউয়ের আবদার কি আর ফেলে দেওয়া যায় বলো?

আরোহী আঁধারের মিথ্যে বলার ভঙ্গি দেখে হতভম্ব হয়ে যায়, সে কি আর সেই কারণে এসেছে নাকি!সে তো আঁধার একা থাকলে যদি কোনো পেতনী বা শাঁকচুন্নি এসে নিয়ে যায় তাই এসেছে।

কিন্তু এই অসভ্য লোকটার মাথায় সবসময় অসভ্য অসভ্য কথা বার্তা ঘুরে একে আর সে কিভাবে বুঝাবে।

আরোহীর ভাবনার মাঝেই আঁধার দু’হাতে তার মুখটা সামান্য উঁচু করে,আরোহী ভ্রুকুঁচকিয়ে তাকায়!

আঁধার আরোহীর চোখের দিকে গভীর চাহনিতে তাকায়, আরোহী নিজেও আঁধারের চোখের চাহনিতে নিজেকে হারানো শুরু করে।

এক পর্যায়ে আঁধার ধিরে ধিরে আরোহীর দিকে ঝুঁকে যেতে শুরু করে,আরোহী নিজেও গভীর চাহনিতে আঁধারের দিকে তাকিয়ে থাকে।

আঁধার যখন আরোহীর ওষ্ঠের ভাজে নিজের ওষ্ঠের স্থাপন করবে, ঠিক সেই মুহূর্তেই আরোহী আঁধারকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়।

আর নিজে উঠে দৌড়ে ভেতরে চলে যায়।আঁধার সামান্য ব্যাথা পায় মাথায়!তবে সে সবে মাথা না ঘামিয়ে সে ও আরোহীর পেছন পেছন ছুটে চলে যায় দেখার জন্য।

আরোহী ওয়াশরুমে ঢুকে ইচ্ছে মতো বমি করে ক্লান্ত হয়ে যখন ঢলে পড়বে, ঠিকে সেই মুহূর্তে আঁধার আরোহীকে ধরে ফেলে।আরোহীর নাজেহাল অবস্থা দেখে ভয় পেয়ে যায় আঁধার।

–‘আরু, আরু তুমি ঠিক আছো?’ এই আরু,আরু?

আঁধারের বিচলিত কন্ঠে আরোহী পিটপিট করে চোখ খোলার চেষ্টা করে কিন্তু সফল হয় না!

আঁধার যেনো এবার একটু বেশিই ভয় পেয়ে যায়,,,

–‘এই আরু কথা বলছো না কেনো?’ আরু? প্লিজ কথা বলো আরুপাখি?

অনেক কষ্টে এবার চোখ খুলতে সক্ষম হয় আরোহী, ধির কন্ঠে বলে উঠে,,,

–‘আ-মি ঠি-ক আ-ছি! ‘

আরোহীর ভাঙ্গা কন্ঠেস্বর শুনে এবার আঁধার একটু হলেও শান্ত হয়।আরোহীকে ধরে চোখ মুখে পানি দিয়ে কোলে তুলে নেয়।

রুমে এসে শুয়ে দিয়ে একটা টাওয়াল দিয়ে মুখ মুছিয়ে দিয়ে, পাশে বসে মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলে,,,,

–‘সারাদিন খাও নি তুমি?’ নাকি আজেবাজে কিছু খেয়েছো? হঠাৎ বমি হওয়ার কারন কি বলো তো?

–‘কি জানি, আমার খুব ঘুম পাচ্ছে আঁধার!’

ক্লান্ত কন্ঠ আরোহীর, আঁধার এবার নরম স্বরে বলে,,,

–‘আচ্ছা ঘুমাও তুমি!’

–‘একা?’

আরোহীর কথা শুনে আঁধার নির্দ্বিধায় তার পাশে শুয়ে আরোহীর মাথায় হাত বুলায়।আরোহী এবার আঁধারের একটা হাত শক্ত করে ধরে চোখ বুঝে ঘুমানোর চেষ্টা করে।

!
!

সকালে,,

ব্রেকফাস্টের জন্য টেবিলে সকলে একসাথে বসে আছে শুধু মাত্র আরোহী ও আঁধার বাদে।সকলে তাদের জন্য অপেক্ষা করছে এরইমধ্যে আঁধারকে একা সিরি দিয়ে নামতে দেখে ভ্রুকুঁচকায় সকলে।

আঁধার বসতেই আঁকলিমা চৌধুরী এবার প্রশ্নটা করেই ফেলে,,,,

–‘আরো কোথায় রে?’ ও কি এখনো উঠেনি?

–‘আসলে আম্মু ও একটু অসুস্থ, কাল অনেক রাতে ঘুমিয়ে ছিলো তাই আর ডাকিনি!’

আঁধারের কথায় সকলের কপালে চিন্তার ছাপ পড়ে যায়,তারেক চৌধুরী বিচলিত কন্ঠে বলে উঠে,,,

–‘সে কি রে, কি হয়েছে আরো মায়ের?’

–‘তুঃ আমাদের ডাকিসনি কেনো বাবু?’

আঁকলিমা চৌধুরী তারেক চৌধুরীর পর পরই বিচলিত কন্ঠে কথাটা বলে উঠে।

–‘আমি এতোটা ও অসুস্থ ছিলাম না আম্মু!’

আরোহীর কন্ঠস্বর শুনে সকলে সিরির দিকে তাকায়,আরোহীকে নামতে দেখে আঁধার দৌড়ে গিয়ে ধরে নামতে নামতে বলে,,,,

–‘তোমায় একা একা কে নামতে বললো শুনি, কাল রাতে তো অবস্থা খারাপ হয়ে গেছিলো আর এখন এভাবে নিচে আসার কি দরকার ছিলো?’ আমায় ডাকতে পারতে না?

আঁধারের গম্ভীর কন্ঠ শুনে আরোহী মিষ্টি হেসে বলে,,,

–‘আপনি বেশি বেশি চিন্তা করছেন মিস্টার চৌধুরী?’ আমি ঠিক আছি তো!

–‘তুমি….’

–‘আম্মু আমার পেট!’

আঁধারের কথা সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই আলিশার চিৎকারে সকলে ভয় পেয়ে যায়।

!

!

হাসপাতালের করিডরে সকলে বসে অপেক্ষা করছে সকলে আলিশার জন্য। সকলে চেহারায় ভয়ের রেশ স্পষ্ট, আদর তো অস্থির হয়ে বার বার ওটির সামনে যাচ্ছে একবার আসছে।

আদরের চোখ মুখ শুকনো, তাকে দেখে পাগল পাগল লাগছে। আঁধার আদরের কাঁধে হাত রাখতেই আদর এবার আর নিজেকে আটকাতে পারে না জড়িয়ে ধরে কেঁদে উঠে।

–‘ভা..ভাই আমার আশা?’ আমার আশা ঠিক হয়ে যাবে তো ভাই? আমার আশার কিছু হলে আমি কিভাবে বাঁচব ভাই!

–‘শান্ত হ আদর, আলিশা ভালো হয়ে যাবে দেখিস!’চিন্তা করিস না।

আঁধারের কথায় শান্ত হতে পারলো না আদর, তার যেনো ভয়টা ধিরে ধিরে বাড়তে শুরু করলো।

এরইমধ্যে একজন নার্স তোয়ালে পেঁচিয়ে একটা ছোট প্রাণকে নিয়ে এসেই বললো,,,

–‘স্যার আগে তো নিজের ছেলেদের কোলে নিন তারপর নাহয় বাকি কান্না টুকু কাদিয়েন!’

নার্সের হাস্যজ্বল মুখ দেখে সকলের মুখ উজ্জ্বল হয়ে যায়, আরোহী দৌড়ে এসে আগে কোলে তুলে নেয় বাচ্চাটাকে।আদর চোখের পানি মুছে বলে,,,

–‘আমার ওয়াইফ কেমন আছে? ‘

নার্সটা হেঁসে বলে,,,,

–‘আপনার বউ একদম ফিট এন্ড ফাইন আছে মিস্টার, আপনাদের জন্য আর একটা সারপ্রাইজ আছে ওয়েট!’ নিয়ে এসো।

কথাটা বলার সাথে সাথে আর একজন নার্স একটা ছোট বাচ্চাকে নিয়ে আসে।সকলে চমকে যায়, আদর হা করে তাকিয়ে থাকে!

মিসেস আঁকলিমা চৌধুরী ও তারেক চৌধুরীর মুখটা আর একটু উজ্জ্বল হয়। আমজাদ শেখ তারেক চৌধুরীর পিঠে একটা চাপড় মেরে বলে,,,

–‘কিরে তারেক, দ্বিগুণ মিষ্টি আনতে হবে তো তাহলে!’

তারেক চৌধুরী ও আমজাদ শেখ কোলাকুলি করে নেয় খুশিতে, শাহানাজ শেখ খুশিতে কেঁদে উঠে।

আঁধার এবার এগিয়ে গিয়ে বাচ্চাটাকে কোলে নিয়ে বলে,,,

–‘এটা ও কি চ্যাম্প নাকি?’

নার্স দু’জন হেঁসে একসাথে বলে উঠে,,,,

–‘হ্যা,এখন মিষ্টি নিয়ে আসুন যান!’

আদর আরোহীর কাছ থেকে বাচ্চাটাকে কোলে তুলে নেয়। খুশিতে কেঁদে ফেলে সে।

–‘ছিচকাঁদুনের মতো বার বার কাঁদিস না তো আদর, মেয়ে মেয়ে লাগে তোকে!’

আঁধারের কথায় সকলে হেঁসে ফেলে। আদর চোখ মুখ কুঁচকায়।

!

!

কেটেছে তিনদিন, আলিশাকে বাসায় নিয়ে আসা হয়েছে আজকে!রাহি ও আরোহী মিলে বাচ্চার নাম ঠিক করা নিয়ে উঠে পড়ে লেগেছে।

এক এক সময় এক এক নাম নিয়ে তারা উভয়ে তর্ক করছে ।

পাশেই শিহাব ও আঁধার অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তাদের দু’জনের দিকে।তাদের অসহায় দৃষ্টি আশে পাশের সকলে দেখলেও তাদের দুই রমনী দেখেও যেনো দেখছে না।

বাচ্চাগুলোকে বাসায় নিয়ে আসার পর থেকেই রাহি ও আরোহী তাদের কোল ছাড়া করছে না।

আঁধার ও শিহাব বার বার তাদের কাছে এক কথা বলতে বলতেই বিরক্ত হয়ে গেছে কিন্তু আরোহী ও রাহির কোনো ভবাবেগ হলো না তাতে।

একসময় বিরক্ত হয়ে আঁধার ঝট করে আরোহী কোল থেকে কেড়ে নেয় বাচ্চাটাকে।আরোহী তর্কে এতোটাই ব্যাস্ত ছিলো যে, কিছু করতেই পারলো না।

কটমট করে আঁধারের দিকে তাকায় আরোহী, আঁধার একটা ইনোসেন্ট হাসি দিয়ে নিজের জায়গায় বসে পড়ে।রাহি আরোহীর রিয়াকশন দেখে দাঁত বের করে হাঁসে।

মুহুর্তের মধ্যেই রাহির হাসি মুখ চুপসে যায়, শিহাব কুটিল হেসে বাচ্চাটাকে নিয়ে ধপ করে বসে পড়ে।আদর ও আলিশা তাদের কান্ডে ফিঁক করে হেঁসে দেয়। আরোহী এবার দাঁত কেলিয়ে বলে,,,,

–‘আরও দাঁত কেলাবি?’

রাহি অসহায় চোখে তাকায় সকলের দিকে,কিন্তু পাত্তা পায় না! আঁধার এবার বলে,,,,

–‘আমি আমার চ্যাম্পদের নাম ঠিক করেছি,!’যে আগে হয়েছে মানে আমার কোলে যেটা আছে তার নাম হবে, তাহশিফ আফনান চৌধুরী, আর শিহাবের কোলে যে আছে তার নাম হবে তাহমিদ আদনান চৌধুরী।

–‘মাশাআল্লাহ!’

সকলে একসঙ্গে বলে উঠে। আঁধার নিজেকে নিজেই বাহবা দেয়। সকলে আঁধারের প্রশংসা করে, কারণ নামগুলো সকলের কাছেই ভালো লেগেছে।

!
!

নীলিমা,সোহেল,রাতুল, তরী সকলে একসাথে দেখতে এসেছে আলিশা ও আদরের ছেলেদের।

সাথে বিভিন্ন ধরণের খেলনা ও কাপড় নিয়ে এসেছে।আলিশার ছেলেদের জন্য চৌধুরী পরিবারে সকলে অনেক খুশি হয়ে আছে।

এরইমধ্যে সাহফিফের আগমন ঘটে, সে এসেই সকলের সাথে গল্পে মেতে উঠেছে।

চৌধুরী পরিবারে এখন সকলের মনে উৎসব লেগে রয়েছে, এই তো কখনো সকলে একসাথে গল্প করছে আবার কখনো একসাথে হেঁসে উঠছে,আবার কখনো বা সকলে একসাথে চেঁচামেচি করছে।

আরোহী, আঁধার ও রাহি-শিহাবের তো সবসময় ঝগড়া লেগেই রয়েছে। তারা বাচ্চার কে কি হবে চাচী হবে না খালামনি হবে আর ছেলেরা চাচ্চু হবে নাকি খালু সেটা নিয়ে।

তাদের ঝগড়া দেখে সকলেই অতিষ্ঠ হয়ে গেছে।

!
!

রাতে,,

আরোহীর আজকে সকাল থেকেই মাথা ঘুরছে, হঠাৎ করেই কালকের মতো বমি বমি পাচ্ছে। চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে আরোহী, এরইমধ্যে আঁধার রুমে ঢুকেই আরোহীকে শুয়ে থাকতে দেখে অবাক হয়।

মাথায় কারো হাতের স্পর্শ পেয়েই চোখ খুলে আরোহী! আঁধারকে দেখেই মলিন একটা হাসি দেয়।আঁধার নিজেও মলিন কন্ঠে বলে,,,,,

–‘তোমার কি শরীর খারাপ আরু?’ এতোবার করে বললাম এতো কাজ করার দরকার নেই, সকলে তো আছেই কিন্তু তুমি কি আর আমার কথা শুনো নাকি!’

–‘আমি ঠিক আছি তো একটু ক্লান্ত লাগছিলো তাই শুয়েছিলাম।’

উঠে বসতে বসতে বলে আরোহী।

–‘তুমি ঘুমাও তাহলে, আমি চেঞ্জ করে আসছি!’

আরোহীর পিঠের নিচে একটা বালিশ দিতে দিতেই বলে আঁধার। আরোহী মাথা নাড়ায়! আঁধার ওয়াশরুমে চলে যায়।

আরোহীর ফোন বেজে উঠতেই ক্লান্ত শরীরে এক পলক তাকায় আরোহী, ডিভানের উপর ফোনটা দেখেই তার আর উঠতে মন চায় না।

কিন্তু বার বার বাজার কারণে ক্লান্ত পায়ে উঠে এগিয়ে যায়, হঠাৎ করেই তার মাথা চক্কর দিয়ে উঠে।

সবকিছু অন্ধকার লাগতে শুরু করে তার নিজেকে আর ধরে রাখতে পারে না সে পড়ে যেতে নেয় তবে তার আগেই দু’টো হাত আগলে নেয় তাকে।

–‘তুমি ঠিক আছো আরু?’ কোন কথাটা শুনো আমার তুমি, নিশ্চয়ই খাওনি সারাদিন ঠিক মতো!’

অস্থির কন্ঠে কথাগুলো বলেই আরোহীকে কোলে তুলে নেয় আঁধার।

#চলবে?

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে