#নীল_ডায়েরির_সেই_মেয়েটি
#আরদ্ধিতা_রুহি
#পর্বঃ৪৪
🍁
ক্যালিফোর্নিয়াতে থাকতো এক সুখী দম্পতী ফ্লোরা ফারুকি ও তার হাসবেন্ড রিহান ফারুকি। তারা একসময় বাংলাদেশেের চট্টগ্রাম শহরে বসবাস করলেও কোনো এক কারণে ক্যালিফোর্নিয়াতে চলে আসতে হয়।
তখন থেকেই তাদের নিজস্ব শহর বলতে চট্টগ্রামকে না তারা বরং ক্যালিফোর্নিয়াকেই বোঝায়!তাদেরই জমজ দুই রাজ কন্যা ক্যারিফিয়া ও ক্যাথিলিয়া!
তাদের জন্ম হয় ক্যালিফোর্নিয়াতেই।মায়ের কাছে বাংলাদেশ নিয়ে গল্প শুনতে শুনতেই তারা বড় হয়!আর বাংলা ভাষা অনেকটা আয়ত্বে নিয়ে আসলেও ঠিক ভাবে উচ্চারণ করতে পারে না।।
একসময় তাদের মা তাদের প্রতিদিনই বাংলা শিখাতে শুরু করেন। আর এখন তারা বাংলাদেশীদের মতোই বাংলা বলতে ও বুঝতে পারে।
তাদের দেখতে অনেকটা বিদেশীদের মতো মনে হলেও তাদের বাংলা শুনে যে কেউ বলবে তারা বাংলাদেশের মানুষ!
একসময় তাদের প্রথমে বাংলাদেশ নিয়ে অনেক কৌতুহল থাকলেও এখন আর সেই কৌতুহল নামক জিনিসটা আর নেই! বরং আছে বিরক্তি!
কারণ তাদের জেদের কারণে যখন ফ্লোরা ও রিহান তাদের বাংলাদেশে নিয়ে আসেন, তারপর বাংলাদেশের লোক জনদের লাইফ স্টাইল আরো অনেক কিছু এমন আছে যেটা তাদের পছন্দ হয়নি!
তাই তারা দুদিনের মধ্যেই চলে যাওয়ার জন্য গোছগাছ করছিলো তখনই তার গ্রানী তাদের ঘুরতে যাওয়ার কথা বলেন!শুরুতে তারা রাজি না হলেও পরে গ্রানীর মন রক্ষা করার জন্য রাজি হয়ে যায়!
তবে নির্দিষ্ট জাগয়ায় পৌঁছানোর পর পরই পায়ের নিচে একটা নীল কভারের সুন্দর ডায়েরি দেখতে পায়!ক্যারি কৌতুহল বসত হাতে তুলে নিতেই ক্যাথি বলে উঠে,,,,
–‘উফ ইটস সো ডার্টি ক্যারি!’
কিন্তু ক্যাথির কথা না শুনেই ক্যারি ব্যাগ থেকে টিস্যু বের করে পরিষ্কার করে নেয়!ডায়েরিটির কভারে অনেকটা খোদাই করে লেখার মতো সাদা পাথর দিয়ে লেখা নীল ডায়েরির সেই মেয়েটি!
ক্যাথি এতোক্ষণ নাক ছিটকালেও সে ও ডায়েরির কভারটি দেখে বলে উঠে,,,
–‘ইটস সো প্রিটি ইয়ার!’
–‘হুম পড়ে খুলে দেখবো এটা এখন রেখে দে!’
বাংলাদেশ থেকে যাওয়ার পর আর তাদের সে কথাটি মনেই ছিলো না, কিছুদিন আগে ল্যাগেজের এক কোনে তারা ডায়েরিটি পায়!
তাই খুলে দেখার কৌতুহল জাগে তাদের মনে! আর খুলে দেখতেই তারা পড়তে গিয়ে প্রেমে পড়ে যায় সেই নীল ডায়েরির সেই মেয়েটির আর তার বর তাশরিফ আঁধার চৌধুরীর!
তাই তো তাদের খুঁজতে আজকে তারা বাংলাদেশ অব্দি চলে এসেছে। এয়ারপোর্ট থেকে বের হতেই লম্বা একটা শ্বাস নেয় দু’জনে।
ফ্লোরা ও রিহান মেয়েদের দিকে এক পলক তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে!একসময় বাংলাদেশে না থাকার জন্য যে মেয়েরা তার ড্যাডের কাছে রিকুয়েষ্ট করেছিলো।
আর আজকে বাংলাদেশে আশার জন্য তার মেয়েরা আবার রিকুয়েষ্ট করেছে তার কাছে, তাই তো বাধ্য হয়ে নিয়ে আসতেই হয়েছে রিহানকে।
–‘গার্লস চলো এবার হোটেল বুক করা হয়ে গেছে!’ আর ওই যে গাড়ি পাঠিয়েছে।
রিহানের কথায় তারা মাথা নাড়িয়ে গাড়িতে উঠে বসে!
–‘ড্যাড হোটেলে যাওয়ার আগেই যদি একবার ভার্সিটিতে যেতে পারতাম,প্লিজ ড্যাড!’
ক্যারির কথায় ফ্লোরা বিরক্ত হয়ে বলে,,,
–‘নো ওয়ে, আগে ফ্রেশ হবে রেস্ট করবে দেন!’
–‘আহ ফ্লোরা ওরা যেটা বলছে সেটায় হবে তুমি আর কিছু বলো না!’
ফ্লোরাকে থামিয়ে দিয়ে বলে রিহান।ক্যাথি ও ক্যারি জড়িয়ে ধরে তার ড্যাডকে বলে,,,,
–‘ইউ আর দা বেস্ট ড্যাড ইন দা ওয়াল্ড, লাভ ইউ ড্যাড!’
–‘রিহান এভাবেই ওদের মাথায় তুলো তুমি!’
কথাটা বলার সাথে সাথেই দু’বোনে এবার এগিয়ে গিয়ে তার মায়ের গলা জড়িয়ে ধরে বলে,,,
–‘লাভ ইউ টু মম!’
ফ্লোরা আর রাগ করে থাকতে পারে না সে ও হেঁসে ফেলে।
!
!
ভার্সিটিতে,,,
একটা সুদর্শন ছেলের সামনে দাঁড়িয়ে আছে তারা! ছেলেটি নিজেও ভ্রুকুঁচকে তাকিয়ে আছে তার সম্মুখে দাঁড়িয়ে থাকা দুই বিদেশি রমনীর দিকে!
তাদের চেহারা কিছুটা এক হলেও তাদের দেখতে অনেকটাই পরীর মতো!কি কিউট দেখতে তারা,কিন্তু সেসব মুখে প্রকাশ করে না সেই ছেলেটি কারণ মেয়ে মানুষকে বেশি লায় দিতে নেই! একসময় রিহান গলা খেঁকারি দিয়ে বলে,,,
–‘বেটা,তুমি কি এখানের স্টুডেন্ট?’
বিরক্ত হয় ছেলেটি,তার চোখ মুখে অনেকটা বিরক্তি ফুটে উঠে।
–‘জ্বি না, আমি ইংরেজি প্রফেসার!’
–‘ওহ সরি সরি, আসলে বোঝার ভুল আমার!’ আমি রিহান ফারুকি আর ইনি আমার ওয়াইফ ফ্লোরা ফারুকি আর ওরা আমার টুইনস ডটার ক্যারি ও ক্যাথি! আমরা আসলে ক্যালিফোর্নিয়া থেকে এসেছি! একজনের খোঁজে।
–‘ও নাইস টু মিট ইউ আঙ্কেল, হাউ ক্যান আই হেল্প ইউ আঙ্কেল? ‘ বাই দা ওয়ে আমি রাতুল আহম্মেদ।
মুখে হাসি টেনে বলে উঠে রাতুল।
–‘রাতুল!’
একসাথে চেঁচিয়ে উঠে ক্যারি ও ক্যাথি! হকচকিয়ে যায় রাতুল।
–‘আঁধার আঁধার!’
উত্তেজিত হয়ে আঁধারের নাম বলতে দেখে ক্যারির দিকে পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকায় এবার রাতুল।
–‘আঁধারকে কিভাবে চিনেন আপনারা ?’
–‘আঁধার কোথায় মিস্টার রাতুল, আর আরোহী সে কোথায়?’ বলুন না আঁধার কোথায়?
ক্যারিকে এবার এক হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরেন রিহান।মাথায় হাত বুলিয়ে বলেন,,,
–‘রিলাক্স ডিয়ার,রিলাক্স! ‘
শান্ত হয় ক্যারি।রাতুল অবাক হয়ে তাকায় সকলের দিকে, আঁধারের সাথে কি সম্পর্ক এদের যে ক্যালিফোর্নিয়া থেকে ছুটে এসেছে তার খোঁজে।
আর আরোহীকে ও তো চেনে এরা? তাহলে তাদের বাসায় না গিয়ে এখানে কেনো খোঁজে এসেছে? মনে মনে এইসব ভাবে রাতুল।
–‘হোয়াট হ্যাপেন্ড আঙ্কেল?’ উনি আঁধারের জন্য এতো বিচলিত হয়ে আছেন কেনো? কি সম্পর্ক ওর সাথে এনার?
–‘প্লিজ আগে বলুন না আঁধার কোথায়?’বেঁচে আছে সে বলুন না প্লিজ!’
ক্যাথির কথায় এবার রাতুল বিরক্তের সহিত বলে উঠে,,,,
–‘আরে আপনারা আগে বলবেন তো কাহিনি কি!’
–‘আঁধার কোথায় মিস্টার রাতুল?’
–‘অফিসে আছে ভাই এটা জানার জন্য নিশ্চয়ই এতো দূর দেশ থেকে এখানে আসেননি?’
বিরক্তির সহিত বলে এবার রাতুল। ক্যারি তার উত্তর পেয়েই লাফিয়ে গিয়ে রাতুলকে জড়িয়ে ধরে।
রাতুল হতভম্ব হয়ে যায়, এই প্রথম কোনো নারী তার এতোটা কাছে এসেছে!তার বুকের ভেতর ধক ধক করে একটা শব্দের উৎপত্তি শুরু হয়!
অন্য রকম ফিল হয় রাতুলের,তার মনে হচ্ছে পুরো শরীর একটা ঝাঁকুনি দিয়ে উঠলো! কিন্তু তাকে জড়িয়ে ধরে থাকা রমনীর সে দিকে হুস নেই।
ফ্লোরা বিরক্ত হয়ে যায় তার মেয়ের কান্ডে,এটা যে বাংলাদেশ তার মেয়ের সে দিকে ধ্যান নেই! ভার্সিটির সবাই হা করে তাকিয়ে আছে তাদের দিকে।
হয়তো তারা এমনটা আশা করেনি একটা প্রফেসরের কাছে।রাতুল নিজেও বুঝতে পারছে না কি হচ্ছে তার সাথে।
–‘ক্যারি!’
ক্যাথি তার মায়ের ইশারা পেয়ে একটু চেঁচিয়ে ক্যারিকে ডেকে ওঠে! ক্যারি রাতুলকে ছেড়ে দিয়ে এবার ক্যাথিকে জড়িয়ে ধরে। রাতুলের বুকের ভেতর এখনো অস্থির লাগছে।
–‘ক্যাথি,আঁধার বেঁচে আছে ক্যাথি!’
ক্যারির কথা শুনে রাতুল এবার স্বাভাবিক হয়।
–‘চলুন না আমাদের আঁধারের কাছে নিয়ে রাতুল প্লিজ!’
রাতুলের হাত ধরে আবদারের সহিত কথাটা বলে ক্যারি।রাতুলের মন বলে আবদারটা তোর রাখা উচিত রাতুল নিয়ে চল।তাই রাতুল ও রাজি হয়ে যায়!রাতুলকে উদ্দেশ্য করে এবার রিহান বলে,,,,
–‘কিছু মনে করো না বাবা,আসলে ওরা বাংলাদেশের কালচার তেমন জানে না তো!’
–‘ইটস ওকে আঙ্কেল আমি কিছু মনে করিনি, আর ও ছোট মানুষ!’
রাতুলের কথা শুনে ক্ষেপে যায় ক্যারি,,,,,
–‘হোয়াট ডু ইউ মিন, আপনার কি আমায় চাইল্ড মনে হয়!’ আমি ভার্সিটিতে পড়ি বুঝলেন।
ক্যারির কথায় এবার রিহান ও ফ্লোরা হেঁসে ফেলেন। রাতুল মাথা নাড়ায় মানে হ্যা সে বুঝেছে।তবে মেয়েটাকে তার বেশ লেগেছে।
!
!
তাদের ওয়েটিং রুমে বসিয়ে রেখে রাতুল গেছে আঁধারকে ডাকতে,সে নাকি এখন কোন জানি মিটিং এ আছে! এরই মধ্যে একটা ছোট বাচ্চা মেয়েকে দেখতে পায় ক্যাথি, ক্যারির দিকে দূর থেকে তাকিয়ে আছে বাচ্চাটি।
–‘ক্যারি!’
–‘হুম?’
কিছু একটা ভাবতে ভাবতেই উত্তর দেয় ক্যারি।
–‘বাচ্চাটা কি কিউট দেখ!’
–‘কোন বাচ্চা?’
ভ্রুকুঁচকে বলে ক্যারি।
–‘তুই আঁধারের মতো ভ্রুকুঁচকে তাকাবি না তো!’
ক্যাথির কথা শুনে ক্যারি আবার ভ্রুকুঁচকে তাকায়!ফ্লোরা ও রিহান হেঁসে উঠেন।এরইমধ্যে বাচ্চাটি গুটি গুটি পায়ে তাদের দিকে এগিয়ে এসে বলে,,,,
–‘তোমলা তালা?’
–‘হোয়াট?’
একসাথে চেঁচিয়ে উঠে সকলে।বাচ্চাটি বড় বড় চোখে সকলকে একবার দেখে নেয়, তার পর আবার ঠোঁট উল্টে বলে উঠে,,,
–‘তোমলা তালা?’
–‘হোয়াট আর ইউ সেয়িং ডিয়ার?’
হাঁটু গেড়ে বসে বাচ্চাটির গালে হাত দিয়ে বলে ক্যারি।বাচ্চাটা দূরে সরে গিয়ে বলে,,,
–‘দোন্ট তাচ!’
ক্যারি আবার ভ্রুকুঁচকে তাকায়,সে বাচ্চাটির কথার মানে বুঝতে পারছে না!
এরইমধ্যে একটা ছেলে এসে বলে,,,,
–‘আয়রু তুই এখানে আর আমি তোকে কোথায় কোথায় খুঁজছি!’
মেয়েটি দৌড়ে গিয়ে কোলে উঠে যায় ছেলেটির।তার আধো আধো গলায় বলে উঠে,,,
–‘বাবা ওলা তে?’
বাচ্চাটির কথায় ছেলেটি এবার ক্যারিদের দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হেসে বলে,,,
–‘আসলেই তো কে আপনারা?’
রিহান ফারুকি এগিয়ে এসে বলে,,,
–‘আমি রিহান আর উনি আমার স্ত্রী আর ওরা আমার মেয়ে!’ তুমি কি বাচ্চাটার বাবা?’
–‘জ্বি আঙ্কেল, আর আমি তৈহিদুল আদর চৌধুরী এখানের সেকেন্ড বস মানে তারেক চৌধুরীর ছোট ছেলে।’ আর এই যে আমার পিচ্চি মা, তাশফিহা আয়রা চৌধুরী। মাম্মা সালাম দাও দাদুভাইকে।
–‘আততালামু আলাইতুম!’
আয়রার কথা শুনে হেঁসে ফেলে আদর!
–‘আসলে আঙ্কেল ছোট বাচ্চা তো তাই হয়তো কথাগুলো বুঝতে পারেনি তবে সালাম দিয়েছে আপনাকে।’
রিহান ফারুকি এবার হেঁসেই সালাম নেন,,,
–‘ওয়ালাইকুম আসসালাম পিচ্চি!’
–‘বা বা দাদু পঁতা আমাতে পিত্তি বলছে!’
আদর হেঁসে উঠে তার মেয়ের কথা শুনে আবার।ক্যারি এগিয়ে এসে বলে,,,,
–‘আমি ক্যারি ডিয়ার,তুমি অনেক কিউট আর সুন্দর দেখতে!’
আয়রা কি বুঝলো কে জানে,তবে সে লাফিয়ে ক্যারির কোলে গিয়ে তার গালে হাত বুলিয়ে বললো,,,
–‘তুমি ও অনেত তুন্দল একতম আলুর মতো!’
–‘তাই তবে এই আলুটা কে?’
–‘আমাল মাম- ম্মাম!’
খুশি হয়ে বলে আয়রা।ক্যারি ভাবনায় পড়ে যায় আসলে আলু বলতে সে বুঝতে পারছে না আসলে কে?ক্যাথি এবার এগিয়ে এসে বলে,,,,
–‘আর আমি?’ আমি কি সুন্দর না?’
আয়রা ভ্রুকুঁচকে তাকায়,এতোটুকু মেয়েকে ভ্রুকুঁচকে তাকাতে দেখে অবাক হয় ক্যাথি ও ক্যারি।
–‘তোমলা তি তুইনস?’ আমাল বাইয়াদেল মতো?
ভাবুক হয়ে বলে আয়রা।ক্যাথি ও ক্যারি বুঝতে না পেরে আদরের দিকে তাকায়!আদর ওদের দৃষ্টির অর্থ বুঝতে পেরে হেঁসেই বলে,,,
–‘ও বললো তোমরা কি টুইনস?’ ওর ভাইয়াদের মতো। আসলে আমার দুই ছেলে ও টুইনস তো, আর তোমাদের মতো ওদের ও চেহারা অনেকটা সেম সেম তাই।
ক্যাথি ও ক্যারি হেঁসে ফেলে। এতোটুকু বাচ্চা কি না ওদের জিজ্ঞেস করছে ওরা টুইনস কি না।
–‘হুম আমরা তুইনস ডিয়ার!’
ক্যাথি আয়রার মতো করই বলে উঠে কথাটি।আয়রা আবার ভ্রুকুঁচকে তাকায়।এরইমধ্যে ক্যারি আদরকে বলে,,,
–‘আফনান ও আদনান কেমন আছে আদর ভাইয়া?’ আর আলিশা আপু?
আদর অবাক হয়।
–‘তোমরা ওদের কিভাবে চেঁনো?
–‘আমরা আপনাদের সবাইকে চিনি শুধু এই পিচ্চিকে বাদে।’
আয়রাকে দেখিয়ে বলে ক্যাথি।আদর অবাক হয়ে তাকায়।
–‘আগে বলুন তারপর বলবো!’
–‘ভালো আছে সবাই।’
ক্যাথি যেনো শান্তি পায়,কিন্তু আবার কৌতুহল না থামিয়ে বলেই ফেলে,,,,
–‘আর আপনার আরো?’
চমকে উঠে আদর।এই মেয়ে তার আর আরোর কথা কিভাবে জানলো?
–‘কে আপনারা?’ আর এতো কিছু কি করে জানেন?’
একটা গম্ভীর কন্ঠ শুনতে পেয়ে সকলে চমকে যায়। দরজার দিকে তাকাতেই আঁধারকে দেখতে পায় ক্যারি, আর কোনো কিছুর পরোয়া না করেই ছুটে গিয়ে জড়িয়ে ধরে।
#চলবে?
#নীল_ডায়েরির_সেই_মেয়েটি
#আরদ্ধিতা_রুহি
#পর্বঃ৪৫
🍁
আঁধার এক হাত দিয়ে সামনের মেয়েটিকে ছাড়িয়ে ভ্রুকুঁচকে তাকায় তার দিকে।ক্যারি এতোটাই এক্সাইটেড যে,সামনের এই অচেনা ছেলেটাকে নিজের পরিচয় ও দিতে ভুলে গেছে!
–‘হু আর ইউ?’
গম্ভীর ও শক্ত কন্ঠ আঁধারের।ক্যারি হাঁ করে তাকিয়ে আছে! ক্যাথি ব্যাপারটা বুঝতে পারে যে আঁধার আসলে আরোহীর লেখা গল্পের মতোই!
তাই তো ক্যারির মতো একটা সুন্দর রমনীকে সযত্নে সরিয়ে দিলো!
–‘আমি ক্যাথি আর ও আমার টুইনস সিস্টার ক্যারি!’ সরি ফর দ্যাট মিস্টার আঁধার, আমার বোন একটু বেশিই এক্সাইটেড হয়ে গেছে!’
এগিয়ে এসে কথাটা বলে ক্যাথি,আঁধার এক পলক ভ্রুকুঁচকে তাকায় সামনে দাঁড়িয়ে থাকা রমনীটির দিকে তার পর অপর পাশে দাঁড়ানো রমনীটিকে একবার দেখে নেয়।
ছোট খাটো দুটো ডলের মতো তাদের চেহারা,দেখতে বিদেশির মতো হলেও এতোটা স্পষ্ট ভাবে বাংলা বলা দেখে একটু বেশিই অবাক হয় আঁধার!
রিহান ফারুকি এগিয়ে এসে হাত বাড়িয়ে বলেন এবার,,,,
–‘হেই ইয়াং ম্যান,ইউ আর তাশরিফ আঁধার চৌধুরী রাইট!’
আঁধার ভদ্রতা সূচক হাত মিলিয়ে বলে,,,
–‘জ্বি আঙ্কেল আমিই তাশরিফ আঁধার!’ বাট আপনারা কারা!
এরপর রিহান ফারুকি নিজের পরিচয় দিয়ে, একে একে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেন!
এরপর আঁধার তাদের তার কেবিনে নিয়ে যায় কথা বলার জন্য! আয়রা আদরের কোল থেকে নেমে গিয়ে আঁধারের পায়ের কাছে বসে পড়ে!সকলে অবাক হয়, তবে আঁধার আর আদর বাদে।
–‘কি হয়েছে আমার প্রিন্সেসের?’
আয়রার কাছে হাঁটু গেড়ে বসে বলে আঁধার! আয়রা তার ছোট ছোট হাত দিয়ে আঁধারের গালে হাত ছুঁয়ে দিয়ে আধো আধো গলায় বলে,,,
–‘পাপা তোমাল তোলে উঠবো!’
আঁধার তার মেয়ের কথা শুনে মুচকি হেসে কোলে তুলে নেয় তাকে। আয়রা এবার তার পাপার বুকের সাথে লেপ্টে জড়িয়ে ধরে!
–‘কি হয়েছে আমার প্রিন্সেসের?’ মন খারাপ কেনো?
মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলে আঁধার। মায়া মায়া চোখে তাকায় আয়রা তার পাপার দিকে,আর ছোট কন্ঠে বলে,,,
–‘আয়লা মিস মাম্মাম!’
আঁধার হতাশ হয়,এখন কি বলবে সে?
–‘ওর মা কোথায়?’
ক্যারি কৌতুহল বসত বলে,,,
সকলে এক পলক তার দিকে তাকায়!এরইমধ্যে দু’টো বাচ্চা দৌড়ে ভেতরো ঢুকে যায়।বাচ্চাগুলোর বয়স চার কি পাঁচ হবে হয়তো!
সকলে কৌতূহল নিয়ে তাদের দিকে যে তাকিয়ে আছে সেদিকে তাদের খেয়াল নেই তারা চেঁচিয়ে বলে উঠে,,,,
–‘পাপা!’
আদর ভ্রুকুঁচকে বলে,,,,
–‘তোমরা?’
–‘মাম্মামের সাথে এসেছি!’
লাফিয়ে বলে উঠে তাহশিফ ও তাহমিদ।এরইমধ্যে হতদন্তর করে আলিশা ঢুকেই চেঁচিয়ে উঠে,,,,
–‘এই তোরা এতো বিচ্ছু কেনো বল তো?’ এভাবে কেউ দৌড়ে আসে,আমার জান না নিয়ে তোরা শান্তি পাবি না জানি তো!’
তাহশিফ ও তাহমিদ দাঁত বের করে হেঁসে দেয়।আদর নিজেও দাঁত কেলিয়ে তাকায়!
আঁধার ঠোঁট চেপে হাঁসে,আর আয়রা মাথা তুলে উঁকি দিয়ে দেখে আবার আঁধারের সাথে লেপ্টে যায়। রাতুল হাঁ করে তাকিয়ে আছে, আর ক্যারি ও ক্যাথি কি যেনো ভাবছে।
–‘আলিশা আপু!’
ক্যারি ও ক্যাথির কিছু একটা মনে পড়তেই চেঁচিয়ে বলে উঠে তারা।আলিশা চমকে যায়, অবাক হয়ে তাকায় তার সম্মুখে চমৎকার হেঁসে দাঁড়িয়ে থাকা দুই বিদেশি রমনীদের দিকে।
তাকে দেখে বুঝায় যাচ্ছে তাদের সে চিনতে পারছে না।আদর এবার এগিয়ে গিয়ে আলিশার কাঁধে হাত রেখে বলে,,,,
–‘ওদের তুমি চিনো?’
দু’দিকে মাথা নাড়ায় আলিশা,যার অর্থ না।আদর ভ্রুকুঁচকে তাকায় আঁধারের দিকে,আঁধার তীক্ষ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তারই দিকে।
হতাশ নিশ্বাস ছাড়ে আদর, এরপর দুই ভাই একসাথে তীক্ষ্ণতার সাথে তাকায় রাতুলের দিকে।রাতুল তাদের দৃষ্টি দেখে ভড়কে গিয়ে বলে,,,,
–‘আরে আমি নিজেও ওদের চিনি না ভাই, ওরা ক্যালিফোর্নিয়া থেকে আঁধার ও আরোর সাথে দেখা করতে এসেছে।’
আঁধারের এক ভ্রু এবার আপনা আপনি কুঁচকে যায়! রিহান ফারুকি ও ফ্লোরা ফারুকি একে অপরকে কি যেনো ইশারা করেন।তারপর ফ্লোরা আমতা আমতা করে বলেন,,,,
–‘আমাদের মেয়েরা তোমাদের সাথে দেখা করার জন্য জেদ করছিলো বেটা,তবে তারা হয়তো আরোহীকে ছাড়া কিছু বলবে না!’
–‘হুম,আরোহী মা কোথায় ওকে ডাকো একটু!’
রিহান ফারুকির কথা শুনে আদর,আলিশা ও রাতুল তাকায় এবার আঁধারের দিকে।আঁধার হতাশ হয়ে বলে,,,
–‘সে এখন নেই আঙ্কেল, তবে আপনারা আমাদের বলতে পারেন!’
–‘নেই মানে?’
ক্যাথি একটু জোড়েই বলে উঠে যার কারণে সকলে তার দিকে তাকায়।ক্যাথি আমতা আমতা করে বলে,,,
–‘না আসলে আমাদের ওনার সাথে একটু দরকার আছে আর কি!’
–‘আচ্ছা আয়রা কি আপনার আর আরুর মেয়ে?’
ক্যারি ভাবুক হয়ে বলে।আঁধার গম্ভীর কন্ঠে বলে,,,
–‘হুম!’
–‘তাহলে মিস্টার আদর বললেন যে ওনার মেয়ে?’ আর আয়রা তো ওনাকেই বাবা বলে ডাকলো?তবে তার ফেইস আপনার সাথে অনেকটা মিলে যায়,তাকে যে কেউ দেখলে বলবে সে আপনার মেয়ে।
ক্যারির কথায় আলিশা এগিয়ে এসে বলে,,,
–‘ওর জন্মদাতা বাবা মা আরো ও ভাইয়া হলেও আমরা ওর আর এক বাবা মা তাই আমাদের বাবাই মা বলে ডাকে।’ আর বাপ কা বেটি বুঝোই তো তাই আমাদের আয়রু সোনা পাপার কপি,তাই না আয়রু?
আয়রাকে আঁধারের থেকে নিতে নিতেই বলে আলিশা। আয়রা এবার খুশি হয়ে আলিশাকে জড়িয়ে ধরে বলে,,,
–‘আতা মা!’
–‘বলো সোনা মা!’
আয়রার মাথার চুল ঠিক করতে করতে বলে আলিশা।
–‘মাম্মাম!’
আলিশা হেঁসেই আয়রার কপালে চুমু দিয়ে বলে,,,
–‘আয়রু সোনা কি মাম্মামকে মিস করছে?’
–‘আয়লা মিস মাম্মা!’
ঠোঁট উল্টে বলে আয়রা।
–‘এই তো মাম্মা চলে এসেছে সোনা!’
একটা সুন্দর ও পাতলা গড়নের মেয়ে একটা ছোট ছেলের হাত ধরে ভেতরে ঢুকেতে ঢুকতে বলে।ছেলেটির বয়স হয়তো তিন কি চার হবে, আয়রার থেকে একটু বড়।
আয়রা আলিশার কোল থেকে লাফিয়ে মেয়েটির দিকে দু’হাত বাড়িয়ে দেয়।
মেয়েটি আয়রাকে কোলে তুলে বলে,,,
–‘ওলে আমার বাচ্চাটা মাম্মাকে খুব বেশি মিস করছিলো নাকি?’
আয়রা হাসোজ্জল চেহারা নিয়ে মাথা নাড়িয়ে হ্যা বলে।ক্যারি ও ক্যাথি ভ্রুকুঁচকে একসাথে বলে,,,
–‘উনি কে?’
–‘আয়রা ওনাকে মাম্মাম বলে ডাকছে কেনো?’ আপনি কি আর একটা বিয়ে করেছেন আঁধার?
অবাক হয়ে বলে ক্যারি।
আঁধার হতভম্ব হয়ে যায়,পরমুহূর্তেই চোখ মুখ শক্ত করে তাকায় ক্যারির দিকে। আদর,আলিশা ও রাতুলে বাঁকা চোখে তাদের দিকে তাকায়।
–‘আসসালামু আলাইকুম,আমি আলিনা সিরাতুল আরোহী চৌধুরী আয়রার ওয়ান এন্ড অনলি মাম্মাম!’ আর তাশরিফ আঁধার চৌধুরীর একমাত্র বউ।
খানিকটা তীক্ষ্ণতার সাথে তাকিয়ে হেঁসে বলে আরোহী।আঁধার আরোহীকে এভাবে বলতে দেখে হেঁসে ফেলে,মেয়েটা এখনো তাকে নিয়ে জেলাস ফিল করে।
–‘আরোহী!’
চেঁচিয়ে বলে উঠে ক্যাথি ও ক্যারি।তারপর কিছু একটা ভেবেই হেঁসে ফেলে তারা।
–‘সরি সরি এক্সাইটমেন্টে ভুলেই গেছিলাম তোমায়,তবে ইফ ইউ ডোন্ট মাইন্ড, ক্যান আই হাগ ইউ?’
ক্যারির কথাটা আরোহীর কাছে ছোট বাচ্চার আবদারের মতো লাগলো,সে মাথা নাড়িয়ে সায় জানানোর সাথেই ক্যারি তাকে ও আয়রাকে একসাথে জড়িয়ে ধরলো।আর ছোট ছেলেটিকে আঁধার তার কোলে তুলে নিয়ে বলে,,,
–‘চ্যাম্প কি খবর তোমার?’ আজকে আমার ঘরওয়ালীর সাথে যে?
–‘মাম্মা পাঠিয়েছে! ‘
স্পষ্ট কন্ঠ ছেলেটির।এইটুকুনি একটা ছেলের স্পষ্ট কন্ঠ শুনে ক্যাথি অবাক হয়।
–‘কেনো?’
ভ্রুকুঁচকে বলে আঁধার।
–‘বলতে বারণ আছে!’
ছেলেটির কথা শুনে আঁধার চোখ মুখ কুঁচকে বলে,,,
–‘ওখেই।’
আর কোনো কথা হয় না তাদের মাঝে।
আদর, আলিশা ভ্রুকুঁচকে তাকিয়ে আছে অচেনা বিদেশি মানুষদের দিকে কিন্তু ক্যারির দিকে তাকিয়ে রাতুল কি যেনো বির বির করছিলো।
পাশেই আদর দাঁড়িয়ে ছিলো,রাতুলকে বিরবির করতে দেখে আর একটু গাঁ ঘেসে দাঁড়িয়ে সে শুনার চেষ্টা করছে আসলে রাতুল কি বলছে?
তবে সে কিছুই শুনতে না পেরে হতাশ হয়,রাতুল আদরকে তার গাঁ ঘেসে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে একটু সরে গিয়ে ফিসফিস করে বলে,,,,
–‘আলিশা ভেবে ভুল করে নিশ্চয়ই আমার সাথে ঘেঁসা ঘেসি করছিলি!’বলবো নাকি তাকে?
আদর হতভম্ব হয়ে যায়, চোখ মুখ কুঁচকে সেও রাতুলের মতো ফিসফিস করে বলে,,,
–‘আর তুমি যে ক্যারি নামের মেয়েটাকে দেখে বিরবির করছিলে সেটা বলবো নাকি তাকে!’ বুড়ো হয়ে ছোট বাচ্চার দিকে নজর দিচ্ছো,নট ফেয়ার ভাইয়া!
রাতুল শুকনো ঢোক গিলে সরে দাঁড়ায় যেনো আদর তাকে খোঁচাতে না পারে। আদর রাতুলের দিকে বাঁকা হেসে নিজেও অন্যদিকে মন দেয়।
ক্যারি আরোহীকে ছেড়ে দিয়ে বলে,,,,
–‘তুমি বাস্তবে আরও কয়েকগুন বেশিই সুন্দরী আঁধারের আরু!’
–‘বাস্তবে মানে?’
আরোহীর প্রশ্ন শুনে ক্যারি এবার শুরু থেকে সবটা তাকে বলতে শুরু করে।সব শুনে সবাই হতভম্ব হয়ে যায়, তবে আরোহী ও আঁধারের মুখে বিষাদে ছায়া দেখা যায়।
আয়রাকে নিজের সাথে আর একটু চেপে ধরে আরোহী।আয়রা তার মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে আঙ্গুল দিয়ে ক্যারি ও ক্যাথিকে দেখিয়ে বলে,,,
–‘আলু, ওলা তালা?’
–‘ওটা আলু না আরু হবে মা,আর ওরা তোমার আন্টি হয়।’
আরোহী মেয়ের গাল টেনে দিয়ে বলে।আয়রা মায়ের দিকে চোখ মুখ কুঁচকে তাকায়।তার গাল টেনে দেওয়া জিনিসটা অনেক অপছন্দের আরোহী হেঁসে ফেলে!
আঁধার এগিয়ে এসে বলে,,,
–‘সেদিন কি হয়েছিলো জানতে চাও ক্যারি?’
–‘জানার জন্যই তো এতো দূর এসেছি আঁধার, তবে তোমাদের এভাবে দেখে মনের ভিতর অনেকটা শান্তি পেয়েছি যেটা বলে প্রকাশ করা যাবে না!’
হাসোজ্জল চেহারা নিয়ে বলে ক্যারি।আরোহী ও আঁধার উভয়ে তাকায় ক্যারি ও ক্যাথি নামক রমনী দুটির দিকে,মেয়ে দু’টির চোখের কোণে স্পষ্ট পানির আভাস দেখা যাচ্ছে।
আরোহী এবার নিজে থেকে এগিয়ে গিয়ে ক্যারি ও ক্যাথিকে একসাথে জড়িয়ে ধরে বলে,,,
–‘তোমরা অনেক ভালো ক্যারি ও ক্যাথি!’ অন্যদের কষ্টে যারা কেঁদে উঠে তারা নিঃসন্দেহ অনেক ভালো মনের মানুষ। আমার লাইফে দেখা তোমরা প্রথম অচেনা মানুষ,যারা না দেখেই আমাদের এতোটা আপন ভেবে নিয়েছে।
–‘আর আমাদের লাইফে দেখা সেরা ভালো মনের মানুষ তুমি ও সেরা প্রেমিক পুরুষ আঁধার ও আদর ভাইয়া!’ আমরা তোমাদের ভালোবেসে ফেলেছি আরো,না দেখে ভালোবাসে ফেলেছি।
ক্যারির কথায় এবার ক্যাথি সায় দিয়ে বলে,,,
–‘আমরা অনেক ভালোবাসি তোমাদের আরো,তবে আমরা তোমাদের এক্সিডেন্টের দিন থেকে বাকি ঘটনাগুলো শুনতে চাই প্লিজ!’
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে আরোহী বলে,,,
–‘আচ্ছা বলবো তবে এখানে নয় বাসায় গিয়ে,যাবে তো আমাদের বাসায় তোমরা আমাদের সাথে?’
ক্যারি ও ক্যাথি হেঁসে আবার একসাথে বলে,,,,
–‘ইয়েস ডিয়ার হোয়াই নট!’
ফ্লোরা ও রিহান মনে মবে অনেক শান্তি পায়,তাদের মেয়েদের এতো দূর আসা সার্থক হয়েছে। তার মেয়েরা হাসি মুখে থাকতে পারবে এবার।
#চলবে?