নীল ডায়েরির সেই মেয়েটি পর্ব-৩৫+৩৬

0
616

#নীল_ডায়েরির_সেই_মেয়েটি
#আরদ্ধিতা_রুহি
#পর্বঃ৩৫

🍁

গোধুলির বিকেলে নীল শাড়ি পড়ে দাঁড়িয়ে আছে এক রমনী, ফাঁকা মাঠে সে ছাড়া হাতে গোনা কয়েকজনের অস্তিত্ব এতোক্ষণে দেখা না গেলেও এখন দেখা যাচ্ছে!

তবে সকলেই জোড়া জোড়া,হয়তো কেউ বয়ফ্রেন্ডের সাথে এসেছে নয়তো বা কেউ স্বামী কিংবা বন্ধু বান্ধবের সাথে এসেছে! পার্কের ছোট ছোট বসার স্থান গুলোর একটিতে বসে বার বার হাত ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছে রমনীটি!

চোখ মুখে বিরক্তির ছাপ স্পষ্ট তার! এরইমধ্যে কোথা থেকে একজন দৌড়ে এসে রমনীটির সামনে দাঁড়ায়, তবে রমনীটি অভিমানে মুখ ঘুরিয়ে নেয়। আঁধার মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে ধপ করে আরোহীর পাশে বসে পড়ে।

আরোহী অভিমানে আবার অন্যদিকে ফিরে তাকায়।আঁধার নিজেকে স্বাভাবিক করে আরোহীর শাড়ির আঁচল টেনে নিয়ে নিজের মুখ ও গলার ঘামগুলো মুছে নেয়।

আরোহী ভ্রুকুঁচকে একবার তাকিয়ে শাড়ির আঁচল টেনে নিজের কাছে নিয়ে নেয়।আঁধার অবাক হয় না,আরোহী যে মুখ ফুলিয়ে রেখেছে তার কারণেই এমন ব্যাবহার করছে!

–‘সরি আরুপাখি!’

দু’হাতে কান ধরে মুখটা অসহায় করে কথাটা বলে আঁধার।

আঁধারের মুখ দেখে আরোহীর হাসি পেলেও হাসে না আরোহী, হাঁসি চেপে মুখটা অন্যদিকে করে বসে পড়ে।

–‘ও আরু, আরু!’আরে শুনো না!

আঁধারের আদরের ডাক শুনে আরোহীর পুরো শরীর ঝাঁকুনি দিয়ে উঠে! আঁধারের ডাকে কিছু একটা ছিলো যেটা শুনে আরোহীর ভেতরের অভিমান সহ সবকিছু গলে যায়।নিজের অজান্তেই বলে উঠে,,,

–‘হুম!’

–‘আসলে রাস্তায় অনেক জ্যাম ছিলো তাই এতো লেট হলো,জানোই তো ঢাকা শহরের জ্যাম!’

বলেই হেলানি দিয়ে আরোহীর গাঁ ঘেসে বসে পড়ে।

–‘আচ্ছা,তবে আপনার পাঞ্জাবি কোথায়?’

আরোহীর কথা শুনে আঁধার শুকনো ঢোক গিলে নেয়, আরোহী সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকায়।আঁধার কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না,আরোহী এবার হতাশার দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে,,,

–‘এই নেন আপনার পাঞ্জাবি, আমি জানতাম আপনি ভুলেই যাবেন! ‘

একটা প্যাকেট এগিয়ে দিয়ে বলে আরোহী। আঁধার মাথা চুলকিয়ে বলে,,,

–‘ব্যাস্ততার কারণে মনে ছিলো না তো,আচ্ছা বাদ দাও চলো চলো লেট হয়ে যাচ্ছে তো!’ আমি গাড়িতে চেঞ্জ করে নিবো।

আরোহী গোমড়া মুখে খানিকটা হাসি ফুঁটিয়ে সম্মতি জানায়।আঁধার আরোহীর একটা হাত শক্ত করে ধরে এগিয়ে যায়।

–‘লাগিয়ে দাও!’

গাড়িতে বসেই শার্ট চেঞ্জ করে আরোহীকে বোতাম লাগানোর উদ্দেশ্যে কথাটা বলে আঁধার। আরোহী মুচকি হেসে এগিয়ে যায়।

–‘যদি কখনো আমি না থাকি তখন কে লাগিয়ে দিবে শার্টের বোতাম?’

আরোহীর কথা শুনে আঁধার ভ্রুকুঁচকে বলে,,,

–‘কোথায় যাবা?’

–‘বেঁচে যদি না থাকি!’

–‘তাহলে মরে যাবো!’

আঁধারের কথা শেষ হওয়ার আগেই মুখে হাত দিয়ে চেপে ধরে আরোহী। আঁধার আরোহী চেপে ধরা হাতেই চুমু দেয়,ফঁট করে হাত সরিয়ে নেয় আরোহী।

আরোহীর দুগালে নিজের দুই হাত দ্বারা আবদ্ধ করে আবেগি গলায় বলে উঠে আঁধার,,,,

–‘আরু আমি তোমার সাথে হাজার বছর বাঁচতে চাই না,যুগ যুগ বাঁচতে চাই না, তবে আমি তোমার সাথে আমার সুখ ও দুঃখের দিনগুলোতে বাঁচতে চাই। তোমায় নিয়ে স্বপ্নের শহরে যেতে চাই না তবে,নিজের এই শহরেই তোমায় নিয়ে স্বপ্নের দেশের মতো বাঁচতে চাই। আমার ভালোবাসায় তোমায় এমন ভাবে রাঙ্গাতে চাই।যেনো আমায় ছাড়া তোমার যেমন বেঁচে থাকতেও কষ্ট হয়,তেমনি আমায় ছাড়া যেনো তোমার মরতে ও কষ্ট হয়। আমি আমার ভাগের আয়ুগুলো দিয়ে তোমার দীর্ঘায়ু কামনা করতে চাই না রবের কাছে তবে আমি আমার ঐ রবের কাছেই তোমার সাথে বাঁচার জন্য দোয়া কামনা করি আরু।আমি তোমার সাথে বাঁচতে চাই,তুমিহীন আমি মরেও শান্তি পাবো না আরু।আরোহী হীন এই আঁধারের অস্তিত্ব কামনা করা ও যদি বোকামি হয়ে থাকে তাহলে আমি সেই বোকা আঁধারই থাকতে চাই আরুপাখি তবুও তুমিহীন আমার অস্তিত্ব ও অনুভব করতে চাই না!কখনোই না।

আঁধারের কথা শুনে আরোহীর চোখ দিয়ে দু’ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়ে! শক্ত করে আঁধারকে জড়িয়ে ধরে আরোহী, আঁধার নিজেও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আরোহীকে।

আরোহী হঠাৎ করেই কাঁধ ভেজা অনুভব করে,অবাক হয়ে সরে আসতে চেষ্টা করে কিন্তু আঁধার হাতের বাঁধন আরও শক্ত করে। আরোহী অস্ফুট স্বরে বলে,,,,

–‘কাঁ-দ-ছে-ন কে-কেনো আঁ-ধার?’

আরোহীর কথা স্পষ্ট বোঝা না গেলেও আঁধার একটু হলেও বুঝতে পারে তাই চোখের পানি মুছে নিয়ে বলে,,,

–‘কই না তো!’

–‘আমি…’

–‘হুস, আর কোনো কথা না!’

আরোহীকে ছেড়ে দিয়ে নিজের যায়গায় ঠিকঠাক মতো বসেই বলে আঁধার।

–‘কিন্তু… ‘

–‘হুস বললাম না আর একটা ও কথা না!’

একটু ঝুঁকে আরোহীর মুখে ফুঁ দিয়েই সরে গিয়ে গাড়ি স্টার্ট করে আঁধার। আরোহী না চাইতেও চুপ হয়ে যায়।

!
!

–‘আপনাকে এতো সহজে আমার বাবা মেনে নিলো কিভাবে?’

ওয়াশরুম থেকে বের হওয়ার সাথে সাথেই রাহির এমন প্রশ্ন শুনে অবাক হওয়ার কথা হলেও অবাক হয় না শিহাব। ঠোঁটে রহস্যময় হাসি এনে বলে শিহাব,,,,

–‘আমার মতো এমন একটা হ্যান্ডসাম চাম্রিং বয়কে দেখলে যে কোনো মেয়ের মাথা নষ্ট হবে, আর সেখানে তো মেয়ের বাবা?’ তোমার বাবা ভাবছেন আমার মতো একটা শান্ত শিষ্ট ভদ্র ছেলেকে তার মেয়ের জামাই হিসেবে পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার।তাই আর কোনো কাহিনি করলেন না বুঝলে!

রাহি হা করে তাকায় শিহাবের দিকে,মানুষ এমনও হয়? নিজের প্রশংসা নিজেই করছে আর গর্বে আকাশে উড়া উড়ি করছে?

রাহির ভাবনার মাঝেই শিহাব রাহিকে ঘুরিয়ে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলে,,,

–‘জান চলো বাসর করে ফেলি!’

রাহির হঠাৎ হেঁচকি উঠে যায়,শিহাব বাঁকা হাসি দিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বলে,,,

–‘খুব শখ না তোমার অন্যজনের বউ হওয়ার,অন্য ছেলের সামনে সেজেগুজে চেহারা পেট পিঠ দেখানোর জন্য বসে থাকো শাস্তি তো পেতেই হবে তাই না!’

রাহির কলিজা কেঁপে উঠে, শিহাব সম্পর্কে তার এই কয়েকদিনে একটু হলেও ধারণা হয়ে গেছে তাই মনে মনে ভয় পাচ্ছে সে।

গলায় শক্ত কামড়ের কারণে চোখ মুখ শক্ত করে চেঁচিয়ে উঠে রাহি।শিহাব মুখ চেপে ধরে রাহির,পরমুহূর্তেই কামড়ের জায়গায় ছোট ছোট চুমুর আভাস পেয়ে শরীর ঠান্ডা হয়ে যায় রাহির।

#চলবে?

#নীল_ডায়েরির_সেই_মেয়েটি
#আরদ্ধিতা_রুহি
#পর্বঃ৩৬

🍁

স্নিগ্ধ সকালে ছাঁদের রেলিং ঘেঁসে দাঁড়িয়ে আছে আরোহী!দৃষ্টি তার বরাবরের মতোই দূরে অজানা কোথাও একটা,তবে কোথায় সেটা হয়তো আরোহীর ও অজানা!

কিছুক্ষণ পরে দুটি পায়ের শব্দ এসে তারই পাশে স্থান দখল করলো,কিন্তু আরোহী নির্বিকার! গলা খেঁকারি দিয়ে দৃষ্টি আকর্ষন করার চেষ্টা করলো আদর, সফল ও হলো বটে!

আরোহী ঘুরে তাকিয়েই একটা স্নিগ্ধতার হাসি দিয়ে আগের মতোই অজানায় দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো।আদরের বুকে চিন চিন একটা ব্যাথা শুরু হলো।একসময় এই হাসি দেখেই সে ঘায়েল হয়ে যেতো, কিন্তু এখন আর হয় না!

হলেও সেটা পাপ হবে তার জন্য কারণ আরো তো এখন তারই বড় ভাইয়ের বউ।কষ্ট হয় না এখন আর আদরের কারণ আরোহী তার ভাগ্যে ছিলো না।

তবে মাঝে মাঝে আরোহীকে তার ধন্যবাদ দিতে ইচ্ছে হয়, আজকে আরোহীর জন্যই হয়তো সে আলিশাকে পেয়েছে। মেয়েটা আগে যেমন ছিলো এখন শুধু মাত্র তার জন্যই নিজেকে বদলে নিয়েছে।

তবুও আরোহীকে সে ভালোবাসতো তাই মনের মধ্যে একটু হলেও ব্যাথা হয়।এইসব ভেবেই আদর চোখের কোণে জমা পানিটুকু নিঃশব্দে মুছে নিলো,সে চায় না তার ব্যাথাটা কাউকে দেখাতে।

পৃথিবীর কাউকেই তার মনের কথা জানাতে চায় না।থাক না কিছু কথা গোপনেই, থাক না কিছু ভালোবাসা দূর থেকেই।তবে সেটা শুধু মাত্র আরোহীর ক্ষেত্রেই আলিশার ক্ষেত্রে না।ভেবেই হেসে ফেলে সে!

সে মনে প্রাণে চায় আলিশার সাথে সুখে থাকতে তবে ভালোবাসা জিনিসটা অদ্ভুত! এই তো ধিরে ধিরে আলিশাও তার মনে একটা জায়গা করে নিচ্ছে। সেটাকে কি ভালোবাসা বলে?

হয়তো, আলিশাকে এক পলক না দেখলে তার মনে ব্যাথা শুরু হয়ে যায়,সে চায় তার সবটুকু ভালোবাসা আলিশাকে উজাড় করে দিতে, কিন্তু তবুও আরোহীর প্রতি তার মনে একটা কিছু রয়েই গেছে।

মাঝে মাঝে মনে হয় সে কি আলিশাকে সবটুকু দিয়ে ভালোবাসতে পারবে? মন থেকে কি আদোও ভালোবাসতে পেরেছে সে, হু পেরছে।

আলিশা মেয়েটা চমৎকার, হয়তো আরোহীর মতো না তবুও তাকে ভালো না বেশে থাকা কি আদোও যায়? উহু যায় না।আদর ও হয়তো পারছে না!

–‘কিছু বলবে ভাইয়া!’

নিরবতা ভেঙে আরোহী নিজে থেকেই বলে উঠে।

আদর চমকে তাকায় আরোহী দিকে,আরোহীকে নিজের দিকে তাকাতে দেখে মিষ্টি হেসে বলে,,,,

–‘এসেছিলাম একা কিছু সময় কাটাতে তবে তোমায় একা একা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে মনে হলো দু’জন মিলে আড্ডা দেওয়া যাক!’

আদরের কথা শুনে আরোহী মাথা নাড়ায়! আদর এবার খুশি হয়ে যায়।

–‘ভাইয়া কোথায়?’ এখনো উঠে নি?

–‘না!’ তুমি হঠাৎ এখানে,আপু কোথায়?

–‘আর বলো না তোমার বোন সারারাত আমায় জ্বালিয়ে এখন শান্তি মতো একা একায় ঘুমাচ্ছে!’

আদরের কথা শুনে আরোহী ভ্রুকুঁচকে তাকায়!আদর জিহ্বায় কামড় দিয়ে বলে,,,

–‘আরে আরো তুমি যেটা ভাবছো আসলে সেটা নয়, রাতে তোমার বোন আমায় দিয়ে তিনবার বিরিয়ানি রান্না করিয়েছে! ‘ মাঝ রাতে তার বিরিয়ানি খেতে ইচ্ছে করছে নাকি,তাই কি আর করার।

আদরের কথা শুনে এবার শব্দ করে হেসে উঠে আরোহী। আদর নিজেও হাসে।

–‘নিশ্চয়ই আগে কখনো রান্না করেননি তাই এতোবার রান্না করতে হয়েছে!’

–‘আসলে!’

আদরকে মাথা চুলকাতে দেখে আবার হেঁসে ফেলে আরোহী, আদর আড় চোখে একবার তাকিয়ে দেখে তবে সাথে সাথেই চোখ ফিরিয়ে নেয়।

!
!

সোহেলের বুকে গুটিশুটি মেরে ঘুমিয়ে আছে নীলিমা!সোহেল মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে আছে তার একমাত্র বউ ও ভালোবাসার মানুষটির দিকে।

নড়েচড়ে উঠে নীলিমা,সোহেল তবুও দৃষ্টি সরায় না!নীলিমা চোখ খুলে তাকিয়ে সোহেলকে শান্ত ও মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে থাকতে দেখে সামান্য হাসার চেষ্টা করে বলে,,,

–‘গুড মর্নিং!’

–‘গুড মর্নিং পিচ্চির আম্মু!’

নীলিমা অবাক হয়ে যায়,

–‘মানে?’

–‘আমাদের ছোট বাচ্চা আসছে নীলি, আমি বাবা আর তুই মা হতে যাচ্ছিস!’

কথাটা বলার সাথে সাথেই সোহেলের চোখ দিয়ে এক ফোঁটা পানি বের হয়ে যায়। নীলিমা হতভম্ব হয়ে যায়,সোহেল নীলিমার কপালে একটা চুমু দিয়ে বলে,,,,

–‘কাল যে ডাক্তার টেস্ট করতে দিয়েছিলো এই জন্যই!’ আমি অনেক খুশি নীলি, অনেক খুশি।

–‘আমাদের বা-চ্চা!’

জড়িয়ে যাওয়া কন্ঠে কথাটা বলেই সোহেলকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে উঠে নীলিমা।

!
!

গালে হাত দিয়ে অসহায় লুক নিয়ে শিহাবের দিকে তাকিয়ে আছে রাহি, আর শিহাব কাউচে বসে হাসি হাসি মুখ করে তাকিয়ে আছে রাহির দিকে।

–‘আমি বাড়ি যাবো!’

রাহির কথায় এবার শিহাবের মুখ চুপসে যায়। থমথমে গলায় বলে,,,

–‘এটা কি কোনো সিনেমা হল মনে হচ্ছে যে বাড়ি যেতে চাচ্ছো?’

মুখ কুঁচকে এবার বলে রাহি,,,,

–‘আপনি এভাবে আমায় তুলে নিয়ে এসে নিজেকে কি প্রমাণ করতে চাচ্ছেন সবার কাছে প্রেমিক পুরুষ?’

–‘সেটা আবার প্রমাণ করার লাগে নাকি?’

শার্টের কলার ঠিক করে কিছুটা ভাব নিয়ে বলে শিহাব।

রাহি হতাশ হয়, হতাশ গলায় কিছুটা কান্না মিশিয়ে বলে,,,

–‘আপনি অনেক খারাপ একটা মানুষ এই সাত সকালে আমায় তুলে নিয়ে এসেছেন কেনো সেটা বলেন আগে!’

–‘রোমান্স করার জন্য, বিয়ে করলাম এতোদিন হলো কিন্তু এখনো রোমান্সটায় তো ঠিক ঠাক করতে পারলাম না!’

চোখ টিপ দিয়ে বলে শিহাব, রাহির হিচকি উঠে যায়।

–‘যাও নিচে যাও নাস্তা বানিয়ে নিয়ে এসো খিদা লাগছে, আগে নাস্তা তারপর রোমান্স।’

রাহি শুকনো মুখ করে তাকিয়ে থাকে শিহাবের দিকে।

–‘কি হলো যাও?’ সবাই জানে আমাদের বিয়ের ব্যাপারে সো তোমায় আমি যেটা বললাম করো!

–‘কথা কানে যায় না!’

রাহি এবার হুরমর করে নিচে চলে যায়। শিহাব মুচকি হেসে বিছানায় শরীর এলিয়ে দেয়।

!

!

আঁধারকে ঘুম থেকে তুলতে এসে আরোহী নিজেই হতভম্ব হয়ে আছে!সে যখন ছাঁদে গেছিলো তখন আঁধার দিব্যি ঘুমিয়ে ছিলো কিন্তু এখন তার অস্তিত্ব ও নেই ঘরে।

“গেলো কোথায় লোকটা এতো সকাল সকাল!” মনে মনে ভেবেই আরোহী সব জায়গায় খুঁজে দেখে কিন্তু আঁধারকে পায় না।

হতাশ হয়ে যখনই আরোহী সোফায় ধপ করে বসে পড়ে, ঠিক তখনি কোত্থেকে আঁধারো ধপ করে তার কোলে শুয়ে পড়ে।

–‘কোথায় ছিলেন আপনি?’

আরোহীর কথা শুনে আঁধার টুপ করে আরোহী ওষ্ঠে একটা কামড় বসিয়ে দেয়। আরোহী বিরক্ত হয় সে জিজ্ঞেস করলো কি আর লোকটা করলো কি? বিরক্ত হয়েই আরোহী আবার বলে,,,

–‘এটা কি হলো?’

–‘আবার করে দেখাবো?’

আঁধারের ঠোঁট কাটা কথা শুনে বিষম খায় আরোহী।

–‘সোহেল ফোন করেছিলো নীলি প্রেগন্যান্ট!’ ওর সাথে কথা বলতে বলতেই বাড়ির বাহিরে চলে গেছিলাম।

–‘কিহ!’

লাফিয়ে উঠে কান চেপে ধরে আঁধার।

–‘এতো জোড়ে কেউ চিৎকার করে ইডিয়েট, এমনি আমার হার্ট দূর্বল যখন তখন অ্যাটাক ফ্যাটাক হয়ে যেতে পারে!’

আঁধারের ধমক খেয়ে ও আরোহীর বিস্ময় কাটে না।

–‘এতো তাড়াতাড়ি কিভাবে? ‘

–‘চলো করে দেখাই!’

আঁধারের কথা শুনে মুখ ভেংচি দিয়ে আরোহী বলে উঠে,,,

–‘সবসময় অসভ্যের মতো কথা বলবেন না তো,আমি বলতে চেয়েছিলাম যে…’

#চলবে?

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে