#ফারহানা_হাওলাদার_প্রকৃতি
#নীলফড়িং
#পর্ব ১৯
.
.
খুব সকাল সকাল ঘুম ভাঙল পুস্পিতার ঘুম ঘুম চোখে তাকিয়ে দেখল ফাইয়াজের বুকে মাথা রেখে সে ঘুমিয়ে ছিলো। অনেক দিন বাদে এমন একটা সকাল আবার তার জীবনে ফিরে পেলো এটা ভেবে সে মুচকি হেঁসে ফাইয়াজ কে আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরল। খুব ভালো লাগছে আজ পুস্পিতার কাছে ইচ্ছে করছিল না তার আজ ঘুম থেকে উঠতে, বাট কী করবে সে ফাইয়াজের ও তো আজ যেতেই হবে। তাই মন খারাপ করে সে উঠে বসতে নিলো, বাট ফাইয়াজ এবার তাকে খুব শক্ত করে ধরে রাখল যার জন্য চেষ্টা করে ও উঠতে পারছে না পুস্পিতা।
…….আপনি উঠে গেছেন?
…….উঁহু না তো (চোখ বন্ধ রেখেই)
…….তবে উত্তর কীভাবে দিচ্ছেন?
সে চুপ করে গেল আর কোনো উত্তর না দিয়ে। যা দেখে পুস্পিতা নিজের চুল নিয়ে ফাইয়াজের নাকে, কানে সুড়সুড়ি দিতে লাগল। যার জন্য ফাইয়াজ আর চোখ বন্ধ করে থাকতে পারল না। সে পুস্পিতা কে নিয়ে ঘুরে গেল চোখ দুটো ছোট ছোট করে বলে উঠল।
…….কী ম্যাডাম আজ এত ফাজলামো কেনো করছ?
…….তবে না ঘুমিয়েও ঘুমের ভাং কেনো ধরেছেন?
……আর একটু সময় তোমার সাথে থাকব তাই সময় তো আর ধরে রাখতে পারব না তোমাকে ধরে রাখার একটু চেষ্টা শুধু মাত্র।
…….তাই? আর তো মাত্র ১০ দিন এরপর আবার সব ঠিক হয়ে যাবে ইন’শা’আল্লাহ।
…….এই ১০ দিন (লম্বা শ্বাস নিয়ে) আমার কাছে ১০ বছরের সমান ম্যাডাম।
……..তবে বরং আপনি থেকে যান এই ১০ দিন।
…….এটা যদি সম্ভব হতো তবে তোমার বলার প্রয়োজনই পড়ত না গো। (নাকের সাথে নাক ঘষে দিয়ে)
……. আচ্ছা ৮টা বেজে গেছে এখন ওঠেন নায়ত দেরি হয়ে যাবে।
…….আরে আর একটু পড়ে এত জলদি কীসের?
……ব্রেকফাস্ট ও তো বানাতে হবে?
……উঁহু আজ কিছু করতে হবে না।
……তবে না খেয়েই চলে যাবেন?
…….কে বলেছে? আমি না খেয়ে চলে গেলে তুমিও তো খাবে না। তাই এটা কী সম্ভব বলো?
……তবে?
……আজ বাহিরে খাবো। অন্যরা বানাবে আমরা খাবো। (দুজনেই হেঁসে উঠল।)
প্রায় যখন ৮:৪৫ মিনিট, তখন ফাইয়াজের ফোন বেজে উঠল তাই ফাইয়াজ উঠে ফোন রিসিভ করল। তার আম্মু ছিলো তাই সে কথা বলতে বলতে সামনের রুমে চলে গেল।
পুস্পিতা ফ্রেশ হয়ে বেড়িয়ে দেখল ফাইয়াজ বিছানায় বসে ফোন টিপছে।
…….কী মিস্টার আজ বুঝি যাওয়ার কোনো ইচ্ছে শক্তি নেই?
…….না থাকলেও তো যেতেই হবে ম্যাডাম।
…….আম্মু কী বলল?
…….রহণা দিয়েছি কিনা এটা জানার জন্য।
…….ওহ আচ্ছা। আপনি ফ্রেশ হয়ে নিন আমি ব্রেকফাস্ট বানিয়ে দিচ্ছি।
…….আরে বললাম তো বাহিরে খেয়ে নেবো।
…….বাহিরে খেতে হবে না, আমার ১০ মিনিট লাগবে আপনি ততক্ষণে ফ্রেশ হয়ে নিন, আমি বানিয়ে আনছি।
…….ওকে ম্যাডাম।
ফাইয়াজ ফ্রেশ হতে চলে গেল। পুস্পিতা রান্নাঘরে গিয়ে দুজনের জন্য ব্রেকফাস্ট বানিয়ে নিলো।
ফাইয়াজ বের হয়ে দেখল পুস্পিতা খাবার নিয়ে বের হয়ে আসলো রান্নাঘর থেকে। এরপর দু’জনে মিলে ব্রেকফাস্ট শেষ করল। এর মধ্যে নিরাও চলে এলো। এরপর তিন জন রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়ল। ওদের দু’জন কে নামিয়ে দিয়ে ফাইয়াজ চলে গেল। পুস্পিতার প্রচুর খারাপ লাগছিল। ইচ্ছে করছিল না ফাইয়াজ কে যেতে দিতে, কিন্তু কী বা আর করার ছিলো, যেতে দেওয়া ছাড়া?
আজও যখন ওরা যেতে নিলো বাসায় ফেরার জন্য, তখন সেই বকাটে ছেলেটা তাদের আজও ডিস্টার্ব করতে লাগল। পুস্পিতা ভাবছে একে তো একটা শিক্ষা না দিলেই নয়। কিন্তু কী করবে সে এটাই ভাবতে পারছিল না।
আজও খুব বিরক্তি নিয়ে চলে আসলো পুস্পিতা, নিজের রাগ সামলে ফ্রেশ হয়ে দুজনে মিলে খাবার বানিয়ে নিলো।
এভাবেই চলে গেল আরও সপ্তাহ খানেক, আজ পুস্পিতার এখানে শেষ দিন ছিলো, তাই সে ভাবলো কিছু একটা করার প্রয়োজন। তার হাতে সময় ছিলো আরও দু-তিন দিন, কিন্তু হঠাৎ করে আজকেই টেনিং শেষ হয়ে গেল। এমনিতে তো তার আজ মন খুব ভালো ছিলো। কিন্তু একটা শিক্ষা তো দিয়েই যেতে হবে এই ছেলেকে নায়ত না। সে প্ল্যান করল খুব গভীর ভাবে। এরপর হেঁটে এগিয়ে গেল।
পুস্পিতা সেই বকাটে ছেলেটার পাশ থেকে যখন যেতে নিলো সে এসে ওদের রাস্তা আঁটকে দাঁড়াল। সে তো জানত না আজ কী করতে চাইছে পুস্পিতা? তাই সে এগিয়ে গেল।
…….কী ম্যাডাম আজ তো একটু কথা বলে যান।
এই বলে সে পুস্পিতার হাত ধরে নিলো। পুস্পিতা ও তার দিকে এগিয়ে গেল। পুস্পিতা নিজের হাত দিয়ে লোকটার গাল ছুঁয়ে দিয়ে বলে উঠল।
…….জ্বি বলেন?
…….আজ এত ভালোবাসা? O M G আমার তো ভাগ্যই খুলে গেল।
……..তাই আগে বলবেন তো? তবে তো কবেই এই ভালোবাসা আপনাকে দিয়ে দিতাম। আসলে জমা থাকতে থাকতে আমি ক্লান্ত হয়ে গেছি। তাই আজ আর পারলাম না এই ভালোবাসা নিজের মাঝে লুকিয়ে রাখতে। তাই আপনাকে দিয়েই দিলাম যত ভালোবাসা ছিলো আপনার জন্য আমার মাঝে।
এই বলে পুস্পিতা নিজের দু-হাতই ছোঁয়াল ছেলেটার গালে।
…….আচ্ছা আজ তবে আশি আবার দেখা হবে।
…….আর একটু থাকলে হতো না ম্যাডাম?
……..উহু বাসায় মেলা কাজ রয়েছে যে। তাই আজ আশি?
……..ঠিক আছে যাবেনই যখন যান তবে।
এই বলে সে ধ্যানে পড়ে গেল। আর পুস্পিতা মুচকি হেঁসে সেখান থেকে চলে আসছিল। এইটা রিকশা ডেকে দুজনে উঠে বসল। রিকশায় উঠে টাটা দিচ্ছিল ছেলেটা কে, তখনই দেখতে পেলো ছেলেটা নিজের গাল চুলকাতে শুরু করে দিয়েছে। যা দেখে পুস্পিতা শয়তানি হাঁসি হেঁসে উঠল। আর নিরা জিজ্ঞেস করতে লাগল।
……কী হয়েছে পুস্পিতা? তুমি কী করেছ তখন?
……চোচড়া পাতা গুড়ো করে দিয়ে দিয়েছি। এখন বোঝ কেমন লাগে? আমার পেছনে লাগা।
…….খুব ভালো করেছ। আমার ও খুব ইচ্ছে ছিলো ওকে একটা শিক্ষা দেওয়ার, বাট এসব ছেলেদের সাথে লাগাটা খুব খারাপ তাই চুপ করে ছিলাম। বাট আজ তো আর ভয় নেই চলেই তো যাবো আমরা।
দুজনেই খিলখিল করে হেঁসে উঠল। পেছনে দুজনে তাকিয়ে দেখল, ছেলেটা গাল গলা মাথা, এরপর আস্তে আস্তে সারা শরিল চুলকাতে লাগল। তা দেখে দুজন খুশি মনে বাসায় চলে এলো।
দুজনে সব গুছিয়ে নিয়ে বেরিয়ে পড়ল। সকালে যা রান্না করে রেখে গিয়েছিল তাই গরম করে খেয়ে নিলো। এরপর রহণা দিলো। বাসায় দুজনে কাউকে কিছু জানাল না সবাইকে সারপ্রাইজ দেবে ভেবে নিলো। আজ বৃহস্পতিবার ছিলো, বাট ফাইয়াজের জরুরি কিছু পেশেন্ট ছিলো যার জন্য সে কাল সকালের গাড়ীতে আসবে বলেছিল, এজন্য পুস্পিতার জন্য খুব ভালোই হয়েছে। তাই সে খুব এক্সাইটেড হয়ে গাড়ীতে উঠে বসে পড়ল। তার খুব আনন্দ লাগছে।
নিরা অর্ধেক পথে নেমে গেল গাড়ী থেকে। পুস্পিতা একা রয়ে গেল। নিরা খুব জোর করে বলল।
……তুমি কিন্তু আমাকে ভুলে যেওনা। আসবে কথা দাও।
……ইন’শা’আল্লাহ চেষ্টা করব। কিন্তু তোমার ও যেতে হবে, বরিশাল আসলেই কিন্তু আমার সাথে দেখা করবে।
……ইন’শা’আল্লাহ। খুব মিস করব তোমাকে।
……আমিও করব। আল্লাহ হাফিজ।
……আল্লাহ হাফিজ।
দুজনে চলে গেল, যার যার পথে।
পুস্পিতার আসতে আসতে রাত হয়ে গেল। মাঝ পথে গাড়ি নষ্ট হয়ে গিয়ে ছিলো যার জন্য প্রায় ১০:৩০ মিনিট বেজে গেল আসতে আসতে। সে গাড়ী থেকে নেমে একটা সিএনজি নিয়ে বাড়িতে চলে আসলো, সে জানত ফাইয়াজ বা ফারিজ কে বললে তারা বাসস্ট্যান্ডে চলে আসতো বাট তবে সারপ্রাইজ দেওয়ার মজাটা যে আর থাকত না। তাই সে একাই চলে আসবে ভাবল। সে খুব এক্সাইটেড হয়ে বাড়িতে আসলো, প্রথমে তার বাবার বাসায় গেলে কত দিন হলো সবাইকে একটু কাছ থেকে দেখতে পারে না। মাঝে একদিন এসেছিল, তাও একদিন থেকেই তার চলে যেতে হয়েছিল, এজন্য আর সে আসে নি। আজ সে এতদিন পড় সবাইকে দেখবে সরাসরি ফোনে নয়। এটা ভেবেই তার খুব ভালো লাগছে।
কলিং বেলের শব্দে পুস্পিতার মা এসে দরজা খুলে মেয়েকে দেখে তাও এই সময় চমকে উঠল। মেয়েকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলো। পুস্পিতার বাবাও ছুটে এসে মেয়েকে দেখে আবেগী হয়ে পড়ল। পুস্পিতা তাদের সাথে ৩০ মিনিট সময় কাটিয়ে তারপর তার শশুড় বাড়ির জন্য বেরিয়ে আসলো। তার মা বাবার থেকে বিদায় নিয়ে।
শশুড় বাড়ি এসে কলিং বেল বাজাতেই ফারিজ এসে দরজা খুলে দিলো। সে পুস্পিতা কে দেখে শুধু ভা……। বলতেই পুস্পিতা নিজের ঠোঁটে আঙুল লাগিয়ে চুপ থাকতে বলল। যার জন্য সে চুপ করে হাঁসি দিলো। পুস্পিতা ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করল।
……কে কোন রুমে আছে?
……(ফিসফিস করে) আম্মু রান্নাঘরে, আব্বু তার রুমে, ভাই তোমাদের রুমে।
…….পুস্পিতা ব্যাগ রেখে চুপিচুপি আস্তে আস্তে পা ফেলে এগিয়ে গেল রান্নাঘরে, তার শাশুড়ির কাছে পেছন থেকে গিয়ে জড়িয়ে ধরে বলে উঠল।
……আম্মু কেমন আছেন?
সে পুস্পিতার কণ্ঠ শুনে চমকে উঠল। ঘুরে গিয়ে পুস্পিতা কে দেখে বলে উঠল।
……পুস্পিতা মামণি তুমি কখন এলে? আমি কী স্বপ্ন দেখছি নাকি?
…….চিমটি কেটে দেখেন।
সে সত্যি সত্যি নিজের হাতে চিমটি কেটে নিয়ে পুস্পিতা কে নিজের সাথে জড়িয়ে নিলো।
এরপর তার সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে পুস্পিতা তার শশুড়ের সাথে দেখা করে, ফাইয়াজের রুমে চলে গেল। তাদের রুমের দরজাটা দেখল ভেজানো ছিলো তাই আস্তে আস্তে ভেতরে ঢুকেই তাকে চমকানোর জায়গায় নিজেই চমকে উঠল পুস্পিতা। কারণ রুমে একটা মেয়ে ছিলো যে কিনা সোপায় বসে ফাইয়াজের ল্যাপটপে কিছু করছিল। সে একটা শাড়ি পরে বসে আছে। দেখতে খারাপ নয়, কিন্তু এ এই রুমে কেনো? শাড়িটা ভালো করে খেয়াল করে দেখল শাড়িটা পুস্পিতারই ছিলো। একটা অজানা ভয় এসে ছুঁয়ে গেল তাকে। মেয়েটা পুস্পিতা কে লক্ষ করে বলে উঠল।
…….আপনি?
পুস্পিতা কিছু যে বলব তার জ্ঞানই নেই মনে হচ্ছে তার মাঝে। সে শুধু তাকিয়ে ছিলো মেয়েটার দিকে কে সে? সে পুস্পিতার রুমে পুস্পিতার শাড়ি পরে বসে আছে অথচ পুস্পিতাই জানে না সে কে?
…….আপনি কে? এক তো নক না করে রুমে চলে এসেছেন, তার উপর কথাও বলছেন না?
মেয়েটার কন্ঠ শুনে বারান্দা থেকে ফাইয়াজ এগিয়ে এলো। সে পুস্পিতা কে দেখে অবাক হবে নাকি খুশি হবে বুঝতে পারছে না। সে ভাবছে হয়ত সে স্বপ্ন দেখছে তাই নিজের হাতেই একটা চিমটি কাঁটল। সে যখন বুঝতে পারল এটা স্বপ্ন নয় সত্যি পুস্পিতা এসেছে। তখন সে ছুটে আসলো পুস্পিতার কাছে।
…….পুস্পিতা তুমি? এখানে কীভাবে?
এই বলে সে পুস্পিতাকে জড়িয়ে ধরতে নিলো, বাট পুস্পিতা তাকে চোখের ইশারায় মেয়েটা কে দেখিয়ে দিলো। যা দেখে সে নিজের মাথা চুলকাতে চুলকাতে বলে উঠল।
…….ওহ আচ্ছা। নিশা ওকে চিনেছিস? এটা তোর ভাবী।
……ওহ আচ্ছা? তাই তো বলি কে নক না করেই চলে এলো। হ্যালো ভাবী।
……হ্যালো। কেমন আছো নিশা?
……জ্বি ভালো, কিন্তু আমি যতটুকু জানি তুমি তো ঢাকায় ছিলে। এখানে কীভাবে?
……যে কাজে গিয়ে ছিলাম তা শেষ তাই চলে এলাম। কেনো ভালো লাগে নি বুঝি?
……হ্যা খুব ভালো লাগছে, আসলে আমার ও খুব ইচ্ছে ছিলো তোমার সাথে দেখা করব। কারণ এটাও তো দেখার ছিলো ভাই কার জন্য এতটা পাগল হয়েছে। মিস্টার আবরার ফাইয়াজ কার জন্য উন্মাদ হয়েছে। এটা খুব জানার ইচ্ছে ছিলো।
…….যাক তবে তো ভালোই হয়েছে জেনে গেলে।
…….হ্যা তা তো বটে।
……আচ্ছা নিশা তুই বরং ল্যাপটপ নিয়ে তোর রুমে যা, তোর ভাবী এত দূর থেকে আসছে ফ্রেশ হবে রেস্ট নেবে তাই তুই তোর রুমে গিয়ে কাজ কর। কাজ শেষ হলে ল্যাপটপ দিয়ে যাস।
…….ঠিক আছে ভাইয়া।
নিশা ল্যাপটপ নিয়ে রুম থেকে চলে গেল। তাই পুস্পিতাও ওর সাথে এগিয়ে গিয়ে দরজা লক করে দিয়ে ফাইয়াজের কাছে এগিয়ে আসলো। ফাইয়াজের কাদে পুস্পিতার দু-হাত রেখে বলে উঠল।
……কী ব্যাপার মিস্টার কেমন লাগল আমার সারপ্রাইজ?
……একদম অবাক করা (এই বলে জড়িয়ে ধরে) তুমি ধারণা ও করতে পারবে না আমি কতটা আনন্দিত হয়েছি তোমাকে এখানে দেখে।
কিছুক্ষণ এভাবেই থেকে পুস্পিতা, ফাইয়াজের বুকের থেকে মাথা তুলে বলে উঠল। আচ্ছা এখন ফ্রেশ হয়ে আশি, রাস্তার কত জীবাণু রয়েছে গায়ে।
…….হ্যা যাও।
পুস্পিতা একটা ড্রেস নিয়ে ওয়াশ রুমে চলে গেল। ফ্রেশ হয়ে বের হতেই দেখল ফাইয়াজ বিছানায় বসে ফোন টিপছিল। পুস্পিতা কে দেখে বলে উঠল।
……এত কষ্ট করে একা একা এত দূর আসার কী প্রয়োজন ছিলো? আমাকে না বলো ফারিজ কে বলতে ও গিয়ে তোমাকে এগিয়ে নিয়ে আসতো?
…….আরে আমি কী আপনাকে একা সারপ্রাইজ দিতে চাইছিলাম নাকি? আমি তো সবাইকে সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছিলাম আর দিয়েওছি।
…….ওহ তাই? আচ্ছা যাই হোক না কেনো এরপর আর কখনো এতবড় রিক্স নিবে না।
……ওকে ডক্টর সাহেব।
এরপর ওরা ডাইনিং রুমে গিয়ে সবার সাথে বসে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে নিলো। সবার সাথে অনেক কথাও বলল পুস্পিতা।
বেশ কিছুক্ষণ পরে দুজনে রুমে চলে এলো। বিছানা গুছিয়ে নিতেই ফাইয়াজ এসে শুয়ে পড়ল। তাই পুস্পিতা ও এসে ফাইয়াজের বুকে মাথা রেখে শুয়ে পড়ল।
……আচ্ছা নিশা কবে আসলো?
…….কাল হঠাৎ করে এলো, বলল ফ্রেন্ডদের সাথে নাকি আসছে। অনেক দিন দেখা হয়না তাই চলে এসেছে।
……হুম ভালো। কিন্তু মিস্টার তার পড়নে আমার শাড়ি কেনো?
……ও আচ্ছা, আসলে আমি দেইনি, আমি যখন হসপিটালে ছিলাম তখন হয়ত রুমে এসে নিয়েছে। আমি বাড়ি ফিরে খুব করে বকা দিয়েছিলাম এইজন্য, কারণ তোমার জিনিস শুধু তোমার ওগুলো তোমার পারমিশন ছাড়া কেউ ধরবে এটা আমার একদম পছন্দ না। কিন্তু আম্মু এসে আমাকে থামিয়ে দিলো, সে বলল তার থেকে নাকি অনুমতি নিয়েই ও শাড়িটা পড়েছে। ওর কাছে খুব ভালো লাগছে শাড়িটা।
…….ওহ আচ্ছা। যাক তাও ভালো শুধু শাড়ি নিয়েছে, আপনাকে যে নিয়ে নেয়নি এটাই অনেক।
…….ইশ আমি কী কোনো আসবাবপত্র নাকি? যে চাইলো আর আমাকে নিয়ে নিলো? আমি তো একান্তই আমার ডাক্তার ম্যাডামের তাই নো চান্স ম্যাডাম।
এই বলে রুমের আলো নিভিয়ে দিলো।
।
।
।
চলবে…………।