নীরবে_নীরবে পর্ব ৩…
চারিদিকে ভৌতিক ধরনের নিস্তব্ধতা ছড়িয়ে আছে। সময় কাটানোর অজুহাতে দিলু বেশ কয়েকবার রান্নাঘরে ঘুরে এলো। কিন্তু করার মতো কোনো কাজ নেই। সাখাওয়াত আজ বাসায় থেকেও না থাকার মতো করে বেলকনিতে চেয়ার নিয়ে বসে আছে। তার কাছে অহনার কথা মনে পড়ছে। মেয়েটি ভালো। যার-তার কাছে তাকে ভালো লাগবে। এজন্য দুয়েকবার তার প্রস্তাবে সাখাওয়াত না করে পারেনি। তাও নিতান্ত বন্ধু হিসেবে তারা মাঝে মাঝে রেস্টুরেন্টে গিয়েছে, ঠিক যেভাবে আকলিমাকে এখানে এনেছিল। সেও তার এক কলিগ। তা সাথে দিলুর যোগাযোগ আছে। বলতে গেলে বন্ধুত্ব আছে। সেই বুঝি অহনার কথা দিলুকে বলেছে। কিন্তু আসলে এমনটা তো নয়। ক্ষণিকের জন্য তাকে ভালো লেগেছিল। এটাই স্বাভাবিক। পরক্ষণে সাখাওয়াতের অপরাধ বোধ হলো। এসবই তো পরকীয়ার শুরু। সে অবিশ্বাসের সাথে মাথা ঝাড়া দেয়। দুঃখ ভুলাতে সে এমন জায়গায় পা রাখতে যাচ্ছিল? পর একটি মেয়ের সাথে কীভাবে ভাবতে পেরেছে সে? সাখাওয়াতের নিজেরই ঘৃণা হলো। আচ্ছা, এসব জেনেও যে দিলু চুপ থেকেছে, সে কেমনটা অনুভব করেছে? কেমনই বা মনে করবে? যে নিজেই অন্যদিকে চোখ দেয়, তার কাছে সাখাওয়াতের ব্যাপারে কী আসে যায়? তার আগে বুঝা উচিত ছিল রাগীব এতদিন লুকিয়ে থেকে কী করছে। এমন কি হতে পারে না দিলু তার সাথে দেখা করতে যায়? দারোয়ানকে জিজ্ঞেস করলে উত্তর পাওয়া যাবে না। সে দিলুর ব্যাপারে মুখ খুলবে না। মেয়েটা চারিদিকেই নিজের প্রভাব ছড়িয়ে রেখেছে। সাখাওয়াত খেয়াল করল, পেছনের দরজাটা কে যেন খুলেছে।
দিলু দরজার কাছে দাঁড়িয়ে থেকে খানিকটা সাখাওয়াতের দিকে চেয়ে থেকে পা বাড়িয়ে তার কাছে যায়।
“আমি জানি, আপনি কী ভাবছেন। আমি সত্যটা আপনাকে বলব না। আপনার বিশ্বাস হবে না। আমি জাস্ট এটাই বলব, আপনার ভাই এতদিন কোথায় ছিল আমি জানতাম না। কালই প্রথম এখানে এসেছেন। আগামীতে কখনও আসবেন কিনা সন্দেহ।”
দিলু কাঁধ থেকে অনেক বড় একটা বোঝা নামার মতো শান্তি পেয়ে ভেতরে চলে গেল। সাখাওয়াত দূর আকাশের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলল। জীবনটা কেমন যেন হয়ে গেছে। মনটাও কেমন যেন করছে। কিছু একটা করতে ইচ্ছে হচ্ছে ডিপ্রেশনটা থেকে মুক্তি পেতে। সে রশি টেনে নিঃশব্দে ভেতরে চলে যায়।
সে যেতে দিলু তার দুটো হাত জড় করে নিঃশব্দে প্রস্তুত থাকে। কাউকে কিছুই বলার যেন প্রয়োজন নেই। সাখাওয়াত বেলকনি থেকে টেনে আনা কাপড় শুকোনোর রশি দিয়ে তার হাতের কবজি বাঁধতে থাকে। দিলুর কেন যেন সাখাওয়াতকে আহত দেখে খারাপ লাগছে। লোকটি কোনো একটি কারণে মনমরা হয়ে আছে।
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।
গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা
◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।
আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share
“আপনি তৃপ্তি পেতে এভাবে নিজেকে খারাপ করার মাধ্যমে নিজেকেই শাস্তি দিচ্ছেন।”
“তাই? তাহলে বলো কীভাবে আমি তৃপ্তি পাব? বদ লোকের সাথে থেকে নাকি মদ খেয়ে নাকি… পতিতালয়ে গিয়ে?”
দিলু তার দিকে নির্বাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। সাখাওয়াতের চোখ হাতের কবজির দিকেই নিবদ্ধ।
“তোমার জ্ঞাতার্থে বলে দেই, মদ খেলেও আমায় তুমি শান্তিতে থাকতে দিবে না। হালাল-হারামের কিসসা শোনাবে। পতিতালয়ের প্রতি আমার ইন্টারেস্ট নেই। কারণ আমার শরীর নিয়েই ইন্টারেস্ট নেই। আমার জীবনের এতটুকু সময় খুব ভালোভাবে নষ্ট হয়েছে। খারাপ সঙ্গে পড়ে আমি চাই না বাকিটা জীবনকে নরক করতে।”
সে চোখ তোলে শান্ত দৃষ্টিতে দিলুর দিকে তাকায়। মৃদু অন্ধকারে সেই কালো চোখ অশরীরীর মনে হয়। এই লোকটি এসব খারাপ পথে পা না বাড়ালেও অজান্তে সবচেয়ে নিকৃষ্ট একটা পথে নিজেকে ধাবিত করে ফেলেছে, নিজের সরলতাকে পরিহার করার মাধ্যমে। লোকটি যে অন্ধকার কূপে থাকছে, স্বাভাবিকভাবে সেখানে কখনও আলো দেখার আশা করা যায় না।
সাখাওয়াত বেলকনিতে গিয়ে রশিগুলো রডের সাথে টানটান করে সবচেয়ে উপরে বাঁধে, যাতে দিলুর হাতগুলো উপরে উঠে যায়। এসে দরজা মৃদু করে ভেজানোর পর রশিগুলো দরজার উপর তোলে দিলে দিলুর হাতগুলো উপরে উঠে গেল। রশির এই টান টান অবস্থায় হাত নিচু করার সুযোগ নেই। সাখাওয়াত খালি পায়ে বিছানায় গিয়ে বসে। তার চোখগুলো আজ ক্ষুধার্ত ব্যক্তির মতো জ্বলছে না। বরং কোনো বাতি যেন নিভেই আছে। দিলুকে বেশ কিছুক্ষণ পরখ করে সে আড়মোড়া ভেঙে উঠে ড্রয়ার থেকে একটা কাঁচি বের করে নেয়। আজ দিলুকে দেখতে হবে। কাজেই আজ চোখ বাঁধবে না। সাখাওয়াত এসে তার কপালে কাঁচির ডগা ছোঁয়ায়। সে কেঁপে উঠে। তার হৃদস্পন্দন দ্রুত হয়ে যায়। তার উপর সাখাওয়াতের গন্ধ মিলিয়ে দিলুর হার্টবিট মিস করার অবস্থা। এই মুহূর্তে দিলুর মাঝে যে ভয়টা আছে, তা দুই ধরনের। একটা হলো ওই কাঁচির, আরেকটি সে প্রকাশ করতে চায় না। যে-সে এই বাসনা প্রকাশ করতে পারে না।
সাখাওয়াত কাঁচিটা না তোলে দিলুর নাকের উপর দিয়ে নিয়ে এসে ঠোঁটে নামায়। তারপর চিবুক থেকে গলায়। সে এবার কাঁচি তোলে দিলুর পেছন থেকে চুলগুলো সামনে নিয়ে আসে। দিলু ভীত চোখে নিচে তাকায়। সাখাওয়াত তার লম্বা চুলগুলোর বুক বরাবর কেটে দিচ্ছে। দিলু কাঁদতে ইচ্ছে হচ্ছে। তবু আত্মসংবরন করে ঠোঁট কামড়ে রইল। চুল লম্বা রাখা তার একটা প্রিয় অভ্যাস। সে তার চুলকে খুব ভালোভাসে।
“আমি লম্বা চুল সহ্য করতে পারি না।”
সাখাওয়াত ফিসফিসিয়ে বলার পর দিলু তার দিকে তাকায়। তার প্রতিবাদ করার ইচ্ছা নেই। লোকটি শান্তি পেলে তার জন্যই সুখের। কিন্তু এই লোকটিই তো একসময় তার কালো লম্বা চুলকে পছন্দ করত। যতবারই কথা বলত, ততবার সাখাওয়াত একটা আঙুলে তার চুল পেঁচিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে বলত।
সাখাওয়াত এবার তার পরনের সবুজ শাড়ির কিছু অংশ ছোপ ছোপ করে কাঁটতে থাকে।
“এই সবুজ রঙটাও এখন অসহ্যের।”
“প্লিজ না। আজ এটা আমি প্রথম পরেছি।”
সাখাওয়াত আগের চেয়ে আরও নৃশংসভাবে কাটতে থাকে। ইশ, প্রতিবাদ করা উচিত হয়নি। শাড়িটা কী ভেবে পরতে গিয়েছিল? দিলু কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে থেকে পুনরায় খুলে দেখতে পেল, সাখাওয়াতের চোখ বন্ধ হয়ে আসছে। তার ঘুম আসছে। এই শাস্তিগুলোর পর সাখাওয়াতের দ্বিতীয় শান্তির উৎস হলো এই ঘুম। সাখাওয়াতের নিচ থেকে উঠতে খুব কষ্ট হলো। সে হাতে ধরা কাঁচিটার ভারও আর সইতে পারছে না। আচমকা দিলুর আওয়াজে তার ঘুম ছুটে গেল।
“যান, ঘুমিয়ে পড়ুন।”
শান্ত ভঙ্গিতে বলা এই কথাটা সাখাওয়াতের মনের গহীনতম জায়গায় গিয়ে বিঁধল। সম্বিত ফিরলে সে তাকিয়ে এতক্ষণে দিলুকে পুরোপুরি দেখতে পায়। পরক্ষণে চোখ সরিয়ে নেয়। একটু আগেই সে বলেছিল, শরীরের প্রতি তার লোভ নেই। কথাটা হঠাৎই মিথ্যা প্রমাণিত হচ্ছে। ইশ, শাড়িটা কাটা উচিত হয়নি। সাখাওয়াত ইতস্তত করে দ্রুত পায়ে বেলকনিতে গিয়ে রশি খুলে নেয়। এসে বলল, “যাও, নতুন একটা কাপড় পরে নাও। আর আজ দরজা বেঁধে বেলকনিতে শুবে।”
দিলু তাই করে। চুল কাটার ফলে গোসলও করে নেয়। এরপর বেলকনিতে এসে দরজা বেঁধে বসে। একটা সুবিধা হলো, চেয়ারটা স্যানট্যানের মতো, পুরোপুরি হেলানও দেওয়া যায়। সাখাওয়াত এটা স্পেশালি বেলকনিতে বসার জন্য বানিয়েছে। দিলুর বসতেই চোখ পড়ল দূর একটা বেলকনির দিকে। মেয়েটি হাতে বই নিয়ে বসে আছে। কিন্তু মুখ তার সোজাসুজিই আছে, বইয়ের দিকে তাকাচ্ছে না। সে কি প্রতিবারের মতো সাখাওয়াতকে রশি টানতে দেখেছে? দিলুর জানতে ইচ্ছে হলো, মেয়েটি কী ভাবে। এসবকিছু সে কি ইতিবাচকভাবে দেখে? দেখা উচিত। অন্যান্য স্বামী-স্ত্রীরা একে অপরকে যেভাবে ভালোবাসে, দিলুর মনে হয় তারাও সেভাবে বাসে। তাদের পদ্ধতি ভিন্ন এই যা। সাখাওয়াত অত্যাচার করে, আর সে সয়। এখানেই স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসার বন্ধনটা একটু খতিয়ে দেখলে টের পাওয়া যাবে।
দিলুর মনে হলো, সে ওই মেয়েটির সাথে কথা বলছে। এভাবে নীরবে। কল্পনা করলো মেয়েটি ওখনও তার দিকে চেয়ে থেকে মাথা নেড়ে সায় দিচ্ছে।
“আমি তোমাদের সম্পর্কটা বুঝছি।” কল্পনা করল মেয়েটি বলছে, “আমার চেয়ে ভালো করে কেউ বুঝে না। আমি এই বেলকনিতে সময় কাটাতে ভালোবাসি। তোমাদেরকে প্রায়ই দেখি। তোমাদের সম্বন্ধে আমি অনেক কৌতূহলী। লোকটা নিকৃষ্ট হলেও কেমন এক মায়া জন্মেছে। মাইন্ড করো না দিল সায়েরা। অনেক মানুষের খারাপ দিক আকর্ষণীয় হয়ে উঠে। এই যেমন, আমার খারাপ দিকটা তোমার কাছে। বুঝনি? আমি যে এভাবে তোমাদের ইউনিক রোমান্স প্রতিনিয়ত দেখে থাকি, তুমি কি তা আকর্ষণীয় মনে করো না?”
দিলু হাসে।
মেয়েটি যেন আবারও বলছে, “তোমাকে খুব সুখী দেখাচ্ছে দিল সায়েরা। তুমি ওই লোকটির নির্যাতনগুলোর প্রেমে পড়েছ। ওই তিক্ত ডার্লিং শব্দটাও তোমার এখন ভালো লাগতে শুরু করেছে। তাই না?”
দিলু দীর্ঘশ্বাস ফেলে। তার ধারণা, মেয়েটি তাকে দিলু ডাকতে পছন্দ করবে না। তার পুরো নাম ধরেই ডাকতে চাইবে। আচ্ছা মেয়েটির নাম কী হতে পারে? হাসনা? নামটা সুন্দর। তাকে ম্যাচ করছে।
“হাসনা?”
“আমাকে ডাকলে?”
“হুম। এতরাতে না ঘুমিয়ে কী করো?”
“নিঃসঙ্গ মানুষের ঘুমও তাদের সাথে দেয় না। পরিবার-পরিজন ছেড়ে এতো দূরে থাকছি। তেমন ভালো থাকি না।”
“আমি জানি। আমরা যে একই সূত্রে গাঁথা। আমার চাওয়ার মানুষটি আমার কাছে আছে। তবু তাকে পাই না বলে আমি ভালো থাকি না।”
“ইউ সাউন্ড লাইক হিম।”
দিলু হাসল, “আমি তার ভাষায় কথা বলছি? তাহলে তুমি ওকেও চেনো। ওর সঙ্গের প্রভাবে হয়েছে এমনটা।”
“তোমার ম্যান বোধহয় অনেক কষ্টে এতক্ষণে ঘুমিয়েছে।”
“তুমি কীভাবে জানো?”
“তুমি জানো মানে আমিও জানি।”
দিলু হাসে, “আমি দেখে আসি।”
দিলু উঠে দাঁড়ায়। মেয়েটি এখনও দূর থেকে তার দিকে চেয়ে আছে। সেও কি এভাবেই কল্পনায় দিলুর সাথে কথোপকথন চালিয়ে যাচ্ছে? দিলু বিছানার কাছে এসে দেখে সাখাওয়াত একহাত চেপে অদ্ভুত ভঙ্গিতে ঘুমিয়ে আছে। তাহলে দিলু ভুল ছিল না। সে তাকে সোজা করে শুইয়ে দেয়। মুহূর্তেই তার মনে নানা ধরনের উথালপাতাল শুরু হয়। এতদিন সাথে থেকেও বিশ্বাস হয় না লোকটি এই মুহূর্তে তার নাগালের কাছে আছে। নইলে এই লোকটিকে সে পাঁচটি বছর দেখার সৌভাগ্য পায়নি। কাঁপা হাতে দিলু তার কপালে আসা একফালি চুল সরিয়ে দেয়। তার কপালে এখনও ওই দাগটা আছে। দিলুর নিজের প্রতিই ঘৃণা হলো। বাসর রাতে তাদের ঝগড়া হয়। ভয়ংকর ধরনের। নীরবে জিনিস ছোঁড়াছুড়িও হয়। সাখাওয়াত তার গায়ে বই ছুঁড়েছিল। তাই কেটে যায়নি। কিন্তু দিলুর ছোঁড়া ফুলদানিটা সাখাওয়াতের কপালে লেগে কেটে গিয়েছিল। মানুষের এক জীবনে কয় মৃত্যু হয় সে জানে না। কিন্তু তার সেদিন আরেকবার মৃত্যু হয়েছে। সে ভালোবাসার মানুষটিকে এভাবে আঘাত করেছে? সে ঘুমন্ত থাকলেই দিলু তার কপালের রক্ত মুছে দেয়।
এই সেই একই লোক। বিশ্বাস করতে সে খুব ভয়ের সাথে সাখাওয়াতের বুকে হাত রাখে। হ্যাঁ, এই হৃদস্পন্দন চিরচেনা। এখানের ভেতর খুব কোমল একটা মন লুকিয়ে আছে। দিলু উঠে বেলকনিতে ফিরে যায়। মেয়েটি কিছুক্ষণ পর দিলুকে দেখতে পায়।
“কী? আবারও কোনো স্মৃতি কাঁদাচ্ছে। তারপর কী হয়েছিল বলো।”
দিলু পা তোলে হাঁটু দুইহাতে জড়িয়ে বসে।
“সেদিন সাখাওয়াত ভাইয়ার দিকে তাকাতে তাকাতে আমি আচমকাই প্রশ্নটা জিজ্ঞেস করে বসি, যেটা লাভলীকে করার ছিল। ‘রাগীব ভাইয়াকে সবসময় এমন হাসিখুশি থাকে?’
সাখাওয়াত অবাক হয়ে তাকায়। ততক্ষণে আমি লজ্জিত। ‘হ্যাঁ, ও এতটাই মিশুক যে, তাকে খুব সহজেই মানুষ পছন্দ করে।’
বিশ্বাস করবে, এরপর থেকে আমাদের চোখাচোখি হয়নি। সাহস আমার মাঝে এতটাই কাজ করছিল যে, সেদিন রাগীব ভাইয়ের সাথে আমি বন্ধুত্ব পেতে নেই। অবশেষে আসে সেই দিনটা, যেদিনটা আমার জীবনটা পালটে দেয়।”
(চলবে..)
লেখা: ফারিয়া কাউছার