না চেয়েও তোমায় পেলাম পর্ব-০৬

0
1850

#না_চেয়েও_তোমায়_পেলাম🖤
#Ritu_Jahan
#part_6

অবশেষে দিশা না পেয়ে ভেঁ ভেঁ করে কান্না শুরু করে দিলাম।

আমার কান্নার শব্দ শুনে ওনি আমার পাশে এসে,,,

আদিঃ ঋতু তোমার কোন সমস্যা হয়েছে কাঁদতেছ কেন।

আমি ওকে পাশে দেখে

আমিঃ এই আপনি আমার পাশে কেন বসেছেন যান দূরে যান বলছি না হলে খারাপ হবে বলি দিলাম।

আদি আমার কথায় হা হয়ে গেছে।

আদিঃ আরে তুমি পাগল নাকি তুমি কাঁদতেছ বিধায় তো আমি আসছি।আর তোমার থেকে অনেকটা ডিস্টেন্স এ বসেছি। এমন বিহেব করতেছ যেন আমি তোমাকে টার্চ করেছি,,

আমিঃ করবেন না যে তার গেরান্টি কি,,,আপনাদের ছেলে মানুষদের আমার ছেনা আছে,,,,, একটু পাশে বসলেই সুযোগ খোঁজেন।

আদিঃ হেই ইউ তুৃমি কাকে কি বলছো।সব ছেলে এক না আর আদিব মাহমুদ কখনও কারো সুযোগ নে না সেটা যা বিষয়ের হোক না কেন।

আমিঃ আপনি এমন একটা ভাব করছেন যেন দুনিয়াতে আপনার মতো ছেলে হয় না।সুযোগ তো নিয়েছেন সুযোগ নিয়েই তো আমাকে বিয়ে করেছেন।

আদিঃ তোমাকে বিয়ে করতে বয়ে গেছে।আমি আমার ফ্যামেলির জন্য আমাকে বিয়েটা করে হয়েছে।আর তুমি যদি এমন ঝগরুটে জানতাম তাহলে তো কখনও বিয়ে করতাম না।

আমিঃ এই যে মিস্টার আদি না কাদি আপনার সাহস কি করে হয় আমাকে ঝগরুটে বলার।আপনি কি আমাকে বিয়ে করতেন না আমি নিজেই আপনাকে রিজেক্ট করতাম নেহাত আমার আম্মু আব্বুর জন্য করতে পারলাম না হুহ।আর ভুলে যাবেন না আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি সো আমার উপর কোন অধিকার খাটাবেন না।

আদি মনে মনে ভাবলো,,,

এটা কি সে মেয়ে যাকে প্রথম দেখায় ভালোবেসে পেলেছিলাম।এখন যা বুজতেছি ওতো একজন বোম্বা মরিচ।বাবা কথা না বাড়ানোই ভালো।

আদিঃ হুম জানি তো তোমার ভালোবাসার মানুষ আছে। আর আমি তোমার উপর কোন অধিকার খাটাবো না তবে একটা শর্ত আছে।

আমিঃ কি শর্ত?

আদিঃ আমাদের মধ্যে যাই থাকুক না কেন আমার পরিবারের সাথে তোমার ভালো বউ হিসেবে থাকতে হবে।তারা যেন না বুজে আমাদের মধ্যে কিছুই নাই।

আমিঃ আপনি যে ভাবে বলতেছেন ভালো বউ হিসেবে থাকতে আমি কি খারাপ নাকি যে ভালো হয়ে থাকতে হবে।আমি এমনিতেই ভালো😏।

আদিঃ হুম ভালো, কিন্তু বুঝো কম।না হলে একটা মানুষকে না জেনে না বুজে শুধু মাত্র তার কথার ছলে তাকে ভালোবাসতে না।

আমিঃ মানে কি বুজাতে চাইছেন?

আদিঃ কিছু না শুয়ে পড়ো। গুড নাইট।

বলে আদি বিছানার এক পাশে শুয়ে পড়লো,,,

আমিঃ এই,,,,,,,,,,,,,যে উঠুন বলছি,,,( জোরে)

আদিঃ কি হয়েছে আবার।

আমিঃ কি হয়নি বলুন।আপনাকে বলছি আমার থেকে দূরে থাকুন।কিন্তুু আপনি আমার পাশে কেন শুয়েছেন।

আদিঃ তো কোথায় শুবো।

আমিঃ আমি কেমনে জানি দরকার হলে সোফায় শুয়েন,,,,,

আদিঃ কি,,,,,,আদি সোফায় শুবে,,,নো ওয়ে,,।আমি পারবো না,,,,এখানে ঘুমালে কি হবে আমাদের মধ্যে অনেক ডিস্টেন্স আছে।

আমিঃ জ্বি না,, আমি আপনাকে এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না। যদি রাতে আমার কাছাকাছি চলে আসেন? সো রিক্স না নেওয়াই ভালো সোফায় থাকায় বেটার।

আদিঃ ধূর,, তুমি তোমার নেগেটিভ মাইন্ড নিয়ে বসে থাকো।

এটা বলে আদি বিড়বিড় করতে করতে সোফায় চলে গেল।ও কম্বল গায়ে দিয়ে শুয়ে পড়লো আর নিজে নিজে বলল,,

বাসর তো ধূর খাট ও আমার কপালে জুটলো না।পোড়া কপাল আমার,আজ আদিব মাহমুদ নাকি সোফায় থাকছে হাহ।আদি আরো কি কি আছে তোর কপালে তা আল্লাহ না জানে।

সকালে আমার ঘুম ভাঙ্গলো।দেখলাম ওনি সোফায় শুয়ে আছে মনে হচ্ছে ভালো করে শুতে পারছে না গা থেকে কম্বলটা ও সরে গেছে।আমি গিয়ে কম্বলটা গায়ে তুলে দিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলাম।বের হয়ে একটা নীল শাড়ি পরেছি,আয়নায় তুল আচরাচ্ছি।

আদি চোখ খুলতে দেখলো তার সামনে একটা নীল পরী দাড়িয়ে আছে। ভেজা চুলগুলো কোমর পর্যন্ত ছাড়িয়ে গেছে।অাদি একটা ঘোরের মধ্যে চলে গেছে সে তার প্রেয়সীকে দেখতে ব্যাস্ত।

আমার চোখ সোফায় যেতে দেখলাম ওনি হা করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।আমি কিছুটা লজ্জাবোধ করলাম,ওনি চোখ নামাচ্ছে ও না এবার অস্বস্তি লাগছে।

হঠাৎ দরজায় আওয়াজ হলো,,,, আমি ওনার কাছে গিয়ে বললাম খাটে চলে যেতে।

ঋতুর কথায় আমার ঘোর কাটলো।বুজতে পারলাম কেউ দরজায় নক করছে। তাড়াতাড়ি খাটে গিয়ে শুয়ে পরলাম,( আদি)

আমি গিয়ে দরজা খুলে দেখলাম আদিবা আর তার মেয়ে দাড়িয়ে আছে। আদিবার মেয়ের নাম তাহিয়া,, তিন বছর হবে আরকি,,

তাহিয়াঃ গুড মর্নিং সুন্দর মামুনি,,,,

আমি হেসে,,

আমিঃ গুড মর্নিং তাহিয়া মনি

আদিবাঃ ভাবি তুমি তো রেড়ি হয়ে গেছো,,, চলো আমার সাথে নিচে চলো,,,

আমি নিচে গিয়ে দেখলাম আমার শশুর আরো অনেকে বসে বসে গল্প করছে।আমি গিয়ে সালাম দিলাম।তারপর আমাকে আদিবা কিচেনে নিয়ে গেলো
সবাই সকালে নাস্তা রেডি করছে।আমি একটু হেল্প করতে গেলাম কিন্তু আমার শাশুড়ী মা করতে দিলো না।ওনি আমাকে মেয়ের মতো আদর করছে,,,,আমার ননদ,শশুর,শাশুড়ী সবাই ভালো।আমাকে নিয়ে একটা রুমে নিয়ে গেল,ওইখানে সব মেয়েরা।আদিদের কাজিন সব,,,,

ওরা সবাই বাসর রাত নিয়ে আমাকে নিয়ে মজা করছে,, আমার তো লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছে।জানি বাসর এর কিছুই হয়নি তবুও ওদের কথায় লজ্জা লাগছে,,,

অনেকক্ষণ ধরে খেয়াল করছি আমার মামী শাশুড়ীর মেয়ে বর্ষা আমার সাথে কেমন অন্যরকম বিহেভ করছে।আমার মনে হচ্ছে আমাকে ছোট করে কথা বলার টাই করছে,,

সবাই নাস্তা করার জন্য টেবিলে আসছে,,,আদিও সিঁড়ি দিয়ে নামছে,,,একটা কালো শার্টের হাতা ফোল্ড করতে করতে নামচে।পুরাই হিরোর মতো লাগছে কিন্তু আমার জন্য ভিলেন😒।

ও এসে টেবিলে বসলো।আমার শাশুড়ী ও আমাকে বসে যেতে বললো তাই আদির সামনাসামনি চেয়ার টা টানতেই বর্ষা এসে চেয়ারে বসে গেল।মাথাটা খারাপ হয়ে গেলো মেয়েটাকে আমি কি করেছি শুধু শুধু আমার পিছনে পড়ে গেছে।

আমি পাশের টেবিলে বসে নাস্তা করছি।বর্ষা মেয়েটা শুধু আদির দিকে তাকাচ্ছে,,,যেন গিলে খাবে আদিকে।ব্যাপারটা আমার অন্যরকম লাগলো। আমি তেমন পাত্তা না দিয়ে খাচ্ছি।আমার শশুর বলে উঠলো,,,

শশুরঃ আদি তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নাও আমাদের আবার কমিউনিটি সেন্টারে যেতে হবে।

আমার মনে পড়লো আজ বৌ ভাত কমিউনিটি সেন্টার করবে আমার আম্মু আব্বুও পরিবারের আসবে ভেবেই খুশি লাগছে।

কিছুক্ষণ পর পার্লারের মেয়ে আসলো আবার মেকাপ করতে,,,,,খুবই বিরক্ত লাগছে,,,

চলবে,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে