#না_চেয়েও_তোমায়_পেলাম🖤
#Ritu_Jahan
#Part_4
যত সময় ঘনিয়ে আসছে ততো আমার ভিতরটা শেষ হয়ে যাচ্ছে,,,,
এ কয়েকদিন আরিয়ান আর কল করে নাই।আদি মাঝে মধ্যে করতো কিন্ত আমার থেকে তেমন কোন রেসপন্স না পেয়ে কেমন আছো, কি করছো এগুলা বলে শেষ করে দিতো।
আজ আমার গায়ে হলুদ।বাবা কোন কিছুর কমতি রাখেনি বড় মেয়ের বিয়ে বলে কথা।কিন্ত কেউ মনের দিকটা দেখে।ভাবতেই অবাক লাগে যাদের এই হাসি ধরে রাখার জন্য নিজের সব শেষ করে দিয়েছি।তারা একটু আমার মনে ডুকতে চেষ্টা করে না।
আমাকে একটা হলুদ শাড়ি পারিয়েছে। মুখে ভারি মেকাপ,হলুদের গয়না,,,,সব মিলিয়ে ভুত সেজে বসে আছি।কাজিনরা সব সাজতে ব্যস্ত খুব একা লাগছে।একা থাকলে যেন কষ্টটা আরো বেড়ে যায়।
হঠাৎ পিছন থেকে কেউ জড়িয়ে ধরলো,,পিছু তাকিয়ে দেখি রিয়া।
রিয়া আমার চোখে পানি দেখে আমাকে সামনে এসে জড়িয়ে ধরলো,,,,,
রিয়াঃ প্লিজ এভাবে কান্না করিস না অসুস্থ হয়ে যাবি।আল্লাহ যা করে ভালোর জন্যই করে।আরিয়ান তোর কপালে নেই।
আমিঃ আমি পারছি না রে।কেন এতো কষ্ট ভালোবাসায়?
রিয়াঃ হয়তো আমি করি নাই তাই জানি না ভালোবাসায় কষ্ট কেন।তোকে শুধু এটাই বলতে পারি সব ঠিক হয়ে যাবে।এর থেকে কিছু বলার নেই আমার।কিন্তু তুই এভাবে কান্না করলে আমি চলে যাব।যার জন্য এসেছি সে যদি কাঁদে তাহলে থাকা যায় নাকি,,
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে,,,তুই নাস্তা করেছিস?
রিয়াঃ আরে খাওয়া দাওয়া নিয়ে সমস্যা নেই,এটা আমার নিজের বাড়িই মনে করি যখন ক্ষিদে লাগবে খেয়ে নিব।
আমিঃ তাই বললে হয় নাকি।যা এক্ষনি গিয়ে খেয়ে আস তার পর কথা বলা যাবে।
রিয়াঃ আচ্ছা বাবা যাচ্ছি।
রিয়া চলে গেল। যতই মনটা শক্ত রাখার চেষ্টা করি না কেন পারি না।আজকে আরিয়ানের কথা খুব মনে পড়ছে।আরিয়ানের সাথে বিয়ের স্বপ্ন দেখাটা শুধু মাত্র স্বপ্নই রয়ে গেছে।আচ্ছা ও ঠিক আছে তো?
সবাই নিয়ে গেল হলুদ অনুষ্ঠান শুরু করার জন্য।সবাই কতো খুশি কতো ছবি তুলছে আর আমি শুধু মুখে মিথ্যা হাসি টেনে সবার সাথে তাল মেলাচ্ছি। কিছুক্ষণ পর ছেলের পক্ষ থেকে কিছু মানুষ আসছে আমার হলুদ করার জন্য।
কাজিনরা ওনাদের মেহমানদারি করছে,,,
রিয়া ঋতুর সাথে ছবি তুলে নিজে নেমে আসতেছে হঠাৎ শাড়ি পায়ে পড়ে পরে যেতেই পিছন থেকে কেউ ধরে পেলল,,,
হাসিবঃ বেয়ান সাহেবা একটু দেখে শুনে হাঁটবেন তো।
রিয়া হাসিবের দিকে তাকিয়ে তাকে দেখলো একটা সুদর্শন যুবক তার সামনে দাড়িয়ে আছে।দেখতে মাশাল্লাহ ক্রাশ খাওয়ার মতো।।
রিয়াঃ ধন্যবাদ ধরার জন্য,,
হাসিবঃ ঠিক আছে,,,
রিয়া চলে যতেই,,
হাসিবঃ আপনার পরিচয়টা জানা হলো না।
রিয়াঃ আমি ঋতুর ফ্রেন্ড রিয়া সুলতানা,
হাসিবঃ আমি আদির বিষ্টু হাসিব চৌধুরি।
রিয়াঃ নাইস টু মিট ইউ।
হাসিবঃ সেইম।
রিয়া ওখান থেকে চলে গেলো,,,হাসিব ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে বলল,,কিউটি পুরা
এভাবে কেটে গেল হলুদ রাত।সকাল হতেই পার্লারের মেয়েরা আসলো সাজাতে।
মেরুন কালারের লেহেঙ্গা, ভারি ভারি অর্নামেন্টস,ভারি মেকাপে মনে হচ্ছে আমার ওজন পাঁচ কেজি বেড়ে গেছে।আমার লাইফে ও এতো সাজি নাই।আচ্ছা না সাজলে কি হয় না আজব।
আমার বোন এসে বললো,,,হায় আপু আমি তো তোর প্রেমে পড়ে গেলাম অনেক প্রিটি লাগছে🥰🥰।
আজকে কেন জানি বোনের উপর রাগ হলো না খুব কান্না আসছে।সারাদিন ওর সাথে জগরা করা খুব মিস করবো।ওকে জড়িয়ে ধরলাম,,,
প্রিতুঃ আপু কাঁদিস না মেকাপ নষ্ট হয়ে যাবে।তখন ভাইয়া ভুত ভেবে আর নিয়ে যাবে না।
আমি এবার রাগী লুকে তাকালাম।এ মেয়েটা সিরিয়াস মুডেও এগুলে বলে।
রিয়া আমার সামনে এসে,,
হয় যেন কারো নজর না লাগে।আজকে আমার জানুকে অনেক হট লাগছে😜। ভাইয়া না জ্বলে যায় দেখিস।
আমি এবার ওর দিকে রাগী মুডে তাকালাম।
ও চুপ হয়ে গেল। বাইরে থেকে সবাই বলে ঔঠলো বর এসেছে বর এসেছে।
সবাই চলে গেল,,,,আমার বুকটা ধপকরে উঠলো।আজকে আমি অন্যের হয়ে যাব বিশ্বাসই হচ্ছে না।আচ্ছা আমি এখন পালিয়ে গেলে কি খুব খারাপ হয়ে যাবে
ধুর আমি এগুলো কি ভাবছি।যাওয়ার হলে তো আরো আগেই চলে যেতাম,,আমার পরিবারের জন্য আমাকি বিয়ে করতেই হবে।
কাজী সাহেব আসলো,,,আমাকে রেজেষ্ট্রি পেপারে সাইন করতে বলেছে।কিন্তু আমার হাত চলতেছেও না।চোখ বন্ধ করে আম্মু আব্বুর কথা ভাবলাম।তারপর মুখ খিচে সাইন টা করে দিলাম।কাজী কবুল বলতে বলছে।আমাড মুখে যেন কেউ কস্টিব মেরে দিয়েছে কথাই বের হচ্ছে না।কাজী আবারও বললো,
রিয়া এসে আমার হাতটা শক্ত করে ধরে বলল,
কবুল বলল,,
আমি ও বলে দিলাম কবুল।
সবাই চলে গেল অজরে চেখের পানি যাচ্ছে। রিয়া আমার পাশে এসে বসে বলল,,,,
রিয়াঃ আমি তোকে একটা কথা বলবো। তুই আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করতে পারবি না,আমি এর থেকে বেশি বলতে পারবো না,,
আমি রিয়ার দিকে তাকিয়ে,,
আমিঃ কি??
রিয়াঃ আরিয়ান তোর জন্য সঠিক ছিলো না।ওর আসল রুপ খুব ভয়ংকর। তুই যদি পারিস আদি ভাইয়াকে মেনে নিয়ে সুখে থাকিস।
আমি কিছু বলতে যাবো,,ও আমাকে থামিয়ে বলে,,,
রিয়াঃকি,কেন বলছি এগুলো আমাকে জিজ্ঞেস করিস না আমি বলতে পারবো না প্লিজ।
সবাই আমাকে স্টেজে নিয়ে যাওয়া জন্য আসলো।রিয়ার সাথে আর কাথাও হলো না।সবাই আমাকে নিয়ে যাচ্ছে। আমি ভাবছি রিয়া এটা আমাকে কেন বললো, আরিয়ান কি খারাপ। না না আমার আরিয়ান খারাপ হতে পারে না।নিশ্চয় রিয়া ওকে বুল বুজিতেছে এছাড়া আর কিছুই না।আরিয়ান আমাকে অনেক ভালোবাসে।
আদি স্টেজে বসে আছে সেরোয়ানি পরে।চোখ সামনে যেতেই আদি হা হয়ে গেল।তার সামনে দিয়ে এক হুর পরি আসছে।আদির চায় সময় এখানে থেমে থাকুক আর সে তার প্রেয়সী কে দেখতে থাকুক ।
সবাই আদিকে বললো ঋতুকে স্টেজে তুলতে।আদি ও তার প্রেয়সীকে ওঠাতে হাত বাড়িয়ে দিলো।
ইচ্ছাতো করছে এখান থেকে দৌড়ে পালিয়ে যাই।ঋতু সামনে তাকাতে দেখলো আদি বর সেজে তার জন্য হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।ঋতু না চাইতে হাত বাড়িয়ে দিলো।উঠে সামনে গিয়ে দাড়ালো।
ঋতুর চোখ সামনে যেতেই ওর হাত পা কাঁপতে লাগলো।ও কিভাবে পারলো????
চলবে??