নারীর সতীত্ব পর্ব-১৭

0
1659

#নারীর_সতীত্ব
#পর্ব_১৭
Wohad Mahmud

রাকিবকে কি ভুতের ধরলো না কি যে, মিথ্যা না বলে সব সত্যি কথা বলে দিচ্ছে।

রাকিব বলল মাহমুদ ভাইয়া আমার সাথে খারাপ করে কথা বলেনি। আপু যা যা বলেছে সব মিথ্যা কথা। রাকিবের এমন কথা শুনে ভাবি হা করে তাকিয়ে আছে নিজের ভাইয়ের দিকে। ভাবিও বিশ্বাস করতে পারছে না।

রাকিবের কথা শুনে ভাবি মাথা ঘুরে পড়ে যায়।

আমি বুঝতে পারলাম না এভাবে টাস্কি খেয়ে পড়ে যাওয়ার কারণ কী? সত্যি কথা হজম হয়নি না কি ভং ধরে এভাবে ইচ্ছা করেই পড়ে আছে। আমার মনে হয় ইচ্ছা করেই এমন এক্টিং করছে। কারণ সত্যি কথা ফাঁস হয়ে গেছে। এটাই বাঁচার একমাত্র উপায়। আমি মনে মনে হাসছি আর চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছি।

সাবনাজ কে ইশারায় বললাম ভাবিকে উঠিয়ে খাটের উপর শুয়ে দাও। মা আর সাবনাজ ভাবিকে উঠিয়ে খাটের উপর শুয়ে দেয়।

সাবনাজ ভাবির মা কান্না করছে আর বলছে। আমার মেয়ের কী হলো গো 😭😭‌। কেউ মনে হয় ইচ্ছা করেই আমার মেয়ের সাথে এমন করছে।

মাহমুদা বলল চিন্তা করবেন না। তেমন কিছু হয়নি। রাকিবের কথা শুনে ভাবির এমন হয়েছে।

আমি বাথরুম থেকে পানি নিয়ে এসে ভাবির মুখে পানি ছিটিয়ে দিলাম। কিছুক্ষণ পরে চোখ খুলে ভাবি। আর আমি মনে মনে ভাবছি বাহ কী এক্টিং।

ভাবির জ্ঞান ফেরার পরে মা এসে বলে এখন কেমন লাগছে সাইমা।

ভাবি বলে এখন বেশ ভালোই লাগছে। বুঝলাম না কী হলো হঠাৎ কেমন করে মাথা ঘুরে পড়ে গেলাম। মনে হয় প্রেগনেন্সির জন্য এমন হচ্ছে।

আমি মনে মনে হয় বললাম বাহ ভালো করে মিথ্যা ও বলতে পারে না। প্রেগনেন্সির তিন দিন হতে না হতেই এই অবস্থা। এখনো তো অনেক সময় বাকি আছে। তখন যে কী হবে আল্লাহ মালুম। আগে থেকেই তো আমার সন্দেহ হচ্ছিল যে ভাবি প্রেগন্যান্ট না এখন সেই সন্দেহ আস্তে আস্তে বাস্তবে পরিণত হচ্ছে। এই মহিলা সুবিধার না, নিজেকে বাঁচানোর জন্য সবকিছু করতে হবে।

ওখান থেকে আমি রুমে চলে আসলাম আর ভাবছি রাকিব কেন সব সত্যি কথা বলে দিল? কোনোকিছু আমার মাথায় ঢুকছে না। এতো তাড়াতাড়ি কীভাবে ভালো হয়ে গেল। না কি ভালো হওয়ার ঢং করছে। এর পিছনে আবার বড় কোনো ষড়যন্ত্র নেই তো‌। রুমের মধ্যে পায়চারি করছি আর এসব কথা ভাবছি। ঠিক তখনই সাবনাজ আর মাহমুদা রুমের মধ্যে প্রবেশ করলো। আমাকে এভাবে চিন্তিত দেখে সাবনাজ বলল মাহমুদ এতো কী চিন্তা করো?

মাহমুদা বলল আমি বুঝতে পারছি ভাইয়া এতো কী চিন্তা করছে।

‌সবনাজ বলল কী চিন্তা করছে?

মাহমুদা তখন বলল ভাইয়ার এমন চিন্তিত দেখার কারণ হলো। রাকিব কেনো সত্যি কথা বলে দিল হঠাৎ সবার সামনে। এতো ভালো হওয়ার কারণ কী।

আমি তখন পায়চারি থেমে বললাম- হ্যাঁ একদম ঠিক বলছিস আমি এই কথা ভাবছিলাম। তুই কি জানিস কিছু এসব বিষয়ে? আমার ভয় হচ্ছে রাকিব যদি এভাবে ভালো হওয়ার ঢং করে আমাদের বড় কোনো ক্ষতি করে। আর সাইমা ভাবির চাল হতে পারে এটা।

মাহমুদা তখন হাসতে হাসতে বলে কুল ভাইয়া কুল। এতো চিন্তিত হওয়ার দরকার নেই। মাহমুদার সাথে সাথে সাবনাজ ও হাসতে শুরু করে দেয়।

আমি বিরক্ত হয়ে বললাম তোদের সমস্যা কী? আমি চিন্তা করে করে মরলাম আর তোরা এখানে দাঁত কেলিয়ে হাসাহাসি করিস।

মাহমুদা তখন বলল যা বলল আমি পুরাই হতবাক হয়ে গেলাম। নিচে নিচে এতো কিছু করছে সাবনাজ আর মাহমুদা আর আমি কিছুই জানি না।

মাহমুদা বলল, আমি ভাবির কাছে থেকে শুনেছি রাতে বিচার হওয়ার কিছু আগে যে, রাকিব আর ভাবি মিলে তোর নামে মিথ্যা ষড়যন্ত্র করছে আর বাবা মায়ের সামনে খারাপ বানাতে চায় তোকে। তখন আমি ভাবতে লাগলাম কীভাবে এই যড়যন্ত্র থেকে বাঁচা যাই। আমি সোজা রাকিবের কাছে চলে গেলাম গিয়ে বললাম আপনি কি এখনো আমাকে আগের মতো ভালোবাসেন?

রাকিব তখন বলল হ্যাঁ আমি এখনো আগের মতো আপনাকে ভালোবাসি। তবে আপনি তো আমাকে কখনো পাত্তা দেন নাই। এখনো দেন না।

আমি তখন বললাম আমি তাকেই নিজের মতো আপন করে নিই যারা সব সময় সত্যিকারের পথে চলে। সব সময় সত্যি কথা বলে আর যত বড় বিপদ হোক না কেন সব সময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে ন্যায়ের সজ্ঞ দেয়।

রাকিব তখন বলে আপনাকে পাওয়ার জন্য কী করতে হবে আমাকে। আমি আজ থেকে সব সময় সত্যের পথে চলব। বলেন কী করতে হবে?

বেশি কিছু করতে হবে না। জানেন তো আজ আজকে আপনার বোন মাহমুদ ভাইয়ের নামে বাসায় বিচার ডাকবে? মাহমুদ ভাইকে মিথ্যা বলে বাবা মায়ের সামনে খারাপ করবে।

হ্যাঁ জানি আমি আজ রাতে মাহমুদ ভাইয়ের নামে বিচার হবে বাড়িতে।

তাহলে সব সত্যি সত্যি বলবেন। যা যা হয়েছিল একটাও মিথ্যা না। আমি বলছি না যে, আমার ভাইয়ের পক্ষে হয়ে কথা বলতে। শুধু সত্যি কথা বলবেন।

রাকিব তখন বলে হ্যাঁ ঠিক আছে। আমি তাই করব সব সত্যি কথা বলব।

আচ্ছা ঠিক আছে মনে থাকে যেন, সব সত্যি কথা বলবেন। আর যদি মিথ্যা বলেন তাহলে আমাকে ভুলে যান সত্যি বললে আমি আপনার বিষয় টা ভেবে দেখব।

আর বাকিটা তো তুই দেখলি কী হলো। ভাইয়ের কথা শুনে বোন টাস্কি খেয়ে পড়ে গেল। বিষয় আমার কাছে বেশ ভালোই লাগছে। টাস্কি খাইছে। বাসায় এমন চলতে থাকলে আর কমেডি মুভি দেখা লাগবে না।

আমি হাঁ করে তাকিয়ে আছি মাহমুদার দিকে।‌ মনে হচ্ছে আমি আর আমি নেই অন্য কোথাও হারিয়ে গেছি।‌ আমার বোন তো বেশ ভালোই সত্যি কথা বাহির করে নিয়ে আসতে পারে।

মাহমুদা বলে হা করে থাকিস না মাছি ঢুকে যাবে। মাহমুদার কথায় আমার হুঁশ ফিরে আসল।

আমি বললাম এতো কিছু করে ফেললি নোনদ ভাবি মিলে কিন্তু একবারের জন্যও আমাকে জানানোর প্রয়োজন মনে করলি না তোরা।

সাবনাজ তখন বলল তোমাকে যদি সবকিছু বলে দিতাম তাহলে তোমাকে সারপ্রাইজ দিতাম কেমন করে। হঠাৎ করেই তোমাকে চমকে দিলাম। তো বলো কেমন লাগলো আমাদের সারপ্রাইজ।

আমি বললাম তোমাকে অনেক ইনসেন্ট ভাবতাম আমি কিন্তু দেখছি যে শয়তানি করে অনেক সুন্দর ভাবে সারপ্রাইজ দিতে পারো। আর যেটাই হোক সারপ্রাইজ টা আমার বেশ পছন্দ হয়েছে।

মাহমুদা কে বললাম রাকিব তো তোর কথা মতো কাজ করে দিয়েছে। আর বলেছিলি যদি সত্যি কথা বলে তাহলে রাকিবের বিষয় টা ভেবে দেখবি। তাহলে এখন কী করবি? রাকিবের সাথে বিয়ে জন্য কী রাজি হয়ে যাবি?

তুই কি পাগল হয়ে গেছিস ভাইয়া। কুকুরের লেজ কখনো সোজা হয় না। আমি বলেছিলাম তার বিষয় টা ভেবে দেখব কিন্তু এটাই বলি নাই যে তার সাথে বিয়ে করতেই হবে। মাঝে মাঝে সত্যি বাহির করার জন্য মিথ্যা আশ্বাস দিতে হয়, না সেই সত্যি টা চাপা থাকে যায়।

আমি তখন বললাম আচ্ছা ঠিক আছে বুঝলাম। তুই তো রাকিবকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়েছিস কিন্তু রাকিব তো জানছে না এটা মিথ্যা। রাকিব তো এটা সত্যি মনে করেছে। কিন্তু যখন জানতে পারবে এটা মিথ্যা আশ্বাস ছিল তাহলে তখন কী করবি তুই?

আরে ভাইয়া বাদ দে এসব কথা। পরের কথা পরে ভাবা যাবে। এখন যেটা হচ্ছে সেটা নিয়ে ভাব।

আমি বললাম না এটা হতে পারে না মাহমুদা। সত্যি জানার পরে খালি হাত নিয়ে বসে থাকবে রাকিব। আমাদের ক্ষতি করার চেষ্টা করবে। তাই আমি একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

সাবনাজ বলল এত তাড়াতাড়ি আবার কী সিদ্ধান্ত নিলে?

আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, আম রাকিব কে কয়েকবার পরীক্ষা করব। সে কী আগের থেকে ভালো হয়েছে , মাহমুদার জন্য কী সত্যিই তার মনে ভালোবাসা আছে না কি এটা কোনো ভাবির চাল যে, মাহমুদা কে নিজের ভাইয়ের সাথে বিয়ে দিয়ে এই বাড়ি নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে আরো অশান্তি সৃষ্টি করবে। যদি সে সত্যিই ভালো হয়ে যায় তাহলে আমি রাকিবকে বিয়ে মাহমুদার সাথে ঠিক করব।

সাবনাজ আমাকে বলে তুমি মনে হয় পাগল হয়ে গেছো। এটা কোনোদিন হতে পারে না। রাকিব এখনো ভালো হয়নি। যদী ভালো হতো তাহলে বোনের সাথে মিলে তোমাকে নিয়ে যড়যন্ত্র করত না।‌ রাকিবের সাথে বিয়ে হলে সাইমা ভাবি সবাইকে হাতের পুতুল বানিয়ে রাখবে। মাহমুদার প্রতি রাকিবের কোনো ভালোবাসা নেই।

মাহমুদা কিছু বলছে না চুপ করে বসে পড়ল সোফার উপরে। কিছুক্ষণ পর বলল আমি ওকে মিথ্যা কথা বলেছিলাম যদি তোকে কেউ খারাপ না বলে আর ভাবির নোংরা ষড়যন্ত্র ফাঁস হয়ে যায়। কিন্তু তোর যদি ভালো মনে হয় রাকিবের সাথে বিয়ে করলে ভালো হয় তাহলে আমি তাই করব। আমি কোনোদিন তোর কথা ফেলতে পারব না।

সাবনাজ বলে তুমি পাগল হয়ে গেছো মাহমুদা। আমি বেঁচে থাকতে কোনোদিন এই বিয়ে হতে দিব না।

ঠিক তখনি রাকিব বাইরে থেকে বলে আসতে পারি?

চলবে,,,

বি.দ্র: ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে