নারীর সতীত্ব পর্ব-১১

0
1806

#নারীর_সতীত্ব
#পর্ব_১১
Wohad Mahmud

ভাবি তখন বলে তখন টাকা ছিল না মা। থাকলে অবশ্যই দেয়া হতো।

আমি তখন হাসতে হাসতে বললাম তার পরেই তো বোনের শপিং এর জন্য টাকা দিলেন বিকাশ করে এটাও তো সঠিক, এটা কেন বলছেন না ভাবি মায়ের কাছে?

ভাইয়া কিছু বলতে যাবে ঠিক তখনি মা বলে আমি তোমার থেকে কিছু শুনতে চাই না। এখানে যা বলার মাহমুদা বলবে। আমি জানি মাহমুদা কখনো মিথ্যা বলবে না। কাল রাতে মাহমুদ যা বলেছে সেটা কি সত্যি মাহমুদা?

হ্যাঁ মা আমি বড় ভাইয়ার কাছে গিয়েছিলাম ফর্ম ফিলাপ এর টাকা নিতে কিন্তু, ভাবি মানা করে দেয়, বলে এখন টাকা নেই বাবার থেকে নিতে। কিন্তু বাবাই বড় ভাইয়ার কাছে থেকে নিতে বলেছিল‌। কিন্তু আমি আবার কীভাবে গিয়ে বাবার থেকে টাকা চাইতে পারি। বাবার কাছে যদি টাকা থাকতো তাহলে বাবাই আমাকে দিয়ে দিত। সে জন্যই আমি বাবার কাছে টাকা চেয়েছিলাম না। মাহমুদ ভাইয়ের কাছে গিয়েছিলাম। আর মাহমুদা ভাইয়া টাকা দিয়েছিল। আর বলেছিল টাকা আমি দিয়েছি এটা যেন, কেউ জানতে না পারে। আমি বলে দিতে চাইলে বলে না, বলতে হবে না। মা বাবা জানলে ভাইয়া আর ভাবি মা বাবার সামনে খারাপ হয়ে যাবে।

ভাবি তখন বলে সব ঠিক আছে তখন টাকা ছিল না। থাকলে অবশ্যই দিতাম। কিন্তু এটা ভুল আমার বোনকে টাকা দিয়েছি শপিং এর জন্য। মাহমুদা ও তো আমার বোনের মতো একদম। কেন আমি তার সাথে এমন করব।

আমি বললাম প্রমাণ ছাড়া কথা বলি না। নিচের গিয়ে ভাইয়া যখন টাকা দেয় তখন আমি দোকানের পাশে বসে চা খাচ্ছিলাম তখন তুমি এসে টাকা পাঠালে আর ভাবি কে ফোন দিয়ে বললে তোমার বোনের শপিং এর টাকা দিয়ে দিছি আর বাসায় যেন এটা কেউ না জানতে পারে । কারণ মাহমুদার টাকা দিতে দাও নাই তুমি কাল এই শপিং এর টাকা দেওয়া কারণে। তারপর অফিসে চলে গেল ভাইয়া। এটাও কি মিথ্যা কথা বললাম আমি?

ভাইয়া আর ভাবি কোনো কথা বলছে না। নিচের দিকে তাকিয়ে আছে লজ্জা মুখ নিয়ে।

মা তখন বড় ভাইয়াকে বলে। তুমি কাকে কী দিবে না কি সেটা তোমার ব্যাপার। কিন্তু যেটা আগে প্রয়োজন সেটা আগে করতে হবে। মনে আছে তুমি যখন চাকরি পেয়েছিলে তখন বলেছিলাম আজ থেকে তোমার ছোট বোনের দায়িত্ব তোমার উপর। তুমিও বলেছিলে আমি কখনো আমার বোন কে অভাব বুঝতে দিব না।‌ কিন্তু তুমি তোমার কথা রাখতে পারনি। নিজের শালি কে শপিং এর টাকা দিতে পারো কিন্তু নিজের বোনের ফর্ম ফিলাপ এর টাকা দিতে পার না। দিতে মানা নেই, কিন্তু শপিং এর টাকা পরে দিতে পারতে। বিয়ের আগে একদম এমন ছিলে না। তুমি তোমার বউয়ের গোলাম হয়ে গিয়েছো। কোনটা সঠিক আর কোনটা ভুল সেটা তোমার মনে নেই।

সত্যিই আমাকে অনেক মর্মাহত করেছো। কিছু বলার নেই আমার। আগে তোমার দুজন আমার কাছে যেমন রত্নের মতো ছিলে এখন আর নেই। মন থেকে তোমাদের প্রতি যেমন ভালোবাসা ছিল সেটা আর এখন থাকবে না। যা থাকবে শুধুমাত্র মানুষ দেখানো। কথাটা শেষ করার সাথে সাথে মায়ের চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ল। চোখের পানি যাতে কেউ দেখতে না পারে সেজন্য মা উঠে চলে যেতে চাইলো। মায়ের চোখের জল কেউ দেখতে না পারলেও আমি দেখতে পেরেছি।

আমি আর মাহমুদা ও ওখান থেকে উঠে চলে আসলাম। ভাইয়া আর ভাবি চুপ করে বসে আছে লজ্জা মুখ নিয়ে। আর কি বলবে, বলার মতো কোনো মুখ নেই। সব সত্য আজ বাহিরে হয়ে গিয়েছে। সে জন্যই বলে সত্য কখনো চাপা থাকে না। একদিন না একদিন প্রকাশ পাবেই।

রাত হয়ে গিয়েছে আমি রুমে এসে সাবনাজের সাথে কথা বলছিলাম। তখন মাহমুদা আমার রুমে এসে বলে। আজকের বিষয় টা একদিক থেকে যেমন ভালো হয়েছে ঠিক অন্যদিক থেকে খারাপ হয়েছে।

আমি বললাম কেন, আবার কী ভালো হয়েছে আর কী খারাপ হয়েছে?

মাহমুদা বলে আজ সত্য টা মায়ের সামনে চলে এসেছে। আর মা বাবাকেও বলে দিবে ভাইয়া ভাবির এই কথা। এতদিন তোর প্রতি মায়ের যে অবহেলা ছিল সেটা আর থাকবে না।

আর খারাপ হলো এটা জানার পরে মা অনেক কষ্ট পেয়েছে। আজ দ্বিতীয় বার আমি মায়ের চোখে পানি দেখলাম। বাবার হার্ট অ্যাটাক এর সময় আর আর ভাইয়ার এই কথা শোনার পর। আজ আমি অনেক ভালো করেই বুঝতে পারছি কেন সেদিন আমাকে মানা করছিলি এই কথাটা যেন মা বাবা না জানতে পারে।

কিন্তু চিন্তা হচ্ছে। বাবা হার্ট অ্যাটাক করছে একবার। যদি এই কথা শোনার পরে আবার যদি বাবার খারাপ কিছু হয়ে যায় তখন কী হবে?

আমি তখন বললাম চিন্তা করার দরকার নেই বাবার কিছুই হবে না আর কিছুই জানতে পারবে না।

কেন জানতে পারবে না? মা তো অবশ্যই এই কথা বাবাকে বলবে। কারণ মা কোনো কথা বাবার থেকে লুকিয়ে রাখে না।

কারণ মায়ের কিছুটা হলেও এসব বিষয়ে জ্ঞান আছে। মা জানে এসব শুনলে বাবার অবস্থা আরো খারাপ হয় যাবে। আর সেই জন্যই তো বাবার রুম থেকে বাহির এসে আমাদের সাথে কথা বলল। মা জানে এসব কথা শুনলে বাবা অনেক কষ্ট পাবে আবার হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনা আছে। সেই জন্যই বাবার সামনে কিছু বলে নাই।

মাহমুদার সাথে কথা বলে আমি মায়ের কাছে গেলাম। গিয়ে দেখি বাবা ঘুমিয়ে আছে। আর মা বাবার পাশে বসে নিরবে কান্না করছে।

আমার আসা দেখে তাড়াতাড়ি করে চোখ পানি মুছে বলে আই বাবা এখানে এসে বস।

আমি গিয়ে মায়ের পাশে বসলাম। মায়ের হাত ধরে বললাম তোমার একটা ছেলে দূরে সরে গিয়েছে কী হয়েছে? কিন্তু অন্য একটা ছেলে সর্বদা তোমার পাশে আছে আর থাকবে।আমি জানি তুমি ভাবছো, বড় ভাইয়া বিয়ের আগে এমন ছিল না কিন্তু পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। নিজের বাবা মা আর বোনের কোনো খোঁজ খবর নেই না। ছোট ছেলেও যদি এমন পরিবর্তন হয়ে যায় তখন কী হবে। কিন্তু মা তুমি আমার উপর বিশ্বাস রাখো আমি কোনোদিন পরিবর্তন হবো না। আগে যেমন ছিলাম ঠিক তেমন থাকব।

মা বলে আমার নিজের কোনো চিন্তা নেই। তোর বাবার জন্য চিন্তা হচ্ছে অনেক। আমি চাই এসব বিষয়ে তোর বাবা কিছু না জানুক। কারণ যদি জানে তাহলে অনেক বড় সমস্যা হবে। সব সময় হাসিখুশি থাকতে হবে।

আমি বললাম চিন্তা করার দরকার নেই কিছু হবে না।‌ তুমি এখন ঘুমিয়ে যাও অনেক রাত হয়েছে। কালকে কথা হবে। আমি মায়ের রুমে থেকে এসে ঘুমিয়ে পড়লাম। তারপর সকালে উঠে ফ্রেশ হয়ে বাজারে করতে গেলাম। বাজার থেকে এসে দেখি সাবনাজের বাসা থেকে মানুষ এসেছে। সাবনাজ, সাবনাজের ছোট ভাই আর বাবা এসেছে। আমি কাছে গিয়ে সবাইকে সালাম দিলাম। সাবনাজ বাবার কাছে গিয়ে বসে আছে। আমিও গেলাম আমার সাথে সাবনাজের ভাই ও বাবা যায়। আর মা বাজার নিয়ে রান্না ঘরে যায়।

সাবনাজ বাবার ঔষধ খাওয়াচ্ছে। রান্না ঘরে মা একা আছে। মাহমুদা নেই টিউশনিতে আছে। অন্য সময় হলে ভাবি কে গিয়ে ডেকে নিয়ে আসত কিন্তু কালকের ঘটনার জন্য যায়নি। মা সবার জন্য চা বানিয়ে নিয়ে আসছে। তখন ভাবি এসে বলে আমার কাছে দেন আমি‌ গিয়ে দিয়ে আসছি। মা দুই বার বলল থাক আমি নিয়ে যেতে পারব। কিন্তু এক প্রকার জোর করেই নিয়ে যায়। হাতে নিয়ে বলে মা ‘চা’ তো অনেক ঠান্ডা গরম করে নিয়ে আসি।

মা রাগে রাগে বলে যেটা ভালো মনে হয় সেটা করো।

চা গরম করে নিয়ে এসে একে একে সবাই কে চা দেয়। সাবনাজকে চা দিতে যাবে তখন সাবনাজ বলে থাক আমার চা লাগবে না ভাবি। তাও জোর করে দেওয়ার সময় গরম চা সব হাতের উপরে ফেলে দেয় হাত পুড়ে যাওয়ার মতো হয় আর বাকিটা শাড়িতে পড়ে। তারপর ভাবি ওহ স্যরি স্যরি ভুল করে পড়ে গিয়েছে। সাবনাজ কিছু বলে দৌড়ে বাথরুমে চলে যায়।

আমার বুঝতে বাকি রইল না। ভাবি এটা ইচ্ছে করে করছে। কিন্তু প্রমাণ নেই। সবাই ভাবছে এটা ভুল করে হয়েছে। আর এমন ভাবে স্যরি বলছে আর দুঃখ প্রকাশ করছে মনে হচ্ছে ভুল করে হয়েছে। আর যে কেউ বিশ্বাস করে ফেলবে এটা ভুল করে হয়েছে। কারণ আমি এই জল্লাদ মহিলাকে বেশ ভালো করেই চিনি।

সাবনাজের বাবা আর ভাই সাবনাজের পিছনে যেতে চাইলে আমি বলি আপনারা বসেন আমি গিয়ে দেখছি। আমি গিয়ে দেখছি কী হয়েছে। গিয়ে দেখি হাতে পানি ঢেলছে আর যন্ত্রণায় চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। আমি তাড়াতাড়ি করে ফ্রিজ থেকে বরফ নিয়ে এসে সাবনাজের হাতে লাগিয়ে দিলাম। তারপর আমার রুমে নিয়ে টেবিল ফেনের নিচে রাখলাম সাবনাজের হাত যাতে যন্ত্রণা কিছুটা হলেও কমে যায়। ঘরে মলম ছিল তারপর হাতে লাগিয়ে দিলাম। চা টা অনেক গরম ছিল হাত ফুলে গিয়েছে আর চামড়া কিছুটা ঝলসে যাওয়া মতো হয়েছে।

এবার আমি বুঝলাম ভাবি কেন তখন বলল চা অনেক ঠান্ডা আর গরম করতে হবে। এই পরিকল্পনা ভাবি মনে আগে থেকেই ছিল ভাবির মনে। কাল রাতের অপমানের বদলা সাবনাজের উপর দিয়ে তুলছে। তারপর চা আরো গরম করে নিয়ে এসে এমন জঘন্য কান্ড ঘটিয়েছে।

শাড়িটা চা পড়ে খারাপ হয়ে গিয়েছে চেঞ্জ করতে হবে কিন্তু সাবনাজ তো চেঞ্জ করতে পারবে না। হাত দিয়ে কিছু ধরতে পারবে না। কোনো উপায় না পেয়ে আমি চেঞ্জ করিয়ে দিলাম। চেঞ্জ করা শেষ হলে আমি বলি তুমি এবার রেস্ট নাও , মলম দিয়ে দিছি ঠিক যাবে তুমি খুব তাড়াতাড়ি। সাবনাজ আমাকে বলে প্লিজ তুমি,,,,,,,

চলবে,,,,,?

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে