নারীর সতীত্ব পর্ব-০৮

0
1801

#নারীর_সতীত্ব
#পর্ব_০৮
Wohad Mahmud

কালকে মায়ের ফোনে কল দিলাম কিন্তু মা ফোন রিসিভ করল না। পরে ফোন ব্যাক করল না। বুঝছি না, মা আমার সাথে এমন করছে কেন? আমি না হয় মানলাম যখন ফোন দিয়েছিলাম ফোনের কাছে ছিল না কিন্তু পরে তো দেখেছে তখন তো ফোন ব্যাক করতে পারে।

সব সমস্যার মূল হলো আমার বড় ভাবি। আমাকে আর সাবনাজ কে মায়ের থেকে দূরে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। মায়ের চোখে খারাপ বানানোর চেষ্টা করছে। কতটা নিচু মনের মানুষ হলে এমনটা করতে পারে। আমি ভেবে অবাক হয়ে যাই এমনটা কীভাবে করতে পারে একটা মেয়ে। লজ্জা শরম বলতে কিছু নেই।

এসব কথা ভাবতে ভাবতে হঠাৎ দেখি আমার ছোট বোন মাহমুদার কল এসেছে। আমি তাড়াতাড়ি করে রিসিভ করলাম। ফোন রিসিভ করার সাথে সাথে বলে এতক্ষণ কোথায় ছিলি তুই‌‌। সেই কখন থেকে ফোন দিয়ে যাচ্ছি তোকে, কিন্তু ফোন রিসিভ করিস না কেন?

আমি বললাম ফোনের কাছে আমি ছিলাম না বোন। একটু খাওয়া দাওয়া করে ছাদে গিয়েছিলাম তখন মনে হয় তুই ফোন দিয়েছিস। কী হয়েছে এবার বল অনেক জরুরী মনে হচ্ছে।

বাবা এক্সিডেন্ট করছে। হাতে পায়ে অনেক ব্যথা পেয়েছে। পায়ের হাড় সরে গিয়েছে মনে হয়। তুই কালকে চলে আই। এসে বাবাকে দেখে যা। আর আসার সময় সাবনাজ ভাবিকে নিয়ে আসবি।

আমি বললাম না থাক। মাত্র দুই দিন এখানে এসেছি। আমি কাল না, আজকে বাসায় চলে আসছি। সাবনাজ কে নিয়ে যাচ্ছি না। আমি কয়েকদিন পরে এসে আবার সাবনাজ কে নিয়ে যাব‌।

মাহমুদা বলে তুই পাগল আছিস এখনো। ভাবি কে নিয়ে আই।তুই তো জানিস বড় ভাবি কেমন মানুষ। তুই যদি ছোট ভাবি কে সাথে না নিয়ে আসিস তাহলে আবার বড় ভাবি মায়ের কাছে গিয়ে তাল লাগাবে। তার থেকে ভালো হয় ভাবিকে সাথে করে নিয়ে আই।

আমি বললাম এখন কী আবার বড় ভাবির ভয়ে ভয়ে চলতে হবে আমাকে‌। কাউকে দেখে ভয় পাই না আমি। আচ্ছা দাঁড়া ঠিক আছে আমি সাবনাজ কে গিয়ে বলছি যদি আসতে চায় তাহলে আজ দুপুরের পরে আমি সাথে করে নিয়ে আসব‌। না আসলে আমি তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে নিয়ে আসতে পারব না।

আচ্ছা ঠিক আছে ভাবিকে বলে দেখ। বাবার অসুস্থতার কথা শুনলে ভাবি না করবে না। দেখবি তোর সাথেই আজকে চলে আসবে বাবা কে দেখতে।

আচ্ছা ঠিক আছে সমস্যা নেই। যদি আসে তাহলে নিয়ে আসব। নতুন নতুন বুঝতেই তো পারছিস জোর করতে পারছি না। সব সময় সবকিছুর সিদ্ধান্ত একা নিতে গেলে হয় না। অপর পক্ষের ও অনুমতি নিতে হয়। আচ্ছা তাহলে থাক আজ বিকালে বাসায় আসছি। এটা বলেই ফোন কেটে দিলাম। তারপর কল হিস্ট্রি দেখি দশ বার ফোন দিয়েছে আগে। আমি তখন খুব সম্ভবত খাওয়া দাওয়া করছিলাম। সাবনাজ ও রুমে ছিল না। নিচে ছিল খাওয়া দাওয়া করার জন্য।

তারপর রুম থেকে নিচে নেমে গেলাম। রুমের মধ্যে আর ভালো লাগছে না তাই ফ্রেশ হাওয়া খেতে গেলাম। সাবনাজ কে না বলে বেরিয়ে গেলাম। হাঁটতে হাঁটতে অনেকদূর চলে আসলাম। তারপর মাহমুদার ফোনে একশত টাকা ফ্লাক্সিলোড করে দিলাম। আমি ছাড়া ওর অভাব পূরণ করার মতো কেউ নেই। বড় ভাই তো খোঁজ নিয়েও দেখে না বোনের কিছু লাগবে কী। সব কিছু শালির পিছনে খরচ করতে হয়। যে জল্লাদ একট বউ না করেও উপায় নেই।

কিছুক্ষণ পরে সাবনাজের ফোন আসে। তারপর ফোন রিসিভ করলাম।

হ্যালো মাহমুদ, তুমি কোথায় আছো সারা বাড়িতে তোমাকে খুঁজে খুঁজে পেলাম।

এইতো আমি একটু বাইরে আছি। কেন কী হয়েছে! মনে হচ্ছে খুব জরুরি।

হ্যাঁ অনেক জরুরী তাড়াতাড়ি বাসায় আসো। তারপর বাড়ির পথে হাঁটা দিলাম। কিন্তু হাঁটতে হাঁটতে অনেক দূরে চলে এসেছি। হাঁটতে হাঁটতে গেলে অন্তত আধা ঘন্টা তো লাগবেই কম হলেও। তাই একটা রিকশা নিয়ে শ্বশুর বাড়ির দিকে রওনা দিলাম।

বাসায় এসে দেখি অনেক আয়োজন চলছে। রুম সাজানো হচ্ছে। আমি সাবনাজ কে ডেকে বললাম। বাসায় এতো আয়োজন কিসের? বাসায় নতুন জামাই এসেছে বলে কি এতো বড় আয়োজন করতে হবে। ঘর সাজানোর কী দরকার ছিল এভাবে।

সাবনাজ বলল আরে তোমার জন্য না। তোমার জন্য এসব করলে তো আগেই করত।

আমি মনে মনে বললাম হাইরে, আমি তো নিজেকে অপমান বোধ করছি এখন। কী দরকার ছিল বলার যে এসব আমার জন্য করছে। না বললেই তো ভালো হতো। সরাসরি বলে দিতাম এসব কিসের জন্য করছে। তারপর আমি বললাম এসব কিসের জন্য?

সবনাজ বলল আজ আমার ভাবির মেয়ের জন্মদিন। সেই জন্যই এতো আয়োজন। আজ ৫ম জন্মবার্ষিকী।

আমি মনে মনে ভাবলাম সাবনাজ কে বলব কী আজ আমাদের যেতে হবে বাবা অসুস্থ। না কী বলব না। যদী বলি তাহলে আমাকে মানা করতে পারবে না। কিন্তু বাসায় এতো বড় আয়োজন এই বিপদের সময় আমি আর ওকে নিয়ে যেতে চাচ্ছি না। আমি ভাবলাম তাও একবার অন্যভাবে বলে দেখি যেতে পারবে কী! এই আয়োজন আমাদের বাড়িতে যেতে পারে কী। আমি ঘুরিয়ে বললাম। আরে এসব আয়োজন বাদ দাও তো চলো আজ রাতে আমরা দুজন অন্য কোথাও থেকে ঘুরে আসি।

সাবনাজ বলল পাগল হয়ছো তুমি মাহমুদ। ভাবির মেয়ে কান্না করবে আমি না থাকলে। তোমাদের বাড়িতে ছিলাম তাই অনেক কান্না করেছিল। আমাকে ছাড়া একদম থাকতে চায় না। সব আয়োজন আমাকে নিজে হাতে করতে হবে। আজ না প্লিজ অন্য কোনদিন যাব। আজ আমি কোথাও যেতে পারব না এসব রেখে।

আমি মনে মনে ভাবলাম থাক তাহলে আর জোর করছি না। আমার কথা ফেলতে পারবে না। কিন্তু এভাবে আমি তার মনের বিরুদ্ধে কিছু করতে পারি না আমি। এখন যদি বাবার এক্সিডেন্টের কথা বলি তাহলে আমার সাথে চলে যাবে এই আয়োজন ফেলে, তার মন খারাপ হবে এখান থেকে চলে গেলে আর সাবনাজের বোনের মেয়েও কান্না করবে। সব মিলিয়ে এতো সুন্দর একটা আয়োজন নষ্ট হয়ে যাবে। আবার যদি সাবনাজ কে না বলি তাহলে পরে জানতে পারলে রাগ করবে আমার উপর। আবার না নিয়ে গেলে ওইদিকে ভাবি আছে মায়ের সাথে গিয়ে কাটি মারবে। এমনিতেই আমার আর সাবনাজের উপরে রেগে আছে মা।

তবে আমার কাছে যেটা সঠিক মনে হবে আমি সেটাই করব। সঠিক ভুল বিচারের সময়, কে বউ, কে মা আর কে ভাবি সেটা দেখতে গেলে চলবে না।

আমি সবকিছু মাথা থেকে ঝেড়ে ফেললাম। যা হয় হবেই আমি একা যাব। সাবনাজ কে কিছু বলব না। আমি তাকে এসব সমস্যার মধ্যে নিতে চাই না। আর বাকি রইলো মা আর ভাবির কথা। তারা যা মনে করে করুক যা বলে বলুক আমি একাই বাড়িতে যাব আজকে।

দুপুরে খাওয়া দাওয়া করে রুমে এসে সাবনাজ কে বললাম আমাকে আজ একটু বাড়তি যেতে হবে। পরশুদিন আবার চলে আসব।

সাবনাজ বলে কী বলছ মাহমুদ তুমি এসব। মাত্র দুই, তিন দিন হলো আমরা এখানে এসেছি। আর আজকে তুমি চলে যাবে। এক সপ্তাহ থেকে তো যাবে। তারপর এখানে তেমন আসবে না তুমি, আমারো আসা হবে না। তারপর নিজের সংসারে ব্যস্ত থাকব।

আমি সাবনাজের গালে হাত দিয়ে বললাম চিন্তা করো না। তোমার স্বামী হারিয়ে যাচ্ছে না। পরশুদিন আবার তোমার স্বামী তোমার কাছে ঠিক মতো ফিরে আসবে।‌ তুমি থাকো আমি যাব আর আসব।

সাবনাজ বলল আমি তোমার সাথে যায়। আমি বললাম না না যেতে হবে না। তুমি এখানে জন্মদিন উদযাপন করো। তোমাকে যেতে হবে না। বাবা একটু জরুরি ডেকেছে। তারপর তোমার স্বামী তোমার বুকে ফিরে আসবে। সাবনাজ কে অনেক বুঝিয়ে ওর পরিবার কে বুঝিয়ে এক রকম মন খারাপ করে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম আমি।

দুই ঘন্টা জার্নির পরে আমি বাড়িতে পৌঁছে কলিং বেল বাজালাম। কিছুক্ষণ পরে দরজা খুলে দেয়। দরজা টা আর কেউ না ভাবি খুলে দিচ্ছে। বুঝলাম না আজ অন্যরকম কেন হলো। ভাবি আজ প্রায় দুই বছর আমাদের এখানে আছে কোন দিন দেখলাম না গেট খুলে দিতে আজ হঠাৎ গেট খুলে দিচ্ছে বুঝলাম না। দরজায় দাঁড়িয়ে আমার পিছনে কি যেন খুঁজছে ট্যারা চোখে। আমি বললাম,,,,

চলবে,,,,,

বি.দ্র: ভুল ত্রুটি ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে