নারীর সতীত্ব পর্ব-০২

0
3006

#নারীর_সতীত্ব
#পর্ব_০২
Wohad Mahmud

তারপর মা বলে রুমাল দেখা এবার আমাকে, আর কোনো অযুহাত নয়। আমি বললাম আচ্ছা ঠিক আছে মা, রুম থেকে নিয়ে আসছি। রুমাল আমার পকেটে ছিল কিন্তু তাও বললাম রুম আছে নিয়ে আসি।
তারপর এসে রুমাল টা মায়ের হাতে দিলাম।

মা আমার দিকে তাকিয়ে আছে অল্প কিছুক্ষণ ধরে । আমি বললাম কি হলো এভাবে তাকিয়ে আছো কেন?
যাক রুমাল টা দেখে খুশি হলাম। রক্ত লেগে আছে রুমালে। দেখেছিস আমি সত্যি বলেছিলাম তুই তো আমার কথা বিশ্বাস করলি না। এখন ঘরে যা সারাদিন বাইরে ছিলি। বউ এর কাছে যা কিছু দরকার আছে কি দেখ। কোনো কিছু প্রয়োজন বা সমস্যা হলে আমাকে বলবি।

আমি বললাম ঠিক আছে মা। তারপর মুচকি হেসে রুম চলে আসলাম। মায়ের মুখেও হাসি আর স্ত্রী কিছু জানতে পারলো না। কিছু কিছু সময় মিথ্যা বলার দরকার আছে তাতে পরিবেশ সুন্দর থাকে।

রুমে এসে সাবনাজ আমার হাতের দিকে তাকিয়ে বলে আপনার হাত দিয়ে তো রক্ত পড়ছে কি হয়েছে হাতে?

আমি বললাম তেমন কিছু না আসার সময় গেটের দরজায় চাপ লেগে আঙ্গুল দিয়ে রক্ত পড়ছে। চিন্তা করতে হবে না অল্প একটু লেগেছে ঠিক হয়ে যাবে।

তারপর সাবনাজ বলল এদিকে আসেন আমি রক্ত মুছে ব্যান্ডেজ করে দিই। আমি মানা করতে গেলাম কিন্তু না বলার সাথে সাথে মুখ থেকে কথা ঘুরিয়ে নিয়ে বললাম আচ্ছা ঠিক আছে দাও। এই কারণেই মানা করলাম না স্ত্রী অনেক ভয়ে আছে হাত ব্যান্ডেজ করার বাহানায় স্ত্রী প্রথম স্পর্শ পেয়ে যাব। হাজার হলেও স্ত্রীর প্রথম স্পর্শ সে তো এক অমৃত স্বাদ। তারপর স্ত্রী নিজ হাতে রক্ত পরিষ্কার করে ব্যান্ডেজ করে দেয়। তারপর একটা ব্যথার ঔষধ খেয়ে নিই।

পরক্ষনেই আমার মনে আসে কাল থেকে ভাবিকে দেখছি না কেন? কোথায় গিয়েছে? আমার এখনো একটা কথা মনে আছে ভাইয়ার বিয়ের কয়েক সপ্তাহ পরে ছোট বোনের এইচএসসি পরীক্ষার ফি চেয়েছিল ভাইয়ার কাছে কিন্তু ভাবি দিতে দিয়েছিল না। ভাবি বলেছিল টাকা নেই এখন দেয়ার মতো। এবারের মতো তোমার বাবার কাছে থেকে নাও পরেরবার থেকে নিও। বোন তখন কান্না করতে করতে আমার কাছে এসে বলেছিল ভাইয়ার কাছে টাকা চাইলাম রেজিস্ট্রেশন ফি এর, কিন্তু ভাবি দিতে দিল না।

আমি বললাম সমস্যা হতেই পারে সব সময় টাকা থাকে না।বাবার কাছে থেকে চেয়ে নিবি।

দরকার হয় পরিক্ষা দিব না। তাও বাবার কাছে থেকে নিব না। বাবাই বলেছেন বড় ভাইয়ার কাছে থেকে নিতে।

আমার কাছে তখন টাকা ছিল কিছু আজ থেকে প্রায় দুই বছর আগে। তখন বেকার ছিলাম আমি। ছয় মাস মতো হয়েছে চাকরি পেয়েছি। পিকনিকে যাওয়ার জন্য টাকাগুলো গুছিয়ে ছিলাম অনেকদিন ধরে। সেদিন নিজের ইচ্ছা টা মাটি করে টাকাগুলো বোনের হাতে দিয়েছিলাম আর বলেছিলাম আমার সামনে আর কখনো কান্না করবি না। তুই তো জানি তোর চোখের পানি সহ্য হয় না আমার। আর হ্যাঁ একটা শুনে রাখ বাবা আর মা কে বলবি না এই টাকা টা আমি দিয়েছি বলবি বড় ভাইয়া দিয়েছে।বুঝেছিস!

কেন তা বলব ? কেন টাকা তো তুই দিয়েছিস বড় ভাইয়ার নাম কেন বলব

আমি ধমক দিয়ে বললাম বেশী বুঝিস না । আমি যা বলছি তাই করবি। যদি মা বাবা জানে ভাবি ভাইয়াকে টাকা দিতে মানা করছে তাহলে মা বাবার চোখে ভাইয়া ভাবি খারাপ হয়ে যাবে। আমি চাই না এই বাড়িতে কেউ কারো চোখে খারাপ হয়ে থাকুক।

কিন্তু কিছুদিন পরে জানতে পারি ভাবির ছোট বোনের সব খরচ ভাইয়া চালাই। কিন্তু নিজের বোনের খরচ দিতে পারে না। তখন বুঝতে পারলাম এভাবে আর চলবে না। ছোট বোন মা বাবার জন্য আমাকে কিছু করতে হবে। তখন থেকেই ছোট ছোট কাজ করতে করতে এখন আলহামদুলিল্লাহ ভালো পজিশনে আছি।

আগের কথা চিন্তা করতে করতে অতীতে ফিরে গিয়েছিলাম কিন্তু কারো কথা শুনে বর্তমানে ফিরে আসলাম। সামনে তাকিয়ে দেখি ভাবি দাঁড়িয়ে আছে। বিনয়ের সাথে বললাম বসেন ভাবি।

খাটের উপর বসে এদিকে ওদিকে তাকিয়ে দেখে বলে সাবনাজ কই দেখছি না কেন মাহমুদ?

আমি বললাম আছে কোথাও, মনে হয় ছাদে আছে। নতুন জায়গা ভালো লাগছে না তাই মনে হয় হেঁটে বেড়াই।

নতুন বউ এভাবে না বেড়িয়ে রুমে থাকতো বলো। এখনি এভাবে চলা ঠিক না। নতুন নতুন যদি এভাবে চলে আর কয়দিন পরে রাস্তায় হাঁটবে কাউকে না বলে। অল্প একটু চাপে রাখতে হয়।

হ্যাঁ ভাবি একদম ঠিক কথা বলেছেন বউকে কে চাপে রাখা ভালো। কিন্তু সব বউ কে না। যে সব বউ অন্যের সংসারে আগুন ধরিয়ে দেয়। যে সব বউদের অন্যের ভালো সহ্য হয় না তাদের কে। হক কথা বলছেন একদম ভাবি।

আমার কথার ইঙ্গিত বুঝতে পেরে ভাবি বলে আচ্ছা ঠিক আছে থাকো মাহমুদ ভাই আমার একটু কাজ আছে শপিং করতে যেতে হবে।

আমি বললাম কিন্তু ভাবি, ভাইয়া তো বাসায় নেই। কার সাথে যাবেন।

তোমার ভাইয়া বাসায় নেই তো তাছাড়া আমার একা শপিং করতে ভালো লাগে।

ভাবি রুম থেকে চলে গেল আমি মিটমিট করে হাসতে থাকি আর মনে মনে বলি কী যুগ আইলো নিজে উপদেশ মানে না, আর অন্যের বউকে কিভাবে কন্ট্রোল করতে হয় শেখাতে আসছে হাহাহা।

অনেক কথা ভাবতে ভাবতে একটা কথা পড়ে যাই আমরা। আচ্ছা মা আমার সাথে কাল যেটা করছে ভাইয়ার সাথেও কি এমন করছে। বউ এর সতীত্ব পরিক্ষার জন্য কি সাদা রুমাল দিয়েছিল। যে করেই হোক এটা আমাকে জানতে হবে। তবে ভাবির কাছে থেকে না। ভাইয়ার কাছে থেকে জানতে হবে। যদিও ভাইয়া আর আমি একদম বন্ধু সুলভ সেই ছোট থেকে একসাথে দুজন বড় হয়েছি। এক স্কুল কলেজে পড়েছি। পরে ভাইয়া ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াশোনা করে আর আমি মেডিকেল। বয়সের পার্থক্য মাত্র দুই বছর। কিন্তু তবুও এই বিষয় সম্পর্কে জানা কেমন লজ্জাবোধ কাজ করছে। তাও আজ ভাইয়াকে প্রশ্ন টা করতে হবে।

যদি আমার সাথে যেমন করেছে মা, ভাইয়ার সাথেও তেমন করে থাকে তাহলে মা দোষী। আর ভাইয়ার সাথে এমন না করে তাহলে এই সব কিছুর পিছনে ভাবির হাত।আর যদি এমন হয়ে থাকে তাহলে উচিত শিক্ষা দিব আমি।

রাতে যখন ভাইয়া বাসায় আসে তখন আমি ভাইয়াকে ছাদে ডাকি। কিছুক্ষণ পর ছাদে আসে ভাইয়া। আমি ইজিলি ভাইয়া কে প্রশ্ন করলাম আচ্ছা ভাইয়া নারীর সতীত্ব বলতে কি বুঝো তুমি?

ভাইয়া বলল একটু ভেঙে বল। কী বুঝাতে চাচ্ছিস?

আমি বললাম আচ্ছা স্ত্রীর সাথে প্রথম সহবাসের সময় যদি রক্তপাত না হয় তাহলে কি তাহলে কি সেই মেয়ের চরিত্র খারাপ। আর রক্তপাত হলে চরিত্র ভালো।

ভাইয়া তখন বলে ধুর পাগল তুই একজন ডাক্তার হয়েও আগের যুগের মানুষের মতো চিন্তা ভাবনা রাখিস কেন। এগুলো কুসংস্কার।

আচ্ছা ভাইয়া তোমার বিয়ের সময় কি মা নারীর সতীত্ব নিয়ে কিছু বলেছিল কি? নাকি কোনো প্রমাণ চেয়েছিল।

না তো এমন কিছু বলে নাই। বা কোনো প্রমাণ চাইনি। কেন মা তোকে এ বিষয়ে কিছু বলেছে কি?

আরে না ভাইয়া এমন কিছু না মা আগের যুগের মানুষ তো তাই এমন কিছু বলছৈ কী জানতে চাইলাম তুমি কিছু মনে করো না আবার‌। আমার বুঝতে বাকী রইল না এসবের পিছনে মা নেই ভাবি ভুলভাল বুঝিয়ে এসব করেছে মাকে দিয়ে
ভাইয়া কিছু বলতে যাবে ঠিক তখনি সাবনাজ ছাদে এসে বলে নিচে সবাই অপেক্ষা করছে আপনাদের জন্য, খেতে ডাকছে। তারপর নিচে খেতে গেলাম আমি আর ভাইয়া।

অনেক ক্ষুধা লাগছে তাই তাড়াতাড়ি গিয়ে খেতে বসলাম। কোনো কিছু চিন্তা না করে জোরে খেতে গিয়ে উফফফ করে উঠলাম। যেই হাতের আঙ্গুল কেটে রুমালে রক্ত মাখিয়েছিলাম সেই আঙ্গুলে ব্যথা পেয়ে রক্ত বাহির হচ্ছে। মা বলছে কি হয়েছে। আমি বললাম কিছু না ব্লেডে কেটে গিয়েছে। আর ভাবি আমার দিকে আড়চোখে তাকিয়ে আছে।

চলবে,,,,

বি.দ্র: ভুল ত্রুটি ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে